#ভালোবাসার_রং_বদল
#Abanti_Islam
#Part:19
[আজ অভি বাসায় এসেছে। সাহারা বেগম রুম থেকে একবারের জন্য বাহির হয় নি। নিজের মত করে রুমে আছে। এটা অভির কাছে অনেক খারাপ লেগেছে। যত কিছু হোক অভি ছোট থেকে সাহারা বেগম কে মা বলে মেনেছে। কখনও সত মা ভাবে নি। তাই কষ্ট একটু বেশি হচ্ছে। তাই ফ্রেশ হয়ে মার রুমে চলে যায়। মা আসব।]
সাহারা বেগম কিছুটা ভয় পেয়ে বলল,,,
—“আয় ভেতরে আয়। কেমন আছিস?”
অভি মায়ের কাছে বসে বলল,,,
—“তুমি কি আমার সাথে রাগ করেছ মা। আমি বাসায় আসার পর একবার ও আমার সাথে দেখা করলে না। নিচে পযর্ন্ত যাও নি। তুমি কি আমার উপর রেগে আছ।”
সাহারা বেগম কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল,,,
—“এইসব কি বলছিস আমি তোর সাথে অনেক ভুল করেছি যার জন্য তোর জীবন নষ্ট হয়ে গেছে আমার তো তোর সামনে যাওয়ার কোন মুখ নেই। আমি অনেক বড় ভুল করেছি বাবা।বলে চোখের পানি ফেলছে।”
অভি মায়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে বলল,,,
—“আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দেও মা। আর তুমি এইভাবে কথা বল না। আমার খুব কষ্ট হয়। তুমি পাশে থাকলে।আমি সব কিছু নতুন ভাবে করতে পারব।”
অভির কথায় সাহারা বেগম এর চোখর পানি মুছে ভাবে নিজের মনে পেটের ছেলের থেকে বেশি অভি ওনাকে ভালোবাসে। আর সেই ছেলের জীবন শেষ করতে চেয়েছে। ভেবে চোখের পানি আবার মুছে বলল,,,
যা বাবা রেস্ট নে অনেক কষ্ট করেছিস এত গুলো দিন। অভি মায়ের কথা শুনে মার রুম থেকে বাহির হয়ে ছাদে চলে যায়। ছেদে এসে দেখে মাইশা দোলনায় বসে আছে। অভি মাইশার পাশে বসে বলল,,,
—“কি হয়েছে এত কি ভেবে চলেছ। আমি তোমার সাহায্য করতে পারি।
অভির কথা শুনে মাইশা অভির দিকে তাকিয়ে বলল,,,
—“তেমন কিছু না এমনি ভালো লাগছে না।”
অভি মাইশার কথা শুনে ওর সামনে হাটু ভাজ করে বসে বলল,,,
—“দেখ আমি বুঝতে পারছি তুমি কি ভাবছ। কিন্তু তুমি আমার কথা শুন। বলে মাইশার হাত ধরে বলল। আমি জীবনে অনেক এর জীবন নষ্ট করেছি সেটা বুঝে হোক বা না বুঝে। কিন্তু আমি তোমার জীবন নষ্ট করতে চাই না। আর ডাক্তার কৌশিক তোমাকে খুব ভালোবাসে। তোমাকে অনেক সুখে রাখবে। বাসায় আসার আগে ডাক্তার কৌশিক আমাকে তোমার কথা বলেছে ওর চোখে তোমার জন্য সত্যি ভালোবাসা আছে। তাই ওকে ফিরিয়ে দেওয়ার মত ভুল করো না।”
মাইশা অভির কথা শুনে কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,,,
—“অনুর কি হবে? তুমি কি অনুকে নিজের কাছে নিয়ে আসবে।”
অভি মাইশার কথা শুনে হেসে বলল,,,
—“জোর করে ভালোবাসা হয় না। আর আমার প্রথম ভালোবাসা মায়া ছিল সেই মায়াকে নিজের কাছে রাখতে পারি নি। তাই অন্য করো জীবন নষ্ট করার অধিকার আমার নেই। অনু ভালো হয়ে গেলে ওকে আমি ডিভোর্স দিয়ে দিব। অনু নিজের মতো করে জীবন সুন্দর করে গড়ে তুলুক সেই কামনা করি। কিন্তু তুমি কৌশিক এর কথাটা ভেবে দেখ। ছেলেটা সত্যি খুব ভালো। ওনার মতো মানুষ হয় না।”
মাইশা অভির দিকে তাকিয়ে বলে। তাহলে ব্যবসা কি হবে।
অভি মাইশার কথা শুনে বুঝতে পারছে মাইশা কি চাইছে। তাই হেসে বলল,,,
—“ব্যবসা নিয়ে ভাবতে হবে না। তার জন্য তো আমি আছি। আর এখন আমি ভালো হয়ে গেছি। আর চাইলে তুমি ও অফিসে কাজ করতে পার।”
মাইশা অভির কথা শুনে সস্থির নিশ্বাস ফেলে বলল,,,
—“তাহলে আর কিছু বলার নেই। আমি এই পরিবারের কথা আর তোমার কথা ভেবে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কি করব কিছু বুঝতে পারছিলাম না।”
অভির হেসে মাইশার পাশে বসে বলল,,,
—“এখন তো তোমার চিন্তা দূর হয়েছে। আর এই নেও কৌশিক এর নাম্বার আসার সময় আমাকে দিয়ে বলেছে। যেন তোমাকে দেই। বলে একটা কাগজ এর টুকরো এগিয়ে দিয়ে ওখানে থেকে চলে যায়।”
[মাইশা কাগজ টা হাতে নিয়ে বসে আছে কি করবে ভেবে যাচ্ছে। ফোন দেওয়া কি উচিৎ হবে এটা বারবার ভাবছে। অনেকক্ষন ভেবে অভিকে একটা মেসেজ সেন্ড করে নিজের রুমে চলে আসে।]
_________________________
অনু হাত পা গুলো নড়ছে অনু অক্সিজেন মাক্স খোলার চেষ্টা করছে। ওর নড়াচড়া দেখে নার্স অভিকে ফোন করে সব কিছু বলে।
অভি রুগি দেখছিল নার্স ফোন পেয়ে রুগি দেখা বন্ধ করে অনুর কেবিনে চলে আসে। এসে অনুর অবস্থা দেখে মাক্স খুলে দেয়।
অনু বল কি বলতে চাইছিস তুই। কেন এমন করছিস।
অনু অভির দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,,,
—“আমি এখানে কি ভাবে এসেছি। আর বাবা মা কোথায়। আমার কি হয়েছে। হসপিটালে কি করে এসেছি। আমি বাবা মার সাথে কথা বলতে চাই।”
[অভয় চৌধুরী তুই সান্তহ আঙ্কেল আন্টি এখানে আছে। ওনারা একটু বাহিরে আছে। এখনি চলে আসবে। আর তোর তেমন কিছু হয় নি সামান্য একটু এক্সিডেন্ট করছিস এই যা সব ঠিক হয়ে আছে।]
অনু সান্ত দৃষ্টিতে অভয় এর দিকে তাকিয়ে বলল,,,
—“তোর তো এখন দেশের বাহিরে থাকার কথা ছিল এখানে কি ভাবে এলি। আর তুই ডাক্তার ও হয়ে গেছিস কি করে সম্ভব।”
[অভয় অনুর কথা শুনে সবকিছু বুঝতে পেড়েছে।তার মানে ডাক্তারা যা যা ভেবেছে সব কিছু সত্যি ছিল। অনু নিজের স্মৃতিসক্তি হারিয়ে ফেলেছে। কিন্তু অনু কি কি ভুলে গেছে সেটার ভাবার বিষয় তার জন্য অনুর কিন্তু পরীক্ষা দরকার।তাই অভয় অনুর হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বলে। দেখ আমি যা বলছি সবকিছু মনযোগ দিয়ে শুন। কিছুদিন আগে তোর মাথার মধ্যে আঘাত লাগে আর তখন তুই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিস। তখন আঙ্কেল আন্টি তোকে হসপিটালে ভর্তি করিয়ে দেয়। কিন্তু তোর আঘাত টা বেশি ছিল তাই তুই কিছুদিন কোমায় ছিলি। আর ওই দিন গুলোর কথা তুই ভুলে গেছিস। এখন তোর কিছু পরিক্ষা করতে হবে তারপর তোর অবস্থা বুঝতে পারব। ]
অনু অভির দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,,,
—“সেই সব কিছু তো বুঝলাম কিন্তু তুই দেশে কবে এলি। আর ডাক্তার ও হয়ে গেছিস। এই গুলো কিছু বুঝতে পারছি না।”
অভয় অনুর কাছাকাছি এসে বলল,,,
—“এখন তোর এত কিছু বুঝতে হবে না। চুপচাপ আমার সাথে আয় তোর পরিক্ষা গুলো করতে হবে। বলে অনুকে বেড থেকে নামিয়ে নেয়। কিন্তু অনু ঠিক ভাবে হাটতে পারছে না। তাই হুইল চেয়ারে বসিয়ে নিয়ে যায়। আর নার্স দের ইশারা করে বলে যেন বাকি ডাক্তারদের আসতে বলে।অনুকে নিয়ে চলে যায় পরিক্ষাগারে।”
চলবে,,,