ভালোবাসার রং বদল part:17

0
1657

#ভালোবাসার_রং_বদল
#Abanti_Islam
#part:17

“অভয় আর বাকি ডাক্তার এক সাথে গোল টেবিলে বসে আছে। সবার মুখে চিন্তার ছাপ। অনু আগের থেকে তো ভালো হচ্ছে কিন্তু অনুর মধ্যে ডাক্তার অন্য রকম কিছু সিমটম দেখা দিচ্ছে।”

–“অভয় দেখুন এখন সবথেকে দরকারি কাজ হলো অনুকে ভালো করে তোলা বাকি বিষয়ে না হয়! আমরা পরে আলোচনা করব।”

অভয় এর কথাতে বাকি সব ডাক্তার সায় দিয়ে বলল,,,

–“অভয় চৌধুরী ঠিক বলছে। আমাদের প্রথম ফোকাস হওয়া দরকার অনুকে সুস্থ করে তোলা। বাকি বিষয়ে পরে আলোচনা করা যাবে। অভয় সবাই কে উদ্দেশ্য করে বলল,,,

“আজকের মতো এখানেই মিটিং শেষ হোক। বাকি আলোচনা পরে করা যাবে। সবাই অভয় চৌধুরী কথা শুনে ওঠে চলে যায়।”

[অভয় ওখানে বসে আছে আর নিজের মতো করে ভেবে চলেছে। কি করবে কি ভাবে আবার সব কিছু ঠিক করবে। ]

তপশ অভয় এর পাশে বসে বলল,,

—“এত ভাবিস না যা হবে সব ভালোর জন্য হবে। আর অনু ঠিক হবে যাবে। তার জন্য তোর অনুকে সব থেকে বেশি সময় দিতে হবে পারবি তো।”

অভয় চৌধুরী তপশ এর দিকে তাকিয়ে মলিন হাসি দিয়ে বলল,,,

—“আমি অনুর জন্য সব করতে পারব। শুধু অনু ভালো হয়ে উঠুক। তারপর আমি আর অনুকে কখনো কষ্ট দিব না।”

__________________________

“অভি আজকেও বারে বসে মদ খাচ্ছে।নিজের কষ্ট গুলো মদের সাথে শেষ করার বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছে। নিজের উপর নিজের রাগ হচ্ছে।যাকে সবথেকে বেশি বিশ্বাস করত।সেই মা ওর সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। সেটা ভাবতে অভির নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু অভি সেটাও পাড়ছে না। কারণ অভির কিছু হলে ওর পরিবার কি হবে সেটা ভেবে কিছু করতে পারছে না। ড্রিং করে টলমল করতে করতে বার থেকে বাহির হয়ে আসে। গাড়িতে উঠে ড্রাইভিং সিটে বসে ড্রাইভ করছে। কিছু দূর যাওয়ার পর হঠাৎ গাড়ির সামনে একটা মেয়ে চলে আসে। অভি হঠাৎ ব্রেক করতে সামনে ঝুকে যায়। যার ফলে মাথায় ব্যাথা পায়। কোন ভাবে নিজেকে সামলে নিয়ে গাড়ি থেকে বাহির হয়ে আসে।গাড়ির সমনে এস দেখে দেখে একটা মেয়ে ভয়ে চোখ গুলো বন্ধ করে বসে আছে। অভি মেয়েটার কাছে বসে বলল,,,

কে তুমি এইভাবে দৌড়ে আসছিলে কেন। তোমার কোথাও লাগে নি তো। তুমি ঠিক আছ কোথাও বেথা লাগে নি।

মেয়েটা চোখ খুলে অভির দিকে তাকিয়ে বলল,,,

—“আমি ঠিক আছি কোথাও লাগে নি। প্লিজ আমাকে বাঁচান ওরা আমাকে বাঁচতে দিবে না। আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলুন।”

অভি কিছুটা অবাক হয়ে বলল,,,

—“কে তোমাকে মেরে ফেলবে? আর তুমি কে?তোমার বাসা কোথায় বল?

মেয়েটা বসা থেকে ওঠে অভিকে টেনে গাড়ির কাছে এনে বলল,,,

—“প্রথমে এখান থেকে চলুন তারপর আপনাকে সব কিছু বলছি। ওরা চলে আসলে আমাকে আর বাঁচতে দিবে না।

অভি কিছুটা বিরক্ত নিয়ে বলল,,,

—“ঠিক আছে গাড়িতে উঠুন বলে অভি নিজে গাড়িতে ওঠে গাড়ি স্টাট দেয়। গাড়ি নিয়ে ওখান থেকে অনেক দূরে চলে যায়। তারপর গাড়ি থামিয়ে জানতে চায়। এখন বল কি হয়েছে আর তোমার নাম কি?

মেয়েটা অভির দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল,,

—“আমি মাইশা ইসলাম আমার বাসা চট্টগ্রাম ছিল। কিন্তু বাবা মা মারা যাওয়ার পর আমি ঢাকা মামা মামির বাসায় থাকি। কিন্তু মামা মামি আমার উপর অনেক অত্যাচার করে। সেটা আমি সহ্য করে ওখানে থেকে যাই।

কিন্তু মামা আর মামি আমাকে টাকার লোভে আমাকে একটা গুন্ডার কাছে বিক্রি করে দেয়। আমি ওখান থেকে পালিয়ে চলে আসি। কিন্তু ওদের লোকেরা কি ভাবে যেন আমাকে দেখতে পায়। আর আমার পিছু নেয়। আমি কোন ভাবে ওদের চোখ ফাকি দিয়ে আপনার গাড়ির সামনে চলে আসি। বলে চোখের পানি মুছে যাচ্ছে।

অভি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলল,,,

—“তাহলে এখন আপনি কোথায় যাবেন। আপনার কি কোন রিলেটিভ থাকে এখানে।”

মেয়েটা মানা ইশারা করে বলল,,,

—“না আমার এখানে কেউ নেই মামা মামি ছাড়া। আর আমি কোথায় যাব সেটাও জানি না।”

অভি গাড়ি থেকে বাহির হয়ে চোখে মুখে পানি দিয়ে ভেতরে এসে বলল,,,,

—“তাহলে এখন বলুন আপনাকে আমি কোথায় নিয়ে যাব।”

মাইশা মাথা নিচু করে চোখের পানি ফেলে বলল,,,

—“আমি এখানে কিছু চিনি না কোথায় যাব সেটাও জানি না। আমাকে এখানে নামিয়ে দেন আমি কোথায় একটা চলে যাব।”

অভি কিছু একটা ভেবে বলল,,,

—“আপনাকে দেখেও আমার এদেশি মনে হচ্ছে না। আর এখানে আপনার পরিচিত কেউ নেই। আপনি চাইলে আমার সাথে আমার বাসায় থাকতে পারেন। বাসায় আমার মা ভাই বোন থাকে।”

মাইশা অভির দিকে তাকিয়ে বলল,,,

—“আমি আপনার বাসায় গেলে আপনার কোন সমস্যা হবে না।বা কেউ কিছু বলবে না আপনার বাসার লোকেরা।”

অভি মাইশার দিকে তাকিয়ে বলল,,

—“সেটা আমি বুঝে নিব আপনার ভাবতে হবে না। আপনি যেতে চাইলে বলুন। আর নয়ত আমার ধারা আপনার জন্য কিছু করা সম্ভব না।”

মাইশা নিচু গলায় বলল,,,

—“আপনার কোন সমস্যা না হলে আমি আপনার বাসায় যেতে পারি।”

অভি অনুর দিকে তাকিয়ে বলল,,,

—“তাহলে ঠিক আছে চলুন। আমি কোন কিছু ভাবতে হবে না আপনি আমাদের সাথে আমার বাসায় থাকবেন। বলে গাড়ি বাড়ির দিকে গুড়িয়ে নেয়।”

[বাসায় এসে কলিং বেল চাপ দিতে আহেলী দরজা খুলে দেয়। কিন্তু অভির সাথে মেয়েকে দেখে একটু চিন্তায় পরে যায়।]

অভি নেশায় টলতে টলতে বলল,,,

—“ভেতরে ঢুকতে দিবি নাকি এখানে দাড় করিয়ে রাখবি।সর সমনে থেকে ভেতরে যেতে দে।”

আহেলী অভির কথা শুনে একটু ভয় পেয়ে দরজা থেকে সরে দাড়ায়।

অভি মাইশা কে উদ্দেশ্য করে বলল,,

—“চলুন ভেতরে চলুন। বলে ভেতরে ঢুকে যায়।”

মাইশা অভির পেছনে পেছনে ভিতরে ঢুকে যায়।

অভি সোফায় মার সামনে এসে বলল,,,

—“মা ওর নাম মাইশা ও কিছুদিন আমাদের বাড়ি থাকবে যদি আপনার কোন সমস্যা না থাকে তাহলে। আসলে মেয়েটা খুব ঝামেলা আছে। তাই আমি ওকে আমাদের বাড়ি নিয়ে এসেছি।”

সাহারা বেগম ছেলের দিকে তাকিয়ে বলল,,,

—“তুই যেহেতু নিয়ে এসেছিস তাহলে আমার কি সমস্যা থাকতে পারে। ওর যতদিন ইচ্ছে এখানে থাকতে পারবে।”

চলবে,,,,,,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে