#ভালোবাসার_রং_বদল
#Abanti_islam
#Part:1
রাতে কেউ গোমটা না সরিয়ে এই ভাবে স্বামীর অধিকার পালন করবে সেটা জানা ছিল না অনুর। সারা শরীর এর উপর অত্যাচার করে যাচ্ছে। বাধা দেওয়ার মত শক্তি ওর শরীরে নেই। আর কি করে বাধা দিব। যত চেষ্টা করুক একজন পুরুষ এর কাছে একজন মেয়ের শক্তি কিছুই না। তার মধ্যে অনু তিন দিন যাবত না খেয়ে আছে।
প্রায় ২ ঘন্টা যাবত নিজের কাজ শেষ করে একপাশে শুয়ে পরে অভি কিন্তু অনুকে নিজের কাছ থেকে দূরে সরায় নি হাতের বাহুর মধ্যে রেখে দিয়েছে।
অনু চোখের পানি ফেলে যাচ্ছে এই ভাবে ওর জীবন নষ্ট হয়ে যাবে কখনও ভাবতেও পারে নি।অনু বাবা মার একমাত্র মেয়ে খুব জেদি ছিল।বাবা জব করে আর মা স্কুল টিচার।বাবা মার স্বপ্ন পূরণ করতে পাবলিক ভার্সিটি অনার্স শেষ করে।
মাস্টার্স ভর্তি হওয়ার পিপারেশন নিচ্ছিলাম কিন্তু ভাগ্য খারাপ হলে যা হয় তাই হয়েছে আমার সাথে।যে ভাবে হোক এই নরক থেকে আমাকে বাহির হতেই হবে।
পরেরদিন সকালে,,,
অনু ঘুম থেকে উঠেই গোসল করে নিচে নেমে আসে।এসে দেখে সবাই নিচে বসে আছে।আমি কিছু না বলে সোফায় বসে আছি। একটু পর একজন বয়স্ক মহিলা এসে বলল বউ মা চল খাবার খেয়ে নিবে। আমি কিছু না বলেই উনার সাথে চলে যাই। খাবার টেবিলে সবার সাথে পরিচিত হয়ে নেই। উনারা দুইবোন আহেলী আর কোহেলী।আহেলী এস এস সি পরীক্ষা দিছে কোহেলী ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। ছোটভাই পড়াশোনার জন্য দেশের বাহিরে আছে।
সবাই বসে এক সাথে খাবার খেয়ে নেই।খাওয়া শেষে শাশুড়ি মা বলল উনার জন্য খাবার যেন রুমে নিয়ে যাই।আমি কিছু না বলে খাবার নিয়ে রুমে চলে আসি।খাবার রেখে বারান্দায় চলে যাই। ওখানে একটা রকিং চেয়ার আছে ওটাতে বসে আছি।
প্রায় ১ ঘন্টা পর কারো ডাক শুনে রুমে চলে আসি।
অভি : খাবার ঠান্ডা হয়ে আছে কেন আমি এই খাবার খাব না। আর খাবার যখন রুমে নিয়ে এসেছ তাহলে আমাকে ডেকে দিলে না কেন।
অনু কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে,,
খাবার নিয়ে আসার জন্য আপনার মা বলেছে তাই নিয়ে এসেছি।আপনাকে ডেকে খাওয়ানোর মত ইচ্ছে আমার নাই তাই ডেকে দেই নি।বলে ওখান থেকে চলে আসি।
অভি চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,,
এই মেয়ে ভালো কথার মানুষ না।সোজা কথাতে এর সাথে কাজ হবে না।বলে রাগে গজ গজ করতে করতে নিচে চলে আসে।মা আমি আসছি।বলে বাহির হয়ে যায়।
সাহারা বেগম : বউ মা অভি খাবার খেয়েছে তো এখন নিচে আসল।
–সেটা আপনার ছেলেকে প্রশ্ন করা উচিৎ ছিল আমার কাছ থেকে কেন জানতে চাইছেন।
সাহারা বেগম কিছুক্ষণ চুপ থেকে রুমে চলে যায়। অনুর উপর প্রচুর বিরক্ত হয়ে আছে।
আশিক কিরে বিয়ের প্রথম দিন চলে আসলি।আজকে তো ভাবিকে সময় দেওয়া উচিৎ ছিল।
— ওই মেয়ের কথা আর বলিস না ভালো কথা শুনার মেয়ে নয়। সব কথার উল্টা উওর দেয়।সোজা কথা বলতেই পারে না।
আশিক : তুই ওর সাথে সোজা কিছু করছিস যে তোর সাথে সোজা ব্যাবহার করবে।বিয়েটাও একপ্রকার জোর করে করেছিস।ভাবি তোকে বিয়ে করতেই রাজি ছিল না।কিন্তু তুই কি করলি_
অভি মাথা হাত দিয়ে বলল,,,,
ওইসব কথা বাদ দে ওই গুলো ভেবে লাভ নেই যে ভাবে হোক বিয়েটা তো হয়েছে। এখন সব কিছু কি ভাবে ঠিক করা যায় সেটা বল।
আশিক : দেখ অনুকে এখন জোর করে কিছু করাতে পারবি না।আর তুই নিজের রাগ টা একটু কন্ট্রোল কর। একটু সময় দে দেখবি সব নিজ থেকে ঠিক হয়ে যাবে।
অভি কিছু একটা ভেবে বলল,,,
সময় দিব কিন্তু আমার মনে হচ্ছে না ও এত সহজে আমাকে মেনে নিব বলেই সকাল এর নাস্তা দেওয়ার ঘটনা বলল।
অশিক কিছুটা অবাক হয়ে বলল,,,
এটা কি হলো মামা তোর বউ রাগ তো তোর থেকেও বেশি এখন কি করবি।একটু সাবধানে থাকিস নয়ত মার খাওয়ার সসম্ভাবনা থাকতে পারে। বলেই হাসতে শুরু করে দিল।
অভি একটু রাগি ভাব নিয়ে বলল,,,
তোর হাসি পাচ্ছে আমি সকালে খাবার খেতে পর্যন্ত পারলাম আর তুই আমার সাথে মজা নিচ্ছিস থাক তুই আমি চললাম।
আশিক আরে বন্ধু রেগে যাচ্ছিস কেন আমি তো একটু মজা করেছি। স্যরি আমার ভুল হয়ে গেছে। এখন তো মাথা ঠান্ডা কর। আর চল একসাথে নাস্তা করব।বলে দুইজনে একসাথে চলে যায়।
___________________
অভি: আমার মাথা খুব ধরে আছে । আমার জন্য এক কাপ কফি বানিয়ে দাও।
— আমাকে দেখে কি আপনার কাছে কাজের মেয়ে মনে হচ্ছে।
অভি কিছুটা অবাক হয়ে বলল তুমি কাজের মেয়ে হতে যাবে কেন।
অনু একটু বাকা হেসে বলল,,
আমি যেহেতু কাজের মেয়ে না। তাহলে আমাকে কফি বানাতে বললেন কেন আমি কফি বানাতে পারব না ।নিজে তৈরি করে খেয়ে নিন। বলে বেলকনিতে চলে যায়।
অভি মনে মনে বলছে যত ভাবি এর সাথে ভালো ব্যবহার করব কিন্তু ওর তো ভালো কথা শুনার মেয়ে নয়। বলে রাগে গজ গজ করে নিচে নেমে আসে। মা আমাকে এক কাপ কফি বানিয়ে দাও খুব মাথা ব্যথা করছে।
সাহারা বেগম: তুই রুমে যা আমি এখনি কফি বানিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছি। বলে রান্না ঘরের দিকে চলে যায়।
অভি রুমে এসে চুপ করে বসে আছে। কি ভাবে অনুর কাছাকাছি যেতে পারব। সেটাই ভেবে যাচ্ছে।
অনুর এখানে সব কিছু বিরক্ত লাগছে চাইলেও এখানে কারো সাথে ভালো ব্যবহার করতে পারে না।
চলবে,,,,,,,