#ভালোবাসার_রং_বদল
#Abanti_Islam
#Part:12
অনু এমনিতে কম কথা বলে তার মধ্যে কেউ নিজ থেকে কথা বললে আর দরকার ছাড়া কোন কথা অনুর একদম পছন্দ না। তাই অনু একবার তাকিয়ে আবার মুখ ঘুরিয়ে নিছে।
অভি আবার নিজ থেকে বলতে শুরু করে এই যে মিস আপনি কথা বলতে পারেন না। নামটা তো বলুন নাকি বলা যাবে না।
অনু আবার মুখে বিরক্ত নিয়ে তাকিয়ে বলল,,,
—“অনিমা ইসলাম অনু বলে ওখান থেকে উঠে চলে যায়। আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে।
অভি অবাক হয়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল,,,
যে অভি চৌধুরীকে আজ পযর্ন্ত কোন মেয়ে ইগনোর করে ই। আমার সাথে কথা বলার জন্য মেয়েরা অপেক্ষায় থাকে। আর এই মেয়ে কিনা আমাকে ইগনোর করছে। এর ফল ওকেই পেতে হবে। ভেবে উঠে চলে যিয়।
_____________________
জন্মদিন এর অনুষ্ঠাতন শেষ করে বাড়ি চলে আসি সবাই। মা আমার খুব টায়ার্ড লাগছে আমি ঘুমাব বলে ওখান থেকে চলে আসি।
দিন গুলো ভালো যাচ্ছিল রেজাল্ট এর জন্য অপেক্ষা করে যাচ্ছি। অন্য দিকে জব এর জন্য ট্রাই করে যাচ্ছি।
একদিন বাবা খুব তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসে। আর বাবাকে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছিল। মা আর আমি বাবার কাছে এসে বসি।
আমেনা বেগম পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বলল,,,
—“কি হয়েছে তোমার এইরকম কেন দেখাচ্ছে। এইরকম অস্থির হয়ে আছ কেন। কি হয়েছে কিছুতো বল।”
রায়হান সরকার একবার বউ এর দিকে তাকিয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলল,,,
—” মারে তুই কাউকে পছন্দ করিস। বল আমাকে আমি তোকে তার সাথে তার বিয়ে দিয়ে দিব। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।
অনু বাবার কথা শুনে কিছুটা অবাক হয়ে বলল,,,
—” কি হয়েছে বাবা তুমি হঠাৎ এই ধরনের কথা বলছ কেন। কি হয়েছে বাবা বলো। রায়হান সরকার মেয়ের দিকে অসহায় দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে বলল,,,
—” বল মা তুই কাউকে পছন্দ করিস বাবা তোর সাথে রাগারাগি করব সত্যি বলছি। তোকে কিছু বলব না মা। অনু বাবার দিকে অসহায় দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে নিজের মনে ভাবছে যাকে ভালোবেসেছি সেই তো সব শেষ করে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। তাই আর কোন কিছু না ভেবে বলল,,,
—” না বাবা আমার কারো সাথে কোন সম্পর্ক নেই।। কিন্তু তুমি এই কথা বলছ কেন। সব সত্যি কথা বল বাবা।”
রায়হান সরকার মেয়ের দিকে অসহায় দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে বলল,,,
ওইদিন অনুষ্ঠানে একটা ছেলে তোমাকে তোমার নাম জিগ্যেসা করছে। কিন্তু তুমি ওই ছেলেকে ইগনোর করছ। তাতে ওই ছেলের ইগোতে লেগেছে। তাই আজকে আমার অফিসে এসে বলছে তোমাকে নাকি বিয়ে করতে চায়। আমি না বলাতে আমাকে ধমকে গিয়েছে। বলেছে যে ভাবে হোক তোমাকে বিয়ে করবে।
অনু বাবার কথায় কিছুক্ষন হেসে বলল,,,
বাবা তুমিও রোড সাইড গুন্ডার কথায় ভয় পাচ্ছ। ওই ছেলে কিছু করতে পারবে না। তাই তুমি শুধু শুধু টেনশন করনা। মেয়ের কথা শুনে রায়হান সরকার সরকার মাথা নিচু করে বলল,,,
এ রোড সাইড গুন্ডা নারে মা। আমাদের কম্পানির মালিক। অনেক বড় ব্যবসায়ী অনেক টাকার মালিক। এর কত টাকা আছে উনি নিজেও যানে না। উনি তোকে ছাড়বে না মা। বলে চোখের পানি ফেলে ওখান থেকে উঠে চলে যায়।
______________________
অভি রাগে গজ গজ করছে এত বড় সাহস আমার কাছে নাকি মেয়ে বিয়ে দিব না। কিসে কম আছে আমার কি করে বিয়ে করতে হয় সেটা অভি চৌধুরী ভালো করে জানে। বলে ওর লোকদের ফোন দেয়। লোকদের সাথে কথা বলে ঠোঁট এর কোনে হাসি চলে আসে। ফোনটা টেবিলে রেখে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়।
কয়েকদিন পর,,,
অনু সব কিছু ভুলে নিজের কাজে মন দেয়। সব কিছু আগের মতো সাভাবিক ভাবে চলতে থাকে। সবাই সব কিছু ভুলে যায়।
অনু মা আমি কেম্পাসে যাচ্ছি। আজকে কেম্পাসে অনুষ্ঠান আছে আমার আসতে দেরী হবে তুমি চিন্তা কর না। বলে বাসা থেকে বাহির হয়ে যাই।
আমেনা বেগম দরজা আটকে নিজের কাজে মন দেয়।
অনু কলেজ এসে ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা জমিয়ে দেয়। অনেকদিন পর সবার সাথে দেখা হয়েছে তাই সবাই খুব খুশি।
আনিক এসে অনুর পাশে বসে তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে বলে অনুকে অন্য পাশে যেতে বলে।
অনু কোন কথা না বলে আনিকার সাথে উঠে চলে যায়। বল কি বলতে চাস।
আনিকা কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল,,,
—“অনু সত্যি করে বল তোর কি সাইফ এর সাথে কথা হয়।”
অনু কিছুক্ষন আনিকা দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,,,
—” সাইফ যেদিন তোর কথা আমার কাছে বলেছিল আমি সেদিন বুঝতে পেরেছি আমাকে আর ওর ভালো লাগছে না। তাই সেদিন আমাদের মাঝে সব কিছু শেষ হয়ে গেছিল। আর তুই খুব ভালো করে জানিস আমি কি রকম। অন্যের জিনিসে অনু কখনো ফিরেও তাকায় না।
[ এখন অনেক এর প্রশ্ন থাকবে সাইফ কে। আহান এর পুরো নাম হচ্ছে সাইফ মাহমুদ আহান। আর অভয় এর পুরো নাম অর্ণব চৌধুরী]
আনিকা একটা সস্থির নিশ্বাস ফেলে বলল,,,
—“আমাকে তুই ক্ষমা করে দিস। আমি সাইফ কে যে খুব ভালোবাসি। ওকে ছাড়া বাচঁতে পারব না।”
অনু আনিকা কথা শুনে কিছুটা রেগে বলল,,,
—” নিজের ভালোবাসা আগলে রাখিস দেখিস আমার মতো ছেড়ে যেন চলে না যায়। কথাটা বলে ওখানে আর না দাড়িয়ে চলে আসে।”সবার সাথে আড্ডায় বসে যায়।
দুই তিন ঘন্টা আড্ডা দেওয়ার পর। সবাই খাবার খাওয়ার জন্য কেন্টিনে চলে যায়।
অনু তোরা থাক আমি একটু ফ্রেস হয়ে আসি বলে ওখান থেকে চলে ওয়াশরুমে চলে যায়। ওয়াশরুমে মুখে পানি দিয়ে বাহির হয়ে টেবিলে বসতেই ফোন বেজে ওঠে। অনু বেগ থেকে ফোন বাহির করে দেখে বাবা নাম্বার থেকে ফোন এসেছে। অনু সবার থেকে কিছুটা দূরে যেয়ে ফোন রিসিভ করতেই। একজন বলে ওঠে নিজের বাবা মা কে বাঁচতে চাইলে এখনি আমাদের দেওয়া ঠিকানায় চলে আসুন। বলে ফোন কেটে দেয়।
অনু কিছুক্ষন চিন্তা করে মার নাম্বারে কল দেয় কিন্তু নাম্বারটা বন্ধ দেখাচ্ছে। তাই কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। সবার থেকে বিদায় নিয়ে কলেজ থেকে বাহির হয়ে যায়। ভার্সিটি গেটে আসতেই বাবার নাম্বার থেকে আবার ফোন চলে আসে। অনু ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে গেটের সামনে যে সাদা গাড়ি আছে ওটার মধ্যে ওঠে যাবেন।
অনু গেট থেকে বাহির হয়ে দেখে গাড়ির পেছনের দরজা খোলা। অনু কোনদিকে না তাকিয়ে গাড়িতে ওঠে যায়। ওর মাথার মধ্যে একটাই চিন্তা যে ভাবে হোক বাবাকে বাঁচাতে হবে।
গাড়িতে ওঠার সাথে সাথে একজন ওর হাত আর চোখ বেধে দেয়। অনু কোন কথা না বলে চুপ করে বসে আছে।
কিছুক্ষন যাওয়ার পর একজন বলল নামুন চলে এসেছি। ওরা অনুকে ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটা গোডাউনে নিয়ে চোখ খুলে দেয়।
অনু সামনের দিকে তাকিয়ে চমকে যায়। দৌড়ে সামনে যেতে নিলে কেউ পেছন থেকে ওর হাত ধরে আটকে দেয়।
অনু পেছনের দিকে তাকিয়ে চমকে যেয়ে প্রশ্ন করে আপনি এখানে। আর আমার বাবা মা কে এখানে কেন তুলে এনেছেন। ছেড়ে দেন আমার মা বাবা কে।কেন তুলে এনেছেন ওদের।
তুমি আমার সর্ত মেনে নেও আমি তোমার বাবা মাকে ছেড়ে দিব। আর নয়ত তোমার চোখের সামনে ওদের শেষ করে ফেলব এখন তোমার ইচ্ছে।
অনু চোখ লাল করে বলল,,,
—“আপনার কি শর্ত মেনে বলুন। কিসের জন্য আপনি আমার বাবা মাকে বেধে রেখেছেন।”
অভি শয়তানি হাসি দিয়ে বলল,,,,
—“আমাকে তোমার বিয়ে করতে হবে। তাহলে তোমার বাবা মাকে ছেড়ে দিব।
চলবে,,,