Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"ভালোবাসার ভিন্ন রংভালোবাসার ভিন্ন রং পর্ব-২৭ (বর্ধিতাংশ)

ভালোবাসার ভিন্ন রং পর্ব-২৭ (বর্ধিতাংশ)

#ভালোবাসার_ভিন্ন_রং
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ২৭(বর্ধিতাংশ)

রাদ আর জাইফার বিয়ে সম্পূর্ণ হয়েছে। পরিস্থিতি যদিও অনেক খারাপের দিকে ছিলো তাও আলহামদুলিল্লাহ। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবেই হয়েছিলো কিন্তু বিয়েটা আর হলো কই? অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জেরে হসপিটালের কেবিনে বিয়ে সম্পূর্ণ হয়। রাদ জাইফাকে বলা তার কথা রেখেছে। জাইফার সাথে এতবড় একটা ঘটনা ঘটার পরেও রাদ জাইফাকে ছাড়ে নি। সাদরে গ্রহণ করেছে জাইফার এসিডদগ্ধ গলা, বুক আর হাত। বিয়ের দিনই এমন একটা ঘটনা ঘটবে কেই বা ভেবেছিলো?
জাইফার এমন ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আঘাতে জর্জরিত হয়েছিলো রাদ আর রাদের কষ্টে কেঁদেছিলো দিশা। যদিও দিশা জানে রাদের এই কষ্ট, কান্না সবটা জাইফার জন্য, জাইফার কষ্টের জন্য তবুও দিশা কেঁদেছে, দোয়া করেছে তার রাদ ভাইয়ের কষ্ট লাঘবের জন্য। ভালোবাসাটাই এমন ভালোবাসার মানুষের কষ্ট দেখা যেন মৃত্যুসম। দিকহারা দিশাকে সেদিন বন্ধুর মতো আগলে নিয়েছিলো রাতুল। রোদ সেদিনই সব জানতে পারে। এখানে দিশার ভালোবাসার রং হয়তো ছিলো সবচেয়ে শুদ্ধ এবং সচ্ছ কিন্তু এক তরফা। রাদ আর দিশার কথোপকথন অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে শুনে ফেলে রোদ। ভাইকে সেদিন কাঁদতে দেখে সামলেছিলো রোদ। রাদ সেদিন রোদকে আঁকড়ে ধরে বাচ্চাদের মতো কেঁদেছে হসপিটালে। যেই ছেলেটা জাইফাকে এসিড ছুড়েছিলো সে আপাতত জেলে আছে।
.
রোদ ব্যাগে নিজেদের ঈদের শপিংগুলো গুছালো শুধু। এসব গুছাতে গুছাতেই বিগত মাসের কথাগুলো স্মরণ হলো হঠাৎ। আদ্রিয়ান রোদকে বলেছিলো এমনকি জোর ও করেছিলো যাতে রোদ কয়েকদিন নিজের বাসায় যায় কিন্তু রোদ যায় নি। রোদ নিজের সংসার সামলে যেয়ে যেয়ে দেখা করে এসে পরতো। আজ যাবে রোদ শশুড় বাড়ী। কুরবানীর ঈদ সেখানেই পালন করবে ওরা। এই তো দুই দিন বাদেই ঈদ। এতদিন এই বাসায় আসার পর থেকেই রোদের মন খারাপ করতো ঐ বাসার জন্য অথচ আজ এই ফ্লাটের থেকে যেতেও কিছুটা মন খারাপ লাগছে। লাগবেই তো আড়াই মাস হয়ে এলো রোদ এখানে আছে। ছোট্ট একটা সংসার পেতেছে রোদ-আদ্রিয়ান তাদের বাচ্চাদের নিয়ে। কত মিষ্টি মধুর দিন অতিবাহিত হয়েছে এখানে।

হঠাৎ মিশির আওয়াজে রোদের ধ্যান ভাঙলো। ইদানীং একটু একা থাকলেই বিগত দিনের কাহিনিগুলো ভাবে রোদ। মিশি লাফিয়ে কুদিয়ে এসে মায়ের কোমড় জড়িয়ে ধরে বললো,

— মাম্মা মিশি রেডি।

রোদ একটু হেসে কোলে তুলে নিয়ে মিশির গালে চুমু খেয়ে বললো,

— আমার কিশমিশ এতো খুশি কেন আজ?

— দিদার কাছে যাব তো।

— যাব তো মা। এই তো তোমার ভাই রেডি হোক।

মিশান রেডি হতেই আদ্রিয়ান তাড়া দিলো বের হওয়ার। রোদ বোরকা পড়ে বের হলো। আজ অনেকদিন পর যাবে রোদ শশুড়বাড়ী। রোদরা গাড়ীতে উঠার সময়ই দেখা হয় রোহানের সাথে। মিশান হেসে তাকে বিদায় দেয়। রোহানের সাথে মিশানের বেশ জমেছে এই কিছুদিনের মধ্যেই।

_____________

আদ্রিয়ান নিজের পরিবার নিয়ে আসায় পুরো বাড়ী যেন প্রাণ ফিরে পেলো। ছোট্ট আলিফ এতদিন পর মিশিকে পেয়েই দীন দুনিয়ার কথা ভুলে খেলতে গিয়েছে বাড়ীর পেছনে সাথে মিশান আর জারবাও। এতদিন পর সেই রুমে এসে রোদ মন খুলে শ্বাস টেনে নিলো। বারান্দার থাইটা খুলে দিতেই দেখলো পেছনের বাগানে বাচ্চারা খেলছে। এই রুমটাতে অনেক আবেগ,স্মৃতি জড়িত রোদের। বিয়ে করে এই রুমেই এনেছিলো আদ্রিয়ান ওকে। কতরাত আদ্রিয়ানের বুকে পিঠ ঠেকিয়ে চন্দ্র বিলাস করেছে এই ব্যালকনিতে। মিশিকে নিয়ে এই বেডে শুয়িয়ে ঘুম পারিয়েছে। এতশত স্মৃতির মাঝে হুট করে আবার আদ্রিয়ানের করা কিছু জঘন্য ব্যাবহারও মনে পরলো রোদের। মনটা নিমিষেই খারাপ হয়ে গেল। ঐ দিনটাকে রোদ কোন ভাবেই নিজেদের সুন্দর সম্পর্কের সাথে জড়িয়ে রাখতে চায় না। সব কিছু ঠিক আগের মতোই গোছালো। হিজাব আর বোরকাটা খুলেই রোদ ধুপ করে গা এলিয়ে দিলো বেডে। কিছুক্ষণ গড়াগড়ি করলো আবার বালিশ জড়িয়ে শুয়ে পরলো। হঠাৎ দরজা অফ করার শব্দে মুখ তুলে তাকালো রোদ। দেখলো আদ্রিয়ান এসে নিজের শার্ট খুলেছে। রোদ উঠে দাঁড়িয়ে নিজেই শার্টের বোতাম খুলে দিতে দিতে বললো,

— আমি আর যাব না।

— দেখা যাবে নে।

— হু হু দেখা যাবে নে।

রোদ শার্টটা নিয়ে ওয়াসরুমে রেখে আসতেই আদ্রিয়ান ফোন ঘাটতে ঘাটতে বললো,

— সোনা একটা টিশার্ট বের করে দাও তো।

— কোথাও যাবেন?

— হাটে যাচ্ছি।

রোদ কিছু বলবে তখনই মিশান একটা হাটু সমান প্যান্ট আর পাতলা গেঞ্জি পড়ে রুমে ডুকে বললো,

— বাবা আমি রেডি।

রোদ ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলো,

— কিসের রেডি?

মিশান বেডে বসে রোদের ফোনটা ঘাটতে ঘাটতে বললো,

— হাটে যাব তো।

— কিসের হাটে যাবে? মাথা খারাপ? এই আপনি কিছু বলেন না ক্যান? ও হাটে যাবে কেন?

রোদ কিছুটা চেঁচিয়ে বললো। আদ্রিয়ান শান্ত কন্ঠে ওকে আসস্ত করে বললো,

— আগেও গিয়েছে তাই এখনও যাবে। আমি আছি, আরিয়ান আছে কিছু হবে না।

— কিছু হবে না বুঝলাম হতে কতক্ষণ? যদি গরু ছুটে যায়? পায়ে পাড়া দেয় তখন?

আদ্রিয়ান অসহায় চোখ তাকালো। মিশান বেড থেকে নেমে রোদের হাত ধরে বললো,

— প্লিজ প্লিজ না করো না। আমি যাই? অনেক মজা হয়।

— কি দরকার তোমার যাওয়ার। বাসায় আনলেই তো দেখতে পাবে।

আদ্রিয়ান মাঝখান থেকে বললো,

— আহা যেতে দাও রোদ। আমি বুড়ো হচ্ছি সামনে দুদিন পর ছেলের বউ আসবে আমার তখন তো মিশান ই যাবে গরু আনতে। আমি বুড়ো মানুষ কি আর যেতে পারব?

রোদ যেন ঘর কাঁপিয়ে হেসে উঠলো। মিশান মুখ কুচকে বিরক্ত কন্ঠে বললো,

— আমি যাবোই না। তুমি ই যাও।

রোদ বহু কষ্টে হাসি থামিয়ে মিশানের হাত ধরে বললো,

— আচ্ছা আব্বাজান আপনি যান। খেয়াল রাখবেন নিজের তাহলেই হবে।

মিশান একটু সিরিয়াস হয়ে বললো,

— মন থেকে বল্লা তো?

— হু হু যাও।

আদ্রিয়ান, আরিয়ান আর মিশান বের হলো। এদিকে আলিফ আর মিশি অনেক বায়না করলো যাওয়ার। তারাও গরু আনতে যাবে। কত কষ্টে এদের রাখা হলো।

রোদ আর সাবা কিচেনে টুকটাক বিকেলের নাস্তা করছিলো। রোদ গরম তেলে ব্রেডের পিস ছেড়ে দিয়ে সাবাকে জিজ্ঞেস করলো,

— আপিপু তুমি কি কিছু জানো যে আমরা আলাদা কেন থাকি?

সাবা হাতের দুধটা পাতিলে ঢালতে ঢালতে বললো,

— হ্যাঁ মামির…

রোদ সাবাকে কথাটা সম্পূর্ণ করতে দিলো না। মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বললো,

— ঐটা মেইন রিজন না। অন্য কারণ আছে। আমি কিছুটা আন্দাজ করতে পারছি বাট সিউর বুঝতে পারছি না। উনি ঐদিন বাবার সাথেও ফোনে কারে কথা বলছিলেন আমি জিজ্ঞেস করতেই এরিয়ে গেলেন।

সাবা কিছুক্ষণ ভাবলো। যেহেতু আদ্রিয়ান রোদকে কিছু বলে নি তাই সাবার বলাটাও ঠিক হবে না। তাই সাবা কফিতে চিনি দিতে দিতে বললো,

— আমিও ঠিক কিছু জানি না রে।

রোদ অমনোযোগী হয়ে ব্রেড উল্টাতে গিয়ে কিছুটা তেল হাতে ছিটা আসলো। ঝটাক মে’রে হাত সরালো রোদ।সাবা তারাতাড়ি ফ্রিজ থেকে বরফ এনে রোদের হাতে ঘঁষতে ঘঁষতে বললো,

— বেশি লেগেছে। দেখে কাজ করবি তো।

রোদের ফর্সা মুখটা লাল হয়ে গিয়েছে। গরম তেলের বেশ খানি ছিটা লেগেছে। রোদ নিজেই বরফ লাগাতে লাগাতে বললো,

— একটু জ্বলছে।

— দেখি তুই যা। আমি নিয়ে আসছি।

রোদ আর বাড়াবাড়ি করলো না হাতটা বেশ জ্বলছে। চোখ দিয়ে পানি এসে পরেছে ওর। আইস ট্রে টা নিয়েই কিচেন থেকে বের হয়ে গেল।
.
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। এখন বাজে রাত ১০ টা। আদ্রিয়ানদের কোন খবর নেই। মিশি,আলিফ এতক্ষণ “গরু গরু” করে লাফালেও এতরাত পর্যন্ত জাগতে পারে নি। ঘুমিয়েছে দুইজনই। রোদ দুই একবার কল দিয়েছে। আদ্রিয়ান ব্যাস্ত কন্ঠে বলেছে,তখনও গরু মিলে নি। দাম বেশ চওড়া গাবতলী হাটে। রোদ এখন ফোন হাতে নিয়েও ফোন করতে দ্বিধা বোধ করছে। ওখানে নিশ্চিত ব্যাস্ত এখন। ফোন করা মানেই বিরক্ত করা। মিশির দুই দিকে বালিশ দিয়ে রোদ নিচে গেল শাশুড়ীর কাছে। বেশকিছুক্ষণ গল্প ও করলো।হঠাৎ বাইরে থেকে চিল্লাচিল্লির আওয়াজে ওরা বের হলো। বেশ হৃষ্টপুষ্ট গরু এনেছে তিনটা। এগুলো বাড়ির পেছনে বেঁধে রেখেছে। ঠিক সেই মুহূর্তে একটা ট্রাকে করে রাদ,রুদ্র আর ইশান এসেছে বেশ বড়সড় একটা গরু নিয়ে। পুরান ঢাকার মানুষ বলে কথা।মেয়ের বাড়ী তারা গরু হাঁটিয়ে পাঠায়। যারা না পারে তারাও গরুর রান পাঠাবে। কি আর করার। সেই গরুও বেঁধে রাখলো। রাদরা কেউ বাসায় ঢুকলো না কারণ ওরা মাত্রই তখন হাট থেকে ফিরেছে। ভাই যে ভীষণ ক্লান্ত তা বুঝতে দেড়ী হয় নি রোদের। দৌড়ে শরবত বানিয়ে বাইরেই এনেছে। রাদ মুচকি হেসে বোনের মাথায় চুমু খেয়ে বিদায় নিলো। রোদের চোখ তখন টলমলে। রাদ সেই চোখে বেশিক্ষণ তাকালো না। রোদ এই প্রথম বাসায় নেই। নাহলে রাদের কান ঝালাফালা করে ফেলে ও নিজেও হাঁটে যাওয়ার জন্য।
.
ছেলেরা বাসায় ডুকতেই রোদ নাক ধরে বললো,

— এই আপনি সোজা ওয়াসরুমে যান। সব ওখানে রাখা আছে।

আদ্রিয়ান নিজের কালো মুখ নিয়ে উপরে উঠতে নিলেই রোদ জোরেই বললো,

— এই জুতা ফালান। গোবরে ভরা।

কি আর করার। আদ্রিয়ান জুতা বাড়ীর বাইরে রেখে রুমে গেলো। মিশানকেও রোদ সোজা রুমে যেতে বললো। সব ওয়াসরুমে গুছিয়ে রেখেছিলো রোদ। আদ্রিয়ানরা বের হতেই সবাই একসাথে খেতে বসলো। রোদের খাওয়ার সময় হাতটা বেশ জ্বালাপোড়া করছিলো। কেমন লাল লাল হয়ে নীল হয়ে গিয়েছে হাতটা। সাথে সাথে বরফ দেয়াতে ফোঁসকা পড়ে নি। রোদ বেশি খেলো না। আদ্রিয়ান বলবে কিছু তার আগেই প্লেট নিয়ে উঠে গেলো। রাতে মিশানের রুমে ডুকে দুধ খায়িয়ে নিজে রুমে ডুকলো। আদ্রিয়ান রুমে ডুকে দেখলো রোদ ড্রয়ারে কিছু খুঁজতে ব্যাস্ত। দরজা লক করে এগিয়ে এসে আদ্রিয়ান জিজ্ঞেস করলো,

— কি খুঁজো?

রোদ চমকে তাকালো। আদ্রিয়ান হেসে বললো,

— কুল আমি। কি খুঁজে আমার বউ?

রোদ কোনমতে বললো,

— কই না তো। তেমন কিছু না।

আদ্রিয়ান জহুরি চোখে তাকালো রোদের দিকে। রোদ সরে যেতে নিলেই আদ্রিয়ান ওর হাত ধরে আটকালো ওমনি রোদ বেশ জোরে চিৎকার করে কেঁদে উঠলো। আদ্রিয়ান আচমকা এহেন কান্ডে হতবাক হয়ে হাত ছেড়ে দিলো। রোদ নিজের হাত ঝাড়া দিতে দিতে ওয়াসরুমে ডুকে বেসিনে পানি দিতে লাগলো। এমনিতেই তেল পড়াতে হাত লাল হয়ে চামড়াটা পাতলা হয়ে কেমন হয়েছিলো এখন আদ্রিয়ান এমন ধরাতে চামড়া কুঁচকে গিয়েছে সেখানে। রোদ ফুপিয়ে কেঁদে যাচ্ছে সাথে হাতে পানি দিচ্ছে। আদ্রিয়ান ওর পেছনে তড়িৎ গতিতে এসে ব্যাস্ত কন্ঠে শুধালো,

— এই রোদ কি হয়েছে?

কথাটা বলেই নজর গেল রোদের হাতে। হাত ভীষণ ভাবে লাল হয়ে চমড়া কুঁচকে আছে৷ আদ্রিয়ান তারাতাড়ি ওর হাত ধরে বললো,

— এই তোমার হাত? এই রোদ হাত কিভাবে পুড়লো?

রোদ তখনও ফুপিয়ে যাচ্ছে। আদ্রিয়ান এবার অধৈর্য হয়ে দিলো এক ধমক। কেঁপে উঠল রোদ। হাত ছাড়াতে ছাড়াতে বললো,

— ছাড়ুন না। জ্বলছে।

আদ্রিয়ান আলতো হাতে রোদের হাতটা পানির মধ্যে দিলো। বললো,

— কিভাবে হ’য়েছে?

— খেয়াল করি নি। তেলের ছিটা এসেছিলো।

— কখন?

— সন্ধ্যায়।

আদ্রিয়ান রেগে বললো,

— মাইর খাবা রোদ আমার হাতে। সন্ধ্যায় হয়েছে আর তুমি এতক্ষণে নিশ্চিত বার্ণ ক্রিম খুঁজছিলা।

— হু।

আদ্রিয়ান রোদকে নিয়ে রুমে এলো। টিস্যু দিয়ে হাতটা আলত করে মুছে দিয়ে রুম থেকে চলে গেল। রোদ ভাবলো জামাই কি রেগে ওকে ছেড়ে চলে গেল? হাত পুড়া বউ কি তার চাই না? রোদের সব ফালতু চিন্তার মাঝেই আদ্রিয়ান ব্যাস্ত পায়ে রুমে ডুকলো। পিছনে আরিয়ান। আদ্রিয়ান চিন্তিত কন্ঠে বললো,

— ভালোভাবে চেক কর তো।

আরিয়ান ও ভালো করে চেক করলো। একটা বার্ণ ক্রিম লাগাতেই রোদের একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগলো। আরিয়ান আদ্রিয়ানকে বললো,

— চিন্তা করিস না। ঠিক হয়ে যাবে। বুদ্ধি করে বরফ দেয়াতে ভালো হ’য়েছে নাহলে ফোস্কা পড়ে যেত।

আরিয়ান যেতেই আদ্রিয়ান দরজা লক করে দিলো। রোদের সামনে বসে সেই হাতটা নিজের হাতের মাঝে নিয়ে মনোযোগ দিয়ে দেখছে। মাঝে মধ্যে ফু দিচ্ছে। রোদ হেসে বললো,

— এখন জ্বলা কমেছে তো।

আদ্রিয়ান মুখ তুলে তাকালো। রোদ তাকাতেই দেখলো আদ্রিয়ানের চকচকে চোখ জোড়া। এই চোখ জোড়া ভীষণ গভীর। একদম মায়াময়। এই যে এখন চকচক করছে। এই লোক এত নরম স্বভাবের কেন খুঁজে পায় না রোদ। একটু হাত পুড়েছে তাতেই ওনার চেহারা চুপসে গিয়েছে। রোদ হেসে আদ্রিয়ানের গালে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,

— সত্যি বলছি কমে গিয়েছে।

আদ্রিয়ান রোদের কোলে মাথা তুলে কোমড় জড়িয়ে ধরলো। রোদ হেসে উঠলো। মুখে বললো,

— ব্যাথা পেয়েছি আমি। আমাকে কোলে নিবে কি উল্টো আমার কোলে শুয়ে পরলো।

উত্তরে আদ্রিয়ান রোদকে আরেকটু জড়িয়ে ধরে।

_______________

আজ চাঁদ রাত। বাসার সব বাচ্চারা সেই সকাল, দুপুর বাড়ীর পেছনে গরু দেখতে ব্যাস্ত। জারবা যে এত বড় হ’য়েছে তবুও তাকে বকে টকে বাড়ীতে আনা যাচ্ছে না। দুপুরে আরিয়ান ধমকে ধামকে সবগুলোকে বাসায় ডুকালো। যেই লাউ ওই কদু সবগুলো খেয়ে দেয়েই আবার পেছনে চলে গেল। রাদ কল করেছিলো আদ্রিয়ানকে যাতে রোদকে নিজের কাছে আনে। বোনকে ছাড়া ঈদ সে করতে নারাজ। আদ্রিয়ান ঘোর আপত্তি জানালো। রাদ ঘাড়ত্যাড়ার মতো নিজের কথায় অনড়। অসহায় আদ্রিয়ান শেষ মেষ শশুড়কে ফোন করে। রোদের বাবা রাদকে বুঝায় পরে। তাও রাদ ক্ষান্ত হয় নি। আদ্রিয়ানরা কুরবানি করে ঈদের দিন আর রোদরা করে পরের দিন তাই রোদকে পরের দিন আসতে হবেই হবে। আদ্রিয়ান রাজি হলো তাও তো ঈদে বউহীন ঘুরতে হবে না।
.
রোদ, সাবা, শাশুড়ী কিচেনে কিছু মিষ্টি আইটেম করছে আগামী কালের জন্য। আদ্রিয়ান কিচেনে ডুকে সবার সামনেই রোদকে ধমকে উঠলো কিচেনে আসার জন্য। রোদ ও বের হবে না। শেষে সাবা আদ্রিয়ানকে বলে যে, খেয়াল রাখবে।
রাতে সব মেয়েরা হাত ভর্তি মেহেদী পড়লো। রোদ মিশিকে লাগিয়ে মিশানকেও বা হাতে একটা গোল এঁকে দিয়েছে। মিশান যেন প্রচুর খুশি হয়েছে। এই আনন্দ আদোও আগে পেয়েছে কি না ছেলেটা জানা নেই। সারাক্ষণ রোদের আশেপাশে আদরের জন্য ঘুরঘুর করে। নিজেকে মিশির সাথে তুলনা করে আদর চাই ওর। রোদ নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে মিশানকে আগলে রাখার। এই যে এতক্ষণ মিশিকে মেহেদী লাগাচ্ছিলো রোদ তখনই মিশানও পাশ ঘেঁষে বসে রইলো। রোদ হেসে বলেছিলো,

— আব্বাজান লাগাবে নাকি?

রোদ মজার ছলে বললেও মিশান মায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে ডান হাত পেতে দিলো। রোদ অবাক হয়ে আগে চুমু খেয়েছিলো মিশানের হাতের তালুতে এরপর সুন্দর করে একটা বৃত্ত এঁকে দিলো। এই বাহানায় রাতে খায়িয়েও দিয়েছে দুই বাচ্চাকে।
.
আজ ঈদ। সকাল সাতটায় জামাত। আদ্রিয়ানরা ফজরের পরে আর ঘুমায় নি। রোদ যেয়ে মিশানকে ডেকে তুললো। এই ছেলে কি আর উঠে? রোদ মাথায় হাত বুলাতে সে আরেকটু আরাম করে ঘুমাবে। কতকষ্টে রোদ ওকে তুলে সব কাপড় গুছিয়ে দিয়ে আবার নিজের রুম ডুকলো। আদ্রিয়ান একটা টাওয়াল পেচিয়ে বের হলো তখন। রোদ আরেকটা টাওয়াল এনে ওর মাথা মুছে দিলো। আদ্রিয়ানের পাঞ্জাবী, পাজামা, টুপি সব বের করে দিতেই আদ্রিয়ান পড়ে নিলো। আতর লাগিয়ে নিজেকে পরিপাটি করতেই মিশানও ডুকলো। আদ্রিয়ান ছেলেকেও আতর লাগিয়ে দিলো। দুই বাবা-ছেলে একরকম পড়েছে। হাতে জায়নামাজ নিয়ে বের হলো দুজন। রোদ ততক্ষণে রুম গুছিয়ে ফেললো। আজ মিশিও মসজিদে মাইকিং এর আওয়াজে উঠে পড়েছে। রোদ ওকে একেবারে গোসল করিয়ে রেডি করিয়ে দিয়ে নিজেও গোসল করে একটা লং জামদানী কাপড়ের গাউন পড়ে চুল খোঁপা করে মাথায় উরণা টেনে নিলো। মিশি ততক্ষণে নিচে চলে গিয়েছে। আদ্রিয়ান রুমে ডুকে রোদকে দেখে একটু হেসে এগিয়ে আসলো। রোদ ঘুরতেই জড়িয়ে ধরলো। রোদও জড়িয়ে ধরে বললো,

— ঈদ মোবারক।

— ঈদ মোবারক সোনা।

আদ্রিয়ান ওকে ছেড়ে মাথায় চুমু খেল। রোদ আদ্রিয়ানের গলা জড়িয়ে ধরলো। আদ্রিয়ান ওর কোমড় চেপে ধরে বেশ সময় নিয়ে একটা চুমু খেল রোদের ঠোঁটে। ছেড়ে দিতেই রোদ চলে গেল তারাতাড়ি। আদ্রিয়ান হেসে ভাবলো, এই মেয়ে আদর আদর করে ওর মাথা খেয়ে ফেলে আর এখন আদর দিতেই লজ্জায় তীর সীমানায় ও নেই।

নিচে সবার সাথে কথা বলে রোদ উপরে আসতেই যেন ধাক্কা খেলো। এই আদ্রিয়ান কি পড়েছে এটা? সাদা ধপধপের মধ্যে নীল পাড়ের একটা লুঙ্গি পড়া সাথে একটা বাদামী টিশার্ট। এই প্রথম রোদ আদ্রিয়ানকে লুঙ্গি পড়া দেখে যেন বিষম খাবে। আদ্রিয়ান দরজার দিকে তাকিয়ে রোদকে দেখেই বললো,

— সোনা এদিকে আসো তো। ওয়ালেট টা দাও। হুজুরকে টাকা দিতে হবে।

রোদ এগিয়ে এসে আদ্রিয়ানের সামনে দাঁড়িয়ে বললো,

— এই আপনি এটা কি পড়েছেন?

আদ্রিয়ান ভ্রু কুচকে বললো,

— লুঙ্গি? কুরবানী হবে এখন তাই।

— আপনার তাতে কি? আপনি কি কসাই?

আদ্রিয়ান ভীমড়ি খেয়ে বললো,

— কসাই হব কেন? আমি তো তোমার জামাই।

— কোথায় পেলেন এই লুঙ্গি?

— কিনে এনেছি। এখন ওয়ালেট দাও।

রোদের যেন এই লুঙ্গি পড়া আদ্রিয়ান বেশ ভালোলাগলো। ইশ কি সুন্দর জামাই ওর। লুঙ্গিতেও হ্যান্ডসাম লাগে কত।
রোদ সব বাদ দিয়ে ওয়ালেট দিতেই আদ্রিয়ান রোদকে নিয়েই নিচে নামলো। রোদ খেয়াল করলো আজ আরিয়ান ও লুঙ্গি পড়া। রোদ হাসলো। রাদ ও ইশান এমন ঈদের দিন লুঙ্গি পড়ে নাহলে নাকি কুরবানী ঈদ ফিলিং আসে না।
কুরবানী হওয়ার এক ঘন্টার মধ্যেই মাংস বাড়ীতে পাঠানো হলো। রোদ আর সাবা তারাতাড়ি ধুয়ে বসিয়ে দিলো সাথে খিচুড়ি এটাই আজকের সকালের খাবার। বাইরে সব ঠিক করে ছেলেরা বাসায় ডুকলো। রোদ খেয়াল করলো আদ্রিয়ানের লুঙ্গি, গেঞ্জিতে র*ক্তের দাগ। সবাই চেঞ্জ করে একসাথে খেতে বসলো। দুপুরের জন্য আবার পোলাও,গরুর কালা ভুনা, কাবার,রেজালা আর রায়তা বানানো হলো। ছেলেরা বাইরে আর মেয়েরা কিচেনে এসব করতে করতেই ভীষণ ব্যাস্ততার মধ্যে ঈদটা চলে গেল। রাতে সবাই একদম রিল্যাক্স। রোদের হাত, পা ব্যাথা হয়ে গিয়েছে সারাদিন কিচেনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রান্না করায়। সাবা তো প্রেগন্যাট তাই শাশুড়ীর সাথে রোদ আর জারবাই বেশির ভাগ সময় কিচেনে ছিলো।

রাতে রুমে ডুকে সব চেঞ্জ করে ঢোলা পোশাক পড়ে রোদ চিৎ হয়ে শুয়ে পরলো। ক্লান্ত শরীর এখন আর টানা সম্ভব নয়। আদ্রিয়ান আবার গোসল করে এসেছে। রোদকে দেখে দরজা লক করে এগিয়ে বেডে শুয়ে রোদকে বুকে টেনে নিলো। ক্লান্ত রোদ জীবনে এত কাজ করেছে কি না সন্দেহ সেখানে আজ সকাল থেকে দাঁড়ার উপর কাজ। শাশুড়ী না করেছে বার কয়েক তাও বয়স্ক একজনের ঘাড়ে তো সব ফেলে রাখা যায় না।

আদ্রিয়ানের ভেজা গলায় রোদ মুখ দিয়ে শুয়ে রইলো। আদ্রিয়ান রোদের পিঠে আর ঘাড়ে আলত করে চেপে দিতে দিতে বললো,

— চলো খাবে।

— উহু।

— রুমে নিয়ে আসি?

— উহু।

— খেতে হবে তো?

— আপনি খেয়ে আসেন।

— হাতে খেতে মন চাইছে না।

ক্লান্ত রোদ শরীর টেনে তুললো ভালোবাসার জোরে। আদ্রিয়ানকে তো খাওয়াতে হবে। মেডিসিন দিতে হবে। বাচ্চারাও আছে। রোদের কি আর শুয়ে থাকা মানায়? রোদকে উঠতে দেখেই আদ্রিয়ানের ভেতরে যেন ঝর বয়ে যায়। এই মেয়ে এত কীভাবে ভালোভাসে ওকে? এই ক্লান্ত দেহ কীভাবে উঠালো শুধু মাত্র আদ্রিয়ানকে খাওয়ানোর জন্য? আদ্রিয়ান টেনে ওকে নিজের উন্মুক্ত বক্ষে নিয়ে নিলো। রোদ শ্বাস ফেলে বললো,

— চলুন উঠুন। বাচ্চারাও খায় নি।

— আমি দেখবো নে। তুমি একটু রেস্ট নাও।

দুই কি তিন মিনিট যেতেই ঘুমিয়ে গেল রোদ। ভারী নিঃশ্বাসের আওয়াজ পেয়ে আদ্রিয়ান রোদের মাথায় চুমু খেয়ে বালিশে শুয়িয়ে দিলো। টিশার্ট পড়ে রুম থেকে বের হলো। টেবিলে যেতেই মিশি বললো,

— বাবাই মিশি খাবে। মাম্মা কোথায়?

আদ্রিয়ান হেসে মেয়েকে কোলে তুলে বললো,

— আজ বাবাই খায়িয়ে দিবে তার মা’কে।

মিশান এসে বসেই ডাকলো,

— রোদ মা। তারাতাড়ি দাও।

জারবা প্লেট দিতেই মিশান ভ্রু কুচকে বললো,

— পুত্তি তুমি কেন? রোদ মা কোথায়?

জারবা রেগে লাল হয়ে বললো,

— ভাইয়া তোমার ছেলেকে ডাকো।

আদ্রিয়ান ও গম্ভীর কণ্ঠে ডাকলো,

— মিশান?

সবাই একসাথে হেসে উঠলো। জারবা গাল ফুলিয়ে বসলো পাশে। রোদের কথা জিজ্ঞেস করতেই আদ্রিয়ান জানালো,

— ঘুমিয়েছে। শরীর ভালো লাগছে না হয়তো। আমি খাওয়াবো নে পড়ে।

মিশান ঝট করে উঠে দাঁড়িয়ে বললো,

— কি হয়েছে?

— আরে বসো। এমনি ক্লান্ত।

আদ্রিয়ানের মা বললো,

— মেয়েটাকে এত না করলাম তাও সারাদিন খেটেছে।

সবার খাওয়া শেষ হতেই আদ্রিয়ান প্লেটে খাবার নিয়ে রুমে ডুকলো পিছনে মিশি আর মিশান। দুই বাচ্চা মা’য়ের অসুস্থতা শুনেই পাগল। আদ্রিয়ান রোদকে ডেকে টেনে টুনে তুললো। ফ্রেশ করিয়ে খায়িয়ে দম নিলো। পুরো একটা ভরা পরিবার এখন আদ্রিয়ানের। সুখগুলো যেন হাতের মুঠোয় তার। কি আর চাই এই জীবনে?

#চলবে…

[ একটু সুন্দর সুন্দর কমেন্ট করুন। ]

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ