Sunday, October 5, 2025







ভালোবাসার ভিন্ন রং পর্ব-২৫

#ভালোবাসার_ভিন্ন_রং
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ২৫

আজ রোদ যাবে মেডিক্যাল। সকালেই তারাহুরো করে নাস্তা বানিয়ে আবার দুপুরের খাবারের কিছুটা এগিয়ে রাখলো রোদ কিন্তু এভাবে কিভাবে হবে? মিশি থাকবে কোথায়? রোদ ব্যাস্ত পায়ে ছুটলো রুমের দিকে হাতে তার দুধের গ্লাস। পাঁজিটা আজ দুধ নিয়ে গড়িমসি করছে। রুমে ডুকতেই দেখলো আদ্রিয়ান মেয়েকে নিয়ে খেলতে ব্যাস্ত। রোদ এগিয়ে গিয়ে আদ্রিয়ানের হাতে দুধের গ্লাস ধরিয়ে বললো,

— ওকে খাওয়ান। আমি রেডি হতে গেলাম।

বলেই দুদন্ড না দাঁড়িয়ে রোদ গেলো চেঞ্জ করতে। রোদ বের হতেই দেখলো বাপ-বেটি একদম রেডি হয়ে আছে। রোদ হিজাব বাঁধতে বাঁধতে জিজ্ঞেস করলো,

— কি মিস্টার মিশি কোথায় থাকবে?

আদ্রিয়ান মেয়েকে কোলে তুলে নিয়ে বললো,

— আমার মেয়ে আমার সাথে অফিস করবে।

রোদ চোখ ঘুরিয়ে তাকালো। কন্ঠে কিছুটা বিস্ময় ঢেলে বললো,

— মানে? সারাদিন কি অফিসে থাকবে নাকি ও? আপনি কাজ কিভাবে করবেন?

আদ্রিয়ান মিশিকে টিভি দেখতে পাঠিয়ে এগিয়ে এসে রোদের হাতের পিনটা নিয়ে পেছনে সেট করে দিলো যা রোদ নাগাল পাচ্ছিলো না এতক্ষণ। আদ্রিয়ান আবার নিজের টাই এনে রোদকে দিতেই রোদ বেঁধে দিতে দিতে বললো,

— কি দরকার এসবের আমার মাথায় ডুকছে না। আর ঐ বাসায় সবাই এত স্বাভাবিক কেন? মামনি আর বাবা ও কিছু বলে না। সবাই স্বাভাবিক ভাবে কথা বলছে।

আদ্রিয়ান রোদের হাতের তালুতে চুমু খেয়ে বললো,

— আমার বোকা ভালোবাসা না তুমি, তাই এসব বুঝবে না।

— বলেই দেখেন বুঝবো আমি। আমার গ্লিট ফিল হয়। মনে হয় আমার জন্য এমন…

আদ্রিয়ান ওর কথা সমাপ্ত হতে দিলো না। রোদের হিজাবটা বুকের সামনে দিয়ে ঠিক করে দিয়ে হাতে ল্যাপটপ ব্যাগটা নিয়ে বললো,

— তোমার জন্য কিছু হয়নি এটা মনে রেখো বরং ঐ বাসায় থাকলে সমস্যায় পড়তে তুমি। সময় হলেই জানতে পারবে।

রোদ তবুও ঠাই দাঁড়িয়ে রইলো। আদ্রিয়ান ইশারা কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই রোদ বললো,

— এভাবে কতদিন মিশিকে নিয়ে অফিসে যাবেন?

আদ্রিয়ান এবার এগিয়ে এলো। শক্ত চোখ করে বললো,

— এক কথা ধরে বসে আছো কেন? কতবার বলছি আমি? আমাকে অধৈর্য করো না রোদ ফল ভালো হবে না।

আদ্রিয়ানের এমন চিবিয়ে চিবিয়ে বলা কথাগুলো বেশ গায়ে লাগলো রোদের। নিজের ব্যাগ হাতে নিয়ে বের হতেই আদ্রিয়ান আটকালো। মানিব্যাগ থেকে হাজার টাকার কয়েকটা নোট বের করে রোদের ব্যাগে ভরতে নিলেই রোদ নিজের ব্যাগ টেনে নিজের কাছে নিয়ে শক্ত কন্ঠে বললো,

— লাগবে না আমার।

— হাত খরচ এটা তোমার।

— লাগবে না আমার। বললাম তো।

বলেই হাটা দিলো। আদ্রিয়ান ওকে টেনে নিজের কাছে আনলো। রোদ তখনও ঠাই দাঁড়িয়ে। আদ্রিয়ান টাকাটা রোদের ব্যাগে ভরে দিয়ে দুই হাতে রোদের গালটা চেপে ধরে ঠোঁটে আলতো চুমু খেল তবুও গললো না রোদ। এই মেয়ের এত রাগ? অবাক হয় আদ্রিয়ান। কি এমন বলেছে আদ্রিয়ান? আদ্রিয়ান নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো রোদকে। রোদ কখনো কোন হার্ড সুগন্ধি ব্যবহার করে না অথচ সামান্য সফ্ট ডিওডোরেন্ট ব্যবহারেই এই রোদ থেকে ভিন্ন এক ঘ্রাণ আসে যা বরাবরই আদ্রিয়ানের খুব প্রিয়। অতিপরিচিত এই ঘ্রাণটা শুধু মাত্র তার রোদ থেকেই আসে। রোদের শরীরের ঘ্রাণের সাথে মিশে এমন ঘ্রাণের উৎপত্তি। আদ্রিয়ান নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে বারবার ব্যার্থ হচ্ছে। কাছের নারীর ঘ্রাণে ওর সকল ইন্দ্রিয় অত্যন্ত ধীর গতিতে চলাচল করতে লাগলো। বারবার চাইলো প্রিয় নারীর সান্নিধ্য লাভ। খুব করে চাইলো একটু ভালোবাসা। আদ্রিয়ানের সকল অনুভূতিকে গলায় চেপে ধরে রোদ নিজেকে ছাড়াতে নিলেই আদ্রিয়ান যেন কোন এক নাম না জানা ঘোর থেকে বেরিয়ে আসলো। রোদ যেতে নিলেই আদ্রিয়ান আবারও ওকে ধরলো। রোদের দিকে তাকিয়ে নরম এবং মিষ্ট কন্ঠে বললো,

— তাকাও।

তাকালো না রোদ। আদ্রিয়ান নিজেই ওর মুখটা উঁচু করতেই রোদ তাকালো আদ্রিয়ানের চোখের দিকে। এই চোখ জোড়া যেন রোদকে ভালোবাসায় ভালোবাসায় ধ্বংস করে দিবে। গভীর চোখের মারাত্মক সেই চাহনি। মায়াময় সেই দৃষ্টি। কিছুটা রাগী তো পুরোটাই আদরের সেই জ্বলজ্বল করা চোখ আদ্রিয়ানের। রোদ যেন নিজের ধ্বংস দেখে এই চোখে। ভালোবাসার ধ্বংস। দুমড়ে মুচড়ে শেষ করে দিবে এই ভালোবাসা। জ্বালময় ভালোবাসা আদ্রিয়ানের যা তার চোখ প্রকাশ করছে।
নিজের চোখ নামিয়ে নিলো রোদ। বেশিক্ষণ টিকতে পারলো না আদ্রিয়ানের তীক্ষ্ণ চাহনির কাছে। আদ্রিয়ান রোদের চোখে চুমু খেয়ে বললো,

— তোমার মনে পরে মিশি আর আমার সাথে তোমার প্রথম দেখা। সেটা কিন্তু আমাদের অফিসের সামনের পার্কেই ছিলো। মিশান হোস্টেলে যাওয়ার পর থেকেই মিশিকে নিজের সাথে অফিসে নিয়ে যেতাম আমি। তুমি আমাদের জীবনে প্রবেশ করায় মিশিকে আর নেয়ার প্রয়োজন পরে নি। মা পেয়ে বাবাকে তার একটু কম পেলেও চলে। এখন আবার যাবে। তাতে কি? ঐখানে মিশির প্রয়োজনীয় সবই আছে। তুমি এ নিয়ে চিন্তা করো না ঠিক আছে? আমি কি বুঝাতে পেরেছি?

— হুম।

বেশ ছোট্ট একটা উত্তর দিলো রোদ। আদ্রিয়ান দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললো,

— কাল থেকে বুয়া আসবে। নতুন পেয়েছি। আর কষ্ট হবে না।

রোদ কোন কথা বললো না। আদ্রিয়ানের বুকে মাথা দিয়ে কিছুটা সময় রইলো পরপর নিজেই সরে গিয়ে বললো,

— চলুন।

বের হয়ে টিভি অফ করে সোফা থেকে মিশিকে কোলে তুলে নিলো আদ্রিয়ান। সব অফ করে বেরিয়ে গেলো তিনজন। ওরা বের হতেই দেখলো গতকালের সেই ছেলেটা। আদ্রিয়ান এভয়েড করে চলে যেতে নিলেই রোহান নিজের হাতের অর্ধেক ফুটা একটা গোলাপ মিশিকে দিয়ে বললো,

— গুড মর্নিং প্রিন্সেস।

— গুড মনিং।

মিশি খুশি হয়ে বললো। আদ্রিয়ান না পেরে হাই বলে গাড়িতে উঠলো। ওর কেনো জানি ছেলেটাকে ভালোলাগে না। রোদকে আসতে না দেখে আদ্রিয়ান গলা উঁচিয়ে ডাক দিলো,

— রোদ কাম ফাস্ট।

রোদ তারাতাড়ি উঠে বসতেই আদ্রিয়ান গাড়ী স্টার্ট দিলো। রোহান ছেলেটা তাকিয়েই রইলো। হাতে তার আরেকটা পুরো ফুটন্ত গোলাপ। গোলাপটা দিয়ে নিজের চেহারায় মে’রে বললো,

— তুই ও একা আমিও একা।

________________

রাদের বাসা থেকে জাইফাদের বাসায় বিয়ের তত্ত্ব পাঠানো হয়েছে। রোদ থাকাকালীনই এসব কেনা হয়েছিলো। আজও রোদের যাওয়ার কথা ছিলো সেখানে কিন্তু তা সম্ভব না। রাদ একবাক্যে বাবাকে বলেছে,

— আমাদের বাসা থেকে কেউ যাবে না রোদ তো দূরের কথা। আমার বউ চাই শুধু। বউ এনে দাও ঈদের আগে যে করেই হোক। এসব দিয়ে ড্রাইভারকে পাঠিয়ে দাও।

রাদের বাবা পরলো মহা টেনশনে। এভাবে বললেই তো হয় না। মেয়ের বাসায় ড্রাইভার দিয়েতো আর বিয়ের তত্ত্ব পাঠানো যাবে না। তখনই দিশা এসে ঝটপট করে বললো,

— চাচ্চু আমি যাবো।

পাশ থেকে তিশাও উঁকি দিয়ে মিনমিন করে বললো,

— আমিও চলি।

রাদ গম্ভীর চোখে পরখ করলো দিশাকে। তিশা যাবে মানা যায় এখানে দিশার এত কেন আগ্রহ? এই মেয়ে আবার কোন গন্ডগোল করে দেয়? দিলেই বা তাতে রাদের কি? ভেবেই তুচ্ছ হাসলো রাদ। দিশা রাদের পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করে বললো,

— কি রাদ ভাই? ভয় পেলেন? আপনার খুশিতে কোন ভঙ করে বসি নাকি এ নিয়ে?

রাদ সরে দাঁড়ালো। শক্ত কন্ঠে বললো,

— তোর এতো ঘেঁষা ঘেঁষা কিসের হ্যাঁ? আর তুই আমার বোন যাবি না কেন? একশত বার যাবি?

দিশা হাসলো। মৃত সেই হাসি। কষ্টে জড়জড়ানো সেই হাসি।রাদ নজর ফিরিয়ে নিলো। দিশার কষ্ট যে ও ফিল করে না তা না কিন্তু দিশার প্রতি ওর তেমন কোন টান নেই যদি থাকতো তাহলে একবার হলেও ভেবে দেখতো রাদ।

অবশেষে ইশান এসে সমস্যা সমাধান করলো। ইশান ও তার বউ,দিশা, তিশা, রুদ্র আর সাথে দুই জন এলাকার কাজিন যাবে। রুদ্রকে রাদ দিতে চায় নি কিন্তু পরে মায়ের জোরাজোরিতে রাজি হয়। রাদ মূলত জাইফার মা’য়ের আচরণ এখনও ভুলতে পারে নি। মহিলা বরাবরই লোভী আর স্বার্থপর সাথে ব্যবহার ও ভালো না যদিও রাদকে “বাবা” বাদে কথা বলে না। তবুও রাদের বুঝতে দেড়ী হয় নি যে এই অতিরিক্ত ভালো ব্যাবহারের কারণ হলো রাদদের সম্পত্তি যা মহিলা হাত ছাড়া করতে চায় না। জাইফার সাথে ওর আগেই কথা হয়েছে যে বিয়ের পর রাদ ওদের বাসায় যাবে না। জাইফা কিছুটা চুপচাপ স্বভাবের। ঐ দিনও নির্বাক ই ছিলো। তার মায়ের আচরণ সে খুব ভালো করেই জানে।
ইশানের দিকে রাদ বলল,

— ভাই রাতুলকে বলছি ওকেও নিয়ে যাও।

ইশান সম্মতি জানালো। রাতুলের সাথে এখন ওদের সম্পর্কটা কিছুটা আগের মতো হচ্ছে। যদিও পুরোপুরি না তবুও সবাই স্বাভাবিক যেহেতু স্বাভাবিক তাহলে কি দরকার ছেলেটাকে এভাবে এরিয়ে চলার?
.
তিশা খুবই এক্সাইটেড হয়ে সুন্দর করে রেডি হয়ে দিশার দিকে ফিরে বললো,

— আমাকে সুন্দর লাগছে তো? ভালো করে দেখ তো?

দিশা মনোযোগ দিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো তিশাকে। মুখে হাসি নিয়ে বললো,

— আমার দেখা আর তার দেখা কি এক হলো?

তিশা চমকে তাকালো। জিজ্ঞেস করলো,

— তার মানে?

দিশা ভাবসালীন ভাবে উত্তর দিলো,

— কি জানি?

তিশা এগিয়ে এসে বসলো বোনের পাশে। সমবয়সী হওয়ার দরুন দুইজনের মিল অনেক। তিশা দিশার হাত ধরে বললো,

— কিভাবে বুঝলি?

— মন পুড়া, প্রেমে পুড়া মানুষরা গায়ে নতুন রং লাগা মানুষ দেখলেই বুঝে।

দিশার বিষন্ন কন্ঠের বলা কথাগুলো শুনলো তিশা। কিছু করার নেই। এক তরফা ভালোবাসা এমনই হয়। ভেবেই দীর্ঘ শ্বাস ফেললো।
[ যারা “রাদ,জাইফা,দিশা,ইয়াজ,জারবা,রাতুল” এদের পুরো কাহিনি জানতে চান তারা পড়তে পারেন ঈদ উপলক্ষে আসা আমার ই-বুক “ত্রিধারে প্রেমতরঙ্গ”। পাওয়া যাচ্ছে বইটই অ্যাপে।মূল্য মাত্র ২৫ টাকা]

________________

রোদের ক্লাস শেষ হতেই রোদ ইয়াজের সাথে কথা বলতে বলতে বের হচ্ছিলো। এরমধ্যে ইয়াজের কথার ঢেউ শুরু হয় জারবার কাছে তার সেই ঢেউ শেষ ও জারবার কথাতেই। বান্দা পুরোটা লুটে গিয়েছে প্রেমে তাও কি না প্রেমিকা জারবা। যেই মেয়ে দিনে একশত বার গাল ফুলিয়ে রাখে। কিছু হলেই ইয়াজের কল ধরে না। ঘুরতে নিতে চাইলেও তার একই কথা, ” আম্মু বকবে”। যদি বলে চলো দেখা করি। তাহলে জারবার উত্তর, “ভাইয়া বকবে বাসায় দেড়ী হলে”। রাতে ফোন করা যায় না এই মেয়ের পড়া থাকে। দিনে ফোন করা যায় না এই মেয়ের কলেজ থাকে। বিকেলে কোচিং থাকে। আরে ভাই তাহলে ইয়াজ প্রেম করবে টা কখন? নিজের শত ব্যাস্ততার মাঝেও জারবাকে সময় দেয় ও কিন্তু জারবা?কিছুতেই কিছু না এই মেয়ে।
ইয়াজের এতো এতো অভিযোগ শুনে কান ঝালাফালা হয়ে গেল রোদের। ইয়াজ থামতেই রোদ জোরে হেসে উঠলো। ইয়াজ মুখটা ভোতা করে রাখলো। রোদ হাসতে হাসতে পরে যাবে এমন অবস্থা ওর।
পাশ থেকেই রাতুল যাচ্ছিলো। রোদ হয়তো খেয়াল করে নি। ও নিজের মতো হাসতে ব্যাস্ত অথচ ওর এই গাল ভর্তি হাসি রাতুলের অশান্ত মনটা শান্ত করে দিলো। এই যে রোদ হাসছে গাল দুটোতে গভীর টোল পড়ছে সাথে থুতনিতে গর্ত হচ্ছে। রাতুল বারবার না চাইতেও প্রেমে পড়ে যায়। হঠাৎ ইয়াজের নজর পরলো রাতুলের দিকে। কেমন শান্তি লাগা চোখে তাকিয়ে আছে ছেলেটা। এই দৃষ্টিতে কোন চাওয়া পাওয়া নেই, কোন কামুকতা নেই অথচ তবুও এই দৃষ্টি অপবিত্র। ইয়াজ রোদকে নিয়ে হাটা দিলো। রাতুলও পাশ ফিরে চলে গেল। এখন ও রোদের সামনে পড়ে না তেমন একটা। আজও রাতুল রোদের গালের সেই দাগ ভুলতে পারে না। কেউ কি না তার রোদের গায়ে হাত তুলেছে তাও রাতুলের জন্য। এই ভেবে ভেবে রাতুল সেধেও কথা বলতে যায় না। যদি আবার কোন সমস্যায় পড়ে রোদ?

________________

রোদকে মিশি সহ বাসায় দিয়ে নিচ থেকেই আদ্রিয়ান চলে গেল। আজ আবার সাইডে যেতে হবে ওর। এক দেড় ঘন্টার মধ্যেই চলে আসবে। রোদ মিশিকে নিয়ে ফ্লাটে ডুকে এপ্রোণ আর হিজাব খুলেই কিচেনে ডুকলো। মিশিও কি বসে থাকার পাবলিক? সেও মায়ের সাথে লেগে লেগে হাঁটাহাঁটি করছে। রোদ ওকে ধরে টিভির সামনে দিয়ে আসলেও মিশি উঠে চলে আসে। এভাবে কিভাবে কাজ করবে রোদ? আল্লাহ না করুক গরম কিছু যদি পড়ে টড়ে যায়? এই পাঁজিটাও আজ মা’কে ছাড়তে নারাজ। অগত্যা রোদ ওকে ধরে উঁচু জায়গায় বসিয়ে রান্নায় মনোযোগ দিলো। সকালেই অনেকটা এগিয়ে রাখায় তারাতাড়িই কাজ হয়ে গেল। কিচেন গুছিয়ে মিশিকে নিয়ে গোসল করিয়ে নিজেও গোসল করে নিলো। মিশিকে খাওয়াতে নিলেই তার আজ ওর বায়না বাবার সাথে খাবে। এত করে বুঝালো তাও মিশি শুনছে না। রোদ এবার ধৈর্য হারা হয়ে গেল। হালকা জোর গলায় বললো,

— এখন যদি না খাও মাম্মা কিন্তু আর মিশির সাথে কথা বলবে না।

মিশি টলমলে চোখ করে তাকালো। ঠোঁট ফুলিয়ে রাখতেই রোদ টেনে নিজের কোলে তুলে নিলো। কার সাথে জোর গলায় কথা বলবে ও? এই ছোট্ট পরীটাকে যে ওর জান। মিশি মা’য়ের বুকে লেগে রইলো। বাবাকে ছাড়া আজ খাবে না বাবার মে’য়ে। রোদ না পেরে কল দিতেই আদ্রিয়ান ক্লান্ত গলায় বললো,

— সোনা একটু লেট হবে। খেয়ে নাও।

রোদের বুঝতে দেড়ী হয় নি যে আদ্রিয়ান কতটা ক্লান্ত। তবুও বললো,

— মিশি খাচ্ছে না।

— কেন?

অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো আদ্রিয়ান। রোদ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললো,

— বাবাই ছাড়া খাবে না।

আদ্রিয়ানের ঝট করেই কিছু মনে পরলো। গমগমে গলায় বললো,

— ও খাবেও না। আসছি আমি। আমারই ভুল। প্রমিজ করেছিলাম আজ ওকে খায়িয়ে দিব।

বলেই কল কেটে দিলো আদ্রিয়ান। রোদ অবাক চোখে তাকালো মিশির দিকে যে আপাতত রোদের ছোট বুকে মুখ গুজে আছে। এতটুকুন মিশি কি বা বুঝে প্রমিজের? বাবা’র প্রতি কতটা টান তার। রোদের নিজের বাবা’র কথাও মনে পড়ে গেলো। ফোন নিয়ে কল করবে তখনই দরজায় বেল বাজলো। রোদ ফোন হাতে মিশিকে কোলে তুলেই খুলতেই দেখলো পাশের ফ্লাটের ছেলেটা। রোদকে দেখেই হাসি হাসি মুখ করে তাকিয়ে রইলো। রোদই জিজ্ঞেস করলো,

— চিনি লাগবে?

— কফি করা আছে?

ছেলেটা কিছুটা বেহায়া। এভাবে কেউ চায়? রোদ ভেবে বললো,

— এই টাইমে তো কফি করা থাকে না ভাইয়া।

— ওহ্ আচ্ছা। তাহলে যাই।

বলেই পা ঘুরিয়ে চলে গেল। রোদ হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। কি হলো? ছেলেটা কি মন খারাপ করলো?এই ভর দুপুরে কার ই বা বাসায় কফি করা থাকে? আজীব। রোদকে দরজায় ভাবুক হয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখেই আদ্রিয়ান ভ্রু কুচকে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলো,

–দরজা খুলে এভাবে দাঁড়িয়ে আছো যে?

রোদ যেন হুসে ফিরলো। সাইড হয়ে দাঁড়িয়ে আদ্রিয়ানকে ডুকতে দিলো। আদ্রিয়ান ডুকতেই ক্লান্ত দেহ এলিয়ে দিলো সোফায়। রোদ মিশিকে কোল থেকে নামাতে নিলেও নামলো না মিশি। রোদের গলা জড়িয়ে ধরে রেখেছে। রোদ ওভাবেই ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি এনে আদ্রিয়ানকে দিলো। এতো তাড়াহুড়োয় আজ শরবত করতে পারে নি। আদ্রিয়ান পানি খেয়েই কোনমতে ক্লান্ত দেহটাকে টেনে নিয়ে গোসল করে নিলো। রোদ মিশিকে কোলে নিয়েই সব টেবিলে এনে রাখলো। আদ্রিয়ান ভেজা চুল নিয়েই টেবিলে বসলো। রোদ তাকিয়ে বললো,

— চুল কেন মুছেন না আপনি হ্যাঁ? ঠান্ডা লেগে যাবে তো?

আদ্রিয়ান মিশিকে কোলে নিতে নিতে বললো,

— বউ থাকতে যদি নিজের চুল নিজের মুছতে হয় তাহলে আর কি বিয়ে করলাম।

রোদ মুখ কুচকে তাকালো। চোখ দিয়ে বুঝালো, “আদ্রিয়ান কি ওর চুল মুছানোর জন্য বিয়ে করেছে”? রোদের এহেন আচরণে চোখে হাসলো আদ্রিয়ান। মিশি তখনও মা’কে ছাড়ছে না। আদ্রিয়ান জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই রোদ কিছু বুঝার চেষ্টা করলো পরক্ষণেই কিছু মনে পরতেই জোর করে মিশিকে বুক থেকে তুলে কোলে নিয়ে বসলো। মিশি নিজের ছোট্ট মুখটা নিচু করে রেখেছে। রোদ আদুরে গলায় ডাকলো,

— মা?

………

— আমার মা তাকাবে না?

মিশি একটু মুখ তুলে তাকালো। রোদ অসহায়ের মতো করে বললো,

— মাম্মা এতোগুলো সরি। আমার মা কি মাম্মাকে মাফ করবে না?

আদ্রিয়ান উঠে এসে রোদের পাশে বসে জিজ্ঞেস করলো,

— কি হয়েছে?

রোদের এবার কান্না আসছে। ছোট্ট মিশি তো কথা বলছে না। রোদ আদ্রিয়ানের কথার উত্তর না দিয়ে মিশির সামনে কান ধরে বললো,

— এই যে মাম্মা কানে ধরেছি। মা কথা বলবে না?

মিশি মা’য়ের বুকে লেগে গেল। রোদ আবারও ডাকলো,

— মা?

— মাম্মা।

মিশির এই এক ডাকে রোদের অশান্ত মনটা নিমিষেই শান্ত হলো। আদ্রিয়ান কিছু একটা বুঝলো। দুই মা-মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,

— মা-মেয়ের হলে অসহায় বান্দার দিকে একটু নজর দাও। ক্ষুধা লেগেছে তো।

রোদ মিশির মাথায় চুমু খেল। মেয়েটার এত আভিমান। তিনজন একসাথে খেতে বসলো। আদ্রিয়ান গরুর ভুনা খেতে খেতে বললো,

— তুমি এত মজা করে রান্না করতে পারো জানা ছিলো না আমার।

রোদ মিশির মুখ মুছিয়ে বললো,

— ঐ বাসায় তো মামনি আর আপি রান্নার সুযোগই দিতো না তাই আমার টেলেন্ট দেখাতে পারিনি।

_____________

আজ রান্নার লোক এসেছে। মধ্য বয়স্ক একজন নারী। ইনি শুধু রান্না করে দিয়ে যাবে। আরেকজন ছুটা বুয়া সে ঘরের বাকি কাজ করবে। রোদ রান্নার মহিলাকে কি রান্না করবে তা সব বুঝিয়ে কফি হাতে রুমে ডুকলো। আদ্রিয়ানকে দিয়ে বললো,

— এই নিন।

আদ্রিয়ান কফিতে এক চুমুক দিয়ে বললো,

— প্রিপারেসন কেমন?

— ভয় হচ্ছে।

আদ্রিয়ান আরো কয়েকটা চুমুক দিয়ে কফির মগটা রোদের হাতে দিলো। রোদ বাকিটুকু কফি খেয়ে মগ রেখে আসলো। আদ্রিয়ান রোদকে ধরে নিকটে আনলো। দুই হাত নিজের হাতে নিয়ে হাতের উল্টো পিঠে চুমু দিয়ে বললো,

— কোন টেনশনের কারণ নেই। এমন সব এক্সাম আসবেই। যা পারো তাতে কনসেনট্রেশান ফুল রাখবা আর রইলো ভাইবা। সেটাকে জাস্ট কনফিডেন্টের সাথে হেনডেল করবা। দেসট ইট।

আজ রোদের মেডিক্যালে এক্সাম। সারারাত পড়তে পড়তে দুই চোখ এক করে নি মেয়েটা। সকাল থেকেও বই নিয়ে পড়ে ছিলো। না পেরে আদ্রিয়ান ধমকে পাঠিয়েছে কফির জন্য। পরিক্ষা নিয়ে বরাবরই ভয়ে থাকে রোদ। আজও তাই। আদ্রিয়ানের কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনে এখন ওর মনে ভয় একটু হলেও কমেছে।
.
রোদ হলে ডুকে পরিক্ষায় মনোযোগ দিলো। ভাইবা নিয়ে ওর চিন্তা হচ্ছে একটু। ওর আগেও সাত আটজন যাবে। বাকিরা ওয়েট করছে। রোদের টার্ন আসতেই ও ভেতরে ডুকলো। একজন ফিমেল ডক্টর ও দুই জন মেল ডক্টর তার মধ্যে একজন রাতুল। রোদ স্বাভাবিক ভাবেই ভদ্রতা বজায় রেখে ডুকলো। বাকিদুইজন ডক্টর ওকে টুকটাক প্রশ্ন করতেই রোদ উত্তর দিলো হঠাৎ রাতুল প্রশ্ন করা শুরু করলো। রোদ কয়েকটা পারলো তো কয়েকটা পারলো না। কাউকেই এতক্ষণ ভাইবায় রাখা হয়নি যতক্ষণ রোদকে আটকে রেখেছিলো রাতুল। বাকি দুইজন ডক্টর ও একটু বিরক্ত হলো একজনকে এতো প্রশ্ন করায় কিন্তু সিনিয়র বলে কিছু বলতেও পারে নি। অবশেষে রোদকে হেনস্তা করে ছাড়লো রাতুল৷ কোন কটু বাক্য শোনায় নি কিন্তু রোদের মন খারাপ হয়ে গেল। এতো এতো প্রশ্নের মধ্যে তো ও কতোগুলোর উত্তর পারে নি। নিশ্চিত রাতুল নাম্বার কাটবে এখন। রোদকে যেতে বললেই রোদ সালাম দিয়ে উঠে গেলো। বাইরে দুই তিনজন জিজ্ঞেসও করলো,”এত কি প্রশ্ন করলো”। রোদ উত্তর দিলো না। ওয়াসরুমে ডুকে মুখে পানি দিলো। ব্যাগ হাতে বেরিয়ে গেল মেডিক্যাল থেকে।

রাতুল নিজের কেবিনে ডুকে গা এলিয়ে দিলো। আজ কতদিন পর রোদের মুখ থেকে এতগুলো কথা শুনতে পেয়েছে। না হোক সরাসরি কোন কথা। কথাগুলো হোক মেডিক্যাল সায়েন্স নিয়ে তবুও তো রোদের মুখ থেকে কথা শুনেছে। মনতো চাচ্ছিলো সারাদিন প্রশ্ন করতে। এই যে এই রোদের কথা বলার সময় ঠোঁটদুটো অনবরত নড়ে। চোখ পিটপিট করে মাঝে মধ্যে হাত নাড়িয়ে বলে এগুলো তো রাতুলের হৃদপিণ্ডে ঝঙ্কার তুলে। না চাইতেও রোদকে আজ ও কষ্ট দিয়ে ফেলেছে। কিন্তু কি ই বা করবে? সরাসরি যে রোদের সাথে কথা বলতে পারে না। নাম্বারিং আবার বরাবরই করেছে।

______________

রোদ বাসায় এসেই সব খাবার গরম করলো। ওর কাছে খাবার গুলো কেমন জানি ঝোল ঝোল মনে হচ্ছে। পুরাণ ঢাকার মানুষ আবার ভুনা খেতে বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করে। ঝোল যে খায় না তা না তাই বলে এমন পানি পানি আর হলুদ হলুদ। আরে ভাই বাসায় মসলার কি কমতি পরেছে?এতবড় কোম্পানি রোদের জামাইয়ের। সামান্য মসলা বেশি খেলে নিশ্চিত টাকায় টান পড়বে না। ভাবতে ভাবতে রোদ সব গরম করলো। মিশিকে খাওয়াতে নিলেই মিশি এক লোকমা খেয়ে আর খাবে না। রোদ জোর করতেই মিশি মুখ কালো করে বললো,

— মাম্মা মজা না তো সত্যি।

রোদ নিজের মুখে একটু দিলো। এটা কি আদৌ মুরগী রান্না করেছে। কাঁচা আদার গন্ধ আসছে। রোদ তারাতাড়ি তরকারি থেকে কয়েক টুকরো গোসতো তুলে পানি দিয়ে ধুয়ে অল্প লবন আর মসলা দিয়ে ভেজে ডাল দিয়ে মিশিকে খাওয়ালো। মনে মনে শয়তানি হাসি দিয়ে ভাবলো, আজ আদ্রিয়ানকে এগুলো খাওয়াবে। দেখ বেটা কেমন লাগে। একা সংসারে এখন থেকে হোস্টেলের খাবার খাবি। সখ একদম মিটে যাবে।
আদ্রিয়ান খেতে বসতেই অসহায় মুখ করে নিলো। রোদ আরেকটু জ্বালানোর জন্য বললো,

— ঝোল আছে আনলিমিটেড। দিব।

আদ্রিয়ান মুখটা ভোতা করে বললো,

— রোদ অন্য কিছু নেই?

মায়া হলো রোদের। সারাদিন কাজ করে রাতে এসব খাবার কি খাওয়া যায়? রোদ অন্য প্লেটে আলাদা ভাজা মাংস আর ডাল দিয়ে মেখে আদ্রিয়ানের মুখে তুলে দিয়ে বললো,

— ওনাকে না করে দিবেন। আমিই রেঁধে নিব।

আদ্রিয়ান মুখে তুলে নিলো। এই যে রোদ মাঝে মধ্যে ওকে মুখে তুলে খায়িয়ে দেয় এতে আদ্রিয়ানের বুকটা ভরে যায়। এসব ছোট ছোট আদর ওর খুব করে চাই। পুরো রোদটাকে ওর চাই। একান্ত ভাবে নিজের জন্য চাই। ভালোবাসার জন্য চাই। ভালো থাকার জন্য চাই।

#চলবে…

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ