ভালোবাসার প্রিয়ন – T A Ononya

0
506

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-০১

ভালোবাসার প্রিয়ন,
আমার হৃদয় নিঙড়ানো উষ্ণ ভালোবাসা নিও। ভালোবাসার প্রতীক গোলাপের শুভেচ্ছা তোমায় দিব না। তোমাকে জানাই শারদীয় হালকা শিশির ভেজা শিউলি ফুলেল শুভেচ্ছা। প্রকৃতির কোলে রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার অস্তিত্ব নেই । তোমাকে জানাই আমার মনের রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার শুভেচ্ছা। কারণ তোমার ভালোবাসাহীন এই হৃদয় আজ রক্তিম আভায় রাঙা।

আজ আমি জিজ্ঞাসা করবো না তোমায়, তুমি কেমন আছো? আমি জানি প্রিয়ন তুমি ভালো নেই। কারণ আমার ষোড়শী হৃদয়ে জেগে ওঠা তোমার জন্য যে ভালোবাসার আলোকছটা এসেছিলো তার আভা তোমার হৃদয়কেও নাড়া দিয়েছিল। আমার হৃদ সাগরে উঠা ভালোবাসার ঢেউ তোমার বুকে আছড়ে পড়েছিল তা আমি জানি। সেই ঢেউ এর আঘাতে তুমি হয়তো এখানো জর্জরিত।

প্রকৃতির মাঝে যখন বর্ষার শেষ প্রহর, শরৎ আগমনী বার্তা জানাচ্ছে, আকাশ জুড়ে প্রবল রোদের ঝলকানি, শরতের নীল আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে শুভ্র মেঘের ভেলা, বালুচরে কাশফুলের শুভ্রতার আনাগোনা ঠিক সেই মুহূর্তে আজ তোমায় লিখছি। তোমার কাছে লিখতে গিয়ে আজ কেন যেন শব্দ গুলো মাস্তিষ্কে মেঘের মতো ভেসে বেড়াচ্ছে। কিছুতেই গুছিয়ে লিখতে পারছি না তোমায়। কতদিন ধরেই ভাবছি তোমায় একটা চিঠি দিব। কিন্তু যখনই লিখতে বসি শব্দ গুলো তোমার মতো করে হারিয়ে যায়। কিন্তু আজ আমি পণ করেছি যে করেই হোক তোমার কাছে লিখব। হোক না সে অগোছালো চিঠি তবুও আমি লিখবো।

তুমি কি জানো তোমার মুখে আমি যেদিন “মায়া পরী ” নামটা শুনেছিলাম সেদিন আমার কী যে ভালো লেগেছিলো! মনে হচ্ছিলো দৌড়ে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পরি তোমার বুকে। শুনে নিই তোমার হৃদ স্পন্দন সেখানে কি আমায় ভালোবাসার কথা বলে? জেনে নেই তা। আচ্ছা, তুমিও কি আমার মত তোমার মায়া পরীকে নিজের বাহুডোরে নিতে চেয়েছিলে?

জানি না আজ আমার প্রতি তোমার রাগ হচ্ছে কি-না। তুমি আমায় তো বলে দিয়েছিলে আমাদের মাঝে আপনি সম্পর্কটা তুমিতে কখনোই আসতে দেবে না। কিন্তু আজ তুমি না বলে পারছি না। সত্যিই কি তুমি আমার চিঠি পড়ে রাগ করবে?

তোমার প্রতি মুগ্ধতা আমার তোমায় দর্শনের আগে থেকেই। তোমাকে দেখার পর থেকে আমি নিজেকে পুরোপুরি হারাই তোমার মাঝে। তোমার জন্য আমার মনের কোণে জন্ম নেয় ভালোবাসা নামক বৃক্ষ, যার ডাল পালা গুলোর নাম ছিল অনুভূতি। প্রিয়ন, তুমি কেন বুঝতে পারলে না আমার সেই অনুভূতি? আর বুঝলেও কেন-ইবা উপেক্ষা করে গেলে আমায়?

প্রিয়, তুমি কি এখনো কবিতা আবৃত্তি করো সেই আগের মতো? আমার সাথে যে আগে আবৃত্তি করতে মনে পড়ে তোমার? আচ্ছা এখন কি অন্য কারোর জন্য আবৃত্তি করো?

প্রিয়ন, তুমি আমায় অগ্রাহ্য করলে যাতে তুমি নিজেকে আমার মায়ায় জড়িয়ে না ফেলো। কিন্তু আমি যে আগেই তোমার মায়ার জালে বন্দী হয়ে গেয়েছি। তুমি কেন বুঝলে না তোমাকে না পেলে সেই স্বার্থপর মায়ার অনুভূতি আমার অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ টাও নষ্ট করে দিতে পারে। তুমি কেন বুঝলে না তোমার মায়া পরী যে তোমার আলোয় নিজের জীবনে আলোকরশ্নি ছড়াতে চেয়েছিল। তুমি চাইলেই আমার জীবনসঙ্গী হয়ে ভরিয়ে দিতে পারতে আমার জীবনটা আলোয় আলোয়।

প্রিয়ন, এই প্রিয়ন তুমি কি এখনো আগের মতোই আছো? নাকি সময়ের স্রোতে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছো অন্য কারো মাঝে? না-কি তোমার মাঝে এখনো মায়া পরীর বসত?

আর পারছি না কিছু লিখতে প্রিয়ন। আরো অনেক অনেক অভিযোগ গুলো মনের দরজায় কড়া নাড়ছে কিন্তু আমি তোমায় যে আমার প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসি এখনো। তাই পারছি না অভিযোগে তোমায় জর্জরিত করতে।
কিন্তু আজকের অভিযোগ গুলো না করে পারছিলাম না আর।

তুমি কি জানো প্রিয়ন এখনো আমার মনে তোমার আনাগোনা। এখনো আমি তোমায় ভুলতে পারিনি। কেন পারিনি তা তুমি রবি ঠাকুরের এই উক্তির মাধ্যমেই বুঝতে পারবে, “পৃথিবীতে বালিকার প্রথম প্রেমের মতো সর্বগ্রাসী প্রেম আর কিছু নাই। প্রথম যৌবনকালে যাকে ভালোবাসে, তাহার মতো সৌভাগ্যবান আর কেহই নাই।” আমি পারলাম না তোমার সেই সৌভাগ্যের কারণ হতে।

ভালো থেকো আমার ভালোবাসার প্রিয়ন। বিধাতার কাছে দোয়া রইলো বেলীফুলের মতো শুভ্রতায় ছেয়ে যাক তোমার মন। পুষ্প রঙিন হোক তোমার জীবন। বিদায় বেলায় বলবো তুমি আমার প্রথম প্রেম। তাই শুধু এটুকু জেনে রেখো তোমাকে ভোলা আমার সাধ্যে নয়।

ইতি
তোমার মায়া পরী

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে