বৈধ নাকি অবৈধ পর্ব ৭
জামিয়া পারভীন তানি
“ আচ্ছা আব্বু , তুমি কি আম্মু কে ডিভোর্স দিতে পারবে?”
নাইমের কথা শুনে নোমান সাহেব এর মাথায় রক্ত উঠে যায়। প্রচুর পরিমাণে রেগে গিয়ে বললো,
“ তুই আমার একটা মাত্র ছেলে বলে যা মুখে আসবে তাই বলবি নাকি? আর একটা ও বাজে কথা বলবি না তুই আমাকে। ”
“ তুমি যদি আম্মুকে না ছেড়ে যেতে পারো, তাহলে তূবা কে ডিভোর্স দিতে বলো কোন সাহসে?”
“তূবার মতো মেয়েকে এই বাড়ির বউ হিসেবে কখনো মানবো না আমি। ”
“ তাই বুঝি তূবার উপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করেছিলে তখন? ”
“ হ্যাঁ করেছিলাম, একটা অবৈধ মেয়েকে ছেলের বউ করা যায় না নাইম। ”
“ নিজের বোনের মেয়েকে অবৈধ বলতে লজ্জা লাগে না তোমার? ”
“ ও তোর ফুপুর আপন মেয়ে না। তোর ফুপু একটা জারজ মেয়েকে মানুষ করেছে। ”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
তূবা এই কথা টা শুনে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। এতো দিন যাকে মা বলে জেনে এসেছে সে কিনা তার মা নয়। নাইম আওয়াজ শুনে ঘরের দিকে ছুটে আসে। এসে তূবাকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে তাড়াতাড়ি কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়। কথাটা নিজেও হজম করতে পারছেনা, কিন্তু কিভাবে সম্ভব এসব। কিছু ভেবে না পেয়ে তূবাকে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করতে থাকে নাইম৷ হাজার হোক মেয়েটাকে এক সময় খুব ভালোবাসতো! এখনো হয়তো ভালোবাসে। নইলে তূবার উপর যতই অত্যাচার করুক না কেনো তূবাকে কষ্ট দিয়ে নিজেই কষ্ট পায় কেনো!
কিছুক্ষণ পর তূবার জ্ঞান ফিরে আসে, উঠে বসে নাইমের হাত ধরে বললো,
“ সত্যিই কি আমি জারজ! মামা এভাবে বলতে পারলো!”
“ যাই হোক তুমি আমার সাথে যাবে। ”
“ কোথায়? ”
“ যদি বলি জাহান্নামে, তাহলে ও তুমি যাবে। ”
“ আচ্ছা যাবো। কিন্তু…. ”
“ এই বাসার জঘন্য লোক দের সঙ্গে থাকার কোনো ই প্রয়োজন নেই। যাদের মিথ্যে কথায় আমি আমার বিবাহিতা স্ত্রী কে ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম অন্তত তাদের সাথে থাকার কোনো দরকার নেই। ”
“ আমি আর সহ্য করতে পারছিনা, আমাকে মেরে ফেলুন, আমি বাঁচতে চাইনা। ”
নাইম তূবার কান্না থামানোর জন্য অনক চেষ্টা করার পর আদর করতে শুরু করে। এতটা আদর যে তূবা কিছুটা সময় নাইমের ভালোবাসার ছোঁয়া তে হারিয়ে যায়।
তূবা কিছুক্ষণ পর খেয়াল করে নাইমের বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে সে৷ নাইমের উপর সব রাগ ঝরে পড়ে। এই প্রথম ভালোবেসে নাইম ওকে কাছে টেনে নিয়েছিলো। ভালোবাসার মানুষ যদি কাছে ডাকে, তার ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকা যায় না৷ মুখে একটু মুচকি হাসির ছোঁয়া। নাইম তূবার মুখে আলতো পরশ দিয়ে বললো,
“ এখন তোমাকে বেশ সুন্দরী লাগছে। ”
তূবা চোখ নামিয়ে নেয়, নাইম কে যে সেও খুব ভালোবাসে। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর নাইম ওর কাছে ধরা দিয়েছে। কিন্তু ধরে রাখতে পারবে তো! পরক্ষণেই মন টা খারাপ হয়ে যায়। বিষন্নতার ছাপ চোখে মুখে ফুটে ওঠে। নাইম তূবাকে জিজ্ঞেস করে,
“ হটাৎ আবার কি হলো তোমার? ”
“ আমি কার মেয়ে নাইম?”
“ ভুলে যাও, তুমি আমার স্ত্রী। আর কোনো পরিচয় লাগবে তোমার? যদি লাগে তাহলে তুমি তূবা, এটাই তোমার পরিচয়। ”
“ তবুও… ”
নাইম তূবার মুখে হাত দেয়। আর কথা বাড়িও না ইশারায় বুঝিয়ে দেয়।
“ ছোট বেলার দুষ্টুমি গুলো মন কেড়ে নিতো, একটা পিচ্চি মেয়ের মুখের হাসি হৃদয় জুড়িয়ে দিতো।
মেয়েটা আজ বড় হয়ে গেছে, তার মায়াবী চোখের দিকে তাকিয়ে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হয়। কিন্তু ও অপরাধী জানার পর শুধু ওকে কষ্ট দিতে মারতে ইচ্ছে হতো। আর যখন জানতে পারি প্রিয়তমা সম্পূর্ণ নির্দোষ তখন প্রিয়তমার প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যায়। এটাই হয়তো মানুষের মন, ক্ষনে ক্ষনে বদলায়। ”
হটাৎ তূবার হাতের ছোঁয়ায় নাইমের খেয়াল ফিরে আসে৷ কি সব ভাবছিলো ভেবে মুচকি হাসে। তূবাকে বললো,
“ রেডি হয়ে নাও, এই বাসাতে আজই তোমার শেষ দিন। ”
“ তুমি তাদের একমাত্র সন্তান, যাওয়া টা কি ঠিক হবে?”
“ হ্যাঁ, কারণ বাবা মিথ্যাবাদী। ”
“ যদি তোমার বাবার বলা কথা গুলো সত্য হতো! তাহলে কি আমায় মেনে নিতে? ”
নাইম রাগে তূবার গলা চেপে ধরে, আর বলে,
“ এরকম হলে তোকে মেরেই ফেলতাম। ”
তূবার গলাটা ছেড়ে দেয়। তূবাকে রেডি হতে বলে নাইম ঘর থেকে বেরিয়ে আসে।
“ মাকে ছেড়ে চলে যেতে পারবি?”
নাইমের মায়ের কথায় নাইম পিছু ফিরে চায়।
“ হুমম, যেতে তো হবেই। ”
“ তুই যে তূবা কে এতো ভালোবাসতিস, আগে কেনো বলিস নি?”
“ বললে কি করতে? বাবার থেকে একধাপ এগিয়ে গিয়ে কি তূবাকে মেরেই ফেলতে?”
“ বিয়ে তো করিয়ে দিতে পারতাম! ”
“ তূবা কে কি আমি এখন বিয়ে করেছি ? নাকি ৫ বছর আগে বিয়ে করেছি! বাবা সেই বিয়ের কথা জানার পর তূবাকে আমার জীবন থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আর সম্পূর্ণ ব্যপার তোমার কাছে থেকে চেপে রেখেছে। নইলে তোমারা তূবাকে আপুর বিয়েতে দাওয়াত ও দিতে না, তূবার সাথে দেখাও হতো না। আর বিয়ে তো দূরেই ছিলো। ”
কিছুক্ষণ অবাক হয়ে কথা শুনে নাইমের আম্মু । পরক্ষণেই বলে,
“ তাহলে যাওয়ার আগে আমাকেও নিয়ে যাস৷ ”
“ আগে ওকে নিয়ে যাই, তুমি যাওয়ার হলে পরে যেও। এখন প্লিজ মন খারাপ করোনা। ”
তূবা কে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে নাইম। গন্তব্য বন্ধুর বাসায়, সব কিছু ঠিকঠাক করে তূবা কে নিয়ে বাইরে চলে যাবে ।
গাড়ি থেকে নামার সময় তূবার নাম ধরে কেউ ডাকে, তূবা পিছনে ফিরে তাকাতে দেখে শোভন। তূবা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে নাইম জিজ্ঞেস করে,
“ উনি কে? ”
তূবা ভয়ে ভয়ে বলে,
“ ক্লাসমেট। ”
ততক্ষণে ছেলেটা কাছে চলে আসে। এসেই নাইমের উদ্দেশ্যে বলে,
“ আপনাকে তো ঠিক চিনলাম না! কে আপনি? ”
নাইম ভ্রু কুঁচকে বলে,
“ আপনি তূবাকে কিভাবে চিনেন?”
“ আরে আমি শোভন, ওর বয়ফ্রেন্ড। ওর বাসায় তো আমাদের বিয়ের কথা পাকা করে রেখেছি। ”
নাইম তূবার দিকে তাকালো, তূবা ভয়ে চুপসে গেছে। নাইম তূবার গালে জোরে করে থাপ্পড় দেয়।
চলবে….
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/