বৈধ নাকি অবৈধ পর্ব ৩
জামিয়া পারভীন তানি
তূবার গালে জোরে থাপ্পড় দেয় নাইম, এরপর বুকে জড়িয়ে ধরে বললো ,
“ তোর মাথা ঠিক আছে? কি করতে যাচ্ছিলি তুই? তোর কিছু হয়ে গেলে আমার কি হবে?”
তূবা নাইম কে সরিয়ে দেয়, আর চিৎকার করে বললো,
“ নরপশুর খাদ্য হবার চেয়ে নিজেকে শেষ করে দেওয়া ভালো।”
নাইম খুব শান্ত গলায় বললো,
“ দেখো, যা হবার হয়ে গেছে, তখন আমি মাতাল ছিলাম! না বুঝে করেছি, এর জন্য তোমার ক্ষতি কেনো করবে? তোমার মা বাবার কি হবে ভেবে দেখেছো ?”
তূবা অন্যদিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে পড়ে। নাইম বুঝতে পারছে তূবার সাথে অন্যায় করেছে সে! এমন টা সে করতে চায় নি, যদি না বন্ধুরা ওয়াইনের বোতলে উত্তেজক ট্যাবলেট না মিশিয়ে দিতো! ট্যাবলেট মিশানোর কথা আগে জানলে কখনোই ওই ওয়াইন খেতো না সে। আফসোস করতে করতে তূবার হাত ধরে নাইম। মাথা নীচু করে বললো,
“ বিয়ে করো আমায়, তবুও সুইসাইড করোনা।”
“ কখনো না! করার হলে তখনই করতাম। ”
নাইম বুঝতে পারে তূবা সব ভুলে গেছে। নাইম তূবার চোখে চোখ রেখে বলে,
“ তখন হয়নি, এখন হবে। আজই তোমাকে বিয়ে করবো। আম্মুর তোমাকে অপছন্দ না। বিয়ে করলে তুমি সুখেই থাকবে। আর যদি মনে হয় আমার সাথে থাকবেনা, সেপারেশন নিবে। আপত্তি নেই, দিয়ে দিবো। ”
তূবা বললো,
“ একটা ধর্ষক কে বিয়ে কখনো ই করবোনা। ”
“ দেখো তূবা, এই ঘটনা রিনা জানে। ও পাঁচ কান করবে। তুমি তো জানোই মেয়েরা রেডিও , যা হয় তার ডবল গুজব ছড়ায়! সমাজ এতো বাজে, আমার প্রব্লেম হবে না। হবে তোমার, কটু কথা শুনতে শুনতে তুমি বেঁচে থেকেও মৃত হয়ে যাবে। ”
“ সেজন্যই মরে যাওয়া ই ভালো। ”
“ মৃত্যু কখনো সমাধান হতে পারেনা! যদি তাই হতো, তো আত্মহত্যা মহাপাপ হতো না। ”
তূবা উঠে দাঁড়ায়, দৌড়ে রুম থেকে চলে যেতে চায়। তখন নাইম দৌড়ে গিয়ে তূবা কে আটকায়, আর বললো,
“ ভালো ভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিলাম, না শুনে কাজ টা ভালো করলে না৷ এর শাস্তি তুমি পাবে, জোর করে বিয়ে করবো তোমাকে। ”
তূবা জোরে করে বলে,
“ আমার লাশ কে বিয়ে করিয়েন। ”
নাইম তূবা কে আবারও থাপ্পড় দেয়, আর বলে,
“ মরার কথা তুই বলবিনা, তোকে মরতে হলে আমার হাতে মরতে হবে। ”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
নাইমের আম্মু মিসেস রেবেকা বেগম তখনই তূবার ঘরে এসে উপস্থিত হয়, নাইমের উদ্দেশ্যে বললো,
“ তোকে জন্ম দিয়ে কি ভুল করেছি?”
“ আম্মু এটা আমাদের দুজনের বিষয়, তুমি নাক গলাইও না প্লিজ।”
“ বাড়ি টা এখনো তোর বাবার, আমার স্বামীর বাড়িতে বাড়াবাড়ি কিছু হবে, আর আমি চুপচাপ বসে থাকবো!”
“ তো থাকো তোমার বাসায়, তূবা কে নিয়ে অন্য যায়গায় থাকবো৷ ”
“ আপনার সাথে কোথাও যাবো না। ছাড়ুন আমাকে আপনি৷ ” তূবা আবার রেগে কথা টা বললো।
নাইম ওর আম্মুর সামনেই তূবা কে বুকের মাঝে চেপে ধরে ফিসফিসিয়ে বললো,
“ বেশী বাড়াবাড়ি করো না, নইলে কাল রাতের সিসিটিভি ফুটেজ বের করবো। গোটা দুনিয়া দেখার আগে তোমার বাপ মা দেখবে। ”
তূবা চোখ দুটো নিচের দিকে তাকিয়ে বললো,
“ ছিঃ ”
নাইম তূবার হাত ধরে বাইরে নিয়ে যেতে চাইলে তূবার মামী তূবা কে বললো,
“ বাইরে যাস না, তোরা বস। তোদের বিয়ের ব্যবস্থা বাড়িতেই করছি। ”
তূবা প্রথমে না চাইলেও বিয়ে করতে বাধ্য হয়। এতো কিছুর পর বাসর রাতে ঢুকে নাইমের থাপ্পড় খেয়ে তূবার ঘৃণা আরোও বেড়ে যায়।
বিয়ের পর দিন ঘুম থেকে উঠে কোনোরকম শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে আসে তূবা৷ নাইম তখনও ঘুমে আছে দেখে দরজা খুলে বাইরে বের হয়।
“ বিয়ের পর নতুন বউয়ের ভেজা চুল, গলায় আদরের চিহ্ন, এ যেনো সোনায় সোহাগা! ”
নূরা এসেই তূবা কে বললো।
তূবা হটাৎ গলায় ওড়না দিয়ে ঢেকে দেয়, আর মনে মনে ভাবে, “ হুহহ, এটা ভালোবাসার চিহ্ন নাকি অত্যাচারের চিহ্ন তা যদি বুঝতে!”
মুখে কিছু না বলে মুখ মলিন করে দাঁড়িয়ে থাকে। অতঃপর বললো,
“ আমি হোস্টেলে ফিরে যেতে চাই, প্লিজ আটকাবেন না আপু।”
“ তুই এই বাড়ির বউ হতে আগে থেকেই চাইতিস, আর আজ যখন তোর উদ্দেশ্য স্বার্থক তখন তুই চলে যেতে চাইছিস? ” তূবার মামা কথাটা বললো।
তূবা মাথা নীচু করে বললো,
“ তখন আপনার ছেলে আমাকে ভালোবাসতো, আমিও তাকে পছন্দ করতাম! কিন্তু এখন তাকে ঘৃণা করি। আর যাকে ঘৃণা করি তার সাথে ঘর করা যায় না। তাও যদি চরিত্র ঠিক থাকতো! “
কথা টা বলার সাথে সাথে তূবার চুলের মুঠি ধরে নাইম। ঘুম থেকে উঠে এসেই তূবার চুল ধরে টেনে নিয়ে ঘরে যায়। তূবা ব্যথায় ককিয়ে উঠে, তবুও পাষাণের মন গলে না। বেডের উপর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, দরজা বন্ধ করে তূবার হাত ঘুরিয়ে ব্যথা দেয় তূবা কে। তূবা এক হাতের নখ দিয়ে নাইমের গালে আঁচড় দিয়ে বললো,
“ ছোটলোক কোথাকার, লাগছে আমার! ছাড় বলছি। ”
নাইম তূবার মুখ চেপে ধরে বললো,
“ একদম চিল্লাবিনা, গলা টিপে মেরে ফেলবো। তোর সাহস হয় কিভাবে! আমার আব্বুর সামনে আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলিস? তোর চরিত্র ঠিক আছে? ”
“ আমি কোনো পাপ করিনি।”
“ তাহলে শোভনের সাথে তোর খোলামেলা ভিডিও কোত্থেকে আসলো? ”
“ একদম মিথ্যা অপবাদ দিবেন না, আল্লাহর গজব পড়বে।”
“ ধ্বংস হয়ে গেছি তোকে ভালোবেসে, আর কি চাস তুই?”
“ হুহহহহ, ভালোবাসা মাই ফুট। আপনাকে আমি ঘৃণা করি। ” বলে তূবা নাইমের মুখে থুথু দেয়৷
নাইম সাথে সাথে তূবার দুই হাত পেছনের দিকে ঘুরিয়ে মুচড়ে দেয়। আর চিৎকার করে বললো,
“ তোকে নিয়ে ঘর করার জন্য বিয়ে করিনি, তোর বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তি দিতে বিয়ে করেছি। কথাটা মাথায় ঢুকিয়ে নে। ”
তূবা কেঁদে ওঠে, এতো কষ্ট যে সহ্য করতে পারছেনা সে!
চলবে?
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/