Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"বৃষ্টি ভেজা রাত পর্ব-৮+৯

বৃষ্টি ভেজা রাত পর্ব-৮+৯

#বৃষ্টি_ভেজা_রাত💖
#মেহেদী_হাসান_রিয়াদ💖

#পর্বঃ__৮_ও_৯

গাড়ি থেকে নেমে রাতের সাথে কোনো কথা না বলেই ঘরের দিকে হাটা ধরলো বৃষ্টি। আজ আর রাতের কোনো কথাই শুনবোনা। পেয়েছেটা কি ও, আমি তার কোন জনমের কাজিন হই? বেটা খাচ্চর, পরিচয় জদি না দিতে পারস তাহলে এভাবে ক্যাপল হয়ে আমার সাথে যাওয়ার কি দরকার ছিলো। আমি কি বলেছি?
বিরবির করতে করতে সীড়ি বেয়ে উঠে যাচ্ছে বৃষ্টি। হাতের আঙুল নাড়িয়ে নাড়িয়ে বিরবির করতে করতে বেখেয়ালি ভাবে পা মচকে যায় বৃষ্টির।
– আউ…………
চিৎকার দিতেই চোখ বন্ধ করে নেয় সে। হয়তো অপেক্ষা করছে এরপর কি হবে তা দেখার জন্য। কিন্তু না, তেমন কিছুই হয়নি। চোখ খুলতেই সামনে ভেসে উঠে রাতের চেহারাটা। রাত একহাতে বৃষ্টির হাত ধরে আছে অপর হাত বৃষ্টির কোমরে। রাতের হাত আচমকাই কোমরে চলে যাওয়া অপ্রস্তুত হয়ে যায় বৃষ্টি। লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলে সে। রাত তাতে কোনো ভ্রু-ক্ষেপ না করে শুন্যে তুলে বৃষ্টিকে। তারাতারি সেখান থেকে হেটে রুমে চলে আসে রাত। বৃষ্টি যেভাবে বাঘে ধরা চিৎকার দিলো তাতে এক্ষুনি মা, আরশি আর চৈতি এসে হাজির হয়ে যাবে। বাবা অফিসে তাই আসার কোনো সম্ভাবনাও নাই। কিন্তু মা ও ছোট বোনের সামনে এভাবে থাকাটাও পুরুপুরি লজ্জার ব্যাপার।

রুমে এনেই ধপাস করে নামিয়ে দেয় বৃষ্টিকে। একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বিছানায় বসে পড়ে বৃষ্টি। তীব্র রোদে এই দুপুর বেলায় খনিকটা পথ যার্নি করে ক্লান্তি নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে যায় রাত। বৃষ্টি ওভাবেই চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ে বিছানায়।
প্রায় আধা ঘন্টা পর লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে টাওয়াল দিয়ে স্নিদ্ধ চুলগুলো মুছতে মুছতে বেড়িয়ে আসে রাত।
রাতকে দেখেই উঠে বসে বৃষ্টি। ওয়াশ রুমে যাওয়ার জন্য মেঝেতে পা ফেলতেই আউ করে উঠে বৃষ্টি। খেয়াল করে ডান পা টা ফুলে যাচ্ছে তার। সাথে অসম্ভব ব্যাথা। কি ব্যাপার? এতোক্ষন তো কোনো ব্যাথা ছিলোনা। কিন্তু হটাৎ এমন ব্যাথা করছে কেনো। পা টা কি সত্যিই মচকে গেছে? হালকা কোড়াতে কোড়াতে জামা নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে যায় সে।
ফ্রেশ হয়ে অনেক্ষন হলো বিছানায় সুয়ে আছে বৃষ্টি। ব্যাথাটা আরো আগের চেয়ে বারছে। খাবার রেডি করে সকলে খেতে বসেছে নিচে বৃষ্টি আসছেনা দেখে রাতের মা কয়েকবার ডেকেছে তাকে। রাত রুমে এসে দেখে বৃষ্টি শুয়ে আছে লম্বা হয়ে। আর চোখ দিয়ে পানি পরছে তার। রাত গিয়ে বসলো তার পাশে।
– সবাই তোমার জন্য নিচে অপেক্ষা করছে, আর তুমি সুয়ে আছো? চলো চলো। একি তোমার চোখে পানি? কাদছো কেনো?
– পা টা প্রচন্ড ব্যাথা করছে মনে হয় ভেঙে গেছে।
রাত পায়ের দিকে তাকাতেই দেখে ডান পায়ের পাতাটা অনেকটা ফুলে গেছে।
– এতো সিরিয়াস বিষয় আমাকে না বলেই একা একা রুমে শুয়ে আছো? তোমার তো এখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে পা এক্সরে করতে হবে। দেখি উঠো।
– আমার ক্ষুদা লেগেছে খুব।
হটাৎ বৃষ্টির এমন করুন শুরে বলা কথাটা যেনো বুকে গিয়ে লেগেছে রাতের। বড্ড মায়া কাজ করছে আজ বৃষ্টির প্রতি।
নিচ থেকে খাবার নিয়ে এলো বৃষ্টির জন্য। খুব মনোযোগ দিয়ে খাবার মেখে মেখে বৃষ্টির মুখে তুলে দিচ্ছে সে।

আরশি ও রাত্রি চৌধুরি বৃষ্টিকে ধরে ধরে গাড়িতে বসিয়ে দিলো। রাত ড্রাইবিং করছে।

– চিন্তার কোনো কারণ নেই। পায়ের কিছুই হয়নি। শুধু একটু মচকে গেছে। হাটাচলা করলে আবার ঠিক হয়ে যাবে। আর আমি কিছু ঔষধ লিখে দিচ্ছি এগুলো সময় মতো খাওয়ালে কালকের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যাবে।
ডাক্তারের সস্থির কথা শুনলেও সস্থির নিশ্বাস ফেলছেনা রাত। ফার্মেসি থেকে ঔষধ গুলো নিয়ে বৃষ্টিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে রাত। ধরে ধরে ঘরে নিয়ে গেলো বৃষ্টিকে।
হাটা চলা করতে বললেও তাতে নারাজ বৃষ্টি। ঘুম পাগলি এখন হাটতে পারবেনা। গুম পাগলি এখন ঘুমাবে। প্রচুর ঘুমাবে।

পায়ে ঠান্ডা শীতল ছোয়া অনুভব করতেই চোখ মেলে বৃষ্টি। প্রায় সন্ধা পার করে দিয়েছে এক ঘুমে। দেখে রাত খুব মনোযোগ দিয়ে তার পায়ে বরফ লাগিয়ে দিচ্ছে। বরফ লাগিয়ে দিলে ব্যাটা মোটামুটি কমে যায়। কিন্তু রাত তার পায়ে হাত দেওয়াতে একটু অস্বস্থি বোধ হয় বৃষ্টির। আচমকাই পা সরিয়ে নিলো সে।
– ছি ছি, কি করছেন এটা? আপনি আমার পায়ে হাত দিচ্ছেন?
– তো মোহারানি, এটাও যদি কোনো অপরাধ হয়ে থাকে তাহলে শাস্থি অবস্যই দিবেন। তার আগে তো পায়ের ব্যাথা কমতে হবে তাইনা? তো চুপচাপ বসেন।
– আমি অপরাধের কথা বলছিনা। আপনি আমার সম্পর্কে স্বামী হন। আর আমার থেকে বয়সেও বড়। তো আপনার আমার পায়ে হাত দেওয়া টা সোভা পায় না।
বৃষ্টির কথায় রাত ঠোট জোড়ায় আঙুল দিয়ে “স” সুচক শব্দ করতেই থেমে যায় বৃষ্টি।

বৃষ্টিকে ধরে ধরে ছাদে অনেক্ষন হাটালো রাত। কারণ মচকে যাওয়া পা হাটা চলা না করলে ব্যাথা কমবেনা সহজে। অনেক্ষন হাটাহাটির পর দোলনায় গিয়ে বসে দুজন। বৃষ্টির আজ ব্যাথার চেয়েও রাতের কেয়ার গুলোই উপভোগ করছে বেশি। স্বামির কেয়ার পেতে হলে দেখি রোজ রোজ অসুস্থ হতে হবে। রাত আজ কিছু বললেও কানের এপাস দিয়ে ঢুকে ওপাস দিয়ে বের করে দিচ্ছে সে। শুধু তাকিয়ে আছে রাতের বার বার নরে উঠা ঠোটের দিকে।
বৃষ্টিকে দোলনায় গিয়ে নিচে চলে যায় রাত। গরম গরম চা বানিয়ে আবার এসে বসে বৃষ্টির পাশে। বৃষ্টির দিকে কাপ বাড়িয়ে দিয়েই চায়ে চুমুক দিলো রাত। রাতের দিকে তাকানো অবস্থায় গরম চায়ে চুমুক দিতেই যেনো গালটা পুরে গেলো তার। এক হাতে চায়ের কাপটা ধরে আরেক হাতের আঙুল গুলো নাচিয়ে নাচিয়ে রাতকে বুঝাচ্ছে যে তার গাল পুরে গেছে একেবারেই।
উত্তেজিত হয়ে রাতও এক হাতে গালটা ধরে আরেক হাত দিয়ে বাতাস করতে থাকে। বাতাস কম মনে হওয়ায় মাঝে মাঝে ফু দিয়ে দিচ্ছে সে। বৃষ্টি আবারও আড় চোখে তাকিয়ে আছে রাতের মুখের পানে। মনে হচ্ছে রাতকে এভাবে দেখতে হলে, আজ থেকে রোজ চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে গাল পুড়ে ফেলতে হবে। তবে গালের এই জ্বালা পোড়া রাতের এই ফু দেওয়াটা এভাবেই সারা রাত পার হয়ে গেলেও মন্দ হয় না। সে না হয় এভাবেই মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকবে আজ।
,
,
,
কেটে গেলো আরো দু,একদিন।
আজ রিদ আসছে এই বাড়ি। ভাইয়ের এম মাত্র ছেলে বলে আথিতিয়তার কমতি রাখবেনা রাত্রি চৌধুরি।
বিকেল বেলায় বসে বসে লুডু খেলছে আরশি ও বৃষ্টি। রিদ এসেই পেছন থেকে আরশির চোখ দু,টি চেপে ধরলো। এতে একটুও অবাল হলোনা আরশি। শান্তভাবে বলে উঠলো,
– খেলার সময় ফাজলামি করোনা তো রিদ ভাই। দেখছোনা ভাবিকে শুকনো ভাবে একটা গোল খাইয়ে দিচ্ছি।
রিদ চোখ ছেরে ধপ করেই আরশির পাশে বসলো,
– তুই কি করে বুঝলি যে এটা আমি?
– এই অসময়ে ফাজলামিটা তুমি ছারা আর কে করতে পারে বলো। তাছারা তোমার এসব ফাজলামিতে আমি রোজই অভ্যস্ত। সো তোমার ছোয়াও আমি আলাদা বুঝতে পারি।
পাশ থেকে বৃষ্টি বলে উঠে,
– সে কিরে আরশি। রিদ ভাইয়ার ছোয়াটাও কি তুমি মনে একে ফেলেছো। তোমরা যে এক ট্রেনে এতোগুলো স্টেশন পার হয়ে গেলে আগে তো জানতাম না।
বৃষ্টির কথায় একটু বিষম খেলো আরশি।
– ফাজলামি করোনাতো ভাবি। আমি তো কথার কথা বললাম।
রিদ একটা বাকা হাসি দিয়ে বলে উঠে,
– বুঝলেন ভাবি, আপনার ননদ টা আস্ত এক গাধি। এই মানবকে মিস করলে কোন গাধার কপালে জুটবে কে জানে?
বলতে বলতেই রুম থেকে বেড়িয়ে যায় রিদ।

সন্ধায় কলেজ রোড ধরে সোডিয়ামের আলোয় পাশাপাশি হাটছে রিদ ও আরশি। রিদ ভ্র কুচকে আরশির দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,
– আজ হটাৎ আমায় নিয়ে হাটতে বের হওয়ার কারন?
– এমনি ইচ্ছে হলো তাই।
রিদ পকেটে হাত গুজে হেটে চলছে নিরবে। কিছুক্ষন পর চোখ পরলো কলেজের পাশে থাকা ফুচকার স্টলে। হুট করে আরশি বলে উঠে,
– ফুচকা!
– খাবি?
– হুম।
ফুচকার স্টলে গিয়ে দেখে জাফর মিঞা। আরশির জন্য কলেজের এদিকে প্রায়ই আশা হয় রিদের। সেই সুবাদে স্টলের মালিক জাফর মিঞার সাথে, ভালো পরিচয় রিদের।
– আরে রিদ ভাই অনেকদিন পর আসলেন। কেমন আছেন?
– জ্বি আলহাম্দুলিল্লাহ। আপনার কি খবর।
– এইতো ভাই আল্লায় রাখছে।
– ঝাল করে এক প্লেট পুচকা দিন, আর আরেকটা ঝাল কন করে।
– আচ্ছা মামা দাড়ান দিচ্ছি।

ফুচকা খেয়ে রাত বিল দিতে লাগলে জাফর মিয়া বলে,
– ভাইয়া, বিল ১২ হাজার ৬ শত টাকা।
– মজা করবেন না ভাই নিন।
– মজা করছিনা ভাই, আরশি গত দের মাস ধরেই এখানে ফুচকা খায় বান্ধবিরা সহ। বিল সব আপনার নামে। বললো, এক সাথে দিয়ে দিবে।
রিদ ভ্রু কুচতে আরশির দিকে তাকিয়ে দেখে এখনো মনোযোগ সহকারে ফুচকা ঢুকাচ্ছে গালে। যেনো এসবে তার কোনো পাত্তাই নেই। অবশসেষে রিদের দিকে তাকিয়ে বলে,
– হা করে তাকিয়ে আছো কেনো রিদ ভাইয়া। বাকিই তো খেয়েছি। চুরি তো আর করিনি। দিয়ে দাও বিল।
– এতো ফুচকা কি করে তোর পেটে গেলো তাইতো বুঝতে পারছিনা। অন্য খাবার হলে মানা যেতো। কিন্তু, সারে বারো হাজার টাকার ফুচকা তো পাহার সমান। এতো পুচকা খেলি কিভাবে।
– আরে আমি কি এক দিনে খেয়েছি নাকি? আর আমার সাথে আমার বন্ধবিরাও ছিলো। এতো কথা না বলে বিলটা দিয়ে দিলেই তো হয়।
রিদ একটু মাথা ঝাকিয়ে মানি ব্যাগটা বের করলো। দেখে ঠিক ১২ হাজার ৬ শত টাকাই আছে।
বের করে দিয়ে দিলো জাফর মিঞাকে। কি রে এখান থেকে ক্রেডিট কার্ডটা কোথায় গেলো? মানি ব্যাগ তো পুরাই খালি।
আরশি গলা টেনে বলে উঠে,
– কি খুজছো?
– ক্রডিট কার্ডটা খুজে পাচ্ছিনা।
– হয়তো ভুলে বাসায় ফেলে এসেছো।
– হতে পারে।

আবারও হাটা ধরলো তারা।
– দেখ কি করলি? মানি ব্যাগ পুরাই খালি। আর কার্ডটাও আনতে ভুলে গেছি।
– চাপ নিও না ভাইয়া। তোমার কাছে নেই তো কি হয়েছে? আমার কাছে তো আছে। এই মুহুর্তের জন্য তুমি ফকির হয়ে গেলেও কিন্তু আমি ফকির নই।
আরশি জেদ করেছে আজ আর বাড়ি ফিরবেনা সে। সারা রাত ধরে এই শহরটা ঘুরবে সে।
রাতে খাবারের বিলটাও দিলো আরশি।

রাত তখন ১১ টা ৫০ মিনিট।
রিদের চোখটা বেধে নিলো আরশি।
– চুপচাপ চলো কোনো প্রশ্ন করবেনা।
– কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস এভাবে?
– মেরে ফেলতে। চুপ চাপ থাকো।
একটা নির্দিষ্ট যায়গায় নিয়ে আসলো রিদকে।
– কিরে আর কতোক্ষন?
১২ টা বাজতেই চোখ খুলে দিলো আরশি। রিদ দেখে একটা খোলা মাঠে। মাঝখানটা মোমবাতি দিয়ে সাজানো। মোমবাতির মাঝখানে রয়েছে আবার একটি বড় কেক।
– এসব কি? কেনো?
– হ্যাপি বার্থডে টু ইউ ভাইয়া। আজনা ২৫ শে অক্টোবর, তোমার বার্থডে। সো, সারফ্রাইজ।
– আমার তো মনেই ছিলোনা যে আজ আমার বার্থডে। তোর কি করে মনে থাকলো?
– ওসব বাদ দাও তো। আগে বলো, সারফ্রাইজড হয়েছো কিনা?
– ভিষন।
– আর এই নাও এগুলো তোমার বার্থডে গিফট।
– তার মানে তুই তখন শপিং গুলো রাতের জন্য বলে বলে আমার জন্য করেছিস?
– হুম, আর এই নাও তোমার ক্রডিট কার্ড। আমার কাছেই ছিলো, আমি জানতাম তোমার কাছে টাকা থাকলে তুমি কিছুতেই আমাকে বিল পরিশোধ করতে দিতেনা। তাই তোমার সব টাকা ফুচকা ওয়ালা মামার কাছে রেখে আর ক্রেডিট কার্ড টা নিয়ে নিয়েছিলাম, তুমি যখন ফ্রেশ হতে ওয়াশ রুমে গিয়েছিলে। কারণ তোমার বার্থডে গিফট, বার্থডে সেলিব্রেইট আমি নিজ টাকায় করতে চেয়েছি।

পরদিন সন্ধায় রিদের বার্থডে উপলক্ষে তার বাড়িতে পার্টির আয়োজন করলো রিদ। আজ পার্টিতে সবাই থাকবে। থাকবেনা শুধু রিদের বাবা মা। তারা অস্ট্রেলিয়া থাকে। রিদকেও নিয়ে যেতে চেয়েছিলো। সে যায়নি কোনো এক অদৃশ্যটানে। তার ধারনা সে চোখের আড়াল হলেই অন্য কারো স্বপ্নের জগতে হারিয়ে যাবে তার স্বপ্ন পরি।

আজ রিদের বার্থডে পার্টিতে যাচ্ছে সবাই। বৃষ্টির মনটা ভালো থাকলেও খারাপ হয়ে গেলো। সেদিন বাড়িতে আশা ওই মেয়েটাকে দেখে। সেও যাবে আমাদের সাথে। রাতের বাবা ওই মেয়েটাকে রেখেছিলো রাতের পার্সোনাল এসিস্টেন হিসেবে। তাকে চাকরি দেওয়ারও একটা যথেষ্ট কারণ আছে।
একদিন অফিস থেকে ফেরার সময় একটা এক্সিডেন্ড হয়েছিলো রুদ্র চৌধুরির। ড্রাইবার ও তার অবস্তা তখন ছিলো করুন। মেয়েটা তখন ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। দেখে মানুষের ভির। সকলে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলো রুদ্র চৌধুরিকে। কেও তাকে ধরার সাহস করেনি। কিন্তু ওই মেয়েটা সেদিন তাদেরকে নিয়ে যায় হসপিটালে। ও নেগেটিভ রক্তের প্রয়েজন হওয়ায়। মেয়েটা নিজে রক্ত দিয়েছিলো রুূ্র চৌধুরিকে। সেদিন রুদ্র চৌধুরি মনে করলো আল্লাহ এই মেয়েটার উসিলায় তার জীবনটা ফিরিয়ে দিয়েছে। তখন মেয়েটাও চাকরি খুজছিলো। আর তা শুনে রুদ্র চৌধুরি কোনো ইন্টারভিউ ছারাই তাকে চাকরিতে নিয়ে নেয়। আর সেই মেয়েটাই হলো এই তৃষ্না।
আর তৃষ্নাকে রাতের পাশে একধম সহ্য হয়না বৃষ্টির। কারনে অকারণে শুধু রাতের পাশে ঘুর ঘুর করে তৃষ্না। তা একধমই অসহ্যকর বৃষ্টির কাছে। বৃষ্টির সামনে দিয়ে গাল মুচরে হেটে চলে গেলো তৃষ্না। রাগে যেনো গা দিয়ে রি রি করে একটা অসহ্যকর শিহরণ বয়ে গেলো।

বৃষ্টির শাশুরি রাত্রি চৌধুরি, একটা লাল রংয়ের শাড়ি দিয়ে গেলো বৃষ্টিকে। সেই বিয়ের দিন থেকে আজ পর্যন্ত একবারও শাড়ি পরতে দেখলোনা বৃষ্টিকে। তাই আজ শাড়ি পড়েই যেতে হবে তাকে।
রাত্রি চৌধুরি শাড়িটা দিয়েই চলে গেলো নিজে রেডি হতে। এদিকে আরেকটা বিপত্তি ঘটলো। বৃষ্টি শাড়ি পরতে পারেনা। কোনো রকম গায়ের সাথে পেচিয়ে আয়নায় গেখছে নিজেকে। দরজার সামনে দাড়িয়ে হেসে চলছে রাত।
– হাসছেন কেনো? ভ্রু জুগল কুচকে কথাটা বললো বৃষ্টি।
– তোমার শাড়ি পরা দেখে।
– কারো দুর্বলতা নিয়ে মজা করা ভালোনা। আর আমার দুবর্লতা শাড়ি পড়ায়।
– তাহলে কি এভাবেই যাবে?
চুপ করে আছে বৃষ্টি। রাত গলা ছেরে কয়েকবার মাকে ডাক দিলো। কিন্তু মায়ের কোনো সদরা শব্দ পেলোনা সে। চৈতিও নেই। আর আরশিতো শাড়ি পড়াতে পুরাই ঢেড়স।
– এক কাজ করো শাড়ি ছারো, অন্য কিছু পড়ো।
– না মা বলেছে এটাই পড়তে।
– তাহলে কি এভাবেই যাবে?
– আপনি পড়িয়ে দিন না। (কথার ফাকে মুখ ফসকে বলে ফেলায় জ্বিভে একটা ছোট্ট কামর দেয় বৃষ্টি) ভাবছে হয়তো ভুল কিচু আবদার করে বসেছে সে। কিন্তু তার ধারণা মিথ্যা প্রমান করে রাত এসেই বৃষ্টির শাড়ি ঠিক করতে লাগলো। অবাক হয়েছে তবুও মনোযোগ দিয়ে রাতের শাড়ি পড়ানোর দিকে তাকিয়ে আছে সে। রাত শাড়ির কুচিগুলো এক এক করে ঠিক করে দিচ্ছে। আর বৃষ্টি মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে তার দিকে।

To be continue…………

~~ ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ