#বালির_সংসার
পর্ব-১১
.
.
কিরে অর্থি? আদিত্যদার কোলে উঠার অভ্যেস টা এখনো গেলো না? রুপ ভাইয়াকে বলতি কোলে নিতে? এবার তো আমার স্বামীকে ছাড়। এই সিড়ি বেয়ে উঠতে মরে যাবি না।
.
.
আদিত্যর বুক থেকে মাথা তুলে তাকিয়ে দেখে রুশা কথাগুলো বলছে। ওর খালাতো বোন।
স্বামী? রুশার স্বামী? কথাটা শুনে আদিত্যর বুকের শার্ট টা খুব জোরে খামছে ধরেছে।
আদিত্য দা বিয়ে করে নিয়েছে? অহ্!
.
রুশা- কি চিন্তা করিস?
অর্থি- কিছুনা। হুম যেতে পারবো।
রুশা- তাহলে যা! আদিত্য দা ওকে নামিয়ে দাও।
অর্থি- আমাকে নামাও আদিত্য দা। আমি যেতে পারবো।
.
এতক্ষণ অর্থি আদিত্যর বুকের সাথে মিশে ছিলো। তাই বুঝেনি। চোখ তুলে তাকাতেই দেখে আদিত্যর চোখ লাল হয়ে গেছে। কোন কারণে সে প্রচন্ডরকম রেগে আছে।
রুশার কথার পাত্তা না দিয়ে আদিত্য অর্থি কে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
আর অর্থি বলছে
– আমায় নামাও আদিত্য দা। আমি যেতে পারবো। আর নিজের বউয়ের সামনে অন্য মেয়েকে কোলে নেওয়া ঠিক না। তাছাড়া এটা ভালো দেখায় না।
বিয়ে করেছো বলোনি তো। যাই হোক তোমরা খুব সুখী হবে। অনন্ত পবিত্র মেয়েকে পেয়েছো। আর যাই হোক বিয়ে নামক সম্পর্কে তো অপবিত্র মেয়ে কে মেনে নেওয়া যায় না।
.
শেষের কথায় আদিত্য থমকে দাঁড়ায়। বেশ বুঝতে পারে আদিত্যর কথা ওকেই ফিরিয়ে দিলো।
আদিত্য রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো। অর্থির হাত পা কাপছে। এটা নতুন কিছু না। হুটহাট কোন শকিং খবর পেলে মেয়েটা এমন করে।
আরো কিছু বলতে নিলেই
আদিত্য সুযোগ না দিয়ে ঠোঁট রাখে অর্থির দুই ঠোঁটে।
সারা শরীর কাপুনি দিয়ে উঠে অর্থির। কিন্তু আদিত্য ছাড়ে না। অর্থি নিজেকে ছাড়িয়ে নিতেই পারে না।কিভাবে পারবে? ও তো এখনো আদিত্যর কোলেই আছে।
.
বেশ খানিকটা সময় পার হয়ে গেলেও অর্থি কে ছাড়ার নাম নেই আদিত্যর।
মনে হচ্ছে কত জনমের পিপাসা ছিলো। আজ সব শোধ করে নিচ্ছে সে।
.
দরজায় বেশ খানিকক্ষণ যাবত ধরে কড়া নাড়ছে রুশা।
সেদিকে কোন খেয়াল নেই।
আদিত্য অর্থিকে বিছানায় নামিয়ে দিতেই মুখ ডুবালো ওর গলায়। কিছুক্ষণ পর অর্থি আদিত্য কে থামিয়ে কাপা কাপা স্বরে বলে
– আমায় এভাবে শেষ করে দিও না। আদিত্য দা! প্লিজ! দরজা খুলো। তোমার বউ দরজার বাহিরে।
.
আদিত্যর চোখ আবার লাল হয়ে গেলো। অর্থি কে ছেড়ে দরজা খুলেই দেখে নার্স, রুশা দাঁড়িয়ে আছে।
নার্স কে উদ্দেশ্য করে আদিত্য বলে
– ম্যাম কে ফ্রেশ হতে সাহায্য করুন। গোসল করাবেন না। শুধু শ্যাম্পু করে দিবেন চুলে।
.
.
রুশার হাত ধরে নিয়ে সাথে সাথে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে আদিত্য।
– আমি তোর স্বামী? আমি তোর স্বামী না! বিয়ে ছাড়া অন্য জন কে স্বামী বলতে বাধে না? আর বলেছি না আদিত্য দা বলে ডাকবি না। ওই ডাক শুধুই অর্থির। তোর সাথে শুধু আমার বিয়ের কথা হচ্ছে। বিয়ে না।
লিমিট ক্রসের চেষ্টাও করবি না। তাহলে খুন করতে আমার হাত কাপবে না।
.
.
রুশাকে কথাগুলো বলেই আদিত্য নিজের রুমে চলে গেলো। লম্বা শাওয়ার নিয়ে ফিরে এসে সিগারেট ধরাতেই নার্স এসে বললো
– স্যার! ম্যাম বেবির কথা জিজ্ঞেস করছে। কিছু খায়নি। মেডিসিন দিতে হবে। যদি একটু…….
.
.
আদিত্য রুমে এসে দেখে অর্থি শুয়ে আছে।
নার্সকে বলে, আপনি নিচে বসুন। আমি দেখছি।
.
অর্থি হালকা ঘুমে রয়েছে। নিজের উপর হালকা ভর অনুভব করে তাকানোর আগেই অর্থির দুই ঠোঁট আদিত্যর দখলে।
পৃথিবীর সব উপেক্ষা করার শক্তি থাকলেও আদিত্য কে বাধা দেওয়ার শক্তি কেনো সে পাচ্ছে না? শরীর ভালো না। আর রুপ কে সে ঠকাচ্ছে৷ খুব চিৎকার করে কাদতে ইচ্ছে করে।নিজের উপর ঘেন্না হয় অর্থির। আদিত্য অতীত,রুপ তো বর্তমান। আদিত্য দা তো এমন ছিলো না। কেনো এমন করছে?
.
.
আদিত্যর ঠোঁট তখন অর্থির গলায়। কামিজের কাটার ভিতর দিয়ে কোমরে চাপ দিতেই অর্থি চিৎকার দিয়ে উঠে।
আদিত্য হুশে ফিরে। কি করছিলো সে?
দ্রুত উঠে বসে উপর থেকে কম্বল সরিয়ে নিতে নিতে বলে
– বাবু আমি সত্যি! খেয়াল ছিলো না। ব্যথা পাইছো তুমি? ড্যামেড! কিচ্ছু হবে না। আমি আছি তো। আমার একটু খেয়াল ছিলো না।
কি করবো? তোকে দেখে আমার মাথা ঠিক ছিলো না।
তিন বছর পর পেয়েছি।
.
– আমি ঠিক আছি।
.
এবার আদিত্য এসে অর্থির পাশে বসে।
কম্বল টেনে দিতে গিয়ে দেখে অর্থির কামিজ অনেকটা ভেজা।
ভ্রু কুঁচকে তাকায়।
– চুল ঠিক করে মুছিস নি? কামিজ ভিজে গেছে।
– আদিত্যদা! আমার ছেলে কোথায়? ওকে এনে দাও। ওর খাওয়ার সময় হয়ে গেছে।
.
আদিত্য কি উত্তর দিবে ভেবে পায় না। মা হওয়া সত্যি খুব কস্টের। কত হরমোনের হেরফের হয়! ছেলের কথা কি বলবে আদিত্য? বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠছে। পরীটা যখন জানবে তখন হয়তো মরেই যাবে এবার।
.
ঘোর কাটে গাড়ির হর্নে। রুপ এসেছে বুঝতে অসুবিধা হয় না।
আদিত্য দ্রুত আলমারী থেকে লম্বা কটি এনে অর্থি কে উঠিয়ে পড়িয়ে দেয়।
কোমর অবধি কম্বল দিয়ে অর্থির মাথার চুল বেধে মাথায় কাপড় দিয়ে রাখে।
.
কি অদ্ভুত! অর্থি রুপের স্ত্রী। যার উপর সব অধিকার রুপের কিন্তু আদিত্য চাইছেনা রুপ অর্থি কে অন্য অবস্থায় দেখুক। হায়রে ভালোবাসা। হায়রে পুরুষ!
.
চলবে
.
Sabiya moon