বজ্জাত বর পর্ব- ১৫

0
3481

বজ্জাত_বর
পর্ব- ১৫
লেখক বিলকিস

পরশ বিছানায় ঘুমিয়ে আছে। মিষ্টি পরশের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। অদ্ভুত একটা মায়া আছে ওর মুখে। শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে।
আচ্ছা আমি এই লোকটাকে নিয়ে এতো বেশি কেনো ভাবছি। আমার তো এই লোকটাকে সহ্য করাই উচিত নয়। আমি তো একে শাস্তি দিতে চেয়েছিলাম। আমি ভুলে গেলাম কি করে?
না কখনোই না। একে তো আমি দেখে নেবো। আমাকে avoid করা না। তুই এখনো মিষ্টিকে চিনিস না হুম মাস্টার। তোর মাস্টারি আমি ঘুচিয়ে দেবো। এই কথা গুলো মিষ্টি পরশের শার্টের কলার ঝাকাচ্ছিলো আর, বলছিলো।
মিষ্টি: উফ এতো রাত হয়ে গেলো। এই বজ্জাতের জন্য ভেবে ভেবে। এর জম্মই হয়েছিলো মনে হয় আমাকে অত্যাচার করার জন্য। এখন ফ্রেশ হতে হবে।
তারপর মিষ্টি সাওয়ার নিয়ে আয়নার সামনে বসে বডি লোশন দিচ্ছিলো। আর ভেজা চুল থেকে টপ টপ করে পানি পড়ছিলো।
হঠ্যাৎ করে পরশের ঘুম ভেঙ্গে যায়। সবকিছুই কেমন ভালো লাগছিলো। আসলে পরশ আগে কখনো ড্রিংক করেনি। কিন্তু মিষ্টির থাপ্পর দেয়ার পর কেনো যেনো খুব নিজের উপর রাগ হচ্ছিলো। তাই বাড়ে গিয়ে ড্রিংক করেছে।
কিন্তু এখন ঘরে তাও আবার বিছানায় শুয়ে আছে কি করে?
সারা ঘরে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। হঠ্যৎ এক জায়গায় চোখ আটকে যায়। এক অপ্সরা ভেজা চুলে আয়নার সামনে বসে আছে।
পরশতো এমনিতেই মাতাল ছিলো আর সামনে যদি এতো সুন্দরি বউ থাকে তাহলে মাতলামিটা চুড়ান্ত পযারে যাওয়ারই কথা।
পরশ: বউ
মিষ্টি: হঠ্যৎ বউ কথাটা পেছনে তাকিয়ে দেখি স্যার আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কেমন যেনো ভয়ংকর তৃষনার্ত চাহনি।
পরশ: তোমাকে এতো সুন্দর লাগছে কেনো আজকে? বলছে আর এগিয়ে যাচ্ছে মিষ্টির দিকে।
মিষ্টি: মা মা মানে। কি বলছেন কি আ আ আপনি বলে এক পা এক পা করে পিছিয়ে যাচ্ছিলো।
কিন্তু বেশি দূর আর যেতে পারলো না। পরশ হাত ধরে এক হ্যাচকা টান দিলো। মিষ্টির পিট একেবারে পরশের, বুকে। আর পরশ মিষ্টির ভেজা চুলের ঘ্রানে উম্মাদ। চুলের মধ্যে নাক ডুবিয়ে দেয়। হঠ্যৎ ওর এক হাত মিষ্টির পেটে চলে যায়। মিষ্টি যেনো আর নিতে পারছিলোনা। তাই পরশকে ধাক্কা মেরে দেয়। পরশ কোনরকমে টান সামলে মিষ্টির হাত ধরে ফেলে নিজের কাছে নিয়ে আসে আর বলে
পরশ: আমরা হানিমুনে এসেছি? তোমার মনে আছে তো মিষ্টি।
মিষ্টি: আপনি এখন কি অসভ্যতা শুরু করেছেন?
পরশ: এখনোতো কিছুই করিনি তবে এখন করবো?
এই কথা শুনে মিষ্টি পরশকে ছারিয়ে দৌড় দিতে, গেলো। কিন্তু পরশ এক টানে মিষ্টিকে কোলে তুলে নিলো। তারপর বিছানায় নিয়ে গেলো। মিষ্টি যেনো পরশের। শক্তির কাছে একটা ছোটো বাচ্চা। তাই পরশের সাথে আর পেরে উঠছিলোনা। আর পরশ তো মিষ্টির নেশায়, উম্মাদ। সারারাত সে মিষ্টির মাঝে ডুবে রইল।
সকালে পরশের ঘুল ভাঙতেই দেখে মিষ্টি ফ্লোরে বসে আসে। এখনো ফ্রেশ হয়নি। দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুব কেঁদেছে।
পরশের রাতের ঘটনা পুরোটা মনে না থাকলেও কিছুটা মনে আছে। সে কি বলবে বুঝতে পারছিলো না।
পরশ: তুমি এখনো ফ্রেশ হয়নি?
মিষ্টি:…………..
পরশ: I am sorry মিষ্টি
মিষ্টি:……….
পরশ: দেখো কাল রাতে আমি নিজের মধ্যে ছিলাম না। আমি তোমার সাথে..
মিষ্টি: আমি বাড়ি যেতে চাই ( পরশের কথা শেষ করার। আগেই বললো)
পরশ: তুমি
মিষ্টি: আমি বলেছি আমি বাড়ি যাবো আর সেটা আজকেই এক্ষুনি
পরশ আর কিছুই বলতে পায়নি। নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিলো।
ঠিক আছে তুমি রেডি হয়ে নাও। শুধু এটুকুই বললো।
ওদের বাড়ি পৌছাতে পৌছাতে সন্ধ্য হয়ে যায়। এতোটা সময়ে মিষ্টি পরশের সাথে একটা কথাও বলেনি।
হঠ্যৎ কলিং বেল বাজার শব্দ শুনে দিশা দরজা খুলে দেখতে পায়। ভাইয়া আর ভাবীকে
দিশা: ভাবি! তোমরা এতো তারাতারি চলে এলে যে!
মিষ্টি: চলে এলাম।
দিশা: কিন্তু তোমাদের তো আরো ৩ দিন থাকার কথা ছিলো।
পরশ: এতো কথা না বলে ভিতরে যেতে দে। অনেক জার্নি করেছি। এখন tired
কে এসেছে রে বলতে বলতে পরশের মা ড্রয়িং রুমে এসে দেখে মিষ্টি আর পরশ।
মা: কি রে এতো তারাতারি চলে আসলি যে। আর বউমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন?
পরশ: মা ও একটু অসুস্থ। তাই চলে এলাম। আর এর মাঝে মিষ্টি একদম চুপ।
মা: আচ্ছা ঠিকাছে। এসেছিস ভালো হয়েছে। বাড়িটাও ফাকা ফাকা লাগছিলো?
তারপর মিষ্টি আর পরশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রাতের ডিনার শেষ করে।
পরশ বার বার মিষ্টির সাথে কথা বলতে চাইছিলো কিন্তু মিষ্টি পরশকে সুযোগ দেয়নি।
খাওয়া শেষ করে পরশ ঘরে চলে আসে। তারপর মিষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু মিষ্টি যখন অনেক সময় আসছিলো না তখন পরশ বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরে। ক্লান্ত থাকায় করনে ঘুমিয়ে পরে।
এদিকে মিষ্টি মামনির কাছে গিয়ে বসে।
মামনি: কি রে মা তোকে এতো মনমরা লাগছে কেনো? কিছু বলবি?
মিষ্টি: আমি কিছুদিনের জন্য বাড়ি যেতে চাই মামনি।
মামনি: এই বাড়িতে ভালো লাগছেনা তোর? আমার ছেলেকি তোকে কষ্ট দিচ্ছে মা?
মিষ্টি: না মামনি। আসলে বাবার কথা খুব মনে পড়ছিলো। তাই
মামনি: পরশকে বলেছিস?
মিষ্টি: মামনি তুমি তো জানো। তোমার ছেলে ঘাড় ত্যাড়া। বললে যেতে দেবেনা। আমি বরং কাল সকালে চলে যাবো। তারপর তুমি তোমার ছেলেকে বুঝিয়ে বলো।
মামনি: কিন্তু
মিষ্টি: কোনো কিন্তু না মামনি। প্লিজ
মামনি: ঠিক আছে। যা এখন ঘুমা গিয়ে।
মিষ্টি: ঠিক আছে। thank you and good night.
অত: পর সকালে……
..( চলবে)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে