বজ্জাত বর পর্ব ১+২

0
5650

বজ্জাত_বর
পর্ব ১+২
লেখক: বিলকিস

কি রে মা কোথায় তুই। এই তো বাবা আসছি। ডাকছিলে কেনো। তুই করিম চাচার বউকে কি বলেছিস। কেনো করিম চাচা কেকি বলেছি। বলেছি তোমার বর আর একটা মেয়ে সাথে প্রেম করেছে তাই। কেনো এতো মিথ্যা বলিস মা। তোর নামে দিন গেলে হাজারটা নালিশ আছে। রেডি হয়ে এসেছিস। কোথায় যাচ্ছিস। কলেজে বাবা। আজ তোর কোথায়ও যাওয়া হবে না। কেনো বাবা। আমার বন্ধু ও তার ছেলে আসবে তোকে দেখতে। বাবা আমার কলেজ যাওয়াটা খুব দরকার।বলে চলে গেলে পিছন থেকে যাচনা মা মিষ্টি।এই মেয়ে নিয়ে আর পারি না। এরার ভালোভালো বিয়ে দিলেই আমি বাচি
এদিকে মিষ্টি রাস্তাট মোড়ে দাড়িয়ে আছে। পিছন থেকে এই য়ে শুনছেন।এই কলেজটা কোন দিকে। মিষ্টি তাকিয়ে দেখে মনে মনে বলে( এতো আমার কলেজে নাম মেয়ে পটাতে যাচ্ছে দ্বারা যাওয়াছি)
আপনি তো ভুল রাস্তার এসেছেন। কলেজটা এদিকে নয়। আপনি সামনে যেয়ে বা দিক থেকে একটু দুরে ডান দিকে একটা নদী আছে। নদী পরে কলেজ। oh tkanks
মিষ্টি: ঠিক আছে বলে চলে গেলো। কিছু দূর যাওয়া পর। এইয়ে কলেজটা কোন দিকে। আরে ভাই আপনেতো ভুল রাস্তা এসেছন। কি কিন্তু একটা মেয়ে বললো কলেজটা এই দিকে। আপনি মিষ্টি সাথে দেখা হয়েছিলো। মিষ্টি কে। আপনে এই এলাকার নতুন। হ্যা তাহলে কিছুদিন থাকুন বুঝতে পারবেন মিষ্টি কে ( এই মেয়ে যদি একশতটা কথা বলে তার মধ্য নিরানব্বইটা মিথ্যা থাকে) আপনি বরং রিক্সা ধরে ওই রাস্তা দিয়ে চলে যান। এই দিকে মিষ্টি কলেজে যেয়ে বন্ধদের বলছে
মিষ্টি: এই তোরা জানিস আজ কি হয়েছে
বন্ধরা: কি হয়েছে বলবি তো
মিষ্টি: আমি রাস্তার দারিয়ে আছি এক ভদ্রা লোক এসে বললো। এয়ে শুশন এই ঠিকানাটা কোথায় বলবেন। ঠিকানায় দেখি য়ে আমাদের কলেজে নাম। আমি মিথ্যা বলে নদীর ওপারে পাঠিয়ে দিয়েছি। লোকটার সাহস কতো মেয়ে পটাতে আসবে। আমি এই কলেজে থাকতে আমি যতদিন প্রেম না করবো কোউকে প্রেম করতে দিবো না। বলতে প্রিন্সিপল স্যার ঘরে ঢুকলো।
স্যার : good morning
তোমরা হয়তো জানো তোমাদের নতুন স্যার আসার কথা। তোমরা আজ নতুন স্যারকে দেখতে পাবে বলেতে স্যার: পরশ ভিতরে এসো।
ভিতরে ঢুকতে মিষ্টির চোখ বড় বড় হয়ে গেলো
মিষ্টি: এ কি এতো রাস্তা মোড়ে দেখা ভদ্র লোকটা। এখন কি হবে
প্রিন্সিপল: তুমি ছাএছএী সাথে পরিচয় হও আমি আসছি
পরশ: ok স্যার
সবাই দাড়িয়ে কেনো বসো। আমি আমার পরিচয় দেই। আমি আরফিন পরশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে accounting নিয়ে পড়াশুনা করেছি। আর তোমাদের accounting পড়াবো। এখন তোমরা তোমাদের পরিচয় দাও। প্রথমে তুমি, আমি সাগর,আকাশ, রানা, বৃষ্টি, কনা,রুমি………… সবোশেষ এইয়ে তুমি বলতে মিষ্টি।আমার নাম মিষ্টি
পরশ: তুমি সেই মেয়ে টা না, যে আমাকে মিথ্যা বলে নদী ওপারে পাঠিয়ে দিয়েছিলে।
মিষ্টি: আমি কেউ না তো আপনার সাথে আমার দেখা হয়নি স্যার।আপনার হয়তো ভুল হচ্ছে। আমি খুব ভদ্রা মেয়ে স্যার।
পরশ: এতো বড় ভুল হবে আমার সেই জামা সেই কন্ঠো
মিষ্টি: স্যার
পরশ: তোমরা এখন বইয়ে পড়া বের করো।
ক্লাস শেষ করে পরশ চলেগেলো। পরশ যেতেই মিষ্টি জোরে জোরে হাসছে
রুমি: এতো জোরে হাসছিস কেনো
মিষ্টি: তোদের কে বলছিলাম আজ আমি মিথ্যা বলে একজনকে নদীর ওপারে পাঠিয়েছি। সে আর কেউনা এই নতুন স্যার
আকাশ: কি বলছিস
মিষ্টি : সত্যি বলছি
রুমি: মিষ্টি পিছনে তাকিয়ে ভয় পেয়ে স্যার আপনি কিছু বলবেন
পরশ: না আমার কলমটা ফেলে রেখেগিয়েছিলাম সেটা নিতে আসছি
মিষ্টি: ও এই নিন স্যার আপনার কলম।
রুমি: স্যার সব শুনে ফেলেছেরে
মিষ্টি: শুনলে শুনেছে।
বিকেলে মিষ্টির বাড়ি কলিং বেল বাজতেই মিষ্টি বাবা দরজার খুলতে ( তোমরা এসেছো আসতে কেনো কষ্ট হয়নি তো)
পরশ: সালাম করে। না আক্কেল আমদের আসতে কষ্ট হয়নি
বাবা,: এসো ভিতরে এসো। বসো এখানে বাবা।
রহিমা চা মিষ্টি নিয়ে আয়। আর উপর থেকে মিষ্টিকে ডেকে নিয়ে আয়।
পরশ: মিষ্টি
বাবা: হ্যা বাবা আমার মেয়ে যার কথা তোমার বলেছিলাম। আমার মেয়ে টাকে তুমি পারো মানুষ করতে। আমি আর পারছিনা প্রতিদিন ওর সম্পরকে নালিশ শুনতে শুনতে আমি হয়রান। এবার তোমার হতে দিতে পারলে আমি বাচি।
পরশ: আক্কেল আমি কি আপনার বাড়িটা ঘুরে দেখতে পারি।
বাবা: পারে তুমি ঘুরে দেখো।
পরশ: বাড়ি ঘুরতে ঘুরতে এক সময় পরশ মিষ্টি ঘরে সামনে এসে দেখতে পায় য়ে মিষ্টি গানের সাথে ড্যান্স করছে।
মিষ্টি ড্যান্স করতে করতে স্যার দেখতে পায় কিন্তু সেটা কল্পনা মনে করে ছেরে দেই। আবার ড্যান্স করতে করতে আবার দেখতে পায়
মিষ্টি: এবার ড্যান্স থামিয়ে ভালো করে দেখে না এতো কল্পনা না সত্যি সত্যি স্যার এসেছে বলে এক চিৎকার দিতে পরশ মিষ্টি মুখ চেপে ধরতে দুজনে বিছানাতে পরে যাই।
( চলবে)…………
বজ্জাত বর
লেখক বিলকিস
পর্ব ২
দুজন দুজনের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। মিনিট দশ পর মিষ্টি পরশের হাতের কামুর দিতে
পরশ: এ্যা করে মুখ থেকে হাতটা সরিয়ে নিলো।আর বললো কি করলে এটা
মিষ্টি: বেশ করেছি কামুর দিয়েছি। যে ভাবে মুখটা চেপে ধরেছেন। আর কিছুক্ষন হলে মরের যেতাম আমি।
পরশ: তাই বলে হাতে কামুর দিবে।
মিষ্টি: বেশ করেছি।
এক মিনিট স্যার, আপনি কেনো এসেছেন আমার বাড়িতে।ও বুঝতে পেরেছি বাবার কাছে নালিশ দিতে তাই না। ঠিক আছে আপনি নালিশ দিন বাবার কাছে।কারন আমি মোটেই ভয় পাই না বাবা কে।
পরশ: আমি এখানে নালিশ দিতে আছিনি।
মিষ্টি: তাহলে কেনো এসেছেন স্যার
পরশ: যদি বলি তোমায় দেখতে বলায় আগে রহিমা এসে ডাক দিলো।
রহিমা: আপা, তোমাকে খালু নিচে ডাকছে
মিষ্টি: তুই গিয়ে বল আমি আসছি।
স্যার আপনি কি যেনো বলতে চাইছিলেন।
পরশ: যা বলতে চাইছিলাম তা নিচের গেলে বুঝতে পারবে।
মিষ্টি আর কিছু না বলে নিচে চলে আসলো
মিষ্টির বাবা: আয় মা এদিকে আয়। এই আমার মেয়ে মিষ্টি।মিষ্টি তোমার আঙ্কেলকে সালাম দাও।
মিষ্টি: আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল। কেমন আছেন। ভালো তো।
পরশের বাবা: আমি ভালো আছি। তুমি কেমন আছো মা।
মিষ্টি: আমি সবসময় ভালো থাকি আঙ্কেল।
পরশের বাবা: বন্ধু তোর মেয়েটাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে।এখন শুধু ওরা দুজন দুজনকে পছন্দ করলে বিয়ে তারিখ টা ঠিক করে ফেলবো।
মিষ্টি: কার বিয়ে বাবা, আর কার সাথে?
পরশ: পিছন থেকে বলে ওঠলো,তোমার আর আমার বিয়ে।
মিষ্টি: মানে
পরশ: বাবা আমার মিষ্টিকে পছন্দ হয়েছে।তুমি বিয়ের তারিখ ঠিক করো।
মিষ্টির বাবা: কি রে মা তোর পরশকে পছন্দ হয়েছে।
মিষ্টি বলার আগে পরশ বলে ওঠলো
পরশ: আঙ্কেল মিষ্টিরই আমাকে খুব পছন্দ হয়েছে।আমাদের দুজনের কেনো আপক্তি নেই।
মিষ্টি: কিন্তু
পরশ: কোনো কিন্তু না মিষ্টি। ( পরশ মনে মনে বললো এবার বুঝতে পারবে, পরশ কি জিনিস, পরশকে মিথ্যা কথা বলার জ্বালা)
মিষ্টি: মনে মনে বললো,আমি জানতাম আমি শুধু মিথ্যা কথা বলি। স্যার দেখছি আমার থেকেই বড় মিথ্যাবাদী।
( খাওয়া দাওয়া শেষ করে পরশ আর পরশের বাবা চলে যাওয়ার জন্য গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। পিছন পিছন মিষ্টি আর মিষ্টির বাবা আসলো।গাড়িতে ওঠার আগে পরশ মিষ্টি কানে কানে বললো
পরশ: তৈরি হও, আমি আসছি বলেই মুচকি হাসি দিয়ে গাড়িতে ওঠলো।
পরশ আর পরশের বাবা চলে যেতেই মিষ্টি বাড়ির ভিতরে এসে বললো।
মিষ্টি: বাবা আমি বিয়ে করবো না। ( রাগী গলায়)
মিষ্টির বাবা: তোমাকে এই বিয়ে করতেই হবে। আর বিয়েটা যদি না করো তাহলে আমার মরা মুখ দেখবে। বলেই চলে গেলো।
মিষ্টি: বা. বাবা বাবা
এদিকে মিষ্টি রাগে ফোস ফোস করছে।কি করবে সে ভেবে পারছেনা।
মিষ্টি: না কিছু একটা করতে হবে। যে ভাবেই হক বিয়েটা ভাঙ্গতে হবে।
পিছন থেকে রহিমা এসে মিষ্টি কে বললো
রহিমা: আপা,একটা কথা বলি
মিষ্টি : কি বলবি
রহিমা: আপা, আপনাদের দুজনকে খুব মানাবে।
মিষ্টি: মার খাবি এবার ( রাগি গলায়) খুব মানাবে না মানাচ্ছি
দেখছি এই বজ্জাত স্যারের আমাকে বিয়ে করার শখ না। বিয়ের শখ একবারে মিটিয়ে দেবো। জীবনে আর বিয়ে করতে চাইবে না। আস্তো শয়তান, এনাকুন্ডা, চামচিকা,বানোর,ডাইনাসোর)
সকালে মিষ্টি ঘুম থেকে ওঠে রেডি হয়ে কলেজে চলে গেলো।বন্ধুদের সাথে কথা না বলেই সরাসরি পরশের আফিস রুমে যেতেই
মিষ্টি: MAY I COME IN SIR
( চলবে)….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে