প্রিয় শৈশববেলা – Sumaya Mim

0
461

#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগীতা_২০২০
চিঠি নং:০২

প্রিয় শৈশববেলা,

ছেড়ে গিয়ে তো অনেক দিন হলো,আমাকে ছেড়ে কি অনেক ভালো আছিস?হয়তো আছিস অথবা তুই ও এভাবেই আমাকে ভাবিস।জানিস,আজও তোর সুবাস আমার কাছে উজ্জ্বল একটুও মলিন হয়নি সব জ্বলজ্বল করছে স্মৃতির পাতায়।
জীবন খাতায় বয়স অনেকটা বেড়ে গেছে তবুও মুছে যায়নি ছোট্ট ছোট্ট পায়ে দৌড়ে বেড়ানোর চিহ্ন।মুকুল মুকুল হাতের আকুলিবিকুলি যেন আজও লেগে আছে ফেলে আসা দেওয়াল জুড়ে।

তুই কি ভুলে গেছিস আমার ছটফটে চলন, পিকপিকি জুতার আওয়াজ তুলে যখন উঠান মাতাতাম?
আব্বুর লোমশ বুকে বসে যখন পিঁপপিঁপ পাঁপাপ পাঁপ করে গাড়ি খেলার স্বাদ মেটাতাম আর আব্বু পরম আদরে বুকে জড়িয়ে রাখত তুই খুশিতে হাততালি দিতিনা বল?
জানি আমার হাসিতেই তোর যত সুখ ছিল।তবে এখন কি করে ভুলে আছিস,বিধাতার অমোঘ নিয়ম কে পালন করছিস তাই না?বুঝতে পেরেছি। তবে আমায় ভুলিস না।খোলা চিঠি দিলাম অদৃশ্য খামে।

প্রতিটি মানুষ জীবনের অনেক মূহুর্ত ভুলে যায় কিন্তু শৈশব বেলা ভুলবার ক্ষমতা কারর ই নেই।কারণ শৈশব মানুষের আত্মার সাথে এমন ভাবে মিশে থাকে,সেই স্মৃতি গুলো ভুলে যাওয়া মানে সেই মানুষটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।
আমিও ভুলতে পারবো না তোকে কখনো।
জানিস তোর সৌরভ মনে এতটা জায়গা জুড়ে আছে আছে যে সেখানে বসন্ত কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি।কয়টা বসন্ত পার হয়ে গেলো তবুও শৈশবের রংমহল ছেড়ে বেরোতে পারিনি।

সেই ফড়িং বা প্রজাপতির পেছনে ছোটার দিনগুলো ভীষণ মিষ্টি ছিল।সন্ধারাতে জোনাকির পেছন পেছন ছুটে হঠাৎ অন্ধকার কে ভয় পেয়ে ঝাঁপিয়ে আম্মুর বুকে লুকোনোর সুখ টা যে কিরকম ছিল তা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
নিঝুম দুপুরে ঘুমন্ত আম্মুর পাশে থেকে পা টিপেটিপে বেরিয়ে দৌড় দেওয়ার কথা কি মনে আছে তোর?
কত স্মৃতি,কত সুখ আর কত হাসি গান।সবই ফেলে এসেছি। তুই আমার থেকে অনন্তকাল দূরে।

জানি ফিরে পাবো না আর তোকে।ফিরবি না বলেই কি ভুলে যাবো?নাহ্ কখনোই তা না।এভাবেই তোকে হৃদয়ে ধরে রাখবো।
মাঝে মাঝে চিঠি লিখবো আকাশের ঠিকানায়।

ওরে শত ব্যস্ততার ভিড়ে,
তবুও তুই হৃদয় জুড়ে।
চারণ করি স্মৃতি গুলো
যখন ফিরে আসি নীড়ে।
জানি পাবো না তবুও চাই
ওরে আমার স্বপ্নীল শৈশব
ডাকছি,আয় ফিরে আায়।

ইতি
তোর আমি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে