প্রিয় অর্ধাঙ্গীনি পর্ব-৪৯ এবং শেষ পর্ব

0
667

#প্রিয়_অর্ধাঙ্গীনি
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#পর্ব_৪৯
,
একের পর এক প্রমাণ এসে পৌঁছেছে মিডিয়ার হাতে। মন্ত্রী আশফাক মির্জার বিরুদ্ধে। দেশ থেকে লাখ লাখ টাকা বাইরের দেশে পাচার সহ অবৈধ অস্ত্র দেশে আনা ড্রাগস এর ব্যাবসাসহ নারী পাচারের মতো যঘন্য কাজের সাথে ওনি জড়িত। মোট কথা মন্ত্রী পদের বেশ ভালো সুযোগই নিয়েছেন ওনি। ওনার সাথে যারা যারা ছিলো সবাই ধরা পড়েছে। তবে ওনার বোন মালবিকা মির্জা পালিয়েছে। এখনো তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে পুলিশ টানতে টানতে তাকে নিয়ে যাচ্ছে। জনতা রাগে ক্ষোভে ওনার বাড়ি ভাঙ্গচুর করেছে। পুলিশ তাকে জিপে উঠিয়ে নিয়ে গেলো। সমুদ্র সেই গাড়ির দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে।

“স্যার আপনার কি মনে হয় ওনি ওনার প্রাপ্য শাস্তি পাবে? যদি টাকা খাইয়ে আবার বেরিয়ে আসে তাহলে?

ইমরান এর কথাশুনে সমুদ্র বাঁকা হাসলো। বুকে গুঁজে রাখা হাতটা ইমরানের কাঁধে রেখে বলল।

” তুমি একটু বেশিই ভাবো সব বিষয়ে ইমরান। সব কাজ তো শেষ হলো এবার তোমার একটা বিয়ে দেওয়ার পালা।

সমুদ্রের কথাশুনে ইমরান লজ্জা পেলো। মাথা নিচু করে লাজুক হেসে কিছু মনে পড়ার ভঙ্গিতে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বলল।

“এখনো সব কাজ শেষ হয়নি স্যার আরো একটা কাজ বাকি আছে।

ইমরান এর কথাশুনে সমুদ্র কিছু বলল নাহ। ইমরান এর থেকে চোখ সরিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে বলল।

” যাওয়া যাক?

ইমরান সমুদ্রের কথামতো গাড়িতে উঠে বসল। তাদের গন্তব্য শহরের বাইরে। অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে হবে।
,,,,,,,,,,,,

অন্ধকার একটা রুম। বাইরে থেকে একটু আলোও ভিতরে আসার কোনো ব্যাবস্হা নেই। ঘরের মধ্যে অবস্থান করলে বাইরে দিন নাকি রাত সেটা জানাও যেনো অসাধ্য। হঠাৎ শব্দ করে রুমের দরজাটা খুলে গেলো। ফাঁক পেয়েই যেনো বাইরের তেজী সূর্যের আলোটা লাফ দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো। ধূলোমাখা শাড়িতে উষ্কখুষ্ক চুলে হাঁটুতে মাথা গুঁজে কেউ রুমের মধ্যে বসে আছে। রুমের মধ্যে আলো এসেছে এটার আভাস পেয়েই মাথা তুলে সেদিকে তাকালো। চোখের সামনে চার জোড়া পা এসে থামলো। মালবিকা মাথা তুলে সামনে আসা ব্যাক্তিটির দিকে তাকিয়ে কর্শক কন্ঠে বলল।

“মৃত্যু কেনো দিচ্ছো না আমায়?

” দেখেছেন স্যার এতো কিছুর পরেও এই মহিলার তেজ এখনো কমেনি। কেমন আপনার সাথে উঁচু গলায় কথা বলছে। মনে চাইছে এখনি একটা রড দিয়ে মাথা ফাঁটিয়ে দিই।

ইমরানের কথা শুনতেই মালবিকা ইমরানের দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো। যেনো ইমরানকে উষ্কে দিতে চাইছে। সমুদ্র এক ধ্যানে মালবিকার দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু সময় পর বলল।

“মৃত্যু? এটা তো আমার হাতে নেই। এটা একমাত্র একজনের হাতেই আছে। আর আপনার যখন সময় হবে ঠিক তখন মৃত্যু আপনার সম্মুখে এসে দাঁড়াবে। তবে হ্যাঁ আপনাকে মৃত্যু দন্ড দেওয়া আমার হাতে না থাকলেও শাস্তি তো দিতেই পারি। আর আপনার শাস্তি হলো এটা। এই অন্ধকার ঘর। এখানে বসে প্রতিটা মিনিট, সেকেন্ড, ঘন্টা আপনি মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করবেন। বুঝতে পারবেন মৃত্যু না হয়ে মৃত্যুর যন্ত্রণা টা কত কঠিন। এটাই আপনার শাস্তি।

কথাগুলো বলে সমুদ্র বেরিয়ে আসলো। সমুদ্রের পিছন পিছনে ইমরান ও বেরিয়ে গেলো। মুহূর্তের মধ্যে রুমটা আগের ন্যায় অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো। তবে সেই অন্ধকার থেকে মালবিকার আহাজারি শোনা যাচ্ছে। চিৎকার করে সমুদ্রের কাছে মৃত্যু ভিক্ষা চাইছে। কিন্তু সমুদ্র তার কান অবধি কথাটা পৌঁছাতেই ভিতরে কেমন একটা পৈচাশিক শান্তি অনুভব করছে। গাড়িতে গিয়ে বসতেই ইমরান সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বলল।

” স্যার এবার কোথায় যাবো?

“রৌদ্রের কাছে।
,,,,,,,,,,,

কাঁচা বাঁশের কাবাড়ি এখনো কেমন নতুনই আছে। নতুন থাকবেই বা না কেনো কদিনই বা হলো। এই তো সেদিনকার কথা রৌদ্রকে ছোটো দুটি হাতে সমুদ্র নিজের কোলে তুলে নিয়েছিলো। ছোটো নরম দেহটা বড় ভাইয়ের উষ্ণতায় কেমন চুপ করে টুকুর টুকুর চোখে তাকিয়ে ছিলো সমুদ্রের দিকে। গাড়ি থেকে নেমে অযু করে সোজা রৌদ্রের কাছে চলে এসেছে সমুদ্র। কবরের পাশে বসে কিছুক্ষণ এক ধ্যানে তাকিয়ে থেকে নরম কন্ঠে বলল।

” তোর বাবাকে মনে আছে? হয়ত আছে। বাবাকে তো খুব অল্প সময়ই পেয়েছিস। আর জয় তো বাবাকে দেখেইনি। এই দুই হাতে তোদের দুটোকে মানুষ করেছি। বকেছি শাসন করেছি আবার ভালোও বেসেছি। দুটোর একটাও কখনো আমার কথার অবাধ্য হোসনি যখন যা বলেছি তাই শুনেছিস। তাহলে আজকে এতো অবাধ্যতা কেনো? এতো করে ডাকার পরেও কেনো আমার কথা শুনছিস নাহ। তুই কবে কবে এতো অবাধ্য হলিরে রৌদ্র? কথা ছিলো আমরা তিন ভাই মাকে সব সময় খুশি রাখবো। বাবা তো মাকে একা ফেলে চলে গেলো। কিন্তু তুইও যে এভাবে মাঝ পথে হাত ছেড়ে বাবার মতো চলে যাবি ভাবিনি। হ্যাঁরে সব দায়িত্বই কি আমার একার? তোর কোনো দায়িত্ব নেই? সেই ছোটোবেলা থেকে একা হাতে সবটা সামলে আসছি। আর কত? আমারও তো বয়স হচ্ছে এতো কষ্ট আমি আর নিতে পারছি নাহ। তোর উচিত নয় কিছু দায়িত্ব নেওয়া? এভাবে বড় ভাইয়ের কাঁধে সবটা দায়িত্ব দিয়ে কি আরামেই না ঘুমিয়ে আছিস। যেনো কোনো চিন্তা নেই।

দায়িত্বশীল শক্ত সার্মথ্য অফিসার টাও আজকে যেনো অবুঝ বাচ্চা হয়ে গেছে। জানে রৌদ্র ফিরবে নাহ তবুও পাগলের মতো রৌদ্রকে ডেকে যাচ্ছে। এই শক্ত মানুষ টাও যে এভাবে কাঁদতে পারে তা সকলের অজানায় বটে। শরীলটা কেমন কেঁপে কেঁপে উঠছে। হঠাৎই সমুদ্রের কাঁধে কেউ হাত রাখলো। সমুদ্র তড়িঘড়ি করে চোখের পানি মুছে নিজেকে সামলে নিয়ে পিছন ফিরে তাকালো। শশী দাঁড়িয়ে আছে। চোখে টলমল করছে পানি। শশী কে দেখেই সমুদ্র উঠে দাঁড়িয়ে রাগী সুরে বলল।

“তোমাকে এখানে আসতে কে বলেছে? আর এই অবস্থায় সিঁড়ি ভেঙে নিচে নেমেছো কেনো?

” আর একটু কান্না করুন নাহ। তাহলে নিজেকে হালকা লাগবে। নয়ত গুমরে গুমরে ভিতরে ভিতরে শেষ হয়ে যাবেন।

“আজকাল বড় বেশি কথা বলতে শিখে গেছো এতো কথা শিখেছো কোথায়?

কথাটা বলেই সমুদ্র শশীকে কোলে তুলে নিলো। শশীও দুই হাতে সমুদ্রের গলা জড়িয়ে ধরে সমুদ্রের শক্ত গালে নরম ঠোঁটের চুমু দিয়ে মুচকি হেসে তাকালো। সমুদ্র সামনের দিকে হাঁটতে হাঁটতে বলল

” দিন দিন এতো ভারি হয়ে যাচ্ছো একটু কম কম করে খেতে পারো নাহ?

সমুদ্রের কথায় শশী কপট রাগ দেখিয়ে বলল,

“হ্যা নিজেই রাতদিন ঠুসে ঠুসে খাইয়ে মোটা বানিয়ে এখন খোঁটা দিচ্ছেন। আর আপনি কী আমায় একা কোলে নিয়েছেন নাকি। আমাদের দুজন কে একসাথে কোলে উঠাছেন তাই এমন হচ্ছে।

সমুদ্র কিছু বলল নাহ চুপচাপ সামনের দিকে হাঁটতে লাগল।
,,,,,,,,,,,,,,

পুরো রুম জুড়ে রঙ তুলি আর কগজ দিয়ে ভর্তি। মেঝেতে রঙ বেরঙের বতল গড়াগড়ি খাচ্ছে। কোথাও কোথাও কাগজে পেন্সিল দিয়ে কিছুর অর্ধেক এঁকে সেটা ফেলে দেওয়া হয়েছে। টুকরো টুকরো করে বেশ কাগজ জমা হয়েছে মেঝেতে। যে কেউ এক দেখায় চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারবে এই রুমের মালিক আঁকতে বেশ ভালোবাসে। জোনাকি রুমের সামনে এসে হতাশ চোখে নিচে তাকালো তারপর কমরে হাত রেখে রুমে ঢুকতে ঢুকতে সামনে ক্যানভাসে কিছু আঁকতে থাকা সাত বছরের একটা ছোট্ট মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বলল।

” তোকে পেটে নিয়ে তোর মা যেসব কান্ড করেছিলো। আমিতো ভেবেছিলাম তুই বড় হয়ে হয়ত কোনো পুলিশ বা আর্মি হবি। কিন্তু তুইতো দেখি পুরো উল্টো।

জোনাকির কথাশুনে সামনের মেয়েটা ঘাড় বাঁকিয়ে পিছনে তাকালো। কোঁকড়ানো চুলগুলো একসাথে ঝুঁটি করা। মায়ের মতোই চুলগুলো পেয়েছে। মিষ্টি হেসে জোনাকির দিকে চেয়ে বলল।

“তুমি দেখো খালামনি ওই ঘরে মায়ের যেই ছবিটা আছে আমি ঠিক ওইরকম ভাবে মায়ের ছবি আঁকবো।

” আচ্ছা আঁকিস মা এখন আয় আমার কাছে আয়। চুলগুলো কি একটা অবস্থা। আর মুখে এসব কি লেগে আছে। এই তোর মা কোথায়রে? মেয়েকে এভাবে ছেড়ে কোথায় গিয়ে বসে আছে।

“কে আম্মু? আম্মু তো রান্নাঘরে আব্বুকে হামি দিচ্ছে।

কথাটা শুনেই জোনাকির বেষম লাগল। পরক্ষণেই মনে পড়লো কালকে রাতেই সমুদ্র বাড়ি এসেছে। কিন্তু এই মুহুর্তে ওর সামনে থাকা অফিসার সমুদ্রের একমাত্র কন্যা অথই যা বলল তাতে জোনাকির কান গরম হয়ে গেছে। আমতা আমতা করে অথইকে বলল

” এই সব বলতে হয় নাহ সোনা। আর এসব তোকে কে বলেছে?

“কে আবার ছোটো চাচ্চু বলেছে।

অথই মুখ থেকে কথাটা শুনতেই জোনাকি মুখ বাঁকিয়ে ফেলল। বিরবির করে বলল।

” নিজেতো গোল্লায় যাচ্ছেই সাথে এটা কেও নিয়ে যাচ্ছে।

“মনে হয় আমার নামে কেউ সুনাম করছে। আসলে কেউ মনে মনে আমার নামে সুনাম করলেও তা আমার কানে ঠিকি চলে আসে।

পিছন থেকে জয় কথাটা বলতেই জোনাকি পিছন ফিরে তাকালো। জয়কে দেখেই অথই দৌড়ে গিয়ে জয়ের কাঁধে ঝুলে পড়লো। জয়ও অথইকে নিজের কাঁধে নিয়ে বলল।

” আম্মা আপনি এসব মূর্খদের সাথে কথা বলেন কেনো? আপনার খালামনি কি আর্ট সম্পর্কে কিছু বুঝে নাকি। আমি বলছি আপনি একদিন অনেক বড় আর্টিস হবেন। আর ওই ঘরে আপনার মায়ের যেই ছবিটা আছে ঠিক তার মতোই আপনিও একদিন আঁকতে পারবেন।

নিজের সম্পর্কে এমন কথাশুনে জোনাকি রেগে জয় এর দিকে তাকালো। তেড়ে গিয়ে আঙুল উঠিয়ে বলল।

“নিজে কি হ্যাঁ কুমড়ো পটাস একটা খেয়ে খেয়ে নিজেকে হাতির মতো বানিয়েছে।

” এই হ্যালো মিস আস্তে একটু থামুন। এই যে ম্যাসেল দেখেছেন? এইটা দিয়ে একটা মারলেও না আপনাকে খুঁজে পাওয়া যাবে নাহ। নিজে কি মুটকি একটা।

“হ্যাঁ খালামনি চাচ্চুর বডি দেখছো একদম সাল্লুর মতো।

” তুই, ধ্যাত আমি থাকবোই নাহ। এই বাসায় আসায় আমার ভুল আমি আজকেই চলে যাবো। সমুদ্র ভাইয়া কে বলবো আমাকে দিয়ে আসতে।

রাগে রাগে কথাটা বলেই জোনাকি বেরিয়ে গেলো। জয় অথইকে কাঁধ থেকে নামিয়ে সামনে দাঁড় করালো। জোনাকির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে অথই এর দিকে তাকালো।

“খালামনি রাগ করলো কেনো চাচ্চু?

” আরে বাদ দেন আপনার খালামনি তো মাসের এিশ দিনের একএিশদিনই রেগে থাকে।

“আচ্ছা চাচ্চু ওই ঘরে যে আম্মুর বড় একটা ছবি ওটা বড় চাচ্চু এঁকেছিলো তাই নাহ?

” হুম আম্মা.

“আমিও একদিন ঠিক বড় চাচ্চুর মতো আঁকা শিখবো। এখন তুমি যাও তো আমাকে আমার কাজ করতে দাও আমার কত কাজ বাকি এখনো। কথাটা বলেই অথই পুনরায় নিজের কাজে ব্যাস্ত হয়ে গেলো। জয় সেদিকে তাকিয়ে হেঁসে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
,,,,,,,,

” কবে আসা হবে শুনি।

“কেনো কেউ কি আমায় মিস করবে বুঝি।

” হু মিস করতে বয়েই গেছে।

ছাঁদে রেলিং এর উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো জোনাকি। তখনি জয় এসে জোনাকির পাশে দাঁড়ালো। জয়কে দেখে জোনাকি কথাটা বলে চুপ হয়ে গেলো। কেউ কোনো কথা বলল নাহ। খানিকক্ষণ নিরবতার পর জয় আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল।

“কেউ যদি আমার জন্য অপেক্ষা করে তাহলে তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো। আর অপেক্ষা যদি না করে তাহলে ফিরে এসে কি লাভ।

” কত দিনের এটা?

“আমার জানা মতে হয়ত বছর খানিক লাগবে।

” এতোগুলো দিন না দেখে থাকতে পারবে বুঝি মানুষ।

জোনাকির কথাশুনে এবার জয় হেসে ফেলল। পাশে এক পা টেনে জোনাকির পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বলল,

“ম্যাডাম আপনার বোনের বর বলেছে কোনো চাকরি না পেলে তার শালিকার জন্য এই অধম অযোগ্য তাই জন্যই তো এতো অপেক্ষা। তবে আমার জানামতে অপেক্ষায় ফল মিষ্টি হয়।

“অপেক্ষা করবো ফিরে আসার। ফিরে না আসলে একদম মেরে ফেলবো।

” এই কুঁমড়ো পটাস তো সেই কবেই এলিডির প্রেমে মড়ে ভূত হয়ে গাছে গাছে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

জয়ের কথা শুনতেই জোনাকি হেসে ফেলল। জয়ও মুচকি হেসে তার প্রেয়সীর হাসি মুখের দিকে চেয়ে থাকলো।
,,,,,,,,,,,,

“কেবল তো কালকেই আসলেন এতো শীঘ্রই চলে যাবেন কেনো?

” কেনো আদর কম হয়েছে বুঝি? আর তাছাড়া আমি এখনো এক সপ্তাহ থাকবো চিন্তা নেই এই এক সপ্তাহের একদিনও বাদ দেবো নাহ আদর করতে।

সমুদ্রের কথাশুনে শশী সমুদ্রের বাহুতে মাড়লো। এখন রাতের মধ্যে অংশ চলছে। ভালোবাসাবাসির শেষে সমুদ্রের খালি বুকে শুয়ে ছিলো শশী। তখনি কথাটা বলল সমুদ্র।

“এবার যাওয়ার সময় জয়ও যাবে ওর ট্রেনিং শুরু হবে।

সমুদ্রের বুক থেকে মাথা তুলে সমুদ্রের মুখের দিকে তাকিয়ে শশী বলল, আমার কি মনে হচ্ছে বলুন তো অথই তো তবুও আপনাকে আব্বু ডেকেছে। কিন্তু এইবার যেটা আসছে সে আর আপনাকে আব্বু ডাকবে নাহ। সোজা দাদু ডাকবে৷ দিন দিন তো বুড়ো হয়ে যাচ্ছেন।

” কিহ এতোবড় কথা। তোমার কি মনে হয় আমি বুড়ো হয়ে যাচ্ছি? এই যে একটু আগে তোমাকে এতো আদর করলাম তোমার কি মনে হয়েছে যে আমি আর আগের মতো আদর করতে পারি নাহ।

“ছিঃ কি সব কথা বলেন।

” তো? গভীর রাত এক কাঁথার মধ্যে দুজন স্বামী স্ত্রী একজনের শরীর অন্যজনের সাথে লেপ্টে আছে। ভিতরে ভালোবাসার উন্মাদনা। এই রকম মুহুর্তে এই সব ছিঃ মার্কা কথা বলবো নাতো নীতি কথা বলবো? তাহলে সরি বস আমি সাধু সন্নাসী নয়।

“এই আপনি আর ভালো হলেন নাহ।

” আমি যদি ভালো হয়ে যায় না তাহলে আর বছর বছর মা ডাক শুনতে পাবে নাহ।

“ধূর আপনার সাথে কথা বলায় বেকার ছাড়ুন আমায় ঘুমাবো।

” তো কথা বলতে বলেছে কে। এখন কি কথা বলার সময়? এখনতো অন্য কিছু করার সময়। আর কিসের ঘুম এতোদিন পর বউয়ের কাছে আসলাম রাতে নাক ডেকে ঘুমানোর জন্য নাকি।

“আচ্ছা আপনার কাজের ওখানে জানে তাদের রাগী গম্ভীর স্যার কত বেফাঁস আর বেহুদা কথা বার্তা বলে।

” ওদের স্যার ওদের সাথে যেভাবে কথা বলার প্রয়োজন সেভাবেই বলে। আর রাতের অন্ধকারে বউয়ের সাথে যেভাবে কথা বলা দরকার সে ভাবেই বলছে। এই কথা না বলে চুপ থাকো আমাকে আমার কাজ করতে দাও৷ আর পারলে একটু আমার সাথে তাল মিলিয়ে আমাকে সাহায্য ও করো।

কথাটা বলেই সমুদ্র ওর সবচেয়ে প্রিয় অর্ধাঙ্গিনি কে ভালোবাসতে ব্যাস্ত হয়ে গেলো। এই রাত যে ভালোবাসার রাত। এক সময় রাত ফুরিয়ে যাবে দিনের আলো ফুঁটবে কিন্তু সমুদ্রের তার অর্ধাঙ্গিনি কে ভালোবেসে ফুরাতে পারবে নাহ।

,,,,,সমাপ্ত,,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে