Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"তোর_শহরে_ভালোবাসা পর্ব-৩৫

তোর_শহরে_ভালোবাসা পর্ব-৩৫

#তোর_শহরে_ভালোবাসা??
………{সিজন-২}
#ফাবিহা_নওশীন

পর্ব~৩৫

??
সামু পিটপিট করে চোখ মেলে সাদা পর্দা চোখে পড়ে।সামু আশেপাশে চোখ বুলিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে কোথায় আছে।ডান বাম কাতে ঘাড় ঘুরায়।ও হসপিটালে আছে।রুমে কেউ নেই।পুরো রুমে ও একা।সামু ধীরে ধীরে উঠে বসে।
তারপর মনে পড়ে এক্সিডেন্টের কথা।
ওর নিজেকে হালকা লাগছে।পেটে হাত রাখে।পেট একদম স্লিম আর কোনো কিছু অনুভব করছে না।আর না সারা শরীরে কোনো ব্যথা অনুভব করছে।
সামু ভয় পেয়ে যায়।ভয় ওর চোখ মুখ ছেয়ে আছে।
“আমার বেবি?আমার বেবি কোথায়? ”

সামু বেড থেকে নেমে চিতকার করে,
—–আমার বেবি কোথায়? আদি?

আদি বাইরে বসে ছিলো সামুর চিতকার শুনে ভেতরে আসে।সামু চোখ মুখ শক্ত করে দাড়িয়ে আছে।ওর শরীর কাপছে।আদিকে দেখে বললো,
—–আমার বেবি কোথায়?

আদি সামুর কথা শুনে ভ্রু কুচকে ওর দিকে চেয়ে আছে।
সামু আবারো চিতকার করছে।
—–আদি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করছি।আমার বেবি কোথায় বলবে?

আদির ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে।সামুর সব মনে পড়ে গেছে।
আদিকে এভাবে হাসতে দেখে সামুর শরীর জ্বলে যাচ্ছে।সামু আদির কলার ধরে চোয়াল শক্ত করে বললো,
—–আমার বেবি কোথায়?

সবাই ততক্ষণে দরজার সামনে এসে দাড়িয়েছে।সবার চোখে হাজারো প্রশ্ন।আদিবা ভয় নিয়ে ওদের দেখছে।সামু সবাইকে দেখে আদির কলার ছেড়ে দিলো।সামু কিছু জিজ্ঞেস করতে যাবে তখনই আদিবা ভয়ে ভয়ে বললো,
—–পাপা!!

আদি আদিবার দিকে ঘুরে বললো,
—–কিছু হয়নি বাবুই।
তারপর ওর মাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
—–মা ওকে নিয়ে যাও।সামুর সাথে আমার কথা আছে।

আদির মা সবাইকে নিয়ে চলে গেলো।আদি সামুর দু-বাহুতে হাত রেখে বললো,
—–তোমার সব মনে পড়েছে?আমাকে চিনতে পারছো আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া।

সামুর আদির কথা কিছুই মাথায় ঢুকছেনা।আর না চাইছে ঢুকাতে।ওর এখন শুধুমাত্র ওর বেবির নিউজ চাই।
সামু কন্ঠ মোলায়েম করে জিজ্ঞেস করলো,
——আমাদের বেবি?

আদি স্নিগ্ধ হেসে বললো,
——বেবি ঠিক আছে।শুধু তুমি ঠিক ছিলেনা।আদিবাকে দেখাবো তোমাকে তবে তার আগে কিছু কথা ক্লিয়ার করা জরুরী।তোমাকে কিছু কথা বলবো আর কিছু প্রশ্ন করবো তুমি শান্ত হয়ে শুনবে।ওকে?

সামু মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললো।আদি জানতে চাইছে সামুর ঠিক কতটুকু মনে আছে।
—–আমার গাড়িতে তোমার এক্সিডেন্ট হয়েছিলো তারপর কি হয়েছিলো?

—–কি প্রশ্ন এগুলো? তুমি জানোনা তারপর সুস্থ হয়ে মামনি আর নিশিপুর সাথে তোমাদের বাড়িতে যাই।আর এ নিয়ে তুমি কত ঝামেলা করেছিলে।

—–হ্যা জানি।তারপর কি আমাদের বিয়ে হয়?

সামু ভ্রু কুচকে আদির দিকে চেয়ে বললো,
—–মজা করছো?হাহ!
বিয়ে ছাড়াই কি আদিবাকে জন্ম দিয়েছি।

—–আরে বাবা সেটা বলছিনা।আমি শুধু জানতে চাইছি তোমার কতটুকু মনে আছে।

—–আমার সব মনে আছে।তারপর আমাদের বিয়ে হয়,প্রেম হয়,আদিবা আসে।তারপর অসুস্থ হয়ে পড়ি তাই ডক্তরের কাছে যাই আর আশার পথে এক্সিডেন্ট হয়।আর তারপর কি হয়েছিলো মনে নেই।তারপর হয়তো কেউ আমাদের হসপিটালে এনেছিলো।

—–হ্যা।তারপর?

—–তারপর….
সামু মনে করার চেষ্টা করছে।কিছুক্ষণ পর বললো,
—–হ্যা তারপর কিভাবে যেনো রাস্তায় বসে ছিলাম এক ভদ্রমহিলা আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়।আমি কিছুই মনে করতে পারছিলাম না।উনার বাড়িতেই থাকতাম।আর সবকিছু খোজার,মনে করার চেষ্টা করতাম।একদিন আন্টি কিছু জিনিস কেনার জন্য মলে পাঠায় তারপর বাড়িতে ফিরে একটা বাচ্চা মেয়েকে দেখি।আর ওকে নিয়ে পরের দিন থানায় যাই ওর পাপা ওকে নিতে আসে আর আমাকে বলে আমি নাকি তার…

সামু থমকে যায়,,,কিছুক্ষণ পর আদির দিকে চেয়ে বললো,
—–এই ওয়েট ওয়েট সে তো তুমিই ছিলে।তোমাকে পাপা বলছিলো আর তুমি শায় দিচ্ছিলে।আর কি নাম ছিলো ওর হ্যা মনে পড়েছে আদিবা।আদিবা!!
আদি ওর নাম আদিবা??
কিছুক্ষণ আগেও তো তোমাকে পাপা বলে গেলো।কি হচ্ছে এসব?তোমার আরেকটা মেয়ে আছে?তারমানে তুমি আরেকটা বিয়ে করেছো?
সামু কাদো কাদো হয়ে বললো।

আদি সামুর কথা শুনে ভড়কে গেলো।
—–সামু উল্টো পাল্টা কি বলছো তোমার মাথা আবার গেছে?

—–মাথা আবার গেছে মানে?

—–আমার কথাগুলো মন দিয়ে শুনবে।সেদিন এক্সিডেন্টে তুমি আমি গুরুতর আহত হয়েছিলাম।তোমার অবস্থা ক্রিটিকাল ছিলো তাই সিজার করতে বাধ্য হয়।আদিবা সুস্থ থাকলেও তোমার অবস্থা খারাপ ছিলো।দুদিন হয়ে যাওয়ার পরেও জ্ঞান ফিরে নি।অবস্থা দিনকে দিন খারাপ হচ্ছিলো তারপর তুমি কোমায় চলে যাও।।
আদি মাথা নিচু করে ফেললো শেষের কথাটুকু বলে।

সামু বিস্ময় নিয়ে বললো,
—–কোমা!!

—–হ্যা,সামু।এসবের জন্য আমি দায়ী।
শুধুমাত্র আমার জন্য তোমার জীবন থেকে ৪টা বছর হারিয়ে গেছে।

—–৪ বছর!! কি বলছো?

—–হ্যা সামু হিসাব করে দেখো ৪বছর তুমি কোমায় ছিলে।৪দিন আগে তুমি কোমা থেকে বের হলেও স্মৃতি হারিয়ে ফেলো।আজ চারদিন পর তোমার স্মৃতি ফিরে এসেছে।

সামু সবটা শুনে মেঝেতে ধপ করে বসে পড়ল।চারটি বছর ও অনুভূতিহীন ছিলো?
ও ওর বেবির বেড়ে উঠা,প্রথম কান্না, প্রথম কথা বলা,হাটা চলা কিছুই দেখতে পারেনি।ও ওর বেবিকে কোলে নিয়ে আদর করতে পারেনি।
সামুর চোখ বেয়ে অঝোরে পানি পড়ছে।
আদি হাটু গেড়ে সামুর পাশে বসে বললো,
—–আমাকে প্লিজ ক্ষমা করো।আমি এর শাস্তি পেয়েছি সামু।চারটা বছর তোমাকে ছাড়া থেকেছি।একা আদিবাকে মানুষ করেছি।ওর প্রতি কখনো বিন্দুমাত্র অবহেলা করিনি।আদর-ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছি।একটা দিন ওকে ছাড়া থাকিনি।আমার লাইফের ফার্স্ট প্রায়োরিটি ছিলো আদিবা।
আমাকে যা শাস্তি দেওয়ার দেও কিন্তু আদিবাকে পূর্ণ করো।ও তোমাকে খুব মিস করে।অনেক কষ্ট পেয়েছে মেয়েটা।তোমাকে হারিয়ে অনেক কেদেছে।যখন ছোট ছিলো তখন অন্যরকম ছিলো ব্যাপারটা কিন্তু যখন থেকে মা শব্দের মানে বুঝতে পারলো,অন্যদের মায়েরা যখন তাদের বাচ্চাদের আদর করতো আদিবা কষ্ট পেতো,মিস করতো তোমাকে।আমি সবসময় ওকে তোমার সাথে দেখা করাতে নিয়ে যেতাম।ও গিয়েও তোমার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়তো।তোমার হাত,গাল,চোখ,নাক সব ছুয়ে ছুয়ে দেখতো।

সামু শব্দ করে কেদে দিলো।
—–আমার মেয়ে আমার কাছে ছিলো অথচ আমি চিনতে পারিনি।কি ভাগ্য আমার।আমি নিজের মনে করে ওকে আদর করতে পারিনি।

—–সামু প্লিজ ডোন্ট ক্রায়।আমি আদিবাকে ডাকছি।
আদি আদিবা বলে ডাকতেই আদিবা দিদার হাত ছেড়ে দৌড় দিলো।ও শুধু পাপার ডাকের অপেক্ষায় ছিলো।আদিবা দরজার সামনে এসে দাড়িয়ে গেলো।কারণ ওর পাপা শিখিয়েছে বড়রা যখন কথা বলে তখন হুট করে তাদের মধ্যে ঢুকে যেতে নেই।

আদি আদিবাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্নিগ্ধ হেসে বললো,
—–মাম্মা ডাকছে তোমাকে।

সামু আদিবার দিকে এগিয়ে গেলো।তারপর আদিবার চোখে মুখে অজস্র চুমু খেলো।তারপর বুকে জড়িয়ে ধরলো।
——আমার মেয়ে! আমার আদিবা।তোমাকে আর কষ্ট পেতে দিবোনা।অনেক আদর করবো তোমাকে।সরি বেবি।

আদিবা মাথা তুলে বললো,
—–মাম্মা আমাকে ছেড়ে আর যাবেনা তো?

—–কখনো না।

—–তুমি চলে গেলে আমি খুব কাদবো।আর পাপাও।

—–না আমি আর কোথাও যাবোনা তোমাদের ছেড়ে।

সামু আদিবাকে কোলে নিয়ে আদির সাথে বাইরে এলো।আদি আদিবাকে কোলে নিলো।সামু একে একে মামনি,বাবা(আদির বাবা),ওর বাবা,নিশি,জয় সবার সাথে কথা বলে নিলো।
আদির মা বললো,
—-অবশেষে আল্লাহ মুখ তুলে চেয়েছে।সব ঠিক হয়ে গেছে।আমার সংসার আবারো পরিপূর্ণ হয়েছে।তুই ছাড়া বাড়িটা বাড়ি ছিলোনা।এখন আবারো সব ঝলমল করে উঠবে।

সামুর রিলিজ নিয়ে সবাই বাড়ি ফিরে গেলো।তবে সামুর কিছু চেকাপ বাকি আছে।অন্য একদিন এসে সব কমপ্লিট করে যাবে।

.

সামু আদিবাকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে।আদিবাও ওর মাকে জড়িয়ে ধরে আছে।সারাদিনের ক্লান্তিতে সামু সন্ধ্যায় ঘুমিয়ে পড়েছে।ক্লান্ত ছিলো তাই আর কেউ ডাকেনি।আদি মা-মেয়েকে দেখে প্রশান্তির হাসি দিলো।তারপর আদিবার পাশে শুয়ে পরলো।আজ মেয়ে মাকে পেয়েছে তাই বাবার কথা মনে নেই।
আদি শুয়ে শুয়ে সারাদিনের কথা মনে করতে করতে ঘুমিয়ে পরলো।

মাঝরাতে সামুর ঘুম ভেঙে যায়।সন্ধ্যায় ঘুমিয়েছে তাই ঘুমটা মাঝরাতে ভেঙে যায়।চোখ খোলে আদিবার মুখ দেখে।আদিবার ঘুমন্ত মুখ দেখে ওর মনে প্রশান্তি বয়ে যায়।আদিবার চুলগুলো নেড়ে-চেড়ে দেয়।তখনই হটাৎ আদির কথা মনে পড়ে।সামু উঠে বসে আদিকে খোজে।আদি আদিবার পাশে বালিশ ছাড়া শুয়ে আছে।
সামু আস্তে আস্তে উঠে নিঃশব্দে একটা বালিশ নিয়ে আদির মাথার নিচে রাখতেই আদি জেগে যায়।চোখ মেলে সামুর দিকে তাকায়।
সামু স্মিত হেসে বললো,
—–এতো ঘুম পাতলা কবে হলো?

আদি স্নিগ্ধ হেসে বললো,
—–আদিবার জন্য কত রাত জেগে কাটিয়েছি।একটু পর পর ওকে দেখার জন্য উঠেছি।ক্ষুধা পেয়েছে কিনা,কাদছে কিনা,ডায়াপার চেঞ্জ করতে হবে কিনা।

সামুর মুখ কালো হয়ে গেলো।যে কিনা এক গ্লাস পানি ঢেলে খায়না সে কত কি করেছে।একটা বাচ্চা লালন পালন করা মুখের কথা না।
—–আদিবার জন্য তোমার খুব কষ্ট হয়েছে তাই না?

আদি উঠে বসে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
—–উহু,,।আমার রক্ত আমার সন্তান।কষ্ট কেনো হবে?
আদিবার জন্মের পর আমি আদিল চৌধুরী ছিলাম না আমি আদিবার বাবা ছিলাম।তবে কি জানো আমি এমন সব কাজ করেছি যা আমি কোনো দিন কল্পনা করিনি।
তবে আমার কষ্ট লেগেছে তোমার জন্য।তুমি হসপিটালের বেডে অর্ধমৃত অবস্থায় শুয়ে ছিলে,আদিবা,আদি নামে কেউ তোমার জীবনে ছিলো না।আদিবাকে কোলে নিতে পারোনি,আদর করতে পারোনি,ওর ছোট বেলা দেখতে পারোনি,ওর প্রথম কথা বলার অনুভূতি অনুভব করতে পারোনি।
নিজেকে অনেক অপরাধী লাগতো।আমি আদিবার মাঝে তোমাকে খোজে পেতাম।ও আমার কাছে থাকলে মনে হতো তুমি আছো।তোমাকে অনুভব করতাম।আদিবার মন খারাপ হলে মনে হতো তোমার মন খারাপ,আদিবা কাদলে মনে হতো তুমি কাদছো।তুমি কষ্ট পাচ্ছো।তুমি বলছো আদি তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করতে পারছোনা।তুমি বাবা হওয়ার যোগ্য না।

সামুর চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।আদি সেটা দেখে বললো,
—–আই হেইট টেয়ারস।তোমাকে এতোবার বলতে হয় কেনো?আদিবাকে তো বলতে হয়না।

সামু চোখের পানি মুছে বললো,
—-মেয়ে তাহলে বাপকে রগে রগে চিনে ফেলেছে?

—–মাকে তো চিনাতে পারলাম না।তাই মেয়েকেই চিনালাম।

সামু মুচকি হেসে আদিবার দিকে চেয়ে আছে।আদিবাকে নতুন করে ওকে চিনতে হবে,জানতে হবে।অনেক দায়িত্ব।আগামীকাল থেকে শুরু হবে ওর এই দায়িত্ব।

আদি আচমকা সামুকে জড়িয়ে ধরলো।আদির কেমন জানি সব স্বপ্ন স্বপ্ন মনে হচ্ছে।আদি আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
সামুও পরম ভালোবাসায় আদিকে জড়িয়ে নিলো।
আদি বলতে শুরু করলো,
—–তোমাকে ছাড়া আমার থাকতে অনেক কষ্ট হতো সামু।আমি শুধুমাত্র আদিবার জন্য নিজেকে শক্ত করতে পেরেছি।রোজ হসপিটালে গিয়ে তোমাকে কতশত অনুরোধ করতাম।কত বার রাগ করেছি তার হিসাব নেই।একা একাই তোমার সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলতাম।আমি তোমাকে অনেক মিস করেছি।

—–আর মিস করতে হবেনা।আমি সুস্থ হয়ে গেছি।তুমি,আদিবা আমি সবার দায়িত্ব নিবো।অনেক কষ্ট করেছো আর নয়।

অনেকক্ষণ কেটে যাবার পরেও আদির ছাড়ার নাম নেই।
—–আদি রাত পেরিয়ে ভোর হয়ে যাবে।

—–তাতে কি? চার বছর ঘুমিয়ে হয়নি?চার বছর পর তোমাকে পেয়েছি সহজে ছাড়ছিনা।

—–হুহ! এখন চার বছর জড়িয়ে ধরে রাখো

—–আচ্ছা।

—–আচ্ছা মানে?

—-কি আজিব তুমিই তো বললে।আমার কি দোষ?তোমার যে রোমান্স করতে মনে চাইছে সেটা তো বলতে পারছোনা তাই…
সামু নিজেকে ছাড়িয়ে আদিকে মারতে শুরু করলো।ওদের চেচামেচি শব্দে আদিবার ঘুম ভেঙে গেলো।আদিবা চোখ ঢলতে ঢলতে উঠে বসে বললো,
—–তোমরা মারামারি করছো কেনো?

সামু আদিবা দুজনেই চমকে যায় আদিবার কন্ঠ শুনে।দুজনেই থেমে গিয়ে আদিবার দিকে তাকায়।
আদিবা আবারো প্রশ্ন করলো,
—–তোমরা মারামারি করছো কেনো?

আদি হেসে বললো,
—–কই মারামারি করছি,,তোমার মাম্মার শরীরে তেলাপোকা উঠেছিলো সেটা খুজছিলাম।
আদিবা লাফ দিয়ে আদির কোলে উঠে বসে।
ভয়ে ভয়ে বললো,
—-তেলাপোকা!!
পাপা আমার ভয় লাগছে।মাম্মার শরীরে তেলাপোকা?

সামু আদির দিকে চোখ পাকিয়ে তাকালো।
—–ভয় পেওনা।তোমার পাপা আছেনা?
তোমার পাপা জানো কি?

আদিবা চট করে বললো,
—–সুপারম্যান।

সামু আদিকে মুখ ভেংচি দিলো।
আদি সেটা দেখে সামুকে চোখ মারলো।আর আদিবাকে বললো,
—–তুমি চোখ বন্ধ করো।আমি মাম্মার শরীর থেকে তেলাপোকা ফেলে দেই।
আদিবা চোখ বন্ধ করে নিলো পাপার কথামতো।
আদি সামুর গালে শক্ত করে চুমু খেলো।সামু চোখ বড়বড় করে চেয়ে আছে।

—–আদিবা চোখ খোলো।তেলাপোকা ফেলে দিয়েছি।চলে গেছে।

সামু আদিকে কিছু না বলে আদির কোল থেকে আদিবাকে নিয়ে শুয়ে পরলো।আদিও আদিবার পাশে শুয়ে পরলো।আর ওর পরিবার পুরো হয়েছে।আজ ওর চোখে শান্তির ঘুম আসছে।

সামু ঘুম ভেঙে দেখে অনেক বেলা হয়ে গেছে।বিছানায় আদি বা আদিবা কেউ নেই।সামু উঠে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিলো তারপর নিচে গেলো।আদি সোফায় বসে বসে আদিবাকে খাইয়ে দিচ্ছে।
সামু গিয়ে আদির হাত থেকে প্লেট নিয়ে বললো,
—–এ কাজের জন্য আমি আছি।তুমি বিজনেসে মন দেও।এতো প্রেশার নিতে হবেনা।আদিবার সব দায়িত্ব আমার।

সামু আদিবাকে বসে বসে খাওয়াচ্ছে।
—–বেবি চুল কে বেধে দিয়েছে?

—–আমি করেছি সুন্দর হয়েছে না?

সামু মুচক হেসে বললো,
—–সুপার!
যদিও ঝুটি বাকা হয়েছে।তবুও সামু আদিকে খুশি করার জন্য উৎসাহ দেওয়ার জন্য বললো।

আদিবাকে খাইয়ে দিয়ে চুল করে ঠিক করে বেধে দিলো।
—–আদি তুমি অফিসে যাবে না?

—–আগামীকাল থেকে আদিবার স্কুল আর আমার অফিস।আজ আমাদের ছুটি।
আর হ্যা আগামীকাল তোমাকে নিয়ে হসপিটালেও যেতে হবে।আমি এই সমস্যা আর ফেস করতে চাইনা।
আজ আমরা সবাই মিলে ঘুরতে যাবো।

চলবে…

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ