তোর_শহরে_ভালোবাসা পর্ব-২৪

0
2364

#তোর_শহরে_ভালোবাসা??
……..{সিজন-২}
#ফাবিহা_নওশীন

পর্ব~২৪

সামু ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে নিজের সাজগোজ শেষ বারের মতো খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে।ভালো ভাবে দেখে নিলো কিন্তু কোনো কমতি চোখে পড়ছেনা।আজকে শুধু নিশিরই বিয়ে নয় নিজেকেও সবার সামনে এ বাড়ির বউ হিসেবে তুলে ধরতে হবে।বিভিন্ন মেহমানদের সাথে আলাপচারিতা পর্ব সারতে হবে।
সামু যখন নিজেকে দেখা শেষ করে ফোন হাতে নিয়ে বের হবে তখনই আদি ওর সামনে এসে দাড়ালো।সামুকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে সামুকে বললো,
—–লুকিং হট।

সামু আদির দিকে চোখ পাকিয়ে তাকালো।তারপর আদিকে ওভারটেক করে যেতে নিলে আদি ওর সামনে গিয়ে দাড়ালো।
——আরে আরে এভাবে যাবে নাকি?

সামু ভ্রু কুচকে বললো,
——এভাবে মানে?

আদি সামুকে আয়নার সামনে নিয়ে কিছুটা পাশ কাটিয়ে দাড় করালো যাতে পেছনের কিছু অংশ বিদ্যমান হয়।তারপর বললো,
—–লুক!

সামু আদির দিকে একবার চেয়ে একরাশ বিরক্তি নিয়ে সেদিকে তাকাতেই চমকে গেলো।তারপর দ্রুত ঘুরে দাড়ালো যাতে পিঠ না দেখে আদি।
সামু কাদো কাদো হয়ে বললো,
—–এটা কিভাবে হলো?চেইন নষ্ট হলো কিভাবে?

আদি ভাবার ভংগী করে বললো,
——হয়তো প্রথম থেকেই নষ্ট ছিলো।
তুমি খেয়াল করোনি।

সামু অসহায় গলায় বললো,
—–এখন আমার কি হবে?আমি কিভাবে নিচে যাবো?

আদি সামুকে বললো,
—–তুমি কি এভাবে নিচে যেতে চাইছো?চেঞ্জ করে নেও।তারপর নিচে যাবে।

সামু ভাবছে কি পড়বে।
—–কিন্তু আমি কি পড়বো?যেমন তেমন একটা পড়ে তো নিচে যাওয়া যাবেনা।এতবড় একটা অনুষ্ঠান।

আদি কপালে চিন্তার রেখা ফুটিয়ে কিছুক্ষণ ভাবার ভংগী করে তারপর বললো,
—–তুমি শাড়িটা পড়ে নেও।শাড়িটা ফ্যাশনেবল আর এক্সপেন্সিভ।

—–কিন্তু আমি তো তেমন সুন্দর করে শাড়ি পড়তে পারিনা।হালকা পাতলা পারি।

আদি ব্যস্ততার ভংগীতে বললো,
—–ওয়েট আমি দেখছি।

আদি দরজার সামনে গিয়ে বাকা হাসি দিলো।কিছুক্ষণ পর একজন মহিলাকে নিয়ে এলো।
সামু গালে হাত দিয়ে বিছানায় বসে ছিলো।মহিলাটিকে দেখে উঠে দাড়ালো।
আদি সামুকে বললো,
——ইনি তোমাকে শাড়ি পড়াবে।তুমি চেঞ্জ করে এসো আমি নিচে যাচ্ছি।
সামু মাথা নাড়িয়ে শায় জানালো।

আদি বারবার সিড়ির দিকে তাকাচ্ছে।সামুর জন্য অপেক্ষা করছে।তখনই ওর সব বন্ধুরা এসে ওকে জেকে ধরলো।আদি সবার ফেসের এক্সপ্রেশন দেখে বুঝতে পারছে এরা কি বলতে এসেছে।
গতকাল এদের মিসকলে ফোন ডেড হয়ে গেছে।তবুও জিজ্ঞেস করলো,
—–কি হয়েছে তোদের? বান্দরের মতো মুখ করে রেখেছিস কেন?

এক ফ্রেন্ড বললো,
—–অয়ন বললো তুই বিয়ে করেছিস।এটা কি সত্য?

আদি অয়নের দিকে একবার তাকিয়ে সিড়ির দিকে চোখ দিলো।সিড়ির দিকেই চোখ রেখে বললো,
——উমম তোদের কি মনে হয় অয়ন সত্যি বলছে না মিথ্যে?

—–আদি হেয়ালি করিস না তো।অয়ন কি বলছে আমাদের মাথায় ঢুকছেনা।প্রেম ভালোবাসা,মেয়ে এসবে যে বিশ্বাস করতোনা সে ডাইরেক্ট বিয়ে?হাও দিস পসিবল?

আদি তখনো সিড়ির দিকে চেয়ে আছে।
—–আরে ভাই উত্তর দে।তখন থেকে সিড়ির দিকে চেয়ে কি খোজছিস?

আদি আনমনে উত্তর দিলো।
—–আমার বউকে খোজছি।

সবাই টাস্কি খেলো।সবাই যেনো হুট করে বোবা হয়ে গেলো।মুখে কোনো কথা সরছেনা।

তখনই সামুকে দেখতে পেলো।শাড়ির কুচি ঠিক করতে করতে আসছে।আদি সামুর অজান্তে কিছু পিক তুলে নিলো।
সামু অতি সাবধানে বারবার দেখে পা ফেলছে।ওর বারবার মনে হচ্ছে শাড়িতে পা বেধে যাবে।অনেক দিন পর শাড়ি পড়েছে তাই ক্যারি করতে অসুবিধা হচ্ছে।

সামু এসে আদির পাশে দাড়ালো।চোখে মুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট।তারপর বললো,
—–দেখুন তো ঠিকঠাক লাগছে কিনা।

আদি আশ্বাস দিয়ে বললো,
—–পারফেক্ট।
চলো নিশির কাছে যাওয়া যাক।
আদির বন্ধুরা টাস্কির উপর টাস্কি খাচ্ছে।
আদি ওদের দেখে মুচকি হেসে বললো,
—–মিট মাই ওয়াইফ সামান্তা।

সামান্তা ওদের সবার সাথে কুশল বিনিময় করে নিশির কাছে গেলো।
নিশিকে বউ সাজে খুব সুন্দর লাগছে কিছুক্ষণ পর বরপক্ষ চলে আসবে।নিশির কান্না পাচ্ছে।আজকে ওর জীবন বদলে যেতে শুরু করেছে।আজকে ও নিজের পরিবার বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে।নিজের ঘর যেখানে ওর পদতলে মুখরিত ছিলো, নিজের বিছানা সব ফাকা পড়ে থাকবে।
সামু, আদি, নিশি সবাই নিজেদের ফ্যামিলি,বন্ধুবান্ধবের সাথে কিছু ফটো তুলে নিলো।

বরপক্ষ চলে এসেছে।
সামু এদিক সেদিক আসতে যেতে,অতিথিদের সাথে হাই হ্যালো করতে করতে জান তামাতামা।ওর প্রচুর টায়ার্ড লাগছে।ইচ্ছে করছে এই হৈ-হুল্লোড় থেকে পালাতে।রুমে গিয়ে রিলেক্স করতে।
বিয়ে পড়ানো শেষ।অতিথিরা বিদায় নিচ্ছে।নিশিকেও কিছুক্ষণ পর নিয়ে যাওয়া হবে।সামুর বাবা সবার থেকে বিদায় নিয়ে সিলেটের জন্য বেরিয়ে গেলো।

সামু ফাকা এক জায়গায় গিয়ে দাড়িয়ে কোমড়ে দু-হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে।
—-উফফ এই শাড়ি আমাকে আরো অস্থির করে ফেলছে।ড্রেসটা নষ্ট না হলে এটা আমি জীবনেও পড়তাম না।

আদি পেছনে থেকে বললো,
—–অবশ্যই পড়তে কারণ আদি চেয়েছে তুমি এটা পড়ো।

সামান্তা পেছনে ঘুরে বললো,
—–চেইন নষ্ট না থাকলে জীবনেও পড়তাম না।সেটা যেই চাক।চেইনটা যে কেন এমন হলো?

—–কারণ আমি নষ্ট করে দিয়েছি।

সামু চোখ বড়বড় করে বললো,
—–কি!!! আপনি!!
আপনি আমাকে শাড়ি পড়ানোর জন্য এসব করেছেন।
আপনাকে তো আমি….
সামু রাগে ফুসফুস করতে করতে আদির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
আদি ভো দৌড়।
সামু হাতে একটা শোপিস নিয়ে আদির পেছনে দৌড়াচ্ছে।
শাড়িতে বারবার বেধে যাচ্ছে আর নিশিকেও নিয়ে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে।সামু তাই দাড়িয়ে গেলো।
আদি সামুকে দাড়িয়ে পড়তে দেখে দাঁড়িয়ে গেলো।
——কি দম শেষ?

সামু হাপাতে হাপাতে বললো,
—–একটুও না।শাড়ি পড়ে দৌড়াতে পারছিনা।তাছাড়া নিশি আপু চলে যাবে।ব্রেক নিচ্ছি।ব্রেকের পর আবার।বায় ব্রেক পর্যন্ত ভালো থাকবেন।

আদি বললো,
——তোমার ব্রেক পর্যন্ত আমি এখানে বসে থাকবো নাকি?
হুহ পারলে ধরে দেখিও।

নিশি ওর মাকে জড়িয়ে কাদছে।আজ ও ওর চেনা মানুষ,চেনা জায়গা ছেড়ে চলে যাচ্ছে।যে বাড়ির প্রতিটি জিনিস নিজের মনে হতো আজ সব পর করে দিয়ে চলে যাচ্ছে।যে বাড়িতে প্রথম বাবা-মায়ের হাত ধরে হাটা শিখেছে,যেখানে বেড়ে উঠেছে ওর ছেলেবেলা,শৈশব,কৈশোর সবকিছুর স্মৃতি জড়িয়ে আছে।হাসি,আনন্দ,সুখ-দুঃখ নিয়ে যেখানে প্রতিনিয়ত নতুনের স্বপ্ন দেখেছে।নিজের ঘর,বিছানা,ড্রেসিং টেবিল,পড়ার টেবিল প্রতিটি জিনিস আজ পর হয়ে যাচ্ছে।এর পর যতবার আসবে এই বাড়ি আর নিজের মনে হবেনা।নিজেকে দুদিনের অতিথি মনে হবে।
নিশির বাবা নিশিকে বারবার শান্তনা দিচ্ছে আর চোখের কোনের পানি আড়াল করছে।তার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।আজ তার কলিজার টুকরোকে অন্যের হাতে,অন্যের দায়িত্বে দিয়ে দিচ্ছে। এমন ভয়ংকর একটা দিন তার জীবনে আসবে বুঝতে পারেনি।মেয়েকে একদিন বিদায় দিতে হবে কিন্তু বিদায়ের অনুভূতি যে এতোটা যন্ত্রণা দিবে বুঝতে পারেনি।
সামু দূরে দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলছে।নিশির সাথে কাটানো সময় গুলো ওর চোখের সামনে ভেসে উঠছে।নিশি ওর সব সময়ের সঙ্গী ছিলো।সবকিছুতে ওকে সাপোর্ট দিয়েছে, হেল্প করেছে।এক সাথে কত আড্ডা দিয়েছি।
নিশি তার ভাইকে খোজছে।আদিকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।
সামু আদিকে খোজতে গিয়েছে।ফোন দিচ্ছে তুলছেনা।

আদি নিজের রুমের বিছানায় বসে কপালে দুহাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে রেখেছে।আজ ওর বোন চলে যাচ্ছে শ্বশুর বাড়ি।নিশিকে তেমন সময় ও দিতে পারেনি।নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলো।নিশিকে বিদায় দেওয়ার দৃশ্য ও দেখতে চাইছেনা।তাই এখানে এসে বসে আছে।
সামু দরজা খোলে রুমে ঢুকলো।আদি দরজা খোলার শব্দ পেয়ে নিজেকে সামলে নিয়ে সোজা হয়ে বসলো।কিন্তু নিজেকে স্বাভাবিক রাখার যতই চেষ্টা করুক পারছেনা।
ওর চেহেরায় সবটা স্পষ্ট।সামু আদিকে পর্যবেক্ষণ করে বললো,
—–নিশি আপু চলে যাচ্ছে আপনার সাথে কথা বলতে চায়।

আদি নিজের কন্ঠ স্বাভাবিক করে বললো,
—–আগামীকাল দেখা হবে।আজ আমার ভালো লাগছে না।

সামু বুঝতে পারছে আদির মনের অবস্থা।
—–দেখুন আমি বুঝতে পারছি আপনার মনের অবস্থা কিন্তু নিশি আপু চলে যাচ্ছে সে আপনার সাথে কথা বলতে চাইছে।আপনার সেখানে যাওয়া দরকার।

আদি সামুর কথার উত্তর না দিয়ে পা বাড়ালো।

নিশি আদিকে দেখে বললো,
—–ভাইয়া আমি তোমাকে অনেক জ্বালিয়েছি আমাকে মাফ করো।

আদি সামুকে জড়িয়ে ধরে বললো,
—–আমাকে ক্ষমা করিস।আমি ভাইয়ের কোনো দায়িত্ব পালন করিনি।
তবে দোয়া করি অনেক ভালো থাক।এখন কান্না বন্ধ কর।

নিশি সামুর কাছে গিয়ে দাড়ালো।সামু নিশির দিকে চোখ তুলে শুকনো হাসি দিলো।
—–সামু তুই আমার বোন,বান্ধবী,ভাবি।আমি আগেও যেমন তোর পাশে ছিলাম আজও আছি।আমার মা-বাবা,ভাইয়ার দায়িত্ব তোর।তুই সবাইকে দেখে রাখিস।মন খারাপ করিস না।অকে?

সামু কাদো কাদো হয়ে বললো,
—–আমি তোমাকে খুব মিস করবো আপু।

—–আমিও রে।

অবশেষে নিশিকে বিদায় দেওয়া হলো।
নিশি কান্না থামাতে পারছেনা।যতই জয়ের বাড়ির দিকে গাড়ি এগিয়ে যাচ্ছে ততই ওর কান্না বেড়ে যাচ্ছে।জয় ওকে থামানোর চেষ্টা করছে।

আদি বারান্দায় কাউচে বসে আছে।এখনো চেঞ্জ করে নি।ফ্রেশ হয়নি।বাড়িটা কিছুক্ষণ আগেও কলরবে মুখরিত ছিলো।এখন একদম ঠান্ডা নিস্তব্ধ হয়ে গেছে।মনে হচ্ছে জনশূন্য একটা বাড়ি।সামু চেঞ্জ করে শাওয়ার নিয়ে বের হয়েছে।সামুরও কিছু ভালো লাগছে না।
সামু একবার গিয়ে আদির বাবা আর মাকে দেখে এলো।তাদের মন খারাপ।চুপ হয়ে গেছে।সামু ওনাদের খাওয়ানোর চেষ্টা করেও পারেনি।একমাত্র মেয়েকে ছাড়া থাকতে তাদের কষ্ট হচ্ছে।তবুও কিছু করার নেই।

সামু এসে আদির পাশে দাড়ালো।
—–এখনো চেঞ্জ করেননি?চেঞ্জ করে নিন।অনেক রাত হয়েছে।আগামীকাল নিশি আপুর বাড়িতে যেতে হবে।

আদি কোনো কথা না বলে নীরবে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।ফ্রেশ হয়ে এসে চুপচাপ শুয়ে পরলো।
সামু বুঝতে পারছে আদি নিশিকে মিস করছে।ভাই বলে কথা।

.

সামুর মাথাটা ভিষণ ধরেছে।গতকালের দৌড়ঝাপ,রাতে ঠিকমতো ঘুম না হওয়ার জন্য হয়তো এমন হচ্ছে।নিজের হাতে চা বানিয়েছে।বারান্দায় দাঁড়িয়ে প্রকৃতি দেখতে দেখতে চায়ের কাপে চুমুক দিতেই ওর মুখ কুকচে এলো।চা তেতো হয়ে গেছে।সামু মুখ থেকে চা ফেলে দিতে মুখ বিকৃত করে বললো,
—–ওয়াক কি জঘন্য!! এই চা বানালাম এতো কষ্ট করে।
সামু বারান্দা থেকে এসে ওয়াশরুমে গিয়ে চা ফেলে দিয়ে বের হতে হতে বিরবির করে বললো,
—–ছিহ সামু এক কাপ চা ও বানাতে পারিস না?শেম অফ ইউ।এতো সময় লাগিয়ে এমন জঘন্য তেতো চা বানিয়েছিয়া?

আদি ফ্রেশ হওয়ার জন্য আলমারি থেকে নিজের জামাকাপড় বের করছিলো।সামুর কথা শুনতে পেয়ে বললো,
—–তেতো মানুষের তেতো জিনিসই খাওয়া উচিত।এতে অসুবিধা কোথায়?

সামুর মুখ তেতো হয়ে গেছে।মুখের ভিতরে বিশ্রী লাগছে।এক কাপ চা বানাতে পারেনা ঠিকমতো।তাই নিজের উপর রাগ হচ্ছে।
তাই বললো,
—–আপনি তো মিষ্টি।তো আপনি আমার মতো তেতো মেয়েকে বিয়ে করার জন্য এমন ২নাম্বারি কেন করলেন?

আদি জামাকাপড় রেখে সামুর দিকে তাকালো।সামুকে আলমারির সাথে চেপে ধরে বললো,
—–ভালোবাসার জন্য করেছি
বাট তুমি বুঝবেনা।তোমার এই না বুঝা,তোমার এই এভয়েড করা আমাকে কতটা যন্ত্রণা দেয় তুমি জানো?
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে তোমাকে খুন করে ফেলি তারপর নিজেকেও শেষ করে দেই।যদি এতে যন্ত্রণা কমে।

তারপর সামুকে ছেড়্ব দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়।সামু আলমারির সাথে তখনও হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

.

জয় আর নিশির রিসিপশন।
আদি সামুকে নিজের সাথে সাথেই রেখেছে।এক মুহুর্তের জন্য চোখের আড়াল করছে না।রাজ যদি আসে আবার যদি কিছু করে।সামুও আদির সাথে থাকতে আপত্তি করে নি।আদির সাথেই এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে।
নিশির সাথে কথা বলে ওরা খাওয়ার পাট চুকিয়ে নিলো।নিশিকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে।কিছুক্ষণের মধ্যেই ওরা বাড়ির জন্য রওনা দিবে।সামু আর আদি গাড়ির কাছে যাচ্ছে।হটাৎ করেই রাজ ওদের সামনে এসে পড়লো।আদি রাজকে দেখে সামুর হাত ধরে বললো চলো।রাজও ওদের পাশ কাটিয়ে যেতে নিলে সামু আদিকে থামিয়ে দেয়।আদি সামুর দিকে চেয়ে আছে।
সামু বললো আমার উনার সাথে একটু কথা আছে।।তারপর রাজকে বললো,
—–এক্সকিউজ মি.

রাজ একবার আদির দিকে চেয়ে সামুর দিকে বিস্ময় নিয়ে চেয়ে আছে।
—–ধন্যবাদ।

রাজ বুঝতে পারছেনা কেন ধন্যবাদ দিচ্ছে।
সামু সেটা বুঝতে পেরে বললো,
—–ধন্যবাদ কেন দিলাম বুঝতে পারছেন না?নিশ্চয়ই আমাদের দুজনকে এক সাথে আশা করেন নি?অন্যকিছু আশা করেছিলেন?
সেদিন আপনি ওসব বলে আমার অনেক বড় উপকার করেছেন।আমাদের মাঝে এই একটা সিক্রেট ছিলো সেটাও এখন নেই।দুজনেই ক্লিয়ার।আর হাসব্যান্ড ওয়াইফের মাঝে সব ক্লিয়ার থাকা জরুরী।
আপনি কি ভেবেছেন আমি সব সম্পর্ক ভেঙে দেবো?হ্যা, আমার রাগ হয়েছিলো বাট এটা সব সম্পর্কেই হয়।আপনি বলেছিলেন আদি আমার সেকেন্ড অপশন ছিলো।হ্যা আপনার সাথে বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো তারপর বাধ্য হয়েই আদিকে বিয়ে করি।উনাকে বিয়ে করার কথা কল্পনাও করিনি।বাট এটা তো ঠিক উনি আমার প্রথম এবং শেষ ভালোবাসা।আপনি এই শুরু শেষের মাঝেও নেই।বিন্দুমাত্র নেই।(আদি এইটুকু শুনে অজানা দেশে হারিয়ে গেছে ও আর কিছু শুনতে পারছেনা।হৃদয়ে আলোড়ন তৈরি করেছে।কানে সুর বেজে চলেছে) তাই বলছি অন্যের লাইফে,অন্যের সংসারে আগুন লাগানোর চেষ্টা না করে নিজেকে শোধরে নিন।আপনি যতবার আমাদের সম্পর্ক ভাংগার চেষ্টা করবেন হেরে যাবেন।পারবেন না।তাই আমাদের থেকে দূরে থাকুন আর নিজের লাইফ গুছিয়ে নিন।ফ্রিতে উপদেশ দিয়ে দিলাম।নেওয়া না নেওয়া আপনার ব্যাপার।

চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে