#তোর_শহরে_ভালোবাসা?
পর্ব-৯
ফাবিহা নওশীন
সামান্তার জ্ঞান ফিরায় পিটপিট করে চোখ মেলছে।চোখ মেলে নিজেকে শুয়া অবস্থায় আবিষ্কার করে।হটাৎ করেই ওর আগের ঘটনা মনে পড়ে।ওকে কিডন্যাপ করা হয়েছে এটা মনে পড়তেই আতকে উঠে।শুয়া থেকে এক লাফে উঠে বসে।
–ঘুম হয়েছে জানেমন?
–তুতুতু,, মি!!!মানে আপনি?তারমানে আপনি করেছেন এসব?
–তাছাড়া আর কে?কার এতো বুকের পাটা যে আদির বউকে কিডন্যাপ করবে?
সামান্তা আদিকে দেখে স্বস্থি পেলো।কি ভয়টাই না পেয়েছিলো।
((যারা ভেবেছিলেন রাজ তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা))
আদি সামান্তার বিছানার পাশে এসে বসল।সামান্তা ভ্যা ভ্যা করে কেদে দিলো,,।
–আপনি এতো খারাপ কেন?এভাবে কেউ নিজের বউকে কিডন্যাপ করে?আমি কি ভয়টাই না পেয়েছি।
–আহারে সোনা কাদে না।এ ছাড়া আর কি করতাম তুমি তো ভালো কথার মেয়ে না তাই কিডন্যাপ করাই ব্যাটার মনে হলো।
–আমি কত্ত ভয় পেয়েছিলাম।ভেবেছিলাম কে না কে,,,,
–কেন এখন ভয় পাচ্ছো না?
সামু ভ্রু কুচকে বললো, আপনাকে কেন ভয় পাবো?আপনি বাঘ না ভাল্লুক?
–বাঘ ভাল্লুক বলে নয় তুমি আমাকে ভরসা করো তাই ভয় পাচ্ছোনা।আমার জায়গায় অন্য একটা ছেলে হলে ঠিকি ভয় পেতে।পেতে কিনা বলো।
–(অবশ্যই ঠিক)আমি বাড়ি যাবো।
–বাড়িতো যাওয়া যাবেনা।
–কেন?
–কারণ আমরা বাড়ি থেকে অনেক দূরে আছি।আর এখন অনেক রাত।
–মানে কি?আমরা কোথায় এসেছি?কেন এসেছি?বাসার সবাই চিন্তা করবে আমার জন্য।
–না করবেনা।সবাই জানে আমরা এখানে এসেছি।
সামু ভ্রু কুচকে বললো,
–এখানে কেন এসেছি?
আদি বাকা হেসে বললো, হানিমুন করতে।
–কিহ!!আমি এখনি চলে যাবে।
–ইউ কেন ট্রাই।
সামু রুম থেকে বের হয়ে গেলো।এই ঘরটা দুতলায়।দুতলা থেকে একটা সিড়ি গেছে নিচের দিকে।
সিড়ি দিয়ে নিচে নেমে গেলো।লিভিং রুম,ডাইনিং,কিচেন।মোটামুটি বড়সড় বাড়ি এটা বুঝা যাচ্ছে।বাড়ির দেয়াল বেশিরভাগ গ্লাস দিয়ে তৈরি।বাইরেটা দেখা যাচ্ছে।কি অন্ধকার।বুঝাই যাচ্ছে অনেক রাত হয়েছে।সামু মেইন ডোরের দিকে গেলো।মেইন ডোরের কাছে গিয়ে নানান ভাবে খোলার চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই খোলছেনা।
–ওভাবে খোলবেনা বউ।পাসওয়ার্ড দিয়ে খোলতে হয়।
আদি সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে বললো।
সামান্তা আদির কথা শুনে পাসওয়ার্ড দিয়ে খোলার চেষ্টা করছে।উল্টো পাল্টা যা মনে চাইছে চাপছে।কিন্তু কিছুতেই কিছু না।সামান্তা চেষ্টা করতে করতে হাপিয়ে যাচ্ছে।
সোফায় বসে নিজেকে রিলেক্স করছে।আর ভাবছে এই ছেলের সাথে একা এক বাড়িতে থাকা ইম্পসিবল।সবাই আমাকে না জানিয়ে কিভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিলো?
–কি ভাবছো গো?(ছটফটানি পাখি এইবার তোমাকে খাচায় পুরেছি,যাবে কই)
–দরজা খোলেন।
— পাসওয়ার্ড ভুলে গেছি সকালের আগে মনে পড়বেনা।
–দেখুন,,
–দেখছি তো।সারা রাস্তা দেখতে দেখতে এসেছি,সারারাত দেখবো।আর কত চাও,,(বাকা হেসে)
–আপনি একটা অসভ্য।
–অসভ্য কথায় একটা কথা মনে পড়লো।আমি তোমার অজান্তেই তোমার সাথে একটা অসভ্যতামি করে ফেলেছি।
সামান্তা ধপ করে উঠে গেলো তারপর চোখ বড়বড় করে বললো, কি??কি করেছেন?
–তোমার ঠোঁটে একটা,,
সামান্তা কিছু খোজছে,একটা প্লাস্টিকের হাতল পেলো।সেটা হাতে নিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে বললো,
–আদির বাচ্চা,,আপনি আমাকে প্রথমে কিডন্যাপ করেছেন,তারপর এখানে আটকে রেখেছেন আর এখন বলছেন ছি,,আমি তো আজ আপনাকে,,
–ও,,এম,,জি,,।বউ ক্ষেপেছে।ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে তৈরি।আদি পালা,,
সামু,আদির পিছনে দৌড়াচ্ছে।উদ্দেশ্য আজ ওকে পেলেই হলো,,পুরো লিভিং রুম,ডাইনিং উপর নিচ দৌড়াচ্ছে কিন্তু আদিকে ধরতে পারছেনা।যে রুমে সামুকে এনে রেখেছিলো সামান্তা সেখানে দাড়িয়ে গেলো।কোমড়ে দুহাত রেখে বড়বড় শ্বাস নিচ্ছে।প্রচুর দৌড়েছে।
আদি সামনে এসে বললো কি হলো টায়ার্ড?
সামু চোখ না তুলে কিছু না বলেই হাতের লাঠি দিয়ে আদিকে মারতে লাগলো।
–সামু,লাগছে,,
আদি সামুকে ধরে ফেললো।হাতের লাঠি নিয়ে দূরে ফেলে দিলো।সামু আদিকে ধাক্কাচ্ছে।আদি সামুর দুহাত এক হাতে চেপে পিছনে ধরে রাখলো।সামু নিজের কাধ দিয়ে আদিকে জোরে ধাক্কা দিতেই তাল সামলাতে না পেরে বেডে পড়ে গেলো।সামুর হাত ধরে রাখার কারণে সামু ওর বুকের উপর পড়ে গেলো।বুকের হাড়ের সাথে নাক লাগায় নাকে প্রচন্ড ব্যথা পেলো।মাথা তুলতে পারছেনা।
আদি বাকা হেসে বললো,
–হাও,,রোমান্টিক!!
সামু মাথা তুলে বললো,
–ক্রেজি ইনশান।
বলে আদির উপর থেকে উঠতে গেলে আদি ওকে টান দিয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে দুহাতে ওর পিঠ চেপে ধরলো।সামান্তা উঠতে পারছেনা।পা দিয়ে আদিকে মারছে আর উঠার চেষ্টা করছে।
–ছাড়ুন,,
–ছটফটানি পাখি এতো ছটফট করো কেন?এত কাঠখড় পুড়িয়ে তোমাকে এখানে এনেছি ছেড়ে দেওয়ার জন্য?বাড়িতে তো শুধু ছটফট করো।কথা বলতে গেলে উড়াল দেও।তাই তোমার ডানা কেটে খাচায় বন্দী করেছি।আমি যতক্ষণ পর্যন্ত না চাইবো তুমি কিচ্ছু করতে পারবেনা।
–কেন এনেছেন এখানে?কি চাই?
–এখনো বুঝো নি??বাসর করতে এনেছি।(বাকা হেসে)
–(দাড়া দেখাচ্ছি মজা)তা করুন বাসর।আজ বাসর করবেন কাল এক হালি বাচ্চার বাপ হবেন।দুজন দু কাধে আর দুজন কোলে নিয়ে ঘুরবেন।।আপনার তো এখনো বিয়ের বয়স ই হয়নি।অথচ ৪টা বাচ্চা আপনাকে বাবা বা বলে পাগল করে দিবে।হাও কিউট!!
–(আমি ভয় দেখাচ্ছি না আমাকে ভয় দেখাচ্ছে?আমিও কম যাই না)তা হোক না।বিয়ে করেছি আর বাচ্চা হবেনা তা তো হয়না।এক হালি বাচ্চা তোমাকে মাম্মি বলে ডাকবে আর আমাকে পাপা বলবে।কত্ত মজা হবে বলো।চলো শুরু করি।
সামান্তা আদির কথায় দমে গেলো।তারপর খুক খুক করে কাশতে লাগলো।
–আমার গলা শুকিয়ে গেছে।আমি পানি খাবো।ছাড়ুন।
আদি সামান্তাকে ঘুরিয়ে বিছানায় শুইয়ে ওর উপর নিজের ভর ছেড়ে দিলো।সামান্তা আদির এহেন কাজে ভয় পাচ্ছে।ওর বুক ধুকপুক করছে।
তোতলাতে তোতলাতে বললো,,
–কি,,করছেন,,টাকি?
হটাৎ আদির চেহারার রং পাল্টে গেলো।হাসিখুশি মুখটা নিমিষেই লাল হয়ে গেলো।দাতে দাত চেপে বললো,
–সব সময় এতো বাহানা খোজো কেন দূরে যাওয়ার,?আমি কি বলেছি শুনোনি?তুমি এখন আমার অধীনে।আমি না চাইলে তুমি কিছু করতে পারবেনা।
সামু আদির চেহেরা দেখে ঘাবড়ে গেলো।আদি রেগে গেছে এখন চুপ থাকাই শ্রেয়।নয়তো রাগের বশে উল্টো পাল্টা কিছু করে ফেলবে।সামান্তা চুপ করে আছে।নড়ছেও না।
আদি বললো,
–যা যা জিজ্ঞেস করবো সুন্দর করে উত্তর দিবে নয়তো,,,,বুঝতেই পারছো কি করবো?
–না,,বলুন।সব উত্তর দিবো।
–রাজের সাথে কি চলছে?
সামু যা ভেবেছিলো তাই।
–কিছুনা।কিছুই চলছে না।
–তাহলে তোমাকে ফোন দিয়েছিলো কেন?
–জানিনা।
–তোমার নাম্বার কোথায় পেলো?
–আমি দেইনি।ওনি আমার ফোন থেকে নিয়েছে।
–তোমার ফোন থেকে কিভাবে নেয় হা?যাইহোক তোমার সিম আমি ভেঙে ফেলেছি।নতুন সিম দিয়েছি।তুমি যদি আর কখনো ওর সাথে কথা বলো তাহলে আদির আসল রুপ দেখবে।
তোমাকে আমি সেদিন ফোন করে মানা করেনি ওর থেকে দূরে থাকতে,,কিন্তু তুমি শুনোনি।এর শাস্তি তো তোমাকে পেতেই হবে।
সামান্তা ভয়ে ঢুক গিলে বললো,
প্লিজ,,,।
আদি ওর কথা না শুনে সামান্তার গলায় কুটুস করে কামড় বসিয়ে দিলো।
সামান্তা “আউচ” করে গলায় হাত দিলো।
–কি হলো জানেমন ব্যথা পেয়েছো?
সামান্তা মাথা নেড়ে না বলল।
আদি বাকা হেসে বললো,তাহলে আরেকটা দেই?
–নানায়ায়ায়া,,,আমি ব্যথা পেয়েছি।এমনিতেই আপনি আমার এত সুন্দর নাকটা থেতলে দিয়েছেন।
–আমি কখন তোমার নাক থেতলে দিলাম?
–যখন আমি আপনার উপর পড়েছি,,আপনার এই পাথরের মতো শক্ত শরীর আমার নরম কোমল নাকটা থেতলে দিয়েছে।
–ব্যথা পেয়েছো খুব?দাড়াও আদর করে দিচ্ছি।
আদি আলতো করে সামান্তার নাকে ঠোঁট ছোয়ালো।
সামান্তা আবারো ফ্রিজ হয়ে গেলো।
আদি মৃদু হেসে বললো,আলমারিতে তোমার জন্য জামাকাপড়,প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আর তোমার ব্যাগ আছে।ফ্রেশ হয়ে নেও।ফোন আমার কাছে বাসায় গেলে ফেরত পাবে।
সামু আমতা আমতা করে বলল,
–বাসায় কখন যাবো??
–আরে এতো অস্থির কেন হচ্ছো?স্বামীর সাথেই তো আছো?
সামান্তা চুপ করে আছে।
–কি হলো উঠবে না,তোমার কি এভাবে থাকতে ভালো লাগছে?
সামান্তা আদিকে ধাক্কা মেরে উঠে দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।আদি হাতের উপর মাথা দিয়ে হোহো করে হেসে দিলো।
–সামু,,তোমাকে তো হাসিল করেই ছাড়বো।ভালো লাগুক আর না লাগুক তোমাকে আমার সাথেই থাকতে হবে।বাসায় গিয়ে বাবার সাথে কথা বলে সব ঠিক করে ফেলবো।তোমাকে আমার চাই চাই।
সামু আদিকে গালাগাল করছে,
এখনি এমন লুচ্চামি করছে,না জানি সারারাত কি করে??আমি এখানে থাকবোনা।আল্লাহ রক্ষা করো।সব ওই রাজের জন্য হয়েছে।ব্যাটা আমাকে না ফোন দিতো না আমাকে শাস্তি দিতে এখানে নিয়ে আসতো।
সামু আলমারি খোলে অনেক গুলো শপিং ব্যাগ দেখতে পেলো।সেখান থেকে নীল রঙের একটা লং ড্রেস পড়ে নিলো।ফ্রেশ হয়ে চুল আচড়ে একটু সাজগোজ করতে নিয়েও করলো না।আদি আবার কি না কি ভাবে,,তাই সিম্পল ভাবেই নিচে গেল।
আদি থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট আর ব্লু কালার টিশার্ট পড়ে ডাইনিংয়ে বসে আছে।সামান্তাকে দেখে হাসতে শুরু করলো।
সামু চোখ মুখ কুচকে জিজ্ঞেস করলো,
হাসছেন কেন?
–তুমি দেখছি আমার সাথে ম্যাচিং করে ড্রেস পড়েছো।
সামু নিজের দিকে আর আদি দিকে চেয়ে অবাক হয়ে বললো,
–আমি ম্যাচিং করে পড়িনি ইটস জাস্ট এন এক্সিডেন্ট।
–বিউটিফুল এক্সিডেন্ট।
আমার খুব খিদে পেয়েছে।চলো খাওয়া শুরু করি?
সামান্তা টেবিলে দু প্যাকেট পিজ্জা,সালাদ আর দুটো কোকের বোতল দেখতে পেলো।
সামান্তা বললো, কি খাবো?
–কেন পিজ্জা,,
সামান্তা ভাবলেশহীন ভাবে বললো,আমি পিজ্জা খাইনা।
আদি অবাক হয়ে বললো,সত্যি না মজা করছো?
–আপনি একজনকে কিডন্যাপ করেছেন কিন্তু সে কি খায় না খায় জানেন না?
–তুমি আসলেই খাওনা?ঠিক আছে তুমি বসো আমি তোমার জন্য বাইরে থেকে কিছু নিয়ে আসি।
আদি উঠে কয়েক কদম বাড়াতেই সামু আদির হাত ধরে ফেললো।
–আরে এখন রাত ১১টা।আর এটা কোনো শহর নয়।এতরাতে বাইরে যেতে হবেনা।আমি ম্যানেজ করে নিবো।
কথা শেষেই হাতের দিকে খেয়াল গেলো।সামু এক ঝাটকায় হাত সরিয়ে নিলো।
আদি বললো,
–তুমি সারারাত না খেয়ে থাকবে?
সামান্তা বললো,এই দুটো পিজ্জা আপনার, তার বদলে এই দুটো কোক আমার।আপনি একটাও পাবেন না।
–একটুও না?
–না।
সামান্তা কিছু সালাদ খেয়ে দুটো কোক নিয়ে উঠে গেলো।পর্দা সরিয়ে গ্লাসের সামনে দাড়ালো।বাইরে অল্প অল্প বৃষ্টি পরছে।আদি টেবিলে নিজের মতো খাচ্ছে।সামান্তা সেদিকে একবার চেয়ে গান ধরলো।
??
যাও পাখি বলো হাওয়া ছলছল
আব-ছায়া জানালার কাচ।
আমি কি আমাকে হারিয়েছি বাকে,
রুপকথা আনাচে-কানাচ।
আংগুলের কোলে জ্বলে জোনাকি,
জলে হারিয়েছি কান শোনা কি,
জানালায় গল্পেরা কথা মেঘ
যাও মেঘ চোখে রেখো এ আবেগ।
আদির পায়ের শব্দে সামান্তা গান থামিয়ে দিলো।
আদি গান থামানো দেখে বললো,
কি হলো গান থামালে কেন?ভালো গান ই তো গাইছিলে।
সামান্তা কথা ঘুরানোর জন্য বললো,
আপনি কোক খাওয়ার জন্য বেয়াহার মতো এখানে এসে পড়েছেন?
–উহু,,বাইরে বৃষ্টি পরছে।এমন রোমান্টিক মোমেন্টে কোক কেন খেতে চাইবো?
সামান্তা জানালা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে পাশের টেবিলে কোকের বোতল রেখে বললো,
–নিয়ে যান।এত বাহানা করতে হবেনা।আমি এতো খেতে পারবোনা।
আদি কিছু বলছে না নড়ছেও না।সামান্তা আদির চোখের দিকে চাইতেই ভয় পেয়ে গেলো।কেমন নেশাভরা দৃষ্টি।কোনো কিছু পাওয়ার তীব্র আকাংখা।সামান্তার কেমন গন্ডগোল লাগছে।এখান থেকে সরে যাওয়াই ব্যাটার মনে হচ্ছে।সামান্তা আদিকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে আদি ওকে ধরে ফেলে।
ওর হাত ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে।সামান্তার সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।আদির চোখে সামান্তাকে কাছে পাওয়ার নেশা দেখতে পাচ্ছে।আদি সামান্তার কোমড়ে হাত রেখে সামান্তা নিজের সাথে মিশিয়ে অন্য হাতের দু আংগুল দিয়ে ওর গালে স্লাইড করতে লাগলো।সামান্তা চোখ বন্ধ করে ফেললো।
সামান্তার বিষয়টি ভালো মনে হচ্ছে না।কেমন ভয় ভয় লাগছে।তাই চোখ বন্ধ করা অবস্থায় বললো,
–কি করছেন?
–চোখ খোলো।
–না,,
–খোলো বলছি,,
সামান্তা চোখ খুলল।
–আমি তোমাকে মিথ্যে বলেছিলাম আমি গাড়িতে তোমার সাথে কিছুই করিনি।আমি তোমার সাথে যা করবো তা তোমার সজ্ঞানেই হবে।হোক সেটা তোমার ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়।বুঝেছো?
সামান্তা কিছু না বুঝেই বললো,
–হুম।
–কি হুম,,?
–আমাকে ছাড়ু,,,,উমম।
সামান্তা পুরো কথা শেষ করার আগেই ওর চুলের ভাজে হাত ডুবিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।সামান্তা চোখ বন্ধ করে ফেললো।কেন জানি সামু বাধা দিতেও পারছেনা।অজানা কোনো কারণে। সামু দুহাতে জামা খাচমে ধরে রেখেছে।আদি পাগলের মতো কিস করছে।১০মিনিট পর আদি সামুকে ছেড়ে দিয়ে সামুর কপালে কপাল ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করেই জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে।দুজনেই হাপাচ্ছে।
আদি কিছুক্ষন পর কপালে মাথা ঠেকানো অবস্থায় বললো,
–সামু আই রিয়েলি লাভ ইউ।প্লিজ গিভ মি এ চান্স।মেরি মি এগেইন প্লিজ।
??
রাত ১২টা ৩০।ঘুমানোর জন্য সামু রুম খোজছে।কিন্তু অবাক করা বিষয় সব রুমের দরজা লক করা।এটা কে করেছে, কেন করেছে সামু ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে।আদি বিছানার এক পাশে আয়েশ করে শুয়ে আছে।সামান্তা দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে তা দেখে আদি বললো,
–ওখানেই দাড়িয়ে থাকবে না এখানে এসে ঘুমাবে?
সামু মাথা নিচু করে আস্তে করে বললো,
–আমি আপনার সাথে শুবোনা।আমাকে অন্য রুমের দরজা খোলে দিন।
–সরি সেটা হবেনা।তোমাকে আমার সাথেই থাকতে হবে।ভয় পেও না আমি কিছু করবোনা।
সামান্তা সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে।রুমের ভিতরে আসছেনা।আদি উঠে গিয়ে সামুকে কোলে করে এনে বেডে শুইয়ে দিলো।সাথে সাথে সামু উঠে বসলো।
–দেখুন আমি আপনার সাথে এক বিছানায় থাকবোনা।প্লিজ জোর করবেন না।আপনি আমার সাথে থাকতে কম্ফোর্ট হলেও আমি নই।
আদি কিছুটা রেগেই বললো,
–কেন নও?একটু আগেই তো,,,।যাইহোক আমাকে কি তোমার একটুও বিশ্বাস হয়না?বলছি তো কিছু করবোনা।আমি যখন বলেছি আমার সাথে থাকবে ব্যাস,থাকবে।আমি শুধু তোমার সাথে পাশাপাশি ঘুমাতে চাই আর কিছুনা।
বলেই আদি রুমের দরজা লক করে লাইট অফ করে ডিম লাইট অন করে বিছানার কিনার ঘেষে পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো।সামান্তাও কোন উপায় না দেখে বিছানার অপর পাশে শুয়ে পরলো।
চলবে,,,,