#তোর_শহরে_ভালোবাসা?
পর্ব-১৯
ফাবিহা নওশীন
??
রাত ১০টা সামু ক্লাসের পড়া তৈরি করছে।আদি পাশে এসে বসলো।সামু একবার আদিকে দেখে আবার পড়ায় মনোযোগ দিয়ে বললো,
–কি জনাব,,আজ বন্ধুরা পাত্তা দেয়নি?
–কেন?এমন কেন মনে হচ্ছে?
–কারণ রাত ৩টার গাড়ি থুরি মানুষ ১০টায় বাড়ি ফিরলো যে,,
— তখন তো বউ ছিলো না।এখন বউ আছে তাই বাইরে মন টিকে না,,
–উহো..
–কি করো?
–পড়ছি,,তোমার মতো শিক্ষিত হতে হবে তো,,
–এত পড়তে হবেনা,,একটু আমার দিকে নজর দেও,,
সামু চোখ ঘুরিয়ে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে বললো।
–নজর দেওয়া শেষ।
আদি মুখ ফুলিয়ে বললো, হুহ,,
আদি বারান্দায় চলে গেলো।সামু মুচকি হেসে পড়া রেখে ওর পিছনে পিছনে গেলো।আদি রেলিং ধরে আকাশের দিকে চেয়ে আছে।বড় গোলাকার চাদ উঠেছে।
সামু পিছনে থেকে বললো,
–আদি আমি ভাবছি কি এখানে একটা বেড আনা দরকার,,
আদি চমকে বলে,
–বেড??
–হুম।আমাদের বারান্দাটা অনেক বড়।আর খোলা বারান্দা।একপাশে একটা সিংগেল বেড থাকবে যেখানে চাদ উঠলে আমরা দুজনে জোস্না বিলাশ করবো।
–গুড আইডিয়া।কালই চলে আসবে।কিন্তু সিংগেল বেড কেন?জায়গা হবেনা,,ডাবল আনি।
–সিংগেল বেড নামেই সিংগেল।সেখানে খুব ভালো ভাবে ই দুজন মানুষের জায়গা হয়।ডাবল বেড এনে জায়গা খাপাতে চাইনা।আর ওপাশে একটা ঝুলা আইমিন দোলনা থাকবে।ওপাশে তোমার রকিং চেয়ার।
–আর এখানে তুমি পছন্দ করে কিছু অর্কিড আর গোলাপের ফুল গাছ এনে রাখবে।ছোটখাটো গার্ডেন হবে।জোস্নারাতে দারুণ লাগবে।
–বাহ!!আমাদের সাজানো সংসার।
–হুম আমাদের সংসার।বাই দ্যা ওয়ে তুমি এখানে কি করো পড়তে বসো নয়তো স্যার,মেমিরা ক্লাসে কান ধরে দাড় করিয়ে রাখবে।ছিঃ
সামু ভেংচি কেটে চলে গেলো।
সকালে নাস্তার টেবিলে,,
আদির বাবা আদিকে বলছে,
–অনেক তো হলো আদি,আর কত?এবার অন্তত একটু নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবো।২৬বছর হতে চলেছে এখন তো আর বাচ্চা নও।বিয়ে করেছো কদিন পর নিজেই বাচ্চার বাবা হয়ে যাবে।এবার একটু দায়িত্ব নিতে শিখো।আমার বয়স হয়েছে আমার পড়ে তো তোমাকেই সব দেখতে হবে।তাই বলছি অফিসে বসে সব বুঝে নেও।কয়েকদিনের মধ্যেই তুমি অফিসে যাচ্ছো আর কোনো বাহানা চলবেনা।মনে রেখো।
আদি আর যাইহোক বাবার সামনে হু হা করতে পারেনা।কিছু না বলে কাটা চামচ প্লেটে ঘুরাচ্ছে।সামু ব্যাপারটা বুঝতে পারছে।আদির বাবা ডাইনিং ছাড়তেই আদি কাটা চামচ টুং শব্দ করে প্লেটে ফেলে দিয়ে ডাইনিং ত্যাগ করলো।সামু বিষয়টিতে একদম অবাক হয়নি।নাস্তা শেষে রুমে গিয়ে দেখে আদি রাগে ফুসছে।
–হুয়াট হ্যাপেন্ড আদি?প্লিজ কাম ডাউন।
–কাম ডাউন?লাইক সিরিয়াসলি?
বাবা আমাকে বিয়ে দেখাচ্ছে।বিয়ে করেছি দায়িত্ব কেন নিচ্ছি না?অফিসে কেন যাচ্ছিনা?এবার বুঝতে পারছি বিয়ের জন্য কেন হটাৎ পাগল হয়েছিলো,,
বলেই আদি সামুর দিকে তাকালো।সামুর মুখ ভার করে রেখেছে।
আদি ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বললো,
–সামু সরি,,বাট আমি তোমাকে মিন করে কিছু বলিনি।না আমাদের বিয়ে নিয়ে কিছু মিন করেছি আমি শুধু বুঝাতে চেয়েছি আমার বিয়ে টিয়ে কিছুই না বাবা অফিসে বসানোর জন্য আমাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য উতলা হয়েছেন।আমি তো বলছিনা যে আমি দায়িত্ব নিবোনা কিন্তু এখনি কেন?আর এর সাথে বিয়ের কি সম্পর্ক?
–তুমি কি আমাকে দিয়ে আসবে?না আমি ড্রাইভার নিয়ে চলে যাবো?
আদির মনে হচ্ছে সামু রাগ করেছে।ওর সাথে যাওয়া উচিত।যেতে যেতে রাগ ভাংগাবে।আর সামু ভাবছে আমার সাথে চলো যেতে যেতে তোমার রাগ ঠান্ডা হলে ঠান্ডা ভাবে কিছু বুঝাবো।
–না চলো আমিই যাচ্ছি।লেটস গো।
গাড়িতে কিছুক্ষণ পর,,,
–আদি দেখো সবসময় সামান্য বিষয়ে এত ভায়োলেন্ট হওয়া ঠিক না।তোমার অফিসে বসতে ইচ্ছে করছেনা বাবাকে সুন্দর করে বলবা যে তোমার সময় দরকার।তুমি এখনি দায়িত্ব নিতে চাওনা।ব্যাস।কিন্তু এ দায়িত্ব তো তোমাকে নিতেই হবে।স্টাডি শেষ করে ছেলেরা নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবে।তোমাকেও ভাবতে হবে।চিল্লাচিল্লি করে,ভায়োলেন্ট হলেই সব সমস্যার সমাধান হয়না বরং সমস্যা আরো বেরে যায়।
দেখো তুমি ভাবতে পারো যে তোমার বাবার অনেক আছে তুমি কেন কাজ করবে?কিন্তু একটা কথা কি জানো বসে খেলে রাজার ধনও শেষ হয়ে যায়।
বিকেলে-
সামু ভার্সিটি থেকে বাসায় ফিরেছে।বাসায় এসে যে আদিকে পাবেনা জানে।ফ্রেশ হয়ে আসতেই আদির মেসেজ।
“সামু বারান্দা চেক করো,তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে।”
মেসেজ পেয়ে সামুর চোখ চকচক করছে।এক দৌড়ে বারান্দা।বারান্দায় গিয়ে অবাক।গতকাল রাতে যেমনটা বলেছিলো ঠিক তেমন ভাবেই সাজানো।সুন্দর একটা বেড,তাতে অনেক গুলো কুশন সুন্দর করে সাজানো।একপাশে দোলনা।বারান্দায় লাইটিং করা হয়েছে।ফেরি লাইট লাগানো।সবকিছু সামু ছুয়ে ছুয়ে দেখছে।আদির আরেকটা মেসেজ এলো।
“গার্ডেনে অনেক গুলো ফুলের গাছ আছে।সেখান থেকে তোমার পছন্দ মতো গাছ এনে বাগান সাজাও।আমি এসে দেখবো”
সামু নিয়ে চলে গেলো।সেখানে অনেক গুলো চারা গাছের টপ।দেখেই মনে হচ্ছে কিছুক্ষণ আগে আনা হয়েছে।সামু পছন্দ মতো অনেকগুলো গাছ সিলেক্ট করে সার্ভেন্ট দিয়ে নিয়ে উপরে নিয়ে গেলো।তারপর সাজানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলো।
??
রাত ১২টা,
সামু একা বারান্দায় বেডে শুয়ে শুয়ে আকাশের চাদ দেখছে।যদিও চাদ আদির সাথে দেখার কথা ছিলো কিন্তু আদি বাসায় ফিরেনি।একবার ফোন করেছিলো কিন্তু আদি পিক করে নি।তাই আর অভিমান করে ফোন দেয়নি সামু।ডিনার টেবিলে কিছু একটা বলে এড়িয়ে গেছে।সামু অপলকভাবে চাদের দিকে চেয়ে আছে।রাত বেড়েই চলেছে,,১.৪৫মিনিট।সামু দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মিনমিন করে বললো,
“আদি আজ তোমার ঘরের নেশা নেই,,বাইরের নেশায় আসক্ত হয়েছো।”
??
ফুটলো সন্ধ্যামণির ফুল আমার মনের আঙিনায়
ফুল-ফোটাতে কে এলে ফুল ঝরানো সাঁঝ-বেলায়।।
আজ কি মোর দিনের শেষে
উঠলো চাঁদ মধুর হেসে
কৃষ্ণা তিথির তৃষ্ণা মোর মিটলো ওই জোছনায়।।
আজ যে আঁখি অশ্রুহীন কি দিয়ে ধোয়াই চরণ
সুন্দর বরের বেশে এলে কি আমার মরণ!
দেখ বসন্তের পাখি
কোয়েলা গেছে ডাকি
আনন্দের দূত তুমি ডাকিয়া ফুল ফোটায়।
___কাজী নজরুল ইসলাম??
????
আদি বাড়িতে ফিরলো রাত ২৳.৩০মিনিটে।রুমে এসে দেখে বেড ফাকা।সাথে সাথেই বারান্দায় গেলো।সামান্তা গুটিশুটি হয়ে নতুন আনা বেডে ঘুমিয়ে আছে।আদি মুচকি হেসে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে একটা টিশার্ট আর টাওজার পড়ে বারান্দায় এলো।সামুর পাশে গিয়ে বসে ফিসফিস করে বললো,
–আদি তোর কপালে শনি আছে।বউ তোকে মেরে হাড্ডি ফাটিয়ে দিবে।চুপচাপ কোলে নিয়ে বেডে নিয়ে চল।জাগানোর দরকার নেই।ঝড় তুফান,সাইক্লোন,টর্নেডো সব কাল সকালে দেখা যাবে।
আদি সামুকে আস্তে করে কোলে তুলে বেডে নিয়ে শুইয়ে দিলো।ওর পাশে গিয়ে শুয়ে পরলো।
??
সকালবেলা-
ঘুম ভাংতেই সামু নিজেকে বেডে আবিষ্কার করে।পাশেই আদি অঘোরে ঘুমাচ্ছে।রাতে আদিই ওকে তুলে এনেছে বুঝতে বাকি নেই।একবার ওর দিকে চেয়ে বিছানা ছেড়ে নেমে গেলো।ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ভার্সিটির জন্য রেডি হয়ে নিলো।আদির দিকে একবারো তাকায়নি।না জাগিয়েছে।বড্ড অভিমান হচ্ছে।রেডি হয়ে ব্যাগ নিয়ে বের হওয়ার জন্য দরজার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে পড়লো।অভিমানের দেয়াল ভেদ করে ভালোবাসা জেগে উঠছে।উফফ কি জ্বালা।সামু আদির সামনে গিয়ে ওকে মন ভরে দেখে নিয়ে মুচকি একটা হাসি দিলো।ওর ইচ্ছে করছে আদির কপালে ঠোঁট ছুয়ে দিতে কিন্তু আবার অভিমান এসে ভর করলো।সামু হনহন করে বেরিয়ে গেলো।
আদির ঘুম ভাংতেই সামুকে খোজতে লাগলো।কিন্তু সামু বিছানায় নেই।রুমেও কোথাও নেই।আদি বিছানায় হাতরে ফোন খোজছে।ফোন পেতেই হাতে নিয়ে দেখে ১০টা বেজে গেছে।তারমানে সামু ভার্সিটি চলে গেছে।
আদি উঠে বসে,
–সামু আমাকে না বলেই চলে গেলে,অন্তত ডেকে যেতে পারতে।
একটা ফোন করি,,নাহ এখন তো ক্লাস চলছে।বরং মেসেজ করি,,
“সামু আমাকে না বলে চলে গেকে,রাগ কিভখুব বেশি করেছো,,যদি বেশিই রাগ করে থাকো তাহলে ঘুম থেকে তুলে রাগ দেখিয়ে যেতে পারতে।”
সামু অফ পিরিয়ডে ফোন হাতে নিতেই আদির মেসেজ পেলো।কোনো উত্তর দিলোনা।সামু আসায় আছে আদি ওকে আজ নিতে আসবে।ওর অভিমান ভাংগাবে।আদিও ভাবছে সামুকে আজ সন্ধ্যায় কোচিং থেকে আনতে যাবে।কিন্তু কিছুতেই সময় কাটছেনা।তাই বাইরে গিয়ে বইবন্ধুদের সাথে চিল করে সময় কাটানোর সিদ্ধান্ত নিলো।কিন্তু হলো উল্টো সেখানে গিয়ে ফেসে গেছে কিছুতেই আসতে পারছেনা।অপর দিকে সানু হতাশ হয়ে ড্রাইভারের সাথে বাড়ি ফিরে গেলো।বাড়িতে গিয়ে আদিকে পেলোনা।ওর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে।
১১টায় রাতের খাবার খেয়ে রাগে গজগজ করতে করতে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পরলো।কিছুক্ষণ পর সামু দরজা খোলার শব্দ পেলো।বুঝতে পারলো আদি এসেছে।চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান করে রইলো।
আদি সামুকে এভাবে শুয়ে থাকতে দেখে ফোনের স্কিনে তাকালো।১১টা৩৬বাজে।
–যা বাবা,আজ তো তাড়াতাড়িই এলাম।তবুও সামু ঘুম।না আজ যে করেই হোক কথা বলতে হবে।
আদি সামুর পাশে গিয়ে বসে মুখ থেকে চাদর সরিয়ে গালে হাত রেখে বললো,
–সামু,উঠো।সামু ময়না আমার,,লক্ষীসোনা বউ আমার।উঠো প্লিজ।
সামুর অনেক হাসি পাচ্ছে আদির কথা শুনে কিন্তু হাসলে চলবেনা।হাসি তো ফাসি,,
–সামু কলিজা আমার।জানু উঠ না,,প্লিজ।
সামু নড়েচড়ে উঠলো তারপর ঘুম ঘুম চোখ করে বললো,
–কি হয়েছে,বিরক্ত করছো কেন?
–জান আমার উঠো।আমি জানি তুমি অনেক রাগ করে আছো।প্লিজ সরি।
–জান আমার,,আমি এখন উঠবোনা,,সরো এখান থেকে,,
আদি সামুকে একটানে উঠে বসালো।সামু চোখ পাকিয়ে আদির দিকে তাকালো।আদি ৩২দাত বের করে হাসি দিলো।সামুর রাগ আরো বেরে গেলো,,
–হুয়াট দ্যা হেল ম্যান,,
–জান প্লিজ,,সরি এই দেখো কান ধরছি,(দুহাত কানে ধরে)
সামু ফিক করে হেসে দিলো কিন্তু সামুর কাছে আদির হাফভাব ভালো লাগছে না।কথা কেমন জড়িয়ে যাচ্ছে।আদির মুখের দিকে চেয়ে আছে।আদি সামুর দুগাল ধরে ঠোঁটের দিকে এগুতেই সামু কড়া বাজে গন্ধ পেলো।গন্ধে ওর পেটের ভিতরে সব গুলিয়ে আসছে।সামু আদিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে নাক চেপে ধরলো তারপর বললো,
–ড্রিংক করেছো?
–হুম একটু বেশি।একদম এটুকু,,(হাতের আংগুলের দুকড়ি দেখিয়ে)
সামান্তা ওর কাছে গিয়ে শুকে বললো,
–একটু,,?তুমি যে কি পরিমাণ খেয়েছো তা তো বুঝাই যাচ্ছে।এর জন্য তোমার কথা জড়িয়ে যাচ্ছে,,আদি এসব কি?
–সামু এমন রিয়েক্ট কেন করছো তুমি তো সব জানোই,,আমি ড্রিংক করি,,আমার লাইফ স্টাইল সব জানো তবুও এমন রিয়েক্ট করছো কেন?
–যা খুশি করো বাট এসব করে আমার কাছে এসোনা।
–কেন আসবোনা?
চোখমুখ শক্ত করে বললো,
–আমি নিষেধ করেছি তাই।আর কি বললে আমি রিয়েক্ট কেন করছি?কোনো মেয়ের হাসব্যান্ড ড্রিংক করে মাঝরাতে বাড়িতে ফিরবে তা নিয়ে নিশ্চয়ই সে গর্ব করবেনা।দেখো তোমার আর আমার সম্পর্ক একদম আগের মতো হয়ে গেছে।কতটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।শুধু পার্থক্য এটাই আগে গেস্ট হাওজে থাকতাম আর এখন তোমার রুমে।এই জন্য দিনে একবার দেখা হচ্ছে।এই,,।আগে যে তোমার এই বিহেভিয়ার নিয়ে আমার কোনো আপত্তি ছিলো না এটা কে বলেছে,,আগে এ নিয়ে কিছু বলার অধিকার ছিলো না।আমি তোমার স্ত্রী হলেও তুমি আমাকে অধিকার দেওনি।তাই কিছু বলতে পারিনি।তুমি এখন আমাকে স্ত্রীর সম্মান, অধিকার দিয়েছো তাই বলছি।বলার সাহস পাচ্ছি।সব মেয়েই চায় তার হাসব্যান্ড সবার চেয়ে বেষ্ট হোক আমিও যদি সেটা চাই তাহলে এতে আমার দোষটা কোথায় আদি?টেল মি,,,
–কিন্তু সামু আমি আমার লাইফস্টাইল এমন, এতেই আমি অভস্ত্য।চেঞ্জ করতে পারবোনা।আর আমি খারাপ কিছু করছিনা।এই বয়সে ছেলেরা বন্ধুবান্ধব নিয়ে একটু বিজি থাকবে স্বাভাবিক।
–বন্ধুদের ছাড়ার কথা আমি বলিনি,,আমি শুধু বলেছি,,তোমার পরিবার আছে,বউ আছে তাদেরকেও তোমার সময় দেওয়া উচিত।তারাও তোমার কাছ থেকে কিছু আশা করে।আর এই যে মাঝরাতে ড্রিংক করে বাড়ি ফিরা কোনো ভদ্রতা নয়।সেটা যে সোসাইটি হোক।সারারাত বন্ধুদের সাথে থাকতে হবে তা তো নয়।আর এই যে এতো ড্রিংক করো,,নেশাখোরদের মতো,,তুমি ছেকা খেয়েছো,,লাইফ নিয়ে হতাশা আছে তোমার?কোনো কিছুর অভাব আছে তোমার?নেই তো তাহলে,, হুয়াই?
–আমার অভ্যাস হয়ে গেছে,,,
–ভালো ভদ্রলোকের ছেলের লেইট নাইট ক্লাবে না গেলে চলেনা,,
এক কাজ করি আদি কালকে গিয়ে আমিও মেম্বার হয়ে আসি।তারপর লেইট নাইটে পার্টি করে,ড্রিংক করে বাড়ি ফিরবো,,কি বলো?
আদির চোখ মুখ লাল হয়ে গেলো।চিতকার করে বললো,
–সামু,,,!!
–উহু,,একদম চিতকার করবেনা,,এখন কেন লাগছে,,আমি এসব করলে তুমি বাহবা দিবে না কিন্তু আমার কাছ থেকে বাহবা আশা করবে,,,ইজ ইট এ জোক?
যাইহোক তোমাকে এসব বলে লাভ নেই।আমার ভার্সিটি আছে সকালে উঠতে হবে,,আমি তো দুপুর পর্যন্ত আরামসে ঘুমাতে পারবোনা,,
সামু কথাটা বলেই ঘুরে শুয়ে পরলো।আদি উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে ইচ্ছেমতো চোখে মুখে পানি দিয়ে ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় চলে গেলো।সামুর বলা কথাগুলো ভাবছে।
কিছুক্ষণ সামুর উপস্থিতি টের পেলো।সামু ওর পাশে বসে ঠান্ডা গলায় বলল,
–আমি জানি আমার কথাগুলো তোমার ভালো লাগেনি,কিন্তু এটাই বাস্তব কথা।আমি তোমার ভালোর জন্যই এসব বলেছি।তুমি এখন ছোট না,তোমার দায়িত্ব নেওয়ার বয়স হয়ে গেছে।এখন বাবা আছে তোমার কাধে হাত রাখার জন্য কিন্তু একসময় তিনি থাকবেন না নিজেকে এখনি তৈরি করো যাতে তুমি তোমার প্রজন্মের কাধে হাত রাখতে পারো,,সব মেয়েরা দায়িত্বশীল স্বামী পছন্দ করে,,আমার কথায় কষ্ট পেলে সরি।কিন্তু আমার যা মনে হয়েছে তাই বলেছি।
এসো ঘুমাবে,,
–তুমি যাও আমি আসছি।
–আচ্ছা,,
আদি সামুর কথার সারাংশ খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে।সামু চায় ও দায়িত্ব নিক।
চলবে,,,,