#তোর_শহরে_ভালোবাসা ?
পর্ব-১৩
ফাবিহা নওশীন
??
সামান্তা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আদিকে চিতকার করে ডাকছে।কিন্তু আদি পাত্তা না দিয়ে গাড়িতে উঠে বসে।ওর মাথায় এখন অন্য কিছু চলছে।আদির গাড়ি চলে গেলো।সামান্তা আবার দরজায় গিয়ে ধাক্কা মারছে।হাতের বাধন খোলার চেষ্টা করছে।পিছনের দিকে বাধায় খোলতে পারছেনা।হাত মোচড়ামুচড়ি করছে।
সামু কাদতে কাদতে মেঝেতে বসে সোফায় মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে।নিশি দরজা খোলে সামুকে ওই অবস্থায় দেখে চমকে যায়।তাড়াতাড়ি ওর হাতের বাধন খোলে ওর শরীর ঝাকালো।সামান্তা ধীরে ধীরে চোখ মেললো।সামান্তা অস্থিরতার সুরে বললো,
–আআদি,,আদি কোথায়?
নিশি চুপ করে আছে।
–কি হলো নিশি আপু,,কথা বলো আমার ভয় লাগছে।আদি কোথায়?সব ঠিক আছে তো?
নিশি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলতে শুরু করলো।
ভাইয়া রাজকে অনেক মেরেছে।মেরে হাত-পা,নাক-মুখ ফাটিয়ে ফেলেছে।ওকে গুলিও করেছে কিন্তু বাবার লোকেরা সময় মতো যাওয়াতে গুলিটা লাগেনি।ভাইয়াকে অনেক কষ্টে আটকিয়েছে।জানিসই তো ভাইয়া কত জেদি।রাজকে বাবার লোকেরা তাৎক্ষনিক হসপিটালাইজ করে।ওর অবস্থা অনেক ক্রিটিকাল।জানিনা কি হবে,,,তবে মরে গেলে অনেক সমস্যা হয়ে যাবে।জানিস ই তো জয়ের বাবা আর রাজের বাবাও প্রভাবশালী লোক।বাবা যদি নিজের ক্ষমতায় ছেলেকে বিপদমুক্ত করতে যায় তবে সমালোচনার মুখে পড়বেন।কারণ বাবা একজন রাজনীতিবিদ,সমাজসেবী।রাজের বাবা এসব জানার পর পুলিশ কমপ্লেইন করেছে।
–আদি??আদি এখন কই?
–থানায়,,,ডিসির রুমে বসিয়ে রেখেছে।বাবা আর তার চেনাজানা লোকেরা ভাইয়ার কাছে যাচ্ছে।তোর আব্বুও সাথে গিয়েছে।জানিনা কি হচ্ছে।এতক্ষণে হয়তো পৌছে গেছে।ভাইয়াকে ছাড়ানোর জন্য উকিলের সাথে কথা বলে জামিনের ব্যবস্থা করবে।এখন রাত ১২টা বাজে,,জানিনা ছাড়াতে পারবে কিনা।জয়ের কাছে খোজ নিয়েছি রাজের অবস্থা অনেক খারাপ।কোনো ভরসা নেই।
সামু দৌড়ে নিচে গেলো।নিচে থমথমে অবস্থা।সবাই চুপটি করে বসে আছে।যেখানে আজ হৈ-হুল্লোড় করার কথা ছিলো সেখানে শোকের ছায়া।সামান্তাকে দেখে সামান্তার মা এগিয়ে এলো।
তিনি রাগান্বিত ভাবে বললো,
–সামু এসব কি?আদি এমন কাজ কেন করেছে?সত্যি করে সব বল।তুই কেন গিয়েছিলি ওখানে?ওই ছেলের কাছে কেন গিয়েছিলি?
সবাই সামান্তার মুখের দিকে উত্তরের জন্য চেয়ে আছে।কিন্তু সামু কি বলবে?কি করে বলবে,,কেন গিয়েছিলো,,আদি কেন এমন করেছে?আদি যাওয়ার সময় বলে গেছে যেন নিশি এসব না জানে,,।
সামুর মা সামুকে ধরে ঝাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,,
–কথা বল,,চুপ করে আছিস কেন?
সামুর ব্রেইন স্টপ হয়ে গেছে।কিছুই মাথায় আসছেনা।এতো টেনশন আর এমন সিচুয়েশনে ব্রেন স্টপ হওয়ার ই কথা।তাই মুখে যা এলো তাই বলে দিলো,,
–আসলে রাজ আমাকে বিরক্ত করছিলো,,ফোন করে আজেবাজে কথা বলছিলো,,তাই আমি গিয়েছিলাম।
এক নিশ্বাসে বলে দিলো।
–আর তাই তুমি নিজের গায়ে হলুদ রেখে,বাড়িভর্তি মেহমান রেখে কাউকে কিছু না জানিয়ে ওকে জবাব দিতে চলে গেলে?
সামু মাথা নিচু করে আছে।কিছুই বলছেনা।
–কথা বলছিস না কেন?
সামু তাও চুপ করে আছে।আদি ফুপ্পি বলে উঠে,
–এ মেয়ে তো অনেক ডেঞ্জারাস।ঘরে বর আর বাইরে আরেক ছেলেকে ফাসিয়েছে,,আর নিজের বরের হাতে সে ছেলেকে মারিয়েছে।কি শিয়ান মেয়েরে বাবা,,,
সামুর মায়ের এবার আর সহ্য হলো না।তিনি কষিয়ে সামুর দুগালে দু চড় বসিয়ে দিলেন।তার এহেন কাজে চারদিক স্তব্ধ।
সামান্তাও ছলছল চোখে মায়ের দিকে করুন ভাবে চেয়ে আছে।ওর মা ওকে মেরেছে যেন ওর বিশ্বাস ই হচ্ছে না।কোনো ভুল বা অন্যায় করলে তিনি সামুকে বকুনি দিতেন,,কড়া গলায় শাসন করতেন।দুতিনদিন কথা বলতেন না।এভাবেই শাস্তি দিতেন কখনো গায়ে হাত তুলতেন না।
সামুর মা চিতকার করে বললো,,
–তোকে এই শিক্ষা দিয়েছি,,,??তোর জন্য আজ এই বাড়ির এমন অবস্থা।আদি তোর জন্য এতবড় ভুল করেছে।কি করলি এটা তুই সামু?এই মানুষগুলোর ভালোবাসা দাম এভাবে দিলি?
সামুর মা আবার সামুর দিকে এগুতেই নিশি বললো,,
–আন্টি কি করছেন?ও কি ইচ্ছে করে করেছে?বুঝতে পারেনি ভুল হয়ে গেছে।আপনি শান্ত হোন।
সামির এসে মাকে সামলাচ্ছে।
–আম্মু প্লিজ রুমে চলো।
সামির ওর মাকে টেনে নিয়ে গেলো।
নিশি সামান্তাকে আদির রুমে নিয়ে গেলো।সামান্তা যেন পাথর হয়ে গেছে।আদির মা একবারও সামুর কাছে আসেনি,কথা বলেনি।সামুর নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে।
আদির জিনিসপত্র ছুয়ে ছুয়ে দেখছে।বারান্দায় বসে একদৃষ্টিতে গেইটের দিকে চেয়ে আছে।ভোর হয়ে এসেছে।সামু ওভাবেই বসে আছে।কিন্তু আদি এলোনা।কাদতে কাদতে ওখানেই ঘুমিয়ে পড়েছে।সকাল ৮টায় ঘুম ভাংলো।কিচুক্ষন পরে নিচে গেলো।কিন্তু কেউ ওর সাথে কথা বলছেনা।কিভাবে যেন তাকাচ্ছে।সামু নিশির ঘরে গেলো।
নিশি ঘুমিয়ে আছে।গালে চোখের পানি শুকিয়ে দাগ বসে আছে।নিশ্চয়ই ভাইয়ের জন্য কেদেছে।সামুর ইচ্ছে করছে না ওকে ডাকতে,,
সামু ভেবে পাচ্ছেনা কি করবে,,কিভাবে আদির খোজ নিবে।সামু আবার আদির রুমে গিয়ে বসলো।
ঘরটা কেমন ফাকা ফাকা লাগছে।তারচেয়ে বেশি বুকের ভিতর ফাকা লাগছে।
সব আমার জন্য হয়েছে।সবকিছুর জন্য আমি দায়ী।
কিছুক্ষণ পর সামু আবার নিশির রুমে গেলো।নিশি শুয়ে আছে সামুর আসার শব্দে উঠে বসে।
–আপু,,এখনো কেউ এলো না কেন?
–এতরাতে জামিন করতে পারেনি।চলে আসবে।কিছুক্ষণ পর জামিন হয়ে যাবে।তুই চিন্তা করিস না।তবে খারাপ খবর এই যে রাজের অবস্থার অবনতি ঘটেছে।মরে গেলে সমস্যা হবে।দোয়া কর ও যেন বেচে যায়।
সামান্তা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আদির রুমে আসে।
??
দুপুর ১২টা।নিশি খাবার নিয়ে সামুর রুমে এসেছে।মেয়েটা গতকাল দুপুরে খেয়েছে তারপর আর কিছুই খায়নি।
সামান্তা মেঝেতে হাটু মুরে বসে আছে।
–সামু,,,
সামু মুখ তুলে নিশিকে দেখলো।
–তোর জন্য খাবার এনেছি খেয়ে নে।
–আমার ক্ষুধা নেই।
–সামু এমন করেনা,,কিছু খেয়ে নে।গতকাল দুপুরে লাষ্ট খাবার খেয়েছিস,,এমনি বাড়িতে এই অবস্থা তার উপর যদি তুই অসুস্থ হয়ে পড়িস বুঝতেই পারছিস,,
নিশি জোর করে ওকে কিছুটা খাবার খাইয়ে দিলো।
তারপর বললো,,
–ভালো লাগছেনা,,, বাড়িতে কেমন দম বন্ধ করা পরিস্থিতি।এসব না হলে আজ তোদের বিয়ে হতো।সবাই কত মজা করতাম।এই মুহুর্তে সাজগোজ এটাসেটা নিয়ে বিজি থাকতাম।
নিশি অভিমানের সুরে বললো।
–আর আমি সব নষ্ট করে দিলাম।
নিশি কিছুক্ষণ চুপ থেকে জিজ্ঞেস করলো,,
–কি এমন হয়েছিলো সামু,,সিরিয়াস কিছু যে হয়েছে আমি শিওর নয়তো তুই ওভারে যেতে পারতিনা।
–(আপু তোমাকে কি করে বলবো কি হয়েছিলো)
পার্টিতে নাম্বার নেওয়ার পর থেকেই আমাকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করতো তাই নাম্বার চেঞ্জ করি।কিন্তু ভার্সিটির সামনে দাড়িয়ে থাকতো।আমি এভয়েড করতাম।তারপর জানিনা নাম্বার কই পেলো,,আমাকে ফোন করে উল্টো পাল্টা কথা বলছিলো।
–নাম্বার আমি দিয়েছি,,,
সামু চমকে গিয়ে বললো,
–তুমি!!
–হ্যা,,কিন্তু আমি এসব জানতাম না।বিয়েতে ওদের ইনভাইট করা হয়েছে।রাজ আমাকে ফোন করে বলে,,তুই বিয়ে করসিছ আর ওকে একবার ও পার্সোনালি ইনভাইট করিস নি।তুই আর ও নাকি খুব ভালো ফ্রেন্ড।তোর নাম্বার নাকি ডিলিট হয়ে গেছে তাই তোর নাম্বার চায় আর আমিও দিয়ে দেই কিন্তু ভাবিনি ও এসব করবে।ও তোকে ডিস্টার্ব করে।আমাকে ক্ষমা করিস।
–না আপু তোমার কোনো দোষ নেই কুকুরের কাজ কামড় দেওয়া।আর ও তাই করেছে।তুমি না দিলে অন্য ভাবে কালেক্ট করতো।
দেখো,,কি আশ্চর্যজনক ব্যাপার আমি ওকে ঘৃণা করি কিন্তু বারবার আল্লাহর কাছে ওর সুস্থতা কামনা করছি।
–এছাড়া আর উপায় ও নেই।
.
.
.
বিকেল ৪টা।আদি বাড়িতে ফিরেছে।সবাই একসঙ্গে বাড়িতে ফিরেছে।আদির মা আদিকে জড়িয়ে কাদছে।একদিনেই চেহেরার কি হাল হয়েছে।আদির চোখ সামুকে খোজছে।কিন্তু সামু আসেপাশে নেই।হয়তো অভিমান করে দূরে আছে।আদি নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারপর সামুর অভিমান ভাংগাবে।
বাড়িতে যেন আবার খুশি উপচে পড়েছে।
আদি নিজের রুমে গিয়ে কাবার্ড থেকে জামাকাপড় নিয়ে ওয়াশরুমের দরজার সামনে গিয়ে আবার থেমে গেলো।মাথা ঘুরিয়ে সোফার দিকে চাইলো।সামু একটা কুশন কোলে নিয়ে সোফায় বসে বসে ঘুমাচ্ছে।আদি মুচকি হেসে সামুর দিকে এগুলো।সামুর পাশে বসে।সামুর ঘুমন্ত চেহারায় বিষন্নতা ও ছাপ স্পষ্ট।আদি সামুর চোখে জোরে জোরে ফু দিচ্ছে।ফু দেওয়ার ফলে সামু কিছুটা নড়েচড়ে উঠে।ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায় কপালে বিরক্তির ছাপ ফুটে উঠে।আদি মুখ টিপে হাসছে।তারপর আরও জোরে জোরে ফু দেয়।সামান্তা বিরক্ত হয়ে চোখ খোলে নেয়।সামান্তা আস্তে আস্তে চোখ মেলে।ছোট ছোট করে চোখ মেলে সামনে আদিকে দেখতে পায়।তারপর ভালো করে চোখ মেলে আদি হাস্যজ্বল মুখটা দেখে।সামু ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটিয়ে বলে,,
–আপনি,,,মানে তুমি,,,??
তুমি কি সত্যিই চলে এসেছো,,না স্বপ্ন দেখছি?
আদি হালকা হেসে সামান্তার গালে এক হাত রাখলো।সামান্তা নিজের গালে আদির ছোয়া অনুভব করে বুঝতে পারলো আদি সত্যিই ওর সামনে এটা স্বপ্ন নয়।সামান্তা আদির হাতের উপর নিজের হাত রেখে চোখ বন্ধ করে নিলো।ওর চোখ দিয়ে অনর্গল পানি পড়ছে।
–সামু কাদছো কেন?আমি ঠিক আছি,চলে এসেছি।কান্না বন্ধ করো।নয়তো ভালো হবেনা।
বলেই নিজের হাত সরিয়ে দুহাতে ওর চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলো।সামান্তা আদিকে জড়িয়ে ধরে বললো,,
–সবকিছু আমার জন্য হয়েছে,,এসবের জন্য আমি দায়ী।আমার জন্য তুমি,সবাই এতো সাফার করছে।
–এতে তোমার কোনো দোষ নেই।তুমি শুধু সিচুয়েশনের স্বীকার।ওই কুকুরের বাচ্চাটা এভাবে অনেক মেয়ের জীবন ধ্বংস করেছে।আমি ওকে ইচ্ছেমতো মেরে ওর স্বীকারোক্তি নিয়েছি।ও যদি বেচেও যায় পুলিশে দেবো ওকে।অনেক মেয়েকে ও এভাবে ব্ল্যাকমেইল করেছে।যদিও ও তোমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলো।ওর কত্তবড় সাহস ও আমার বউয়ের দিকে নজর দেয়।ওকে মেরেই ফেলতাম যদি বাবার লোকেরা বাধা না দিতো।
–হুম তারপর জেলে গিয়ে আজীবন কাটিয়ে দিতে।আমি কতবার না করলাম শুনলেই না।
–আমাকে আটকে রাখার মতো কোনো জেল তৈরি হয়নি বুঝেছ,,।
যাইহোক আমার কেমন জানো লাগছে,,শাওয়ার নিতে হবে।তুমি বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
সামান্তা আদিকে ছেড়ে দিলো।
–কোথাও যাবেনা কিন্তু,, আমি যেনো এসে তোমাকে দেখি,,
–আচ্ছা।
আদি উঠে গিয়ে শাওয়ার নিতে চলে গেলো।সামুর অনেক ভালো লাগছে।আদি এসে পড়েছে।ওর অপেক্ষার অবসান হয়েছে।
আদি শাওয়ার নিয়ে কালো টাওজার,সাদা টিশার্ট পড়ে বের হলো।চুল দিয়ে টিপটিপ করে পানি পড়ছে।আদি তোয়ালে নিয়ে সামুর কাছে চলে এসে ওকে নিজের কোলে বসিয়ে দিলো।
তারপর তোয়ালে দিয়ে বললো,,
–নেও চুল মুছে দেও।স্বামীর একটু সেবা করো।
সামু মুচকি হেসে ওর হাত থেকে তোয়ালে নিয়ে আদির চুল মুছতে লাগলো।আদি এক নজরে সামুকে দেখছে পলকই পড়ছেনা।বিষন্নতা যেন ওর চেহারার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে।সামান্তার চুল মুছা শেষে আদির দিকে তাকিয়ে দেখে আদি ওর দিকে চেয়ে আছে।এভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে অস্বস্তিতে পড়ে।
–এভাবে চেয়ে আছো কেন?
আদি কিছু না বলে সামান্তার মাথা ধরে ওর ঠোঁটে ঠোঁট মিলালো।আকস্মিক ঘটনায় সামু হতবাক।ওর হাত থেকে তোয়ালে পড়ে গেলো।সামু আদির কাধ খামচে ধরে।
কিছুক্ষণ পর আদি সামুকে ছেড়ে দিয়ে বলে,,
–আই লাভ ইউ সামু।
সামু আদির বুকে মুখ গুজে জবাব দেয়,,
–আই লাভ ইউ টু।
আদি ওকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে নেয়।
কিছুক্ষণ এভাবে থাকার পর সামান্তা বললো,
–আদি,,
–হুম।
–সবাই আমাকে ভুল বুঝছে।আমাকে নানা প্রশ্ন করছে কিন্তু আমি জবাব দিতে পারিনি।কেউ আমার সঙ্গে কথা বলছেনা।আমার খুব খারাপ লাগছে।
–ডোন্ট ওরি,,আমি এসে পড়েছি,,আমি সব ঠিক করে দেবো।
–আজ আমাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো।
–হুম,,,তোমাকে যখন বলেছি বিয়ে করবো,,করবোই।তবে সময় দরকার।
–কোনো ব্যাপার না।এখন কি করবে?আপু বলছিলো রাজ মরে গেলে তোমার সমস্যা হবে,,।
আদি কড়া গলায় বললো,,
–ওর নাম তুমি উচ্চারণ করবেনা,,।তোমার মুখে যেন আমি ওর নাম না শুনি।ও না মরলেও ওকে আমি মারবো।শালা নষ্ট পুরুষ।ইচ্ছে করছে ওকে গিয়ে হসপিটালে মেরে আসি।
–শান্ত হও,,।তুমি আর কোনো ঝামেলায় যাবেনা প্লিজ।
–তুমিও ওর নাম আর নিবেনা।
–ঠিক আছে নিবোনা।
তারপর আবার আমতা আমতা করে বলল,
নিশি আপুর ভি,,
–নষ্ট করে ফেলেছি।শুধু তোমার ফোনে আছে।
–ফোন তো রা,,,,মানে ওইখানেই ফেলে এসেছি।
–আমি নিয়ে এসেছি।
–ডিলিট করেন নি,,আমার ফোন থেকেও ডিলিট করে দিয়েন।বলা তো যায়না কার হাতে পড়ে যায়।
–উহু,,ওটা থাক।ওটা দরকার হতে পারে।তুমি শুধু সাবধানে রেখো।
–আচ্ছা।
দরজায় টুকা পড়লো।সামান্তা আদিকে ছেড়ে বললো,,
–দেখে আসি,,কে এসেছে।
সামু দরজা খোলে নিশি এসেছে।আদিকে খেতে ডাকছে।আদির খাওয়া শেষ হতেই সবাই ওর উপর হামলে পড়ে।বিশেষ করে ওর বাবা।
–বাবা,,আমার জায়গায় তুমি থাকলে তুমি ওকে খুন ই করে দিতে।তোমরা কেউ আসল ঘটনা জানোনা।আমি অযথা ওকে মারি নি।
তুমি,মা,আংকেল,আন্টি, আপনাদের আমার কিছু জানানোর আছে।আপনারা শুধু শুধু সামুকে ভুল বুঝছেন।আপনাদের সত্যিটা জানা দরকার।
চলবে,,,