? তোমার আড়ালে ?
Urme prema (sajiana monir)
পার্ট :১১
(ছোট করে দেওয়ার জন্য সত্যি সরি আমি বাসায় ফিরেছি সন্ধ্যায় তাই বড় করে দিতে পারিনি ।)
কিছুসময় আগেই সুবাহর জ্ঞান ফিরেছে চোখ খুলে দেখে সে হসপিটালের বেডে সুবাহ তা দেখে বেশ অবাক হয়ে যায় সে তো রুমে ছিলো কিন্তু হসপিটালে কি করে আসলো !
চোখ ঘুরিয়ে দেখে তার বাবা মা তার বেডের পাশে বসা তার বাবা নিজের হাতের ভাজে তার হাত নিয়ে রেখেছে চোখে জল চিকচিক করছে আর তার মা বার বার উড়না দিয়ে নিজের চোখের জল মোচ্ছে ।কিছুটা দুরে জান্নাত দাড়িয়ে আছে ।সুবাহ হালকা আওয়াজ করে মুখে মুচকি হাসি ফুটিয়ে মৃদ্যু স্বরে বলে
“আম্মু আব্বু তোমরা কাদঁছো কেন !
আমি ঠিক আছি তো এই দেখ ।”
সুবাহর মা কান্না করতে করতে বলতে লাগে
“তুমি কোন কথা বলবেনা !
কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তোমার জানা আছে ?
যদি তোমার কিছু হতো তাহলে আমাদের কি হতো তোমার ধারনা আছে?
আমরা কি তোমার খুব পর হয়ে গিয়েছিলাম আমাদের কাছে তুমি কিছু শেয়ার করতে পারোনি এত বড় একটা স্টেপ নিয়েছো আত্নহত্যা করতে গেছো ?”
সুবাহ কিছু বলার জন্য মুখ খুলে কিন্তু তার আগেই তার বাবা ভাঙ্গা কাপা কাপা কন্ঠে বলে
“আমার ছোট বাবুটা যে এতটা বড় হয়ে গেছে আমার জানাই ছিলোনা ।যে সামান্য আঘাতে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলতো সে এত যন্ত্রনার মধ্যে আছে কাউকে আচ ও পেতে দেয়নি !
আমার যে মেয়েটা তার বাবার কাছে সব কিছু শেয়ার করতো সে এত কষ্ট নিজের মধ্যে দমিয়ে রেখে অথচ আমাকে বুঝতেও দেয়নি !
আমার বাবুটা এতটা কষ্টে আছে যে সে আত্নহত্যার পদ বেছে নিয়েছে আর আমি বাবা হয়ে তার কোন কষ্টাই বুঝতে পারিনি ।
সত্যি মা আমাকে ক্ষমা করে দেও আমি বাবা হয়ে নিজের মেয়ের কষ্টটা বুঝতে পারিনী উলটো ভুল বুঝেছি তোমাকে ।”
সুবাহ তার বাবার হাতের উপর আলতো হাত রেখে বলে
“আব্বু তোমার কোন দোষ নেই তুমি যা দেখেছো তাতে তোমার ঐ রকম রিয়েক্ট করা স্বাভাবীক ।কিন্তু আমি সত্যি মানুষিক চাপে ছিলাম ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলাম কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না তাই এমন একটা রাস্তা বেছে নিয়েছিলাম মুক্তির জন্য শান্তি র জন্য ।সরি আব্বু আমি এমন কিছু আর কখনই করবোনা !”
সুবাহর বাবা সুবাহর মাথায় হাত বুলাতে লাগে ।সুবাহ জান্নাতের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলতে লাগে
“পেত্নি তুই দেখি এখনই মরাকান্না করছিস !”
জান্নাত কান্না করতে করতে বলতে লাগে
“জানিস কত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম !
মনে হয়েছে আমরা তোকে হারিয়ে ফেলেছি ।”
সুবাহ মৃদ্যু হেসে মজা করে বলতে লাগে
“এত তারাতারি তোর পিছু ছাড়ছি না !
এখনো তো এক সাথে ক্রাশ খাওয়া বাকি আছে ।”
জান্নাত সুবাহ র কথা শুনে শব্দ করে হাসতে লাগে ।বাহির থেকে আরোশ গ্লাসের ভিতর থেকে সুবাহকে দেখছে তার সাহস নেই সুবাহর সামনে যেয়ে দাড়াতে সে যা করেছে তার জন্য সারাজীবন ও ক্ষমা চাইলে কম হবে ।সে বিনা দোষে সুবাহকে কষ্ট দিয়েছে বার বার তাকে আঘাত করেছে ।
সে শুধু নিজের দিকটাই দেখেছে কখনো সুবাহ র দিক থেকে দেখার চেষ্টা করেনি !
বিকালে সবাই বাড়িতে চলে যায় সুবাহ র কাছে তার বাবা মা ছোট বোন আর আরোশ রয়েছে ।আরোশ এর মধ্যে ও নিজের মধ্যে সাহস জোগাতে পারেনি ।কিন্তু সুবাহর কাছে না যেয়েও থাকতে পারছেনা তাই সাহস করে কেবিনের দিকে পা বাড়ায় !
সুবাহর বাবা দরজার সামনে আরোশের শোল্ডারে হাত রেখে তাকে থামিয়ে দেয় ।তাকে যেতে নিষেদ করে পাশ থেকেই সুবাহর মা সুবাহ র বাবাকে চোখের ইশারায় আরোশ কে ভিতরে যেতে দিতে বলে ।কারন সে চায় তাদের সমস্যা তারাই সমাধান করুক কারন একবার সুবাহ উপর সবার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে তার ফল তারা নিজেরা দেখে যা হয়েছে তা তারা পূর্রাবৃত্তি চায়না !
তাই সুবাহর মায়ের বেশ বুঝানোর পর সুবাহর বাবা আরোশ কে ভিতরে ডুকতে দেয় ।
আরোশ ভিতরে ডুকে দেখে সুবাহ চোখ বন্ধ করে বেডে হেলান দিয়ে বসে আছে ।আরেশ দরজা হালকা বিরিয়ে সুবাহর পাশে এসে বসে সুবাহকে নিক্ষুত ভাবে তাকে দেখতে লাগে ।সুবাহর চেহারা একদিনেই পরিবর্তন হয়ে গেছে মুখটা চুপসে গেছে ।সুবাহর এমন অবস্থা দেখে আরোশের বুক কেপেঁ উঠে !
আজ তার জন্যই তো সুবাহর এই অবস্থা আরোশ আলতো করে সুবাহর হাতের উপর হাত রাখে আরোশের স্পর্শে সুবাহ চোখ খুলে তাকায় ।আরোশ মাথা নিচু করে সুবাহর হাতের দিকে তাকিয়ে আছে কাটা হাতের উপর স্পর্শ করছে সুবাহ বেশ কিছুসময় আরোশের দিকে তাকিয়ে আছে তার বুক ফেটে কান্না আসছে কিন্তু তা সে নিজের মধ্যে চেপে রেখে আরোশের হাতের মধ্যে থেকে নিজের হাত টান দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে থাকে ।আরোশ তা সুবাহর দিকে তাকিয়ে মৃদ্যু স্বরে বলতে লাগে
“আমি জানি আমার কোন ক্ষমা নেই !
আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইবোনা তুমি আমাকে শাস্তি দেও কিন্তু তা আমার কাছে থেকে আমি তোমার সব শাস্তি মেনে নিবো মাথা পেতে মেনে নিবো ।
আমাকে তুমি শাস্তি দেও আমি চাই !
কিন্তু আমার ছেড়ে যেওনা প্লিজ আমি বাচঁবোনা তোমাকে ছাড়া ।
আমি আমার চোখের সামনে যা দেখেছি তাই বিশ্বাস করেছি কিন্তু তার আড়ালে থাকা সত্যটা আমি দেখতে চাইনি ।
আমার এই ভুলে শাস্তি প্রত্যেকটা মুহূর্ত পাচ্ছি !”
সুবাহ মৃদ্যু হেসে বলতে লাগে
“না আছে আপনার প্রতি অভিমান না আছে রাগ না আছে অভিযোগ !
আমি নিজেই ভেঙ্গে গেছি আমি নতুন করে সব শুরু করতে চাই কিন্তু তা আপনার সাথে না নিজের মত করে আমি আর সবার মত স্বার্থপর হতে চাই নিজের জন্য ভাবতে চাই সবার কথা ভাবতে ভাবতে আজ আমি নিজেই সব হারিয়েছি পদে পদে অপমানীত হয়েছি চরিত্রহীন প্রমানীত হয়েছি আর চাইনা কোন অপবাদ !
না আমার জীবনে থাকবে কোন নিদ্রা না দাদী না আরোশ নামের কেউ আমি স্বাধীন হয়ে বাচঁতে চাই নিজের জন্য বাচঁতে চাই
আপনার আমার কাছে আসা আমাকে আরো কষ্ট দেয় আরোশ প্লিজ আমাকে আমার মত থাকতে দেন আমি নিজের মত করে থাকতে চাই । “
বলেই হু হু করে কান্না করে দেয় আরোশ তা দেখতে পারছেনা তার কষ্ট হচ্ছে খুব তাই আরোশ সুবাহর কাছে যেয়ে তাকে নিজের বুকের মধ্যে জরিয়ে ধরে আরোশ থেকে সুবাহ ছাড়া পাবার জন্য জোরাজুরি করে কিন্তু আরোশ তাকে নিজের বুকের সাথে আরো চেপে ধরে ।এখন আরোশের ও বেশ শান্তি লাগছে তার স্ত্রী তার সুবাহ তার বুকে রয়েছে তার কলিজায় শান্তি লাগছে !
সুবাহ ও আরোশের বুকে মাথা রেখে কান্না করে যাচ্ছে ।আস্তে আস্তে তার কান্নার বেগ কমছে
বেশ কিছু সময় পর সুবাহ আরোশকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় আরোশ দুরে সরে যায় তারপর আবার সুবাহর কাছে যেয়ে তার কপালে চোখ বন্ধ করে গভীর চুমু দিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে যায়।যাই হোক আরোশ কখনো হার মানবেনা সে তার সুবাহর মন ঠি কই জয় করে নিবে যে কোন ভাবেই হোক না কেন তার সুবাহকে ভালোবাসার চাদরে আবার জরিয়ে নিবে ……..
চলবে……
❤️❤️❤️❤️