Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"তোমার আড়ালে পার্ট-০৬

তোমার আড়ালে পার্ট-০৬

? তোমার আড়ালে ?

Urme prema (sajiana monir)

পার্ট :৬

গান সেই কখনই শেষ কিন্তু সুবাহ তারপরও চোখ বন্ধ করে আছে যেন গানের শব্দ গুলো তার কানে ভাজছে ।হঠাৎ জান্নাতের ধাক্কায় তার ধ্যান ভাঙ্গে ।চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে সবাই চলে গেছে সে এখনো সেখানে রয়ে গেছে ।জান্নাত তাকে ঠেস মেরে বলতে লাগে
“ওওও আমার হিন্দি সিরিয়ালের হিরোইন স্বপ্ন থেকে বাস্তব দুনিয়ায় আয় ।
আরোশ ভাইয়া চলে গেছে !”
সুবাহ ভ্রু কুচঁকিয়ে তাকিয়ে চোখ ছোট ছোট করে বলতে লাগে
“কে আরোশ ?”
জান্নাত বলতে লাগে
“যার গান তুই চোখ বন্ধ করে দুনিয়াদারি ভুলে মুগ্ধ হয়ে শুনছিলি !
মানতে হবে তোকে শে মেয়ে কোন ছেলের দিকে তাকায় না আজ কাউকে দেখে সে দুনিয়াদারি ভুলে গেছে !”
সুবাহ জান্নাতের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“নাহ ইয়ার তাকে দেখে না তার কন্ঠে গান শুনে দুনিয়াদারি ভুলে গেছি ।এই সুর এই কন্ঠ আমি এর আগেও কোথাও শুনেছি কিন্তু কোথায় শুনেছি তা মনে পড়ছেনা ।
তার গানে কেমন যেন একটা টান আছে যার থেকে আমা নিজেকে আটকিয়ে রাখতে পারিনি !”
জান্নাত দাতঁ বের করে হাসি দিয়ে বলতে লাগে
“তাহলে আমি ধরে নিবো যে তুই তার প্রেমে পড়েছিস !”
সুবাহ বেখেয়ালি হয়ে বলতে লাগে
“প্রেমে পড়েছি কি না জানি না কিন্তু তাতে ঠিকই ডুবে গেছি !”
জান্নাত বলতে লাগে
“জানি উনি ভার্সিটির rockstar পুরো ভার্সিটির মেয়েরা আরোশ বলতেই পাগল ।এবার ফাইনাল ইয়ারে বাবা মায়ের একমাত্র সম্তান ।
ভার্সিটির যেই গ্রুপ গুলো আছে তাতে মেয়েদের তাকে নিয়ে যা পোষ্ট দেয় ভাপরে !
হ্যায় উনাকে যা লাগে না ।”
সুবাহ ভ্রু কুচঁকিয়ে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে লাগে
“তুই এতো কিছু কি করে জানিস আজই তো ভার্সিটিতে এসেছিস ।”
জান্নাত সুবাহর কথায় হেসে বলতে লাগে
“আমি তোর মত গাধাঁ না যে কোন কিছু খোজঁ খবর নেইনি। আমি এখানে আসার আগে সব খোজঁ খবর নিয়ে এসেছি হুম ওকে !”
সুবাহ হেসে বলতে লাগে
“হুম ওকে চল এবার দেরি হয়ে যাচ্ছে ।”
সেদিন বাড়িতে আসার পর থেকে ১ মুহূর্ত ও সুবাহ আরোশের চিন্তা ভাবনা নিজের থেকে দূর করতে পারেনি ।কেন যেন আরোশের কথা ভাবতেই মনটা নাড়া দিয়ে উঠতো ।সেদিন রাতেই সুবাহ নিজের আইডি তে আরোশের নাম সার্চ করে খুব সহজেই পেয়ে যায় ।সেদিন রাতে তার পুরো প্রফাইল গেটে দেখতে লাগে ।হঠাৎ তার প্রফাইলে একটা ছবি দেখে সে থমকিয়ে যায় একটা পায়েলের ছবি যেখানে কেপশন লিখা
“এক পায়ে নুপুর তার অন্য পা খালি
এক পাশে সাগর এক পাশে বালি……..”
কিন্তু সুবাহ আরো বেশি অবাক হল এই দেখে যে কো-ইন্সিডেন্টলি এমনই একটা পায়েল তার ছিল যা ৪ বছর আগে কক্সবাজারে সমুদ্রের পাড়ে হারিয়ে গেছে !
সুবাহ বেশ আগ্রহ নিয়ে নিজের প্রভাতদীপ্তি নামক আইডি দিয়ে তাকে ফ্রেন্ডরিকোয়েস্ট পাঠায় ।
২ দিন কেটে যায় কিন্তু আরোশ তা এক্সেপ্ট করার নাম নেই এদিকে সুবাহ অস্থির হয়ে আছে তার কেমন যেন অস্তিরতা কাজ করছে যা এর আগে কখনো কারো প্রতি অনুভব হয়নি ।অনেক ভেবে আর অপেক্ষা না করতে পেরে অবশেষে আরোশ কে মেসেজ দিয়েই বসে তারপর আবার আরোশ কি ভাববে তা ভেবে রিমুভ করে দেয় ।তারপর সিদ্ধান্ত নেয় সে আরোশের কথা আর ভাববে না তার থেকে তার চিন্তা থেকে দূরে থাকবে ।
এভাবে আরো ১ সাপ্তাহ কেটে যায় সুবাহ ভার্সিটিতে আরোশ কে দেখলে সে অন্যরাস্তায় ঘুরে যায় ।তার থেকে দূরে থাকতে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াতো যাতে তাকে দেখে দূর্বল না হয়ে পড়ে ।
হঠাৎ একদিন রাতে সুবাহ ফেসবুকে লগইন করে দেখে আরোশ তার রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করেছে আর মেসেজ ও
আরোশ মেসেজে লিখেছে “হ্যায়”
সুবাহ বেশ কিছু সময় ধরে ফোন হাতে নিয়ে থম মেরে বসে থাকে !
তাকে আরোশ মেসেজ দিয়েছে তা সে বিশ্বাসই করতে পারছিলো না ।সে ও কাপাঁ কাপাঁ হাতে মেসেজ টাইপ করে “হ্যালো “আরোশ সুবাহ কে একের পর এক প্রশ্ন করতে লাগে আর সুবাহও তার উত্তর দিতে লাগে !সেদিন রাত তার সাথে কথা বলে সারারাত পাড় করে দিলো ।এভাবে তাদের বন্ধুত্বের শুরু হয় তার যত সময় যেতে লাগে ততই তাদের সম্পর্ক গভীর হতে লাগে ।সুবাহ র প্রফাইলে তার কোন ছবি ছিলো না তাই সুবাহর ধারনা ছিলো আরোশ তাকে চিনে না ।আস্তে আস্তে তাদের বন্ধুত্ব প্রেমে জরিয়ে যায় ।তাদের সম্পর্কের ৬ মাস হয়ে যায় কিন্তু সুবাহ নিজেকে আরোশের আড়াল রাখে তার সামনে আসেনা সে আরোশের আড়ালে থেকেই তার জন্য আরোশের ভালোবাসা দেখতো ।কিন্তু মাঝে মাঝে যখন সুবাহ কেম্পাসে আরোশের সামনে পড়তো আরোশ তার দিকে অদ্ভুদ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো চোখে হাজারো ভালোবাসা থাকতো। অদ্ভুদ চাহনি তে তার দিকে চেয়ে থাকতো ।সে সময় সুবাহ বেশ ঘাবরিয়ে যেত সে ভাবতো হয়তো সে আরোশের কাছে ধরা পড়ে গেছে কিন্তু পরক্ষনেই আরোশ এমন ভঙ্গিমা করতো যে সে সুবাহ কে চিনেই না ।
আস্তে আস্তে এভাবে আরো ৬ মাস কেটে যায় তাদের সম্পর্কটাও বেশ গভীর হয়ে যায় ।আরোশ সুবাহর সাথে বেশ কয়েকবার দেখা করতে চায় কিন্তু সুবাহ প্রত্যেকবারই কোন না কোন বাহানা দিয়ে ইগনোর করতো কারন সে দেখতে চাইতো আরোশের ভালোবাসার জোর !
তাকে কতটা ভালোবাসে আরোশ তা ।
তার জন্যে আরোশ কতটা ধৈর্য ধরতে পারে কতটা অপেক্ষা করতে পারে তা !
সুবাহ আড়ালে থেকে প্রতিদিন আরোশের কন্ঠে গান শুনতো ।আরোশ যখন কেম্পাসের রিয়ার্সেল রুমে গিটার বাজাতো আর গান প্রেক্টিস করতো সুবাহ সেসময় তার আড়াল থেকে গান শুনতো এটা যেন রুটিন মাফিক তার নেশা হয়ে গিয়েছিলো ।যে নেশায় সে ডুবে থাকতো ভার্সিটিতে রেগুলার আসতে শুধু মাত্র আরোশকে দেখার জন্য !এটা যেন তার ধিরে ধিরে নেশা হয়ে গিয়েছিলো ।
একসময় সুবাহ সিদান্ত নেয় সে আরোশের সাথে সারাসরি দেখা করবে ।কিন্তু কে জানতো তার জীবনে কোন এক ঝড় এসে সব কিছু শেষ করে দিবে !
সবকিছুতো ঠি কই ছিলো সুবাহ নিজের মধ্যে সাহস জুটিয়ে নিয়েছিলো সে আরোশের সামনে যাবে তার সাথে দেখা করবে কিন্তু নিদ্রা নামের ঝড়টা সব কিছু উলোট পালোট করে দেয় ।

!

!

!

নিদ্রা কোন ভাবে খবর পেয়ে যায় সুবাহ আরোশ কে ভালোবাসে তাদের মধ্যে রিলেশন চলছে তা শুনে নিদ্রা সয্য করতে পারেনা ।কারন আরোশের দিকে তার নজর প্রথম দিক থেকেই ছিলো আর আরোশের মত ছেলে তার জীবনে থাকলে আর কি দরকার হয় ?
কিন্তু আরোশ কখনই তাকে পাত্তা দিত না ।সেই আরোশের সাথে সুবাহ র রিলেশনের কথা শুনে নিদ্রা নিজের ঈষা ধরে রাখতে পারেনা ।কারন সে কোন ভাবেই সুবাহ কে আরোশকে পেতে দিবে না এক হতে দিবে না !
ছোট থেকে সকল ভালো কিছুর উপর সেই অধিকার বসিয়েছে নিদ্রাই নিয়েছে সুবাহ কে সব কিছু থেকে বন্চিত রেখেছে তাহলে আরোশ কে কি করে সুবাহর হতে দিবে তাই সে সবসময়ের মত সুবাহ র দাদীর কাছে আবদার করে বসে “আরোশ কে তার চাই “!তার দাদী প্রত্যেক বারের মত এবারো নিজের নাতনিকে কথা দেয় সে যা চায় তা তাকে দিবে ।

!

!

!
সেদিন সকালে ফুরফুরে মেজাজে সুবাহ আরোশের কথা অনুযায়ী রেডি হতে লাগে ।আজ সে আরোশের সামনে যেয়ে দাড়াবে ।তার সামনে যেয়ে পরিচয় দিবে যে প্রভাকে সে ভালোবাসে সুবাহ ই সে প্রভা !
আরোশের “প্রভা “।
“প্রভা “নামটা তাকে আরোশ দিয়েছে ।সুবাহ কে ভালোবেসে আরোশ “প্রভা” বলে ডাকে !
সুবাহ মুচকি হেসে হাতে কাচের চুরি পড়ছিলো কিন্তু হঠাৎ কেউ জোরে দরজা খুলে ।
ভয়ে সুবাহর হাত থেকে কাচের চুড়ি নিচে পড়ে ভেঙ্গে যায় দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে তার দাদী আর নিদ্রা দাড়িয়ে আছে চোখে মুখে বেশ রাগ ।সুবাহ তাদের মুখে রাগ দেখে কিছুটা ঘাবড়িয়ে যায় ।সুবাহ র দাদী রাগে দাতঁ কটকট করে বলতে লাগে
“এত সেজে গুজে সং সেজে কোথায় যাওয়া হচ্ছে শুনি ।”
সুবাহ বিচলিত হয়ে উত্তর দিতে লাগে
“ইয়ে মানে দাদী আমার এক ফ্রেন্ড আসছে তার সাথে দেখা করতে ।”
সুবাহর দাদী মুখ ভেংচি দিয়ে বলতে লাগে বন্ধু নাকি প্রেমিক ?”
সুবাহ দাদীর কথা শুনে চমকিয়ে যায় দাদীর দিকে ‌অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে ।সুবাহ র দাদী রেগে বলতে লাগে
“সবই বুঝি !
তুই যাবি না আজ তুই বাড়ি থেকে বের হবি না ।”
সুবাহ তার দাদীর কাছে যেয়ে বলতে লাগে
“কিন্তু দাদী কেন !”
সুবাহর দাদী বলতে লাগে
“কারন আমি চাই তুই ঐ ছেলের সাথে দেখা করবি না ।
ঐ ছেলের সামনে যাবিনা ।”
সুবাহ তার দাদীর কথায় আরো বেশি হয় আর সুবাহ বুঝে যায় এসব নিদ্রা করছে ।সুবাহর দাদী আবার কঠোর গলায় বলতে লাগে
“নিদ্রা আরোশ কে পছন্দ করে আর আমি চাই তুই তাদের মাঝে থেকে সরে যা ।
তাদের মাঝে আসবি না !”
সুবাহ দাদীর কথায় যেন আকাশ থেকে পড়ে ।তার দাদী এসব কি বলছে ?
সুবাহ সাথে সাথে উত্তর দেয়
“দাদী তুমি এসব কি বলছো ?
আরোশ আমাকে পছন্দ করে আমার সাথে তার সম্পর্ক আমাকে ভালোবাসে সে তো আর নিদ্রাকে ভালোবাসে না !
তো আমি ওদের মাঝের থেকে কি করে সরবো !”
সুবাহর দাদী বলতে লাগে
“আমি এত কিছু বুঝিনা তুই আরোশের সাথে দেখা করবিনা মানে না !
আরোশ তোকে চিনে না সে জানেনা যে তুই সেই মেয়ে তাই নিদ্রা আরোশের সামনে যাবে তুই না ।
নিদ্রা আরোশ কে চায় তো আরোশ তারই হবে ।”
সুবাহ তার দাদীর কথা শুনে রেগে বলতে লাগে
“দাদী তুমি বাচ্চামো কথা কেন বলছো ?
আরোশ কি কোন খেলনা যে নিদ্রা চেয়েছে বলেই তাকে দিতে হবে ।
আর সত্যি কখনো চাপা থাকেনা তা সামনে আসবেই আরোশ যদি সত্যি জানতে পারে সে কখনই নিদ্রাকে মেনে নিবেনা উলটো সব শেষ করে দিবে !
যাই বল আমি আরোশ কে ঠকাতে পারবোনা তার সাথে দেখা করতে যাবো ।”
সুবাহর দাদি তার বাহু ধরে টেনে সামনে আনে তারপর বলতে লাগে
“তোর তো আমার কথা মানতেই হবে ।
তুই যদি চাস পুরো পরিবার এক থাকুক তাহলে তোকে আমার কথা মানতেই হবে ।
নাহয় তোর বাবা কে এতটা বাদ্ধ করবো যে তোর বাবা বাদ্ধ হয়ে পুরো পরিবার ছেড়ে চলে যায় আর পরিবারটা ভেঙ্গে যায় ।
আর তা হয়তো তোর ভালো লাগবেনা !
নিজের বাবাকে কষ্টে দেখলে তা নিশ্চই সয্য করতে পারবিনা ।”
সুবাহর চোখ থেকে টপটপ করে পানি ঝড়তে থাকে কি করে পাড়ে কেউ নিজের ছেলের সাথে এমন করতে ?
কি করে নিজের নাতনীর স্বার্থের জন্য নিজেরই পরিবারকে শেষ করতে উঠে পড়ে লেগেছে ।নিজের পরিবার ভাঙ্গতে এক বারও বিবেচনা করবেনা !
সুবাহ তার দাদীকে বলতে লাগে
“দাদী তুমি নিদ্রার আবদারের জন্য তোমার পরিবার ভাঙ্গবে ?
নিজের ছেলেকে বাড়ি ছাড়তে বাদ্ধ করবে ?”
সুবাহর দাদী বলতে লাগে
“হুম আমি তাই করবো !
তোর বাবাকে তো সেদিন ত্যাগ করেছি যেদিন সে আমার কথার বিরুদ্ধে যেয়ে তোর মা কে বিয়ে করেছে ।
এখন আমি শুধু আমার নাতনীর ভবিষ্যত নিয়ে ভাববো ।
এখন তোর হাতে তুই পারবি সব ঠি ক করতে তুই যদি আমার কথা রাখিস তাহলে তোর বাবাকে আপন করে নিবো আর নয়তো বাড়ি থেকে বের হতে বাদ্ধ করবো ।”
সুবাহ বেশ কিছু সময় থম মেরে বসে থাকে কি বলবে সে ?
কি করবে সে ?
সে সব পারবে তার বাবাকে কষ্টে দেখতে পারবেনা ! তার বাবা বাড়ি থেকে পরিবার থেকে দূরে থাকলে কষ্টে থাকবে আর সুবাহ তা সয্য করতে পারবেনা !
তাই বেশ কিছুসময় পর সুবাহ ভেবে চিন্তে তার দাদী কে বলতে লাগে
“আমি যাবো আরোশের সাথে দেখা করতে তুমি যেভাবে চাইবে সব সেভাবেই হবে ।”
তা শুনেই নিদ্রার মুখে হাসি ফুটে উঠে কারন তার ইচ্ছে মত সব হচ্ছে সে আরোশকে পাবে ।সুবাহ হেরে যাবে !
তারপর সুবাহর দাদী আর নিদ্রা রুম থেকে চলে যায় ।
তাদের রুম থেকে চলে যেতেই সুবাহ হাটু গেড়ে মাটিতে বসে হৈ মাউ করে কান্না করতে লাগে !
অন্যদিকে আরোশ সুবাহ জন্য অপেক্ষা করছে অপেক্ষা করতে লাগে তার প্রভার জন্য কিন্তু তার আসার নাম নেই মেসেন্জারে বারে বারে ফোন দিতে লাগে কিন্তু সুবাহ উঠায় না ।সুবাহ নিজেকে পুরো ঘর বন্ধি করে রাখে সুবাহ র মা আচ করতে পেরে সুবাহ কে জিগাসা করলে সব বলে দেয় তার মা কে ।সুবাহর মা রেগে যায় সুবাহর দাদীর সাথে কথা বলতে যেতে চাইলে সুবাহ তার মাকে নিজের কসম দিয়ে আটকিয়ে দেয় তারপর ২ দিন পর তার দাদীর কথা মত আরোশের সাথে নিদ্রাকে দেখা করাতে নিয়ে যায় প্রভা সাজিয়ে ।
আরোশের সাথে দেখা করার জন্য রেস্টুরেন্টে যেতেই রেস্টুরেন্টের সামনে আরোশ কে সুবাহ দেখতে পায় তার বুক মোচড় দিয়ে উঠে আরোশের হাতে ফুলের বুকে মুখে হাসি ।আরোশ সুবাহ আর নিদ্রার কে দেখে তাদের দিকে এগিয়ে আসে ।আরোশ নিজের হাতে রাখা বুকেটা সুবাহর দিকে এগিয়ে দিয় কিন্তু তার আগে নিদ্রা তা নিজের হাতে নিয়ে বলতে লাগে
“আমি “প্রভাতদিপ্তি “ও আমার মামাতো বোন সুবাহ !”
আরোশ তা শুনে অবাক দিষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তাদের দিকে যেন সে বেশ বড় শক খেয়েছে !
অন্যদিকে সুবাহ আরোশের চোখের দিকে তাকাতে পাড়ছেনা যেন তার মনের সুপ্ত অনুভূতিগুলো আবার উকিঁ দিবে তাই নিচের দিকে তাকিয়ে রয়েছে ।
আরোশের চোখ চিকচিক করছে সে কাপাঁ কাপাঁ কন্ঠে নিদ্রার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে
“মানে তুমি “প্রভাতদিপ্তি “প্রভা ?”
নিদ্রা মুখে কৃত্রিম লজ্জা দেখি বলতে লাগে
“হুম আমি তোমার প্রভা !”
আরোশ একবার সুবাহর দিকে তাকায় আর একবার নিদ্রার দিকে সে যেন থমকিয়ে গেছে ।সেদিন কোন মতে তাদের সাথে দেখা করে আরোশ সেখান থেকে বের হয়ে যায় আরোশকে বেস অগোছালো লাগছিলো ।আরোশ বের হতেই নিদ্রা সুবাহর ফোন নিয়ে নেয় যাতে সে আরোশের সাথে যোগাযোগ করতে পারে !
এভাবে আস্তে আস্তে সময় কাটতে লাগে সুবাহ সেদিনের পর থেকে বাড়ি থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দেয় একপ্রকার ডিপ্রেশনে চলে যায় ।আর সুস্থ থাকারও কথা না নিজের ভালোবাসাকে ত্যাগ করে তার থেকে নিজেকে আড়াল রাখা আর অন্য কাউকে তাকে দিয়ে দেওয়া খুব সহজ ব্যপার না !
হঠাৎ একদিন জানতে পারে আরোশের বাড়ি থেকে নিদ্রার জন্য বিয়ের প্রোপোজাল এসেছে সুবাহ তা শুনার পর নিজের মধ্যে যেন মরন যন্ত্রনা অনুভব করে ।কি করে তার চোখে সামনে নিজের ভালোবাসার মানুষকে অন্যকারো হতে দেখবে সে ?
এক সময় সিদ্ধান্ত নেয় সে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে তার নানুর বাসায় চলে যাবে নিদ্রার বিয়েতে থাকবেনা ।
সে বাড়ির সবাই কে জানিয়ে দেয় যে সে তার নানুর বাসায় চলে যাবে কিছুদিনের জন্য ।কিন্তু তা শুনে যেন সুবাহর দাদী সয্য হলোনা সে না করে দেয় এবং বলে সুবাহর বিয়ে ঠিক করেছে আদির সাথে ।সুবাহ না করলে তাকে বাদ্ধ করে তার উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে ।অবশেষে সুবাহ বাদ্ধ হয়ে সব মেনে নেয় ।
বিয়ের ডেট ঠিক হয় নিদ্রার বিয়ের আগের দিন ।কারন নিদ্রা আর সুবাহর দাদী কোন মতেই বিয়েতে জামেলা চায়নি সুবাহ কে বিদায় করতে চেয়েছে ।
সব কিছু তো নিদ্রা আর সুবাহর দাদীর প্লান অনুযায়া হচ্ছিলো ।সুবাহ আরোশকে বেশ এরিয়ে চলতো ।কারন আরোশের তার প্রতি চোখের চাহনি ছিলো অস্বাভাবীক ।যতবারই সুবাহ আরোশের চোখে তাকাতো ততবারই মনে হত তাকে হয়তো কিছু বলতে চাচ্ছে আরোশ চোখে হাজারো না বলা কথা মায়া ভালোবাসা দেখতো ।কিন্তু সুবাহ এর কারন খুজাঁর কখনো চেষ্টা করেনি ।
কারন সে চায়নি সে আরোশের মায়ায় জরিয়ে আরো কষ্ট পাক !
বিয়ের অনুষ্টান শুরু হয়ে যায় সুবাহ আর নিদ্রার হলুদ একদিনই ছিলো ।হলুদের শেষে যখন সুবাহ নিজের অন্ধকার রুমে বসে আরোশের খেয়ালে বিভোর ছিলো হঠাৎ তার রুমে কারো প্রবেশ ঘটে !
সুবাহ দরজার দিকে তাকায় অন্ধকারে চেহারা দেখা যাচ্ছেনা কিন্তু কোন ছেলে প্রবেশ করেছে তা ঠি কই বুঝতে পারে ।সুবাহ হালকা আওয়াজ করে বলতে লাগে
“কে ঐ খানে ?
কে?”
হঠাৎ তার সামনে এসে কেউ বেডের সাথে মুখে চেপে ধরে ।তার গায়েঁর থেকে মদের গন্ধ আসছে ।সুবাহ নিজেকে তার থেকে ছাড়ানোর প্রানপন চেষ্টা করতে লাগে কিন্তু পারেনা !
হঠাৎ বাতাসে জানালার পর্দা সরে যেতেই বাহিরের মরিচা বাতির আলোয় ঘর আবছা আলোকীত হয়ে যায় ।সুবাহ সামনের ব্যক্তির চেহারা দেখে পুরো অভাক হয়ে যায় ।কারন তার সামনে আর কেউনা আরোশ ছিলো ।চোখে ভয়ংকর রাগ চোখ লাল হয়ে আছে ফুলে রয়েছে ।আরোশ কে দেখে সুবাহ থমকিয়ে যায় তার থেকে নিজেকে ছাড়ানোর কথা ভুলে যায় ।আরোশ সুবাহর কপালে গভীর চুমু দিয়ে তার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলতে লাগে
“ভালোবাসি প্রভা
তোমায় খুব বেশি ভালোবাসি ।
আমাকে ছেলে যেওনা
প্লিজজজজ “
বলেই সুবাহর ঘাড়ের কাছে নিজের মুখ নিয়ে সেখানে নিজের ঠোঁটের স্পর্শ দিতে লাগে ।সুবাহ আরোশের স্পর্শে কেপেঁ উঠে কার স্পর্শে সব ভুলে যায় নিজের চোখ বন্ধ করে ফেলে ।চোখ বন্ধ করে তার স্পর্শ গুলো ‌অনুভব করতে লাগে ।আরোশ আস্তে আস্তে সুবাহর ঘাড়ে নিজের ঠোঁট ছুয়াঁতে ছোঁয়াতে সেখানে জোরে কামড় বসিয়ে দেয় ।সুবাহ ব্যথায় নিজের চোখ বন্ধ করে ফেলে ।আরোশ আবার সেখানে নিজের ঠোটের স্পর্শ দিতে লাগে আস্তে আস্তে আরোশ বিরবির করে সুবাহর ঘাড়ে মুখ গুঁজে সুবাহকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে যায় ।বেশ কিছু সময় পর সুবাহর ধ্যান ফিরে সে কি করছে কাল ওর বিয়ে আদির সাথে আর সে আরোশের সাথে রয়েছে !
কেউ দেখলে কি ভাববে ?
তাই তারাতারি করে আরোশ কে নিজের উপর থেকে সরিয়ে বেডে ঠি ক ভাবে শুয়িয়ে দিয়ে জান্নাত কে ফোন দেয় জান্নাত কে সব খুলে বলে জান্নাত তার বয়ফ্রেন্ড কে নিয়ে আসে তারপর আরোশকে বাড়ির পিছন দিক দিয়ে সবার আড়াল করে নিয়ে যায় ।
সেদিন সারারাত সুবাহ কান্না করে কাটিয়ে দেয় নিজের ভালোবাসার মানুষকে পেয়েও তাকে হারানোর যন্ত্রনায় ।

(বর্তমানে)……

হঠাৎ সুবাহর পিঠে কেউ হাত রাখতেই সুবাহ র ধ্যান ভাঙ্গে সে কেপেঁ উঠে এতসময় ধরে সে কল্পনায় ছিলো পিছনে তাকিয়ে দেখে আরোশ ।আরোশ সুবাহকে জিগাসা করতে লাগে
“এখানে কি করছো ?
ঘুমাওনি কেন !”
সুবাহ আরোশের কথা শুনে তারাতারি করে উঠে যেতে নিলে হঠাৎ দরজার সাথে পা বারি খায় ।সুবাহ করে উঠে আবার বসে পড়ে নিচে ।বসে পা ডলতে লাগে আরোশ তা দেখে তার সামনে বসে হাতে সুবাহ র পা নিয়ে ডলতে লাগে আর অস্তির হয়ে পড়ে রেগে বলতে লাগে
“কখনো কি বড় হবেনা ?
বাচ্চাদের মত কেন এসব কর !”
সুবাহ আরোশের কথায় তেক্কার না করে নিজের পা ছাড়িয়ে দাড়িয়ে পড়ে হাটতেঁ চেষ্টা করে এক কদম যেতেই আবার বসে পড়ে ।আরোশ সুবাহ কে কোলে নিয়ে রুমের দিকে পা বাড়ায় সুবাহ বলতে লাগে
“আমি ঠি ক আছি !
আমি যেতে পারবো আপনাকে নামিয়ে দেন ।“
আরোশ ধমকের সুরে বলতে লাগে
“বেশি কথা বলতে নিষেধ করেছি ।
আমি দেখছিতো কতটা ঠি ক আছো !
বেশি কথা বললে মুখ বন্ধ করে দিবো আর তোমার মুখ বন্ধ করার পদ্ধতি আমার জানা আছে !”
সুবাহ কথা বাড়ায় না আরোশের গলা জরিয়ে ধরে আরোশ সুবাহকে নিয়ে রুমের দিকে আগাতে লাগে ……

চলবে…..
❤️❤️❤️❤️

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ