#তুমি এলে তাই ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ১৯
.
গুঞ্জনের কান্ড শুনে নিঃশব্দে হেসে উঠলো স্পন্দন। মেয়েটা এমনিতে নিজেকে ম্যাচিউরড দেখালেও মনে দিক থেকে এখনো বাচ্চা। হ্যাঁ স্পন্দনই কল করেছে। আসলে নাম্বারটা সারার কাছ থেকে ডিনারের সময়ই নিয়ে রেখেছিলো। কিন্তু এখন একটা খবর না পাওয়া অবধি কিছুতেই শান্ত হতে পারছিলো না। তাই নিজের মনের শান্তির জন্য ফোনটা করেই ফেলল। স্পন্দন মুচকি হেসে দিয়ে বলল,
— ” নাম্বার কোথায় পেলাম সেটা ফ্যাক্ট না। এখন কেমন আছো সেটা বলো?”
গুঞ্জন মুখে হাত দিয়ে ফিসফিসে আওয়াজেই বলল,
— ” তুমি এটা জানতে এখন ফোন করেছো?”
স্পন্দন ভ্রু কুচকে বলল,
— ” হ্যাঁ তো?”
গুঞ্জন ফোনটা নামিয়ে একবার মেঘলার দিকে তাকিয়ে তারপর আবার ফোনটা কানে নিয়ে বলল,
— ” দুপুরেই তো দেখে গেলে। বারো ঘন্টাও হয়নি এখনো।”
স্পন্দন অবাক কন্ঠে বলল,
— ” বারো ঘন্টা? ? কতোটা লম্বা সময় বলোতো? এতোক্ষণে তো অনেককিছু হতে পারে তাইনা?”
গুঞ্জন এবার ঠোঁটে হাসি রেখেই ভ্রু কুচকে ফেললো। নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে তারপর বলল,
— ” হুমমম বুঝলাম।”
স্পন্দন ভ্রু বাঁকিয়ে হেসে দিয়ে জিজ্ঞাসু কন্ঠে বলল,
— ” ফিসফিসিয়ে কথা বলছো কেনো?”
গুঞ্জন একটু হেসে দিয়ে বলল,
— ” মেঘুদি পাশে ঘুমিয়ে আছে।”
স্পন্দন একটা শ্বাস ফেলে বলল,
— ” হুমমম।”
গুঞ্জন বেডে হেলান দিয়ে বলল,
— ” তো ডিনারে করেছো?”
স্পন্দন হেটে ব্যালকনিতে যেতে যেতে বলল,
— ” হ্যাঁ করেছি। এখনো জেগে আছো যে? ঘুমাও নি?”
গুঞ্জন মৃদু আওয়াজে বলল,
— ” তুমিও তো ঘুমাও নি।”
স্পন্দন ব্যালকনির রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে বলল,
— ” আমারতো অভ্যেস আছে। এরকম রাত জেগে কাজ করার। কিন্তু তুমি কেনো জেগে আছো? এটা বলোনা যে অনেক রাত অবধি ক্লাবে থাকো তাই অভ্যেস হয়ে গেছে। আজ তোমার শরীর ঠিক নেই তারওপর মেডিসিন নিয়েছো। তো ঘুম না আসাটা কিন্তু স্বাভাবিক নয়।”
গুঞ্জন কী বলবে বুঝতে পারছেনা। আসলে জেগে থেকে যে স্পন্দনের কথাই ভাবছিলো সেটা কীভাবে বলবে ও? তাই চুপ করে হাতের নখ দেখতে শুরু করলো। গুঞ্জন খুব স্ট্রেট ফরওয়ার্ড মেয়ে। যা বলে সরাসরি বলে। কিন্তু আজ ওর কী হলো নিজেই বুঝতে পারছেনা, ওর জেগে থাকার কারণটা যে স্পন্দন নিজেই সেটা কীকরে বলবে? তাই কথা ঘোরাতে বলল,
— ” তুমিও কী অফিসের কাজ করছিলেন?”
স্পন্দন একটু হেসে বলল,
— ” কথা ঘোরানোটা কিন্তু ঝাঁসির রাণীকে মানায় না?”
গুঞ্জন একটু অস্বস্তিতে পরলো। তবুও কিছু একটা ভেবে বলল,
— ” আচ্ছা আমি না হয় কথা ঘোরাচ্ছি? তুমি কী সত্যিই আজ অফিসের কাজ করার জন্যেই জেগে ছিলে?”
স্পন্দন এবার নিজেও একটু অস্বস্তিতে পরে গেলো। ও তো গুঞ্জনের কথা ভাবতে ভাবতেই জেগে ছিলো কিন্তু সেটা কীকরে বলবে গুঞ্জনের কাছে। কিছুক্ষণ ইতস্তত করে বলল,
— ” আমি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছি।”
গুঞ্জন ফিক করে হেসে দিয়ে সাথে সাথে মুখ চেপে ধরলো যাতে মেঘলা শুনতে না পায়। স্পন্দন হাত দিয়ে মাথা চুলকালো তারপর নিজেও হালকা আওয়াজ করেই হেসে দিলো। গুঞ্জন হাসি কন্ট্রোল করে বলল,
— ” হুমম বুঝলাম।”
স্পন্দন উল্টো ঘুরে রেলিং এ হেলাম নিয়ে বলল,
— ” মেডিসিন নিয়েছো ঠিক মতো?”
গুঞ্জন পাশের শুয়ে থাকা মেঘলার দিকে একপলক তকিয়ে বলল,
— ” হুমম যার কাছে মেডিসিনের সব দায়িত্ব দিয়ে গেছো সে খুব রেসপন্সিবল একজন মানুষ। স্পেশিয়ালি আমার ব্যাপারে। সো না নেওয়ার চান্সই নেই, বুঝলে বস? ”
স্পন্দন হালকা বিরক্তি মাখা কন্ঠে বলল,
— ” এই এভাবে আমার সাথে কথা বলোনা তো প্লিজ।”
গুঞ্জন একটু অবাক কন্ঠে বলল,
— ” কেনো আমিতো এভাবেই কথা বলি?”
স্পন্দন কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,
— ” তোমারটা শুনে শুনে ইদানিং আমারও এভাবে কথা বলার অভ্যেস তৈরী হয়ে গেছে।”
গুঞ্জন অবাক হয়ে কিছুক্ষণ বসে থেকে তারপর শব্দ করে হাসতে নিয়েও পরে মুখ চেপে ধরে হাসতে লাগল, অপর পাশ থেকে স্পন্দনও নিঃশব্দে হাসছে। এরপর স্পন্দন বলল,
— ” আচ্ছা রেস্ট করো। আমি কাল অফিস থেকে আসার সময় দেখে যাবো। বাই।”
গুঞ্জন মুচকি হেসে মৃদু আওয়াজে বলল,
— ” বাই।”
ফোন কেটে স্পন্দন আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা শ্বাস ফেলল। এখন অনেক বেশি শান্তি অনুভব হচ্ছে। এতক্ষণ মনের মধ্যে যে একটা অশান্তি চলছিলো সেটা এখন আর নেই। খুব হালকা লাগছে গুঞ্জনের সাথে কথা বলে। কিছুক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে রুমে চলে গেলো ঘুমোতে। আর এদিকে গুঞ্জনও কিছুক্ষণ ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থেকে শুয়ে পরলো। শোয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুম চলে এলো ওর। এখন দুজনে দুপাশে একটা শান্তির ঘুম দিচ্ছে।
______________________
এভাবে আরো দুটো দিন কেটে গেলো। গুঞ্জন এখন প্রায় সুস্হ। ব্যাথা নেই বললেই চলে। ব্যান্ডেজ ও কাল খুলে ফেলতে পারবে। এ দুদিন স্পন্দন রোজ অফিস থেকে গুঞ্জন কে এসে দেখে গেছে। আর কিছু না কিছু নিয়ে এসছে গুঞ্জনের জন্যে। রোজ কয়েকবার ফোন করে খবর নেয় গুঞ্জনের। গুঞ্জনের বন্ধুরাও ওকে দেখে গেছে দুবার। গুঞ্জনের বাবা মা এমনিতে না বুঝতে না দিলেও আড়াল থেকে ঠিকি খোজ নিয়েছে গুঞ্জন কেমন আছে। গুঞ্জনের কাকা কাকীও এখন থেমে গেছে তবে সেটা কতোদিনের জন্যে ওনারাই ভালো জানেন। মেঘলা বেডে হেলান দিয়ে শুয়ে ফোন দেখছে আর গুঞ্জন মেঘলা কোলে শুয়ে ফোন দেখছিলো। তখন আবির রুমের ভেতরে এসে বলল,
— ” কী চলছে হ্যাঁ?”
দুজনেই একসাথে উঠে সোজা হয়ে বসে খোলা চুল হাত দিয়ে স্টাইল করে নাড়িয়ে বলল,
— ” ফগ চলছে।”
আবির চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল,
— ” ফাজলামি করার আগে ভুলে যাস যে আমি তোদের বড় ভাই?”
মেঘলা আর গুঞ্জন একে ওপরের দিকে ইনোসেন্ট ফেস করে তাকিয়ে আবার আবিরের দিকে তাকিয়ে মাথা দুলিয়ে একসাথে বলল,
— ” নাহ একদম না।”
আবির হেসে দিলো ওদের কান্ড দেখে। ওরা দুজনো হাসলো। আবির বেডে বসে গুঞ্জনের দিকে তাকিয়ে বলল,
— ” ঔষধ খেয়েছিস?”
গুঞ্জন মাথা নাড়ল। গুঞ্জন আবির কে অন্যভাবে দেখেছে। ঠিক সেই ছোটবেলার মতো। ওর প্রতি কেয়ার, যত্ন সব আগের মতোই করেছে। গুঞ্জন এখন আবিরের সাথে স্বাভাবিক হলেও এখনো মনের মধ্যে একটা চাপা আভিমান ঠিকই আছে। সেই আগের মতো স্বাভাবিক হতে পারেনি এখনো। আবির আবারও বলল,
— ” স্পন্দন এসছিলো?”
গুঞ্জন নিচু কন্ঠে বলল,
— ” নাহ উনি তো সন্ধ্যায় আসেন। অফিসের কাজ সেড়ে এসে পরবে কিছুক্ষণের মধ্যে।”
এরপর আবির কিছুক্ষণ টুকিটাকি কথা বলে চলে গেলো। মেঘলা গুঞ্জন আবার ফোন দেখায় মন দিলো। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ করেই মেঘলার চোখ ফোনের স্ক্রিনে থেমে গেলো। চোখের জলটা কিছুতেই আটকাতে পারলোনা। গুঞ্জন মেঘলার দিকে তাকিয়ে ওকে কাঁদতে দেকে উত্তেজিত হয়ে উঠে বসে বলল,
— ” মেঘু দি কাঁদছো কেনো তুমি? এই মেঘুদি বলো? ”
মেঘলা একদৃষ্টিতে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। গুঞ্জন মেঘলার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে হালকা চমকে উঠল। এবার বুঝলো মেঘলার কান্নার কারণ। ও ফোনটা রেখে মেঘলাকে দুহাতে জরিয়ে ধরে কাঁদোকাঁদো কন্ঠে বলল,
— ” আই এম সরি মেঘু দি। সব আমার জন্যে হয়েছে তাইনা?”
মেঘলা এবার হালকা আওয়াজ করে কাঁদতে শুরু করে দিলো। মেঘলার কান্না দেখে গুঞ্জনও কেঁদে দিলো কাঁদতে কাঁদতেই বলল,
— ” প্লিজ মেঘুদি কান্না করোনা। আমার জন্যেই তুমি এতো কষ্ট পাচ্ছো তাইনা? সবাই ঠিকি বলে আমি খুব খারাপ সত্যিই খুব খারাপ। যাকে”
মেঘলা এবার নিজেকে সামলে নিয়ে গুঞ্জনকে ধরে বলল,
— ” আরে এই বোকা মেয়ে তুই কাঁদছিস কেনো বলতো? যা হয়েছে তাতে তোর কী দোষ?”
গুঞ্জন নাক টেনে টেনে বলল,
— ” সব দোষ আমারই। তুমি যাকে এতো বেশি ভালোবাসো তাকে তুমি নিজের করে পাওনি শুধুমাত্র আমার জন্যে।”
মেঘলা এবার হালকা ধমকে বলল,
— ” চুপ করবি তুই? কীসের ভালোবাসা? তোর কী মনে হয় ও সত্যিই কখনো আমায় ভালোবেসেছে? যদি ভালোবাসতো তাহলে কখনো আমাকে ছেড়ে দিয়ে তো..যাই হোক বাদ দে এসব। এসব নিয়ে তুই একদম মন খারাপ করবিনা এতে তোর কোনো দোষ নেই।”
গুঞ্জন মেঘলাকে আবার জরিয়ে ধরে বলল,
— ” বাট আই প্রমিজ দি। আমার জন্যে আজকের পর তুমি আর কখনো কোনো কষ্ট পাবেনা। আমি পেতেই দেবোনা। তোমার জন্যে আমি সব ছেড়ে দেবো কিন্তু তোমাকে আর কোনো কষ্ট পেতে দেবোনা। আই প্রমিজ।”
মেঘলা কিছুক্ষণ চুপ থেকে গুঞ্জনের মনের অবস্হা ভেবে চোখের জল মুছে ওকে সুরসুরি দিতে শুরু করলো। গুঞ্জনের শরীরে আবার সুরসুরি বেশি লাগে তাই ওও খিলখিলিয়ে হেসে দিলো। দুজনের হাসি মজার মুহূর্তেই স্পন্দন এসে হাজির হলো। কিছুক্ষণ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থেকে তারপর হালকা গলা ঝেড়ে বলল,
— ” আসতে পারি?”
স্পন্দনের গলার আওয়াজ পেয়ে দুজনেই থেমে গেলো। তারপর স্পন্দনকে ভেতরে আসতে বলল। স্পন্দনও ভেতরে এসে বসে ওদের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করলো। কাল ব্যান্ডেজ খুলতে হবে সেই নিয়েও কিছুক্ষণ আলোচনা করলো। তারপর চলে গেলো সেদিনের মতো।
_______________________
আরো অনেকগুলো দিন কেটে গেছে এরমধ্যে । এখন স্পন্দন আর গুঞ্জনের বন্ধুত্ব আরো গভীর হয়েছে। আগে মাঝে মাঝে স্পন্দন দেখা করতো আবার নিয়ে ঘুরে আসতো। কিন্তু এখন প্রায় রোজই স্পন্দন গুঞ্জনকে কলেজ থেকে পিক করে নেয়। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে নিয়ে আসে। গুঞ্জনের কাছে প্রথমে একটু আনইজি লাগলেও। এগুলো খুব স্বাভাবিক হয়ে গেছে। কিন্তু স্পন্দনের মনে অন্যকিছু চলছে। একয়দিনে ওর মনে জেগে ওঠা ভালোলাগার অনুভূতিটা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে। ইদানিং ও বুঝে গেছে এটা শুধু ভালোলাগা নয়। এই অনুভূতি হয়তো এরকমি। কখন? কেনো? কীভাবে হয় সেটাই বুঝতে পারে না কেউ।
গুঞ্জন কলেজ থেকে বেড়িয়ে গেইটের কাছে স্পন্দনের গাড়ি দেখে ওর মুখে হাসি ফুটে উঠলো কারণ ওর মনে হয়েছিলো আজ স্পন্দন আসবে তাই ও বাইক ও আনেনি। স্পন্দন গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। গুঞ্জন ওর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,
— ” আজ কোথায়?”
স্পন্দন সানগ্লাস নামিয়ে টিশার্টে ঝুলিয়ে বলল,
— “চলো দেখতেই পাবে।”
গুঞ্জন কিছু না বলে চুপচাপ গাড়িতে বসে পরলো। স্পন্দন ও গাড়িতে বসে গাড়ি স্টার্ট করলো। গাড়ি আপন গতিতে চলছে। দুজনেই চুপ করে আছে। গুঞ্জন বাইরের ফুরফুরে হাওয়া উপভোগ করছে আর স্পন্দনও গাড়ি চালাচ্ছে আর আড়চোখে গুঞ্জনকে দেখে যাচ্ছে। বেশ অনেকটা সময় পর গাড়ি থামলো একটা জায়গায়। গুঞ্জন আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো এটা সেই ব্রিজ যেই ব্রিজে গুঞ্জন আর স্পন্দনের প্রথম দেখা হয়েছিল। স্পন্দন গাড়ি থেকে নেমে গেলো । গুঞ্জনও অবাক হয়ে চারপাশটা দেখতে দেখতে নামলো।
দুজনেই ব্রিজের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় আধঘন্টা যাবত দাঁড়িয়ে আছে। অথচ দুজনেই চুপ। সূর্য অস্ত গেলো সবে। চারপাশটা লালচে রং ধারণ করেছে। ঠান্ডা ফুরফুরে বাতাস বইছে। গুঞ্জন অপেক্ষা করছে স্পন্দন কেনো ওকে এখানে এনেছে সেটা জানার জন্য। আরো একটু চুপ থেকে স্পন্দন বলল,
— ” গুঞ্জন?”
গুঞ্জন হালকা চমকে গিয়ে বলল,
— ” হুম”
স্পন্দন আবারও একটু চুপ থেকে বলল,
— ” এই সেই জায়গা যেখানে আমরা একে অপরকে প্রথম দেখেছিলাম তাইনা?”
গুঞ্জন চারপাশে তাকিয়ে বলল,
— ” হ্যাঁ।”
স্পন্দন একটা লম্বা শ্বাস ফেলে বলল,
— ” আমি কখনো কোনো মেয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করিনি, কিন্তু তুমিই প্রথম মেয়ে যার সাথে আমি খারাপ ব্যবহার করেছি। আমি কখনো কোনো মেয়ের গায়ে হাত তুলিনি, তুমিই প্রথম মেয়ে যাকে আমি চড় মেরেছি। আমি যখন থেকে বুঝতে শিখেছি তখন থেকে জীবণে কাউকে সরি বলিনি । বলার তেমন দরকারও পরেনি। কিন্তু তোমাকে বলেছি। তুমি খুব স্পেশাল হয়ে গেছো আমার কাছে। প্রথমে সহ্য করতে পারতাম না এখন তোমাকে ছাড়া কিছু ভাবতেও পারছিনা। আগে তোমার চেহারা দেখতে চাইতাম না একন ঐ মুখটা একদিন না দেখলে রাতে ঘুম হচ্ছেনা। আই ডোন্ট নো হাউ বাট ইট জাস্ট হ্যাপেন্ড। ”
গুঞ্জন এতোক্ষণ অবাক হয়ে শুনছিলো কথাগুলো ও অবাক কন্ঠে বলল,
— ” মানে?”
স্পন্দন নিচের ঠোট কামড়ে ধরে আবার একটা শ্বাস ফেলে বলল,
— ” আমি ওতো কথা ঘুরিয়ে বলতে পারিনা আর পছন্দও করিনা। তাই ক্লিয়ারলি বলছি।”
গুঞ্জন ভ্রু কুচক বলল,
— ” কী?”
স্পন্দন এবার গুঞ্জনের দিকে সরাসরি তাকিয়ে বলল,
— ” আই লাভ ইউ। হ্যাঁ ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে। কারণ জানতে চেওনা সেটা আমারও অজানা। আমি শুধু একটা কথাই জানতে চাইবো বিয়ে করবে আমায়?”
#চলবে…