তুমি এলে তাই পর্ব-০৪

0
2956

#তুমি এলে তাই ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ৪
.
গুঞ্জনরা ক্যামপাসের সিড়ির ওখানে বসে আছে। ক্লাস এক্সাম আছে তাই সবাই বই নিয়ে হালকা পাতলা পড়ছে একমাত্র গুঞ্জন কানে হেডফোন গুজে পিলারে হেলান দিয়ে গান শুনছে। হঠাৎ সারা ভেতরে ঢোকার সময় গুঞ্জন কে দেখে থেমে গেলো। মুচকি হেসে গুঞ্জনের দিকে এগিয়ে এসে বলল,

— ” এক্সকিউস মি আপু?”

মিষ্টি কন্ঠে ডাকটা শুনে সবাই তাকালো কিন্তু গুঞ্জন একমনে গান শুনছে তাই শুনতে পায়নি। প্রাপ্তি খোচা মারতেই গুঞ্জন ভ্রু কুচকে প্রাপ্তির দিকে তাকাইতেই প্রাপ্তি আঙ্গুলের ইশারায় দেখাতেই গুঞ্জন সামনে তাকিয়ে সারাকে দেখে কান থেকে হেডফোনটা নামিয়ে গলায় ঝুলিয়ে বলল,

— ” কিছু বলবে?”

সারা মুখে মুচকি হাসি রেখেই বলল,

— ” আসলে কালকে খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম তাই তোমাকে কালকে থ্যাংকস বলা হয়নি। কালকে যদি তুমি ওইসময় না আসতে হয়তো..যাই হোক থ্যাংকস আপু।”

গুঞ্জন হাত আর চোখের ইশারায় সারাকে ওর পাশে বসতে বলল। সারা একটু ইতস্তত করে গুঞ্জনের পাশে বসল। গুঞ্জন নিজের হাটুর ওপর দুই হাত রেখে সারার দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” আমায় আপু বলে ডাকার কোনো দরকার নেই মাত্র একক্লাস সিনিয়র তোমার। আমার নাম গুঞ্জন এই নামেই ডেকো আমায়। আর থ‍্যাংকস বলার কোনো দরকার নেই। কাল তোমার ভাই আমাকে খুব গ্রান্ডলি থ্যাংকস বলে দিয়েছে ।”

সারা অবাক হয়ে বলল,

— ” ভাইয়া কথা বলেছিলো তোমার সাথে? আসলে ভাইয়া এরকমি জানো? খুব ভালোবাসে আমাকে। আমায় কেউ কষ্ট দিলে ওর মাথাই নষ্ট হয়ে যায়। ও কী করে নিজেই বুঝতে পারেনা। ঠিক তেমনি কারো জন্যে আমার ভালো হলে ভাইয়া তাকে কোনোদিন ভোলেনা। সারাজীবন তার কাছে ঋণী থাকে। তবে এমনিতে আমার ভাইয়ার মতো মানুষ হয়না। ”

গুঞ্জন মুচকি হেসে বলল,

— ” হ্যাঁ সেটা কালকে খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি। বাই দা ওয়ে এতো ভয় পেলে চলবে হ্যাঁ? ভাইয়ের আদরে তো মনে হয় বাইরের দুনিয়ার সাথে খুব একটা পরিচিত হতে পারোনি। কিন্তু পৃথিবীটা এতো সহজ না। সবসময় তো আমি আর তোমার ভাই তোমাকে বাঁচাতে আসবোনা। জামানা বহত খারাপ হ্যা বস। তাই শক্ত হতে হবে, একটা কথা মনে রেখো নরম মাটিতে আঘাত করতে সবাই বেশ মজা পায়, কিন্তু শক্ত মাটিতে কেউ আঘাত করতে আসেনা কারণ তাতে নিজেই ব্যাথা পায়। এনিওয়ে যদি ওরা আবার তোমার সাথে ওরকম কিছূ করে তো আমাকে বলবে ওকে?”

সারা মাথা নেড়ে একটু হেসে বলল,

— ” ইউ নো তোমাকে আমার বেশ ভালো লেগেছে। একদম কুল এন্ড রকিং টাইপ। ”

গুঞ্জন একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,

— ” আরিব্বাস আপু আর এই বান্দরগুলো ছাড়াও আমাকে কারো ভালোলাগে? ভাবতেই পারছিনা।”

সারা একটু অবাক হলো এই কথায়, কথাটার মানেই বুঝলোনা । তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে হাত বাড়িয়ে বলল,

— ” ওকে দেন ফ্রেন্ডস?”

গুঞ্জন একটু হেসে হাতের দিকে তাকিয়ে বলল

— ” আমার সাথে ফ্রেন্ডশীপ? প্রেশারে পরে যাবে কিন্তু।”

সারাও হেসে দিয়ে বলল,

— ” নো প্রবলেম চলবে।”

গুঞ্জন ওর সাথে হাত মেলাতেই সারা হেসে বলল,

— ” আমার নাম সারা।”

— ” বাহ কিউট নেইম।”

সারা আবারও হেসে দিয়ে বলল,

— ” থ্যাংকস, তোমারটাও কিউট। আচ্ছা আমি উঠি হ্যাঁ? ক্লাস আছে আমার।”

গুঞ্জন মাথা নেড়ে সম্মতি দিতেই সারা উঠে চলে গেলো। গুঞ্জন সারার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলল,

— ” ওমন ডেবিল একটা ভাইয়ের এমন ফেইরি টাইপ বোন থাকতে পারে? আনবিলিভএবল।”

প্রাপ্তি অবাক হয়ে বলল,

— ” তুই স্পন্দন চৌধুরীকে ডেবিল কেনো বললি?”

গুঞ্জন কিছু না বলে আবার কানে হেডফোন লাগালো। কিছুক্ষণ অঙ্কুর উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

— ” এবার চল ক্লাসের টাইম হয়ে গেছে। ফার্স্ট ক্লাসে এক্সাম আছে ভুলে গেছিস?”

সবাই উঠে চলে দাঁড়ালেও গুঞ্জন বসে বসে গান শুনতে লাগল। প্রাপ্তি অবাক হয়ে বলল,

— ” কীরে যাবিনা?”

গুঞ্জন বিরক্ত হয়ে হেডফোন ব্যাগে ভরে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

— ” হ্যাঁ চল। জোকারদের জোকস শুনতে।”

ওরা কিছু না বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল তারপর পাঁচজন মিলেই চলে গেলো ক্লাসে। গুঞ্জন ক্লাসে যেতেই ক্লাসের ফাজিল ছেলেগুলোও ভদ্র হয়ে নিজের জায়গায় বসে পড়লো। প্রথম দিকে গুঞ্জনকে বিরক্ত করতে গিয়ে যখন বুঝতে পেরেছে ও কী জিনিস তখন থেকেই ওকে দেখলে নিজেদের গুটিয়ে নেয় ওরা। ক্লাস শেষ হলে প্রোগ্রাম ওরগানাইজারের ডাক পরতেই গুঞ্জন গেলো ওনার সাথে দেখা করতে। গুঞ্জন ওখানে গিয়ে বলল,

— ” আসবো?”

লোকটা গুঞ্জনের দিকে তাকিয়ে অবাক হওয়ার ভান করে বলল,

— ” আরে আরে আসুন আসুন মহারানির পা পড়লো তাহলে ক্লাবে?”

গুঞ্জন একটু বিরক্ত হয়ে ভেতরে ঢুকে বলল,

— ” কীছু বলবেন স্যার?”

স্যার চ্যায়ারে হেলান দিয়ে হালকা দুলে বলল,

— ” নেক্সট সানডে নবীন বরণ উৎসব সেটা জানা আছে?”

গুজ্ঞন হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ল। স্যার ব্যাঙ্গের স্বরে বলল,

— ” তো এবার গান গাইবেতো নাকি?”

গুঞ্জন সহজভাবেই বলল,

— ” যদি গাইতে বলেন তো গাইবো।”

স্যার এবার রাগী গলায় বলল,

— ” এক সপ্তাহ আগে থেকে এনাউসড করা হয়েছে, ক্লাবে আসোনি কেনো হ্যাঁ? না কোনো রিহার্সাল না কোনো প্রাকটিজ। কীকরে গাইবে?”

গুঞ্জন হাত ভাজ করে বলল,

— ” আপনি চিন্তা করবেন না স্যার। আমি সময়মত স্টেজে গিয়ে গান গেয়ে দেবো।”

স্যার টেবিলে বারি মেরে উঠে দাড়িয়ে বলল,

— ” তোমার কী মনে হয় তুমি গান না গাইলে এই প্রোগ্রাম চলবে না?”

গুঞ্জন একটু অবাক হলো তবুও বলল,

— ” সেটা কখন বললাম স্যার? আপনি ডেকেছেন তাই এসছি। আপনি বললে গাইলে গাইবো নইলে গাইবোনা। বাট ওসব রিহার্সাল আমার দ্বারা হবেনা।”

স্যার কিছুক্ষণ বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে থেকে বলল,

— ” ওকে যাও। নাম দিয়ে দিচ্ছি আমি। প্রোগ্রামের দিন অন্তত সময়মতো এসো?”

গুঞ্জন মাথা নেড়ে চলে গেলো ওখান থেকে। আর ঐ স্যার নিজেও জানেন যে গুঞ্জন গান না গাইলে প্রোগ্রামের অডিয়েন্স ফিপটি পার্সেন্ট কমে যাবে। কিন্তু মেয়েটার ওই ডোন্ট কেয়ার ভাবটা সহ্য হয়না ওনার তাই রুড বিহেভ করলো। অথচ এরপরেও গুঞ্জন নিজের জায়গা থেকে একচুলও সরলোনা। কারণ এগুলো ওর কাছে নতুন না।

______________________

সন্ধ্যায় রিয়াদ হোসেন আর রাশেদ হোসেন অফিস থেকে ফিরে একসাথে বসে চা খেতে খেতে অফিসের কাজের ব্যাপারে আলোচনা করছেন। মিসেস নিলিমা আর অনিলাও স্নাকস নিয়ে এসে বসলেন। তখনি কথার মধ্যেই রাশেদ হোসেন বলে উঠলেন,

— ” ভাই গুঞ্জনের এবার একটা বিয়ে ঠিয়ে দিয়ে দেওয়া উচিত তাইনা?”

রিয়াদ হোসেন কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,

— ” সবেতো সেকেন্ড ইয়ার। গ্রাজিউয়েশন টা শেষ করুক।”

রাশেদ হোসেন বিরক্ত হয়ে বলল,

— ” আরে বিয়ের পর কী মানুষ পড়াশোনা করেনা নাকি? দেখো মেয়েটা এমনিতেই কেমন ছন্নছাড়া হয়ে চলে। মাঝরাত অবধি বাইরে থাকে কখন কী হয়ে যায় বলা যায়? বিয়েটা হয়ে গেলে নিজের সংসার হলে দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। অনেক ভালো ছেলে আছে আমার কাছে, তোমারা বললেই ওরা গুঞ্জনকে এসে দেখে যাবে। ”

মিসেস নিলিমা সম্মতি জানিয়ে বললেন,

— ” ভাই ঠিকি বলছে। যত দিন যাচ্ছে মেয়েটা ততই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ভালো একটা ছেলে দেখে বিয়েটা দিয়ে দিলে হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে।”

মিসেস অনিলা ফোড়ন কেটে বলল,

— ” ভালো ছেলে? তোমার কী মনে হয় ঐ মেয়েকে কোনো ভাল ছেলে নিতে চাইবে। কোন ভালো পরিবারে এমন ছন্নছাড়া, বেপরোয়া, বেয়াদব মেয়েকে নিজের বাড়ির বৌ করে নিয়ে যেতে চাইবে? ”

আবির এতোক্ষণ চুপচাপ দরজায় হেলান দিয়ে কথা শুনছিলো ওনাদের। অনিলা বেগম কথাটা শেষ করার পরেই আবির বলে উঠল,

— ” তাতে তো তোমাদের বিশেষ কোনো ক্ষতি হওয়ার কথা না কাকী? ও আমার বাবা মার মেয়ে আমার বোন। এসব নিয়ে ভাবার জন্যে আমি আছিতো। তোমরা কেনো এতো চাপ নিচ্ছো বলোতো?”

রাশেদ হোসেন বেগম রেগে বলে উঠলেন,

— ” কী বলতে চাইছিস তুই? ও শুধু তোদের সব আমাদের কিচ্ছু না? ”

আবির একটু হেসে বলল,

— ” হুমম কাকা আর কাকী হও এর চেয়ে বেশি কিছু না।”

মিসেস অনিলা রেগে গিয়ে বললেন,

— ” ভুলে যাসনা। ছোটবেলা থেকে ওকে কিন্তু আমরাই বড় করেছি। তোরা কিন্তু ছিলিনা।”

আবির একটা তাচ্ছিল্যের বাঁকা হাসি দিয়ে বলল,

— ” ওই মেয়ে তো সেটা বোঝে না তাইনা। ”

রিয়াদ হোসেন এবার ধমকের সুরে বললেন,

— ” আবির! কী শুরু করেছো বলোতো? বড়দের সাথে এভাবে কথা বলে?”

আবির ভ্রু কুচকে নিজের বাবার দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” কী করবো বলো? ওই মেয়েকে নিয়ে এই বাড়িতে এতো পেচাল কেনো হয় সেটাইতো বুঝতে পারিনা? জাহান্নামে যাচ্ছে যেতে দাওনা। কেনো এভাবে ফাল্তু টাইম ওয়েস্ট করছো? জানোনা ওই মেয়ের নামটাও সহ্য হয়না আমার।”

মিসেস নিলিমা উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,

— ” আচ্ছা ঠিকাছে মাথা ঠান্ডা করে বস। আমি কফি আনছি তোর জন্যে।”

আবির চুপচাপ বসে পরলো। আর ওনারা অন্য টপিকে কথা বলতে শুরু করলো কারণ এখন আবিরের সামনে গুঞ্জনের নাম নিলেও ও তুলকালাম বাধিয়ে দেবে। তাই আপাতত গুঞ্জনের টপিকটা সবাই বাদ দিলেন।

______________________

মিটিং শেষ নিজের কেবিনে বসে রেস্ট করতে করতে ল্যাপটপে টুকটাক কাজ করছে স্পন্দন। তখনি ওর পিএ দরজায় নক করে বলল,

— ” মে আই কাম ইন স্যার?”

স্পন্দন ল্যাপটপে চোখ রেখে কাজ করতে করতেই বলল,

— ” কাম ইন।”

লোকটা ভেতরে এসে বলল,

— ” স্যার আপনার জন্যে একটা ইউনিভার্সিটির নবীনবরণের জন্যে ইনভাইটেশন আছে। ডিন আর ভিপি নিজে ইনভাইট করতে এসছেন।”

স্পন্দন কাজ করতে করতে বলল,

— ” ভেতরে পাঠিয়ে দাও।”

ওনারা দুজন ভেতরে আসতেই স্পন্দন ল্যাপটপ থেকে চোখ সরাতেই ওনাদের দেখে দাঁড়িয়ে গিয়ে বললেন,

— ” আরে স্যার বসুন। আপনি এসছেন আমিতো জানতামই না। প্লিজ সিট।”

তারপর স্পন্দন ভিপিকে উদ্দেশ্য করে বলল,

— ” আপনিও বসুন।”

ওনারা বসতেই স্পন্দনও বসলো। তারপর ওনাদের দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” কী খাবেন বলুন চা নাকি কফি?”

লোকটা হেসে বলল,

— ” না না কিছু খাবোনা এখন। আসলে সময় নেই। বুঝতেই পারছো সামনে প্রোগ্রাম। আসলে সামনের রবিবার আমাদের ভার্সিটির নবীনবরণ। গতবার তো দেশে ছিলেনা সো এইবার আমরা চাইছি যে তুমিই চিফ গেস্ট হিসেবে এসো। যদি তোমার সময় হয় তো…”

স্পন্দন মুচকি হেসে বলল,

— ” অবশ্যই যাবো। সময় না হলে করে নেবো। আর তাছাড়া আমার বোন সারাও ফার্স্ট ইয়ারেরই স্টুডেন্ট।”

ডিন একটু হেসে বলল,

— ” হ্যাঁ তা তো জানিই। তবে শুধু তুমি না। তোমার পুরো ফ্যামিলি মিলে তবে আসবে কিন্তু?”

স্পন্দন হেসে দিয়ে বলল,

— ” নিশ্চয়ই সবাই মিলেই যাবো।”

ওনারা দুজনেই উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

— ” আচ্ছা তাহলে উঠছি এখন।”

স্পন্দনও উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

— ” কিছু খেয়ে গেলে ভালো লাগতো স্যার।”

ডিন মুখে হাসি রেখেই বলল,

— ” আজতো সময় নেই। একদিন সময় করে এসে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া করবো।”

স্পন্দন হেসে দিলো। ওনাদেরকে বিদায় দিয়ে কিছুক্ষণ কাজ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলো স্পন্দন।

________________________

রোজকার মতো আজকেও মাঝরাতে বাড়ি ফিরেছে গুঞ্জন। কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে ড্রয়িং রুমে ঢুকতেই দেখে আবির সোফায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছে। গুঞ্জন পাত্তা না দিয়ে ভেতরে যেতে নিলেই আবির বলে উঠল,

— ” ঠিক কোন ভাষায় বোঝালে তুই বুঝতে পারবি বলতো?”

গুঞ্জন থেমে গিয়ে পেছন ঘুরে তাকিয়ে বলল,

— ” কী বুঝতে হবে বলতো?”

আবির একটু এগিয়ে গিয়ে বলল,

— ” সবার মনের মতো করে,একটু ডিসিপ্লিন মেইনটেইন করে চলা যায় না? কেনো করিস এরকম? ”

গুঞ্জন হালকা হেসে দিয়ে বলল,

— ” সরি রে আমি নিজেই নিজের মন মতো চলতে পারিনা, অন্যের মনের মতো কীকরে চলবো? আর আমি যেটাই করিনা কেনো সেটা কোনোদিনো কারো মন মত হতে পারেনা। মানুষটাই খারাপ কী না?”

এইটুকু বলে আবির কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো। আবিরও কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে ল্যাপটপটা নিয়ে চলে গেলো নিজের রুমে।

সারারাত হলিউড মুভি আর গান শুনে ভোররাতের দিকে ঘুমিয়েছে গুঞ্জন। ভার্সিটি অফ থাকায় অনেকবেলা হয়ে যাওয়ার পরেও গভীর ঘুমে মগ্ন। হঠাৎ কেউ ওর মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে নরম গলায় বলল,

— ” গুটি এই গুটি? ওঠ। এতো বেলা অবধি ঘুমোয় কেউ?ওঠনা?”

অনেক রাত করে ঘুমানোর কারণে বেশ কয়েকবার ডাকার পরে ঘুম ভাঙ্গলো ওর। চোখ খুলে কোনোরকম হাই তুলে উঠে বসে সামনে তাকিয়ে যা দেখলো তাতে সাথে সাথেই মুখে হাসি ফুটে উঠল গুঞ্জনের।

#চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে