#তুই আমার ২
#পর্বঃ২৬
#Tanisha Sultana
বিকেল চারটা বাজে। অভি মিষ্টিকে নিয়ে রাস্তার জেমে আটকে আছে। মিষ্টি অভির কাধে মাথা রেখে বসে আছে। অভি মিষ্টিকে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় ফিরছে।
“আর কতোখন আমার ভালো লাগছে না।
অসুস্থ সুরে বলে মিষ্টি। অভি মিষ্টির গালে হাত দিয়ে বলে।
” এই তো আর একটু। ডক্টর বললো একটু পরেই জ্বর ছুটে যাবে কিন্তু এখনো ছুটলো না কেনো
“জ্বর আমাকে খুব ভালোবাসে সহজে ছারবে না
” এতো জ্বর তাও মুখটা বন্ধ হলো না
“যাও আমি আর কথায় বলবো না।
মিষ্টি অভির কাধ থেকে মাথা উঠিয়ে গাড়ির জানালায় মাথা রাখে। অভি গাড়ি চালানো শুরু করে।
অভি গাড়ি থামানোর সাথে সাথে মিষ্টি গাড়ি থেকে নেমে হাটা শুরু করে। একটু হাটার পরেই মাথা ঘুরে পড়ে যেতে নেয় কিন্তু অভি ধরে ফেলে। মিষ্টিকে কোলে নেয়
” এতো তেজ দেখাও কাকে
“যে দেখে তা কে
অভি মিষ্টিকে রুমে এনে বেডে বসিয়ে দেয়। তখন সৌরভ আসে।
” মিষ্টি শরীর কেমন লাগছে
“ভালো। বসো না
সৌরভ মিষ্টির পাশে বসে। অভি সোফায় বসে
” সৌরভদা প্লিজ বাপি দাভাইকে এসব বলো না। তাহলে আর এখানে থাকতে দেবে না
“ঠিক আছে বলবো না। কিন্তু তোমাকে ও তো একটু সাবধানে থাকতে হবে।
“হ্যাঁ। সৌরভ দা আরও একটা ব্যাপার আছে।
” কি
“অভি তুমি একটু রুম থেকে যাও তো আমার সৌরভদার সাথে পারসোনাল কথা আছে।
মিষ্টির কথা শুনে অভি সেই লেভেলের রেগে যায়। পরে দেখে নেবো আস্তে করে বলে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
” মিষ্টি প্রপোজ করবে না কি? ওকে যেতে বললে
মজা করে বলে সৌরভ।
“করলে রাজি হবে না কি। রাজি হলে করবো
সৌরভ হেসে দেয়।
” যা বলছিলাম। রিনি ফোন করেছিলো
“কি বললো?
” আমাকে কিডন্যাপ করবে খুব তারাতারি তাই বললো। তবে রিনি বললো আমাকে ওর ভাইয়ের বউ বানাবে। ওর ভাই না কি আমাকে খুব ভালোবাসে
“আমি যতদুর যানি রিনির তো কোনো ভাই বোন নেই
” সেটাই তো। রিনির ভাইটা কে? তবে আমি নিশ্চিত রিনির সত্যি ভাই আছে
“এতো শিওর কি করে
” আমি ওনাকে কথা বলতে শুনছি।
“আমি খোজ নিচ্ছি তুমি টেনশন করো না।
” হুম
“সাবধানে থেকো
সৌরভ চলে যায়। মিষ্টি উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে জামাকাপড় পাল্টে এসে দেখে অভি গেমস খেলছে। মিষ্টির দিকে একটু তাকায়ও না। মিষ্টি আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল ঠিক করে পড়ে যাওয়ার নাটক করে কিন্তু অভি ওকে ধরে না।
মিষ্টি সত্যি সত্যি পড়ে যায়।অভি হেসে ফেলে। মিষ্টি উঠে রাগে ফুসতে ফুসতে অভির কাছে যায়।
” আমি পড়ে গেলাম তুমি ধরলে না কেনো?
“আমি ধরবো কেনো তোমার সৌরভ কই গেলো
মিষ্টি চোখ ছোট ছোট করে তাকায় পরে ব্যাপারটা বুঝতে পারে
” কোথাও পোরা পোরা গন্ধ পাচ্ছি তুমি কি পাচ্ছো
“কি পুরছে
” কারো মন
“তুমি কি বলতে চাইছো আমি জেলাস হচ্ছি
” না তো। আমি তা বলবো কেনো? তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না। রিনিকে ভালোবাসো। তুমি তো আমার সাথে থাকতে চাও না। তাই তো আমি ঠিক করে নিয়েছি পুলিশ রিনিকে ধরবে তারপরই আমি চলে যাবো
“কোথায়?
” কোথায় আবার তোমার লাইফ থেকে। তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে সৌরভকে বিয়ে করবো। তোমাকেও ইনভাইট করবো। তুমি কিন্তু যাবে কেমন
মিষ্টির কথা শুনে অভির বুকের বা পাশে ব্যথা করে। অভি হুট করে মিষ্টিকে জড়িয়ে ধরে। মিষ্টিতো অবাক। অভি মিষ্টি কে ধরছে তো ছাড়ছেই না
ৃৃ
“ইমোশনাল হয়ে আমাকে আটকানো যাবে না। আমি যাবোই। আমি তো অলরেডি সৌরভকে ভালো বাসতে শুরু করে দিয়েছি। এখন আর আমাকে আটকানো যাবে না
অভি মিষ্টিকে ছেড়ে দেয়।
” তোমাকে কে আটকাচ্ছে? যাও না। অভি একা চলতে পারে। আমার কারো দরকার নেই।
অভি রুম থেকে বেরিয়ে যায়। মিষ্টি একটু হেসে শুয়ে পড়ে।
সকালে ঘুম ভাঙতেই মিষ্টি দেখে অভি মিষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে
“এমন করে তাকিয়ে আছো কেনো গো
অভি চোখ ফিরিয়ে নেয়।
” আমার হাতটা ছাড়লে আমি উঠতে পারি
মিষ্টি এবার খেয়াল করে মিষ্টি অভির হাতের ওপর শুয়ে আছে। মিষ্টি তারাহুরো করে অভির হাত ছেড়ে দিয়ে উঠে বসে
“সরি সরি আমি ভুল করে ধরেছি
” বা বা এমনিতে তো কতো বাহানা করো এখন আবার
“আগে তো তোমাকে ভালোবাসতাম
” আর এখন
“এখন সৌরভ কে ভালোবাসি।
” ইডিয়েট
অভি চলে যায়।
বিকেলে খুব বৃষ্টি হচ্ছে। মিষ্টি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে হাত বারিয়ে বৃষ্টির পানি ধরছে।
“ওই ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো ভেতরে এসো
মিষ্টি অভির দিকে তাকায়। দৌড়ে অভির কাছে গিয়ে বলে
” চলো না ছাঁদে যায়।
“তুমি কি দেখতে পাচ্ছো না বৃষ্টি পড়ছে
” বৃষ্টিতে ভিজতেই তো ছাঁদে যাবো
“মাএ কাল জ্বর থেকে উঠছো আর এখনি ভিজবে
” তো কি
“আবার ঠান্ডা লেগে যাবে তো
” দেখুন এতো কেয়ার দেখাতে হবে না। যাবে কি না বলো
“আমি যাবো না
” আমার সৌরভ থাকলে ঠিকি আমাকে নিয়ে যেতো
সৌরভের কথা শুনে অভির মাথা গরম হয়ে যায়।
“আমি এখুনি আমার জানেমানকে ফোন করছি
মিষ্টি ফোনটা হাতে নেয়। অভি মিষ্টির হাত থেকে ফোনটা নিয়ে যায়। ফোনটা ছুরে পেলে মিষ্টিকে টেনে ছাঁদে নিয়ে যায়।
অভি দেয়ালে ভর দিয়ে পকেটে হাত গুজে দাড়িয়ে দাড়িয়ে আছে। মিষ্টি লাফিয়ে লাফিয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে। একটু ভেজার পরেই বৃষ্টি চলে যায়। মিষ্টি মন খারাপ করে অভির কাছে যায়
” ধুর বৃষ্টির ও এখনি যেতে হলো
“তো কি সারাজীবন থাকবে না কি
” সারাজীবন থাকলে তো বেশ হতো। কোথাও বের হলেই ছাতা নিয়ে বের হতাম সব সময় বৃষ্টিতে গোছল করতাম কত মজা হতো
“বাজে চিন্তা ভাবনা। চলো
মিষ্টি মুখ গোমরা অভির পেছনে পেছনে চলে যায়।
আজ পাঁচ দিন পরে মিষ্টি ভার্সিটিতে যাচ্ছে। একদম যেতে মন চাচ্ছে না তবুও অভির জোরাজোরিতে যেতে হচ্ছে। অভি মিষ্টির ভার্সিটির সামনে দাড়িয়ে আছে। মিষ্টি গাড়ি থেকে নামছে না
” কি হলো মিষ্টি যাও
“না গেলে হয় না। আমার না যেতে মন চাচ্ছে না
” মিষ্টি সামনেই তোমার এক্সাম যেতে হবে। যাও
মিষ্টি গাড়ি থেকে নামে। বারবার অভির দিকে তাকায়। অভি গাড়ি নিয়ে চলে যায়। মিষ্টি ক্লাসে চলে যায়।
ক্লাস শেষে মিষ্টি কলেজের গেটের সামনে দাড়ায়। অভি নিতে আসবে। মিষ্টি দুরে অভির গাড়ি দেখে মুখে হাসি ফুটে ওঠে। মিষ্টি অভির গাড়ির দিকে এগোচ্ছে এমন সময় একটা কালো গাড়ি থেকে কয়েকজন কালো মুখোশ পড়া লোক নেমে মিষ্টিকে গাড়িতে বসায়। মিষ্টি চিৎকার করে অভিকে ডাকছে। অভিও ওই গাড়ির পেছনে ছুটছে। অভি আসতে আসতে গাড়িটা চলতি শুরু করে।
অভি গাড়িটার পেছনে ছুটছে। হঠাৎ একটা চলন্ত গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পরে যায় অভি। চোখ বন্ধ করার আগে মিষ্টি বলে ডাকে
চলবে