#তুই আমার ২
#পর্বঃ২৫
#Tanisha Sultana
“মেয়েটা পাগল
অভির আর ঘুমানো হয় না। উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামে। অভির বাবা মা খাবার টেবিলে বসে আছে। মিষ্টি কাউকে খেতে দিচ্ছে না
” মিষ্টি মা আর কতোখন বসে থাকবো
“বাবা যতখন না তোমার ছেলে আসছে
” ওর তো ঘুম ভাঙতে দেরি হবে
“ওর ঘুম ভেঙে গেছে এই এলো বলে
তখন অভি আসে
” মা আমি বেরুচ্ছি
মিষ্টি অভির সামনে দাড়ায়
“কোথায় যাচ্ছ
” সেটা তোমাকে বলতে বাধ্য নয়
“ঠিক আছে আমাকে বলতে হবে না। কিন্তু খাবারটা তো খেয়ে যাও
” খাবো না
মিষ্টি অভির হাত ধরে টেনে নিয়ে খাবার টেবিলে বসায়। অভিকে খেতে দেয় কিন্তু অভি খাচ্ছে না। মিষ্টি কানে কানে বলে
“ওগো শুনছো প্লিজ খেয়ে নাও। না কি আমি খাইয়ে দেবো
মিষ্টির কথা শুনে অভি খাওয়া শুরু করে। খাওয়া শেষে বেরিয়ে পরে। মিষ্টিও রেডি হয়ে কলেজে চলে যায়।
মিষ্টি বাসে করে কলেজে যাচ্ছে। মিষ্টির খুব ভালো লাগে বাসে করে যেতে তাই যাচ্ছে। মিষ্টি আর তিথি
মিষ্টির সাইডের সিটে একজন বয়স্ক মহিলা বসেছে যে বারবার মিষ্টির দিকে তাকাচ্ছে। মিষ্টির ও ওই মহিলাটাকে কেমন কেমন লাগছে।
” তিথি ওই মহিলাটাকে দেখ কেমন দেখতে
“কেমন আবার ভালোই তো
” আরে গাধি বলছি সন্দেহজনক মনে হচ্ছে
“এই তুই আবার গোয়েন্দাগিরি শুরু করলি কবে থেকে
” তুই না সত্যি আজব একটা কথা বললে তার উল্টো টা বুঝিস
“যাহ বাবা আমি কি করলাম
” কিছু করিস নি। এবার চুপ কর
কলেজের সামনে বাস থামে। বাস থেকে নামার সময় ওই মহিলাটি ইচ্ছা করে মিষ্টিকে ধাক্কা মারে। তারপর মিষ্টির দিকে কেমন করে তাকিয়ে চলে যায়।
ক্লাস শেষে মিষ্টি কলেজের গেটে দাড়িয়ে একবার অভিকে তো আর একবার অভির বাবাকে ফোন দিচ্ছে কেই ফোন তুলছে না। এদিকে রাস্তায় রিকশাও নাই। গাড়ি নিয়েও আসে নি। এবার বাসায় ফিরবে কি করে মিষ্টি ভাবছে। কলেজের গেটের কাছে জুতো খুলে জুতার ওপর বসে আছে মিষ্টি।
“বেবি এনি পবলেম
কৃশকে দেখে মিষ্টি চমকে যায়। উঠে দাড়ায়
” তুমি এখানে?
“তোমাকে দেখতে এলাম। কতোদিন দেখি না
” এসব ফালতু কথার মানে কি
কৃশ রেগে যায়
“আমি ফালতু কথা বলছি। আমাকে এখন তোর ফালতু মনে হয় বল। হ্যাঁ আমি ফালতু বেদব যা খুশি বল। আমি কিছু মনে করবো না। কিন্তু তোকে আমি অভির হতে দেবো না। তুই আমার জাস্ট আমার বুঝলি
শেষের কথাটা মিষ্টির চুলের মুঠি ধরে বলে। চুল ছেড়ে দিয়ে। শান্ত গলায় বলে
” মিষ্টি তুমি আমার সাথে চলো। আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি কখনো তোমায় রাগাবো না। তোমার চোখের একফুটা পানি মাটিতে পড়তে দেবো না। আকাশে চাঁদ টাও তোমার পায়ের কাছে এনে দেবো। চলো মিষ্টি আমার সাথে। আই নিড ইউ। আই লাভ ইউ
“কৃশ তুমি আমার বেস্টফেন্ড হবে? আমরা খুব ভালো বন্ধু হয়ে থাকতে পারি না
কৃশ রাগে হাত মুঠ করে ফেলে
” তুমি সোজা কথা মেনে নেবে না তাই তো। এবার কৃশের আসল রুপ দেখো
কৃশ মিষ্টির মুখে স্পে দেয় আর মিষ্টি অঙ্গান হয়ে যায়। কৃশ মিষ্টিকে কোলে নিতে যাবে তখন সৌরভ মিষ্টিকে ধরে ফেলে
“মিষ্টি কি হয়েছে তোমার?
কৃশ কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। সৌরভ মিষ্টিকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায় সেই সুযোগে কৃশ চলে যায়। সৌরভ মিষ্টিকে কোলে করে অভিদের বাড়িতে যায়। অভি সোফায় বসে অভির বাবার সাথে কথা বলছিলো তখন সৌরভ মিষ্টিকে কোলে করে ভেতরে ঢুকে।
মিষ্টিকে অভির কোলে দেখে অভির বুকের ভেতরে মোচর দেয়। কেনো যানি কষ্ট হয়। অভির বাবা ব্যস্ত হয়ে পরে
” আমার মিষ্টি মায়ের কি হয়েছে??
“জানি না আংকেল কলেজের গেটের সামনে সেন্সলেস হয়ে পড়েছিলো
সৌরভ মিষ্টিকে সোফায় শুয়িয়ে দেয়। অভির বাবা মিষ্টির হাত পায়ে তেল মালিশ করছে। অভির মা বাতাশ দিচ্ছে। সৌরভ বারবার মুখে পানি ছিট দিচ্ছে।
অভি কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। আস্তে আস্তে মিষ্টির পাশে গিয়ে মিষ্টির হাত ধরে। মিষ্টি পিটপিট করে চোখ খুলে চেচিয়ে উঠে বসে
” আমি যাবো না
ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে যায়। অভির বাবা মিষ্টি কে জড়িয়ে ধরে
“মামনি শান্ত হও আমি বাবা দেখো
মিষ্টি শান্ত হয়ে ওদের দেখে কেদে ফেলে
” এই মিষ্টি কাঁদছো কেনো। দেখো আমি সৌরভদা
মিষ্টি কেদে কেঁদে বলে
“তোমরা খুব খারাপ আমি তোমাদের কতোবার ফোন করেছি। তোমরা ফোন তোলোনি। যদি আজ আমি হারিয়ে যেতাম তাহলে তোমরা খুব ভালো থাকতে তাই না
মিষ্টির কথা শুনে অভির খারাপ লাগে। অভি মিষ্টির ফোন ইচ্ছে করে ধরে নি।
অভির মা মিষ্টির মাথায় হাত রেখে বলে
” ছি মা এমন বলে না।
সৌরভ মিষ্টিকে ওর দিকে ঘুরিয়ে বলে
“মিষ্টি তুমি সেন্সলেস হয়ে গেছিলে কি করে
মিষ্টি ওদের সবটা বলে। সব শুনে অভির নিজের ওপর রাগ হয়। হাত দিয়ে সোফায় আঘাত করে রুমে চলে যায়।
সৌরভ অভির বাবা মা মিষ্টি কে শান্ত করে।
মিষ্টি রুমে যায়। অভি সোফায় বসে সিগারেট খাচ্ছিলো। অন্য সময় হলে মিষ্টি অনেক কিছু বলতো ঝগড়া করতো কিন্তু আজ চুপচাপ বিছানায় শুয়ে পড়ে।
অভি সিগারেট ফেলে দিয়ে বলে
” আমার সাথে তো খুব পারো আর কৃশের সামনে ভেজা বেড়াল হয়ে গেলে।
মিষ্টি কোনো কথা বলছে না। চুপচাপ শুয়ে আছে। অভি মিষ্টিকে টেনে উঠিয়ে বসায়
“কি হলো চুপ করে আছো কেনো?
” তুমি ইচ্ছে করে আমার ফোন ধরো নি তাই না।
মিষ্টির কথায় অভি কি বলবে বুঝতে পারছে না। আমতা আমতা করে বলে
“বাবার সাথে জরুরি কথা বলছিলাম ফোন সাইলেন্ট ছিলো।
মিষ্টি আর কিছু বলে না
” কিছু খাবে দুপুরে তো কিছু খাও নি
মিষ্টি মাথা নাড়ায়। অভি মিষ্টির জন্য খাবার নিয়ে এসে দেখে মিষ্টি ওভাবেই বসে আছে। অভি মিষ্টিকে খাইয়ে দেয়। কেনো জানি আজ মিষ্টিকে অদ্ভুত ভালো লাগছে অভির। এই মেয়েটার মদ্ধে কিছু আছে যা অভিকে ওর দিকে টানছে। মিষ্টির ভয় জড়ানো মুখটার দিকে অভির তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে। কই আগে তো এমন হয় নি তাহলে আজ হঠাৎ এমন কেনো হচ্ছে। রিনি সাথে তো কতো সময় থেকেছে এমন তো ভালো লাগে নি।
নিজে নিজেই প্রশ্ন করছে অভি কিন্তু কোনো উওর পাচ্ছে না।
খাওয়া শেষে অমি মিষ্টিকে শুতে বলে প্লেট রাখতে চলে যায়। মিষ্টি চুপচাপ শুয়ে পড়ে।
কিছুখন পরে অভি রুমে এসে দেখে মিষ্টি ঘুমিয়ে গেছে। অভি মিষ্টির কপালে হাত রেখে চমকে ওঠে
“ওর তো জ্বর এসেছে। ভয় পেয়েছে তাই হয়ত জ্বর এসেছে। কিন্তু আমি এবার কি করবো
চলবে