#তুই_আমারই_থাকবি?
#Esrat_Jahan?
#Part_26
!
‘আমি একপর্যায়ে উনার হাতে দিলাম এক কামড়।আর উনি ব্যথায় কুঁকড়ে উঠে যেই একটু আমার উপর থেকে সরেছেন,তাতে আমি ভৌ-দৌড় দিয়ে পগার পাড়।আমাকে আর পায় কে?শুধু পেছন থেকে উনি বললেন, পালিয়ে যাবে কোথায়? তোমাকে আমি রাতে দেখে নিবো।
।
আমি মনে মনে বললাম,দেখে নিস!তোর সামনে আসলে তো!হুহ…বলে একদৌড়ে আপুর রুমে গেলাম।
।
-আপুর রুমে গিয়ে ধপাস করে ওর বিছানায় শোয়া মাত্রই আপু বললো,নাম নাম।আমার বিছানা থেকে নাম।এক্ষুণি বিছানাটা ঠিকঠাক করলাম আর তুই আউলা-ঝাউলা করে দিচ্ছিস??
।
-এটুকু তে কিছু হবে না।বাদ দাও….তো এত জরুরী তলব কেন আমার?শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে আসলে?
।
-দু’দিনেই শ্বশুরবাড়ির জন্য এত দরদ?বাহ…
।
-তাতে তোমার প্রবলেম কী?শ্বশুরবাড়ি আমার,দরদ তো আমারই হবে! তাতে কী তোমার হিংসা হচ্ছে নাকি?
।
-আজব তো।আমার হিংসা হবে কেন?
।
-না মানে, ছোট বোনের শ্বশুরবাড়ি আছে,তোমার নেই তাতে একটু হিংসা তো হবেই,,এটা কমন ব্যাপার..
।
-আপু আমার কথায় পাত্তা না দিয়ে বললো,চল দুইবোন মিলে কিছু একটা করি!
।
-কী?চুরি?
।
-আরে না!
।
-তাহলে?
।
-খাবারের আইটেম। একচুয়েলি বাসায় নতুন জামাই এসেছে এক-আধটু ভালো খাবার রান্না করে তুই তো খাওয়াতেই পারিস!
।
-নতুন জামাই আসলেই কী রান্না করে খাওয়াতে হয়?আজব!
।
-আজব বলছিস কেন? নতুন বউয়েরা শ্বশুরবাড়ি গেলে তাদের কী মাংস-মাছ,ভালো খাবার রান্না করে খাওয়ায় না?নাকি কচু,কলমি,পাতাশাক খাওয়ায়?
।
-আমি ভাবুক গলায় বললাম,,নাহ!হুম তুমি ঠিকই বলেছ!একচুয়েলি শ্বশুরবাড়ির খাওয়ার ঋণ শোধ হয়ে যাবে….
।
-ছিহ খুশবু! এসবকে তুই ঋণ বলছিস?ফাজিল একটা।এসব বলতে নেই।তুই আবরার কে জিজ্ঞেস করে আয় কী খেতে চায়!
।
-তুমি যাও…!
।
-আপু রক্তবর্ণ চোখ করে বললো, যা বলছি।
।
আমি চোখ দেখেই দৌড় দিলাম বাঘের খাঁচায়।যত্তসব।
।
রুমে ঢুকেই দেখি,উনি মিয়া কাপড় পাল্টাচ্ছেন আর সেই কাপড়গুলো আমার অতি পছন্দের ড্রয়িংবুকটার উপর রেখেছেন। আমি তো রেগে গিয়ে উনার কাপড়গুলো ঠাস করে ফ্লোরে ফেলে দিলাম উনি আমার কান্ড দেখে রেগে বললেন,আমার এত দামী কাপড়গুলো নিচে ফেললে কেন?
।
-আপনি আমার অতিপ্রিয় ড্রয়িংবুকের উপর এসব রেখেছেন কেন?
।
-তাতে প্রবলেম টা কী?
।
-না,রাখতে পারবেন না।এসব নোংরা কাপড় ছিহ….
।
-কিহহ…আমার কাপড় নোংরা? লিসেন, তোমার চেয়েও বেশী পরিষ্কার আমার কাপড়। নিজে একটা নোংরী হয়ে আবরার আগুনকে তুমি নোংরা বলছো?এক্ষুনি ফ্লোর থেকে কাপড় তুলো আর ধুয়ে দাও।রেগেমেগে বললেন উনি..
।
-পাগল?আমি মরে গেলেও এসব নোংরা কাপড় ধুয়ে দেবো না।যত্তসব…
।
-তোমার এত সাহস?আমার কাপড় ধুয়ে দিবে না?দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা…
।
উনি সেই মজা দেখানোর আগেই আমি উনার কাপড় নিয়ে সোজা ওয়াশরুমে।দুমিনিটে কাপড় কেচে একমিনিট পানিতে চুবিয়ে আধমিনিটে পানি নিংড়ে সোজা বারান্দায় নেড়ে রুমে এলাম।আর প্রচুর হাঁপাচ্ছি।নিজের কাপড় নিজেই কখনো ধুইনি আর এই বজ্জাত ছেলে আমায় কামলা বানিয়ে দিলো?সবাই দেখো,শুভ্রতা জান্নাত খুশবু এখন কামলা হয়ে গিয়েছে….
।
উনি আরাম করে সোফায় বসতে বসতে বললেন,যাও এখন এক কাপ কফি নিয়ে এসো।গো….
।
-পারব না।
।
উনি ধীরেধীরে সোফা থেকে উঠে আমার দিকে এগুতে লাগলেন।আর আমি পেছনে যেতে যেতে মাথায় খেলাম এক বারি। আউচ.. বলে যেই না দাঁড়াবো ওমনি কে যেন আমায় কোলে তুলে নিলো।মাই গড..৷
।
তারপর আমাকে ছেড়ে দিলো বিছানার উপর। কোমড়ে পেলাম ব্যথা।আর গুন্ডাটা আমাকে এই অবস্থায় দেখে হু হা করে কিছুক্ষণ ভেটকা ভেটকি করে রুম থেকে চলে গেলো।
।
আর এদিকে প্রচন্ড ব্যথায় আমি কাঁদছি।মাথা প্রচন্ড ব্যথা করছে আর এদিকে কোমড়।যত্তসব….নিজের বাসায় এসে আরও বেশি অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে আমার।আস্তে আস্তে বিছানা থেকে নেমে ব্যলকুনিতে গিয়ে বসলাম।আকাশটা কেমন মেঘলা।জমাট বেঁধে আছে কালো মেঘের কুঞ্জগুলো।ফুরফুরে হাওয়া বেসামাল ভাবে বয়েই চলেছে।লনের ঘাসফুলগুলো কেমন এদিক সেদিক ছিঁটকে যাচ্ছে।আর পাহাড় সমান অভিমান নিয়ে আমি মুখ ফুলিয়ে বসে রইলাম।একবারের জন্যও উঠলাম না।কিছুই ভালো লাগছে না।
।
গোধূলি বিকেল।পূর্বদিকের আকাশ কেমন কালচে-লাল হয়ে আছে।গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে গাছগাছালি ভিজে চুপচুপ।রাস্তাঘাট কেমন পিচ্ছিল দেখাচ্ছে।আমি সেই তখন থেকে বসে আছি।সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে তাই রুমে চলে এলাম। আশ্চর্য! এতক্ষণ হয়ে গেলো কেউ আমার খোঁজ নেয়নি?
।
ভাবনার খাতা কাটিয়ে রুমে এলো আবরার গুন্ডা।কিছু বোধহয় খেয়ে এসেছে,মুখের পাশে খাবার লেগে রয়েছে।আমাকে দেখেই একটা শয়তানি হাসি দিলো।তাতে আমার প্রচন্ড রাগ হলো। আমি চুপ রইলাম, কথা বলার একদম ইচ্ছে হচ্ছে না। আর বলতেও চাই না।
।
বাড়ি আমার।অথচ সবাই আমাকে ফেলে রেখেই উনাকে নিয়ে খেলো?আমি কী এবাড়ির কেউ না?
।
উনি আমার সামনে চুটকি বাজিয়ে বললেন…..’
!
চলবে…