তবুও_তোমায়_চাই পর্ব-০৪

0
1711

#তবুও_তোমায়_চাই (arrogant lover)
#পর্ব_৪
#লেখিকা_নুসরাত

হিমু চলে যাওয়ার পর সেও চলে আসে বাট একটা কথা মাথায় ঠিকই ঘুরছে কে এই হিমু৷ (একি সে হিমু যার প্রতি আমি দূর্বল৷ না না ও এখানে আসবে কেনো৷ হয়তো আমারই ভুল হচ্ছে হিমু নামের মানুষের তো অভাব নেই৷ তবুও কেন মনকে বুঝাতে পারছিনা আমি৷ আর যাই হোক এই মেয়ে কে সেটা জেনে তবেই আমি শান্তি হবো)মনে মনে কথাটা বলে চলে গেলো হিমেল৷

______________________________

পরেরদিন ভার্সিটিতে গিয়ে হিমু খুব অবাক হলো কারন আজ হিমেল আসেনি৷ হিমু খুব খুশি হয়েছে হিমেল না আসায় আজ আর কেউ থাকে কথা শুনাবেনা৷ কিন্তু খুশি হয়েও খুশি হতে পারছেনা সে৷ কারন হিমেল কোনোদিন ভার্সিটিতে আসা বন্ধ দেয়নি কোনো বিপদ হয়নি তো৷ এসব চিন্তা ঘুরছে হিমুর মাথায় যতই সে ভাবে হিমেলের কথা ভাব্বেনা ততই আরও বেশি তার কথা মনে পরে৷ মন যে বড্ড বেহায়া৷ না করলেও শুনবেনা৷ এসব ভাবতে ভাবতে ক্লাসে চলে গেলো সে৷

এদিকে হিমেল বেড়িয়েছে কে এই হিমু সেটা জানার জন্যে৷ মনকে সে কিছুতেই বুঝাতে পারছেনা৷ তাই সকাল সকাল বেড়িয়ে পরেছে৷ যে রাস্তায় হিমু ফুচকা খাচ্ছিলো সে রাস্তায়ই আছে হিমেল৷ অনেক্ষন দাড়িয়ে থাকার পর দেখা মিললো রিয়াদের৷ সেদিন হিমুকে ব্রিজে দেখলেও রিয়াদ কে দেখেনি তাই এখন চিনতে পারছেনা৷ রিয়াদ কে দেখে এগিয়ে গেলো হিমেল৷ তারপর ডাক দিয়ে কাছে নিয়ে আসলো৷ আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করলো,,,,আচ্ছা কাল যে তোমার সাথে একটা মেয়ে ছিল কে সে?

রিয়াদ কিছু বুঝতে না পেরে বললো,,,,কার কথা বলছেন আপনি?

হিমেল বললো,,না মানে আসলে কালকে একটা মেয়ে যে এখানে দাড়িয়ে ফুচকা খাচ্ছিলো তার কথা বলছি৷ কে ছিলো সে?

রিয়াদ কিছুক্ষণ ভেবে বললো,,আরে এটাতো আমার হিমু আপু ছিলো৷ সে ফুচকা খেতে খুব ভালোবাসে তাই কাল তাকে এখানে নিয়ে এসেছিলাম৷

হিমেল মুচকি হেসে বললো,,,আগেতো কোনোদিন দেখিনি তাকে এখানে৷

রিয়াদও একটু মুচকি হেসে বললো আপনি দেখবেন কি করে আপুর বাসা কি এখানে নাকি৷ তার বাড়িতো সিলেটে৷ আমাদের এখানে এসেছে কিছুদিন হয়েছে৷ আরও কিছু বলতে যাবে তার আগেই রিয়াদের আম্মু এসে তাকে নিয়ে চলে গেলেন৷

হিমেল বাইক চালিয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে আসলো৷ সে এখন ৯৯% সিওর এই ফুচকাওয়ালিই হলো হিমু৷ এরমধ্যে মা এসে এক মগ কফি ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলেন৷ হিমেল কফি নিয়ে ব্যালকনিতে চলে গেল আর ভাবতে থাকলো কিভাবে হিমুর সামনে দাড়াবে সে৷ আর যে পারছেনা তাকে ছাড়া থাকতে৷ এত এত গার্লফ্রেন্ড থাকা সত্ত্বেও সে খুশি থাকতে পারছেনা৷ কি জাদু আছে এই মেয়ের মধ্যে যে শুধু তাকে টানচে৷ যে মেয়ের মেসেজ পেলে আমি বিরক্ত ফিল করতাম আজ সেই মেয়ের জন্যে আমি এতটা কষ্ট কেন পাচ্ছি৷ আসলে মন যে কখন কি করে তা বুঝা দায়৷ এসব ভেবে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে কফির মগে চুমুক দিলো হিমেল৷

এদিকে হিমু ভার্সিটি থেকে ফিরে ধপ করে খাটে বসে পরলো৷ ক্লাসেও আজ মনোযোগ দিতে পারেনি৷ শুধু একটা কথাই ভাবছে হিমেল আজ ভার্সিটিতে যায়নি কেনো৷ কিছু কি হয়েছে ওর৷ তারপর ড্রেস চেঞ্জ করে একটা লম্বা শাওয়ার নিয়ে লাঞ্চ করে ঘুমিয়ে পরলো তাতে যদি চিন্তা একটু কমে৷

রাত ৮টা বাজে সবাই আড্ডা দেওয়ায় ব্যাস্ত আর হিমু মন খারাপ করে সোফায় বসে আছে৷ তার কারন আগামীকাল তার মা বাবা সিলেট চলে যাবেন৷

পরের দিন সকালে কোনোমতে নাস্তা শেষ করে বেড়িয়ে পরলো হিমু৷ রিমু অনেক আগেই চলে গেছে তার কোচিং ছিলো তাই৷ কেনোরকমে তারাহুরো করে ভার্সিটিতে পৌছালো সে৷ মাঠে দিয়ে যাচ্ছে এমন সময় ওরনায় টান অনুভব করলো হিমু৷ পিছনে তাকিয়ে দেখে হিমেল ওর ওরনা ধরে আছে৷ হিমুতো অবাক মানুষ এতো খারাপ হয় কি করে৷ আর কোনো কিছু না ভেবে ঠাসসস করে চড় বসিয়ে দিলো হিমেলের গালে৷ আর বলতে শুরু করলো,,,, ছিঃ আপনি এতটা খারাপ লোক এতদিন যা নয় তাই বলে গিয়েছেন আমি কিছু বলিনি৷ কিন্তু আজ আপনি আমার ওরনায় হাত দিলেন কোন সাহসে৷ এখনও সময়ে আছে নিজের চরিত্র ঠিক করোন৷ বলে চলে যেতে নিতেই হিমেল এগিয়ে এসে বললো আমার চরিত্র একদম ঠিক আছে আগে তুমি তোমার নেগেটিভ মাইন্ড চেঞ্জ করো৷ আমি তোমার ওরনা আবেগে ধরিনি৷ তোমার ওরনায় এই ছোট বিছাটি ছিলো৷ একটা ডাল দিয়ে ফেলতে ফেলতে বললো৷ বিছাটি ফেলে দিয়ে বললো তোমার জায়গায় অন্য কেউ হলেও আমি সেইম কাজই করতাম বলে হনহনিয়ে চলে গেলো হিমেল৷ হিমু এক ধ্যানে দাঁড়িয়ে আছে সেখানেই৷ খুব কান্না পাচ্ছে তার চিৎকার করে কাদতে ইচ্ছে করছে না বুঝে ছেলেটির গায়ে হাত ও তুললো আর কতগুলো কথাও শুনিয়ে দিলো৷ ক্লাসে ডুকতে যাবে তখনি খেয়াল করে দেখল কতগুলো মেয়েরা হিমুকে চোখ দিয়ে গিলো খাচ্ছে৷ যেন চড়টা হিমেলকে না তাদেরকে দিছে৷ তাদের দিকে একবার তাকিয়ে ভেংচি কেটে ক্লাসে চলে গেলো৷

এদিকে,,,ভাই তোকে আমি আগেই বলেছিলাম যে এই মেয়েটিকে ভার্সিটি থেকে বের করে দে৷ মেয়েটা কিভাবে তোকে ইনসাল্ট করে যাচ্ছে৷ আমার আর এসব একদম ভালো লাগছেনা কথাটি বলে হিমেলের বন্ধু রোহান তার পাশে বসে পরলো৷

হিমেল কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,,,,তোর কি মনে হয় আমি এই মেয়েটিকে এমনিতেই টলারেট করছি?? অনেক আগেই বের করে দিতাম,বাট সমস্যাটা হলো তার আংকেল নাকি ভার্সিটির কমিটি৷ আর তাছাড়াও ওকে এত সহজে বের করে দিলে শাস্তিটা কাকে দিব?তারপর রোহানের দিকে তাকিয়ে একটা শয়তানি হাসি দিলো৷ আর রোহানও বুঝতে পেরে হেসে বললো,,,, আই নো ব্রো কি করতে হবে৷

না না এখন না সময় আসুক তারপর৷ কথাটা বলে চলে গেলো হিমেল৷৷

চলবে,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে