#তবুও_তোমায়_চাই (arrogant lover)
#পর্ব_১
#লেখিকা_নুসরাত
ফেসবুকের কমেন্ট দেখছে মেয়েটি৷ হঠাৎ মেয়েটির চোখ পরল একটা ছেলের আইডির উপর৷ ছেলেটির চেহারা খুব মায়াবী৷ মুখে খোচা খোচা দাঁড়ি, পাতলা গোলাপি রঙের ঠোঁট, ফর্সা রঙ৷ এক কথায় ক্রাশ খাওয়ার মতো৷ যা দেখে মেয়েটিও ছেলেটির প্রতি ক্রাশিত৷
তারপর মেয়েটি ছেলেটিকে মেসেজ করলো হাই বলে৷ ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট ও পাঠালো৷ ছেলেটি প্রায় ২ ঘন্টা পরে রিপ্লাই দিল হ্যালো,,,,৷
মেয়েটি এত খুশি হইছে এটা দেখে তার চোখে কখন পানি চলে আসছে সে নিজেও জানেনা৷
দিন দিন এইভাবে তাদের কথা চলতে থাকে৷ তারপর একদিন ছেলেটা মেয়েটিকে বলে তোমার নাম কী? মেয়েটি বলে তার নাম হিমু৷ ছেলেটি বলে আমি কি তোমার ছবি দেখতে পারি৷ কথাটা শুনে মেয়েটির মন খারাপ হয়ে গেলো৷ কারন মেয়েটির গায়ের রঙ ছিলো শ্যাম বর্নের৷ যদি ছেলেটি তাকে দেখে আর তার সাথে কথা না বলে৷
অনেক ভেবে চিন্তে মেয়েটি বলল যে সে ছবি তুলেনা৷ ছেলেটিও আর চায়নি৷
এতক্ষন যাদের নিয়ে আলোচনা করা হলো তারা হলো আমাদের গল্পের নায়ক আর নায়িকা৷ ছেলের নাম হিমেল চৌধুরী৷ বাসা ঢাকায়৷ বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান৷ দেখতে খুব সুন্দর ড্যাশিং বয়৷ মেয়ে জাতির ক্রাশ৷ কিন্তু ছেলেটি মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করতে খুব ভালোবাসে৷ সারাদিন এসব নিয়েই থাকে৷ বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়ায় তারাও কিছু বলতে পারেন না৷ বাবার বিজনেস বাবা নিজেই দেখাশোনা করেন। আর অপরদিকে মেয়েটির নাম হেমন্তি রহমান৷ বাসা সিলেট৷ তার মা বাবা তাকে আদর করে হিমু ডাকে৷ সে তার মা,বাবা আর ছোট বোনকে নিয়ে তার পরিবার৷ বাবা কলেজের প্রিন্সিপাল৷ ঘন কালো লম্বা চুল৷ হাল্কা পাতলা মুখের গঠন৷ টানা টানা বড় বড় চোখ৷ চিকন ভ্রু৷ সরু নাক পাতলা ঠোঁট৷ দেখতে মাশাল্লাহ কিন্তু মেয়েটির একটাই খুত তার গায়ের রঙ ছিলো শ্যাম বর্নের৷
অনেক তো পরিচয় দেওয়া হলো এখন আসি কাহিনিতে৷
হেমন্তি ধীরে ধীরে হিমেলের প্রতি দূর্বল হয়ে পরে৷ জানে এটা ঠিক না তারপরও৷ হঠাৎ একদিন হিমেল তাকে মেসেজ করা বন্ধ করে দেয়৷ হেমন্তি মেসেজ করলেও সে রিপ্লাই করেনা৷ ফেসবুক থেকেও আনফ্রেন্ড করে দিয়েছে৷ হেমন্তি এর মানেটি বোঝতে পারেনা৷ তাই সে প্রত্যেক দিন হিমেলকে মেসেজ করতেই তাকে৷
অতঃপর একদিন হিমুর মা এসে বললেন তাদের নাকি ঢাকায় যেতে হবে৷ উনার কাজিনের বাসা থেকে ইনভাইট করা হয়েছে৷ আর হিমু যেনো তার কাপড় গুছিয়ে রাখে৷ ঢাকার কথা শুনে হিমুর মন ধক করে উঠল৷ খুশিতে তার চোখ চিকচিক করছে৷ তাই সে তার মাকে দ্রুত বলল,,
হিমুঃ মা আমরা কখন ঢাকায় যাবো?
মাঃ আমরা কাল সকালে যাবো৷ যেহেতু সিলেট থেকে ঢাকা অনেক দূরে তাই আমাদের সকালেই যেতে হবে কথাটা বলে মা চলে গেলেন৷
মেয়েটি খুশি মনে ফোনটি হাতে নিলো হিমেলকে জানানোর জন্যে৷ কারন একদিন হিমেল তাকে বলেছিলো সে যদি ঢাকায় আসে তাহলে যেনো তাকে জানিয়ে আসে৷ এসব ভাবতে ভাবতে হিমু ঘুমিয়ে পরলো৷ প্রতিদিনই হিমু হিমেল এর কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমায়৷ খুব মিস করে যে তাকে৷
আর এদিকে হিমেল হিমুকে একটুও মিস করছেনা কারন সে খুব ভালো করে বুঝে গিয়েছিল যে হিমু তার প্রতি দূর্বল৷ তাই সে তাকে মেসেজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল৷ কারন দূর্বল মনে আঘাত করতে হিমেল খুব ভালোবাসে৷
পরের দিন হিমুদের পরিবার রওনা দিলো ঢাকায়৷ সবাই খুব খুশি৷
প্রায় ৭-৮ ঘন্টা পরে তারা পৌঁছাল ঢাকায়৷ খালাও তাদের হাসি মুখে বরণ করলেন৷
দেখতে দেখতে রাত হয়ে গেলো৷ হিমু তার একটা নীল রঙের শাড়ি, চুড়ি,অর্নামেন্টস বের করলো৷ তার খুব শখ রাতের বেলা নীল পরি সেজে ঢাকার রাস্তা ঘাট দেখা৷ তারপর সে তার মা বাবার অনুমতি নিয়ে ৮ বছরের খালাতো ভাইকে নিয়ে বেরিয়ে পরলো রাস্তায়৷
হাটতে হাটতে ওরা দুজন গিয়ে থামলো একটা ব্রিজের ওপর৷ কাকতালীয় ভাবে হিমেলও পার্টি থেকে এদিকেই আসছিলো হঠাৎ ওর চোখ পরে একটা নীল পরির উপর। সি গিয়ে হিমুর থেকে একটু দুরে দাড়ায়৷ নীল জর্জেটের শাড়ি দুই হাত ভর্তি নীল চুড়ি গলায় কানে হালকা পাতলা স্টোনের অর্নামেন্টস৷ ঠোঁটে লাল লিপস্টিক ঘন কালো লম্বা চুলগুলি পিছনের দিকে ছেড়ে দেওয়া৷ হিমেল মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে হিমুর দিকে৷ সিম্পল সাজে মানুষকে এতটা সুন্দর লাগে সে তার অজানা৷ হিমুর সেদিকে কোনো খেয়াল নেই সে তো পানি দেখায় ব্যাস্ত৷
হিমেলের হঠাৎ কি হলো সে এগিয়ে যেতেই,,
চলবে,,,