জানি দেখা হবে পর্ব ০৬
লেখা আশিকা জামান
আনিস সাহেবের ফোনটা হঠাৎ বেজে উঠল। আনিস সাহেব উঠে দাড়লেন,
“তোমারা খাও আমি আসছি।”
বলেই ফোন ধরতে চলে গেলেন।
আনিস সাহেব বেশ, কিছুক্ষণ পর খাবার টেবিলে আসলেন।
“নাহিয়ানের মা, নিহানের মা-বাবা আজকে তাদের বাসায় দুপুরে দাওয়াত দিয়েছে। ”
” তুমি না করতে পারলা না? এখন কত কাজ কত ঝামেলা।”
“না বলছি, কিন্তু যেতেই হবে বলছে আমাকে, তোমাকে আর সাথে নাহিয়ান কেও।”
” ঠিক আছে বাবা যাওয়া যায়। ”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
সকাল থেকেই অনিশার মাথাটা হাবীজাবী চিন্তায় ভারী হয়ে উঠছে।
এটাই ভেবে যে, নিহান কি তার কথা সবাইকে বলে দিবে?
এখন কি বাবা-মা কে বলে দেয়ার জন্য বাসায় ডেকেছে??
কিছু বুঝতে পারছে না অনিশা।
কালকের পর এখন পর্যন্ত নিহান একবার ও ফোন করেনি। ফোনটা বেজে উঠছে হঠাৎ।কিন্তু এইটাতো অনিশার ফোনের রিংটোন না। রিহার ফোনটা বাজছে।
— রিহা ফোনটা বাজছে। ধর? আরে কি হল এদিকে আয়।
রিহা ওয়াশ রুম থেকে তড়িঘড়ি করে বের হয়….
” আপি দেখতো কে ফোন দিছে?”
” নিহান।”
বলেই উদ্বিগ্ন দৃষ্টিতে রিহার দিকে তাকায়।
রিহা ফোনটা তাড়াতাড়ি নিয়া বাইরে চলে গেল।
অনেক্ষন রিহা এই রুমে আসল না। দুপুর বেলা রিহা আর অনিশা বাদে সবাই নিহানদের বাসায় গেল।
নিহান তার ফুপিকেও ইনভাইট করেছিল তাই সেও গেছে।
অনিশার কিছু ভাল লাগছে না কি না কি হয় এইসব ভেবে।
রিহার রুমে যায় একরাশ টেনশান নিয়ে…
” নিহান কেন ফোন করেছিলো রে?”
“ওই তোমার খবর নিতে। আবার কেন??” “তোর ফোনে কেন? আমাকে না ফোন করে?”
” কি জানি বাপু। আমি এত কথা জানি না।” আমার একটা ফোন আসছে। আমি যাই…
এই মেয়ে এত কার সাথে বলে? অনিশার রিহার উত্তর টা পছন্দ হয় নাই। কেমন খুতখুত লাগছে। অনিশা উঠে গিয়ে নিজের রুমে শুয়ে পড়ল।
বিকাল বেলা বাসার সবাই ফিরে আসল। এসেই আনিস সাহেব দুই মেয়েকেই ড্রয়িং রুমে ডাকলেন..
অনিশা ভয়ে ভয়ে নিচে নামছে কিন্তু রিহার ভাব দেখে মনে হচ্ছে কেন ডাকছে সেটা সে আগে থেকেই জানে।
আনিস সাহেব বলা শুরু করলেন,
” নিহানের ফ্যামিলি চায় কালকেই অনিশার বিয়েটা হয়ে যাক। অনেক তো জামেলা হল তাই আর রিস্ক নিতে ভয় পাচ্ছে।
অনিশা তোমার কিছু বলার আছে?”
“বাবা-মা আগেই আমার বলা উচিত ছিল,কিন্তু এখন বলছি আমি এই বিয়ের জন্য প্রস্তুত না। আই নিড টাইম প্লিজ।”
আমতা আমতা করেই কথাটা বললো অনিশা।
“স্টপ ইট অনিশা, অনেক টাইম পেয়েছ। স্টুপিডের মতো কথা বলবা না।
আর না জাস্ট ফেড আপ, এইবার চুপ চাপ ভাল মানুষের মত বিয়েটা করে নাও।
যা কাহিনী করার সেটাতো করেই ফেলছো।
এ নিয়ে আর একটা কথা শুনতে চাই না।”
বলেই নাহিয়ান রাগে ফেটে পরল। পারলে অনিশার গালে একটা চড় বসায়।
ভাইয়া কোন কথা বলতে চাচ্ছে, নিহান কি সব বলে দিছে। এই কথা ভেবেই অনিশা চুপ করে গেল। তাছাড়া বলেও কোন লাভ হবে না।
“আহা নাহিয়ান তুই চুপ কর।”
বলে আনিস সাহেব ছেলেকে থামালেন।
“আর একটা কথা আমরা রিহার বিয়েটাও ঠিক ঠাক করে আসলাম। কালকেই দুজনের বিয়েটা হবে। রিহার কিছু বলার আছে।”
” হুয়াট? না জেনে না শুনে রিহার বিয়ের ডেট ঠিক করে আসলা? কেমনে পারলা তোমরা ওর সাথে এরকম করতে?”
” তোমাকে ওর হয়ে ওকালতি করতে হবে না। তুমি নিজের টা ভাব। রিহা মা বল?”
” তোমাদের কথাই আমার শেষ কথা।”
বলেই রিহা দৌরে পালাল।
অনিশা কিছুতেই বুজতে পারছে না রিহা এত তাড়াতাড়ি কিভাবে রাজী হয়ে গেল। কেমন হ্যাংলার মত হ্যা বলে দিল।
থাক অইসব ভেবে তার কাজ নেই কারন নিহানের প্রতি তার খুব রাগ হচ্ছে। তাছাড়া রুপম কে হারানোর কষ্ট সে আর নিতে পারছে না। তাই আবার কাদতে লাগল পুরনো স্মৃতি মনে করে।
পরক্ষনেই চোখ মুছে নিজের মনকে বোঝাতে লাগল
কেন কাদব? যে আমার মন নিয়া এইভাবে খেলেছে? আমিও তাকে দেখাই দিব তারা ছাড়াও আমি সুখি হতে পারি।
এইমুহুর্তে রুপমের প্রতি প্রচন্ড ঘৃনা হচ্ছে অনিশার।
ওইদিকে নিহান তার ফুপির সাথে রুপমের বাসায় আসে। রুপমের রুমে ঢুকে দেখে রুপম সিগারেট খাচ্ছে….
” কিরে বেঈমান আমাকে তুই এইভাবে ঠকাবি সেটা আমি স্বপ্নেও ভাবি নাই।”
সিগারেট ফেলে দিয়ে, চমকে পিছন দিকে তাকায় রুপম…
“তুই এইগুলা কি বলছিস নিহান?”
“ও তুমি এইগুলা বুজতে পাচ্ছ না। আমি বুঝাই বলছি।”
বলেই নিহান ডাইরিটা খুলে রুপমকে দেখাল…
“আমার জিনিস তোর কাছে কেন?
নিহান বিশ্বাস কর এখানে অনিশার কোন দোষ নাই। সব দোষ আমার।”
” কথাতো সেটা না,তোর সেই ছোটবেলার অনিশা যে এই অনিশা সেটা তোর মুখ থেকে কেন জানলাম না? হুয়াই রুপম?”
“দেখ যা হবার হয়ে গেছে। এখন আমি প্রমিজ করছি তোদের বিবাহিত জীবিনে আমি কখনো বাধা হয়ে দারাবোনা। ”
রুপমের মা তাদের চিল্লাচিল্লিতে রুমে আসেন…
“তাহলে তুই প্রমান দে যে তুই ডিস্টার্ব করবিনা?”
” কিভাবে?”
“তোকে বিয়ে করতে হবে। আমি চাইনা আমার আর অনিশার মাঝে অন্য কেউ আসুক।”
“এটা ছাড়া অন্য কিছু বল। আমি পারবোনা। ”
” জানতাম পারবিনা। তার থেকে সত্যিই টা স্বীকার করে নে।
তুই এখনো অনিশাকেই…”
” নিহান, চুপ কর আমমি শোনতে চাইনা। আমি কখনোই আমার ভাইয়ের হবু স্ত্রী কে ভালোবাসতে পারিনা। ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড।”
” মুখে বললেতো হবেনা। তুই কাজে করে দেখা। তুই যদি অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারিস তবেই আমি বিশ্বাস করবো। এর আগে কিছুতেই নয়।”
” তোর নিহানের কথা শোনা উচিৎ। আমিও এটাই চাই। তুই যদি না শোনিস আমার মরা মুখ দেখবি।”
“মা সব কিছু জেনে শুনে তুমিও এই কথা বলছ…
বেশ আমার ভালবাসার অগ্নিপরীক্ষা আমি এইবার দিব
বলেই রুপম চলে গেল…।”
নিহান ও খুশিমনে বাসায় ফিরল। এবার ভালভালোই কালকে বিয়েটা হলেই হয়……
চলবে।।।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/