Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"গুমোট অনুভুতি পর্ব-৫+৬

গুমোট অনুভুতি পর্ব-৫+৬

#গুমোট_অনুভুতি
#লিখাঃ Liza Bhuiyan
#পর্ব_৫

হৃদয় সিঁথির লাল সিঁদুরে অসমাপ্ত প্রেমকাব্য, চোখের দু ফোঁটা অশ্রু মিশ্রিত কাজল করে
রেখে দিলাম আমি হীনা তোমার ডায়েরির শেষ পাতায়…
(সংগ্রহীত)

লাইনগুলো মনে মনে আওড়াচ্ছে রুশি, ঠোঁটের কোনে একরাশ তাচ্ছিল্যের হাসি।কিচ্ছুক্ষণ পুর্বেই সায়ানের অফিস থেকে বেরিয়ে এসেছে,কথা ঠিক হয়েছে সায়ান তাদের বাড়ি গিয়ে রুশির হাত চাইবে ওর বাবার কাছে তারপর ঘরোয়া ভাবে বিয়ে সম্পন্ন হবে। রুশি তাতে সম্মতি দিয়েছে। আসার সময় সায়ান নিজের ড্রাইভারকে দিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা বললেও রুশি না করে দিয়ে সোজা চলে এসেছে। মাত্র তিনবছরের সম্পর্কে এতো মায়া বাড়িয়ে কি লাভ! এই মায়া জিনিসটা বড্ড খারাপ। কারো মায়ায় একবার জড়িয়ে গেলে আর সেখান থেকে বেরুনো যায়না। তাইতো এতোগুলো দিন চলে যাওয়ার পরেও তাকে ভুলতে পারেনি। কিন্তু এটাও সত্যি যে তার ডায়রির পাতায় আর ওর বিচরণ নেই। না সেই মানুষটিকে ও ভালো বাসে নি আর না প্রেমে পড়েছে, শুধুমাত্র তার মায়া জড়িয়েছে, ভয়ংকরভাবে!

ও জানেনা জীবন কোন দিকে মোড় নিচ্ছে, কি হতে চলেছে কিছুই জানেনা। শুধু এতোটুকু আশা করতে পারে যে ওর সন্তান ওর মতো পরিস্থিতিতে পড়বে না। আর যাই বেঁচে থাকতে তার উপর একটুও আচড়ও আসতে দিবে না। সায়ান যেহেতু বলেছে ওর কেরিয়ার গড়ে দিবে তাই আর ওকে এটলিস্ট কারো পুশওভার হয়ে থাকতে হবে না!

রিক্সা এসে ওদের কলোনিতে থামতেই ও ভাড়া মিটিয়ে হাটা শুরু করলো বাসার দিকে।ঘড়িতে রাত প্রায় আটটা বাজে, আজকে ঘরে ঢুকে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে সাথে পুরোনো সেই কথাগুলো! নিজেকে প্রস্তুত করেই ঘরে প্রবেশ করলো রুশি। আশায় ছিলো কিছু একটা ছুড়ে মারবে গায়ের উপর কিন্তু তেমন কিছুই হলো বরং পরিস্থিতি বড্ড শীতল। ওর বাবাই সোফায় চিন্তিত ভংগিতে বসে আছে, আর পালক মা বসে পান চিবুচ্ছে। পালক ভাই-বোন দুজনই উপস্থিত হয়তো ওকে কিছু একটা বলবে বলেই বসে আছে!

পালক মা পানের ফিকনি ফেলে ওর দিকে তাকালেন তারপর তামাটে দাঁতে হেসে বলে উঠলেন

“সেকি মা তুমি ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো? এদিকে এসে বসো”

তার এরুপ তেল মিশ্রিত কথার সাথে কখনোই পরিচিত নয় রুশি তাই কিছুটা হচকিয়ে বলে উঠলো

“কোন কিছু কি দরকার?মানে কিছু করা লাগলে বলতে পারেন”

“নাহ তেমন কিছু নয় আসলে তোর জন্য একটা প্রস্তাব এসেছে তাই ভাবলাম তোর বিয়ের বয়স হয়েছে বসিয়ে রেখে তো লাভ নেই। সবাইকেই বিয়ে করতে হবে তাইনা?যতো তাড়াতাড়ি করবি তত সামলে নিতে পারবি”

রুশি এবার আসল কাহিনী বুঝতে পারলো,

“কিন্তু আম্মু নিহা আপু তো আমার থেকে বড় তাহলে তো তার আগে বিয়ে হওয়া উচিৎ। আমার মনে এই বিয়েটা নিহা আপু করলেই ভালো হবে”

“সেকি বলিস নিহা করবে মানে?”

উনি চেঁচিয়েয় কথাটা বলে উঠলেন তারপর কিছুটা সামলে বললেন

“নিহাতো এখনো পড়াশুনা করছে ও এখন বিয়ে করে কি করবে?”

“আমিও তো পড়াশুনা করছি আম্মু!তাছাড়া আমার আগে বিয়ে হয়ে গেলে নিহা আপির সমস্যা হবে। তুমি বরং নিহা আপিকে বিয়েটা করতে বলো।আমি এখন বিয়ে করতে চাইনা”

কথাটা শুনেই নাহার বেগম যেনো তেলে বেগুনে জলে উঠলো

“আমার মেয়ে কোন দুঃখে ওই পঁয়ত্রিশ বছরের বুড়োকে বিয়ে করবে?ওকে জেনে শুনে আমি সেখানে দিবো নাকি?”

রুশির বাবাই তখন কিছুটা শক্ত কন্ঠে বললেন

“তাহলে রুশিকে কেনো দিবে,রুশি কি তোমার মেয়ে নয়?”

“শোন ও তোমার মেয়ে হতে পারে কিন্তু আমার নয়। এই আপদ আর কতকাল ঘাড়ে রাখবো?আর ভাসিয়ে তো দিচ্ছিনা বরং সসম্মানে বিয়ে দিচ্ছি। আর তুমি শুনো এই যে এতোকাল আমার খেয়েছো পরেছো তাই আমাদের এই ঋণ পরিশোধের কথা ভেবেও তুমি বিয়েটা করে নাও বুঝেছো!আর আমার শেষ কথা বিয়েটা হচ্ছে”

শেষের কথাটা স্বামীকে শুনিয়ে কিছুটা জোরেই বললেন,এই পালক মেয়ের প্রতি তার স্বামীর আদিক্ষেতা কোন কালেই সহ্য হয়না তার। সেই তেরো বছর পুর্বে একটা আশ্রম থেকে মেয়েটিকে নিয়ে চলে এসেছিলো তার স্বামী। কেন এনেছে জিজ্ঞেস করতেই বলে

“আশ্রমে সমস্যা হয়েছে, বিশাল আগুনে ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে তাই সব বাচ্চাদের বিভিন্ন ফেমিলিতে দিয়ে দিচ্ছে। এই মেয়েটিকে দেখে খুব মায়া হয়েছে ওর তাই নিয়ে এসেছে। ওরা যেভাবে থাকে মেয়েটিও নাহয় সেভাবে থাকবে”

কিন্তু এই সহজ কথাই হজম হলোনা তার,নিজের ছেলে মেয়েকে চালাতেই হিমশিম খায় তারউপর নতুন আরেকজন জুটেছে তবে সেটা মুখে প্রকাশ করেনি। নিজের কাজে সাহায্য করার একজনের দরকার ছিলো তাই আর আপত্তি করেনি। কিন্তু সমস্যা তখন থেকে শুরু হয়েছে যখন থেকে আশেপাশের মানুষ এইটুকুন মেয়ের রুপের আর গুনের প্রশংসা শুরু করলো। আর এখনতো ভালো ভালো ঘর থেকে প্রস্তাব আসে এই মেয়ের যা দেখে নাহারের পিত্তি জলে উঠে। নিজের মেয়ের বিয়ে নিয়ে তিনি খুব চিন্তিত তিনি তাইতো আগেই একে বিদায় করতে চায়। ছেলের বয়স একটু বেশি হলে কি হবে?ছেলে সরকারি চাকরি করে ওখানে গেলে এই মেয়েতো সুখেই থাকবে। আর যাইহোক গাংগে ভাসিয়ে দিচ্ছেনা তো!

নাহার বেগমের চোখের ভাষা হয়তো রুশি কিছুটা বুঝতে পেরেছে তাই কিছু না বলে রুমে চলে গেলো। এখানে দাঁড়িয়ে আরো কিছু কথা শুনার ইচ্ছে নেই। আর তাছাড়া নিহাল মানে ওর পালক ভাইয়ের চাহনি সহ্য হচ্ছে না ওর। এই লোকটিকে ও একমুহুর্তও সহ্য করতে পারে না, সম্পর্কে নিজের বোন হয় এমন মেয়ের এরুপ আচরণ?পালক হোক আর যাই হোক বোনতো বোনই হয় তাইনা!

_______________________

সায়ান সবে মাত্র অফিস থেকে ফিরেছে, টাইটা খুলে সোফায় চোখ বন্ধ করে গা এলিয়ে দিলো। হঠাৎ কেয়ারটেকার এসে বললো

“স্যার চন্দ্রিকা মেডাম এসেছে!আপনার জন্য ওয়েট করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে”

সায়ান হুট করে চোখ খুলে ফেললো, মনের ভেতর অজানা ভয় খেলে গেলো, তাহলে কি ও কিছু জেনে গেছে?কিন্তু সেটাতো সম্ভব নয়। সায়ান দ্রুত পায়ে রুমের দিকে এগুলো আর বিছানায় একজন নারীকে শুয়ে থাকতে দেখলো, বয়স আনুমানিক বিশ বছরের কাছাকাছি। চেহারায় অসম্ভব মায়া আর টানা টানা সেই চোখ দুটো যে কাউকে প্রেমে পড়তে বাধ্য করবে। এই মেয়েটাকে সায়ান ভালোবাসে যে কিনা একসময় ওর জীবন বাচিয়েছে, আজ ও না থাকলে হয়তো ও বেচে থাকতো আর সায়ান জামিল খান হতো না।তাইতো তার কাছে ও ওয়াদাবদ্ধ! সারাজীবন ভালোবাসার ওয়াদাবদ্ধ যে স্থান অন্যকাউকে দিবে না বলে প্রমিস করেছিলো কোন এক কালে। তাইতো রুশানি নামের মেয়েটিকে মেনে নেয়া সম্ভব নয়, নয়তো আর যাইহোক মেয়েটিকে ছেড়ে দিতো না কখনোই।

সায়ান দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বারান্দায় গিয়ে বসলো, ওর সাথে কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না। একসাথে দুটো মেয়ের জীবন নিয়ে খেলছে ও। একজনকে ও ভালোবাসে আর অন্যজন ওর বাচ্চার মা হতে চলেছে। আর দুইজনকেই ঠকাচ্ছে ও কিন্তু কাউকেই ফেলতে পারছেনা। সায়ান মাথার চুল টেনে ধরলো শক্ত করে,অপরাধবোধ ওকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।বারবার ভয় হচ্ছে যদি চন্দ্রি কখনো জানতে পারে আমি ওর অজান্তে এতোবড় অপরাধ করে ফেলেছি ওকি আমার ক্ষমা করবে?হয়তো করবে না কারণ কোন নারীই তার সবচেয়ে মুল্যবান মানুষকে কারো সাথে শেয়ার করতে পারে না সেখানে চন্দ্রি কি করে করবে??আর ওই মেয়েটা! ওরও তো কোন দোষ নেই, ওর জন্য শুধুমাত্র ওর জন্য ওই মেয়েটার জীবন আজ এই মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে!

ফোনের আওয়াজে ধ্যান ভাঙল সায়ানের, রিসিভ করে কানে দিতেই ওপাশ থেকে সাহিল বলে উঠলো

“বস! ওই মেয়েটাকে কাল দেখতে আসবে।আজ বিকালে মেয়েটির পালক এটা নিয়েই প্রতিবেশির সাথে আলোচনা করেছেন।আর সম্ভবত কালই কাবিন হয়ে যেতে পারে। কি করবেন এখন?”

“তুমি সবকিছু রেডি করো, আমরা কাল ছেলেপক্ষ যাওয়ার আগে সেখানে যাবো আর যে করেই হোক ওকে বিয়ে করে একবারে নিয়ে আসবো।আর যাইহোক হাত গুটিয়ে বসে থাকলে তো চলবে না”

সায়ান ফোন রেখে দিলো,ওই মেয়েটিকে যা প্রমিস করেছে তার সবকটা পুরণ করবে ও। তখনি মেয়েলি কন্ঠ ভেসে আসে

“কার বিয়ের কথা বলছো সায়ান?”

পেছনে চন্দ্রিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সায়ান দাঁড়িয়ে গেলো, তবে কি সব শুনে ফেলেছে?এখন কি করবে ও!

#চলবে

#গুমোট_অনুভুতি
#লিখাঃ Liza Bhuiyan
#পর্ব_৬

গুলশান লেকের পানিগুলো লাইটের আলোতে চিকচিক করছে, আশেপাশে জনমানবের কোন চিহ্ন নেই।কিন্তু দূর থেকে গানের মৃদু আওয়াজ আসছে, গুলশান লেকের পাশেই “নরডিক নাইট ক্লাব”।খুব সুন্দর পরিবেশ তাতে, ডান্স ফ্লোর, পুল পার্টি, স্পোর্ট চেলেঞ্জ, লাইব্রেরি সবমিলিয়ে পরিদর্শকদের জন্য আনন্দের জায়গা।

ক্লাবের সেকেন্ড ফ্লোরে বসে সায়ান, কিছুক্ষণ পুর্বেই এখানে এসেছে বলতে এক প্রকার পালিয়ে এসেছে। কতক্ষণ পুর্বে যখন চন্দ্রিকা প্রশ্ন করেছিলো বিয়ে সম্পর্কে তখন ও কি বলবে খুজে পাচ্ছিলো, কোনরকম আমতা আমতা করে বললো

“সাহিলের জন্য মেয়ে দেখতে যাচ্ছি, যদি পছন্দ হয় তবে বিয়ে করিয়ে নিয়ে আসবো”

সম্পুর্ণ কথা নিচের দিকে তাকিয়ে বলেছে সায়ান, আর যাইহোক চোখে চোখ রেখে মিথ্যে বলার সাহস ওর হয়ে উঠেনি আর না সত্য বলার সাহস।সবমিলিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মাঝে সাহিলের নাম বলে দিলো।কথাটা শেষ করে চন্দ্রিকার দিকে তাকালো, সায়ানের কথা বিশ্বাস হয়েছে কিনা চেহারা দেখে ঠিক বোধগম্য হলো না। আচমকাই চন্দ্রিকা সায়ানকে জড়িয়ে ধরলো যাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে সায়ান, আর যাইহোক চন্দ্রিকে কখনো জড়িয়ে ধরেনি ও। সবসময় একটা দুরত্ব বজায় ছিলো দুজনার মাঝে, সায়ান চন্দ্রিকে খুব রেসপেক্ট করে তাই চন্দ্রি বেপরোয়া ভাবে ওর কাছাকাছি থাকলেও কখনো চোখ তুলে তাকানো হয়নি। এমনকি এই বাড়িতে তার জন্য আলাদা একটা কামরাও বিদ্যমান রয়েছে। একদিন চন্দ্রি প্রশ্নও করেছিলো

“আমি নিজ থেকে তোমার কাছে আসতে চাই তবে দূরে সরিয়ে দাও কেনো আমায়?তবে কি আমায় ভালোবাসো না!”

চন্দ্রির কথায় সায়ান কিছুটা হচকিয়ে গিয়েছিলো তারপর শান্ত স্বরে বললো

“আমার জীবন বাঁচানোর জন্য আমি তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ আর তোমাকে সারাজীবন ভালোবাসার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ভালোবাসার সংজ্ঞা আমার জানা নেই তবে এতোটুকু জানি তোমায় ছেড়ে যাবো না কোনদিন”

কিন্তু তার জবাবে চন্দ্রি খুব একটা খুশি হয়নি কারণ তার যে ভালোবাসার মানুষ চাই, সারাজীবন সাথে থাকার চুক্তি নয়। তার পর থেকে মন থেকে বলেছে না শুনানোর জন্য তা জানা নেই তবে নিয়ম করে একবার বলেছে “ভালোবাসি”
তাতেই চন্দ্রি বড্ড খুশি ছিলো আর এই মেয়েটির খুশির জন্য সায়ান সবকিছু করতে পারে সব!

চন্দ্রিকা সায়ানকে জড়িয়ে ধরে থাকা অবস্থায় ফোন ফোন বেজে উঠে সায়ানের, সেই সুযোগে ও আলতো করে চন্দ্রিকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে ফোন রিসিভ করলো। ওর বেস্টফ্রেন্ড ইনান ফোন করেছে, ওদের নির্ধারিত ক্লাবে যেতে বলেছে। তাই সায়ান ‘আসছি’ বলে বেরিয়ে যেতে নিলেই চন্দ্রি ওর হাত চেপে ধরে আর বলে

“আমি তোমাকে খুব ভরসা করি সায়ান, আশা করি ভবিষ্যতেও করতে পারবো। তুমি সারাজীবন ভালোবাসবে বলে ওয়াদা করেছো, মনে রেখো তোমার জীবনে আমার স্থান আমি কাউকে দিবো না, তুমি চাইলেও না”

কথাগুলো বলার সময় চন্দ্রির চোখগুলো টলমল করেছিলো যাতে সায়ানের অপরাধবোধ দ্বিগুণ হয়ে যায়, এক মাত্র এই মেয়েটার চোখের জল ওর কখনো সহ্য হয়না কারণ ও এই পৃথিবীতে আছে শুধুমাত্র তার ছোট্ট পরির জন্য, তাকে কি করে কাঁদাবে ও!এই মুহুর্তে মনে হচ্ছে ওর সিদ্ধান্তই ঠিক, ও ভালো করেছে রুশানির কথা না জানিয়ে নাহয় চন্দ্রি কি করতো! আর যাইহোক চন্দ্রি ওকে পাগলের মতো ভালোবাসে, ওর কষ্ট সহ্য করার মতো শক্তি সায়ানের নেই। তাই ওকে সুখে রাখার জন্য ও সবকিছু করবে তাতে যদি অন্যের প্রতি অন্যায় হয় তবে জঘন্য কাজটিও ও করবে!

চন্দ্রিকার কথায় মাথা নাড়িয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে এলো,ওর চারপাশ কেমন যেনো ধোঁয়াশা। কিছুই দেখতে পারছেনা!ক্লাবে এসে এতোক্ষন পর্যন্ত বসে ছিলো তবে এলকোহল ধরার সাহস হয়নি। এই এলকোহলের জন্যই ও দুটো মানুষের জীবন নষ্ট হতে চলেছে! ওর সবচেয়ে বড় ভয় হচ্ছে সেই সময়ের জন্য, যদি চন্দ্রি ভুল করে সব জেনে যায় আর ওকে দায়িত্ব আর ভালোবাসার মধ্যে যেকনো একটা বেছে নিতে হয়, কাকে বেছে নিবে ও??
মস্তিষ্ক বারবার চন্দ্রির কথা বললেও মনের কোন এক কোনে কেউ একজন যেনো চিৎকার করে বলছে “তবে কি রুশানি নামের মেয়েটির প্রতি অন্যায় করা হবে না?”

মাথা চেপে ধরে বসে আছে সায়ান, তখনি কাধে একজন হাত রাখলো কেউ একজন। পাশে তাকিয়ে ইনানকে দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো তারপর মলিন হাসি দিয়ে বললো

“কিছু বলবি?”

“বাইরে চল কথা আছে”

সায়ান আর ইনান বাইরে বেরিয়ে এলো, ইনান ড্রাইভ করছে আর সায়ান পাশে বসে সিগারেট টানছে। এমনিতে তেমন একটা সিগারেট টানা হয়না তবে ডিপ্রেসড থাকলে কতোগুলো শেষ করে জানা নেই। ইনান সায়ানের অবস্থা দেখে শান্ত কন্ঠে বললো

“কি সিদ্ধান্ত নিয়েছিস?কি করবি এখন?”

“কালকে গিয়ে ওই মেয়েটিকে নিয়ে আসবো, দরকার হলে তাদের সামনে নাহয় বিয়ে পড়ানো হবে”

“তাহলে মাত্র তিনবছরের জন্যই বিয়ে করছিস?”

“এছাড়া কি করার আছে আমার? সারাজীবনের জন্য তো আর করা সম্ভব নয় কিন্তু আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাবো”

“দায়িত্ব! একটা মেয়ের কাছে সবচেয়ে গৌরভের বিষয় হচ্ছে তার স্বামী, তোর মনে হয়না মেয়েটির প্রতি খুব বেশি অন্যায় হয়ে যাচ্ছে। সব মেয়ে টাকা পয়সা চায়না,অনেক মেয়েই সুখের একটা সংসার চায় যেখানে দিনশেষে একটা মানুষকে সম্পুর্ণ নিজের বলে দাবি করতে পারবে। আচ্ছা মেয়েটির কথা নাহয় বাদই দিলাম, চন্দ্রিকা! তাকে কি ঠকাচ্ছিস না?তুই তাকে কিছুই বলছিস না কেনো?”

“আমি বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু ও কতোটা নরম মনের সেটাতো তুই জানিস। যদি উল্টো পাল্টা কিছু করে বসে?আমি বেচে থাকতে ওর কিছু হতে দিবো না সেটা তুই খুব ভালো করেই জানিস”

“তুই ওকে নিজ থেকে বললে ও যতোটা না কষ্ট পাবে তার অনেকগুন বেশি পাবে অন্যের থেকে শুনে।”

“আমি কোনদিন শুনতে দিবো না ওকে,ও কোনদিন এই ব্যাপারে জানবে না।”

সায়ানের কঠোর প্রতিজ্ঞা দেখে ইনান হাসলো, ঠিক হাসা নয় কিছুটা উপহাস করলো বলা চলে।মনে মনে বলে উঠলো

“মিথ্যের শক্তি যতোই বেশি থাকুক না তা লুকিয়ে রাখা যায় না। সত্য তার নিজ সময়ে ঠিক বেরিয়ে আসবে সেটা আজ হোক,কাল হোক অথবা পরশু!”

ইনান ড্রাইভিংয়ে মনোযোগ দিলো, আজকাল হাসতে ভুলে গেছে ও। প্রাণবন্ত যে ছেলেটি পুরো ফ্রেন্ডসার্কেল মাতিয়ে রাখতো, প্রতিদিন নতুন নতুন জোকস শুনিয়ে সবাইকে হাসাতো! সে আজ বড় নিশ্চুপ, নির্দয়, স্বার্থপর তাইতো নিজের কথাই শুধু ভাবে অন্যের কষ্ট চোখে পড়ে না তার।

সায়ান নিজের সকল চিন্তা কিছুক্ষনের জন্য ভুলে গেলো, নিজের প্রাণপ্রিয় বন্ধুর মলিন মুখের দিকে তাকালো। সায়ান বরাবরই খুব গম্ভীর ছিলো, কম কথা বলতো আর ইনান ছিলো তার সম্পুর্ণ বিপরীত। তবে আজ অনেকদিন হলো সেই রুপটা দেখতে পায়না,ইনান কেমন যেনো মিইয়ে গিয়েছে। আজকাল বড্ড অচেনা লাগে ওকে, শেষকবে প্রানখুলে হাসতে দেখেছে ওর মনে পড়েনা তবে সবসময় মুখে মলিন হাসি ঝুলে থাকে। নিজের কোম্পানি আর ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে এতোটাই ব্যস্ত যে ইনানের এই মলিন চেহারা নজরে আসেনি। সায়ান শান্তস্বরে বললো

“আজকাল নাকি খান বাড়িতে যাওয়া হয়না তোর?মিসেস খানের সাথে তোর তো ভালই জমতো!”

ইনান হাসলো তারপর বললো

“আজকাল সেই বাড়িতে তোর পদাচরণও তো নেই!আর সাবিনা আন্টির সাথে শেষ কবে কথা বলেছিস মনে আছে?”

“মিসেস খানের সাথে আমার কোন কথা বলার নেই, উনি ওনার মতো ভালো আছেন আর আমি আমার মতো। আমি ওই বাড়িতে থাকা না থাকাতে কারো কিছু যায় আসে না বরং না থাকলেই সবাই খুশি। আর রইলো সামায়রার কথা! ওর সাথে আমার বাইরে দেখা হয় তাই ওই বাড়ি যাওয়ার কারণ নেই”

সামায়রা! নামটা শুনতেই ইনানের চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেলো, ঠিক অনুভুতিহীন! সম্পর্কে মেয়েটি সায়ানের বোন অনেকটা ওর বোনের মতো কিন্তু…

ইনানকে কিছু না বলতে দেখে সায়ান চুপ হয়ে গেলো, হয়তো কিছু কিছু সময় চুপ থাকাই শ্রেয়। সায়ান গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির দিকে এগুতে গিয়েও ফিরে আসে তারপর ইনানকে উদ্দেশ্য করে বলে

“যদি মনের কোন কথা জমিয়ে না রেখে শেয়ার করা উচিৎ তবে আমাকে শুধু একটা ফোন করিস। যত ব্যাস্তই থাকি না কেনো তোর কথা মনোযোগ সহকারে সবটা শুনবো! তোর ফোনের অপেক্ষায় রইলাম”

ইনান মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো, বিনিময়ে সায়ান মুচকি হেসে ভেতরে চলে গেলো। ইনান বাড়ির উদ্দ্যেশ্যে রওনা দিলো,কিছু কিছু কথা থাকে যা মানুষ নিজের সাথে শেয়ার করতেই ভয় পায়, অন্যকে বলার ইচ্ছে থাকলেও বলা যায়না। হয়তো ইনানও বলতে পারছেনা! মোবাইলের নোটিফিকেশনের সাউন্ড যেনো তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে সাথে ওর বিরক্তির মাত্রাও। কিছুটা বিরক্তি নিয়েই ফোনটা তুলে কানে দিলো আর ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে উঠলো

“কি সমস্যা? কতোবার বলেছি আমাকে ফোন করবে না তবুও কেনো ফোন করো?তোমার ফেমিলিকে জানাতে বাধ্য করবে না আমায়”

অপরপাশ থেকে কোন শব্দ না আসাতে রেখে দিতে নিবে তার পুর্বেই একজন নারীর মিষ্টি কন্ঠ ভেসে উঠলো

“ইনান ভাই!আমি অনেক অসুস্থ,তুমি কি আমায় দেখতে আসবে?”

ইনান আর চড়া কন্ঠে কথা বলতে পারলো না আর যাইহোক সামুর দুর্বল কন্ঠ উপেক্ষা করতে পারেনা ও কিন্তু তাই বলে ওর সব অন্যায় আবদার গুলো মেনে নেয়া সম্ভব নয়! ইনান কিছুটা শিথিল স্বরে বললো

“পারবো না”

বলেই কট করে ফোন কেটে দিলো, আর কিছুক্ষণ থাকলে হয়তো দুর্বল হয়ে যেতো কিন্তু ওর দুর্বল হওয়া চলবে না। ওর একটা সিদ্ধান্তের সাথে অনেকগুলো সম্পর্ক জড়িত!

ইনানের ফোন কেটে যাওয়ার পরও এখনো ফোন কানে ধরে আছে ওপাশের ব্যাক্তিটি, চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়লো দুফোটা মুক্তোদানা। এতো কষ্ট কেনো ভালোবাসায়? যেখানে তাকে ছাড়া একমুহুর্তও কল্পনা করা দুষ্কর সেখানে সেই ব্যাক্তির প্রতিনিয়ত অবহেলা যে এই হৃদয়ে যে দহন হয় তা কি দেখে না?
সামুর চিৎকার করে তার কলার চেপে বলতে ইচ্ছে করছে

“আমার ভালোবাসা তুমি কেনো বুঝোনা ইনান ভাই, কেনো?তুমি কি বুঝোনা এই বিচ্ছেদ বেদনা আমায় শেষ করে দিচ্ছে, জালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিচ্ছে!আমি তৃষ্ণার্ত পাখির ন্যায় তোমার ভালোবাসা পাবো বলে তোমার পানে চেয়ে আছি। তোমার প্রেম প্রেম অসুখে আমি বড্ড আক্রান্ত, তুমি নামক ঔষুধের বড্ড প্রয়োজন আমার!”

আজ আরো একটা রাত হয়তো নির্ঘুম কাটবে সামায়রার, তাকে ভেবে এমন কতো রাত জেগে পার করেছে তার হিসাব নেই। প্রতিদিন রাতে সামু প্রতিজ্ঞা করে কাল থেকে আর মানুষটিকে বিরক্ত করবে না কিন্তু ঠিক সকালে উঠে ভুলে যায়, ঠিকই বেহায়ার মতো “গুড মর্নিং” মেসেজটা পাঠাতে ভুলে না।আজ রাতের অবহেলার পর কাল সকালে হয়তো আবারও পাঠাবে!

ভালোবাসা শব্দটির সাথে যবে থেকে পরিচয় ঘটেছে তবে থেকেই জেনেছে এই মানুষটিকে ও ভালোবাসে। যে ওর ছোটবেলার ক্রাশ, কৈশরের আবেগ আর যৌবনের প্রেম! কিন্তু মানুষটা বড্ড অবুঝ কিছুতেই বুঝে না তাকে, হয়তো বুঝতেই চায়না। আচ্ছা! কোন একদিন যদি হারিয়ে যায় ও তবে কি মানুষটি তাকে খুঁজবে?নাকি তার কিছুই যায় আসবে না?হয়তো তার জন্য ভালোই হবে, বিরক্ত করার কেউ থাকবে না।

____________________

বসার ঘরের সোফায় রুশি চুপচাপ বসে আছে, পরনে কালো রঙের শাড়ি, হাত ভর্তি চুড়ি আর টানা চোখে মোটা করে দেয়া কাজল। এইটুকু সাজেই যেনো অপরুপ লাগছে,গোলাপি ঠোঁট জোড়া থেকে কেঁপে উঠছে। সামনে বসে থাকা মাঝবয়সী লোকটি চোখ দিয়ে যেনো গিলে খাচ্ছে ওকে, হয়তো এই জন্মে মেয়ে দেখা হয়ে উঠেনি তার।। লোকটি নিজের বয়স পঁয়ত্রিশ বললেও তার থেকে আরো বেশি বয়স্ক লাগে, নো ওন্ডার ওর পালক মা নিজের মেয়ে বিয়ে দিতে চায়নি। কথা ছিলো পছন্দ হলে একেবারে বিয়ে করিয়ে নিয়ে যাবে রুশিকে তবে রুশি শংকিত নয়।
ও অপেক্ষায় আছে ওই সময়ের জন্য যখন বলা হবে পাত্র পাত্রী আলাদা কথা বলুক।

আর যাইহোক কোন লোক বাচ্চাসহ কোন মেয়েকে বিয়ে করবে না। রুশি প্রথমে চেয়েছিলো সায়ানকে ফোন দিতে কিন্তু সায়ানের নাম্বার ওর কাছে নেই। আর কাল থেকে বাড়ির বাইরে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। ওর এখন একটাই পথ খোলা আছে, পাত্রকে সরাসরি বলে দিবে ও অন্যের বাচ্চার মা হতে চলেছে। এতে বড় জোর ওর পালক মা ওকে বের করে দিবে, তারপর নাহয় ও সায়ানের কাছে চলে যাবে। কালকের পর থেকে এই ভরসাটুকু হয়েছে যে এই বাড়ি ছাড়াও অন্যত্র যাওয়ার জায়গা আছে ওর তাই আর যাইহোক এদের আর ভয় পাবেনা ও।

রুশি এসব ভেবেই বসে আছে ঠিক তখনি সদর দরজা খুলে গেলো, রুশি সেদিকে হা করে তাকিয়ে আছে।

#চলবে

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ