Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"গুমোট অনুভুতি পর্ব-৩+৪

গুমোট অনুভুতি পর্ব-৩+৪

#গুমোট_অনুভুতি
#লিখাঃ Liza Bhuiyan
#পর্ব_৩

সামনে থাকা মেয়েটিকে মাথা চেপে বসে থাকতে দেখে সায়ান কিছুটা হতাশ হলো, ওকে দেখে আশেপাশের মেয়েরা হা করে তাকিয়ে, প্রশংসা করে কিন্তু এই প্রথম কোন মেয়েকে দেখলো যে ওর দিকে সেভাবে না তাকিয়ে মাথা নিচু করে বসে আছে। বিষয়টির সাথে খুব অপরিচিত সায়ান। আফটার অল সায়ান জামিল খান নামটা শুনলেই মেয়েরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে,ঢাকা শহরের নামকরা ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট যে কিনা মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়সে গোটা একটা কোম্পানির সিইও যেটার ব্রাঞ্চ শুধু বাংলাদেশ আরো অনেক কান্ট্রিতে আছে। এশিয়ার টপ টেন কোম্পানির একটি। তার উপর দেখতে মাশাল্লা অনেক হ্যান্ডসাম তাই অনেকের স্বপ্নের পুরুষ সে!

সায়ান কিছু না বলে পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ধরালো তারপর চেয়ার টেনে রুশির ঠিক সামনাসামনি বসলো।কিছু একটার স্মেইল পেতেই রুশি মাথা তুলে তাকালো, বাদামি চোখ জোড়ার পরপরই চোখে পড়লো জলন্ত সিগারেট। রুশির চেহারায় স্পষ্ট আতঙ্ক ফুটে উঠলো, ভয়ে জড়োশড় হয়ে বসে পুনরায় মাথা নিচু করে ফেললো। কাঁপাকাঁপা হাতে বিড়বিড় করে কিছু বলতে লাগলো আর হাত দিয়ে কিছু একটা সরানোর ইশারা করছে। সায়ান রুশির কথা শুনতে না পেরে কিছুটা সামনে এগিয়ে গিয়ে শুনতে পেলো মেয়েটি বিড়বিড় করে বলছে

“আগুন! আগুন! সব শেষ করে দিবে। সব শেষ!আগুন!”

সায়ান পরিস্থিতি বুঝতে পেরে হাতে থাকা সিগারেট ফেলে দিয়ে পা দিয়ে পিষে আগুন নিভিয়ে ফেললো, তারপর কিছু শান্ত গলায় বললো

“কাম ডাউন! কিছু হয়নি। সি কোন আগুন নেই”

কিন্তু মেয়েটি অনবরত কেঁপেই যাচ্ছে আর বিড়বিড় করছে, সায়ান বুঝতে পারলো মেয়েটি ট্রমার মধ্যে আছে। কিন্তু এই ধরনের আচরণ মানুষ তখনি করে যখন সে ভয়ংকর কিছু ফেস করে,কথায় আছে না
“ঘর পোড়া গাই সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পায়”
সায়ান কিছুটা ইতস্তত বোধ করলো, এই মুহুর্তে সিগারেট না জালালেও পারতো। কিন্তু মেয়েটিকে শান্ত করা দরকার তাই কিছুনা ভেবেই জড়িয়ে ধরলো মেয়েটিকে যদিও এটাই প্রথমবার নয়। পিঠে হালকা হাত রেখে শান্তনা দিচ্ছে,মেয়েটি ভয়ে ওর শার্ট খামচে ধরে বুকে লুকিয়ে আছে যেনো ছোট্ট খরগোশ ছানা লুকোচুরি খেলছে। মেয়েটির কাঁপুনি কিছুটা কমতেই সায়ান ওকে ছেড়ে দিলো তারপর অভয়ের স্বরে বললো

“সি কোন আগুন নেই, আপনি শুধু শুধু ভয় পাচ্ছেন”

কিন্তু মেয়েটি ভয়ে তাকাচ্ছে না দেখে সায়ান কিছুটা ধমকের স্বরেই বললো

“লুক এট মি! তাকান আমার দিকে, তাকান!”

ঠান্ডা কন্ঠের ধমক খেয়ে রুশি হচকিয়ে গেলো আর প্রায় সাথে সাথেই তাকালো আর সামনে সাথা ব্যাক্তির চোখে একরাশ আশ্বাস ছিলো যেনো চোখ দুটি বলছে “রুশি ভয় পেয়োনা, সত্যিই কিছু হয়নি”

রুশির কেনো যেনো এই বাদামি চোখ দুটোকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হলো তাই পাশে তাকানোর সাহস না থাকলেও তাকালো। ফ্লোরে চোখ যেতেই ছাই হওয়ে যাওয়া সিগারেট চোখে পড়লো, নাহ আগুন নেই, সত্যিই নেই!

রুশি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে পাশে তাকালো,এতোক্ষন একটা ছেলের অনেকটা কাছে ছিলো তাতেই যেনো দম বন্ধ হয়ে আসছে। নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে নখ খুটতে লাগলো। ওর এখনো স্পষ্ট নয় ও ঠিক এখানে কেনো? কেনো নিয়ে আসা হয়েছে ওকে এখানে? তাও আবার সায়ান জামিল খান ওর সামনে বসে আছে! রুশি মনে মনে ভাবছে প্রশ্ন গুলো কি করে করা যায় তার মাঝেই সামনের ব্যাক্তি প্রশ্ন করলো

“আমি জানি আপনার মনে অনেক প্রশ্ন আর থাকাটাই স্বাভাবিক। আমিই আপনাকে এখানে নিয়ে আসতে বলেছি”

রুশি ফট করে বলে ফেললো

“ও তাহলে আপনিই আমাকে কিডন্যাপ করেছেন?কিন্তু কেনো! আমার থেকে না টাকা পয়সা পাবেন না অন্যকিছু তাহলে আবার অন্য জন ভেবে ভুল করে তুলে আনেন নি তো?এই আপনি কি আমার কিডনি বিক্রি করে দিবেন নাকি বিদেশে প্রাচার করে দিবেন?সাংঘাতিক লোক তো আপনি!”

বেশি কথা বলা সায়ানের কোন কালেই পছন্দ ছিলো না আর না কারো ননস্টপ কথা শুনতে তাও আবার এইরকম ননসেন্স কথাবার্তা! লাইক সিরিয়াসলি?ওর টাকার পয়সার কি এতোই অভাব যে এই কিডনি বিক্রি করতে হবে আর বিদেশে প্রাচার!রাবিশ, সায়ানের রাগ লাগলেও সেটা চেহারায় প্রকাশ করলো না, কারণ ঠান্ডা মাথায় সবকিছু হেন্ডেল করার অভ্যস আছে ওর নাহয় এতো বড় কোম্পানি একা হাতে সামলানো চারটিখানি কথা নয়।কয়েকবার জোরে শ্বাস নিয়ে রাগ সংযত করলো তারপর চেহারায় হালকা হাসি টেনে বললো

“তেমন করার ইচ্ছে নেই আপাদত মিস.রুশানি, আপনি যদি সোজা কথায় গার্ডদের সাথে চলে আসতেন তাহলে এমন কিছুই করতে হতোনা আমায়। যাইহোক আপনার সাথে কিছু প্রয়োজনীয় কথা বলতেই এখানে ডাকা হয়েছে আপনাকে। আশাকরি আপনার ননসেন্স কথাবার্তা বলে সময় নষ্ট করবেন না”

রুশি কথাটা শুনে কিছুটা রেগে গেলেও কিছু বললো না, ওর কি হয়েছে ও নিজেই বুঝতে পারছে না। এই ধরনের ফাউল কথা বললো কি করে সেটাই ভাবতে পারছেনা। এতো বড় বিজনেস ম্যান ওর কিডনি বেচতে যাবে কোন দুঃখে! কিন্তু হঠাৎ করে কথা বলতে ইচ্ছে করেছিলো তাই বলে দিলো নাহয় এমনিতেই কথা কম বলে ও তারউপর এই ধরনের যুক্তিহীন কথা বার্তাতো বলারই কথা না। তাহলে এটা কি মুডসুইং?যার জন্য হঠাৎ ওর অনেক অনেক কথা বলতে ইচ্ছে করছে!

রুশির ভাবনার মাঝেই সায়ান গলা খাঁকারি দিলো,এই মেয়ে হুটহাট কোথায় গায়েব হয়ে যায় তাই খুজে পাওয়া যায় না। রুশি ওর দিকে তাকাতেই কিছুটা সিরিয়াস ভংগিতে বললো

“দেখুন আমি ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলতে পারিনা, আপনাকে এখানে ডেকে আনা হয়েছে কারণ আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই!”

সায়ান আরো কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো, পরের কথাটা ঠিক কিভাবে বলবে ও বুঝতে পারছে না। এদিকে রুশি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছেনা, দ্যি গ্রেট সায়ান জামিল খান প্রোপোজ করছে ওকে তাও বিয়ের জন্য! এটা হয়তো ওর জন্য সৌভাগ্য হতো আর যাইহোক যে নরকে ও আছে সেটা থেকে মুক্তি পেতো ও কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন, ও এখন একা নয় বরং ওর মাঝেই অন্য একটি প্রান ভেসে উঠছে। রুশি মাথা নিচু করে ফেললো আর কিছুটা শান্ত স্বরে বললো

“আমি আপনাকে করতে পারবো না, বলতে পারেন আমি আপনার যোগ্য নই, কোনদিক থেকেই না। আমার পক্ষে হ্যাঁ বলা সম্ভব নয়”

রুশির কথা শুনে সায়ান কিছু বললো না, উঠে দাঁড়িয়ে নিজের ডেস্কের উপর থেকে কিছু একটা নিয়ে রুশির দিকে এগিয়ে দিলো। রুশি বুঝতে না পেরে সেটা নিয়ে দেখা শুরু করলো আর খুব তাড়াতাড়ি বুঝতে পারলো এটা ওর প্রেগন্যান্সির রিপোর্ট।কিন্তু এটাতো ও নিজ হাতে ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে তাহলে এই লোকের কাছে কি করে এলো?ভয়ার্ত কন্ঠে সায়ানের দিকে তর্জনি আংগুল দিয়ে বললো

“আপনি কি করে জানলেন?এটা আপনার কাছে কি করে আসলো? আমি নিজ হাতে ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছি এটা। আপনার কাছে কেনো এটা?”

“উইথ মাই পাওয়ার একটা রিপোর্ট বের করা করা কোন কঠিন কাজ নয় আমার জন্য”

রুশি ঢোক গিলে বললো

“এই নিউজ দিয়ে আপনি কি করবেন?আপনার কি যায় আসে এতে?”

“অনেক কিছু যায় আসে কারণ আমি এই বাচ্চার বাবা!”

রুশি অবাক করা চাহনিতে তাকালো,এতোক্ষন এই ব্যাক্তির জন্য যে শ্রদ্ধা আর সম্মান কাজ করেছিলো তা নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো।মুখে একরাশ ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই প্রকাশ পেলো না । আজ ওর লাইফ যে মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে তার জন্য একমাত্র দায়ী হচ্ছে সামনে থাকা ব্যাক্তিটি, সেদিন থেকে এখন পর্যন্ত এই ও শুধু একটাই উইশ করে গেছে যে এই জঘন্য লোকের সাথে দ্বিতীয়বার দেখা না হয়। আর যাই হোক ও এটা ডিজার্ভ করতো না,ওর লাইফ নষ্ট করে দিয়ে এখন আদিক্ষেতা দেখাতে এসেছে।ও কাউকে ক্ষমা করবে না, না এই লোকটিকে আর না..

#চলবে

#গুমোট_অনুভুতি
#লিখাঃ Liza Bhuiyan
#পর্ব_৪

এক মাস পুর্বে~~~~

রুশি তখন ভার্সিটির গন্ডিতে পা রেখেছে চারমাস হলো,ভার্সিটিতে বিশেষ ক্লাস ছাড়া খুব একটা যাওয়া হয়না। কলেজে থাকতে ওর দুইজন বান্ধুবী ছিলো স্নেহা আর তিথি যদিও তিথির সাথে সখ্যতা বেশি ছিলো যাকে বলে বেষ্ট ফ্রেন্ড। তাই তিনজন মিলে সিদ্ধান্ত নিলো তারা দেখা করবে। রুশি সেদিন লংড্রেস আর আর গলায় স্কার্ফ ঝুলিয়ে পার্স নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। এই ড্রেসটি জন্মদিনে ওর বাবাই গিফট করেছিলো। যেহেতু এমনি এমনি বাড়ি থেকে বেরুতে পারবে না তাই টিউশনির সময় বেরিয়েছে যাতে কেউ বুঝতে না পারে। ওরা প্রায় কয়েক ঘন্টা ঘুরাঘুরির পর হঠাৎ স্নেহা বলে উঠলো

“চল পাশেই একটা ক্লাব আছে সেটাতে যাই,এটা অনেক পরিচিত একটা ক্লাব অনেক মজা হবে”

প্রায় সাথেসাথেই তিথি হ্যা বলে কিন্তু রুশি বেকে বসে। এসব ক্লাব সম্পর্কে ওর এতোটা ধারণা নেই তবে টিভিতে দেখেছে মেয়েরা ছোট ছোট ড্রেস পরে থাকে আর ডান্স করে তাছাড়া এলকোহলও সার্ভ করা এখানে। তাই ও রাজি হতে চাইলো না আর তাছাড়া প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসছে বাবাইকে কি জবাব দিবে ও?ও না করে দিতেই ওর বান্ধুবীরা মন খারাপ করে ফেললো, তিথি বলেই ফেললো

“আমরা যাই বলি সবকিছুতেই তুই না করে দিস, তোকে আমাদের ট্রিটয়ে নিয়ে যাবো প্লিজ চলনা অনেক মজা হবে। জাস্ট থিংক লাইফের ফার্স্ট টাইম ক্লাবে যাবো, আমার তো ভাবতেই খুশিখুশি লাগছে”

রুশি বুঝতে পারলো ওদের এতো আগ্রহের কারণ, টিনেজারদের স্বভাবই হচ্ছে সবকিছুতে অদম্য কৌতুহল! জিনিসটা ভালো হোক বা না হোক সবকিছু একবার না একবার ট্রাই করে দেখা চাই। তাই হয়তো জীবনের প্রথম সিগারেট ছেলেরা কৈশরেই খায়।কিন্তু ক্লাবে কোন ভালো জিনিস নয় সেটা রুশি ঢের বুঝতে পারলো কিন্তু ভাবলো বান্ধুবীরা এতো করে বলছে যাওয়াই যায়। অল্প কিছুক্ষণ থেকে নাহয় চলে আসবে।বাবাইকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছে যে ও ওর বান্ধুবীর বাসায় থেকে পড়াশুনা করবে আজকে।
ওরা সেই ক্লাবের সামনে যেতেই ওদের গার্ডরা ভেতরে ঢুকতে দিলো। ওর বান্ধুবিরা কিছুটা ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়লেও ওর পোষাকে বাঙালিয়ানা ছিলো তাই ক্লাবের মানুষগুলো ওর দিকে কেমন করে যেনো তাকাচ্ছিলো।
রুশি চুপচাপ এক কর্নারে বসে ওর ফ্রেন্ডদের ডান্স দেখেছিলো, ওর হাতে সফট ওরেঞ্জ জুস ছিলো যা ওর ফ্রেন্ড ওর্ডার করে দিয়েছিলো। ওর কিছুক্ষনের মাঝে নিজের ফ্রেন্ডদের কিছু ছেলের সাথে কথা বলতে দেখলো যা ওর ভালো ঠেকলো না তাই ও তিথির কাছে গিয়ে কানেকানে বললো যে ও বাড়ি ফিরে যেতে চায় কিন্তু তিথি বললো ও একটু ওয়াশরুমে যাবে, ওর সাথে যেনো রুশি যায়। ওয়াশরুম থেকে ফিরেই বাসায় চলে এই মর্মে তিথির সাথে ও দোতলার একটি রুমে যায়। ক্লাবের রেস্টরুমের ব্যাবস্থা আছে তা দেখে রুশি অবাক হয়, আফটারল দামি ক্লাব।তিথি ওর হাত ধরে বলে

“তুই এখানে বস, আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি”

রুশি মাথা নাড়িয়ে খাটের উপর বসে পড়ে, ব্যাগ থেকে ফোন বের করে ফেসবুক স্ক্রল করতে থাকে। ওর কেনো যেনো মাথা ঝিমঝিম করছে আর খুব ঘুম পাচ্ছে। প্রায় দশ মিনিট পরেও যখন তিথি বেরুলো না তখন ওয়াশরুমের দরজায় নক করতেই তিথি বলে আরেকটু সময় লাগবে ওর। রুশি আগের জায়াগায় গিয়ে বসে পড়ে, ওর চোখের সামনে সবকিছু কেমন যেনো অস্পষ্ট হতে লাগলো।অনেক চেষ্টা করেও চোখ খুলে রাখতে পারছিলো না, ঘুমে এক প্রকার ঝিমোচ্ছিলো ওর তাই বিছানায় সুয়ে পড়লো, ওর ধারণা তিথি বের হলে ওকে ডেকে দিবে।

কতক্ষণ সময় অতিবাহিত হয়েছে ও জানেনা তবে ও টের পাচ্ছিলো ওর শরীর গরম হয়ে আছে, রিতীমত ঘামছিলো কিন্তু চোখ মেলে তাকানোর ক্ষমতা ছিলো না, কেউ একজন ওকে ডাকছিলো, বিছানা থেকে উঠতে বলছিলো কিন্তু ও চোখ মেলে তাকাতে পারছিলো না।ওর মনে হচ্ছিলো ওটা একটা মেয়ে ছিলো।ঝাপসা চোখে লম্বা চুল,মেয়েলি পারফিউম আর কন্ঠ!তারপর কি হয়েছে কিছু মনে নেই।

সকালের মৃদু আলো চোখে পড়াতে ও চোখ মেলে তাকায়,বিরক্তি নিয়ে চারপাশে তাকালো আর বুঝতে পারলো ও বাসায় নেই। ও চারপাশে তাকিয়ে তিথিকে খুজছিলো কিন্তু পায়নি। নিজের শরীর হালকা মনে হতেই সব কিছু ক্লিয়ার হয়ে গেলো। ওয়াশরুম থেকে পানির আওয়াজ আসছে মানে সেখানে কেউ শাওয়ার নিচ্ছে।ওই মুহুর্তে কি করা উচিৎ ওর মাথা কাজ করেছিলো না, শুধু জানে এখান থেকে বেরুতে হবে যেকোন মুল্যে বেরুতে হবে। নিজের জামাকাপড় ঠিক করে পার্স নিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে পড়লো সেখান থেকে, চারপাশের মানুষ অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো তাই স্কার্ফ মাথায় দিয়ে মুখ ঢেকে বেরিয়ে পড়ে সেখান থেকে। ওর এখনো শরীর কাঁপছে, কাল রাতের ঘটনা ভাবার সাহস পাচ্ছেনা কিছুতেই। গাল বেয়ে পানি পড়ছে, এই পর্যন্ত প্রায় বিশবারের মতো তিথিকে কল করেছে কিন্তু বরাবরি নাম্বার ব্যাস্ত দেখাচ্ছে। তিথি ওই অবস্থায় কোনরকম বাসায় চলে আসে, আর আসতেই পালক মায়ের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে। অনেক কথা শুনেছে জন্ম নিয়ে যেমন নিশ্চিত কারো পাপের ফসল তাই ফেলে চলে গেছে আর এখন আমাদের ঘাড়ে এসে জুটেছে। রুশি মাথানিচু করে দাঁড়িয়ে ছিলো, এসব কথার জবাব দিতে কখনোই ইচ্ছে করে না কারণ ও জানে না কেনো ওর বাবা ওকে ফেলে চলে গেছে। হয়তো এমন কিছুই হয়েছিলো তাই…
কিছুক্ষণ লেকচার শুনার পর ও নিজের রুমের দিকে যায়, একেরপর এক ফোন দিতে থাকে কি হয়েছে তা জানার অন্য কিন্তু তিথি ধরেনি। প্রায় এভাবে অনেকদিন কেটে যায় আর স্নেহা, তিথি দুইজনকেই ফোন দেয় কিন্তু কেউ ধরেনা। রুশি বুঝতে পারে ওরা ইচ্ছে করে এমন করেছে ওর সাথে, কিন্তু রুশির খারাপ লাগছে শেষ পর্যন্ত তিথিও এমন করলো! ও তিথিকে নিজের ফ্রেন্ড কম বোন বেশি মনে করতো আর সে কি করে এমন জঘন্য খেলা খেললো ওর সাথে?
আর ওই লোকটি! ওর অবস্থা দেখে একবারো দয়া হয়নি তার!মনে হয়নি এই অসহায় মেয়েটিকে ছেড়ে দেই?সব ক্ষেত্রে সুযোগ পেলেই কেনো তার সদ্ব্যবহার করতে হবে?কিছু কিছু সময় এটাও তো ভাবা যায় যে এই মেয়েটি কারো ঘরের সম্মান তার ভবিষ্যৎ স্বামীর আমানত। তাকে ছেড়ে দেই কারণ আর যাই হোক সেসময় ওর পরিস্থিতি দেখে যে কেউ বুঝতে পারবে যে ও ইচ্ছে করে সে জায়গায় যায়নি!

কিন্তু তাকে আর কি বলবে যেখানে নিজের কাছের মানুষটিই ধোঁকা দিয়ে দিলো,ওর এতোবড় সর্বনাশ করলো!রুশির কাছে নিয়তি মেনে নেয়া ছাড়া আর কোন উপায় ছিলো না, তার উপর ওর বেবি!আর যাই হোক এমন কিছু ও ডিজার্ভ করেনা, খুব কি ক্ষতি হতো যদি এমনটা না হতো ওর সাথে!

_____বর্তমান_____

গত একমাসের কথা ভাবতেই ওর চোখ ভরে এলো, ওর এখনো মনে হচ্ছে ও স্বপ্ন দেখছে এমন কিছু হয়নি ওর সাথে। চোখ মেললেই এই দুঃস্বপ্ন কেটে যাবে কিন্তু বাস্তবতা বড্ড কঠিন।হাজার চাইলেও বদলানো সম্ভব নয়। রুশি চোখদুটি লাল হয়ে আছে যাতে ফুটে উঠেছে রাগ, ঘৃণা, অভিমান আর অসহায়ত্ব। সায়ানের এই চোখের ভাষা পড়তে কষ্ট হয়নি, ও বুঝতে পারছে ওর একটা ভুলের কারণে একটা মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে গেছে। লজ্জায় সায়ান মাথা নিচু করে ফেলেছে কিন্তু ও যা করেছে ইচ্ছে করে করেনি।

ওর কিছু ফ্রেন্ডদের সাথে একমাস আগে ও ক্লাবে গিয়েছিলো কোম্পানির পাঁচবছর পুর্তি সেলিব্রেট করতে। যেহেতু ক্লাবটি ওর একটি বন্ধুর ছিলো তাই ওদের সবার জন্যই সেখানে আগে থেকেই রুম বুক করা ছিলো। যেহেতু খুশির মুহুর্ত ছিলো তাই ফ্রেন্ডদের রিকোয়েস্টে একটু বেশি ড্রিংক করে ফেলেছিলো কিন্তু এতোটাও নয় যে নিজের হুশ হারিয়ে ফেলবে। বরাবরই ওর এলকোহল টলারেন্স খুব ভালো তাই হাল্কা মাথা ঝিমঝিম করলেও তেমন একটা কিছু হয়না। কিন্তু ওইদিন কি হয়েছে ও জানে না,ওর সারা শরীরে মনে হচ্ছিলো কেউ হিট দিচ্ছে। হি কুডেন্ট জাস্ট কন্ট্রোল হিমসেল্ফ!রুমে গিয়ে একটা মেয়েকে বিছানায় দেখে ও তাও চেষ্টা করেছিলো তাকে উঠাতে যাতে কোন ভুল না হয় কিন্তু মেয়েটি রেস্পন্স করেনি তাই ও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো বেরিয়ে যাবে বাট কেউ একজন বাইরে থেকে দরজা লক করে দিয়েছিলো আর ওর পকেটের ফোন গায়েব ছিলো। হি ওয়াজ টোটালি হেল্পলেস আর…

যাইহোক সকালে মেয়েটি কিছু না বলেই বেরিয়ে গিয়েছিলো তাই ও ওর লোকদের বলেছিলো মেয়েটির উপর নজর রাখতে আর খোঁজখবর নিতে। একটা প্রজেক্ট নিয়ে এই একমাস অনেক ব্যস্ত ছিলো তাই মেয়েটির সাথে কথা বলার সুযোগ পায়নি। সেই প্রজেক্ট নিয়ে ও এখনো ব্যাস্ত তবে কালকে জানতে পারে মেয়েটা প্রেগন্যান্ট তাই ও সিদ্ধান্ত নিলো মেয়েটির সাথে কথা বলা দরকার। মেয়েটি মিডল ক্লাস ফেমিলি থেকে বিলং করে তাই এটা মেয়েটির জন্য অনেক বড় ইস্যু। কারণ আমাদের সমাজে কেউ কাউকে সাহায্য করুক আর না করুক তাদের কথা শুনাতে বড্ড ভালোবাসে।

সায়ান বুঝতে পারলো রুশি মনের অবস্থা বর্তমানে ভালো নয়, তাই ঠান্ডা মাথায় কথা বলতে হবে।সায়ান শীতল কন্ঠে বললো

“দেখুন আমি জানি যা করেছি তাতে আমার ছোট্ট একটা স্যরি তা ঠিক করতে পারবে না।আর তা বলে আপনাকে অসম্মান করতেও চাইনা, আমি শুধু রেস্পন্সিবল হতে চাই আপনার জন্য। আপনি বিশ্বাস করুন আর না করুণ তবে যা হয়েছে তা আমার ইচ্ছেতে হয়নি”

সায়ান একনিশ্বাসে কথাগুলো বললো তারপর কিছুটা থেমে আবারও বলে উঠলো

“আই ওয়াজ ড্রাগড! আমি জানি এটা কে করেছে কেনো করেছে, আমি তার ব্যাপারে এখনো ইনভেস্টিকেট করছি। তাই ওইদিন যা হয়েছে তা আমি ইচ্ছে করে করেনি। আম রিয়ালি স্যরি ফর দ্যাট নাইট”

রুশি রক্তচক্ষু নিয়ে তাকালো সায়ানের,স্যরি!সামান্য স্যরি ওর হারানো সম্মান ফিরিয়ে দিতে পারবে?পারবে সবকিছু বদলে দিতে!রুশি ঠোঁটের কোন তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটিয়ে বললো

“আর আপনার কেনো মনে হয় আপনি যা বলছেন তা আমি বিশ্বাস করে নিবো?আমাকে কি বাচ্চা মনে হয় যা বুঝাবেন তাই বুঝবো?আপনি যা করেছেন ইচ্ছে করে করেছেন, একা একটা মেয়েকে পেয়ে এতোবড় সুযোগ হাতছাড়া করবেন কেনো? আপনারা সব পুরুষরাই এক, কখনো নারীদের মনকে ভালোবাসেন নি বেসেছেন তাদের সৌন্দর্যকে”

সায়ান রাগে হাত মুঠো করে ফেললো, এই মেয়ের সাথে যতো ঠান্ডা মাথায় কথা বলছে তত রাগ দেখাচ্ছে। জীবনের প্রথম কাউকে স্যরি বলেছে আর এই মেয়েকে দেখো উল্টো মেজাজ দেখাচ্ছে। এর এক পার্সেন্ট ও যদি নিজের সৎ মায়ের উপর দেখাতো তাহলে কি এমন পরিস্থিতিতে থাকতো কিন্তু না তখনতো মিনি বেড়াল হয়ে থাকে। সায়ান কয়েকবার শ্বাস ফেলে বললো

“যদি মিথ্যেই বলতাম তবে তোমাকে এখানে ডেকেছি কেনো?আমিতো ইজিলি এই দ্বায়িত্ব নেয়া থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারতাম আর তুমি জানতেও পারতে না কিন্তু আমি যা বলেছি তা সম্পুর্ণ সত্যি বলেই তুমি আমার সামনে বসে আছো। আম…স্যরি তুমি করে বলে ফেলেছি!”

রুশি কিছুক্ষণ ভাবলো, আসলেই যদি যা বলেছে তা সত্যি না হয় তাহলে সায়ান জামিল খান ওর সামনে ধরাই বা কেনো দিবে আর যাই হোক তার লাইফে মেয়ের কোন অভাব নেই। রুশি চোখ মুছে তার দিকে তাকিয়ে বললো

“তো এখন কি করতে চান?”

“দেখুন আমি…আমি আপনাকে বিয়ে করে দায়িত্ব নিতে চাই আর আপনাকে সেফও রাখতে চাই কিন্তু আমি আপনাকে সারাজীবনের জন্য বিয়ে করতে পারবো না! বলতে পারেন আমার পক্ষে এটা সম্ভব নয়, চাইলেও সম্ভব নয় কারণ আমি ওয়াদাবদ্ধ! আমার বাচ্চা এটলিস্ট দুইবছর হওয়া পর্যন্ত আপনাকে ওর পাশে থাকতে হবে আর তারপর আপনি ওকে আমার কাছে দিয়ে দিবেন”

রুশি হাসলো, যেটা ভেবেছে সেটাই। দ্যি গ্রেট সায়ান জামিল খান ওকে সারাজীবনের জন্য বিয়ে এটা ও ভাবলো কি করে?হাহ, নিজের সন্তানের দায়িত্ব নিতে এসেছে! আর ও? ভেবেছে ওর ব্যাপারে যে ও কি করে থাকবে এরপর! সবকিছু নাহয় বাদ ই দিলো, ওর সন্তান! ওকে ছাড়া কি করে থাকবে? এটা কি আদোও সম্ভব যে যাকে নয়মাস গর্ভে ধারণ করবে তাকে ছেড়ে ও চলে যাবে?
রুশি কঠিন গলায় বললো

“আর আপনার এটা কেনো হয় যে আমি আপনার শর্তে রাজি হবো?আমার সন্তান আমার কাছে থাকবে আর আমি একাই তার জন্য যথেষ্ট”

“আমার এটা মনে হয় না বরং আপনি এমনটাই করবেন কারণ আপনি বাধ্য। বিয়ের ছাড়া একটা বাচ্চাকে লালন পালন করা কি হাতের মোয়া মনে করেন?এই সমাজ টিকতে দিবে আপনাকে?কখনোই দিবে না। কিন্তু আমার কথায় রাজি হলে আপনি প্রপার সম্মান যেমন পাবেন তেমন আমি আপনার কেরিয়ার গড়ে দিবো যাতে ভবিষ্যতে আপনি ইন্ডিপেনডেন্ট থাকতে পারেন। আর তাছাড়া আপনি চাইলেই আপনার বাচ্চার সাথে দেখা করতে পারবেন আমি বাধা দিবো না। শুধু মাত্র একটা কথাই রাখতে হবে আর তা হচ্ছে আপনি আমাদের বিয়ের কথা বাইরে প্রকাশ করতে পারবেন না”

সায়ানের কথা শুনে রুশি দোটানায় পড়ে গেলো, সায়ান যা বলছে তা সত্যি এই সমাজে ও নিজের বাচ্চা নিয়ে বাঁচতে পারবে না। কিন্তু তাই বলে তিনবছরের বিয়ে!তবে এই মুহুর্তে এইটাই সবচেয়ে সেফ ডিসিশন আর যাইহোক ওর বাচ্চাকে কেউ ভবিষ্যতে কিছু বলতে পারবে না কারণ তার বাবা আছে।রুশি নিজেকে রাজি করালো আর যাইহোক নিজের সন্তানের জন্য ওকে রাজি হতে হবে।রুশি কাঁপা গলায় বললো

“আমি রাজি তবে আমার একটা শর্ত আছে! ভবিষ্যতে আমার সন্তান আমাকেই মা হিসেবে চিনবে”

সায়ান মাথা নাড়ালো এছাড়া আর কোন উপায় দেখছে বলে মনে হচ্ছে না, তবে সামনে থাকা মেয়েটির জন্য ওর খারাপ লাগছে। ওর হাতে কারো জীবন নষ্ট হয়ে গেলো কিন্তু ওতো ওয়াদাবদ্ধ কারো কাছে যা চাইলেও ভাংতে পারবে না। কিন্তু ও নিজের দায়িত্ব পালন করে যাবে,দরকার হয় ভবিষ্যতে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে রুশির বিয়ে দিবে। ও সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে রুশির প্রতি দায়িত্বগুলো পালন করার!

#চলবে🌸

(আশাকরি সব ক্লিয়ার হয়েছে, আর চেইক করার সময় পাইনি তাই ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।শুভ রাত্রি)

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ