Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"গুমোট অনুভুতি পর্ব-১+২

গুমোট অনুভুতি পর্ব-১+২

#গুমোট_অনুভুতি
#লিখাঃ Liza Bhuiyan
#পর্ব_১

“মিস. রুশানি! কংগ্রাচুলেশন,আপনি মা হতে চলেছেন”

কথাটা শুনে রুশি থম মেরে বসে রইলো, ডাক্তারের এগিয়ে দেয়া রিপোর্ট হাতে নিবে সেই সাহস হচ্ছেনা। মনে হচ্ছে কোন এক ভয়ংকর স্বপ্ন দেখছে, চোখ মেললেই সব মিথ্যে হয়ে যাবে। রুশিকে চুপ করে থাকতে দেখে ডাক্তার বলে উঠলো

“আপনার হাজবেন্ড আসেনি সাথে?না আসলে তাকে বলে দিতাম আরকি আপনার খেয়াল রাখতে। আপনার শরীর বেশ দুর্বল তাই বেবির ক্ষতি হতে পারে, আমি কিছু ভিটামিন দিয়ে দিচ্ছি।”

রুশির কর্ণপটে হাজবেন্ড ব্যতীত অন্য শব্দ ঢুকেনি, কোনরুপ কাঁপা হাতে রিপোর্ট নিয়ে বেরিয়ে পড়লো হসপিটাল থেকে। হসপিটালের চৌকাঠ পেরুতেই অবাধ্য চোখের জলগুলো গড়িয়ে পড়তে শুরু করলো। হাজবেন্ড! সেটা কোথা থেকে আসবে ওর?
সবেমাত্র আঠারো পেরিয়ে উনিশে পা দিয়েছে তার মধ্যেই জীবনে এতো বড় ঝড়!

সামনে থাকা পার্কের ঘাসে বসে পড়লো সামনে লেকের পানির উথালপাতাল ঢেউয়ের সাথে তাল মিলিয়ে ওর অন্তরের অশান্ত স্পন্দন। ঢুকরে কেঁদে উঠলো ও।

“বিধাতা! আমার সাথেই কেনো এমন হয়?জন্মের পর বাবা মা ফেলে চলে গিয়েছে, ছুড়ে ফেলে দিয়েছে অনাথ আশ্রমের দরজায়। যাও বাবাই দয়া করে আমাকে নিজের মেয়ে বানিয়ে তার গৃহে ঠায় দিয়েছে তাও আম্মু কোনদিন মেনে নেইনি আমায়! প্রতিনিয়ত আমাকে স্মরণ করিয়েছে আমি অনাথ, আমার কোন পরিচয় নেই। তাও তো ভালো ছিলাম, দু মুঠো ভাত তো কপালে জুটতো! কিন্তু আজ! এখন তো আমার মাথার শেষ আশ্রয় টুকুও থাকবে না। আম্মু তো আমাকে আর ওই বাড়িতে জায়গা দিবে না। কই যাবো আমি?”

রুশি পার্কে বসে কান্না করছে নিশ্চুপে তবে ওর কান্না দেখার মতো কেউ নেই। অনাথদের কেউ থাকে না ওরও নেই। যতো অনাথ শব্দটা মনে পড়ে তত নিজের আসল বাবা মায়ের জন্য ঘৃণা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। আজ ওর এই অবস্থার জন্য একমাত্র দায়ী ওর আসল বাবা মা, তারা যদি ওকে ফেলে না যেতো তবে আজ এইখানে এইভাবে বসে ওকে চোখের জল ফেলতে হতো না।

ওর পালক বাবা মায়ের আরো দুজন সন্তান আছে, একটা মেয়ে আর একটা ছেলে যারা ওর থেকে বড়।ছেলে গ্র‍্যাজুয়েশন শেষ করে বেকার হয়ে বসে আছে আর মেয়েটি ওর থেকে দুই ক্লাস সিনিয়র। রুশি সবে অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে উঠেছে। ইন্টার পর্যন্ত পালক বাবা খরচ চালালেও এর আর চালাতে পারছে না কারণ তার স্ত্রী এটা পছন্দ করেনা। আর স্ত্রীর কথার বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা তার নেই, তাই রুশি টিউশনি করে তিনটা তাতেই আপাদত খরচ চলে যায়। মাঝেমাঝে তিনি বড্ড আফসোস করেন ওর জন্য যে ওকে সঠিক ভাবে লালনপালন করতে নিয়ে আসলেও তিনি তার কথা রাখতে পারেনি। কিন্তু রুশিকে যে অনাথ থেকে এখানে এনে ঠায় দিয়েছে এতেই রুশি অনেক কৃতজ্ঞ তার কাছে তার উপর ছোট থেকে এই একটা মানুষই তাকে বড্ড ভালোবাসে!

রুশি উঠে দাঁড়ালো তারপর হাতে থাকা রিপোর্ট ছিড়ে টুকরো টুকরো করে লেকের পানিতে ভাসিয়ে দিলো। ও জানেনা কয়দিন পর্যন্ত এই সত্য লুকিয়ে যেতে পারবে তবে আপাদত এই রিপোর্ট হাতে বাড়ির ফেরার সাহস ওর নেই। ও কি করবে এই মুহুর্তে কিছুই জানেনা তবে বাড়ি ফেরা দরকার প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। সন্ধ্যার আগে বাড়ি না ফিরলে রাতের খাবার কপালে জুটবে না আজ, ছোট থেকে এটাই নিয়ম, কোন ভুল করলেই খাবার বন্ধ হয়ে যেতো এমনও হয়েছে যে সারাদিন না খেয়ে আছে কিন্তু জিজ্ঞেস করার কেউ নেই। রাতে বাবা এসে তারপর চুপিচুপি খাইয়ে দিয়েছে।

রুশি বাসার উদ্দ্যেশ্য রওনা দিলো, রাস্তার ধারে আনমনে হাটছিলো হঠাৎ থমকে দাঁড়ালো। ওর কেনো যেনো মনে হচ্ছে কয়েকটা পা ওর পিছুপিছু আসছে। প্রায় সাথে সাথেই পেছনে তাকালো কিন্তু পিলার ছাড়া আর কিছু চোখে পড়লো না। বাড়ির ফেরার পথে এরুপ কয়েকবার পিছনে তাকিয়েছো কিন্তু হতাশ হয়েছে। পরে মনের ভুল ভেবে আর তাকাইনি। বাড়ির দরজা খুলতেই তীব্র গতিতে একটা পাতিল ওর পায়ে এসে পড়লো, তীক্ষ্ণ ব্যাথা অনুভব হতেই কয়েককদম পিছিয়ে গেলো। আশে পাশে ভাত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। সামনে তাকিয়ে দেখে পালক মা রাগে ফুসছে তার হাতে কাঠের খুন্তি। সেটা হাতে নিয়েই এগিয়ে আসলো আর চড়া গলায় বললো

“মহারাণী কই থেইকা ফিরেছেন হ্যা?সারাদিন যহন বাইরে কাটাইবার ব্যাবস্থা হইয়াই গেছে তয় আর বাড়ি ফিরোনের দরকার আছে নি।হারাডাদিন আমি কাম কইরা কইরা খাটমু আর আপনে আইসা গিলবেন শুধু?এই নাহাররে কামের বেডি পাইছুন নি”

রুশি কিছু না বলে মাথা নিচু করে আছে, পালক মায়ের কথায় খারাপ ইংগিত প্রকাশ পেলেও খুব একটা ভাবান্তর হলো না ওর। বুঝ হওয়ার পর থেকে এসব শুনতে অভ্যস্ত ও তাই শরীরে সয়ে গেছে। ও সুন্দর মতো বসে ভাতের পাতিল ঠিক করতে লাগলো তখনি কানে একটি কন্ঠ ভেসে আসলো ওর পালক বাবার মেয়ে নিহা মায়ের সাথে তালমিলিয়ে বলছে

“দেখো মা টিউশনির নামে কার সাথে কি কি করে!এসব মেয়েকে আমাদের এখানে রাখলে মান সম্মান থাকবে বলে মনে হচ্ছেনা মা। বাবা যে এসব আপদ আমাদের ঘাড়ে কেনো এনে ফেলেছে বুঝিনা।একে তাড়াতাড়ি তাড়ানোর ব্যাবস্থা করো মা নাহয় রুপের মায়া জালে ভাইকে কখন ফাঁসিয়ে ফেলে!দেখোনি আগে কেমন সাইড নিতো ওর”

নিহার কথায় রুশির পিলে পর্যন্ত জলে উঠলো, ওর পালক ভাই নিহাল যাকে ও কোন কালেই পছন্দ নয়। তার সুদর্শন চেহারার পেছনে লুকিয়ে আছে আস্ত এক লম্পট। ছোট থেকে আদরের বাহানায় অসংযত স্পর্শ করার যেনো তার অভ্যস হয়ে গিয়েছে, প্রথম প্রথম না বুঝলেও পরে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলেছে। এখন সুযোগ পায়না বলে রুশি এখন তার চরম শত্রু।
রুশি দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে পাতিল সুন্দরমতে রান্না ঘরে রাখলো তারপর নিজের জীর্ণশীর্ণ কামরার দিকে রওনা হলো,দরজার সামনে দাঁড়িয়ে নরম স্বরে বললো

“অন্নকে সম্মান না করলে অকালে তা কপাল থেকে চলে যায়”

তারপর রুমে ঢুকে গেলো আর দরজা লক করে দিলো, বাইরে থেকে নাহার বেগম মানে ওর পালক মায়ের কন্ঠ ভেসে আসছে

“আমারে তর চাকরানী মনে হইতাছে, রাইতের খাওন কে রানবো?”

কিন্তু রুশির সেই কথার জবাব দেয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে বা অধিকার কোনটিই নেই কারণ ও পালক সন্তান, দুমুঠো খাবার দিচ্ছে তাতেই অনেক। বিছানায় গা এলিয়ে দিলো, কয়েকদিন ধরেই শরীর ভালো যাচ্ছিলো না তাই টিউশনির টাকা পেতেই ডাক্তারের কাছে গেলো কিন্তু এতোবড় কিছু হয়ে যাবে ভাবতে পারেনি। এই বাচ্চাকে ও পৃথিবীর মুখ কি করে দেখাবে যেখানে নিজের থাকারই নিশ্চয়তা নেই?তাছাড়া বিয়ে ছাড়া কোন সন্তান জন্ম দেয়াকে এই সমাজ মেনে নিবে সেখানে মেয়েটার দোষ থাকুক আর না থাকুক। রুশি নিজের পেটের উপর হাত রাখলো, ও ভাবতেই পারছেনা ওর এই দেহে একটা ছোট্ট প্রান ধীরেধীরে বেড়ে উঠছে!

“তোর মা বড্ড অসহায় বাবু কিন্তু তুই চিন্তা করিস না, নিজের জীবন বাজি রেখে হলেও তোর কিছু হতে দিবে না তোর আম্মু। তুই শুধু আম্মুকে ছেড়ে যাস না”

#গুমোট_অনুভুতি
#লিখাঃ Liza Bhuiyan
#পর্ব_২

বিশাল বড় বিল্ডিং এর দশতলায় হেড বসের অফিস, সেই অফিসের দরজার সামনে দুজন বডিগার্ড মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে, বসের এসিসট্যন্ট নিশ্চুপ ভাবে দাঁড়িয়ে বসের মতিগতি বুঝার চেষ্টা করছে কিন্তু ঠিক ধরতে পারছে না। প্রায় এক ঘন্টা যাবৎ তার সামনে থাকা ব্যাক্তিটি চেয়ারে মাথা এলিয়ে একদৃষ্টিতে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে, সাহস করে যেই কয়বার তাকিয়েছে সেই কয়বারের একবারো তাকে চোখের ফলক ফেলতে দেখেনি।

আজ প্রায় একমাস ধরে নিজের বসকে অবসার্ভ করছে সাহিল, এর পুর্বে এতোটা শান্ত কখনো দেখেনি তাকে। যদিও তিনি খুব একটা কথা বলেন না কিন্তু তার মুখে একটা মিষ্টি হাসি থাকতো যা এই এক মাসে চোখে পড়েনি! সারাক্ষণ মনে হয় বস কোন একটা বিষয় নিয়ে খুব চিন্তিত, কিছু একটা তাকে ভেতরে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। সাহিলের খুব ইচ্ছে করে কারণ জানতে কিন্তু সাহসে কুলায় না, কিছুক্ষণ বাদেই দরজায় নক পড়ে যার দিকে তার বস আগ্রহ নিয়ে তাকায় এবং সাহিলকে ইশারা করে নিয়ে আসতে। সাহিল হাতে একটা ফাইল নিয়ে ঢুকে আর তা নিজের বসের হাতে দেয়।

সাহিলের সামনে থাকা ব্যাক্তিটি সেই ফাইলটি হাতে নেয় আর ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থাকে সামনে থাকা ছবিটির দিকে। এই চেহারা সে চাইলেও ভুলতে পারবে না! পাশে বড় বড় অক্ষরে লিখা
“রুশানি আনাম”, বয়স:১৯ বছর, অনার্স ফার্স্ট ইয়ার, আরো অনেক ইনফরমেশন। ছোট থেকে এখন পর্যন্ত সকল তথ্য এতে দেয়া এমনকি দত্তক নেয়ার কথাও উল্লেখ আছে।

ব্যাক্তিটির কপাল কিছুটা কুচকে গেলো তারপর ফাইল বন্ধ করে মুখ শক্ত করে বসে রইলো। তারপর সাহিলের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বললো যাতে সাহিল বেশ অবাক হলো। কিছুটা ইতস্ততভাবে বলে উঠলো

“বস আপনি সত্যিই এমনটা করবেন? আই মিন যদি মেডাম…”

“তোমাকে যা বলা হয়েছে তাই করো সাহিল! আর হ্যা এই খবর তুমি আমি ছাড়া তৃতীয় ব্যাক্তি যেনো না জানে”

সাহিল মাথা নাড়ালো তারপর বসের কথামতো বেরিয়ে গেলো,এই প্রথমবার মনে হলো ওর বস যা করছে তা ঠিক করছে তো! যদি এটা করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হয়ে যায়?

_____________________

আজ সকাল থেকে রুশির শরীরটা ভালো যাচ্ছেনা, সকাল থেকে বেশি কিছু পেটে কিছু পড়েনি, ধরতে গেলে কিছুই মুখে দিতে পারেনি কেমন গন্ধ গন্ধ লাগে সবকিছু। ঘরের সব কাজ সেরে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লো টিউশনির জন্য, যদিও শরীরে কুলাচ্ছিলো না কিন্তু কালকে টিউশনির নাম করে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলো তাই আজ গ্যাপ দেয়া সম্ভব নয়। তিন নাম্বার টিউশনি শেষ করে বাসার দিকে এগুচ্ছে, এখন প্রায় বিকাল, সুর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে, কিছুটা শীতল আবহাওয়া তাই হাটতে ভালো লাগছে।

ওদের বাড়িটা কিছুটা গ্রামের মতো, এখানে ঘরগুলো ইটের তৈরি হলেও মানসম্মত নয়। রুশির পালক বাবা দুবছর আগে এই জীর্ণশীর্ণ বাড়িটা কিনেছেন মোটামুটি ভালো দামেই। দেখতে যেমনি হোক ঢাকা শহরের বাড়ি মানে আগুনের মতো দাম!রুশি কাঁধের ব্যাগটা শক্ত করে চেপে ধরলো, পা এগুতে না চাইলেও আরেকটু হাটতে হবে। সামনের গলি পার হলেই ওদের ছোট্ট বাড়ি ঠিক ওর না ওর পালক বাবার বাড়ি। রুশি ধীর পায়ে সেদিকেই এগুচ্ছে কিন্তু হঠাৎ সামনে কালো কিছু দেখে দাঁড়িয়ে গেলো। মাথা তুলে একজন কালো পোশাকধারী লোক দেখতে পেলো। ঠিক একজন না বরং বেশ কয়েকজন, তবে সামনে থাকা লোকটির হাতে সাদা কিছু একটা। লোকটি ওর দিকে চেয়ে আছে মনে হচ্ছে কিছু মেলানোর চেষ্টা করছে। রুশির বাড়তি ঝামেলা মনে হলো তাই পাশ কাটিয়ে যেতে নিলেই লোকটি আবার ওর সামনে দাঁড়ালো আর মাথা নিচু করে বললো

“মিস রুশানি, প্লিজ আপনি আমাদের সাথে আসুন”

“আপনাদের সাথে যাবো মানে?কে আপনারা? আমার রাস্তা ব্লক করছেন কেনো?”

“দেখুন আমরা কারা তা আপনি গেলেই বুঝতে পারবেন। এটা আমাদের বসের অর্ডার আপনাকে সাথে নিয়ে যেতে হবে”

“আপনাদের বসকে আমি চিনিনা, অযথা বিরক্ত করবেন না আমায় নাহয় চেঁচিয়ে রাস্তায় মানুষ জড়ো করবো”

রুশির চড়া কন্ঠ কিছুটা কাজে দিয়েছে বলে মনে হয়েছে, সেই লোকটি কিছুটা দমে গিয়েছে আর ফোন বের করে কিছু একটা করছে। কিন্তু তা দেখার সময় ওর নেই, দ্রুত পায়ে হাটা শুরু করলো। কিছুদূর যেতেই মুখের উপর কাপড় জাতীয় কিছু টের পেলো, মনে হচ্ছে মাথা ঝিমঝিম করছে। ওকে কেউ উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এতোটুকু টের পেলেও আর কিছুই মনে নেই।

চোখখুলে নিজেকে একটা রুমে আবিষ্কার করলো, রুমটা ঠিক বেডরুম নয় কিছুটা অন্যরকম। ভালো করে খেয়াল করে বুঝতে পারলো এটা একটা অফিস আর ও এই অফিসে থাকা সোফায় শুয়ে আছে। ঝটপট উঠে বসলো রুশি, মাথা এখনো ঝিমঝিম করছে কিছুটা। যদি সঠিক ভাবে এনালাইসিস করস হয় তাহলে ওকে দিনের আলোতে কিডন্যাপ করা হয়েছে কিন্তু কিডন্যাপ করলেতো কোন অন্ধকার কালো জায়াগায় নিজেকে আবিষ্কার করার কথা, হয়তো চেয়ার টেয়ারে বেধে রাখবে তা না করে এতো সুন্দর জায়াগায়!
আর তাছাড়া ওকে কিডন্যাপ করে লাভই বা কি?নাকি ওকে বড়োলোকের মেয়ে ভেবে ভুলে কিডন্যাপ করে নিয়ে এসেছে?এসব সাত পাঁচ ভাবছিলো রুশি ঠিক তখনি একটা শব্দ কানে এলো

“মিস রুশানি রাইট?”

রুশি পাশে তাকিয়ে একজন সুদর্শন পুরুষকে দেখতে পেলো, কম্পলিট ব্লাক স্যুট পড়া, গালে খোঁচাখোঁচা দাড়ি তবে বিশেষত্ব হচ্ছে বাদামি চোখদুটো যাতে হাজারো মায়ার ভীড়!কিছুক্ষনের জন্য রুশির মনে হলো কোন দক্ষ কারিগরের হাতে আঁকা দামি পেইন্টিং দেখছে। এতো সুদর্শন ছেলে দেখেছে বলে ওর হয় না, আর কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলে নির্ঘাত ক্রাশ খাবে হয়তো কিন্তু নিজেকে দমিয়ে নিলো। কিছুক্ষণ একটা ছেলের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকার জন্য নিজেই যেনো লজ্জা পেলো। এতো বেহায়া কবে থেকে হয়ে গেলো ও!
কিন্তু কিছু একটা ভেবে আবারো তাকালো সেদিকে, এই চেহারা খুব চেনা চেনা লাগছে। রুশির চোখে মুখে বিস্ময়ের ছাপ যেনো অপ্রত্যাশিত কিছু দেখে ফেলেছে। মুখ থেকে অস্ফুট স্বরে বললো

“সায়ান জামিল খান!”

তারপর নিজের তর্জনী আংগুল ছেলেটির দিকে এক প্রকার ছুড়ে বলে উঠলো

“আপনি সায়ান জামিল খান তাইনা?খান গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিস এর মালিক?”

এই লোকটিকে কেনো চিনবে না রুশি?রুশি যে ভার্সিটিতে পড়াশোনা করে সেখানেই এই লোকটিও পড়াশোনা করেছে। যেহেতু ইয়াং তারউপর সাকসেসফুল তাই প্রায়ই সায়ানকে নিয়ে আলোচনা এমনকি শিক্ষকরাও সবাইকে তার মতো সফল হতে অনুপ্রেরণা দেয়। খান গ্রুপ ইন্ডাস্ট্রি যখন দেউলিয়া হয়ে যাবে তার ঠিক পুর্ব মুহুর্তে সায়ান জামিল খান এটার হাল ধরেন আর গত পাঁচ বছরে এটি দেশের নাম্বার ওয়ান ইন্ডাস্ট্রি। কিভাবে এটা সম্ভব হয়েছে কেউ জানেনা কিন্তু গত বছর সায়ান জামিল খান বেস্ট ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট হিসেবে “ইউথ আইকন” এওয়ার্ড পেয়েছে আর দেশের হাজার মেয়ের ক্রাশ। সবার মুখে প্রশংসা শুনে রুশির ইচ্ছে ছিলো তার সাথে দেখা করার কিন্তু সেটা এতো তাড়াতাড়ি পুরণ হবে ভাবতেই পারেনি।ওয়েট এতোবড় একজন ব্যাক্তি ওকে কিডন্যাপ করেছে ওকে?কি চায় সে?

রুশির ছোট্ট মাথা একসাথে এতো কিছু নিতে পারছে না, যেনো হ্যাং হয়ে গেছে। রুশি মাথা চেপে ধরে বিড়বিড় করছে

“এটা স্বপ্ন, এই সব স্বপ্ন। বাস্তবতার সাথে কোন মিল নেই”

#চলবে
(আস্তে আস্তে সব বলা হবে তাই আশাকরি একটু ধৈর্য সহকারে পড়বেন)

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ