কুহেলিকা পর্ব-১৮

0
707

#কুহেলিকা (পর্ব-১৮)
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ

দিশা লোভ সামলাতে না পেরে আকাশের চুলে হাত দিতেই আকাশ ভয়ানক ভাবে রেগে গিয়ে দিশার গালের মধ্যে সজোড়ে একটা থাপ্পড় মারে। দিশা আকাশের হাতে থাপ্পড় খেয়ে টাল সামলাতে না পেরে বিছানার উপরে চিত হয়ে পড়ে। আর আকাশ হায়েনার মতন দিশার শরীরের উপরে উঠে দু’হাত দিয়ে দিশার গলা চেপে ধরে। দিশার দম বন্ধ হয়ে আসছে। নিশ্বাস নিতে পারছে না সে। আকাশ দিশার গলায় এতো জোরে চেপে ধরেছে, যে দিশার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেছে। দিশা অশ্রুভেজা দৃষ্টিতে বাচ্চা শিশুর মতন আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আর চোখের ভাষায় মিনতি করছে তাকে ছেড়ে দিতে। কিন্তু আকাশ দিশার উপরে মায়া না দেখিয়ে দিশার গলা আরো জোরে চেপে ধরে। মনে হচ্ছে যেনো আজকে আকাশ দিশাকে মেরেই ফেলবে। আকাশের বিন্দু পরিমাণ মায়া হচ্ছে না দিশার জন্য। পশুর ন্যায় খাবলে ধরে রেখেছে দিশার গলা। চোখের পানিতে বিছানার অনেকটা জায়গা ভিজে গিয়েছে। দিশার কোনো সাড়াশব্দ নেই। বনের বাঘ যেমন শিকারের গলায় কামড়ে শিকারকে আধমরা বানিয়ে দেয়, আকাশ ও দিশার এমন অবস্থা করে দিয়েছি। দিশা চেয়েও গলা থেকে সাউন্ড বের হচ্ছে না। শরীরে নড়াচড়া করবার মতন শক্তি পাচ্ছে না। দিশা যেনো একটা মরা লাশ হয়ে পড়ে আছে। এভাবে মিনিট খানিক যাওয়ার পর আকাশ হুট করেই দিশার গলা ছেড়ে দিশার বুক থেকে শাড়ীর আঁচল টেনে সরিয়ে ফেলে। তারপর মাতালের মতন ঝাঁপিয়ে পড়ে দিশার বুকের উপরে। আকাশ উন্মুক্ত ভাবে দিশার বুকে স্পর্শ করতে শুরু করেছে৷ দিশা তাকে কোনো প্রকার বাঁধা দেয় না। আর দিবেই বা কি করে, হিংস্র পশুরা শিকারকে প্রথমে দূর্বল করে। তারপর জীবিত অবস্থাতেই তাদেরকে ভক্ষণ করে। আকাশ ও তাই করছে। দিশার সমস্ত শক্তি কাবু করে নিয়ে উন্মুক্ত ভাবে দিশার শরীরে স্পর্শ করছে। আকাশ দিশার বুকের সমস্ত জায়গায় নিজের ইচ্ছে মতন স্পর্শ করতে থাকে। আর দিশা মরা লাশের মতন শুয়ে শুয়ে কল্পনা করে,

–‘কেন মানুষটা আমার সাথে এমনটা করলো! উনি কি চাইলে আমি উনাকে স্পর্শ করতে দিতাম না! আমি তো মন থেকে সব কিছুই উনার নামে করে দিয়েছি। তাহলে কেন তিনি হিংস্র পশুর ন্যায় আচরণ করলো আমার সাথে। ভালোবাসা দিয়েও তো মানুষকে কাছে টানা যায়। আমায় তো পারতো ভালোবেসে কাছে টানতে। কিন্তু তিনি তা না করে পশুর মতন করছে আমার শরীর নিয়ে। আমার যে খুব কষ্ট হচ্ছে সেটা তিনি একটা বারের জন্যেও বুঝার চেষ্টা করলো না। অবশ্য করবেই বা কেন, আমি তো পতিতা। আমাদের মন বলতে কিছু আছে নাকি। টাকা ছুঁড়ে দিয়ে শরীরের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়বে। তারপর যতোক্ষণ না নিজের উত্তেজনা কমবে ততক্ষণ তারা শরীর টাকে চিবিয়ে খেয়েই যাবে। মানুষ টাকে আমি সবার থেকে আলাদা ভেবেছি। কিন্তু মানুষটা দেখি অন্যান্য পুরুষদের থেকে আরো ভয়ানক। আল্লাহ এটা কার পাল্লায় এসে পড়লাম আমি। জীবন তো এমনিতেই বিষাদময় ছিল। এখন এই লোক পুরোপুরি শেষ করে দিবে আমার।’

দিশা আকাশকে নিয়ে মনে মনে উল্টাপাল্টা ভাবতে আরম্ভ করে। অপরদিকে আকাশ দিশার বুকে স্পর্শ করতে করতে একটা সময় স্পর্শ করা বন্ধ করে দিশাকে ছেড়ে দিয়ে অদ্ভুত ভাবে কান্না করতে শুরু করে। আকাশের কান্নার আওয়াজ শুনে দিশার কলিজায় মোচড় দিয়ে উঠে। এতো সময় যেসব চিন্তা-ভাবনা করছিল সে আকাশকে নিয়ে, সেসব চিন্তা-ভাবনা হুট করেই মাথা থেকে গায়েব হয়ে যায়। আকাশের কান্নার আওয়াজ শুনে দিশার সাথে এতো কিছু হওয়া সত্বেও সে সেসব কিছুকে ভুলে গিয়ে আকাশের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। আকাশের কান্নার আওয়াজ যেনো দিশার কলিজায় গিয়ে লেগেছে।
শক্তি যুগিয়ে শোয়া থেকে উঠে স্বাভাবিক ভাবে বিছানায় বসে আকাশকে বলে,

–‘আপনি কাঁদছেন কেন? কি হয়েছে আপনার?’

আকাশ দিশার কথার কোনো উত্তর দেয় না। সে নিজের মতন কেঁদেই চলেছে। আকাশের নিরবতা দিশাকে অস্থির করে তুলছে। দিশা আবারো আকাশকে জিজ্ঞাস করে,

–‘আকাশ সাহেব কি হয়েছে বলেন না আমায়। আপনি এভাবে কাঁদছেন কেন? প্লিজ বলেন না আমায়। আপনার কান্না আমার একদম ভালো লাগছে না। বুকের ভিতরে এক ধরনের একটা পেইন হচ্ছে আমার। আপনার কাছে অনুরোধ করছি কান্নার কারনটা বলেন আমায়।’

দিশার রিকোয়েস্ট আকাশ এবার মুখ খুলে।

–‘দিশা প্রভাকে দেখলাম এখান থেকে বেরিয়ে আবারো সেই ছেলেটার সাথে নিষিদ্ধ নগরীতে গিয়েছে।’

–‘হায়রে দুনিয়া। জানেন আমাদের পল্লীর মানুষরা একটা কথা বলে। নারীর অল্প প্রেমে নাকি পুরুষ পাগল হয়। আর পুরুষের গভীর প্রমেও নারীরা মজা লয়। আচ্ছা যাই হোক বাদ দেই সেসব কথা। কিন্তু আপনি এটা বলেন তো, যে আপনি কি ভাবে আর কোথায় দেখেছেন সেই মেয়েকে?’

–‘অফিসে যাওয়ার সময় দেখলাম সেই ছেলেটার হাত ধরে পল্লীতে যাচ্ছে।’

–‘তো আপনি কষ্ট পাচ্ছেন কেন? আপনি তো প্রভাকে আর ভালোবাসেন না। সে যার সাথে যা ইচ্ছে হয় করুক। আপনি কেন বেহুদা ঐ মেয়ের জন্য কষ্ট পাচ্ছেন বলেন তো?’

–‘দিশা আমি জানিনা আমি কেনো কষ্ট পাচ্ছি! প্রভা যাই করুক না কেন আমার কোনো কিছু যায় আসে না। কিন্তু তারপরেও আমার কেন জানি সহ্য হচ্ছে না সেই ছেলের সাথে প্রভাকে পল্লীতে যেতে দেখে। কিন্তু আমার কেন জানি সহ্য হচ্ছে না সেই ছেলের সাথে প্রভার রংতামাশা গুলো। আমি যেনো কল্পনা করতে পারছি তাদের অশ্লীল দৃশ্য গুলোকে। প্রভা আর সেই ছেলেটা একে অপরের সাথে পল্লীর একটা কক্ষে শারীরিক মেলামেশা করবে, আমি যেনো সেই দৃশ্য টা অদ্ভুত ভাবে আমার চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। দিশা আমার কেন জানি সহ্য হচ্ছে না প্রভার আর সেই ছেলের ঘনিষ্টতা। বুকের ভিতরটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে। ভিতরটা খা খা করছে। আমি কেন জানি ওসব কিছুকে মানতেই পারছি না। আমি এখন কি করবো দিশা? আমায় একটা উপায় বলে দাও। রাগের তাড়নায় একটু আগে তোমার গলা চেপে ধরে তোমায় ও কতোটা কষ্ট দিলাম। যেটা আমার দেওয়া উচিৎ হয়নি। দিশা আমি নিজেকে সামলাতে পারছি না। দোহাই লাগে একটা রাস্তা আমায় তুমি বলে দাও।’

–‘উপায় কি সত্যিই বলে দিব?’

–‘হুম বলে দাও।’

–‘উপায় বলে দেওয়ার পর আপনি কিন্তু আমায় কিছু বলতে পারবেন না?’

–‘ঠিক আছে তোমায় কিছুই বলবো না। আমি শুধু মুক্তি চাই এই কষ্ট থেকে।’

–‘আপনি আমার মাঝে ডুব দিন। আর আমায় নিয়ে পুরোপুরি ভাবে মেতে উঠুন। তাহলে আশা করি ঐ মেয়ের কথা আপনার আর মনে পড়বে না।’

–‘দিশা এতো সময় তো মেতেই ছিলাম তোমাকে নিয়ে। হায়েনার মতন স্পর্শ করেছি তোমার বুকে। কই তারপরেও তো ভুলতে পারছি না প্রভার কথা আমি।’

–‘আপনার ঐ মেতে থাকাকে মেতে থাকা বলে না। আপনি একটু আগে নিজের রাগ ঝেড়েছেন আমার উপরে। আপনি যদি সত্যিই আমায় নিয়ে মেতে উঠতেন, তাহলে এতো সময়ে আপনার সাথে আমার অনেক কিছুই হয়ে যেতো।’

–‘তো কি ভাবে মেতে উঠতে বলছো তোমায় নিয়ে?’

–‘আমি দেখাচ্ছি।’

–‘হুম।’

দিশা আকাশকে খপ করে জড়িয়ে ধরে আকাশের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিশিয়ে দেয়। একটু আগে এতো কিছু হওয়ার পরেও দিশা সেসব কিছুকে পরোয়া না করে আকাশকে জড়িয়ে ধরে তার ঠোঁটে চুমু খেতে আরম্ভ করে। দিশার স্পর্শে আকাশের শরীরে মাদকতা এসে ভর করতে শুরু করেছে। এভাবে কিছু সময় যাওয়ার পর আকাশ কেমন যেনো হয়ে যায়। সে যেনো নিজের শরীরের তালগোল পাকিয়ে ফেলতে শুরু করেছে। এবার আকাশ ও দিশাকে জড়িয়ে ধরে তার নেশায় মেতে উঠে। আকাশ দিশার ঠোঁটে পাগলের মতন স্পর্শ করতে শুরু করে। বেশ কিছুক্ষণ স্পর্শ করার পর আকাশ শরীর থেকে শার্ট খুলে ফ্লোরের উপরে ছুঁড়ে ফেলে। দিশা আকাশের শার্ট খুলে ছুঁড়ে ফেলা দেখে খুশি হয়ে যায়। কারন তার মনের ভিতরে অন্য কিছু ঘুরছে। সে চায় আকাশ তাকে নিজের একদম কাছে টেনে নিক। সে আর কতো সামলাবে নিজেকে। কখন কে কি অঘটন ঘটিয়ে বসে তার সাথে উপর ওয়ালাই ভালো জানেন। পল্লীর মেয়ে বলে কথা। এছাড়া আকাশ তাকে নিজের কাছে টেনে নেওয়ার পর আকাশের মুখের এক্সপ্রেশন সে দেখতে চায়। সে দেখতে চায় আকাশ তাকে নিজের কাছে টেনে নেওয়ার পর কেমন অদ্ভুত আচরণ করে। অপরদিকে আকাশ ও শার্ট ছুঁড়ে ফেলে তৈরী হয়ে উঠে দিশাকে পরিপূর্ণ ভাবে নিজের কাছে টেনে নেওয়ার জন্য। কিন্তু পরক্ষণেই আকাশ কিছু একটা ভেবে নিজেকে সামলে নিয়ে থেমে যায়। আকাশের থেমে যাওয়া দেখে দিশা প্রশ্ন করে,

–‘কি হলো থেমে গেলেন যে?’

–‘দিশা আমার মনে হয় না প্রভার থেকে পাওয়া আঘাত ভুলতে তোমার সাথে এসব করা উচিৎ। কারন না হয়তো আমিও তার মতন হয়ে যাবো। সে আমার উপরে কোনো কারনে অসন্তুষ্ট হয়ে অন্য পুরুষ ধরেছে। আর আমিও তার আচরণে অসন্তুষ্ট বা ব্যথিত হয়ে তোমার সাথে শারীরিক ভাবে লিপ্ত হতে চাচ্ছি। আমি এমন করলে তার আর আমার মাঝে কোনো তফাৎ থাকবে না। আর তাছাড়া তোমার সাথে এসব করবার মতন সঠিক সময় হয়নি এখনো। সঠিক সময় হলে আমি নিজেই তোমাকে কাছে টানবো।’

–‘ঠিক আছে বুঝলাম। কিন্তু নিজের কষ্ট গুলোকে লাঘব করবেন কি করে এখন?’

–‘তোমায় জড়িয়ে ধরে তোমার বুকে শুয়ে বেশ লম্বা একটা ঘুম দিব। আর তুমিও আমার সাথে শুয়ে থাকবে। এক ঘুমে রাতের বেলায় ঘুম থেকে উঠবো।’

–‘ঠিক আছে যেমনটা আপনার ইচ্ছে।’

এরপর আকাশ দিশাকে জড়িয়ে ধরে দিশার বুকে মাথা রেখে বিছানায় শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করে। দিশা আকাশের চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। এই চুলে হাত দেওয়ার জন্য আকাশ কি জঘন্য আচরণ টাই না করেছে দিশার সাথে। কিন্তু দিশা তার পরেও আকাশের চুলে স্পর্শ করতে থাকে। আকাশ এবার কিছুই বলে না দিশাকে। বরং সে দিশার স্পর্শ অনুভব করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ে। রাতের বেলায় ঘুম থেকে উঠে আকাশ বাহির থেকে গিয়ে খাবার কিনে আনে। এরপর দিশাকে সঙ্গে নিয়ে খেয়ে আবারো শুয়ে পড়ে। এভাবেই সময় কাটছে তাদের। আকাশ নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করে প্রভার সমস্ত স্মৃতিকে ভুলে দিশাকে নিয়ে লয়াল হবার চেষ্টা করে। এরমধ্যেই কেটে যায় দুই-চার দিন। বহু কষ্টে প্রভাকে সে নিজের মন থেকে দূর করেছে। তবে এখনো পুরোপুরি ভাবে ভুলতে পারেনি। হয়তো আরো কিছুটা সময় পেরোলে আকাশ পুরোপুরি ভাবে প্রভাকে ভুলে যাবে। আকাশ যতোটুকু সম্ভব নিজেকে সামলে নিয়ে অফিস আর দিশার মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করছে। আকাশ অফিসে বসে বসে কাজ করছে। ঘড়ির কাঁটায় তিনটা বাজতে চলেছে। আকাশ আজ কাজের চাপে বাসায় যায়নি। যেদিন থেকে দিশাকে সে বাড়িতে নিয়ে এসেছি, সেদিন থেকে অফিস ছুটি হওয়ার আগেই সে বাসায় চলে যায়। তবে আজ অফিসে প্রচন্ড কাজ থাকায় বাসায় যাওয়া হয়নি তার। একেবারে অফিস ছুটি হলেই আজ সে বাসায় যাবে। চারটায় অফিস ছুটি। আর এক ঘন্টা পরেই অফিস ছুটি হবে। এমন সময় টেবিলের উপরে রাখা আকাশের ফোনটা সাউন্ড করে উঠে। আকাশ কাজ করা থামিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে একটা মেইল এসেছে। আকাশ স্বাভাবিক ভাবে ফোনটা হাতে তুলে মেইলটা চেক করে। তখনি সে দেখে প্রভা এবং সেই ছেলেটার বিয়ের পিক এবং তাঁদের দু’জনে ঘনিষ্ঠ কিছু ছবি কেউ একজন তাকে মেইল করেছে। আকাশ পুরো থমকে যায় ছবি গুলো দেখে। ঐ মুহূর্তেই আকাশের ফোনে আবার অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে ফোন আসে। আকাশ কোনোমতে নিজেকে সামলে নিয়ে ফোনটা রিসিভ করে। আকাশ ফোন রিসিভ করতেই প্রভা অপরপাশ থেকে বলে উঠে,

–‘দ্যাখ আমরা গতকাল বিয়ে করে নিয়েছি। তোকে আমাদের বিয়ের এবং বাসর রাতের কয়েকটা ছবি পাঠিয়েছি। আমার ইচ্ছে ছিল বাসর রাতের সমস্ত কিছু ভিডিও করে তোকে মেইল করবো। কিন্তু আমার স্বামী আমায় এটা করতে দিলো না। তাই এ যাত্রায় ছবি গুলোই খালি পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে সময় করে আরো কিছু পাঠাবো। এখন এগুলো দেখে অস্থিরতায় ভুগে মর। বলেছিলাম না তোদের জীবন আমি নড়ক বানিয়ে দিব। সবে মাত্র শুরু। বিয়েটা করে আমি নিজের পজিশনটা ঠিক করেছি। এরপর দ্যাখ কতো কি হয়। আমি আর ফারহান মিলে তোর আর সেই পতিতা মেয়েটার জীবন পুরো জাহান্নাম বানিয়ে দিব। আমায় প্রত্যখ্যান করার ফল তুই পাবি। আমায় রেখে সেই পতিতা মেয়ের সাথে রংতামাশা করার সখ চিরতরে বের করে দিব তোর ভিতর থেকে। এখন রাখলাম ফোন।’

প্রভা আকাশকে ফোন দিয়ে আজেবাজে কথা বলে ফোনটা রেখে দেয়। এদিকে আকাশের মাথায় কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। একে তো দিশার ঘনিষ্ট ছবি, তার উপরে আবার সে বিয়ে করে নিয়েছে ফারহানকে। এতোদিন কষ্ট করে আকাশ নিজেকে সামলে রেখেও কোনো কাজ হলো না তার। প্রভা ছবি গুলো মেইল করে দিয়ে আকাশকে আবার বিগড়ে দিয়েছে। রাগে সারা শরীর ফেটে যাচ্ছে আকাশের। টেবিল থেকে উঠে ধ্রামমম করে ফোনটা দেয়ালের মধ্যে ফিক্কা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে অফিস থেকে বেরিয়ে যায়। পুরোপুরি মাতাল হয়ে গেছে সে। অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়িতে বসে হাইস্পিডে গাড়ি ড্রাইভ করতে শুরু করেছে। কোনো গন্তব্য নেই আকাশের। অজানা পথ ধরে তুমুলবেগে গাড়ি ছুটিয়ে নিয়ে চলেছে। হয়তো আজকে আকাশের গাড়িই আকাশের গন্তব্য ঠিক করবে, যে আকাশ বাড়ি ফিরে যাবে না উপরে। কারন রাস্তা ঘাটের মানুষজন আকাশের গাড়ি চালানো দেখে ধরেই নিয়েছে এই ছেলে আজকে ভয়ানক কোনো দূর্ঘটনার শিকার হবে। অন্যদিকে দিশার মনে কু ডাকতে শুরু করেছে। এতো সময় হয়ে গেছে কিন্তু আকাশ এখনো বাড়ি ফিরেনি। দিশার মনটা কেমন কেমন যেনো করছে। হাজারটা চিন্তা এসে দিশার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। কোনো কিছুই তার ভালো লাগছে না। একটা সময় দিশা আর থাকতে না পেরে মাটিতে বসে বাচ্চাদের মতন কান্না করতে আরম্ভ করে….

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে