#কুহেলিকা (পর্ব-১৭)
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
–‘উনি গতকাল রাতে আমায় নিজের হাতে শাড়ী পড়িয়ে দিয়ে সেই শাড়ী গভীর রাতে উনি নিজেই খুলেছে। আমার বক্ষবন্ধনীর মাঝ বরাবর যেই গভীর খাঁজ আছে সেখানে চুমু খেয়েছে। আমায় আলতো পিঠে জড়িয়ে ঠোঁটে, কপালে, ঘাড়ে এমনকি আমার নাভীর গভীর খাদে অগণিত চুমু একে দিয়েছে। এছাড়া আরো উনি উনার পুরুষত্বের পৌরষ আমার দেহে চালান করে বংশ প্রদীপের রেজিস্ট্রি করেছে। আরো শুনবেন? শুনতে চাইলে বলছি। আমার বলতে আপত্তি নেই।’
–না,না,না আমি আর শুনতে চাই না কিছু। আমার কান ফেটে যাবে এর চেয়ে আর বেশি কিছু শুনলে। আমি এখন তোদের ঘর থেকে চলে যাচ্ছি। তবে তোদের দু’টোকে আমি পরে দেখে নিব।’
প্রভা দিশার কথাবার্তা শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে চলে যায়। প্রভা আর সহ্য করতে পারছিলো না আকাশ আর দিশার গোপন কথপোকথন। সেজন্য প্রভা ঘর থেকে বেরিয়ে চলে গেছে। প্রভার এমন আচরণে দিশা শব্দ করে হাসতে আরম্ভ করে। কিন্তু দিশা জানে না প্রভার ভিতরে সে দাবানলের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। যেই দাবানলের আগুনের উত্তাপে পরবর্তীতে তাদের দুটোকেই জ্বলতে হবে। দিশা হাসতে হাসতে মাটিতে লুটিয়ে পড়বে মতন অবস্থা। আকাশ দিশার কথাবার্তা শুনে তার দিকে আকস্মিক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। দিশার কথাবার্তা শুনে আকাশের শরীরেরে পশম পুরোপুরি দাঁড়িয়ে গেছে। দিশার সাথে সে কিছু না করা সত্বেও দিশা কি ভয়ানক ব্যাখ্যা দিয়ে বসলো গতকাল রাতের। তবে আকাশ বুঝে গেছে দিশার এইরূপ আচরণের আসল উদ্দেশ্য। কিছু সময় আকস্মিক দৃষ্টিতে দিশার দিকে তাকিয়ে থেকে স্বাভাবিক কন্ঠে দিশাকে বলে,
–‘দিশা এটা কি করলে তুমি? দিশা তুমি জানো না এই মেয়ে কতোটা ভয়ানক। সে তোমার জীবন পুরোপুরি বিষাদময় বানিয়ে দেবে। সুখে-শান্তিতে থাকতে দেবে না সে তোমায়। তুমি ওকে এসব বলে অনেক বড় ভুল করেছো।’
–‘আকাশ সাহেব আমি নিষিদ্ধ নগরের বাসিন্দা।
আর নিষিদ্ধ নগরীটা নড়ক থেকেও কোনো অংশে কম নয়। হিংস্র পশুর মতন সেই নগরীতে মেয়েদের শরীরকে চিবিয়ে খায় মানুষ। আপনার মতে এর চাইতেও বিষাদময় আরো কিছু আছে কি?’
–‘না নেই। কিন্তু তারপরেও…
–‘আপনি একদম টেনশন করবেন না। এমনিতেও আমি নড়ক থেকে উঠে এসেছি। আমি হাজার দুঃখ কষ্ট সয়ে অভ্যস্ত। আপনার প্রেমিকা আমার জীবনের সাথে যাই করুক না কেন আমার তাতে বেশি একটা ক্ষতি হবে না। কারন আমার অতীতের সময় গুলো আরো ভয়ানক ছিল। কিন্তু আপনি আমায় সেই নিষিদ্ধ নগরী থেকে বের করে এনেছেন। আমি এতেই সন্তুষ্ট। আপনার প্রেমিকা আমায় মেরে ফেললেও আমার আপত্তি নেই। তবে সে আপনার দিকে একটা আঙ্গুল তুললেও আমি তার খবর করে ছেড়ে দিব। সে জানে না আমি কি জিনিস। আমি কাপড় খুলতে অভ্যস্ত। সেটা হোক নিজের বা অন্যের। সে আপনার সাথে কিছু করার চেষ্টা করলে ওর শরীরের বস্ত্র আমি খুলে নিব। এরপর দেখবো কি করে মুখ দেখায় সে সমাজে।’
দিশার কথা শুনে আকাশের ভিতরটা খুশিতে ভরে যায়। কারন সে জীবনে এমন কাউকেই চেয়েছিল, যে কিনা নিজের সব টুকু দিয়ে তাকে ভালোবাসবে। যে কিনা তার জন্য গোটা পৃথিবীর মানুষের সাথে লড়াই করবে। বিপদে-আপদে তার ঢাল হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে। গোটা পৃথিবীকে এক পাল্লায় রেখে আকাশকে অন্য পাল্লায় রাখলে তার ভালোবাসার মানুষটা তাকে বেছে নিবে। বহু তালাশ করেছে সে প্রভার মাঝে এসব কিছু, কিন্তু প্রভা পুরোপুরি বিপরীত। প্রভা তাকে প্রায়োরিটি দেওয়া তো দূরের কথা, সে শরীর চর্চার জন্য অন্য লোকের সাথে বিছানা ভাগ করেছে। হাজার ভালোবাসার পরেও প্রভা তার সাথে ছলনা করেছে। তবে বর্তমানে সে দিশার মধ্যে নিজেকে খুঁজে পেতে শুরু করেছে। যেই আশাটা সে প্রভাবে নিয়ে করেছিল, বর্তমানে সে দিশার মধ্যে সেটা দেখতে পাচ্ছে। প্রভাকে সে চেয়েও নিজের মনের মতন বানাতে পারেনি, অথচ দিশাকে নিয়ে সে কোনো আশা না রাখা সত্বেও দিশা তার মনের মতন। খুশিতে আত্মার হয়ে দিশাকে নিজের বুকে টেনে নিয়ে বলে,
–‘হয়েছে থাক। তোমাকে কিছুই করতে হবে না। এমনিতেই তোমার শরীর অসুস্থ। এর উপরে অহেতুক চাপ উঠানোর কোনো প্রয়োজন নেই। প্রভার বিষয়টা তুমি আমার উপরে ছেড়ে দাও। তাকে আমি সামলে নিব।’
–‘আকাশ সাহেব আপনি বলতেই তো আর হবে না। আমারো কিছু দায়িত্ব কর্তব্য আছে। আমি আমার সেই দায়িত্ব কর্তব্য পালনে কখনো পিছু হাঁটবো না। একদম মেরে তক্তা বানিয়ে দিব আপনার প্রিয়তমাকে। চেনে না সে আমায়। একবার রেগে গেলে তার উত্তেজনা চিরতরে থামিয়ে দিব আমি।’
–‘দিশা আমার পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলে তখন তুমি আমার পক্ষে লড়াই করো। এখন খেতে চলো। এরপর তুমি বিছানায় শুয়ে রেস্ট করবে।’
–‘আচ্ছা।’
আকাশ দিশা দু’জনে মিলে দুপুরের খাবার খেয়ে নেয়। এরপর আকাশ দিশাকে নিয়ে এসে বিছানায় শুয়ে পড়ে। আকাশ দিশাকে নিজের বুকে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। অপরিদকে দিশাও চুপটি করে আকাশের বুকে শুয়ে আছে। দুনিয়ার পরম শান্তি যেনো আকাশের বুকে। এজন্য সে চুপচাপ আকাশের বুকে শুয়ে সময় টাকে উপভোগ করছে। এভাবে কিছুটা সময় যেতেই অফিসের ম্যানেজার আকাশকে ফোন দেয়। আকাশ বিছানার পাশের টেবিল থেকে ফোনটা হাতে তুলে নিয়ে ফোন রিসিভ করে।
–‘স্যার আপনি কি খুব বেশি ব্যস্ত?’
–‘নাহ ব্যস্ত না বলুন।’
–‘স্যার আমাদের নতুন প্রজেক্টের ফাইলটা রেডি করেছি। আপনি যদি একবার ফাইলটা দেখে সিগনেচার করে দিতেন তাহলে ফাইলের কাজটা সম্পন্ন হয়ে যেতো।’
–‘ঠিক আছে আমি অফিসে আসছি।’
–‘স্যার আপনি কষ্ট করে আবার অফিসে আসবেন? আমিই নিয়ে আসি ফাইলটা আপনার বাসায়।’
–‘নাহ থাক প্রয়োজন নেই। এমনিতে আজ আমি তাড়াতাড়ি অফিস থেকে চলে এসেছি। অফিসে আপনি বাদে আর কেউ নেই। এখন যদি আপনিও অফিস থেকে বেরিয়ে পড়েন তাহলে কর্মচারীরা কাজে হেয়ালি করতে পারে। তাই আপনি অফিসে থেকে সবার দেখভাল করুন। আমিই আসছি ফাইলটা নিতে।’
–‘ঠিক আছে স্যার।’
আকাশ ফোন কেটে দেয় ম্যানেজারের সাথে কথা বলে। ফোন কাটার পর দিশাকে বলে,
–‘দিশা তুমি একটু বাসায় থাকো। আমার একটা কাজে অফিসে যেতে হবে। আমি আবার জলদিই ফিরে আসবো।’
–‘ঠিক আছে সাবধানে যাবেন। আর জলদিই বাসায় ফিরে আসবেন।’
–‘আচ্ছা।’
দিশাকে বাড়িতে রেখে আকাশ ফাইলটা আনার জন্য অফিসে চলে যায়। আকাশ বাড়ি থেকে বেরোতেই একজন বয়স্ক মহিলা এসে আকাশের বাড়ির দরজায় বেল বাজায়। বেলের আওয়াজ শুনে দিশা এসে দরজা খুলে। দিশা দরজা খুলতেই দেখে একটা বয়স্ক মহিলা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে৷ মহিলাটাকে দেখে দিশা প্রশ্ন করে,
–‘কে আপনি?’
–‘আমি আকাশের আম্মু।’
দিশা কিছুটা চমকে উঠে। তবে পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে আকাশের আম্মুকে সালাম দিয়ে ঘরের ভিতরে আসতে বলে। আকাশের আম্মু ঘরে প্রবেশ করে ঘরের চারপাশটা দেখতে থাকে। আর দিশা মাটির দিকে তাকিয়ে রয়েছে। কারন দিশার কাছে কেমন যেনো লজ্জা লাগছে আকাশের মায়ের চোখের দিকে তাকাতে। আকাশের মা পুরো ঘর টাকে এক নজর দেখে দিশাকে বলে,
–‘বাহ বেশ সুন্দর করে সাজিয়েছে ঘর টাকে আকাশ। এখন খালি একটা সংসার গড়া বাকি। কয়েকজন বাচ্চা কাচ্চা খেলবে ঘরের মধ্যে। তারপর আমরা কখনো বেড়াতে আসলে বাচ্চা কাচ্চা গুলো দৌড়ে এসে দাদা- দাদি করে আমাদের কোলে লাফিয়ে উঠবে। কবে হবে এমনটা দিশা মা?’
দিশা চমকে উঠে আকাশের মায়ের কথায়। এমনিতেই সে লজ্জায় মাথা নুইয়ে রেখেছে। তার উপরে আকাশের মা আকাশের সংসার নিয়ে তাকে প্রশ্ন করছে। কেমন যেনো লাগছে দিশার। কি জওয়াব দিবে সে আকাশের মায়ের কথায়। তার কাছে তো কোনো উত্তর নেই। সে তো একটা প্রস্টিটিউট। আজ আছে কাল নেই। আকাশের পক্ষ হয়ে কি করে উত্তর দেবে সে আকাশের মায়ের কথার। কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না সে। অপ্রীতিকর একটা পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গেছে দিশা। কিছু বলতে চেয়েও দিশার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। আকাশের মা দিশার হাবভাব দেখে তার মনের অবস্থা বুঝে ফেলে। সেজন্য তিনি নিজেই দিশার কাছে গিয়ে দু’হাতে দিয়ে দিশার মুখ উপরে করে বলে,
–‘মা তোমার কিছুই বলতে হবে না। আমি বুঝে নিয়েছি তোমার ভিতরগত অবস্থা। আমি তোমায় এসব প্রশ্ন করে অপ্রীতিকর অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছি। মা তুমি কিছু মনে করো না। আমি জানি আকাশ তোমায় অনিশ্চিত ভাবে নিয়ে এসেছে। তার মতিগতির কোনো ঠিক নেই। সে আমাদেরকেও সেভাবে বলেনি। শুধু বলেছে তোমার মধ্যে সে মানসিক শান্তি খুঁজে পায়। কিন্তু বিশ্বাস করো আমি তোমাকে আকাশের বউ ভেবেই কথা গুলো বলেছি। দেখো মা তোমার অতীত নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই। আমার ছেলে যাকে নিয়ে খুশি থাকতে পারবে আমি তাকেই বউ বলে মেনে নিব। হ্যাঁ হয়তো আকাশের বাবা তোমায় এতো সহজে মেনে নিবে না। তবে আমি তোমায় নিজের ছেলের বউ বলে গ্রহণ করে নিয়েছি। আমি চাই তোমরা দু’জন বিয়ে করে সংসার শুরু করো। কারন এভাবে থাকলে সমাজের চোখে আমার ছেলে কালার হয়ে যাবে। সাথে তোমারো সম্মান নষ্ট হবে। তাই তোমরা দু’জন জলদিই বিয়ে করে নাও। এরপর দু’জনে মিলে সংসার শুরু করো।’
আকাশের মায়ের কথায় দিশার চোখে পানি চলে আসে। দিশা আকাশের মায়ের কথা শুনে শূন্যে ভাসছে। আকাশের মা তাকে যেসব বলেছে সে কোনোদিন এসব কল্পনাই করেনি। দিশার কান্না দেখে আকাশের মা আবারো দিশাকে বলে,
–‘কিরে মা কান্না করছিস কেন?’
দিশা এবার শব্দ করে কান্না করে দেয়।
–‘আরে পাগলি মেয়ে আমার কাঁদে না। বিশ্বাস কর আমিও চাই তুই আকাশের বউ হয়ে আমারে পরিবারে আগমন কর।’
–‘আমি এতোসব কখনো ভাবিনি। কারন আমি জানি আমার কপালে এতো সুখ নেই। মা মরা মেয়ের কপালে কি এতো সুখ থাকে নাকি।’
–‘এই মেয়ে একদম বাজে কথা বলবি না। তোর মা নেই তো কি হয়েছে? আমি তো আছি। আমিই তোর মা আজ থেকে। আর কখনো বলবি না তোর মা নেই। এবার দেখি চোখের পানি মুছে দিচ্ছি। আর একদম কান্না করবি না। আর শোন তোর জন্য আমি কিছু জিনিস নিয়ে এসেছি। জিনিস গুলোকে সামলে রাখবি। কারন এসব আমাদের বংশের স্মৃতি।
আকাশের মা দিশার চোখের পানি মুছে দিয়ে ব্যাগ থেকে গলার একটা স্বর্নের নেকলেস বের করে দিশার গলায় পড়িয়ে দেয়। দিশা এবার পুরোপুরি হতভম্ব হয়ে আকাশের মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। আকাশের মা দিশার গলায় স্বর্নের নেকলেসটা পড়িয়ে দিয়ে বলে,
–‘আমি তোকে নিজের ছেলের বউ বলেই মেনে নিয়েছি। এবার তুই আকাশকে রাজি করিয়ে বিয়েটা করে ফেল। আমি আর আমার ছেলেকে এভাবে মনমরা অবস্থায় দেখতে চাই না। প্রভা নামক মেয়েটা আমার ছেলেটাকে পুরো শেষ করে দিয়েছে।’
–‘মা আমি কখনোই আপনার ছেলেকে বিয়ের কথা বলতে পারবো না। কারন আমার সেই মুখটা নেই। উনি আমায় নোংরা একটা পরিবেশ থেকে উঠিয়ে এনে নিজের কাছে রেখেছে এটাই অনেক। তবে আমি আপনার ছেলেকে সব সময় সামলে রাখবো। আমি থাকতে কোনো বিপদ আপনার ছেলেকে স্পর্শ করতে পারবে না।’
–‘নিজের উপরে আস্থা রাখ। আমার ছেলে যখন তোকে নিজের কাছে রাখার মতন এতো বড় একটা রিস্ক উঠিয়েই নিয়েছে, তাহলে ধরে নে সে কখনোই তোর হাত ছাড়বে না।’
–‘মা আমিও চাই না উনাকে কখনো ছেড়ে যেতে। আমিও সব সময় উনার সাথেই থাকতে চাই।’
–‘আল্লাহ তোর মনের আশা পূরণ করুক। আচ্ছা আকাশ আসবে কখন?’
–‘মা তিনি অফিস থেকে দুপুরেই ফিরে এসেছে। কিন্তু একটু আগে কি একটা জরুরী কাজের জন্য আবার অফিসে গিয়েছে। বলেছে কিছু সময়ের মধ্যেই ফিরে আসবে।’
–‘আচ্ছা ঠিক আছে শোন আমি চলে গেলাম।’
আকাশ আসলে বলিস আমি এসেছিলাম।’
–‘কেন মা কিছু সময় থেকে গেলে হয় না। উনি হয়তো কিছু সময়ের মধ্যে এসেই পড়বে।’
–‘না রে মা আমার চলে যেতে হবে। কারন আকাশের বাবার চোখ ফাঁকি দিয়ে আমি এখানে এসেছি। আকাশের বাবা জানতে পারলে কষ্ট পাবে। তাই আমি চলে যাই। পরে আবার কখনো আসবো।’
–‘ঠিক আছে মা।’
–‘শোন আমার ছেলের ভালো করে খেয়াল রাখবি। কোনে কিছুতে যেনো সে কষ্ট না পায়।’
–‘মা আপনি চিন্তা করবেন না। আমি উনাকে দেখে রাখবো।’
–‘হুম এবার চললাম।’
আকাশের মা দিশার থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়। আধঘন্টা পর আকাশ বাড়িতে ফিরে আসে। আকাশ বাড়িতে ফিরে আসতেই দিশা আকাশকে জানায় তার মা এসেছিল। আকাশ দিশার কথা শুনে তাকে প্রশ্ন করে তার মা তাকে কি বলেছে। দিশা আকাশকে বেশি কিছু বলেনা। গলার নেকলেসটা দেখিয়ে শুধু এটুকুই বলে আকাশের মা তাকে নেকলেসটা পড়িয়ে দিয়ে গেছে। দিশার কথা শুনে আকাশ ও আর কিছু বলে না। চুপচাপ খাটে বসে ফাইলটা দেখতে শুরু করে। আকাশ অফিসে গিয়ে ফাইলটা বাসায় নিয়ে এসেছে। সমস্ত কিছু দেখে সিগনেচার করে ফাইলটা আগামীকাল অফিসে নিয়ে যাবে। ফাইলটা নিয়ে খাটে বসে মনোযোগ সহকারে কাজ করছে। আকাশের চুল গুলো ফ্যানের বাতাসে উড়ছে। আর দিশা চুপচাপ আকাশের পাশে বসে মুগ্ধ নয়নে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। ইশ কি সুন্দর করে আকাশের ছোট ছোট চুল গুলো ফ্যানের বাতাসে দুল খেয়ে বেড়াচ্ছে। দিশার খুব করে ইচ্ছে করছে আকাশের চুল গুলোতে হাত বুলিয়ে দিতে। কিন্তু আকাশ কি মনে করবে সেটা ভেবে দিশা সাহস করতে পারছে না। তবে দিশা একটা সময় লোভে পড়ে যায়। এতসব না ভেবে সাহস করে আকাশের চুলে হাত দিয়ে বসে। দিশার এমন আচরণ আকাশ হুট করেই ভয়ানক ভাবে রেগে গিয়ে দিশার গালের মধ্যে সজোড়ে একটা থাপ্পড় মারে। দিশা আকাশের হাতে থাপ্পড় খেয়ে টাল সামলাতে না পেরে বিছানার উপরে চিত হয়ে পড়ে। আর আকাশ হায়েনার মতন দিশার শরীরের উপরে উঠে দু’হাত দিয়ে দিশার গলা চেপে ধরে। দিশার দম বন্ধ হয়ে আসছে। নিশ্বাস নিতে পারছে না সে। আকাশ দিশার গলায় এতো জোরে চেপে ধরেছে, যে দিশার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেছে। দিশা অশ্রুভেজা দৃষ্টিতে বাচ্চা শিশুর মতন আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আর চোখের ভাষায় মিনতি করছে তাকে ছেড়ে দিতে। কিন্তু আকাশ দিশার উপরে মায়া না দেখিয়ে দিশার গলা আরো জোরে চেপে ধরে। মনে হচ্ছে যেনো আজকে আকাশ দিশাকে মেরেই ফেলবে…
চলবে…