#কুহেলিকা (পর্ব-৯)
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
–‘এই যে দ্যাখ আমার বউ। এই মেয়ের জন্যই আমি এখানে এসেছি। এখন তোর সামনে আমি ওকে নিজের কাছে টেনে নিব। আমি এখন তোর সামনেই ওর শরীরের হাজারটা অঙ্গে করবো। তুই খালি চোখ পাকিয়ে দেখে থাক। তুই যদি পারিস পরপুরুষ নিয়ে বিছানায় যেতে, তাহলে আমিও পারবো তোর সামনে এই মেয়ের শরীরে স্পর্শ করতে।’
আকাশ প্রভার সামনে দিশাকে স্পর্শ করবে এই কথাটা বলে শেষ করতে না করতেই আকাশ দিশাকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে প্রভার সামনেই দিশার ঠোঁট জোড়ায় পাগলের মতন চুমু খেতে আরম্ভ করে। দিশা আকাশের এমন কর্মকান্ডে বিস্মিত হয়ে যায়! যদিও দিশা এই নিষিদ্ধ নগরীর বাসিন্দা, তার কাছে এমন ছোটখাটো স্পর্শ কোনো মাইনে রাখে না। তবে তারপরেও দিশার কেমন যেনো একটা ফিল হচ্ছে। তার উপরে আকাশ তার ভালোবাসার মানুষের সামনেই দিশাকে নিজের বউ বলে দাবী করছে। ব্যাপারটা দিশার কাছে বেশ আনন্দদায়ক লাগছে। দিশা এক কল্পনার রাজ্য হারিয়ে গেছে। আর হারাবে নাই বা কেন, নিত্যদিন পল্লীতে অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করে। সবাই নিজের তাড়না মেটাতে আসে, কিন্তু এই প্রথম কেউ একজন পল্লীতে দাঁড়িয়ে পল্লীর এক রমণীকে নিজের বউ বলে দাবী করছে। আকাশের স্পর্শে দিশা পুরো নিজের হুঁশ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। “অপরিদকে প্রভা আকাশের এই দৃশ্য দেখে রেগে মেগে আগুন। তার ভিতরটা যেনো উত্ত্যক্ত লাভার মতন খলখল করছে। তার সামনেই তার ভালোবাসার মানুষটা অন্য কাউকে জোর গলায় বউ বলে দাবী করছে। শুধু তাই নয়, তার সামনেই দাঁড়িয়ে তার ভালোবাসার মানুষটা পল্লীর এক পতিতা নারীকে স্পর্শ করছে। প্রভা যেনো এই বিষয় টাকে কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছে না। অবশ্য যদিও সে নিজে সেম ভুলটাই করেছে, কিন্তু তার পরেও কেন জানি আকাশের সাথে অন্য মেয়েকে সে কোনো ভাবেই সহ্য করতে পারছে না। তার যেনো মনে হচ্ছে তার কলিজাটা হিংস্র পশুর ন্যায় বের করে কেউ চিঁড়ে ফুড়ে খেলা করছে। নিজেকে সে কোনো ভাবেই সামাল দিতে পারছে না। মাটি থেকে উঠে সোজা গিয়ে দিশার চুল ধরে টেনে তাকে আকাশ থেকে আলাদা করে বলে,
–‘এই মেয়ে তুই একদম আমার আকাশের গায়ে ঘেঁষবি না। সে খালি আমার। সে খালি আমার দেহতেই স্পর্শ করবে। আমি বাদে কোনো নারীকে স্পর্শ করতে দিব না আমি তাকে। তাই তুই আকাশ থেকে দূরে থাক। না হয়তো অনেক বেশি খারাপ হবে।
প্রভার আচরণ দেখে আকাশের মাথায় রক্ত উঠে যায়। সে সোজা গিয়ে প্রভার গালে সজোড়ে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিয়ে বলে,
–‘তুই কোন সাহসে দিশার চুল ধরে টান দিয়েছিস?’
–‘আকাশ তুমি পল্লীর একটা নোংরা মেয়ের জন্য আমার গায়ে হাত তুললে? তোমার কি একটুও হাত কাঁপলো না এমনটা করতে?’
–‘প্রভা মুখ সামলে কথা বল। না হয় থাপ্পড় আরো কয়েকটা লাগিয়ে দিব তোকে। আর তুই কি বললি? সে পল্লীর নোংরা মেয়ে? তাহলে তুই কি? তুই তো ওর থেকেও জঘন্য। সে তো টাকার বিনিময়ে মানুষের সাথে ওসব করে। আর তুই তো শারীরিক তৃপ্তি মেটাতে ফারহানের সাথে এমনটা করেছিস। তাহলে আমার হাত কাঁপবে কেন? তুই ভুল করেছিস তাই তুই সাজা পেয়েছিস।’
–‘আকাশ তুমি আমার মেরেছো ঠিক আছে, কিন্তু তাই বলে তুমি আমার সামনেই এই নষ্টা মেয়েটাকে চুমু খাবে?’
–‘সবে তো মাত্র চুমু খেয়েছি। আরো তো বহু কিছু এখনো বাকি আছে। সময় আসলে তাকে শুধু চুমু নয়, তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করবো। তার পুরো শরীরে আমি চুম্বন করবো। তার গর্ভে আমার সন্তান হবে।’
–‘আকাশ না তুমি এমনটা কখনোই করবে না। তোমার চাহিদা তুমি আমার সাথে মিটাও। কিন্তু এই মেয়েটার সাথে তুমি কোনো কিছুই করবে না। আকাশ আমি তোমাকে অন্য কারোর সাথে দেখতে পারবো না। আকাশ আমি ভুল করে ফেলেছি। আমি তার জন্য তোমার পা ধরে ক্ষমা চাইছি। তুমি প্লিজ এবারের মতন আমার ক্ষমা করে দাও।’
–‘প্রভা তোর মতন মেয়ের মুখে এসব ক্ষমা টমার কথা মানায় না। কারন নষ্টা এই মেয়ে না, নষ্টা হলি তুই। সে তোর মতন শারীরিক চাহিদা মিটাতে এসব করে না। তার আহার যোগাতে সে এমন করে। তোর সাথে তার আকাশ-পাতাল তফাৎ। তার থেকে তোর মনমানসিকতা বর্তমানে হাজার গুন বেশি অপরিষ্কার। তোকে গ্রহণ করা কখনোই আমার পক্ষে সম্ভব না।’
–‘আকাশ প্লিজ তুমি এমমটা করো না। তোমার যা ইচ্ছে হয় তুমি আমার সাথে করো। আমার মা/রো কা/টো যা ইচ্ছে হয় করো, কিন্তু শেষ একটা বার আমায় সুযোগ দাও।’
–‘বললাম তো সম্ভব না। তোর মতন নারীকে সুযোগ দিলে সুযোগের ও অপমান হবে। তুই নিজের খিদে মিটাতে এসব করেছিস। আর এই মেয়ে তার মনের তৃপ্তির জন্য আমার সঙ্গ দিচ্ছে। আমি কখনোই এই মেয়েকে ঠুকরে তোকে গ্রহণ করবো না।’
–‘আকাশ তার মানে তুমি আমায় আর গ্রহণ করবে না?’
–‘বললাম তো না।’
–‘তাহলে শুনে রাখো, আমিও তোমাদের দু’জনকে এক হতে দিব না। তোমাদের দু’জনের জীবনের সব চাইতে বড় কাটা হয়ে দাঁড়াবো আমি। তুমি আমার না হলে তোমাকে আমি কারোর হতে দিব না।’
–‘সে তোর যা করার করে নিস। আমিও দেখতে চাই তুই কি কি করতে পারিস। এবার চললাম। তোর সাথে অহেতুক কথা বলে নিজের সময় নষ্ট করতে চাচ্ছি না।’
আকাশ প্রভার সাথে কথা শেষ করে দিশাকে প্রভার সামনেই কোলে উঠিয়ে নিয়ে হাঁটা শুরু করে। আকাশের আচরণে প্রভার চোখ দিয়ে টলমল করে পানি পড়ছে। কিন্তু কি লাভ চোখের পানি ঝড়িয়ে। ভালোবাসার অপমান করে পরমপুরুষের সাথে রংতামাশায় লিপ্ত হলে তো এমনটাই হবে। প্রভা অশ্রুভেজা দৃষ্টিতে আকাশ আর দিশার দিকে তাকিয়ে আছে। আকাশ প্রভার দিকে আর দৃষ্টিপাত না করে সোজা দিশাকে কোলে উঠিয়ে নিয়ে হাঁটা দেয়। হাঁটতে হাঁটতে নিষিদ্ধ নগরী অতিক্রম করে গাড়ির সামনে এসে পৌঁছায়। গাড়ির সামনে পৌঁছানোর পর গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে দিশাকে একপাশে বসিয়ে দিয়ে সে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়ে। এরপর গাড়ি স্টার্ট করে নতুন বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। দিশাকে নতুন বাসা দেখানোর জন্যই শাড়ী পড়ে রেডি হয়ে থাকতে বলেছিল। আকাশ মনমরা হয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছে, কারন তার ভিতরেও প্রভার জন্য খারাপ লাগছে। যতোই হোক প্রভাকেও তো সে ভালোবাসতো। নিজেকে সামলে নেওয়ার বৃথা চেষ্টা চালিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছে আকাশ। অপরদিকে দিশা আকাশের পাশের সিটে বসে চুপচাপ এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। দিশা আকাশের মনের ভিতরে কি চলছে সেটা তার দিকে তাকিয়ে থেকে অনুভব করার চেষ্টা করছে। আকাশের মলিন চেহারা দিশাকে কিছুটা বুঝতে সাহায্য করেছে, কিন্তু মনের ভিতরে কি চলছে আকাশের সেটা এখনো দিশা বুঝে উঠতে পারেনি। দিশার নজর যেনো আকাশের চেহারা থেকে সরছেই না। এমন সময় আকাশ হুট করেই দিশাকে বলে উঠে,
–‘দিশা এভাবে তাকিয়ে না থেকে আমার কষ্ট তো কমাতে পারো।’
দিশা আকাশের কথা শুনে থতমত খেয়ে যায়!
দিশার স্বাভাবিক চাহনিটা পাল্টে গেছে। চোখ গুলো কপালে তুলে কপাল কুঁচকে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে দিশা। এমন সময় আকাশ দিশাকে আবারো বলে উঠে,
–‘বুঝো নি হয়তো আমার কথা। অবশ্য বুঝবে কি করে, আমি তো পরিষ্কার ভাবে তোমায় বলিনি। শুনো আমি তোমায় বলতে চাইছি তুমি আমার নিকটে এসে একদম গা ঘেঁষে বসো। যাতে করে তোমার শরীরের মাদকতা আমার ভিতর থেকে সমস্ত কষ্ট দূর করে দেয়।’
দিশা আকাশের কথা মতন চুপচাপ আকাশের কাছে গিয়ে বসে। এরপর আকাশকে বলে,
–‘আচ্ছা আপনি এমন উন্মাদ কেন বলেন তো?’
–‘তোমার এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে থাকলেও আমি তোমাকে সেটা দেওয়ার অবস্থায় নেই। তাই এখন এসব প্রশ্ন বন্ধ করে আমার আরো কাছে আসো।’
–‘আসলাম তো কাছে। আর কতো কাছে যাবো?’
–‘তোমার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আমার শরীরে স্পর্শ হয় মতন করে আমার কাছে এসে বসো।’
দিশা আকাশের কথায় কিছুটা লজ্জা পায়। তবে সে আকাশের কথা অমান্য করে না। আকাশের একদম গা ঘেঁষে গিয়ে বসে। এরপর দিশা আকাশকে বলে,
–‘হয়েছে এবার?’
–‘না হয়নি। আমার কোলে এসে বসো। তোমার শরীরের উষ্ণতা প্রয়োজন আমার।’
–‘না আমি আর কাছে যেতে পারবো না। কারন আপনি গাড়ি ড্রাইভ করছেন। আমি আপনার আরো ঘনিষ্ঠ হলে দেখা যাবে আপনি ড্রাইভ করা বাদ দিয়ে রেখে আমায় নিয়ে মেতে উঠবেন, যার ফলে গাড়ি এক্সিডেন্ট করে বসবে।’
দিশা দু’জনের ভালোর জন্যই আকাশকে কথা গুলো বলে, কিন্তু দিশার কথা শুনে আকাশের কেন জানি চরম রাগ উঠে যায়। আকাশ হুট করে গাড়ি থামিয়ে দিশার গালে সজোড়ে একটা থাপ্পড় মেরে দিয়ে বলে,
–‘এই পল্লীর মেয়ে, আমার কথার উপরে কথা বলার সাহস কি করে পেয়েছিস তুই? তোকে পুরো আমি টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছি। আমি কোনো কথা মুখ দিয়ে বের করা মাত্রই তুই সেটাকে চটাচট পালন করবি। কিন্তু তুই তা না করে আমার মুখের উপরে কথা বলিস?কতো বড় সাহস তোর? এখন চুপচাপ আমার কোলে এসে বসে আমায় দু’হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বুকে পড়ে থাক। না হয় থাপড়ে তোর গাল লাল করে দিব আমি।’
আকাশের ভয়ানক বার্তা শুনে দিশা চুপচাপ আকাশের কোলে বসে তাকে দু’হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে তার বুকে মাথা রাখে। আর আকাশ গাড়ি স্টার্ট করে চুপচাপ আবার ড্রাইভ করতে শুরু করে। অবশ্য সে চুপচাপ থাকলেও তার ভিতরটা কেন জানি রাগে ফেটে যাচ্ছে। সে চুপচাপ থেকে নিজের রাগের উপরে কন্ট্রোল পাবার চেষ্টা করছে। অপরদিকে দিশার ভিতরটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে। একটু আগে বলা আকাশের সমস্ত কথা যেনো দিশার কলিজাটাকে চিঁড়ে টুকরো টুকরো করে করে দিচ্ছে। চোখের কোনে পানি এসে জমা হয়েছে। এখুনি যেনো আকাশের বুক দিশার চোখের পানিতে ভেসে যাবে, কিন্তু দিশা আড়াল করে চোখের পানি মুছে নেয়। কারন তার কান্না করাটা মানায় না। সে এখন অন্যের ক্রয় করা পাত্রী। তার ক্রেতা এখন যেভাবে চায় সেভাবেই তার সাথে ব্যবহার করতে পারে। তাই নিজের কান্নাকে দমিয়ে চুপচাপ আকাশের বুকে পড়ে থাকে। এদিকে আকাশ গাড়ি ড্রাইভ করে তার বাবার দেওয়া বাড়ির সামনে এসে পৌঁছায়। বাড়ির সামনে পৌঁছানোর পর মিষ্টি গলায় দিশাকে গাড়ি থেকে নামতে বলে। আকাশ তার রাগের উপরে পুরোপুরি কন্ট্রোল নিয়ে নিয়েছে। দিশা আকাশের কথায় চুপচাপ আকাশকে ছেড়ে দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ায়। দিশার পর পর আকাশ ও গাড়ি থেকে নেমে দিশার হাত ধরে তাকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যায়। দিশা পুরো কাঠ-পুতলির মতন হয়ে গেছে। তার চেহারায় কোনো হাসি নেয়। আকাশের সাথেও সে কথা বলছে না। আকাশ তাকে যেমনটা করতে বলে সে তেমনটাই করছে। আকাশ দিশাকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গিয়ে পুরো বাড়ি ঘুরে ঘুরে দেখায়। আর কোথায় কি সেট করবে সেটা দিশাকে বলতে থাকে। দিশা চুপচাপ আকাশের কথা শুনে যায়। আকাশ দিশার মন খারাপের ব্যাপারটা কিছু সময় যেতেই বুঝে ফেলে। তাই আকাশ দিশাকে একটা জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিয়ে পিছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরে। এরপর সামনের দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে বলে,
–‘দিশা ঐ যে সামনে জায়গাটা দেখছো, সেখানে একটা ড্রেসিংটেবিল ফিট করবো। যার মধ্যে বিশাল একটা আয়না থাকবে। তুমি রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে সেই আয়নাটার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াবে, আর আমি তোমাকে পিছন থেকে ঠিক এভাবেই জড়িয়ে ধরে তোমার কাঁধে গলায় অগণিত চুমু খাবো। তুমি মাঝে মাঝে যখন আয়নাটার সামনে দাঁড়িয়ে সাজগোজ করবে, তখন আমি হুট করে এসে তোমার রূপের ব্যাপক প্রসংশা করবো। তখন তুমি লজ্জায় লাল হয়ে আমার বুকে মুখ লুকাবে।’
–‘হ্যাঁ আর না লুকালে তখন আমার চুল টেনে ধরে কয়েকটা থাপ্পড় মেরে বলবেন, তুই নিষিদ্ধ নগরীর মেয়ে। তোকে দিয়ে কিছুই হবে না।’
দিশার কথা শুনে আকাশের বুকের ভিতরে ছ্যাঁত করে উঠে। চটজলদি দিশাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে বুকের সাথে লেপ্টে জড়িয়ে ধরে। এরপর শান্ত গলায় বলে,
–‘প্রিয়তমা ক্ষমা করে দাও আমায়। আসলে ঐ সময় আমার মাথা ঠিক ছিল না। আমি আসলে তোমায় সেভাবে বলতে চাইনি। হুট করেই কি ভাবে যেনো আমার মুখ থেকে ওইসব কথা বেরিয়ে গেছে। প্লিজ তুমি আমায় ভুল বুঝো না দিশা। দিশা তুমি ছাড়া বর্তমানে আমার আর কেউ নেই। আমি তোমার মাঝে নিজেকে খোঁজার চেষ্টা করছি। তুমি যদি আমায় ভুল বুঝো, তাহলে আমার মরন হবে নিশ্চিত তুমি সেটা লিখে নাও।’
আকাশের কথায় দিশা হু…হু করে কেঁদে উঠে। তার ভিতরটা কেমন যেনো ধুপধুপ করছে আকাশের কথা শুনে। মনে হচ্ছে দিশার কলিজায় কেউ চাকু ঢুকিয়ে দিয়েছে। দিশার কান্না দেখে আকাশ দিশাকে বলে,
–‘দিশা কেঁদো না প্লিজ। তোমার কান্না আমার বুকে গিয়ে লাগছে।’
আকাশের কথা শুনে এবার দিশার রাগ উঠে যায়। তাই সে আকাশের বুকে কামড়ে দিয়ে বলে,
–‘বদ লোক তুই আমায় কাঁদিয়ে দিয়ে বলছিস না কাঁদার জন্য? আমায় এটা সেটা বলাতে আমার ততোটা খারাপ লাগেনি, যতোটা তোর মরনের কথা শুনে এখন লাগছে। এই বদ লোক তুই কি জানিস, আমার দুনিয়ায় তোর নাম করে ভূমিকম্প হচ্ছে? এই বদ লোক তুই কি জানিস, আমার দুনিয়ায় তোর জন্য বৃষ্টি হচ্ছে? জানিস তো না। অবশ্য জানবি কি ভাবে, তুই তো পাষাণ। মুখে যা আসে তাই বলে দিস। তোর কথায় কারোর হৃদয় ক্ষত হবে সেই খেয়াল কি তোর আছে?’
–‘দিশা আমার ভুল হয়ে গেছে। আগামীতে এমন কথা আর কখনোই বলবো না।’
–‘মনে থাকে যেনো কথাটা। তোর মুখ থেকে যদি আগামীতে এমন ধরনের কথা শুনি, তাহলে আমি নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিব।’
–‘এই না,না আর কখনো ওসব বলবো না।’
–‘মনে থাকে যেনো।
–‘হুম মহারানী মনে থাকবে।’
–‘এবার চলুন বাকি যেসব রুম দেখা হয়নি সেসব আমায় ঘুরে ঘুরে দেখাবেন। আর আমিও ক্ষমাপ্রার্থী তুই-তুকারী করার জন্য।’
–‘দিশা ক্ষমা চাওয়ার কিছুই নেই। কারন তোমার রাগটা আমার কাছে একদম খারাপ লাগেনি, বরং আরো ভালোই লেগেছে। তুমি মাঝে মাঝে আমার সাথে এভাবে তুইতোকারি করবে। এবার চলো বাকি রুম গুলো ঘুরে ঘুরে দেখি।’
আকাশ দিশার হাত ধরে নিয়ে ফ্ল্যাটের বাকি রুম গুলো ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে। দু’জনের মনে খুশির জোয়ার বইছে। প্রভার দেওয়া কষ্টের কথা আকাশ বলতে গেলে ভুলেই গিয়েছে। সে এখন দিশাকে নিয়ে মেতে আছে। অন্যদিকে প্রভা আকাশের থেকে দিশাকে কি করে আলাদা করা যায় সেটার ভয়াবহ একটা প্ল্যান সাজিয়ে বসে আছে। এক কথায় আকাশ শুধু তার। যে কোনো মূল্যে আকাশকে তার চাই। সে সেটার জন্য খু/না/খু/নি করতেও দ্বিধাবোধ করবে না….
চলবে….