কুহেলিকা পর্ব-০২

0
1256

#কুহেলিকা (পর্ব-২)
#লেখক-আকাশ মাহমুদ

আকাশ মানিব্যাগ থেকে বের করা সেই পাঁচশত টাকার নোট টা দিশার হাতে শক্ত করে গুঁজে দিয়ে দিশার কানে কানে বলে,

–‘আমি তোমার উষ্ণতা গ্রহণ করেই এই টাকাটা তোমায় দিলাম। এটা রেখে দাও তোমার কাছে। চললাম এখন…

‘আকাশ দিশাকে চুমু একে দিয়ে গাড়ির দিকে রওয়ানা হয়। “অপরদিকে নিষিদ্ধ নগরীর মুখে দাঁড়িয়ে থাকা সমস্ত রমণীরা চোখ পাকিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা আকাশের আচরণে বেশ অবাক! কিন্তু আকাশ তাদের দিকে ভ্রূক্ষেপ না করে নিজের মতন হেঁটে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসে। আকাশ গাড়িতে উঠে বসতেই ড্রাইভার আকাশকে জিজ্ঞাস করে,

–‘স্যার কিছু মনে না করলে আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞাস করবো?’

–‘জ্বি বলেন?’

–‘স্যার আপনি হুট করে গাড়ি থামিয়ে নিষিদ্ধ নগরীতে প্রবেশ করে আবার জলদি ফিরেও আসলেন। এছাড়া নগরীর মুখে রমণীরা আপনাকে নিয়ে উদ্ভট আচরণ করলো। স্যার কিছু হয়েছে কি?’

–লোকমান ভাই আমি অসাধু মতলব নিয়ে সেখানে যাইনি। আমি আমার কাজের জন্যই সেখানে গিয়েছেলাম। আর আপনি হয়তো প্রায় খেয়াল করেছেন আমি প্রায় গাড়িতে বসে কারোর সাথে কথা বলি?’

–‘স্যার আমি শুধু খেয়াল এই করিনি, আমি জানিও বটে, যে আপনি আপনার প্রিয়তমার সাথে কথা বলেন। আর সেজন্যই আপনাকে ছোট মুখে এসব প্রশ্ন করলাম। কারন আপনার প্রিয়তমা থাকার পরেও আপনার নিষিদ্ধ নগরীতে প্রবেশ করাটা আমার কেমন যেনো লেগেছে।’

–‘লোকমান ভাই আমি আমার প্রিয়তমাকে অপরিচিত একটা লোকের সাথে এই নিষিদ্ধ নগরীতে প্রবেশ করতে দেখেছি। তাই আমি আপনাকে গাড়ি থামাতে বলে সেখানে গিয়েছিলাম’

–‘কি বলেন স্যার! আপনার প্রিয়তমাকে নিষিদ্ধ নগরীতে দেখেছেন মানে কি?’

–‘মানেটা এখনো আমার অজানা। তবে জলদিই আমি এসবের রহস্য খুঁজে বের করবো।’

–‘স্যার আপনার কথা শুনে আমার গা পুরো শিউরা উঠেছে!’

–‘মালেক ভাই বাদ দিন এখন এসব। বাবা হয়তো আমার জন্য অফিসে অপেক্ষা করছেন। আপনি জলদি গাড়ি ছুটিয়ে নিয়ে চলুন। এসব বিষয় নিয়ে পরে দেখা যাবে।’

–‘ঠিক আছে স্যার।’

‘এরপর ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট করে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে গাড়ি ছুটিয়ে নিয়ে চলেছে। কিছুক্ষণ সফর করার পর তারা অফিসে পৌঁছে যায়। অফিসে পৌঁছানোর পর আকাশ দেখে সবাই ফুলের তোড়া হাতে নিয়ে তার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। আকাশ অফিসের ভিতরে প্রবেশ করতেই সবাই কংগ্রেস করতে করতে এসে আকাশের হাতে একেক করে ফুল গুলো তুলে দেয়। সবার এমন শোভনীয় আচরণ দেখে আকাশের ভিতরটা খুশিতে ভরে উঠে। আকাশ সবাইকে ধন্যবাদ জানায় তাকে এভাবে বরণ করে নেওয়ার জন্য। এরপর অফিসের সবাই যে যার মতন গিয়ে কাজে লেগে পড়ে। তখনি অফিসের ম্যানাজার এসে আকাশকে বলে,

–‘বড় স্যার আপনার জন্য ভিতরে কেবিনে অপেক্ষা করছে। আপনি আমার সাথে ভিতরে চলুন।’

–‘জ্বি চলুন।’
ম্যানাজার আমায় তার সঙ্গে করে একটা কেবিনের ভিতরে প্রবেশ করলো। যেই কেবিনের ভিতরে বাবা আগ থেকে থেকেই বসে আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি কেবিনের ভিতরে প্রবেশ করতেই বাবা আমায় বলে উঠলো,

–‘আকাশ আসতে এতো দেরি করলে যে?
আমি বুড়ো হয়েও সেই সকালে অফিসে চলে এসেছি। কারন আজ আমার ছেলের বিশেষ একটা দিন। কিন্তু তুমিই এসেছো দেরি করে। এমন করলে হবে বলো?’

–‘আসলে আব্বু রাস্তায় প্রচুর জ্যাম ছিল। তাই আসতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছে।’

–‘আচ্ছা সমস্যা নেই। তবে তুমি এবার বলো, যে কেবিনটা তোমার কেমন লেগেছে? এই কেবিনটা আমি স্পেশালি তোমার জন্য বানিয়েছি। আমি মাঝেমধ্যে অফিসে আসলে আমার পুরাতন কেবিনেই বসবো। কিন্তু তোমার জন্য আমি নতুন কেবিন বানিয়েছি।’

–‘আব্বু বেশ সুন্দর হয়েছে কেবিন টা।’

–‘তোমার পছন্দ হয়েছে তো?’

–‘হুম আব্বু অনেক পছন্দ হয়েছে।’

–‘যাক শুকরিয়া। এবার মন দিয়ে অফিস টাকে সামলাও। আমি অফিসের সমস্ত ডকুমেন্ট তোমার নামে করে দিয়েছি। আজ তুমি বাসায় গেলে তোমার মা তোমার হাতে অফিসের সমস্ত ডকুমেন্ট তুলে দিবে।’

–‘ঠিক আছে আব্বু।’

–‘এবার আমি বাসায় চলে গেলাম। আজ থেকে আমি মুক্ত। বেশ কয়েক বছর অফিসটাকে আমি সামলেছি। কিন্তু এখন আমি প্যারা মুক্ত।’

‘আকাশের বাবা আকাশকে সমস্ত দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে তিনি অফিস থেকে বেরিয়ে যায়। আকাশের বাবার পিছন পিছন ম্যানাজার ও কেবিন থেকে বেরিয়ে গেছে। তিনারা চলে যেতেই আকাশ কেবিন টাকে খুঁটে খুঁটে দেখতে আরম্ভ করে। এভাবে কিছু সময় পেরিয়ে যেতেই ম্যানাজার এক গাদা ফাইল নিয়ে এসে আবার আকাশের কেবিনে হাজির হয়। প্রথম যাত্রায় আকাশ এতোগুলা ফাইল দেখে ঘাবড়ে উঠে। আকাশের ঘাবড়ে যাওয়া চেহারাটা দেখে ম্যানাজার আকাশকে বলে,

–‘স্যার আপনি একদম ঘাবড়াবেন না। আমি সমস্ত কাজকর্ম আপনাকে বুঝিয়ে দিব। আর এই যে ফাইল গুলো এনেছি, এসবের মধ্যে খালি আপনার সিগনেচার প্রয়োজন। আপনার সিগনেচার হয়ে গেলে একটা ফাইল বাদে সব আমি নিয়ে যাবো। আপনার কাজ খালি একটা ফাইল দেখে দেওয়া।

‘ম্যানাজারের কথা শুনে আকাশের অস্থিরতা কিছুটা কমে। এরপর ম্যানাজার একে একে আকাশকে দিয়ে সব কয়টা ফাইলে সিগনেচার করিয়ে নেয়। সিগনেচার করানোর পর একটা ফাইল আকাশকে দিয়ে কি ভাবে কি করতে হবে সব বুঝিয়ে দেয়। তারপর ম্যানাজার বাকি ফাইল গুলো হাতে উঠিয়ে নিয়ে আকাশের কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়। আর বেরিয়ে যাওয়ার আগে ম্যানাজার আকাশকে বলে কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে বা কোনো সমস্যা হলে সে যেনো তাকে অনুসরণ করে। ম্যানাজার যাওয়ার পর আকাশ ফাইলটা ওপেন করে কাজ করতে আরম্ভ করে। ম্যানাজার তাকে যেভাবে বুঝিয়ে দিয়ে গেছে, আকাশ সেভাবেই কাজ করছে। কাজ করার এক পর্যায়ে হুট করেই আকাশের সেই দিশা নামক মেয়েটার কথা মনে পড়ে। যার কারনে আকাশ বেখেয়ালি হয়ে কাজ বন্ধ করে সেই মেয়েটার কথা ভাবতে আরম্ভ করে।’

–‘আচ্ছা আমি কি কাজটা ঠিক করেছি! আজ অব্দি নিজের প্রেমিকাকেও তো কখনো ছুঁয়ে দেখিনি। সেখানে নিষিদ্ধ নগরীর একটা মেয়েকে এভাবে আমি চুমু খেলাম। অন্ধকার পল্লীর রমণী গুলো ঐ সময়টাতে আমার দিকে কেমন অদ্ভুৎ নজরে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু সব কিছুর ভিড়ে আমি এটাই বুঝে উঠতে পারছিনা, যে মেয়েটা হুট করে আমায় স্বামী বলে কেন পরিচয় দিয়েছে! আর সে আমায় কেনই বা সবার থেকে এভাবে বাঁচালো! সে তো পারতো বাকি সবার মতন আমার উপরে মজা নিতে। কিন্তু সে সেটা নিলো না কেন! বেশ কিছুক্ষণ যাবৎ বিষয়টাকে নিয়ে ভাবলাম, কিন্তু কোনো উত্তর এই আমি খুঁজে পেলাম না। তবে আমি উত্তর না পেলেও ভাবনা চিন্তা টাকে বহাল রাখলাম। কারন মেয়েটাকে নিয়ে ভাবতে আমার কেমন যেনো বেশ ভালো লাগছে। আর ভালো লাগবে নাই বা কেন, নিজের প্রিয়তমা আমায় পল্লীতে টেনে নিয়ে গেছে। যেই পল্লীর নাম শুনলেও আমার ঘৃণা হতো। সেখানে প্রভার জন্য আমাকে সেই নোংরা জায়গায় কদম ফেলতে হয়েছে। আমি তো আজ প্রিয়তমার পিছু নিয়ে ফেঁসেই গিয়েছিলাম, কিন্তু দিশা নামক মেয়েটা আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেছে। প্রিয়তমার কারনে ক্ষুন্ন হতে চলেছিল আমার সম্মান। সেখানে নিষিদ্ধ নগরীর অচেনা এক রমণী আমার সম্মান টাকে নষ্ট হতে হতে বাঁচিয়ে দিয়েছে। তার থেকেও বড় কথা মেয়েটার মনুষ্যত্ব দেখে আমি বিমোহিত হয়েছি। নিষিদ্ধ নগরীর নারীরা টাকার জন্যই নিজের দেহের উষ্ণতা বিলিয়ে বেড়ায়। সেখানে এই মেয়েকে আমি টাকা দেওয়ার পর সে নিতেই চাইলো না। ইশ মেয়েটা কেন যে এই পথে গেলো। দেখতে শুনতে তো মাশাল্লাহ। সে তো না গেলেও পারতো এই পথে। এসব নিয়ে ভাবছিলাম, এমন সময় হুট করেই ফোনটা বেজে উঠলো। ফোনের আওয়াজে ভাবনায় বাঁধা পড়েছে। তাই চিন্তা-ভাবনা করা বাদ দিয়ে রেখে পকেট থেকে ফোনটা বের করলাম। পকেট থেকে ফোন বের করতেই দেখি প্রভা ফোন দিয়েছে। এই অসময়ে প্রভার ফোন দেখে ভিতরটা কেমন যেনো কুচকুচ করতে আরম্ভ করেছে। কারন সে আমায় কখনোই এই অসময়ে ফোন দেয় না। তবে যাক ফোন দিয়েছে ভালোই হয়েছে। আমি আমার প্রশ্নের উত্তর গুলো হয়তো এখন খুঁজে পাবো। ফোনটা জলদি রিসিভ করে হ্যালো বলতেই অপরপাশ থেকে প্রভা তিক্ত আওয়াজে বলে উঠলো,

–‘এই আকাশ তুই নাকি নিষিদ্ধ নগরীতে গিয়েছিলি? এটা কি সত্যি নাকি?’

–‘প্রভার কথা শুনে মুহূর্তের মধ্যেই আমার চোখ মুখ কুঁচকে গেছে! কারন এই প্রশ্নটা আমি তাকে করার কথা ছিল। কিন্তু সে দেখছি উল্টো আমায় প্রশ্ন করছে। প্রভার প্রশ্নের উত্তরে কি বলবো বুঝে উঠতে পারছি না! তখনি সে আবার আমায় বলে উঠলো,

–‘কিরে কথা বলছিস না কেন? তুই সেই নিষিদ্ধ নগরীতে কি কারনে গিয়েছিলি? আমায় দিয়ে কি তোর হচ্ছে না, যে তোর নিষিদ্ধ নগরীতে গিয়ে নিজের লালসা মিটাতে হচ্ছে?’

–‘প্রভার কথায় এবার কাঁপুনি শুরু হয়ে গেলো!
তবে সেটা প্রভাকে বুঝতে না দিয়ে স্বাভাবিক ভাবে বললাম, প্রভা তুমি যেমন ভাবছো তেমন কোনো কিছুই না। আসলে আমি একটা কাজের কারনে সেখানে গিয়েছিলাম।’

–‘আকাশ আমায় একদম শেখাতে আসবি না। আমি জানি তুই সেখানে নিজের খুদা মিটাতে গিয়েছিলি।’

–‘প্রভা বিশ্বাস করো আমি সেখানে বাজে মতলব নিয়ে যাইনি।’

–‘তাহলে কি কারনে গিয়েছিলি আমায় বল?’

–‘ঠিক আছে বলছি। কিন্তু তার আগে তুমি আমায় এটা বলো, যে আমি সেখানে গিয়েছি সেই খবর তুমি কই পেলে?’

–‘পেয়েছি যেভাবেই হোক সেটা তোকে বলা যাবে না। সেটা সিক্রেট। কিন্তু তুই এখন নিজের বিষয়টা ক্লিয়ার কর।’

–‘প্রভা আমি যদি বলি আমার তোমার পিছু নিতে নিতে সেই আঁধার নগরীতে গিয়েছি তাহলে তুমি কি বলবে?’

–‘মা…মা… মানে কি আকাশ?’

–‘মানে টা তো তুমিই আমার থেকে ভালো জানো প্রভা। আজ এক বছর তোমার সাথে আমার সম্পর্ক। আজ অব্দি কখনো তোমার শরীরের দিকে খারাপ নজরে তাকাইনি। সেখানে তুমি আমায় বেহুদা সন্দেহ করছো? সেখানে তুমি আমার কাছে কারন জানতে চাইছো? প্রভা সন্দেহ তো তোমাকে করা উচিৎ আমার।’

–‘আকাশ একদম ফালতু কথা বলবি না।’

–‘তো আমায় নিয়ে যে তুমি ফালতু কথা বলছো?’

–‘ধুর তোর সাথে কথা বলতেই আমার বিরক্ত লাগছে। আমি ফোন রাখলাম। পরে কথা হবে তোর সাথে আমার।’

‘প্রভা হুট করেই ফোন রেখে দেয়। আর আকাশ প্রভার এমন আচরণ দেখে কিছু একটা ভেবে মুচকি মুচকি হাসতে থাকে। এভাবে কিছুক্ষণ সময় কেটে যায়। আকাশ সমস্ত চিন্তা-ভাবনাকে সাইডে রেখে কাজ করতে আরম্ভ করে। কাজ করতে করতে দুপুর হয়ে এসেছে। পুরো ফাইল কমপ্লিট আকাশের। এমন সময় ম্যানাজার অনুমতি নিয়ে আবার কেবিনে প্রবেশ করে। ম্যানাজারের আগমন দেখে আকাশ বুঝে নেয় তিনি ফাইল নেওয়ার জন্যই এসেছেন। তাই আকাশ নিজ থেকেই ম্যানাজারকে বলে,

–‘ফাইল রেডি আপনি নিয়ে যেতে পারেন।’

‘আকাশের কথায় ম্যানাজার ফাইল হাতে উঠিয়ে নিয়ে আকাশকে বলে,

–‘স্যার আজকে আপনি বাড়ি চলে যান। বড় স্যার আমাকে বলে দিয়েছিল আপনি যেনো আজ দুপুর বেলায় বাসায় চলে যান।’ কারন প্রথম দিন আজ আপনার।’

–‘আচ্ছা।’

‘ম্যানাজারের কথায় আকাশ অফিস থেকে বেরিয়ে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। কারন তার ও আজকে মন ভালো লাগছে না তেমন একটা। তাই বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেছে। কিন্তু বাসায় যাওয়ার পথে ড্রাইভার পল্লীর সামনে দিয়ে গাড়ি অতিক্রম করতেই আকাশ দিশাকে দেখতে পায়। দিশা একটা লোকের সাথে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। আকাশ দিশাকে দেখে ড্রাইভারকে আবার গাড়ি থামাতে বলে। ড্রাইভার আকাশের কথা মতন রাস্তার একপাশে গাড়ি দাঁড় করায়। গাড়ি দাঁড় করাতেই আকাশ গাড়ি থেকে নেমে দিশার কাছে চলে যাওয়ার জন্য হাঁটা শুরু করে। আকাশ দিশার প্রায় কাছাকাছি চলে গিয়েছে। এমন সময় সে কিছুটা দূর থেকেই দিশার সাথে কথা বলা লোকটার কথা শুনতে পায়। লোকটা দিশাকে বলছে সে নাকি তাকে ভালোবাসে। লোকটার কথার উত্তরে দিয়া হাসতে হাসতে সেই লোকটাকে জিজ্ঞাস করে,

–‘আপনি আমাকে ভালোবাসেন? কেনো ভালোবাসেন আমাকে? আমার সুগঠিত দেহের জন্য, ঠোঁটে যত্ন করে আঁকা গাঢ় লিপস্টিকের স্বাদ পাবার জন্য, বুকের খাঁজে মুখ ডুবিয়ে শান্তি লাভের জন্য, নাকি আমার সতিত্বে স্পর্শ করে নিজের পুরুষত্বের প্রমান দেবার জন্য?

‘দিশার কথা শুনে আকাশ হাঁটা থামিয়ে দেয়। “অপরদিকে সেই লোকটা দিশাকে বলে,

–‘তুমি যেটাই ভাবো না কেন আমার শুধু তোমাকেই চাই। তোমার সাথে নিজের অস্তিত্ব মিলাতে চাই।’

‘লোকটার কথায় দিশা লোকটাকে আবারো হাসতে হাসতে বলে,

–‘দেখুন আজ আমার কোনো কিছুই ইচ্ছে করছে না। তবে আপনার যেহেতু আমাকেই চাই, তাইলে আপনি একটা কাজ করেন। ঐ যে দেখছেন আমাদের থেকে কিছুটা দূরে একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে, আপনি তার থেকে পারমিশন নিয়ে আসুন। সে যদি হ্যাঁ বলে তাহলে ফ্রিতে আজ আমি পুরো দিনটা আপনার সঙ্গে কাটাবো। আমার শুধু তার অনুমতি চাই। আমি জানিনা আজ আমার কি হয়েছে! তবে সেই লোকটা যদি অনুমতি দেয়, তাহলে আজ পুরো দিনের জন্য আপনি আমায় পাবেন।

‘দিশার কথায় লোকটা তাজ্জব হয়ে আকাশের দিকে ঘুরে তাকায়। “অপরদিকে দিশার কথা শুনে আকাশের ভিতরে কেমন যেনো ভয়ানক একটা রাগ কাজ করে। মনে হচ্ছে যেনো তার প্রিয়তমা প্রভা নয়, তার প্রিয়তমা হচ্ছে দিশা। আর তার প্রিয়তমা তাকে ছেড়ে অন্য লোকের কাছে যাওয়ার জন্য তার কাছ থেকেই সেই লোকটাকে পারমিশন নিতে বলছে….

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে