আজব প্রেমের কাহিনী
part : 2
writer : Mohona
পৃথিবীতে…..
নীড় বের হচ্ছে।
নিহাল: নীড়…
নীড়: বলো বাবা…..
নিহাল: কোথায় যাচ্ছো? নিশ্চয়ই বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতে?
নীড়:হামম।
নিহাল: graduation complete হয়েছে ১বছর হয়ে গেলো। আজও তোমার আড্ডাবাজী গেলোনা। international business টা তো প্রনয় দেখছে at least দেশেরটা তো দেখতে পারো। office এ গিয়ে বসতে তো পারো। MD তুমি কিন্তু আজও কাজ করতে হয় আমাকে।
নীড়: বাবা…. you know না আমার temper কতো high….. তোমার office এর ১টাও staff আর থাকবেনা। জানোইতো আমার রাগ কতো বেশি। শুধু শুধু রাগ করবো।
নিহাল: কোনো কথা না কাল থেকে office এ বসবে।
নীড়: no way বাবা। impossible ….
প্রনয়: of course possible …..
নীড়: ভাইয়ার কথা কোথায় থেকে আসছে ?
প্রনয় : তোমার পেছন থেকে।
নীড় ঘুরলো। দেখলো প্রনয় দারিয়ে আছে।
নীড়: ভাইয়া…
বলেই নীড় দৌড়ে গিয়ে প্রনয়কে জরিয়ে ধরলো।
নীড়: তুমি আসবে আগে বলোনি কেন?
প্রনয়: বললে তোমার এই বেপরয়া গিরি কিভাবে দেখতাম হামম??
নীড়: না মানে ভাইয়া…..
প্রনয়: কোন কথা না… কাল থেকে office যাবে।
নীড়: ok ভাইয়া।
নীড়দের joint family ….. প্রনয় হলো নীড়ের বড় কাকার ছেলে। নীড় ভীষন রাগী হলেও প্রনয়কে ভীষন শ্রদ্ধা করে তাই কখনো ওর কথা ফেলেনা। পরদিন থেকে নীড় office এ যাওয়া ধরলো। নীড়ের হাল কেরোসিন। ৫দিনপর প্রনয় আবার london ফিরে গেলো। প্রনয় চৌধুরীদের international business সামলায়। তাই বছরে বেশির সময় দেশে বাইরেই থাকে।
.
১৫দিনপর…..
নীড় office এ বসে আছে। যেদিন থেকে নীড় office এসেছে সেদিন থেকে staff দের অবস্থা খারাপ। কারন নীড় খুব strict …. আর রাগী।
আকাশ : আসবো ..
নীড়: তোদের ঢুকতে permission লাগে????।
আকাশ : এমনিতেই তোর যে মেজাজ,, তার ওপর বসেছিস office এ … তাই মাইর গুতা খাওয়ার থেকে permission নেয়া অনেক ভালো।
নীড়: shut up…..
আকাশ :??।
ইমান: তোরা থামবি? শোন আর ৭দিনপরই তো পহেলা বৈশাখ। চল ঘুরতে যাই।
নীড়: oh great…. কিন্তু office ….
ইমান: নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন চাইলে nothing is impossible ….
নীড়: thats right…. but যাবো কোথায়?
রাব্বি: mini cox’s bazar….
নীড়: মানে?
সূর্য: আরে এখানেই কাছেই দোহার নামের একটা উপজেলা আছে। সেখানে পদ্মার তীরে মৈনট নামে ১টা ঘাট আছে। its beautiful ….. এতোটাই সুন্দর জায়গাটা যে এটাকে এখন mini cox’s bazar বলা হয়। যেতে ১ঘন্টার মতো লাগে।
নীড়:real cox’s bazar, bangkok , pataya
এর sea beach রেখে তোদের mini cox’s bazar পাগল করলো????
ইমান: চলনা ভালো লাগবে। বৈশাখী মেলা বসবে ছোটবেলার মতো না হয় মেলায় ঘুরবো।
নীড়: ok done…..
.
》》》.
পরীরাজ্য………
মেরিন ঘুমিয়ে আছে।
তারা: এই মেরিন… ওঠনা সোনা। বাবা চলে আসবে। আজকে যে তোর magic test….
মেরিন: আপু সরো তো ঘুমাতে দাও।
তারা ডেকেই যাচ্ছে মেরিনকে। মেরিনের ওঠার নাম নেই। তখন ওখানে কবির এলো।
তারা: ববববাবা…..
কবির: ও এখনো ওঠেনি?
তারা: না আসলে বাবা…..
কবির: চুপ।
কবির জাদু দিয়ে নানাধরনের পশুপাখি আর কীটপতঙ্গ নিয়ে এলো। যেগুলো দেখে মেরিন ভীষন ভয় পায়। তেলাপোকা মেরিনের কপালে বসলো। খরগোশ blanket এর ভেতর দিয়ে ঢুকে পুরো মেরিনের গলার কাছে চলে গেলো। মেরিনের কাতুকুতু তো বিশ্ব বিখ্যাত। খরগোশের নরম শরীর মেরিনের গলায় লাগতেই মেরিন লাফ দিয়ে উঠলো। আর উঠেই নিজের চারপাশ দেখলো। আর দেখেই
মেরিন: আআআআ……
মেরিন ভয়ে লাফাতে লাগলো। মেয়ের এমন কাহিনি দেখে কবির হাসবে না কাদবে না রাগ করবে ভেবেই পাচ্ছেনা। মেরিন লাফাচ্ছে আর
বলছে: আম্মুগো…. আপুগো….. বাচাও গো….
✨??
এই ফালতু খুনীগুলো এখনই চলে যাক ইলি গিলি ফুস।
✨??।
তখনই সব প্রানী গুলো চলো গেলো। সেই সাথে কবির-তারা ও গায়েব। ঠিক গায়েবনা ছোট ছোট হয়ে গেলো।
.
মেরিন: যাক বাবা বাচা গেলো। কিন্তু ওগুলো আসলো কোথায় থেকে। জাহান্নাম থেকে আসুক। আমার ভীষন ক্ষুধা পেয়েছে। আম্মু…. আম্মু….. ক্ষুধা লেগেছে খাবার পাঠাও।
কনিকা: পাঠাচ্ছি।
মেরিন খাচ্ছে আর হাটছে। আর মেরিনের পায়ের নিচে পরতে পরতে কোনো রকমে কবির-তারা বেচে বেরাচ্ছে। কবির তো ধমক দিয়ে দিয়ে মেরিনকে ডাকছে। কিন্তু মেরিনতো আর শুনছেনা। কবির জাদুদিয়ে বড়ও হতে পারছেনা।
মেরিন: আহা কি মজা…. আম্মুর হাতের রান্না।
তখন মেরিনের চোখ নিচে গেলো। কবির-তারাকে দেখতে পেলো। মেরিন ওদের তুলে টেবিলে রাখলো। কিন্তু মেরিন ওদেরকে পুতুল ভাবলো।
মেরিন: awwe ki cute.. পুতুল ২টা। তবে কেবল আপুরটাই cute জল্লাদ বাপেরটা না। huh…. জল্লাদ বাপকে তো পুতুল রুপেও জল্লাদই লাগে। হতচ্ছারা বাপটাকে এমন ১টা পুতুল বানাতে পারতাম। আজীবনের জন্য। হায় কতো ভালোই না হতো। সবসময় খালি মেরিন…. মেরিন…. মেরিন…. এটা করবেনা ওটা করবেনা। হেন করো তেন করো গুষ্ঠির মাথা করো। জানো আমাকে ৫দিন উল্টা ঝুলিয়ে রেখেছিলো । আমার মনে হয় ওই জল্লাদটা আমার বাবা ই না। ছোটো বেলার বাবাটা কতো ভালো ছিলো। এটা মনে হয় কালিরাজ্যের কেউ।হামম।??? । পুতুলরা তোমরা দারাও আমি মিষ্টি নিয়ে আসি।
.
মেরিন মিষ্টি নিয়ে পিছে ঘুরলো। আর দেখলো কবির-তারা দারিয়ে আছে।
মেরিন: আআআ……
কবির: ১টা থাপ্পর দিবো মেয়ে তোমাকে আমি। তু…..
তারা: বাবা আজকে ওর পপরীক্ষা আছে…..
কবির: হামম। আজকে আমি ওর সাথে যাবো। দেখবো। তারাতারি ready হয়ে নাও। যদি সব মিলিয়ে পাস না করতে পারো তবে তোমার বিয়ে দিয়ে দেবো। না হয় নির্বাসনে পৃথিবীতে পাঠাবো। মনে রেখো।
কবির চলে গেলো।
মেরিন: জল্লাদ বাপ। huh…
তারা: মেরিন….
মেরিন:কি???।
তারা: তোকে যে যে magic শিখিয়েছি সেগুলো মনে আছে?
মেরিন: এমনভাবে বলছো যেন ওগুলোই করতে দিবো আজকে????।
তারা: পরীক্ষার মধ্যে এই সহজ সাধারন magic ই করতে হয়। এখন বল তোর মনে আছে কিনা…..
মেরিন: মেরিনের magic মনে থাকবে না???। ভাবা যায়? আমি তো সব magic জানি। দেখবে?
তারা: সব দেখাতে হবেনা। এই ৭দিন ধরে যা শিখিয়েছি সেগুলোই দেখা। আচ্ছা ১কাজ কর। তোর তো ready ও হতে হবে…. আমি তোর মাথা বেধে দেই আর তুই magic দেখাতে থাক।
মেরিন:okk….
তারা মেরিনের চুল বাধতে লাগলো আর মেরিন magic করতে লাগলো। তারা দেখলো যে সব magic ই ঠিকঠাক হলো।
তারা মনে মনে: thank you আল্লাহ। এখন ভালোয় ভালোয় মেরিন পাস করুক। না হলে বাবা না সত্যি সত্যি ওর বিয়ে দিয়ে দেয়। কতোটুকুই বা বয়স ওর…… ছোট মানুষ। আর যদি পৃথিবীতো পাঠায় তাহলে তো আরো বিপদ।
.
ওদিকে….
সব magic ই মেরিন পারলো। পরীক্ষা প্রায় শেষ করে ফেলেছিলো। কিন্তু শেষ সময়ে কবির ১টা magic করতে দিলো। আকাশে রংধনু ওঠানোর।
মেরিন:
✨??
আকাশে রংধনু উঠো please … ইলি গিলি ফুস
✨??।
আকাশে রংধনু উঠে গেলো। কবির দেখে মনে মনে খুশি হলো। কিন্তু সেই খুশি বেশিক্ষন রইলোনা। কারন পরক্ষনেই আকাশ থেকে পাথর পরতে লাগলো। বৃষ্টির মতো। দিরিম দুরুম। কবির তো সেই ক্ষেপে গেলো।
কবির: fail…. এখন পরীক্ষার খাতা আমি নিজে দেখবো।
মেরিন: ইন্না নিল্লাহ….
লিখিত পরীক্ষায়ও মেরিন fail করলো। তাই কবির ঠিক করলো মেরিনের বিয়ে দিয়ে দিবে। নীল পরীরাজ্যের রাজকুমারের সাথে।
.
মহলে….
কনিকা: তুমি কি পাগল হলে কবির? মেয়েটার বয়স কি হয়েছে? আর তারথেকেও বড় কথা তারারও এখনও বিয়ে হয়নি।
কবির: তুমি তারার সাথে মেরিনের তুলনা করোনা। তারা এ পরীরাজ্যের ভবিষৎ রানী। সেই সাথে ১জন হেকিমও। তারা অথৈ সাগর আর মেরিন ১টা পাহাড়ি ঝর্না। তারা বুদ্ধিমান আর মেরিন ছেলেমানুষ। তাই তুলনা করোনা।
কনিকা: মা হয়ে তুলনা কি করে করি বলো তো।
কবির: দেখো নীল পরীরাজ্যের ১মাত্র রাজকুমার নীল খুবই বুদ্ধিমান ছেলে। খুবই নম্র ভদ্র। নীল হলো পরী দুনিয়ার best fairy prince …… ও নিজের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে মেরিনকে সামলে নিবে। ভবিষৎে মেরিনই তো নীলপরী রাজ্যের রানী হবে।
কনিকা: কিন্তু তবুও একটু বেশিই তারাতারি করছোনা?
কবির: আমি কি আমার মেয়ের খারাপ চাইবো?
মেরিন: তুমি কবে আমার ভালো চেয়েছো বলতে পারো? তুমি তো আমাকে ভালোইবাসোনা।
কবির: মেরিন ১দিন বুঝতে পারবে আমি যা করছি তা ঠিক করছি।
মেরিন: অতো ভালো করতে হবেনা। আমি যেমন আছি তেমনই ঠিক আছি। বিয়ে বন্ধ করো। আমি বিয়ে টিয়ে করবোনা।
কবির: তোমার রায় চাইনি। তোমার বিয়ে এই পূর্নিমাতে হবে সেটাই final……
মেরিন: দেখুন mr. জল্লাদ বাপ আপনি যদি ভেবে থাকেন যে এই রাজ্য আর পরিবারের মতো আপনি আমাকেও শাসন করবেন তবে আপনি ঠিকই ভাবছেন। কিন্তু এই বিয়ে বন্ধ করুন। তুমি যা বলবে আমি শুনবো। please বাবা….
কবির: সুযোগ দিয়েছিলাম।
কনিকা: আরেকটা দাও।
কবির: আচ্ছা দিবো। তবে মেরিন তোমাকে good girl হতে হবে। পরীক্ষায় first হতে হবে। দুষ্টুমি করা যাবেনা। পারবে?
মেরিন: অসম্ভব কোনোদিনও না। পরীক্ষায় first হয়ে আমি কি করবো? না আমি হেকিম হবো আর না রানী। আর না আমার হওয়ার ইচ্ছা আছে। আমি যেমন আছি তেমনি থাকবো।
কবির: তবে আমিও আমার সিদ্ধান্তে অটল থাকবো।
মেরিন: আমিও বলছি যে আমি বিয়ে করবোনা…..
.
মেরিনের বিয়ের দিন…..
মেরিন এমন হাঙ্গামা করলো যে বিয়ে তো হলোই না উল্টা কবিরের মান সম্মান সব শেষ হয়ে গেলো। নীলপরী রাজ্যের সাথে পরীরাজ্যের দুশমনি হয়ে গেলো। বরযাত্রী রাগ করে চলে গেলো। এই প্রথম মেরিনের জাদু একদম ঠিক হলো।
.
পরদিন…..
মেরিনের বিচার হবে আজকে…..
কবির: এমনটা কেন করলে??
মেরিন: আমি আগেই বলেছিলাম যে আমি বিয়ে করবোনা। তবুও তুমি কথা শুনোনি। তুমি মহারাজ হলে আমিও তোমার মেয়ে। রাজকুমারি মেরিন…..
কবির : এখন দেখো তোমার শাস্তি কি হয়।??। আর তোমার শাস্তি হলো তোমাকে আমি নির্বাসনে পাঠাবো। পৃথিবীতে। ৭পূর্নিমা পর্যন্ত।।
মেরিন: বললেই হলো… আমি যাবোনা। অন্য যেকোনো শাস্তি দাও। কিন্তু এটা না। please …. এখন আমার ঘুম পাচ্ছে। আমি গেলাম।
কবির: তুমি পরশুই পৃথিবীতে যাচ্ছো । thats final…
মেরিন: তুমি যদি রাজা হও তবে আম্মু রানী। তোমার একার রায় ই সব না। huh…
মেরিন রুমে চলে গেলো।
কবির: বেয়াদব…..
কনিকা: দেখো কবির…. ও ১টা ১৯ বছরের বাচ্চা পরী। তুমি ওকে এতো বড় শাস্তি দিতে পারোনা । পৃথিবীতে তো পাঠানো আরো সম্ভব না। পদে পদে বিপদে পরবে। তার থেকেও বড় কথা ওর জাদু ঠিক মতো কাজ করেনা। কিভাবে ও নিজেকে সামলাবে? যদি কালিরাজ্যের কেউ আক্রমন করে? ওকে আমি কিছুতে পৃথিবীতে পাঠাতে দিবোনা।
কবির: আমি বলেছি তো বলেছি। ওকে যেতেই হবে।
কনিকা: তোমার কথাই সব না। আমিও এই রাজ্যের রানী। আমার রায় ছারা তুমি এতো বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারোনা।
কবির: ঠিক বলেছো। তুমি এই পরীরাজ্যের রানী….. ১টা বার ভেবে দেখো মা হিসেবে নয় রাজ্যের রানী হিসেবে। মেরিনের করা সকল ভুলের জন্য কি ও শাস্তি পায়না? যদি ওর জায়গায় অন্য কোনো প্রজা হতো তবে তার জন্য কি শাস্তি প্রযোজ্য হতোনা? তুমি চোখ বুঝে ভেবে দেখো।
কনিকা: রানী হওয়ার আগে আমি তো মা….. আর মেরিন আর ৫টা পরীর মতো না। ও যে অবুঝ….
কবির: তুমি কি ভেবেছো আমার মেয়েকে আমি এমনিতেই যেতে দিবো? কোনো সুরক্ষা ছারা। আর পৃথিবীতে গেলো ও নিজের সুরক্ষার জন্য মানিয়ে নেয়ার জন্য ঠিক মতো জাদু করতে শিখবে। আর তার থেকেও বড় কথা। পৃথিবীর মানুষ খুব ভাল হয়।
কনিকা:তবুও….
কবির: ১বার ভেবে দেখো যখন কোনো প্রজা অভিযোগ করবে তখন তুমি তাদের কি জবাব দিবে….
কনিকা: আমার মেয়েটার কিছু হবেনা তো….. ???।
কবির: কিছু হবেনা। এই দেখো জাদু আংটি.. এটা ওকে সকল বিপদ থেকে রক্ষা করবে। সেই সাথে ওর সকল প্রয়োজনীয় জিনিষ যেমন খাবার পোশাক সব চাইলেই পাবে।
.
পরদিন রাতে…..
মেরিন দোলনায় বসে মনের সুখে মিষ্টি খাচ্ছে। তারা গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো।
তারা: কি রে একাই খাবি মিষ্টি? দিবিনা?
মেরিন: আম্মু এতোগুলা মিষ্টি বানিয়েছে। ওখান থেকে নাও।
তারা: মিষ্টি তোর এতোই প্রিয় যে আমার সাথেও share করবিনা?
মেরিন:না।
তারা: তুই জানিস পৃথিবী খুব সুন্দর। সেখানের মিষ্টিও অনেক মজা।
মেরিন: তুমি কি তোমার বাবার হয়ে ওকালতি করতে আসছো????।
তারা: মোটেওনা।
তুই পৃথিবীতে যাওয়াকে শাস্তি হিসাবে কেন নিচ্ছিস বলতো?
মেরিন: তো কি হিসাবে নিবো,,,???।
তারা: দেখ পৃথিবীতে গেলে তোর জন্য মজাই মজা। জল্লাদ বাপের কোনো শাসন বারন থাকবেনা। কেউ বলবেনা এটা করবে না সেটা করবেনা। think about that…. no চিন্তা do ফূর্তি।
মেরিন: সত্যি?? ???। সেখানে জল্লাদ বাপ কিছু করতে পারবেনা?? যা খুশি তাই করতে পারবো?? no rules….
তারা: হামম।সেই সাথে খুব ভালো ভালো মজাদার মজাদার মিষ্টি খেতে পারবি। মানুষদের মিষ্টি ভীষন মজা।
মেরিন: মানুষ মিষ্টি কি খেতে অনেক মজা? তাহলে আমাদের দেশে মানুষ মিষ্টি বানানো হয়না কেন? তবে মিষ্টির নাম মানুষ কেমন যেন লাগছে। ????।
তারা: আরে বুদ্ধু…. মিষ্টির নাম মানুষ না।
মেরিন: তাহলে কিসের নাম মানুষ????।
তারা মনে মনে: এখন আমি কিভাবে বোঝাবো মানুষ কি???? ।
মেরিন: আপু বলোনা….
তারা: আমরা কিসের তৈরী?
মেরিন: কিসের তৈরী?
তারা: তুই এটাও জানিস না??
মেরিন: না….
তারা: তুই কি মোটেও পড়াশুনা করতি না?
মেরিন:??। জ্ঞান দিতে মন চাইলে রাজ্যে গিয়ে বিতরন করো। আমাকে মিষ্টি খেতে দাও। huh…
তারা: শোন। আমরা যেমন আলোর তৈরী তেমনি মানুষরা মাটির তৈরী। ওদের শরীর রক্ত মাংস দিয়ে গড়া।
মেরিন: মাংস তো বুঝলাম। কিন্তু রক্ত কি? ??।
তারা মনে মনে: এর সাধারন জ্ঞান তো একদমই খালি।
মেরিন: আপু…..
তারা: দারা।
তারা জাদু দিয়ে ১টা বই আনলো।
.
মেরিন: এটা দিয়ে কি হবে?
তারা: এটাতে পৃথিবী আর মানুষ সম্পর্কে সব আছে।
মেরিন: আমি পড়তে টরতে পারবোনা । কি ভয়ংকর বড় মটু ১টা বই।।।। ???…
তারা: তোর পড়তে হবেনা। আমি সব তথ্য তোর মাথায় ঢুকিয়ে দিচ্ছি।
মেরিন: একদম না। অতো আজিরা জিনিস আমার মাথায় খবরদার ঢুকাবেনা। কেবল important গুলোই ঢোকাও।
তারা: আচ্ছা।
তারা ঢোকালো।
তারা: কিরে…. এখন যাবি তো??
মেরিন: জী না… আমি এখানেই ভালো।
কবির: তোমার ভালো লাগা না লাগাতে কিছুই হবেনা…. কালই তুমি পৃথিবীতে যাচ্ছো।
মেরিন: আ…..
কবির: কথা বললে পৃথিবীতে থাকার সময়সীমা আরো বারবে। আর শোনো এই ৭পূর্নিমাতে যদি কোনো মানুষ জানতে পারে যে তুমি পরী বা কোনো মানুষ তোমাকে magic করতে দেখে ফেলে তবে তোমার শাস্তি আরো ৭ পূর্নিমা বেরে যাবে। আর যদি ভালো মেয়ে হয়ে থাকো। আর নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাও তবে ৩পূর্নিমাতেই তোমার শাস্তি শেষ হয়ে যাবে। কাল ৩য় প্রহরেই তোমাকে পৃথিবীতে যেতে হবে।
কবির চলে গেলো।
মেরিন: তোমার বাবা এমন কেন গো আপু?
তারা: তোর বুঝি কিছু হয়না?
মেরিন: না।??? ।
তারা কবিরের দেয়া আংটি মেরিনকে দিলো। কিন্তু এটা যে কবিরের দেয়া তা বলল না। কারন কবিরের দেয়া বললে মেরিন কখনোই নেবেনা।
তারা বলল: এই আংটিটা হাতে পরে নে।
মেরিন: কোন সুখে?????? । আমার কি বিয়ে লেগেছে?
তারা: তোর সুখে। যখন তোর খুব প্রয়োজন হবে তখন এই আংটি ধরে যা চাইবি তাই পাবি। কিন্তু হ্যা খুব দরকার ছারা না হলে হাজার চাইলেও পাবিনা। নে পরেনে।
মেরিন: লাগবেনা। . huh..??।
তারা: আপুর টাও নিবিনা….
মেরিন নিলো।
.
ঘুমানোর আগে….
মেরিন মনে মনে: শালা জল্লাদ বাপ…. আমি যখন যাচ্ছি তখন তোকে তো বেটা ১টা শিক্ষা দিয়েই যাবো।
✨??
আমার এই জল্লাদ বাপটার মিষ্টির মধ্যে এত্তো বড় ১টা পাথর ঢুকে যাক। যেটা লেগে জল্লাদটার দাত পরে যাক। ইলি গিলি ফুস।
✨??।
কবির মিষ্টি মুখে দিলো। তবে পাথরের জায়গায় তেলাপোকা বের হলো।
কবির: মেরি……ন… ???।
মেরিন তো হেসে কুটিকুটি।
.
পরদিন সকালে….
মেরিন ঘুমিয়েই আছে। সবাই কতো ওঠানোর চেষ্টা করছে ওকে। কিন্তু মেরিনের ওঠার নাম নেই। এদিকে ৩য় প্রহর শেষ হয়ে ৪র্থ প্রহরও শেষ হয়ে গেল। ৫ম প্রহর মাঝামাঝি চলছে। কবির আর কোনো উপায় না পেয়ে মেরিনকে ঘুমন্ত অবস্থাতেই পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিলো। মেরিনকে পৃথিবীতে পাঠানোর পর কনিকা-তারা কান্নায় ডুবে গেলো। কিন্তু সকলের আড়ালে সবার থেকে বেশি কাদছে কবির। কারন মুখে যাই বলুক না কেন মেরিনে ওর কলিজার টুকরা। সবাই জানে যে কবির মেরিনের থেকে বেশি তারাকে বেশি ভালোবাসে। কিন্তু কবির সবথেকে বেশি ভালোবাসে মেরিনকে। ওর ১৯বছরের শেষের দিকে এই পরীরাজ্যে ১টা ফারা আছে। তাই কবির ওই সময়টার আগেই মেরিনকে এই পরীরাজ্য থেকে কিছুদিনের জন্য সরাতে চেয়েছিলো। না হলে যে কালিরাজ্যের কালি পরীদের রানীর দেয়া অভিশাপ যে মেরিনের ভাগ্যে যে কি ঘটবে তা কেউ জানেনা।
.
ওদিকে মেরিন…..
মেরিনের ঘুমের মধ্যে মনে হচ্ছে যে ও প্রচন্ড বেগে নিচের দিকে যাচ্ছে। মেরিন খপ করে উঠে বসলো। দেখলো যে ও ওর খাটে বসে আছে। আর খাটটা অনেক বেগ নিয়ে নিচে নামছে।
মেরিন: আআআ……
কিছুক্ষনের মধ্যেই মেরিন পৃথিবীতে পৌছালো। পৃথিবীতে পৌছেই মেরিনের খাট আর মেরিনের ডানাটা গায়েব হয়ে যাবে। ডানাটা কেবল অদৃশ্য হলো। মেরিন দারালো।
মেরিন: হাতির হালুয়া, গন্ডারের গোবর, জল্লাদ বাপ…. তুই জীবনে বউ পাবিনা। এটা আমার মতো ১টা মিষ্টি পরীর অভিশাপ। huh…. কিন্তু জল্লাদ বাপ আর বউ দিয়ে কি করবে … আমার মা ই তো আছে। ধুর ভালো লাগেনা। খেয়েও আসতে দিলোনা। ভীষন ক্ষুধা লেগেছে। আম্মু….
মেরিন ভ্যা ভ্যা করে কাদতে নিলো তখন গরম গরম মিষ্টির ঘ্রাণ পেলো। চোখের পানি মুছে চোখ বুজে সেই ঘ্রাণ নিতে লাগলো। মেরিনের মিষ্টি খুবই প্রিয়। কবিরে মতো।
.
মেরিন: মিষ্টি… আমমমম…????…
মেরিন মিষ্টির ঘ্রাণে ঘ্রাণে ১টা মিষ্টির দোকানে গেলো। বিশাল বড় মিষ্টির দোকান। আসলে এটা ১টা মেলা। বৈশাখী মেলা। mini cox’s bazar… যেখানে নীড় আছে। যাই হোক….
মেরিন মিষ্টির দোকানের সামনে গিয়ে দারালো।
মেরিন: আমমম….????… কতো মিষ্টি…. যার ঘ্রাণই এতো বিমোহিত তার স্বাদ তো অমৃত হবে। আমম।
দোকানী গরম গরম রসগোল্লা তুলে তুলে রাখছে। মেরিন সেই গরম রসগোল্লাতে হাত দিলো। আর সেই গরম রসগোল্লার তাপে মেরিন ব্যাথা পেলো। মানে গরম ভাপ বা ছ্যাকা খেলো। ???।
মেরিন: আহ….
মেরিনের কন্ঠ শুনে দোকানী মেরিনের দিকে ঘুরলো। আর ঘুরে তাকিয়েই রইলো। কারন একে তো মেরিন পরী। তার মধ্যে পরীরাজ্যের সবথেকে সুন্দরী পরী। পরনে আছে পরী পোশাক । হালকা গোলাপী রঙের পোশাক। যেটা পৃথিবীবাসীর জন্য গাউন। সবই গোলাপী। মেরিনের চোখ ঝলসানো রূপ দোকানী দেখেই যাচ্ছে। যে কেউ দেখবে।
মেরিন: মাগো কি গরম।
মেরিন ফু দিলো। মিষ্টি ঠান্ডা হয়ে গেলো। মেরিন টপাটপ মিষ্টি খেতে লাগলো। ১০-২০টা খেয়েও ফেলল।
মেরিন: আপু তো ঠিকই বলেছিলো যে মানুষের হাতেপ মিষ্টি পরীরাজ্যের থেকেও ভালো।
মেরিন আরো ১০টা খেলো। যদিও এই কটা মিষ্টি মেরিনের জন্য কিছুইনা। এই ৩০ মিষ্টি শেষ হতে দোকানী খেয়াল করেনি। তবে ৩১ নম্বর মিষ্টি যেই মেরিন মুখে দিতে নিবে তখন দোকানীর হুশ এলো ।
.
দোকানী: এই মাইয়া…. তোমার সাহস তো কম না তুমি আমার মিষ্টিতে হাত দিয়েছো।
মেরিন: তোমার দোকানের মিষ্টি না খুব মজা মানুষ। আমার খুব ভালো লেগেছে। তাই খাচ্ছি। খাই তবে হামম…
দোকানী বাধা দিলো।
দোকানী: খাবা ভালো কথা। টাকা দাও। ৩০০টাকা কেজি।
মেরিন:৩০০ তো জানি। কিন্তু কেজি কি? টাকা কি?
দোকানী:?? । এই মাইয়া কি কয়?? পাগল পুগল নাকি? ওই মাইয়া ওই… তুমি যাও তো এখান থেকে। আমাকে মিষ্টি বানাতে দাও।
মেরিন: মিষ্টি গুলো খেয়েই চলে যাবো।
দোকানী: টাকা দাও ঠিকই খেতে দিবো। না হলে ভাগো।
তখন ১টা লোক এলো আর মিষ্টি কিনে নিয়ে গেলো।
মেরিন: ওকে দিলেন তো আমাকে দিলেন না কেন????।
দোকানী: ওই পাগল সরো তো এইখান থেকে। এখনই মানুষের ভীর পরে যাবে মিষ্টির জন্য।
মেরিন: না আমাকে মিষ্টি দাও।
দোকানী: ওই মাইয়া তুমি যাবা না গরম তেল দিবো।
মেরিন গরম তেলের ভয় পেয়ে চলে গেলো।
.
দোকানের পিছে গিয়ে দারালো। সেখানে মানুষের আনাগোনা কম।
মেরিন: অ্যাহ…. মেরিনকে মিষ্টি দেবে না মানুষকে ঠিকই দিবে। দারা মানুষ আমিও দেখবো যে তোর মিষ্টি কে খায়? ১টা মানুষও যেন তোর দোকানে না আসে। আর সব গুলা আমি খাবো। huh….
✨??
ওই মানুষের মানুষের কাছে যেন ১টা মানুষও আর মিষ্টি না খেতে আসে।
ইলি গিলি ফুস।
✨??।
মেরিন magic করার পরই ওই দোকানীর দোকানে মানুষ উপচে পরলো। বানানো সব মিষ্টি শেষ। তাও ভীর কমছেনা। দোকানীকে মিষ্টি বানানোর order দিয়ে দারিয়ে আছে। দোকানী বানিয়ে কুল পাচ্ছেনা।
.
মেরিন: একি…. এর দেখি সব মিষ্টি শেষ হয়ে গেলো। এখন আমি কি খাবো??????।।
মেরিন পা আছরে ঠোট উল্টিয়ে ভ্যা ভ্যা করে কাদতে লাগলো। তখন দোকানের পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছি নীড় আর ওর ৪বন্ধু। যেতে যেতে নীড়ের পা থেমে গেলো। নীড় বা দিকে ঘুরলো। নীড় থেমে যাওয়া দেখে বন্ধুরাও দারালো। ঘুরলো। আর ঘুরে সকলের চোখ আটকে গেলো। তবে নীড়ের মতো কারো আটকালো না। ও মেরিনকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখতে লাগলো। মেরিনের চোখের পানি গুলো নীড়ের কাছে মুক্তার মতো লাগছে। অসম্ভব cute লাগছে। যে কেউ প্রেমে পরবে।
আকাশ : পিচ্চিটা তো সেই সুন্দর রে।
ইমান: cute বল।
নীড়: পরী….
নীড় মেরিনকে দেখেই যাচ্ছে। আর দেখবেই নাই বা কেন? মেরিন যে পরী দুনিয়ার সবথেকে সুন্দরী পরী। হালকা গোলাপী পোশাকটা দিয়ে ওর পা পর্যন্ত ঢাকা। গলায় হালকা গোলাপী রত্নের ছোট ১টা হার। কানো ছোট্ট হালকা গোলাপী রত্নের কানের দুল। মাথায় হালকা গোলাপী রত্নের ছোট্ট চিকন ১টা তাজ। যেটা কপাল জুরে আছে। কপালে হালকা গোলাপী রত্নের টিপ। ২হাতে হালকা গোলাপী রত্নের ২টা চওরা কাকন। বাম হাতে হালকা গোলাপী রত্নের আংটি। যেগুলোর সব সবার কাছে পাথর বলে মনে হচ্ছে। হালকা গোলাপী ঠোট। গাল গুলোও গোলাপী। এমনকি মেরিনের চোখের মনিটাও গোলাপী। চোখ ঝলসানো গায়ের রং। কোমড় ছারানো কালো মিচমিচে চুল। চোখ দিয়ে যে পানি পরছে সেগুলোকে মুক্তা মনে হচ্ছে। নীড় অজান্তেই মেরিনের সামনে গিয়ে দারালো দেখেই যাচ্ছে।
.
চলবে……