আজব প্রেমের কাহিনী
part : 18
writer : Mohona
মেরিন নীড়ের কথার মানে কিছু না বুঝলেও কেমন যেন ১টা feel হলো।
নীড়: do u love me?
মেরিন:….
নীড়: কি হলো…. বলো।
মেরিন:….
নীড়: থাক বলতে হবেনা। যেদিন বুঝবে সেদিন বলো। আমি অপেক্ষা করবো।
বলেই নীড় মেরিনের ঘারে ১টা kiss করলো। মেরিন নীড়ের হাতটা শক্ত করে ধরলো। এরপর নিজেকে ছারিয়ে নিয়ে
বলল: বববা….
নীড় মেরিনকে আর কথা বলার সুযোগ না দিয়ে মেরিনের ঠোট জোরা দখল করে নিলো।
.
তখন ওখানে নীল এসে হাজির হলো। আর এমন দৃশ্য দেখে নীলের মাথা নষ্ট হয়ে গেলো।
নীল: এতো সাহস… আমি এখনই এই মানুষটাকে ধংব্স করে দিবো। শেষ করে দিবো। ও আমার শিকারকে কেরে নেয়…. ওকে তো এখনই….
বলেই নীল নীড়র ওপর জাদু করলো। ওকে শেষ করার জন্য। কিন্তু কাজ হলোনা। নীল আবার জাদু করলো। তাও কাজ হলোনা। পরে ২জনকে আলাদা করার জন্য জাদু করলো। তবুও কাজ হলোনা। কেবল মেরিনকে সরাতে গেলো। তবুও লাভ হলোনা।
নীল: আমার জাদু , আমার জাদু কাজ করছেনা? এটা কিভাবে হতে পারে? আজকে পূর্নিমা। তারওপর ওরা নীল রং পরে আছে। তাহলে?
এরপর নীল নিজের সব শক্তি দিয়ে জাদু করলো । কিন্তু তবুও লাভ হলোনা। আরো ওর ওপর reaction হলো।
নীল: কারন টা কি?
নীল এবার ঘটনা অনুধাবন করতে লাগলো। আর যা পেলো তা সত্যি নীলের হাওয়া টাইট করে দিলো। নীল জানলো
যে: নীড়-মেরিনের বিয়ে হয়ে গেছে। আর নীড়-মেরিন একসাথে থাকা মানে ওদেরকে আলাদা করার শক্তি স্রষ্টা ছারা কোনো জাদু-মায়া শক্তির নেই।
নীল: এ কিরকম ভাগ্যরেখা…. পরীর সাথে মানুষের ….. অসম্ভব ব্যাপার….
এমন নসীব তো কারো দেখিনি…. তবে?
মেরিন কেবল আমার। ও আমার। ওর সব কেবল আর কেবল আমার। নীড়-মেরিনকে তো আলাদা করবোই….. যে করে হোক। ওদেরকে আলাদা হতেই হবে ।
তবে তার আগে পরীরাজ্যের মহারাজ কবিরকে তো জানাই।
ভেবেই নীল চলে গেলো।
.
২দিনপর…..
মেরিনের ঘুম ভাঙলো। নীড় এমনভাবে ওকে ধরে রেখেছে যে ও নরাচরা ই করতে পারছেনা।
মেরিন: স্যার…. স্যার…..
???? …..
নীড়ের ঘুম না ভেঙে উপায় আছে?
মেরিন: স্যা…..
আর বলতে পারলোনা। নীড় মেরিনের মুখ বন্ধ করে দিলো।
.
৫মিনিটপর….
মেরিন ঠোট মুছতে মুছতে
বলল: আপনার সমস্যাটা কি???।??।
নীড়: তুমিই আমার সমস্যা।?। ঘুমের ১২টা বাজালে কেন?
মেরিন: কারন আমি নরতেচরতে পারছিনা। তাই।?।
নীড়: অভ্যাস করে নাও। এমন করেই আমার বুকের ভেতর ঘুমাতে হবে….
মেরিন: huh…. আচ্ছা বলুন না…. আমার বাবু কবে হবে….
নীড়:….???
মেরিন: বলুননা….
নীড়:???।
মেরিন: কি হলো বলুননা। ও স্যার.. ও স্যার।
নীড়: যাও গিয়ে fresh হয়ে নাও। সবাই wait করছে। আর আজকে ঢাকায়ও ফিরতে হবে।
মেরিন: না আগে বলুন যে আমার বাবু কবে হবে??
নীড়: আল্লাহ যেদিন দিবে সেদিন হবে।
মেরিন: এখন তো বিয়েও হয়ে গেছে। তাহলে?
নীড়: মাইর গুতা খাওয়ার আগে যাও।
বলেই নীড়ই উঠে গেলো।
.
২০মিনিটপর…
সবাই বসে নাস্তা করছে।
দাদুভাই: কি হলো ছোট নাতবউ…. বেগুন বেচে কি আজ লাভ হয়নি? মুখ এতো ভার কেন?
মেরিন: দেখুন না বড় স্যার….
দাদুভাই: ১মিনিট ১মিনিট … আমাকে কি এখনও স্যার ই ডাকবে?
মেরিন: হামম। তো কি ডাকবো?
দাদুভাই: না। দাদুভাই ডাকবে।
মেরিন: কেন? আপনাদের office এ তো আমি job করি। তো আপনারা তো আমার স্যার-ম্যাডাম।
নীড়: idiot… you are my wife now…. তাই এরা তোমার family ….
মেরিন: কেন?
দীদা: কারন নীড়ের সাথে তোমার বিয়ে হয়ে গেছে।
মেরিন: তো?
নীড় মেরিনের মুখ দেখে ভালো মতোই বুঝতে পারছে যে ও কিছুই বুঝতে পারছেনা।
তাই নীড়
বলল: let it be now…. না হলে মাথা নষ্ট করে ফেলবে। তোমার যা মন চায় তাই ডাকো।
মেরিন: হামম। আমি আপনাকে তাহলে স্যার দাদু ডাকবো ।
দাদুভাই: আচ্ছা। as your wish….. এখন বলো তো মন খারাপ কেন?
মেরিন: দেখুন না স্যারদাদু…. এখন তো আমার বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু তবুও আমি বাবু পাচ্ছি না কেন !!!
কথাটা শুনে নীড় বিষম খেলো। আর সবাই যে যে যার যার মতো খাবার খেয়ে কেটে পরলো।
একটুপর সবাই ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হলো।
.
২দিনপর…
নীড় office যাওয়ার জন্য ready হয়ে নিচে নামলো।
নিহাল: আজ থেকেই office যাচ্ছো?
নীড়: হামম। কতোদিন বসে থাকবো।
তখনই মেরিনও ready হয়ে নিচে নামলো।
নীলিমা: মামনি তুমিও ready হয়ে নামলে যে?
মেরিন: late করলে যে স্যার বকবে।
দীদা: নীড়, মেরিন….
নীড়: job করবে। বিয়ে হলে কি অন্যকেউ job করেনা?
প্রনয়: কিন্তু নীড়…. ও মালকিন হয়েও কি PA এর কাজ করবে?
নীড়: of course … ভাইয়া ও ঘরোয়াভাবে আমার বউ। দুনিয়া জানে যে ও আমার বউ। আমার বউ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করুক সেদিন office এর MD হয়ে যাবে।
নীড়-মেরিন office গেলো। office এ বেশিরভাগ সময় নীড় মেরিনকে কোলে বসিয়েই কাজ করেছে। আর romance ও করেছে।
.
রাত ৩টা…..
সবাই ঘুম।
মেরিন দেখলো বাইরে অনেক আলো। মেরিন উঠলো। মেরিন নীড়ের বুক থেকে উঠে বাইরে গেলো। দেখলো তারা দারিয়ে আছে। মেরিন আপু বলে দৌড়ে তারার কাছে গেলো। কিন্তু সবসময়ের মতো তারা ১গাল হাসি দিলোনা। মুখ গম্ভীর করে
বলল: তুই এই বাড়িতে আর কতোদিন থাকবি?
মেরিন: আর বেশি না। কেবল আমার বাবু নিয়েই চলে যাবো।☺️☺️।
কথাটা শুনেই তারা মেরিনকে ১টা থাপ্পর মারলো। মেরিন গালে হাত দিয়ে কান্নাভরা চোখে তারার দিকে তাকালো।
মেরিন: তুমি আমাকে মারলে??।
তারা: হ্যা মারলাম। তুমি অবুঝ বলে এতোটা অবুঝগিরি করবা সেটা জানতাম না….
মেরিন: কককেন আমি কককি কককরেছি….
তারা: কি করেছো? কোন হিসাবে কি ভেবে তুমি মানুষের সাথে বিয়ে করলে? জানোনা পরীদের ১টাই বিয়ে হয়।
মেরিন: আমি কি বলেছি যে আরো বিয়ে করবো?
তারা: তো কি আজীবন পৃথিবীতে ওই মানুষের সাথে থাকবি?
মেরিন: না তা কেন থাকবো? আমি তো কেবল বাবু নিয়ে চলে যাবো।
তারা: তুই মানুষের বাচ্চার মা হবি?
মেরিন: না আমি আমার বাবুর মা হবো।
তারা: বাবু কেবল মায়ের না বাবারও।
মেরিন: তো?
তারা: বাবু হলেই কি চলে যাবি?
মেরিন: হামম যাবোই তো।
তারা: তুই কি কখনোই বুঝবিনা?
মেরিন: কি বুঝবো?
তারা:তুই ভেবে দেখেছিস …. যে তুই চলে গেলে এই মানুষগুলোর কি হবে? সবার বাদ দিলাম নীড়ের কি হবে…..
মেরিন: কি হবে? ?।
তারা: মরে যাবে নীড়……
“মরে যাবে নীড়” কথাটা শুনেই মেরিনের বুকটা ধুক করে উঠলো।
তারা: তুই জানিস নীড় তোকে পাগলের মতো ভালোবাসে…..
মেরিন: আমাকে তো জল্লাদ বাপ
ছারা আমাকে তো সবাই ভালোবাসে।
তারা আরো ১টা থাপ্পর মারলো মেরিনকে। মেরিন ২গালে ২ হাত দিয়ে তারার দিকে তাকিয়ে আছে।
তারা: তোমার পড়ায় ফাকি দেয়া ছেলে মানুষইতে কখনোই আমি কিছু বলিনি। support করেছি তোমাকে। কিন্তু তুমি এমন ১টা পর্যায়ে চলে গেছো যে কি আর বলবো? ২০ বছর হতে চলল তোমার। সামনের পূর্নিমাতে তোমার জন্মদিন…. আর এখনও তোমার ছেলে মানুষই গেলোনা। যেদিন mature হবে সেদিন না সব হারাতে হয়…… সব ভালোবাসা এক না। কিছু ভালোবাসা অন্যরকম ভালোবাসাও হয়….
বলেই তারা চলে গেলো।
মেরিন: আমি বুঝিনা সবার আমার সাথেই কিসের এতো দুশমনি?
.
কিছুদিন পর….
মেরিন: মানুষের জীবন কতোই অদ্ভুদ…. আর এই নীড় স্যারতো বিশ্ব আজব। আমার সাথে এমন অদ্ভুদ আচরন কেন করে আল্লাহ জানে? আমি কি কোনো বাচ্চা?
নীড়: বাচ্চার থেকেও বধ্য বাচ্চা।
মেরিন: আপনি?
নীড়: এই নাও তোমার চকোলেট দুধ।
মেরিন নীড়ের হাত থেকে নিয়ে খাওয়া ধরলো।
নীড়: পাগলি….
বলেই নীড় মেরিনকে কোলে নিয়ে বসলো।
মেরিন: স্যার….
নীড়: বলো…..
মেরিন: অন্যরকম ভালোবাসা কি? যেটা অন্যসবাইকে না কেবল ১জন কেই করা হয়? ?।
নীড় মুচকি হেসে মেরিনের কপালে চুমু দিয়ে
বলল: বলতে পারি যদি মন থেকে পর্যবেক্ষন করো।
মেরিন: করবো বলেই তো বললাম…?..
. নীড়: যাকে ছারা আমরা আমাদের নিজের অস্তিত্বের কথা কল্পনাও করতে পারিনা তার প্রতি যে ভালোবাসা সেটাই অন্যরকম ভালোবাসা।
যাকে নিজের সবটা উজার করে দেই তার প্রতি ভালোবাসাটাই অন্যরকম ভালোবাসা।
প্রতি নিঃশ্বাসে, প্রতি পলকে, যার কথা মনে পরে তার প্রতি যে ভালোবাসা সেটাই অন্যরকম ভালোবাসা।
যার চোখের পানি বুকে রক্ত ঝরায় তার প্রতি ভালোবাসাই অন্যরকম ভালোবাসা।
বুকের মধ্যে যার বসবাস, হৃদস্পন্দন যার নাম নেয় তার প্রতি ভালোবাসাই অন্যরকম ভালোবাস……
চোখ বন্ধ করলে যার চেহারা ভেসে ওঠে তার প্রতি ভালোবাসাই অন্যরকম ভালোবাসা।
যার মুখের হাসি তোমার জীবনে সুখের সূর্যোদয় করায়, যার উপস্থিতি, যার আলিঙ্গন তোমার সকল বেদনার শ্বান্তনা তার প্রতি ভালোবাসাই অন্যরকম ভালোবাসা…..
মেরিন:…..
নীড়: কিছু কি মাথায় ঢুকেছে……
মেরিন: ……
নীড়: থাক এতো কষ্ট করে মাথা ঢোকাতে হবেনা। যাও গিয়ে ঘুমিয়ে পরো।
মেরিন নীড়ের কথায় বেশ অবাক হলো। কারন নীড় মেরিনকে গিয়ে ঘুমাতে বলল। বিয়ের আগে থেকে এই পর্যন্ত প্রতিদিন নীড় মেরিনকে কোলে করে রুমে নিয়ে গিয়ে নিজের বুকে লুকিয়ে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ঘুম পারিয়েছে। কিন্তু আজ বলছে অন্য কথা……
নীড়: কি হলো যাও……
মেরিনের সাহস হলোনা নীড়কে কথাটা বলার। চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পরলো। নীড় আকাশপানে মুখ করে কিছু অশ্রু বিসর্জন করলো।
নীড়: তুমি কি কখনোই আমার ভালোবাসা বুঝবেনা মেরিন…. আমারও যে ইচ্ছে করে আর ৫টা মানুষের মতো নিজের বউকে নিয়ে খুশি থাকতে। নিজের বউটাকে নিজের মতো করে ভালোবাসতে। তোমার বাচ্চামোতে আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু অন্তত আমার ভালোবাসাটা তো বোঝো। আমারও যে একটু ভালোবাসা চাই। একটু আমার অনুভূতি গুলো তো বোঝো। তোমার সাথে কতো কতো গল্প করতে মন চায়। সেগুলো তোমায় বলতে পারিনা। কারন তুমি বুঝবেনা।
নীড় রুমে গিয়ে দেখলো মেরিন ঘুমিয়ে পরছে।
.
৩দিনপর…..
৩দিন ধরে মেরিন খেয়াল করেছে যে নীড় একটু বদলে গেছে। ওর আদর যত্ন সব ঠিক মতোই করছে। কিন্তু আগের মতো ওর সাথে কথা বলছেনা। খুব কম কথা বলছে। আর ছোট ছোট romance ও করছেনা। আর প্রতিদিনের মতো রাগও করছেনা।
.
office এ….
রাত নীড়ের office এ গেলো। নীড়ের রুমে গিয়ে দেখলো যে নীড় মেরিনকে কোলে বসিয়ে খাইয়ে দিচ্ছে। রাত যেহেতু নীড়কে অনেক ভালোবাসে আর বোঝে তাই নীড়ের চোখ মুখ দেখেই বুঝতে পারলো যে নীড়ের মন অনেক খারাপ। নীড় দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলো যে রাত দারিয়ে।
নীড়: আরে রাত…. ওখানে দারিয়ে আছিস কেন? ভেতরে আয়।
রাত ঢুকলো।
নীড়: বোস। lunch কর।
রাত: আমি lunch করেই বেরিয়েছি। তোরা খেয়েনে।
মেরিনকে খাইয়ে মেরিনের মুখ মুছে দিলো নীড়। নীড় মেরিনকে কোল থেকে নামাতে গেলে মেরিন নামলো না।
মেরিন মনে মনে: এ্যাহ আমি নামি আর ওই ফকিন্নিটা আপনার কোলে বসুক।
নীড়: তুই হঠাৎ ?
রাত: কেন আসতে পারিনা বুঝি? বিয়ে করেছিস বলে কি বন্ধুত্বও শেষ….
নীড়: কি যে বলিস?
রাত: ১টা কাজে এসেছি।
নীড়: বল….
রাত: কি আর বলবো…. এসে যে চোখ জুরিয়ে গেলো। তোকে দেখে বোঝা যাচ্ছেনা যে তুই বউ কে নিয়ে সংসার করছিস না কি বাচ্চা সামাল দিচ্ছিস।
কথাটা শুনে নীড়ের মেজাজ খারাপ হলো।
নীড়: তুই যদি এগুলো বলতে আসিস তো বের হয়ে যা এখান থেকে।
রাত: এগুলো বলতে আসিনিরে…. কাজেই এসেছি। কিন্তু তোর ছোটবেলার বন্ধু আর তোকে অনেক ভালোবাসি কিনা…. তাই তোর ওই চোখের ভাষাটা বুঝি। তোর চোখে ভালোবাসার অভাব আছে।
নীড়: মেরিন একটু বাইরে যাও তো।
মেরিন: কেন??।
নীড়: যেতে বলেছি যাও।
মেরিন: না আমি যাবোনা…..
নীড়: যেতে বলেছি কিন্তু…..
মেরিন মুখ ভেংচে বেরিয়ে গেলো।
নীড়: হ্যা তো তুই কি বলছিলি….
রাত নীড়ের চোখ দেখেই বুঝলো যে নীড় রেগে গেছে।
রাত: তুই যতোই রাগ দেখাসনা কেন…. যা সত্যি সেটা তো আমি বলবোই…. এভাবে জীবন চলেনা। তুই অস্বীকার করতে পারবি যে তোর বউ অন্য আর ৫টা বউয়ের মতো না। তুই ওকে নিয়ে কখনোই সুখী হবি না…..
নীড়: তুই ঠিকই বলেছিস আমার বউ আর ৫টা বউয়ের মতো না। বউ কেন আর ৫টা মেয়ের মতোও না। কারন ও তোদের মতো প্যাচ-গোচ বোঝেনা। ও সরল। অবুঝ। খুব অল্প বয়সেই সারা পরিবারকে হারিয়েছে। তাইজন্যই ও এমন। আর ওর সত্যিটা জেনেই আমি ওকে ভালোবেসেছি।
রাত: সব মানলাম। কিন্তু ওর ভালোবাসা কি কখনো পাবি?
নীড়:ওর ভালোবাসার জন্য অপেক্ষা করারও সুখ আছে।
রাত: এই অপেক্ষা যদি শেষ না হয়।
নীড়: ও আমার কাছে আছে সেটাই যথেষ্ট। তার থেকেও বড় কথা…. ওকে ভালোবাসার সময় এই শর্ত দিয়ে ওকে ভালোবাসিনি যে ওও আমাকে ভালোবাসবে।
নীড়ের কথায় রাতের চোখে পানি চলে এলো।
রাত: যদি তুই এর ১অংশও আমায় ভালোবাসতি দেখতিস তোকে আমি মাথায় তুলে রাখতাম। আমি ভেবেছি আমার মতো ভালো কেউ বাসতে পারেনা। কিন্তু তোর ভালোবাসা অনেক উর্ব্ধেরে…
বলেই রাত চলে গেলো।
নীড়: না রে আমি অতোটা মহান না। কদিন ধরে আমার মাথায় এটাই চলছিল। সত্যি আমি ভুলে গিয়েছিলাম যে আমি মেরিনকে ভালোবাসি। ওর সত্যিটা জেনেই ভালোবাসি। তবে পাগলিটা এখনও এলো না কেন? oh no…. নির্ঘাত বের হতে বলেছি বলে রাগ করেছে।
.
নীড় মেরিনকে ডাকতে গিয়ে দেখলো যে মেরিন নেই। সারা office খুজলো। কিন্তু পেলোনা। নীড় বাসায় ফোন করলো। জানতে পারলো সেখানেও যায়নি। নীড় পাগলের মতো মেরিনকে খুজতে লাগলো। এমনকি সারা পরিবার মেরিনকে খুজতে লাগলো। নীড়ের তো কান্না করে অবস্থা খারাপ।
নীড়: কেন কেন কেন ওকে তখন বের হতে বললাম…… আল্লাহ আমার মেরিনকে তুমি ফিরিয়ে দাও আল্লাহ। আর কখনো কোনো দাবি করবোনা…..
নীড়ের আহাজারি দেখে সবার চোখে পানি চলে এলো। রাত হয়ে গেছে। অনেক কষ্ট করে সবাই নীড়কে রুমে ঢোকালো। নীড় কাদতে কাদতে আগে বারলো। খাটের দিকে চোখ যেতেই নীড় অবাক মেরিন ঘুমিয়ে আছে। আসলে মেরিন তখন রাগ করে office থেকে বাসায় চলে আসে।??। নীড় দৌড়ে গিয়ে মেরিনকে টেনে তুলে বুকে জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কাদতে লাগলো।
মেরিন তো ?।
নীড়ের কান্না শুনে বাড়ি শুদ্ধ লোক ওর রুমে এলো। নীড় তো ওদের দেখেনি। নীড় তো কেদেই যাচ্ছে। আর পাগলের মতো মেরিনের চোখ মুখে kiss করছে।
নীড়: তুই কখনো আমাকে ছেরে যাসনারে….
কাদতে কাদতে নীড় অজ্ঞান হয়ে গেলো। মেরিন তো কিছুই বুঝলোনা। সবাই মিলে ধরে নীড়কে শুইয়ে দিলো।
নীলিমা মেরিনের সামনে এসে বলল:
মারে…. তুই কোথায় ছিলিরে…. কোথায় গিয়েছিলিরে….
মেরিন: আমি তো এখানেই ছিলাম।
নীলিমা: আর কখনো আমার ছেলেকে না বলে কোথাও যাসনা।
মরে যাবে ও….
ও তোকে অনেক বেশি ভালোবাসেরে…..
বলেই সবাই চলে গেলো।
.
মেরিন কিছুই বুঝলো না। মেরিন চোখ বন্ধ করে সবটা জেনে নিলো। জেনে ভীষন অবাক হলো। এরপর মেরিন নীড়ের মন ঝেকে দেখলো।
মেরিন: এটা কেমন ভালোবাসা…. এটাই কি সেই অন্যরকম ভালোবাসা….. এই কারনেই কি আপু বলেছিলো যে আমি চলে গেলে স্যার পাগল হয়ে যাবে….. ম…. না না ছিঃ ছিঃ….. কি ভাবছি এগুলো….
মেরিন দেখলো যে নীড় ওর হাতটা শক্ত করে ধরে আছে। মেরিনের কিছুই ভালো লাগছে না…… সেদিন সারারাত মেরিন মানুষদের সম্পর্কে সকল তথ্য জেনে নিলো।
মেরিনও নীড়কে ভালোবেসে ফেলল।
.
৭দিনপর…..
৭দিনে নীড় ১পলকের জন্যেও মেরিনকে চোখের আড়াল করেনি। আর নীড়ও একটু আলাদা মেরিনকে দেখেছে। মেরিন ভেবেই যাচ্ছে ভেবেই যাচ্ছে নীড়কে নিয়ে।
.
রাত ১২টা….
মেরিন বুঝতে পারলো ও হাওয়ায় ভাসছে। অনেকক্ষন ধরেই মনে হচ্ছিলো তবে এখন ঘুম ভাঙলো। তাকিয়ে দেখে নীড় ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আর ও নীড়ের কোলে…..
নীড়: happy birthday my love……
বলেই নীড় তুরি বাজালো। আর আকাশে আলোর মিছিল শুরু হলো। মেরিন এমন দৃশ্য আগে কখনো দেখেনি…. পরীরাজ্যে আতসবাজী দেখলেও সেটা আলাদা আর এটা আলাদা।
নীড়: i love u জান…..
বলেই মেরিনের মাথাটা একটু তুলে মেরিনের ঠোট জোরা দখল করে নিলো। এই প্রথম মেরিনও response করলো।
.
একটুপর…..
নীড়: কি gift চাই….
মেরিন: আমার তো সবই আছে।
নীড়ের চোখে আজ অন্যরকম নেশা দেখলো মেরিন।
নীড়: তাহলে যদি আজকে আমার তরফ থেকে ১টা gift দেই নেবে….
মেরিন: আপনার দেয়া কোনো উপহার কি ফিরিয়ে দিয়েছি…..
নীড়: যদি বলি ভালোবাসতে চাই…..
মেরিনের মুখটা লাল হয়ে গেলো। নীড় মেরিনকে মনের মতো করে ভালোবাসলো। মেরিনের বয়সও ২০ হলো। যা automatically ১টা maturity ভাব এনে দিলো মেরিনের মধ্যে…..
.
সকালে……
মেরিন চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে নীড় মুচকি হাসি দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
মেরিন:?।
মেরিন আবার চোখ বন্ধ করে নিলো।
নীড়: ওই বউ চোখ খোলো।
মেরিন:উহু…..
নীড়: উহু কেন…..
মেরিন: আপনি ভীষন খারাপ। তাই…..
নীড়: পাগলি…..
.
৭দিনপর…..
মেরিন হাটতে হাটতে park এ চলে । মেরিন বসে বসে ভাবছে যে নীড়কে সব সত্যি বলে দিবে। মেরিন খুশি হয়ে বাসায় গেলো।
মেরিন: নীড়….
কিন্তু মেরিন অবাক হয়ে গেলো।
কারন…..
.
.
চলবে….