আজব প্রেমের কাহিনী
part : 17
writer : Mohona
এই বুকটা ওর চিরচেনা। মেরিন নীড়কে ১টা ধাক্কা মারলো। নীড়ের ঘুমটা ভেঙে গেলো। মেরিন নীড়কে ধাক্কা দিতেই আছে দিতেই আছে।
নীড়: কি হচ্ছেটা কি? ঘুম আসছি তো। নরাচরা বন্ধ। সারারাত তোমাকে দেখতে গিয়ে ঘুমাতেই ভুলে গিয়েছিলাম। so এখন ঘুমাতে দাও।
মেরিন মনে মনে :
✨??
এই স্যার এখনই আমাকে ছেরে দিক। ১০০ হাত দূরে চলে যাক।
ইলি গিলি ফুস।
???
✨??।
.
মেরিন magic করতেই নীড় মেরিনকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। এখন মেরিন নরাচরাই কষ্টকর।
নীড়: আর কখনো আমার ঘুমের band বাজাবেনা…..
মেরিন: ছারুন আমাকে।
নীড়: ওই চুপ। ২দিন দুরে ছেরে দিয়েছিলাম। আমি না হয় তোমার কাছে আসিনি। তুমি কেন যাওনি?
মেরিন: আমি আপনার কাছে কেন যাবো???।
নীড়: তুমি কি বোঝোনা…..
মেরিন: কি??।
নীড়: আমার ভালোবাসা….
মেরিন: মানে?
নীড়: মানে আমি তোমাকে ভালোবাসি।
মেরিন:??।
নীড়: এই reaction এর মানে?
মেরিন: আপনি তো আমাকে বকেই কুল পাননা। আপনি মোটেও আমাকে ভালোবাসেন না। আমাকে তো প্রনয় স্যার, নিহাল স্যার, নিহাল স্যার, নীলা ম্যাম, সানি ম্যাম, নীলিমা ম্যাম, রুপা ম্যাম… ভালোবাসে। আপনি তো খালি বকেন।
নীড়: খালি বকি ই?
মেরিন: হামম।
নীড়: আদর করিনা?
মেরিন: না….
নীড়: তাহলে তোমাকে কোলে নেয় কে….. এখন আদর করছে কে?
মেরিন: আপনি আমাকে কোলে নেননা। আমি ভয় পেয়ে কোলে উঠি। আর এখন কি আদর করছেন নাকি? এখন তো আমার দম আটকে রেখেছেন। সাপের মতো পেচিয়ে আছেন। এটাকে কি আদর করা বলে!!?।
নীড়:????। তো কিভাবে আদর করে?
মেরিন: জানিনা। huh…
নীড়: তাহলে তো অন্যভাবে আদর করতে হয়…. ?।
বলেই নীড় মেরিনকে ঘুরিয়ে খাটে শুইয়ে ওর ওপর নিজের ভর ছেরে দিলো।
.
মেরিন:??। সসসরেন আআমার ওপর থেকে….
নীড়: না আদর করবো।
মেরিন: মানে?
নীড়: আদর করবো মানে আদর করবো।???
মেরিন:??।
নীড়: বলো ভালোবাসি….
মেরিন: মেরিন সবাইকে ভালোবাসে।
নীড়: এই ভালোবাসা সেই ভালোবাসা না। তুমি এভাবে কাপছো কেন?
মেরিন: আআমার ইচ্ছা। সসসরেন। আআমি নামবো।
নীড়: উহু। এখন তোমাকে তোমার কাপাকাপির শাস্তি দিবো।
বলেই নীড় মেরিনের গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো।
মেরিন নীড়ের পিঠ খামছে ধরলো।
মেরিন : ছছছারুন ….
নীড় মেরিনের গলায় মুখ রেখেই
বলল: উহু…..
মেরিনযে নীড়কে ধাক্কা দিবে সেটাও পারছেনা।তখন দরজায় কেউ ধাক্কা মারতে লাগলো।
.
নীড়: কে….
দীদা: দাদুভাই…. আমি…. দরজা খোলো…
নীড়: কেন?
দীদা: কাজ আছে।
নীড়: এখন পারবোনা।
দীদা: দাদুভাই খোলো….. মানুষ কি বলবে বলোতো।
নীড়: জাহান্নাম বলুক…. এখন তো আরো বেশি খুলবোনা।
দীদা: মেরিনের কথাটা ভাবো। ওকে তো মানুষ খারাপ বলবে….
নীড়:কেউ কিছু বললে জিহ্বা টান দিয়ে ধরে ছিরবো না তার…..
দীদা: তুমি কি দরজা খুলবে না কি প্রনয় এসে বলবে?
নীড়: উফফ। দারাও।
নীড় উঠে দরজা খুলল।
নীড়: কি হয়েছে দীদা…তোমরা এমন আচরন করছো কেন? আমি কি করেছি…
দীদা: সেটা কি অন্যকেউ বুঝবে?
নীড়: who cares…
দীদা:আচ্ছা নিচে আসো কথা আছে।
নীড়:যাও ১৫ মিনিটে আসছি….
.
১৫মিনিটপর…
নীড় মেরিনকে কোলে করে নিয়ে নিচে নামলো।
নীড়: কি হয়েছে? সবাই এমন গোল মিটিং হয়ে বসে আছো কেন?
বলেই নীড় সোফাতে বসলো। মেরিনকে কোলে নিয়েই। মেরিন উঠতে নিলে নীড় জোর করে বসিয়ে রাখলো।
নীড়: আরেকবার নরা চরা করলে মাথায় তুলে ১টা আছার মারবো।
মেরিন:??।
নীড়: মামনি কিছু খেতে দাও তো….
দাদুভাই: শোনো দাদুভাই…
নীড়: হামম অবশ্যই শুনবো। তবে খেতে খেতে…
নীলিমা খাবার নিয়ে এলো। নীড় খাবার ১বার মেরিনের মুখে দিচ্ছে আর ১বার নিজে মুখে নিচ্ছে।
নীড়: কি হলো দাদুভাই…. বলো ….
দাদুভাই: খেয়ে নাও আগে।
নীড়: তুমি বলতে থাকো।
দাদুভাই: আজকে প্রনয়-নীলার গায়ে হলুদ। আর কালকে বিয়ে।
নীড়: তুমি কি এটা বলার জন্য এতো ভাবছো!! আমি তো জানিই।
দাদুভাই:আমরা ঠিক
করেছি যে কাল প্রনয়-নীলার সাথে নীড়-মেরিনেরও বিয়ে দিতে।
মেরিন:?।
দীদা: পুরো পরিবার আছে…. ভালোই হবে এখন বিয়েটা হলে।
প্রনয় ভালোমতোই জানে এই সিদ্ধান্তে নীড় ক্ষেপে যাবে।
তাই
বলল: দীদা চৌধুরীদেরকে নিয়ে তো মজা উরাবে সবাই… যে টাকা বাচাতে ২ছেলের একসাথে বিয়ে দেয়া হয়েছে। আর তাছারাও নীড় তো ছোটো । ওর বিয়ে তো মহাধুম ধাম করে হবে। আমি নিজে মেরিনের জন্য jewelry design করবো। আর নীলা সারা শহরের decorating handle করবে। আমার তো ১টাই ছোট ভাই।
দাদুভাই: কিন্তু….
নিহাল: আচ্ছা আমি ১টা কথা বলি।
নাহিল: তোর ছেলে তুই বলবিনা…?
নিহাল: বিয়েটা পরে হবে। কিন্তু কাবিনটা তাহলে করিয়ে রাখি নীড়-মেরিনের…..
দাদুভাই: হ্যা তাও ভালো হয়। আচ্ছা নীড় দাদুভাই কি বলো?
নীড়: তোমরাই তো সব বলতেছো। আমি কি বলবো… ?
মেরিন: কাবিন কি?
কথাটা শুনতেই সবাই ওর দিকে এমনভাবে তাকালো যেন মেরিন ১টা এলিয়েন।
নীড়-প্রনয়-নীলা তো অভ্যস্ত।
প্রনয়: নীড় ১টা decision তো দাও। এক কাজ কর তুমি আর মেরিন discuss করে নাও।
নীড়: ওর সাথে discuss করার কিছু নেই।
নিহাল: এটা কেমন কথা নীড়… এটা তোমার না তোমাদের life….
নীড়: বাবা…. whatever … যাই হোক। কাবিনের ব্যাবস্থা করো। কিন্তু নীড়-মেরিনের বি়য়ের উৎসব grandly ই হবে।
মেরিন: নীড়-মেরিনের বিয়ে মানে? আমি তো আপনাকে বিয়ে করছিনা। আর না জল্লাদ বাপ হতে দিবে…
নীড়: তোমাকে জিজ্ঞেস করিনি যে আমাকে বিয়ে করবা কি করবানা…. যাই হোক আপাতত কাবিন টা করি।
মেরিন: কাবিন কি?
প্রনয়: নীড়…. we need to talk.. নীলা আসো।
.
নীড়ের রুমে….
প্রনয়: মেরিন আপুমনি…
মেরিন: জী স্যার…..
প্রনয়: তুমি নীড়কে বিয়ে করবে?
মেরিন: কেন স্যার??।
প্রনয়: বলো তো আগে।
মেরিন: না স্যার। আমি তো নীড় স্যারকে বিয়ে করবোইনা। আর হবেওনা। আমি তো কোনো fairy prince কে বিয়ে করবো। আসলে আমি বিয়েই করবোনা। বিয়ে করলে তো সব ছেরে চলে যেতে হয়। আমি আম্মু আপু পক্ষীরাজ … ওদের ছেরে অন্যকোথাও যাবোনা। আমি চলে গেলে জল্লাদ বাপকে জ্বালাবো কি করে…!!
ওরা ৩জনই জানে যে মেরিন মাঝে মাঝে উল্টা পাল্টা কথা বলে। তাই গুরুত্ব দিলোনা।
প্রনয়: আরে বাবা… মা আপু আর জল্লাদ বাবাতো আর বেচে নেই। তাইনা?
মেরিন: কে বলল? ওরা পৃথিবীতে নেই। কিন্তু এর মানে তো আর এটা না যে ওরা মরে গেছে….
৩জন মনে মনে: এ মেয়ে পুরাই পাগল। ?॥
প্রনয়: আপুমনি…. জল্লাদ বাপ অনেক খারাপ। তাইনা?
মেরিন: অনেকের থেকেও বেশি খারাপ।
প্রনয়: হামম। তুমি কি জানো যে বিয়ের পর মেয়েদের ওপর কেবল বাবার না স্বামীরও অধিকার থাকে। তোমার জল্লাদ বাপ তোমাকে বেশি বকতেও পারবেনা। নীড় বাচাবে।
মেরিন: না আমি বিয়ে করবোনা।
নীড়: ভাইয়া এই মেয়ে ভালোভাবে বুঝবেনা। একে তো…
প্রনয়: কথা বলছি তো আমি। বাইরে যাও। আমি এখনই আসছি।
নীড় বের হলো। প্রনয় নীলার সামনে গিয়ে
বলল: মেরিনকে যেভাবেই হোক বোঝাও। না হলে তোমার দেবর কেয়ামত শুরু করবে।
.
বলেই প্রনয় বেরিয়ে গেলো।
মেরিন: নীলাপু…..
স্যার কি বলল।
নীলা: অনেক কিছু।
বলেই নীলা গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো।
মেরিন:?।
নীলা: নীড়কে কেমন লাগে?
মেরিন: কেমন লাগে মানে?
নীলা: মানে মানে…. মানে নীড় দেখতে কেমন? চেহারা কেমন?
মেরিন: চেহারা তো সুন্দর। একদম fairy prince দের মতো। ?।
নীলা: ভালোবাসো?
মেরিন:হামম। আমি তো জল্লাদ বাপ ছারা সবাইকেই এত্তোগুলো ভালোবাসি।☺️।
নীলা মনে মনে: কিভাবে বোঝাবো? মনে পরেছে। সেদিন রাতকে দেখে মেরিনের মুখটা কালো হয়ে গিয়েছিলো। jealousy…
নীলা:রাতকে কেমন লাগে?
মেরিন:করাত লাগে… ?..
মেরিনের কথা বুঝতে নীলার একটু সময় লাগলো। আর বুঝে হাহা করে হাসতে লাগলো।
মেরিন:?।
নীলা: আচ্ছা রাত যখন নীড়ের কোলে ওঠে কেমন লাগে?
মেরিন: মাথা ঘুরায়….
নীলা:তোমার আর নীলার বিয়ে হলে রাত আর নীড়ের কোলে উঠতে পারবেনা।
মেরিন: সত্যি… ☺☺☺..
নীলা: হামম। সত্যিকারের সত্যি।
মেরিন: awwwe ki cute… কিন্তু জল্লাদ বাপ….???
নীলা: নীড় আছেনা… ও তো জল্লাদদের সর্দার।
মেরিন: তাও ঠিক।কিন্তু…
নীলা: কোনো কিন্তু না…. বিয়ে হলে তুমি কিউটি পিউটি বাবুও পাবে। & love baby…. তাইনা?
মেরিন: হামম হামম। বিয়ে হলেই বাবু পাওয়া যায়!!!
নীলা: হামম।
মেরিন: ওহ তাহলে বিয়ে করবো। চলো চলো। এখনই চলো।
নীলা:ওই এখন না। কালকে।
মেরিন: আজকে নয় কেন?
নীলা: কিছু নিয়ম আছে তো। তাই । ???
তাহলে তুমি রাজী?
মেরিন:হামম হামম।
নীলা চলে গেলো।
.
মেরিন: বিয়ে তো করবো। কিন্তু জল্লাদ বাপ যদি বিয়ের আগেই বাধা দেয়। yes…. এই আংটি টা তো আছে। এই আংটি দিয়ে protection create করতে হবে।
.
পরদিন….
প্রনয়-নীলা আর নীড়-মেরিনের বিয়ে হলো। মানে নীড়-মেরিনের কাবিন করানো হলো। আগে প্রনয়-নীলার বিয়ে হলো। পরে রাতে নীড়-মেরিনের কাবিন করানো হলো।
এতোদিনই নীড় মেরিনকে বুকে জরিয়ে ঘুমিয়েছে আর আজকে তো certificate ই পেয়েছে।
.
নীড় নিজের রুমে গেলো । ও কোনো decoration করায়নি রুমের। কাবিনটা করার কারনটা হলো কেবল মেরিনকে নিজের বন্ধনে আবদ্ধ করে নেয়া। নীড় রুমে ঢুকে দেখে মেরিন উরা ধুরা নাচতেছে। নীড় খানিকটা অবাক হলো। কারন ওর জানামতে কোনো নতুন বউই এমন করেনা।
নীড় মনে মনে: নীড় এটা আর ৫টা মেয়েনা। এটা #মেরিন …..
নীড়: এইযে miss PA… এমন ব্যাঙের মতো লাফাচ্ছেন কেন?
মেরিন: খুশিতে। ☺
নীড়:তো কোন খুশিতে?
মেরিন: baby হওয়ার খুশিতে…
নীড়: what!!!???… ক্যামনে কি… ???..
মেরিন: হামম হামম। এখন আমার বিয়ে হয়ে গেছে।আমারও বাবু হবে। নীলাপু বলেছে। ধিনাক ধিনাক…..
মেরিনের কথা শুনে নীড়ের অজ্ঞান হওয়ার উপক্রম।
মেরিন: কি হলো স্যার….
নীড়: কিছুনা বোইন…. তোর পা ২টা কোথায় একটু বলবি…. ?..
মেরিন: হামম। এই তো…. এই দেখুন। আপনি এটাও জানেন না যে পা কোথায় থাকে….!!!
নীড়: কোনদিন যেন ভুলে যাই আমি কে…. anyway ….. যাও এই ভারী dress change করে ১টা শাড়ি পরে আসো।
মেরিন: ??। আমি লাগে শাড়ি পরতে পারি?
নীড়: আমি আছি কি করতে?
নীড় মেরিনকে ১টা নীল রঙের শাড়ি পরাতে গেলে মেরিন বাধা দিলো।
মেরিন: নননীল রং পপপরতে পারবোনা…..
নীড়: কেন? আর ভয় পাচ্ছো কেন?
মেরিন: এমনিতেই…
নীড়: shut up….
নীড় জোর করে মেরিনকে নীল রঙের শাড়ি পরিয়ে দিলো। আর নিজেও ১টা নীল রঙের পাঞ্জাবি পরলো। এরপর মেরিনকে নিয়ে সাগরে ঘুরতে বের হলো। পূর্নিমার রাতের ঝলমলে চাদের আলোতে মেরিনকে আরো সুন্দর লাগছে। নীড় উঠে মেরিনের কাছে গেলো।
নীড়: তোমাকে কিছু বলতে চাই….
মেরিন: কি…??.
নীড় মেরিনের পেছনে গিয়ে ওকে জরিয়ে ধরে ওর ১হাত আকাশমুখী করে ধরে
বলল: ঐ চাদটাকে দেখতে পাচ্ছো?
মেরিন: হামম।
নীড়: ওই আকাশের বুকে যেমন ওই চাদটা আছে তেমনি আমার বুকের মাঝেও কেবল তুমি আছো। আমি থাকি আর না থাকি আমার ভালোবাসা আজীবন থাকবে। তোমার জন্য।
আমি তোমাকে ভালোবাসি….
I love you….
.
চলবে….