আজব প্রেমের কাহিনী part : 13

0
1963

আজব প্রেমের কাহিনী
part : 13
writer : Mohona

নীলা ওদেরকে জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কাদতে লাগলো। সাথে ওই ৩জনও কাদতে লাগলো। আর মেরিন দেখতে লাগলো।
মেরিন মনে মনে: এই মানুষগুলো এতো অদ্ভুদ কেন??? হুদ্দাই কান্না করে।
তখনই মেরিন সহ বাকীরা শুনতে
পেলো: এত্তোগুলা অশ্রু বিসর্জনের জন্য কি চৌধুরানীদের এখানে এনেছি? এটা কোনো কথা না কবিতা?? ??
সবাই পিছে ঘুরলো। দেখলো নীড় পকেটে ১হাত আর চিবুকে আরেক হাত দিয়ে style মেরে দারিয়ে আছে। নীড় ওদের দিকে এগিয়ে এলো।

নীড়: ইশ….. আমার ভাবির কেদে কেদে অবস্থা খারাপ। তোমাদের কিন্তু শাস্তি দিবো আমার মিষ্টি ভাবিটাকে কাদানোর জন্য। এখন দেখি তোমার হাতটার কি অবস্থা ভাবি….?
রুপা: হ্যা দেখি দেখি….
ওরা নীলার হাত নিয়ে দেখলো। আর দেখে অবাক হয়ে গেলো।
নীড়: একি….. ???… ভাবি ১দিনে তোমার হাত ভালো হলো কিভাবে….
নীলা: আআআসলে আমিও তাই ভাবছিলাম। মেরিন যেন কি ১টা ঔষধ দিলো আর আমার হাত ঠিক হয়ে গেলো……
নীড় ১ভ্রু উচু করে মেরিনের দিকে তাকালো।
মেরিন:…..
নীড়: ওই কি ঔষধ লাগিয়েছো????
মেরিন: আপনাকে বলবো কেন?
নীড়: oh hello… i m your boss… তাই u have to বলতে হবে….. u are my PA….
মেরিন:oh hello…. আমি এখন আর আপনার PA নই। i am fired….
নীড়: মোটেও না। তু্মি আমার PA ছিলে , আছো আর থাকবে।
মেরিন:বললেই হলো….. প্রনয় স্যার আমাকে বের করে দিয়েছে।
নীড়: তুমি আমার PA…
মেরিন: but.. job টা প্রনয় স্যার দিয়েছে।
নীড়: কিন্তু PA তুমি আমার। ত…..
নীলিমা: চুপ…. ২টাই চুপ… খালি ঝগড়া করে।
নীড়: এই যে PA যাও।গিয়ে সবার জন্য চা করে আনো।
মেরিন: পারবোনা। ??।
নীলা: তোমরা বসো আমি চা বানিয়ে আনছি।
মেরিন:ওই তুমি বসো তো ॥ আমি আনছি।

মেরিন রান্নাঘরে যাবার সময় নীড়ের সামনে ফিসফিস করে
বলল: আনাম রাক্ষস।

.

৩মিনিটপর…..
নীড়: তোমরা বসো। আমি দেখে আসছি পাগলটা কি ক….
তখনই দেখলো মেরিন সবার জন্য চা-নাস্তা নিয়ে হাজির।
সবাই:??।
নীড়: এতো তারাতারি কিভাবে……
মেরিন:?।
নীড়: চা কি তুমি নিজের হাত দিয়ে বানিয়েছো??।
মেরিন:নাহ… নিজের পা দিয়ে…. ?।
সবাই:??।

.

কিছুক্ষনপর….
নীড়: মেরিন….
মেরিন: কি??।
নীড় মনে মনে: এই মেয়েটা “কি” কথাও ত্যারা করে বলে…. যন্ত্রনা। একে নিয়ে সংসার করবো কিভাবে???।
নীড়: come with me….
মেরিন: কেন??।
নীড়: কাজ আছে।
মেরিন:?।
নীড়: এরমানে টা কি? ?। whatever … চলো।
মেরিন: পারবোনা।
নীড় জানে কথা বারিয়ে লাভ নেই। তাই সোজা মেরিনকে কোলে তুলে নিয়ে বেরিয়ে এলো।
মেরিন: এসবের মানে? নিজের ইচ্ছা কোলে নিয়েছেন। পরে আবার নিজেই ভ্যান ভ্যান করবেন।
নীড়: আমি কি মাছি যে ভ্যান ভ্যান করবো?
??।
মেরিন: huh….. দেখি সরেন….
নীড়: পারলে যাও।
মেরিন:??।
নীড়: whatever …
বলেই নীড় মেরিনকে ঘুরিয়ে মেরিনের পিঠে বুক ঠেকিয় মেরিনের ডান গালে চুমু দিলো।
মেরিন:??। আ….
নীড়: sorry…. সেদিন তোমাকে থাপ্পর মারার জন্য….
মেরিন: huh… দেখি ছারেন আমাকে।
নীড়: আমি সেদিন over react করেফেলেছিলাম। আসলে….
মেরিন: রাখেন তো আপনার আসল নকল ছারুন আমাকে….
নীড় জানে এখানে মেরিনের সাথে কথা বলতে গেলে ঝামেলা করবে তাই থাপ্পরের প্রসঙ্গ বাদ দিলো।

নীড়: এই যে শুনেন… i need your help….
মেরিন: কিসের help….
নীড়: আমি রহস্য ভেদ করতে চাই…..
মেরিন: কিসের রহস্য?
নীড়: property ঝামেলার। i think কোনো ঘাপলা আছে। কোনো থার্ড পার্সোন সিঙ্গুলার নাম্বারের ঝামেলা আছে।
মেরিন: মানে?
নীড়: তোমার মাথা….
তখন নীলিমা ওদের ডাক দিলো। ওরা ভেতরে গেলো।

.

সবাই বসে আছে । খাবার খাচ্ছে।
দীদা: কি করা যায়? প্রনয় ১বার যখন বলেছে তখন….
নীড়: দীদা ডার্লিং…. ভাইয়া আমার ভাবির প্রেমে হাবুডুবু…… ভাইয়াকে trap এ ফেলতে হবে।
দীদা: কিন্তু প্রনয় যে বুদ্ধিমান ওকে trap এ ফেলা তো অসম্ভব…..
নীড় : দীদা…. love is blind … deaf & dumb…. এখন তারাতারি ১টা বিয়ের ব্যাবস্থা করতে হবে।
মেরিন: বিয়ের ব্যাব্সথা করতে হবে…??… প্রনয় স্যার এখনও রাজীই হলোনা. আর…
নীড়: shut up…. আমি তো বলিনি যে ভাইয়া ভাবির বিয়ের ব্যাবস্থা করবো….. আমি বলেছি বিয়ের ব্যাবস্থা করবো। আমার ভাইয়ের বিয়ে তো আর হুট করে হতে পারেনা ।
নীলিমা: ওই ভনীতা না করে বলবে……

নীড়: মামনি আমরা ভাবির সাথে অন্যকারো বিয়ের ব্যাবস্থা করবো।
সবাই: what!!!???….

মেরিন: ওই আপনি কি পাগল না মাথা খারাপ…… নীলাপুর সাথে অন্যক…..
নীড়: দেখো মিস মাথামোটা…. বেশি বকবক করবেনা….. আর তোমরাও অতো shock কেন হচ্ছো? এই মাথামোটা টা না বুঝুক…. তোমরা তো বোঝো যে jealousy forced to express love….
মেরিন:?? ।
সবাই: হামম।
নীড়: ওই মাথামোটা……. মাথায় এতো জোর দিতে হবেনা। সময় হলে বুঝে যাবে। আর mobile কোথায় তোমার?
মেরিন: mobile ??? আমার কাছে তো mobile নেই…..
সবাই: ?।
মেরিন: ☺️☺️☺️।
নীড়: মামনি…. তোমরা বাসায় চলে যেও। আমি আসছি।আর আপনি চলেন আমার সাথে…..
মেরিন: কোথায়?
নীড়: হানিমুনে….
মেরিন: হানিমুন কি??
সবাই:?।
নীড় আর কোনো কথা না বলে মেরিনের হাত টেনে নিয়ে গাড়িতে বসালো।

.

মেরিন: কি আজব… কোথায় যাচ্ছি আমরা…?
নীড়: দেখতে থাকো।
নীড় মেরিনকে ১টা খুব সুন্দর mobile কিনে দিলো। এরপর মেরিনকে নিয়ে নদীর পারে গেলো।
মেরিন: এখানে কেন এলাম?
নীড়: তোমাকে পানিতে ডুবাতে। ?? ।
মেরিন: না না ।
নীড় মেরিন কোলে নিয়ে ১টা ভাঙা গাছের ওপর বসলো।

মেরিন: ওই নামান আমাকে ।
নীড় মেরিনের গালে ১টা চুমু দিয়ে
বলল: sorry…..
মেরিন:?।
নীড়: অামি বিনা কারনে তোমাকে সেদিন তোমার এই গালটাতে থাপ্পর মেরেছি…… sorry …
মেরিন:huh….
নীড়: আর কখনো মারবোনা….
মেরিন:??
নীড়: আমাকে আর রাগিও না। আসলে রাগ উঠলে মাথা ঠিক থাকেনা…..

.

এখন ছোটো করে প্রনয়-নীলার অতীতটা বলে ফেলি।

{{{
নীলার বয়স ছিলো ৭ আর প্রনয়ের ছিলো ১৩। তখনই ওদের engagement হয়েছিলো। ssc এর পরই প্রনয়কে australia পাঠানো হয় higher study এর জন্য। প্রনয় এই engagement টাকে কখনোই মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। এরপর ১দিন ভুইয়া আর চৌধুরী মিলে গ্রামবাসীদের সাহায্য করার জন্য ১টা project শুরু করেছিলো। ৭-৮ কোটি টাকা ব্যায় করে…… কিন্তু নীলার মামা শয়তানি করে ২পরিবারের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি করার জন্য project নষ্ট করে দেয়। আর এমনভাবে কাজটা করলো যে চৌধুরীরা ভাবলো কামাল ভুইয়ার দোষ। আর কামাল ভাবলো চৌধুরীরা করেছে। আর এই গরীব গ্রামবাসীদের ক্ষতি ক্ষতি নিয়েই ২ পরিবারের ব্যাপক ঝগড়া হয়েছিলো।
}}}

.

৩দিনপর……
প্রনয় গাড়ি দিয়ে যাচ্ছে তখন দেখলো মেরিন হাতে এতো গুলো shopping bag নিয়ে হেটে যাচ্ছে….. প্রনয় গাড়ি থেকে নেমে মেরিনের সামনে যেতে নিলো। নীলা কেমন আছে তা জানার জন্য। হাটতে হাটতে দিরিম করে পরে গেলো। প্রনয় দেখলো যে ১টা লাল রঙের বিয়ের শাড়ির মতো ১টা শাড়ি পরলো।
মেরিন: oh my প্রিয় আল্লাহ নীলাপু থুরি নীলা ম্যামের বিয়ের শাড়িটাই পরে গেলো….. এখন তো স্যার-ম্যাম আমাকে জবাই করবে…. ??….
প্রনয়ের মাথায় আগুন ধরে গেলো। নীলার বিয়ে??? মেরিন অনেক কষ্ট করে ওঠালো।
মেরিন মনে মনে: কেমন লাগে স্যার? জ্বলে?? জ্বালানোর জন্যই তো নীড় স্যার এখানে এমনটা করতে বলেছে।

প্রনয়: মেরিন….
মেরিন: কে ডাকেরে আমায়…
মেরিন ঘুরলো।
মেরিন: hello ex স্যার….
প্রনয়: নননীলার বিয়ে…..
মেরিন: হামম..??
প্রনয়: ভালো…..
মেরিন: ex স্যার…. বিয়েটা বন্ধ করুন না… please ….
প্রনয়:….
মেরিন: স….
তখনই মেরিনের mobile এ call এলো।
মেরিন: আআআসছি স্যার…..
প্রনয়: কে ছিলো??
মেরিন: স্যার ছিলো। আসি স্যার ।
বলেই মেরিন ভো দৌড়……..

পরদিন নীড় সব সত্য অনুধাবন করে ফেলল।

.

২দিনপর…..
প্রনয়ের বুকে ঝড় উঠেছে। কারন আজকে নীলার বিয়ে….. কোথাও কোনো ভাবেই কিছুতেই শান্তি পাচ্ছেনা। তারমধ্যে সকাল থেকেই চোখের সামনে খালি ভালোবাসা ভালোবাসা দেখছে। দাদু-দীদার ভালেবাসা, মা-বাবার ভালোবাসা, কাকা-কাকীমার ভালোবাসা দেখেছে।

.

সন্ধ্যায় …..
প্রনয় আর থাকতে পারলোনা। ছুটলো নীলাদের বাড়িতে। গিয়ে দেখলো যে নীলার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। মালা বদল হচ্ছে। বরের মুখে সেহরা বাধা। যার জন্য মুখ দেখা যাচ্ছেনা। প্রনয় দৌড়ে গিয়ে ওদের হাত থেকে মালা কেরে নিলো।

প্রনয়: তুই কিভাবে বিয়েটা করলিরে…. বলতো…. তুইনা আমাকে ভালোবাসিস…..
বলেই প্রনয় ঠাস করে নীলাকে থাপ্পর মারলো। নীলা ঠাস করে পরে গেলো। তখন ওর হাত থেকে ছোট্ট ১টা বোতল পরে গেলো। প্রনয় দেখলো যে ওটা poison …
প্রনয় খপ করে নীলাকে তুলল। প্রনয়ের পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো।
প্রনয়: এই নীলা এএই…. তততুমি কি করেছো……. এই নীলা….. এই পাগলি…. তুই এমন করতে পারিসনা আমার সাথে….. আমি তোকে ছারা থাকবো কি করে…..
নীড়: কেন ভাইয়া নীলা ভাবির কিছু হলে তোমার কি? মরুক। কি সে তোমার?
প্রনয়: আমার জীবন… আমার ভালোবাসা……
তখনই mr. বর নিজের সেহরা খুলে
বলল: সত্যি????।
প্রনয় তাকিয়ে দেখলো বরটা বর না মেরিন….. ???
প্রনয়: মেরিন??
মেরিন:??।
প্রনয় নীলার দিকে ঘুরতেই নীলা প্রনয়ের গলা জরিয়ে ধরলো। প্রনয় অবাক হয়ে গেলো। নীলা প্রনয়কে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলো।
নীলা: তুমি ছারা যে আমি নিজেকে ভাবতেও পারিনা। ভীষন ভালোবাসি তোমায়।
ওদের ২জনকে একা ছেরে সবাই বেরিয়ে গেলো।

.

কিছুক্ষনপর….
নীড় সবার সামনে মামার বদমাইশি উন্মোচন করলো। ২পরিবারের দন্ড শেষ হলো। দাদুভাই নীলাকে চৌধুরী বাড়িতে নিয়ে গেলো। dream project টা complete করে ঢাকা গিয়ে বিয়ে হবে….

.

৭দিনপর…….
দেশর বড় বড় সব মডেলরা এসেছে। আজকে photoshoot… ৩দিনপর ramp show…
নীড়-প্রনয় ২জনই খুব চিন্তিত। কারন সবগুলো dress design করেছে নীড় আর সবগুলো diamond এর jewelry design করেছে প্রনয়। সকাল থেকে শুরু হলো photoshoot… .

.

দুপুরে খাওয়ার সময়…..
মেরিনের dress এ ভুল করে খাবার পরে গেলো।
তাই নীড় মেরিনকে নিজে design করেছে। ১টা dress দিলো। মেরিন সেটা পরলো। ভীষন সুন্দর লাগছে।
তাকিয়েই আছে। নীড় মেরিনকে বাহুডোরে নিয়ে ২চোখ ভরে দেখতে লাগলো।
মেরিন: স্যার…. ও স্যার…..
নীড়: হামমম।
মেরিন: আর কতোক্ষন দারিয়ে থাকবেন?আর দেখবেন?
নীড়:হামম।
মেরিন:স্যা……র…. ???….
নীড়ের কান ঝালাপালা হয়ে গেলো।
১বস্তা বিরক্তি নি়য়ে
বলল: কি হয়েছে…???..
মেরিন: কিছুনা। ছারুন আমাকে….
নীড়: এতো ছারুন ছারুন করো কেন? ভালোলাগেনা আমার বাহুডোরে….
মেরিন: বাহুডোর কি???
নীড়: পাগলি…. মেরিন ১টা কথা বলি?
মেরিন:??। আপনিও কথা বলার অনুমতি নেন?
নীড় মেরিনের কপাল থেকে চুল সরিয়ে
বলল: সকল বীড় পুরুষদেরও এই জায়গায় দুর্বলতা থাকে। আর আমি তো নীড়….. আচ্ছা তুমি তো….
তখনই প্রনয়ের ডাক পরলো। নীড়-মেরিন গেলো।

.

মেরিনকে ভীষন সুন্দর লাগছে। নীড় মেরিনের কিছু ছবি তুলল। মেরিনের ছবি ১জন photographer ও তুলল। যখন ছবি গুলো magazine , social media তে প্রকাশিত হলো তখন মেরিনের ছবি সবাইকে ছাপিয়ে গেলো। নীড়রা তো অবাক। কারন ওরা তো মেরিনের ছবিতো দেয়াই হয়নি….. যাই হোক official বেশ সফল হলো। কাজ শেষ করে ঢাকাতে গেলো। আর ঢাকাতে গিয়েই সবাই বিয়ের কাজে ব্যাস্ত হয়ে পরলো।

.

২দিনপর….
মেরিন ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখন ধপ করে নীড় মেরিনের রুমে ঢুকলো।
মেরিন: একি…. আপনি?

.

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে