Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"আকাশের চেয়েও বেশী তোমায় ভালোবাসি পর্ব-০৯ এবং শেষ পর্ব

আকাশের চেয়েও বেশী তোমায় ভালোবাসি পর্ব-০৯ এবং শেষ পর্ব

#আকাশের_চেয়েও_বেশী_তোমায়_ভালোবাসি
লেখনীতে:Waziha Zainab (নিহা)
অন্তীম পর্ব

সন্ধ্যা সাতটায় আবিরের বার্থডে পার্টির আয়োজন করা হয়েছে।পুরো বাড়ী বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে।আবিরের সব বন্ধু বান্ধব স্নেহা ও স্নেহার বাবা মা সবাইকে ইনভাইট করা হয়েছে।

আলমারির সব কাপড়চোপড় পুরো ঘরের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।আবির বিছানার একপাশে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।আঁচল পা টিপে টিপে এক হাতে শাড়ীর আঁচল দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে ঘরের ভেতর প্রবেশ করলো। পুরো বিছানা এমন এলোমেলো দেখে ভ্রু কুচকে আবিরকে জিজ্ঞাসা করলো
“কি ব্যাপার একটুপর গেস্টরা সব চলে আসবে ঘরের এমন অবস্থা করে রেখেছেন কেনো?”
আবির আঁচলকে দেখে একটা লম্বাশ্বাস ফেলে বিছানা থেকে উঠে আঁচলের এক হাত চেপে ধরে বলে
“উফফ এতোক্ষণে আসার সময় হলো তোমার।দেখো এক ঘন্টা যাবৎ ট্রায় করছি কিন্তু কোন শার্ট পরবো সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না। একে তো পুরো আলমারি তোমার শাড়ীতে ভরে আছে”
আঁচল ভ্রু কুচকে বলে
“একদম বাজে কথা বলবেন না। আপনার আলমারি আপনার জামা কাপড়ে ভর্তি শুধু শুধু আমার শাড়ীর দোষ দিচ্ছেন কেনো”
আবির মুখে ভেঙচি কেটে বলে
“তো আমি খুজে পাচ্ছি না কেনো তাহলে”

আঁচল এবার আলমারি থেকে একটা শপিংব্যাগ বের করে আবিরের হাতে দিয়ে বললো
“এখানে কিছু জিনিস আছে আশা করি আপনার পছন্দ হবে।”
এতোটুকু বলেই আঁচল ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। আবির বিষ্ময় নিয়ে প্যাকেট টা খুললো। দেখলো তাতে একটা সাদা পাঞ্জাবি সাদা প্যান্ট,,নেভি ব্লু রঙের কোর্ট আর একটা ব্লু কালারের ঘড়ি আছে।আবির ওয়াশ রুমে চলে যায়।

পুরো বাড়ী ভর্তি মেহমান।ড্রয়িংরুমের চারদিকে ম্যাজিকলাইটিং করা হয়েছে।স্টেজের টেবিলে একটা বড় কেক রাখা আছে। টেবিলের চারপাশে অংসখ্য বেলুনের ছড়াছড়ি।আবির আর আঁচলকে সিড়ি দিয়ে একসাথে নামতে দেখে সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
আবির সাদা পাঞ্জাবি সাদা প্যান্ট আর ব্লু কোট পরেছে। আর আঁচল একটা সাদা শাড়ি পরেছে যাতে ব্লু রঙের স্টোন বসানো। আঁচলের চুলগুলো সাইডে সিথি কাটা আর কানের পাশে একটা লাল গোলাপ গুজে দেওয়া।আঁচল ঠোঁটে লাল লিপ্সটিক আর চোখে গাঢ় কাজল দিয়েছে।

আবির নিচে নেমে স্টেজে গিয়ে দাড়াতেই স্নেহা এসে আবিরকে জড়িয়ে ধরে বললো
“হ্যাপি বার্থডে বেইবি”
আবির স্নেহার দিকে তাকালো।স্নেহা একটা কালো গ্রাউন পরেছে। আর স্নিগ্ধ একটা কালো শার্ট কালো প্যান্ট পরেছে। আবির স্নেহাকে কিছু বললো না ঝাটকা মেরে ওর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো। আবির গিয়ে টেবিলে কেকের সামনে দাড়ালো আর টেবিলের চারপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে মেহমান রা। আবিরের একপাশে স্নেহা দাঁড়িয়ে আছে আর অন্য পাশে আবিরের মা দাঁড়িয়ে আছে। আবির কেক কেটে প্রথমে তার মা কে খাওয়ালো আবিরের মা ও আবিরকে কেক খাওয়ালো। আবির আরেকটা কেক কেটে স্নেহার দিকে এগিয়ে গেলো।স্নেহা মুচকি হেসে হা করতেই আবির স্নেহাকে টপকে আঁচলকে কেকটা খাইয়ে দিলো স্নেহা রেগে গেলো ভীষণ।কিন্তু নিজের রাগ দমিয়ে রাখলো। আঁচল স্নেহার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।স্নেহার সহ্য হচ্ছে না আঁচলের এই হাসি।। স্নেহা ওখান থেকে সরে স্নিগ্ধর পাশে গিয়ে দাঁড়ায় স্নিগ্ধ হালকা কেশে আস্তে করে বলে উঠে
“কি ব্যাপার এমন রাগি লুকে আছো কেনো?”
স্নেহা নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করে বললো
“আবিরের হাবভাব একদম ভালো লাগছে না”
স্নিগ্ধ ভ্রু কুচকে বলে
“কেনো ও কি করেছে?”
স্নেহা স্নিগ্ধকে ফিসফিসিয়ে বলে
“আজকে ওর আঁচলকে ডিভোর্স দেওয়ার কথা আর ও আমাকে ইগনোর করে আঁচলকে কেক খাওয়াচ্ছে। কোথাও তো কিছু গন্ডোগোল আছেই”
স্নিগ্ধ হালকা হেসে বলে
“মনে হয় আজই আঁচলের এই বাড়িতে শেষ দিন তো তাই ওর শেষ মূহুর্তটা আবির ওকে হাসি মুখে বিদায় দিতে চাচ্ছে। বায় দা ওয়ে তুমি যাও আবিরের পাশাপাশি থাকো ওকে চোখে চোখে রাখো। আর তোমাদের এনগেজমেন্ট এর কথাটা বলো”

জন্মদিনের অনুষ্ঠান শেষ হতেই স্নেহা আবিরের কাছে গিয়ে আবিরকে বললো
“আবির আজ আমাদের এনগেজমেন্ট হওয়ার কথা আর আমার মা বাবা ও এসে গেছে তুমি আঁচলকে ডিভোর্স দিবে আজই”
আবির রহস্যময় মুচকি হেসে বললো
“হ্যা অবশ্যই”
স্নেহা আবিরের একহাত শক্ত করে ধরলো। আবির গিয়ে ঘরের মাঝ বরাবর দাড়ালো চারদিকে অন্ধকার আবিরের মুখের উপর লাল নীল লাইটের আলো আসছে। আবিরের এক হাত চেপে ধরে দাড়িয়ে আছে স্নেহা আর দূরে দাড়িয়ে আছে আঁচল।আঁচল ওদের দেখছে আর মুচকি মুচকি হাসছে আর মনে মনে ভাবছে
“ডিয়ার স্নেহু। যতো হাসি এখনই হেসে নাও একটুপর হয়তো তোমার এই হাসি থাকতে না ও পারে আর হয়তো একটুপর তোমার এই আনন্দের হাসি কান্নায় পরিণত হবে। আবিরের এমন শান্ত চেহারাই বলে দিচ্ছে ঝড়ের পূর্বাভাসে যেমন চারদিক নিরব থাকে আবিরও তেমন শান্ত আছে। আই নো মানুষটা তারজন্মদিনের দিন তার বন্ধু আর ভালোবাসার আসল চেহারা দেখতে পেয়েছে তার কষ্ট কতো খানি৷ আসলেই কিছু মানুষ বন্ধু হওয়ার যোগ্যতা রাখে না আর কেউ ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যও নয়। বাট মিস্টার আবির এতোকিছুর পর আপনারও কিছু পাওনা থেকে যায় আর আপনার সব অপমানের জবাব আপনি পাবেন।”

আবির একটা মাইক হাতে নিয়ে স্টেজে দাড়ালো চারদিকে অন্ধকার শুধুমাত্র আবিরের মুখের উপর লাল নীল ম্যাজিক লাইট এসে পড়ছে। আবির মাইক মুখের সামনে নিয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো

“হ্যালো এভরিওয়ান লেডিস এন্ড জেন্টালম্যান। সবাইকে জানাই শুভ রাত্রি।আজ আমি আপনাদের সাথে আমার প্রেয়সি অর্থাৎ আমার ভবিষ্যত জীবনের জীবনসঙ্গীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো আর তার সাথে আমার জীবনের সেই মানুষটা যাকে আমি সবথেকে বেশী ঘৃণা করি ওই মানুষটাকে ও চিনিয়ে দিবো।।প্রথমেই আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো আমার তিন বছরের ভালোবাসার। যাকে আমি তিন বছর ধরে মনেপ্রাণে ভালোবেসেছিলাম এবং বিশ্বাস করেছিলাম।স্নেহা এখানে চলে এসো”
স্নেহা হাসতে হাসতে স্টেজে উঠে আবিরের পাশে দাড়ালো। সবাইকে হাত দিয়ে ইশারা করে হাই বললো
আবির এবার মাইক টা মুখের কাছাকাছি নিয়ে বললো
“আঁচল তুমিও এখানে এসো”
আঁচল মুচকি হেসে স্টেজে উঠলো। সবার চোখ বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম। কেমন ছেলে নিজের বউ আর গার্লফ্রেন্ডকে একসাথে ডাকছে।

আঁচল গিয়ে আবিরের পাশে দাড়ালো। আবির পকেট থেকে একটা ছোট্টো বক্স বের করলো। যেটাতে একটা ডায়মন্ডের আংটি দেখা যাচ্ছে। আবির আঁচলের সামনে হাটুগেড়ে বসে আঁচলকে উদ্দেশ্য করে বললো
“হবে কি আমার প্রেয়সি
হবে কি আমার সুখ দুঃখের সাথী। জানি আমি তোমার সাথে কারণে অকারণে অনেক বাজে ব্যাবহার করেছি। জেনে না জেনে অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমায়। এখন সেই কষ্ট ভুলিয়ে দেওয়ার নতুন সু্যোগ কি দিবে আমায়? তোমার জীবনটাকে ভালোবাসার রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার সুযোগ কি আমায় দিবে?
ভালোবাসি
#আকাশের_চেয়েও_বেশী_তোমায়_ভালোবাসি
ভীষণ ভালোবাসি।
ওই আকাশের যেমন কোনো সীমা নেই তেমন আমার ভালোবাসারও কোনো সীমা নেই সীমাহীন ভালোবাসি তোমাকে।”
আঁচল মুচকি হেসে হাতটা বাড়িয়ে দিলো আবির আঁচলের হাতে আংটি পরিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে আঁচলকে জড়িয়ে ধরলো।

স্নেহা আবিরের এমন কর্মকান্ড একদমই আশা করেনি।স্নেহা দৌড়ে আবিরের কাছে গিয়ে বলে
“বেইবি তুমি ঠিক আছো।আজ আমার আর তোমার এংগেজমেন্ট হওয়ার কথা ছিলো আর তুমি আঁচলকে আংটি পরালে?”
আবির ভ্রু কুচকে বললো
“হুম এংগেজমেন্ট হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু হয় নি তো। আমি তোমাকে যতোটা ভালোবাসতাম এখন তার থেকেও বেশী ঘৃণা করি”
স্নেহা আঁচলের সামনে গিয়ে বলে
“তুই নিশ্চই আবিরকে ভুল বুঝিয়েছিস আমার ব্যাপারে।তোর এতো বড় সাহস হয় কি করে হাউ ডেয়ার ইউ”
এতোটুকু বলেই স্নেহা আঁচলকে থাপ্পর মারতে হাত তুললো কিন্তু আবির স্নেহার হাত ধরে স্নেহাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে জোরে একটা থাপ্পর মারলো।

পুরোবাড়ী স্তব্ধ হয়ে আছে সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।স্নেহার গালে আবিরের হাতের পাঁচটা আঙুলের চাপ বসে গেছে। স্নেহা নিজের গালে হাত রেখে আবিরের দিকে তাকিয়ে আবিরকে বলে
“বেইবি তুমি আমার গায়ে হাত তুলেছো তাও আবার ওই থার্ডক্লাস মেয়ের জন্য”
আবির স্নেহাকে ধমক দিয়ে বলে
“একদম আঁচলকে নিয়ে কোনো কথা বলবি না তুই। তুই নিজে থার্ডক্লাশ মেয়ে।”
স্নেহা আবিরের দিকে তাকিয়ে বললো
“বেবি তুমি আমাকে তুই করে বলছো কেনো”
আবির স্নেহার গলা চেপে ধরে বলে
“তোর ভাগ্য ভালো যে তোকে তুই করে বলছি। যদি এর চেয়েও নিকৃষ্ট কোনো ভাষা থাকতো তবে তোকে সেটাই বলতাম। কি ক্ষতি করেছিলাম আমি তোর যার কারণে তিনটা বছর তুই ভালোবাসার নাটক করেছিস”
স্নিগ্ধ দৌড়ে স্টেজে উঠে আবিরের থেকে স্নেহাকে ছাড়িয়ে নেয়। আবির স্নিগ্ধ কে বলে
“ওহ তোকে তো ভুলেই গেছিলাম।তোর মতো বন্ধু থাকতে শত্রুর কি প্রয়োজন। তোর মতো বিশ্বাসঘাতক মুখোশধারী বন্ধু থাকার চেয়ে হাজার টা প্রকাশ্য শত্রু থাকাও অনেক ভালো”
স্নিগ্ধ খানিকটা চমকে উঠে বলে
“কি যা তা বলছিস তুই আবির”
আবির নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে স্নিগ্ধকে নিজের শরীরের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে কষে একটা থাপ্পর মারে। আর স্নিগ্ধকে কয়েকটা ফাইল দেখায়। যেখানে স্নিগ্ধ আর স্নেহার অনেকদিন হোটেলে রাত কাটানোর জন্য সিগনেচার করা।আবির স্নেহার হাতে একটা রিপোর্ট দেয়। স্নেহা সেটা দেখে রীতিমতো ভয় পেয়ে বলে
“এএটা ততুমি কোথায় পেয়েছো?”
স্নিগ্ধ স্নেহার হাত থেকে রিপোর্টটা নিয়ে অবাক হয়ে বলে
“স্নেহা ততুমি প্রেগন্যান্ট”
আবির স্নেহাকে থাপ্পর মেরে স্নিগ্ধকে বলে
“হ্যা স্নেহা প্রেগন্যান্ট। আর ওই অনাগত সন্তানের বাবা তুই”
স্নেহা ভয় পেয়ে বলে
“ততুমি এসব ককোথায় পেয়েছো”
আবির রহস্যময় হাসি দিয়ে বলে”গতকাল রাতে আমার কাছে একটা আননোন নাম্বার থেকে কল আসে। জানিনা কে ছিলো সে কিন্তু এতোটুকু জানি যে সে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী ছিলো তারজন্যই হয়তো আমি ঠিক আর ভুলের পার্থক্য টা বুঝতে পেরেছি আর মুখোশধারী বন্ধু আর ভালোবাসার আসল রুপ দেখতে পেয়েছি।গতকাল রাতে আননোন নাম্বারের মানুষটা আমাকে তোরা যে হোটেলে ছিলি ওই হোটেলের ডিটেইলস আর তোদের রুম নাম্বারটা বলে এটাই বলেছিলো যেনো আমি ওই ঠিকানায় খোজ নিই। এতো রাতে হোটেলের সিকিউরিটিদের টাকা দিয়ে ভেতরে যেতে পারলেও ওখানের ম্যানেজার আমাকে ডুকতে দিচ্ছিলো না পরে ভিজিটিং কার্ড দেখানোর পর সব তথ্য দিয়েছে তোদের। আর সাথে এই প্রমানগুলোও। আজ সকালে বেরিয়েছিলাম স্নেহার মুখ থেকে সব সত্য জানবো তাই কিন্তু ওর বাসার গেইটে যেতেই ওর দারোয়ান বললো ও একটু আগে বেরিয়েছে। আমি কিছু না বলেই স্নেহাকে ফলো করতে লাগিলাম।ওর গাড়ি হসপিটালের সামনে গিয়ে দাড়ালো আর ওর আর ডক্টরের মাঝে অনেকক্ষণ কথাবার্তা হয়।স্নেহা বেরিয়ে যাওয়ার পরই আমি ডাক্তারের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করি স্নেহা কেনো এসেছিলো ওনি প্রথমে না বলতে চাইলেও পরে বললেন স্নেহা প্রেগন্যান্ট ওর বাচ্চাটা ও নষ্ট করতে চায় তারজন্যই ওখানে গিয়েছিলো। আমি ডক্টরের থেকে অনেক অনুরোধ করে এই প্রেগ্ন্যাসির রিপোর্ট নিয়েছি।স্নেহা তুমি বড্ড ভুল করলে লোভ সব সময় ধ্বংস করে।টাকার লোভ করে আমার জীবনটা এভাবে নষ্ট করলে তোমরা।”
স্নেহার মা এসে স্নেহার সামনে দাঁড়ায়। স্নেহা তার মাকে মাম্মি বলে জড়িয়ে ধরতে নিলেই স্নেহার মা স্নেহাকে থাপ্পর মেরে বললো
“তোর মতো মেয়ে থাকার চেয়ে সন্তানহীন থাকলে সেটাই ভালো হতো। যে মেয়ের কারণে নিজেদের মান সম্মান বজায় থাকে না এমন মেয়ে মরে যাওয়া ভালো।তোর বাবার কি টাকার অভাব যার কারণে কারো অনুভুতির সাথে খেলা করবি তুই”
স্নেহা স্নিগ্ধকে জড়িয়ে ধরতে নিলে স্নিগ্ধ এসে স্নেহাকে থাপ্পর মেরে বলে
“ভুল করেছি আমরা কিন্তু সেই ভুলের শাস্তি বাচ্চাটা কেনো পাবে। তুই আমাকে এসে বলতে পারতি তাহলেই তো হতো কিন্তু তুই বাচ্চা নষ্ট করতে চেয়েছিলি কোন সাহসে তাও আবার আমাকে না জানিয়ে”
স্নেহা হাটু গেড়ে বসে কান্না করতে লাগলো আঁচল এসে স্নেহার কাধে হাত রেখে বললো
“ছোট্ট ছোট্ট ভুল থেকেই পাপ মহাপাপ হয়।ভুল মানুষ করে তাই ভুল গুলো সুধরে নিয়ে নিজের জীবনকে সুন্দর ভাবে সাজাও নিজের অনাগত সন্তানের খেয়াল রাখো দেখবে জীবন সুন্দর হবে।মানুষের জীবনে টাকা সব না টাকা থাকলেই কেবল মানুষ সুখী হয় না সুখী হওয়ার জন্য ভালোবাসার মানুষ পাশে থাকাটাই যথেষ্ট ”

স্নেহা ডুকরে কেঁদে আঁচলকে জড়িয়ে ধরে বললো
“ভুল করেছি আমি।আমি আবিরকে ঠকিয়েছি। আমি ভেবেছিলাম আবিরের টাকায় আমেরিকা গিয়ে সেটেল্ড হয়ে যাবো তাই স্নিগ্ধ যা যা বলেছে সব করেছি। কিন্তু এখন আমার পাশে কেও নেই স্নিগ্ধ আবির কেউ নেই আমি বড্ড একা”
আঁচল মুচকি হেসে স্নেহার চুলে আলতো করে হাত বুলিয়ে বললো
“কে বলেছে তোমার পাশে কেউ নেই। স্নিগ্ধকে তুমি ভালোবাসো ওর থেকে ক্ষমা চেয়ে নাও দেখবে ও তোমাকে সারাজীবন আগলে রাখবে।ক্ষমা একটি মহৎ গুণ।অপরাধীর অপরাধ যদি হয় পাহাড় সমান তবে ক্ষমাশীলের ক্ষমা হতে হবে পর্বত সমান”
স্নেহা গিয়ে সিগ্ধ আবিরের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলো।আবিরও ওকে ক্ষমা করে দিলো স্নিগ্ধ ওকে বুকে টেনে নিলো।

আকাশের চাঁদটা জ্বলজ্বল করছে। আর চারদিকে তারা গুলো মিটমিট করছে। আঁচল খোলা চুলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ কারো গরম নিশ্বাস এসে পড়ছে আঁচলের ঘাড়ে আঁচল কেপে কেপে উঠছে।মানুষটা আঁচলের পেটে আলতো করে হাত রাখলো আঁচলের সারা শরীর শীতল হয়ে আসছে।মানুষটা আঁচলকে বললো
“উমম ঘুম পাচ্ছে ভীষণ ঘুমাবো চলো”
আঁচল কপাল ভাজ করে বলে
“ঘুম পাচ্ছে তো ঘুমান আমার কাছে এসেছেন কেনো কি চাই?”
আবির আঁচলকে আরো একটু চেপে ধরে বললো
“আদর চাই”
আঁচল আবিরের পেটে গুতো মেরে বলে
“অসভ্য”
আবির মুচকি হেসে বলে
“অসভ্য বাট সেটাও নিজের বউয়ের জন্য হুহ”
আঁচল মুচকি হেসে আবিরের দিকে ঘুরে আবিরকে জড়িয়ে ধরে বলে
“ভালোবাসি”
আবির আঁচলকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে
“#আকাশের_চেয়েও_বেশী_তোমায়_ভালোবাসি।
ভীষণ ভালোবাসি এই ভালোবাসাটা আজীবন থাকবে।”
আঁচল মুচকি হাসে
আবির আঁচলকে জিজ্ঞেস করে
“আচ্ছা স্নেহার এমন রুপ দেখেও তোমার কাছে কোনো রকম কোনো অদ্ভুত রিয়েক্ট দেখি নি কেনো ব্যাপারটা কি তুমি আগে থেকেই জানতে?”
আঁচল মুচকি হেসে বলে
“কিছু কথা অজানা থাকাই ভালো”
আবির আর কিছু না বলে আঁচলকে কোলে তুলে নেয়।
শুরু হয় আরো একটা নতুন ভালোবাসার সূচনা””

সমাপ্ত

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ