#অন্ধকার_পল্লী
Part:1
#Tabassum_Riana
ঝিরঝির বৃষ্টি পড়ছে।রাস্তাটা পানিতে ডুবে যাওয়ার অবস্থা।ছাতা হাতে অবনী দাঁড়িয়ে আছে।আজ বাস রিক্সা কিছুই পাচ্ছেনা ও।তাই অগত্যা হাঁটতে শুরু করলো।বাড়ি বেশ দূরে। হেঁটে যাওয়া সম্ভব নয় তাহলে কি করবে এখন ও?হঠাৎ একটা গাড়ি দেখতে পেলো।গাড়িটা ওর দিকেই আসছে।কিছুনা ভেবে হাত নাড়তে লাগলো অবনী।গাড়িটা থামেনি বেশ দূরে চলে গেলো।কি করবে ও?ঠিক তখনই গাড়িটা আবার পিছে এলো। ওর কাছে এসেই থামলো।গাড়ীর দরজাটা কে জানি খুলে দিলো।কিছু না ভেবেই অবনী ঢুকে পড়লো।একজন ভদ্রলোক।চোখে সানগ্লাস,ব্লাক শার্ট আর ব্লু জিন্স প্যান্ট।অবনীর দিকে একটি রুমাল ধরলো লোকটা।অবনী কিছু না ভেবে রুমাল টা নিয়ে ওর হাত মুখ মুছতে লাগলো।
কই যাবেন আপনি?লোকটা বলে উঠলো।অবনী লোকটার দিকে একনজর তাকিয়ে বলল শ্যাওলা পাড়া।ওহ।লোকটা কিছু না বলে গাড়িতে স্টার্ট দিলো।গাড়ি চলতে লাগলো।অবনী জানালা দিয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখছে।বৃষ্টিতে বড়ই সুন্দর দেখাচ্ছে।হাত বের করে বৃষ্টির পানির ফোঁটা গুলো স্পর্শ করছে অবনী।
আফিন পাশে বসা অপরিচিতার দিকে এক নজর তাকালো।মেয়েটার মাঝে কি যেন একটা আছে,মনোমুগ্ধকর একটা জিনিস।বৃষ্টির পানি মুখে পড়তেই চোখ বন্ধ করে হাসা,হাত বাহির করে বৃষ্টি স্পর্শ করা সত্যিই অদ্ভুত এক মোহ কাজ করছে অাফিনের মাঝে।হাত ঢুকান অন্য গাড়ি আসলে এ্যাক্সিডেন্ট হতে পারে।অাফিন সামনে তাকিয়ে বলে উঠলো।অবনী অাফিনের দিকে মুখ ঘুরিয়ে তাকালো।তারপর হাত ঢুকিয়ে নিয়ে বৃষ্টি দেখায় মনযোগ দিলো।রাস্তা যেন শেষই হচ্ছেনা।অজানার পথে চলছে গাড়িটা।ঘন্টা খানিক পর অবনীর বাসার সামনে গাড়ি এসে থামলো।অবনী বেরিয়ে গিয়ে সামনে চলে গেলো।অাফিন ভ্রু কুঁচকে অবনীর যাওয়ার দিকে চেয়ে আছে।কেমন মেয়ে একটা বার থ্যাংকস ও দিলো না।
অবনী পিছনে ফিরে এলো।গাড়ির জানালায় নক পড়ায় জানালা খুলে দিলো অাফিন।ইয়েস অাফিন বলে উঠলো।থ্যাংকস সাহায্য করেছেন তাই।মুচকি হেসে বলল অবনী।ওয়েলকাম। জানালা লাগাতে লাগাতে বলল আফিন।গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বেরিয়ে গেলো।অবনী ঘরে ঢুকে পড়লো।অবনী মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান।বাবা রিটায়ার্ড পুলিশ অফিসার,মা গৃহিনী আর ছোট বোন আফসানা ক্লাশ নাইনে উঠলো সবে।অবনী একটা পাবলিক ভার্সিটিতে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ছে।দুটো টিউশনি ও করছে কারন বাসার খরচ চালাতে হয়।অামেনা বেগম অবনীর দিকে এগিয়ে এলো। কিরে মা পুরো ভিজে গেছিস?আরে মা ছাতাটা মাঝখান দিয়ে ফুঁটো হয়ে গেছে।ছাতা বন্ধ করে বলে উঠলো অবনী।
ওহ, যাহ গোসল সেরে নেয়।নাহলে ঠান্ডা লেগে যাবে।একনাগাড়ে বলে উঠলেন আমেনা বেগম।জি মা। রুমের দিকে এগোতে এগোতে বলল অবনী।
ড্রাইভ করছে আর পাশের সিটে তাকাচ্ছে অাফিন।পাশে তো মেয়েটি বসে ছিলো।
অাফিন বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী প্রয়াত শফিক খানের একমাত্র সন্তান।বর্তমানে ব্যাবসায়ের সকল দায়িত্ব অাফিন সামলাচ্ছে।বেশ লম্বা ফর্সা আফিন।দেখতে হিরোদের হার মানাবে।কোন কিছুরই অভাব নেই ওর জীবনে শুঊু আছে মায়ের অভাব,মায়ের ভালোবাসার অভাব।বাড়ির সামনে গাড়ি থামালো আফিন।একজন লোক এসে দরজা খুলে দিলো।
স্যার ফ্রেশ হয়ে নিন।আপনার খাবার গরম করতে বলছি।কাজের লোকটা বলে উঠলো।
হুম।আফিন ভিতরে চলে গেলো।
অবনী খাবার খেতে বসেছে সামনে বাবা বসে আছে।ভ্রু কুঁচকে রহমত সাহেব মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন।একটু কেঁশে বলতে শুরু করলেন রহমত সাহেব পড়াশুনার আর কতোবছর বাকি?
৩বছর বাবা মাথা নিচু করে বলল অবনী।
হুম।তোর একটা ছবি দিস ভালো দেখে।রহমত সাহেব মুরগীর হাড়ে কামড় দিয়ে বললেন।
কেন বাবা।অবাক চোখে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো অবনী।
চলবে