অন্ধকার পল্লী Part:১৩

0
1758

#অন্ধকার_পল্লী
Part:১৩
#Tabassum_Riana

,
,
,
,
আফিনের সামনে বসে আছে অবনী।ভীষন কাঁদছে অবনী।ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে অবনী।চোখ মুখ লাল হয়ে আছে ওর।কিছু বলার চেষ্টা করছিলো অবনী কিন্তু কান্নার জন্য পারছেনা না বলা কথা গুলো বলতে পারছেনা অবনী।আফিনের চোখ জোড়া ভরে এসেছে।ওর জলপরী কেন কাঁদছে?হঠাৎ অবনী কাঁদতে কাঁদতে আফিনের সামনেই পিছিয়ে যেতে থাকে।আফিন উঠে অবনীকে ধরার চেষ্টা করতে থাকে।অবনী ধরা দিচ্ছেনা।অবনী!!!!অবনী!!!!!!অবনী!!!চিৎকার করে ডাকতে থাকে আফিন।কিন্তু অবনী একসময় ধোয়ায় মিলিয়ে গেলো।শোয়া থেকে ধড়ফড় করে উঠে বসে আফিন।চোখ জোড়া বেয়ে টপটপ করে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।এসব কি ছিলো?কি দেখলো ও এসব?ওর জলপরী কোনো বিপদে পড়েনি তো?ভাবতেই মাথা গরম হয়ে যাওয়ার জোগাড়।বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো আফিন।বারান্দায় এসে দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরিয়ে সামনের বিল্ডিং গুলো দেখছে আফিন।রহমত সাহেব ঘরে এলেন তাড়াহুড়ো করে।আমেনা বেগমের কল পেয়ে এসেছেন।স্ত্রীর কান্নায় বুক ধড়ফড় করে উঠেছে ওনার।ফোনে কিছু বলতে পারেননি আমেনা বেগম শুধু বলেছিলেন জলদি ঘরে এসো।রহমত সাহেব ঘরে ঢুকে রুমে এসে আফসানা আর আমেনা বেগমকে দেখতে পেলেন।দুজনেই কাঁদছে। সন্ধ্যা হয়ে এসেছে অবনীর কোন খবর নেই।কই গেলো মেয়েটা?ফোন ও বন্ধ বলেই কাঁদতে লাগলেন আমেনা বেগম।
,
,
,
,
অবনীকে ফ্লোরে ছুড়ে মারা হলো।জামার হাতা দুটো ছিড়ে আছে।মুখের কোনা বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।চোখ খুলতে পারছেনা অবনী।কিছু মানুষের বিকট হাসি শুনতে পাচ্ছে ও।খুব কষ্টে চোখ খুলল অবনী।সামনে মামুন আর ওর লোকেরা দাঁড়িয়ে ওকে লোলুপদৃষ্টিতে দেখছে আর হাসছে।আ আ আমি এ…….খা নে কে ক কেন?দূর্বল গলায় বলল অবনী।তোর কারনে মার খেয়েছি আমি।এ অপমান এতো সহজে ভুলবো মনে করেছিস?তোর লাভার তো তোকে ছেড়ে চলে গেছে।এখন দেখবো কে বাঁচায় তোকে?বলেই হাসতে লাগলো ওরা।মামুন এসে অবনীর হাতের ওপর জোরে পাড়া দিয়ে ধরলো আর এসব আরেকজন ভিডিও করছে।শাকিল নামের ছেলেটা ভিডিও করতে করতে বলছিলো জানিস এ ভিডিও কার কাছে যাবে?শাকিলের কথায় মাথা তুলে তাকায় অবনী।ওর হাতে ওর জোরে পাড়া দিয়ে দাঁড়ায় মামুন তোর জানের কাছে যাবে,তোর আফিনের কাছে যাবে।বলে সবাই একসাথে হেসে উঠে।না না প্লিজ ওনাকে পাঠাবেননা কাঁদতে কাঁদতে বলে অবনী।কেন তোর পেয়ারে আফিন কষ্টপাবে বলে?মামুন আরো জোরে অবনীর হাতে পাড়া দিয়ে বলে উঠে।ওদের মধ্যে কে যেন অবনীর মুখের মধ্যে গরম পানি ছুড়ে মারে।অবনীর মুখে যেন আগুন লাগিয়ে দেয়া হলো।চিৎকার করে উঠে অবনী।ওরা বেরিয়ে যায়। অবনী আধমরা অবস্থায় সেভাবে পড়ে থাকে।
,
,
,
,
রহমত সাহেব পুলিশ সুপারটির দিকে
অবাক চোখে চেয়ে আছেন।এরা কি মানুষ?২৪ঘন্টা হওয়ার আগে নাকি কোন জিডি লেখবো না।কি হলো রহমত মেয়া বেরিয়ে যান।আপনার মেয়ের কিছু হয়নি। দেখেন নিজের আশিকের সাথে কোন আবাসিক হোটেলে মজা করছে পান চিবোতে চিবোতে বললে পুলিশ সুপার তারেক মিনহাজ।জিডি লেখবেননা ভালো কথা আমার মেয়েকে নিয়ে এসব কথা বলার অধিকার কাউকে দেইনি।দাঁতে দাঁত চেপে বললেন রহমত সাহেব।এহ চোরের মার বড় কথা!! মেয়েকে তো ঠিকমতো সামলাতে পারেননা আবার শাসাচ্ছেন আমাদের?রহমত সাহেবের দিকে রাগী গলায় বললেন তারেক মিনহাজ।কমিশনার কে বলবো আমি কথা টা বলে উঠে বেরিয়ে গেলেন রহমত সাহেব।বাহিরে এসে গেট ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন তিনি।দারোয়ান এসে ধরলেন রহমত সাহেবকে।স্যার কাঁদবেননা বলে উঠলো দারোয়ান। আমার মেয়েকে নিয়ে কি কি আবোলতাবোল বলছিলো কাঁদতে কাঁদতে বললেন রহমত সাহেব।সকাল থেকেই অবনীর নম্বরে কল দিয়ে দিয়ে পাগল হচ্ছে আফিন।ফোন বন্ধ রেখেছে কেন এই মেয়ে?মাথাটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে আফিনের।শব ধ্বংস করতে পারলে ভালো লাগতো ওর।অফিসের কাজে ও ঠিক মতো মন বসাতে পারলোনা আফিন।কোন এক অজানা ভয় ওর ভিতরটাকে কুরেকুরে খাচ্ছে।কারোর চোখে ঘুম নেই বাসার।কান্নার রোল পড়ে গেছে রহমত সাহেবের বাসায়।ঘুম নিদ্রা খাবার নেই কারোর।মা থেকে থেকে কেঁদে উঠছে মেয়ের জন্য।বাবা কিছুক্ষন পর পর দরজার দিকে তাকাচ্ছে আর অবনীর নম্বরে কল দিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু ফোন বন্ধ আসছে।
,
,
,
,
অবনীকে কিছু খেতে দেয়নি ওরা।শুধু টর্চার করে গেছে ওকে।ওর সামনে খাবার এনে মুখের সামনে ফেলে দেয়া।পানি মুখের সামনে এনে ফেলে দেয়া এবং ওকে জোর করে নিচ থেকে খাবার উঠিয়ে খেতে বাধ্য করা হচ্ছিলো।অবনী ক্ষুধার জ্বালায় খাবার গুলো খাচ্ছিলো আর বখাটে গুলো ওর পিঠে বেল্ট দিয়ে মারছিলো।কাঁদছিলো অবনী গুমরে গুমরে।ওর মুখ থেকে খাবার গুলো পড়ে যাচ্ছিলো।খাবার শেষে ওরা অবনীর পায়ে সিগারেটের ছেকা দিয়েছে।চিৎকার করে কাঁদছিলো অবনী।এভাবে দুইদিন কেঁটে গেলো।রহমত সাহেব আর আমেনা বেগম মেয়েকে পেতে জানপ্রান লাগিয়ে দিচ্ছিলো কিন্তু কোন ভাবেই অবনীর খোঁজ পেলোনা।
আফিন ও অবনীকে কন্টাক্ট করার অনেক চেষ্টা করেছে কিনৃতু পারেনি।তাহলে কি সত্যিই জলপরীকে হারিয়ে ফেলল আফিন?
চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে