অনুভূতির সংমিশ্রণ?
তৃধা মোহিনী(মৃন্ময়ী)
পর্ব ছয়
?
লিভিংরুম,
মেহবুব,স্মৃতি আর নিধির বাবা মা বসে আছেন..মাহি বাহিরে তার ন্যানির সাথে খেলছে।।
“আসলে আঙ্কেল একটু কথা ছিলো আপনার সাথে জরুরিভাবে” মেহবুব সোজা হয়ে বসে বললো।।
“হ্যা বাবা বলো?” নিধির বাবা চায়ের কাপ টেবিলে রেখে বললো।।
“নিধির বিয়ে-শাদির কথা কি কিছু ভাবছেন?” মেহবুব জিজ্ঞেস করলো।।
“আসলে বাবা,বিয়ে ত অনেক আসছে কিন্তু জমিদারের ছেলের জন্য সবগুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে..যে প্রস্তাব দিচ্ছে সেই পরিবারকে মারার হুমকি সে দিয়ে আসছে” নিধির বাবা একটু চিন্তিত স্বরে বললো।।
“না জানি আমার মেয়েটার কপালে কি আছে” নিধির মা হতাশসুরে বললো৷।
“নিধির বিয়ে আমি আমার ভাই ইমরেতের সাথে দিতে চাই” মেহবুবের সোজাসাপ্টা উত্তর।।
নিধির বাবা মা প্রস্তাবটা শুনে ভড়কে গেলো..তাদের মতো সামর্থ্য নাই যে বড় ঘরে মেয়ে দিবে..চৌধুরী পরিবার এই শহরে সবচেয়ে ধনী পরিবার সেটা লোখমুখে শোনা যায়।।
এই প্রস্তাবে তারা যে অপ্রস্তুত হয়েছে স্মৃতি সেটা বুঝতে পেরেছে।।
“আঙ্কেল আমাদের ইমরেত খুব ভালো…সে নিধিকে সেই চার বছর থেকে ভালোবাসে..সে এখানে আসার পর, ইমরেতের মধ্যে আমরা যতটা চেঞ্জ দেখতে পাই তা কখনো দেখি নি..আপনি ভাববেন না,আমরা জোর করছি..ইমরেত নিধিকে নিয়ে কতটা দূর্বল আমরা দেখতে পাই সেটা..আর নিধিকে প্রচন্ড ভালোবাসে,নিধিকে ছাড়া সে যে অন্য কাওকে এখন পর্যন্ত বিয়ে করতেও চায় না..বিয়ে নামক শব্দ শুনলে রেগে যায় সে..নিধিকে আমরা আমাদের বাড়ির ছোট পুত্রবধু হিসেবে চাই আঙ্কেল” স্মৃতি নিধির মায়ের হাত ধরে কথা গুলো বললো।।
নিধির বাবা মায়ের মনে হচ্ছে আকাশের চাঁদ হাতে পেলো,সেই সাথে সৎপাত্রে নিজের মেয়ের জন্য পেলো..বুক থেকে অনেক বড় একটা পাথর যেন মনে হলো সরে গেলো তাদের।।
নিধির বাবা মা ও কথা পাকা করে দিলো যে ইমরেতের সাথে নিধির বিয়ে দিবে..মেহবুব স্মৃতির দিকে চোখ টিপ দিলো,স্মৃতি বেচারি লজ্জা পেয়ে মিস্টি আনতে গেলো।।
তাদের মধ্যে এই কথা হলো নিধির প্রথম বর্ষ পরীক্ষা শেষে বিয়ে দিবে দুজনের,ততদিন কথাটা নিধির অজানা থাকুক..অহেতুক চাপ নিয়ে পরীক্ষা খারাপ করুক তার দরকার নেই।।
ইমরেতের রুমে নিধি কফি নিয়ে গেছে,রুমে নক করলো কিন্তু রেসপন্স না আসাতে ফিরে আসতে গেলে নিধিকে টেনে ইমরেত রুমের ভিতরে নিয়ে দরজা লক করে দিলো।।
এইভাবে হ্যাচকা টান পরাতে নিধির হাত থেকে কফির মগ পরে ভেঙ্গে গেছে।।
“আরেহ!! দিলেন ত মগটা ভেঙ্গে” নিধি মুখ না তুলে কফির মগের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বললো।।
ইমরেতেএ সাড়াশব্দ না পেয়ে নিধি যখন মুখ তুলে উপরে তাকালো তখন ইমরেতের মুখটার দিকে তাকালো,ইমরেতের মুখ দেখে সে ভীষণ ভয় পেয়ে গেলো..ইমরেতের মুখ ভীষন লাল,দেখেই মনে হচ্ছে মাথায় খুন চেপে আছে তার।।
ইমরেতকে এইভাবে দেখে নিধির ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে,সরতে পারছে না।।
“সাহস কি করে হয় তোমার বাড়ি যাওয়ার নাম নেয়ার?আমি যে না করেছিলাম তুমি শুনতে পাও নি? আমি যে তোমাকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারি না,থাকতে পারি না এইটা কি বুঝো না তুমি?” ইমরেত চিৎকার করে বলছে।।
“দেখুউউন” নিধি তোতলাতে তোতলাতে বললো
“কি দেখবো বলো??বলো কি দেখবো?” আরো জোরে চিৎকার ক্ক্রে বলছে ইমরেত(ভাগ্যিস বড়লোক ইমরেতের রুমের দরজা সাউন্ড প্রুফ)
“আমি কি আমার বাবা মায়ের বাড়ি যেতে পারি না” ভয়ে ভয়ে বললো নিধি।।
“না পারো না তুমি..তুমি বিহীন আমার শ্বাস টা যে আটকে আসে এটা কি বুঝো না তুমি??” আবারো চিল্লিয়ে বলছে ইমরেত।।
“আপনি আমার উপরে এইভাবে অধিকার দেখাতে পারেন না” নিধি বলে উঠলো।।
“অধিকার??অধিকার চিনাস তুই আমারে??আরেহ ইডিয়ট তোর উপরে তোর অধিকার নাই কোন,তোর উপরে এই ইমরেত চৌধুরীর অধিকার শুধু” নিধির কোমর শক্ত করে চেপে ধরে।।
নিধি ভয়ে আর কোন কথায় বলতে পারছে না..এই ইমরেত নামক প্রানীটাকে সে অসম্ভব ভয় পায় সে।।
“কেনো এইভাবে পুড়াচ্ছো আমায়??যখন পুড়াচ্ছো তুমি,এর মলম ও তুমি হবে..এই দহনে তোমাকেও মারবো আমি..আর সেখাবে তোমার মর্জি হোক বা না হোক” ইমরেত শান্তস্বরে বললো।।
ইমরেত তার কোমরটা অনেক শক্তভাবে চেপে আছে,মনে হচ্ছে তার আঙ্গুল দেবে যেয়ে নিধির জামার ভেদ করে ভিতরে ঢুকে যাবে।।
“ভাই” নিধির পুরা কথা শেষ হওয়ার আগে ইমরেত নিধির ঠোটে নিজের ঠোট বসিয়ে দিলো..নিধি ঝট করে চোখ বন্ধ করে নিলো।।
ইমরেত অনেক র্যুডলি কিস করছে,নিধির ঠোটের চামড়া মনে হচ্ছে উঠে গেছে..কান্না আসছে না কেন তার?? কেন বুকটা ধকধক করছে তার এমন চুমুতে??কেন সরাতে পারছি না।।
অপরদিকে ইমরেত কোন নেশায় জড়ালো সে..কেন এই নিধি নামক নেশাতে মেতে উঠেছে,ছুটাতে চাইছেনা,আরো তীব্রভাবে তার সাথে নিজেকে গ্রাস করে ফেলছে..হ্যা তার নিধিকে চায়,যেইভাবে হোক চায়..সে না চাইলেও তাকে তার চায়”আমি যে তুমিতে আসক্ত”
চুমু দিতে দিতে ক্লান্ত হলেও ইমরেত,ঠোট ছাড়ে নাই নিধির..শুষে নিচ্ছে,এদিকে নিধির শ্বাস আটকে গেছে মনে হচ্ছে।।
বেশ অনেকক্ষন পর ইমরেতে নিধির ঠোট ছাড়লো..দুইজনে খুব জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছে।।
ইমরেত শান্ত হয়ে গেলেও,নিধির নিঃশ্বাস এখনো ঘনঘন পরছে।।
ইমরেত নিধির শরীরের সাথে মিশিয়ে নিলো আরেকটু নিবিড়ভাবে।।
“এই বাবু!!এইভাবে শ্বাস ফেলে কেও??আমি আর পারছি না তোমাকে ছাড়া নিজেরে নিয়ে ভাবতে!!” ইমরেতের ঘোর লাগানো কন্ঠ শুনে নিধির শরীরের পশম মনে হচ্ছে দাড়িয়ে গেলো।।
“এইভাবে নিঃশ্বাস নিলে লোকে কি ভাববে? লোকদের ভাবনা আই ডোন্ট কেয়ার,আই অনলিজ কেয়ার এবাউট ইউ” ইমরেত নিধির কানে কথাটা বললো।।
“সরুউউন” তোতলে বলছে নিধি চোখ বন্ধ করে।।
“নিচে যেয়ে সাফ মানা করবে যে তুমি যাচ্ছো না তাদের সাথে,যদি আমার কথার অপোজিট করো, আমি নিজেও জানি না তোমার কি করবো আমি” ইমরেত চোখমুখ শক্ত করে বললো।।
নিধির ঠোট মুছে দিলো ইমরেত আলতো করে,নিধি এমন ছোয়াতে শিউরে উঠলো।।
নিধি বাইরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে,ইমরেত পিছন দিকে নিধিকে ধরে ওর ঘাড়ে মুখ ডুবায়..নিধি থরথর করে কাঁপছে।।
“তোমার ঘ্রানে,তোমার ঠোটে,তোমার চুলে মাদকতা কাজ করে আমার জন্য…আর এই মাদকতাতে আমি তীব্রভাবে আসক্ত..ছুটবে না কখনো,আর না আমি ছুটাতে চায়” নিধির ঘাড়ে মুখ রেখে বললো ইমরেত।।
চলবে?