Sunday, October 5, 2025







What a হাসবেন্ড পর্ব-২৫+২৬

#What_a_হাসবেন্ড
#Tamanna_Tabassum(লেখনীতে)
#পর্ব-২৫
সকালবেলা,,
দুজনেই জেগে আছে। কিন্তু কেউ কারো দিকে তাকাচ্ছে না। দুজনেই লজ্জা পাচ্ছে। মুন পেছনে তাকালো, হৃদয় কে অন্যদিকে ঘুরে থাকতে দেখে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো৷ ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলো হৃদয় এখনো আগের মতো করেই শুয়ে আছে। পা টিপে টিপে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। রান্নাঘরে গিয়ে দেখলো হৃদি দাঁড়িয়ে কার সাথে যেনো ফোরে কথা বলছে।
-‘ কার সাথে কথা বলো হুম?’
-‘ আম্মু আব্বু আসতেছে, আমাকে বলেছিলো রুটি আলুভাজি করতে আমি করেছি। খেয়েও নিয়েছি। এখন তোমরা খেয়ে নাও। আমার কোচিং-এ যেতে হবে। ‘
বলেই হৃদি চলে গেলো৷ মুন একটা প্লেটে দুইটা রুটি আর একটু ভাজি নিয়ে খেতে বসে পড়লো। কিছুক্ষণ পর হৃদয় আসলো৷ মুন হৃদয়কে আসতে দেখে সাথে সাথে চোখ সরিয়ে, প্লেটের দিকে তাকালো। হৃদয়ও মুনের দিকে একবার তাকিয়ে উলটোদিকে ফিরে গেলো৷ হৃদি তখন ব্যাগ কাধে নিয়ে এইদিকেই আসছিলো হৃদয় কে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অবাক হলো। ডাইনিং টেবিলে মুনকে খেতে দেখে আরও অবাক হলো। মুন হৃদয়ের দিকে তাকাচ্ছে না, হৃদয়ও মুনের দিকে তাকাচ্ছে না উলটো দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে।

-‘ তোমরা দুজন দুদিকে কী করছো? ‘
-‘ হৃদি আমাকে কিছু খেতে দিবি? অনেক ক্ষুধা পেয়েছে ‘
-‘ ভাবিকে বললেই হতো, আমার দেরি হচ্ছে ‘
-‘ আচ্ছা আমিই নিয়ে নিচ্ছি ‘
বলেই রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ালো। হৃদি একবার মুনের দিকে তাকিয়ে হৃদয়ের পিছু পিছু রান্নাঘরে গেলো। ফিসফিস করে বলল, ‘ তোমরা কী ঝ’গড়া করেছো?’
হৃদয় প্লেট হাতে নিয়ে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলো। হৃদি তো জানে না ওদের মাঝে ঝগড়া থেকেও মারাত্ম”ক কিছু হয়েছে, তাই তো দুজন দুজনের সাথে চোখে চোখ মেলাতে পারছে না। হৃদিকে কিছু না বলে ডাইনিং রুমে আসলো। মুনের খাওয়া মাত্রই শেষ হয়েছে সে রান্নাঘরে যাচ্ছিলো তখনই হৃদয়ের সাথে ধাক্কা খেলো। একবার চোখাচোখি হতেই দুজন চোখ নামিয়ে নিলো। হৃদয় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে, মুনও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। হৃদি ওদের এই অবস্থা দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, ‘ কী হয়েছে তোমাদের? এমন করছো কেন? একবার মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকো আরেকবার মাথা নিচু করে। ‘
মুন রান্নাঘরের দিকে ছুট লাগালো। হৃদয় ড্রইংরুমের বড় সোফায় বসে পড়লো। খাচ্ছে আর টিভি দেখছে। হৃদি দুজনের দিকে তাকিয়ে ” পাগ’ল মেলা সব পাগ’ল মেলা ” বিরবির করতে করতে চলে গেলো। মুন দরজা লাগিয়ে চেয়ার ধরে দাঁড়িয়ে আছে, হৃদয়ের খাওয়া শেষ করে ডাইনিং রুমে এসে দেখে মুন দাঁড়িয়ে আছে। মুনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ও আবারও সোফায় গিয়ে বসলো।
মুন চেয়ার ধরে আমতা আমতা করছে আর মনে মনে একশো একটা আফসোস করছে। কাল রাতে বাসর করাটা জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিলো। মনে মনে ” বাসর করার পরিনা’ম বাসর করার পরিনা’ম” বিরবির করতে করতে রুমে চলে গেলো। ওদিকে হৃদয় উঁকি মে’রে দেখলো মুন আছে কিনা। মুনকে কোথাও না দেখতে পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। রান্নাঘরে যেতে যেতে বলল ” ল’জ্জা ল’জ্জা সব দো’ষ এই ল’জ্জার ”

______________________

দুপুরের দিকে বাবা মা বাড়ি আসলেন। ওনারা আসার পর থেকে হৃদয় আর মুনকে স’ন্দেহের চোখে দেখছেন। দুজন এমন ব্যবহার করছে যেনো এরা সাব্লেটে ভাড়া থাকে , কেউ কারো দিকে তাকাচ্ছে না কেউ কারো সাথে কথা বলছে না। বাবা মায়ের কাছে গিয়ে বললেন, ‘ ওরা এমন করতেছে কেন?’
-‘ কী জানি। বেডা মানুষের কোনো ঠিক-ঠিকানা আছে? সকালে এক, দুপুরে এক, আর রাতে আরেক ঢং ধরে ‘
বাবা মায়ের দিকে “😒” এই ইমোজির মতো তাকাতে তাকাতে চলে গেলো।

মুন খাটের একপাশে হেলান দিয়ে বসে আছে৷ হৃদয় চশমা ছাড়া বই পড়ছে আর একটু পর পর চোখ ডলছে৷ মুনের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে ভাবছে ‘ইসস একটু যদি দিয়ে যেতো ‘। ওদিকে মুন চশমার দিকে তাকিয়ে ভাবছে ‘ এসে একটু যদি নিয়ে যেতো চশমা টা, এর এতোই ল জ্জা কোথা থেকে আসে? চশমা ছাড়া বই পড়তে পারে অথচ বউয়ের সাথে একটু সেধে সেধে কথা বলতে পারে না? এতোই ল জ্জা? ‘
হৃদয় মুনের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবছে ‘ এসে একটু দিয়ে গেলো না! থাক আজ চশমা ছাড়াই বই পড়বো আমি এতোটাও কা না নই ‘
হঠাৎ মুন দাঁড়িয়ে গেলো। মুনকে হঠাৎ দাঁড়াতে দেখে হৃদয় ভরকে গেলো। একটু কেশে আবার পড়ায় মনোযোগ দিলো। মুন যে হৃদয়ের দিকেই তাকিয়ে সেটা হৃদয় ভালো মতোই বুঝতে পেরেছে। মুন ধুপধাপ কদম ফেলে হৃদয়ের গা ঘেঁষে বসে পড়লো। হৃদয়ের কপালে চিকন ঘাম দেখা দিলো। শার্টের হাতা দিয়ে ঘাম মুছে নিজেকে স্বাভাবিক করলো। মৃদু স্বরে বলল, ‘ একটু দূরে গিয়ে বসো ‘
মুন আগের মতো করেই বসে আছে। হৃদয় মুনের দিকে তাকিয়ে ওকে দেখলো। অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর হঠাৎ করে মুন বলল, ‘ এভাবে তাকাবেন না। নজ র লেগে যাবে যে। আম্মু কপালে টিপ দেওয়া কবেই ছেড়ে দিয়েছে ‘
হৃদয় দাঁড়িয়ে গেলো। জোরে জোরে কতগুলো নিঃশ্বাস নিলো। পড়ার টেবিলের উপর বইটা রেখে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। মুন মন খারা প করে বসে থাকলো। ও চেয়েছিলো সবকিছু স্বাভাবিক করতে এখন হৃদয় যে এতো অস্বাভাবিক আচরণ করবে এটা কে জানতো?

ডাইনিং রুমে গিয়ে দেখলো হৃদয় নেই। মাকে জিজ্ঞেস করতেই উনি বললেন বাহিরে গিয়েছে। দরজার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে এরপর লাফাতে লাফাতে রান্নাঘরে চলে। একটা বড় বাটিতে মুড়ি নিলো। তরকারি থেকে আলু নিলো, ঝোল নিলো সেগুলো মাখালো এরপর সোজা ড্রইংরুমে চলে গেলো৷ মা টিভি দেখছিলেন মুনকে মুড়ি খেতে দেখে বললেন, ‘ ভাত খাবে না? মুড়ি আনলে যে? ‘
-‘ খেতে ইচ্ছে করছে না। ‘
-‘ ওও ‘
-‘ আপনি খাবেন? ‘
-‘ না, তুমি খাও ‘
মুন নিজের মতো করে মুড়ি খাচ্ছে মা মাঝেমধ্যে ওর দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছে। এরপর হঠাৎ বললেন,
-‘ তোমার এখান থেকে আমাকে একটু মুড়ি দিবে? ‘
মুন খুশি হয়ে দৌড়ে রান্নাঘর থেকে একটা বাটি নিয়ে আসলো। বাটি ভর্তি মুড়ি মায়ের দিকে এগিয়ে দিতেই উনি খেতে আরম্ভ করলেন। মুন মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
-‘ জানো? আমার শ্বাশুড়ি আর আমি এই সোফাতে বসে আগে মুড়ি মাখানো খেতাম। আমার মা মাঝেমধ্যে বেড়াতে আসলে আমরা তিনজনে মিলে খেতাম। মনে হতো আমরা তিন বান্ধুবি! অনেক সুন্দর ছিলো সেই দিনগুলো ‘

মায়ের চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো মুন, এই বুঝি দুই এক ফোটা নোনাজল গড়িয়ে পড়লো! কিন্তু না পড়লো না। উনি শক্ত হয়ে মুড়ি খাচ্ছেন আর খুব মনোযোগ দিয়ে টিভি দেখছেন।

চলবে

#What_a_হাসবেন্ড
#Tamanna_Tabassum(লেখনীতে)
#পর্ব-২৬
রাতে হৃদয় বাসায় আসতেই মুন ঝগড়া করা শুরু করে দিলো। মনে মনে জিকির করছে ‘এইবার একটু ফ্রি হোক এরপর আর বাসর করবো না ‘। কারেন্ট ছিলো না তাই হয়তো সেদিন দুজনের কিছু একটা হয়ে গেছিলো৷ তাই বলে বারবার তো আর এক ভুল করা যায় না৷ এখন থেকে কারেন্ট যেদিন যাবে সেদিন হৃদয় বাসায় আর থাকবে না,আর মুন ঠিক করলো সে বাপের বাড়ি চলে যাবে। ঝগড়া’ঝাটি শেষ করে দুজনে চুপচাপ বসে আছে। মুনের ঘুম পাচ্ছে ও বসে বসে ঝিমাচ্ছে আর হাই তুলছে। হঠাৎ করে ও দাঁড়িয়ে বলল, ‘ লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লা আলিউল আজিম ‘
হৃদয় চমকে মুনের দিকে তাকালো। মুন শুতে শুতে বলল, ‘ ল জ্জা পেতে পেতে আমি হতাশ, ক্লান্ত, আপনি কী আরও ল জ্জা পেতে চাচ্ছেন? ‘

হৃদয় অসহায় চেহারা করে বলল, ‘ আমি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি, কী করা উচিৎ বুঝতে পারতেছি না ‘

-‘ অত বুঝে কাজ নেই। আসেন ঘুমাই। আগে জানতাম মেয়েরা ল জ্জা পায়। এখন আপনি যেই পরিমাণে ল জ্জা পাচ্ছেন এতে আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জলে যাবে। ডিব্বার ওই কাগজ টা ফেলে দিতে হবে। বিবাহিত ব্যাচেলর হয়েই না হয় আমরা থেকে গেলাম। ‘

হৃদয় লাইট অফ করে দিলো। মুনের পাশে এসে শুয়ে পড়লো। এরপর দুজন ঘুমিয়ে পড়লো।

নাস্তা খেয়েই মুন ডিব্বা নিয়ে বসেছে আজ সে কাগজটা বাহিরে ফেলে দিবে। জামাই ছাড়া ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করাটা তার ভুল ছিলো। নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। অনেক খোজাখুজি করে শেষ পর্যন্ত কাগজ টা পেলো। হৃদয়ের মতো ডাইরি লিখলে আজ আর এই ভোগান্তি পোহাতে হতো না। কাগজের ভাজ খুলে লেখাগুলোতে একবার চোখ বুলালো।
❝ বিষয় ঃ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বিয়ের পর প্রথমে একসাথে ২ টা বাবু চাই-ই চাই। একটা ছেলে আরেকটা মেয়ে হতে হবে। দু’বছর পর আবারও ২ টা চাই। এরপর সব শেষে ১ টা ছেলে বাবু। ❞
কাগজটা ছিড়ে টুকরো টুকরো করে বারান্দায় গিয়ে ফেলে দিলো। এরপর কী যেনো ভাবলো। খাতা কলম নিয়ে লিখতে বসে পড়লো। লিখা শেষ করে কাগজটা ছিড়ে হাতে নিলো।
❝ বিষয় ঃ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
পড়ালেখা, বিয়ে সব করা শেষ এবার শুধু বাবু নেওয়া বাকি। আমার টুইনস বাবু লাগবে। এরপর আবারও টুইনস লাগবে৷ এরপর একটা সিঙ্গেল হলেই চলবে। ❞
কাগজ টা ভাজ করতে নিয়ে থেমে গেলো। কাগজে আরও কিছু লিখলো৷
❝ বিঃদ্রঃ- জামাই যদি বলে তাহলে আরও নেওয়া আবশ্যক! ❞
কাগজটা ভাজ করে ডিব্বাতে রেখে দিলো।

———-

হৃদয় হতভম্ব হয়ে মুনের দিকে তাকিয়ে আছে। তার কানে মুনের বলা কথাগুলো বারবার বা’রি খাচ্ছে। মুন প্রফুল্ল মুখ করে হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। হৃদয় জোরে একটা নিশ্বাস নিয়ে বলল, ‘ তুমি কী সিরিয়াস মুন?’
মুন লাফিয়ে উঠলো। বলল, ‘ অবশ্যই সিরিয়াস ‘
হৃদয় টেবিল থেকে একটা গ্লাসে পানি এনে গটগট করে খেয়ে ফেলল। মাথায় হাত দিয়ে বিছানায় বসে পড়লো। চোখ বন্ধ করে বসে আছে।
হৃদয় ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসায় ফিরেছে। আজ তার উপর অনেক ধকল গেছে, এখন একটু ঘুম প্রয়োজন। রুমে এসে দেখে মুন শাড়ি পরে নাচানাচি করছে। মুনকে দেখে হৃদয় কিছু সময়ের জন্য থমকে গিয়েছিলো৷ মুনও হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। ভেবেছিলো হৃদয় ভালো কিছু বলবে কিন্তু মুনকে হতাশ করে হৃদয় বলল, ‘ চুল ছেড়ে এমন ড্রাকু’লা সেজেছো কেন হুম?’
মুন রেগে বলল, ‘ আমি ড্রাকু’লা সেজেছি? ‘
-‘ তা নয়তো কী? রাতের বেলা এমন করে সেজেছো তাই বললাম ‘
-‘ আমার একটা নিরামিষ ল জ্জাবতী লতা জামাই আছে জানেন? তার জন্য একটু সেজেছিলাম। সেদিন খিচুড়ি খাওয়ানোর হুম’কি দিয়ে শাড়ি পরিয়েছিলো। আজ নিজে থেকে পড়লাম কোনো দামই দিচ্ছে না। ভাবছি আরেকটা বিয়ে করবো। সেই জামাই হবে খুবই রোমান্টিক! তার মধ্যে ঝগড়া জীনিস টা থাকবেই না। একেবারে ফুলের মতো নিষ্পাপ হবে। ঝগড়া মন চাইলে এখন যেটা আছে সেটার কাছে আসবো, আর রোমান্টিক মুড হলে ওইটার কাছে চলে যাবো ‘
-‘ ছিঃ ছিঃ মুন। শেষ পর্যন্ত তুমি আরেকটা বিয়ে করবা? তুমি জানো তোমার জামাই তোমাকে কতো ভালোবাসে। আর তুমি তার জন্য সতীন আনতে চাইছো? এতোটা নি’ষ্ঠুর তুমি? ছিঃ মুন ছিঃ’
-‘ আপনাকে ছিঃ। শতশত ছিঃ। হাজার হাজার ছিঃ।লাখো লাখো ছিঃ। ল জ্জা করে না? বউকে ড্রাকু’লা বলতে? ‘
-‘ ড্রাকু’লা কে ড্রাকুলা না বলে কী সুন্দরী বলবো? তোমাকে সুন্দরী বললে সুন্দরী নারীরা আমাকে নর্দ’মায় ফেলে দিবে ‘
-‘ আপনি আমাকে কিন্তু আবারও অপ’মান করছেন৷ ‘
-‘ সত্যি কথা বলছি মুন। সত্যকে মেনে নাও। আমি জানি তোমার কষ্ট হবে কিন্তু কী করার বলো? ‘
-‘ বলা শেষ?’
-‘ 😁 ‘
-‘ আপনি একটা খা টা স। খুব খা রা প মানুষ আপনি। আপনাকে আমি সারাজীবন মনে রাখবো ‘
-‘ থ্যাংকিউ ‘
মুনের সারা গা জ্বলে গেলো, রেগে আয়নার সামনে দাড়ালো। হৃদয়ের দিকে তাকাতেই হৃদয় দাঁত কেলিয়ে হাত নেড়ে ‘ হাই ‘ বলল। মুন নিজের চুল টেনে ধরলো৷ এই মুহুর্তে তার মারা ত্মক রাগ উঠতেছে। পারলে হৃদয়ের উপর পুরো পৃথিবীটা উড়ায় মা র তো। এতেও রাগ না কমলে মঙ্গল, বুদজ বৃহস্পতি কেও উড়ায় মা র তো। এরপর পৃথিবীর সকল মাছ, সব শেষে হাসঁমুরগী। একটা মানুষ আর কতো বিরক্তিকর হতে পারে?
হৃদয় লুঙ্গি হাতে ওয়াশরুমের দিকে যাচ্ছে তখন মুন বলে উঠলো, ‘ আমার বাচ্চা লাগবে ‘
ওমনি হৃদয় থমকে গেলো। তার কান দিয়ে গরম ধোঁয়া বের হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু মটু পাতলু হলে ধোঁয়া বের হওয়ার দৃশ্য টা মুন দেখতে পারতো। মুন চুল ঠিক করতে করতে বলল, ‘ কী হলো? কিছু বলুন। ‘
হৃদয় এখনো শকে আছে। হার্ট অ্যাটাক টা হতে হতে হয় নি। মুন হৃদয়ের কাছাকাছি গিয়ে বলল, ‘ আমার ডিব্বার সবগুলো কাগজ পড়েন নি তাই না?’
হৃদয় কিছু বলল না। ও দেওয়ালের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে৷ মুন বলল,
-‘ টুইনস বেবি আমার অনেক প্রিয় দেখতেও ভালো লাগে। আমার টুইনস বেবি চাই। ‘
হৃদয় কিছুটা শক্ত হলো। মুনকে সামনে থেকে সরিয়ে ওয়াশরুমের দরজা খুলতেই মুন বলে উঠলো, ‘ আমি সিরিয়াসলি বলতেছি। আমার টুইনস বেবি লাগবে। আপনার সমস্যা কী হ্যাঁ? বাসর করে আমি ল জ্জা পেতেই পারি এটা স্বাভাবিক! যুগ যুগ ধরে মেয়েরা ল জ্জা পেয়ে আসছে, আমিও মেয়ে আমিও ল জ্জা পেয়েছি। কিন্তু আপনি? আপনি তো ছেলে। আপনি কেন এতো ল জ্জা পেলেন? কোথা থেকে আসে এতো ল জ্জা? ‘
হৃদয় মুনকে পাত্তা না দিয়ে ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ করে দিলো। মুন এখনো চিল্লাফাল্লা করছে। বাচ্চার মতো সিরিয়াস একটা বিষয় কে হৃদয় কী করে ইগনোর করলো? এই বিষয় টা ইগনোর করতে হৃদয়ের একটাবারও কী কলিজা টা কেঁপে উঠে নি? ওয়াশরুম থেকে বের হতেই মুন আবার ওর কাছে গিয়ে চিল্লাফাল্লা করতে লাগলো। হৃদয় মুনকে ধরে তার পাশে বসালো। বলল,
-‘ কী হয়েছে তোমার? আজ এমন মাতলা মাতলি করছো কেন? আর এই বাচ্চা কাচ্চার ভূত কে চাপালো তোমার মাথায়?’
মুন আলমারি থেকে ওর প্রানপ্রিয় ডিব্বাটা বের করলো। ঢাকনা খুলতেই সবার উপরে নতুন দেখতে একটা কাগজ হাতে নিলো। সেটা হৃদয়ের হাতে দিলো। কাগজ খুলতেই হৃদয়ের হার্ট অ্যাটাকের পাশাপাশি ব্রে’ইন স্ট্র’কও করে ফেলল। বুকে হাত দিয়ে মুনের দিকে তাকালো।
-‘ মুন তুমি কো সত্যিই সিরিয়াস? ‘
-‘ অবশ্যই! কোনো সন্দেহ আছে? ‘
হৃদয় কাগজটার দিকে আবার তাকালো। প্রথম লেখগুলো হার্ট অ্যাটা’কের জন্য যথেষ্ট ছিলো৷ মুনের এতেও শান্তি হয়নি সে আবার নিচে বিঃদ্রঃ দিয়ে জামাইয়ের ইচ্ছার কথাও বলেছে। ছেলেমেয়ে এতোগুলো নিলে জামাইয়ের ইচ্ছা করার ইচ্ছাটাই ম’রে যাবে। আস্তে করে মুনকে বলল, ‘ তোমাকে আমি আর তাইলে খুঁজে পাবো না। বউ ছাড়া বাচ্চা দিয়ে কী করবো? জানো না? ❝ দুটি সন্তানের বেশি নয়, একটি হলে ভালো হয় ❞ এই স্লোগান টা কেউ তোমাকে শোনায় নি?’
মুনের চোখমুখ জ্বলজ্বল করে উঠলো। বলল, ‘ সামর্থ্য থাকলে নেওয়াই যায়। সমস্যা কী? বলেন ‘

চলবে

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ