#What_a_হাসবেন্ড
#Tamanna_Tabassum(লেখনীতে)
#পর্ব-১৫
শ্বশুরবাড়ি এসে ঝাকাস একটা ঘুম দিয়েছিলাম। কতক্ষণ ঘুমিয়েছি জানি না। কিন্তু শরীর টা ফ্রেশ ফ্রেশ লাগছে। হাতমুখ ধুয়ে আসতেই দেখলাম উনি ঝা’ড়ু হাতে নিয়া দাঁড়ায় আছে। আমার ওইদিনের কথা মনে পড়ে গেলো। শ্যাম্পুর বোতলের বদলে শ্যাম্পুর বোতল! তাহলে এখন কী ঝা’ড়ুর বদলে ঝা’ড়ু? না এটা হতে পারে না।
-‘ আপনি আমাকে মার’বেন?আমি কিন্তু ওইদিন আপনাকে মা’রি নাই। হাতে নিসিলাম ভ’য় দেখানোর জন্য ‘
উনি আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল, ‘ওওও হ্যাঁ হ্যাঁ তুমি ওইদিন আমাকে ঝা’ড়ু দিয়ে মার’তে চেয়েছিলে তাই না? কতবড় সাহস! ‘
-‘ পিলিস মার’বেন না আমাকে ‘
-‘ ঠিকাছে মা’রবো না, এখন সুন্দর করে ঘর ঝা’ড়ু দাও’
-‘ আমি?’
-‘ হ্যাঁ তুমি ‘
-‘ আমি কী ঝা’ড়ুদার নাকি? ‘
-‘ আমার মা প্রতিদিন দেয় ‘
-‘ আমার আম্মুও দেয়, তো? কী হয়েছে? ‘
-‘ কিছু হয় নাই। বাড়ির বউ এখন ঝা’ড়ু দিবা ধরো ঝা’ড়ু ‘
-‘ আমার বিয়ে করাটাই ভুল ছিলো, বিয়ে না করলে আজ আর ঝা’ড়ু দিতে হতো না। ‘
-‘ করে ফেলেছো যেহেতু সেহেতু দিবে এখন, বুঝলে? দুইবার বিয়ে করেছো। দিনরাত মিলিয়ে দুইবার ঝা’ড়ু দিবা ‘
-‘ কীহহহ’
-‘ হ্যাঁ ‘
-‘ এতোটা নির্দ’য় হতে আপনার বুকটা একবার কেঁপে উঠলো না? ‘
-‘ জামাইকে যখন পেছন পেছন ঘুরিয়েছো তখন? ‘
-‘ তখন কী? বউয়ের পিছনে ঘুরবেন না তো কী করবেন? এইখানেও আপনি ঘুরবেন। আমার ইচ্ছেগুলো পূরণ করবেন বলেছিলেন ‘
-‘ হ্যাঁ, বলেছিলাম ‘
-‘ তোহ! এখন করবেন ‘
-‘ আচ্ছা! করলাম। আমি তোমার ইচ্ছেগুলো পূরণ করছি, তুমি আমার ইচ্ছাও পূরন করো ‘
-‘ কেমন ইচ্ছে? ‘
-‘ এই যে ঘর ঝা’ড়ু দিবা, ঘর মুছবা, থালা-বাসন ধুবা, কাপড় ধুবা, বাথরুম ধুবা ‘
-‘ ছিঃ একটা অবলা অসহায় মেয়েকে দিয়ে এইসব করাতে আপনার কী একবারও একটু লজ্জা লাগে না? ‘
-‘ না লাগে না। যাও ঝা’ড়ু দাও। ‘
-‘ হ্যাঁ হ্যাঁ দিচ্ছি তো। বিয়ে ঝা’ড়ু দেওয়ানোর জন্যই করছেন। কই ঘুরতে নিয়ে যাবেন। হানিমুনে নিয়ে যাবেন তা না! ঝা’ড়ু দেওয়াচ্ছেন। ‘
-‘ তোমার এই শখও আছে?’
-‘ এটা শখ না! এটা যেতে হয় ‘
-‘ নিয়ম এটা?’
-‘ হ্যাঁ, নিয়ম ‘
-‘ কে বানালো এইসব ফাল’তু নিয়ম?’
-‘ আমি ‘
-‘ জানতাম, এইসব জীনিস তোমার দ্বারাই সম্ভব! এখন মনোযোগ দিয়ে ঝা’ড়ু দাও। ‘
.
আমি ঝা’ড়ু দিচ্ছি আর উনি বারবার ডাক দিয়ে বলছে এইদিকে দাও, ওইদিকে দাও। ভালো করে দাও। রাগে শরীরটা একেবাকে পু’ড়ে যাচ্ছে। ঝা’ড়ু সম্পর্কে এতোই যখন জানে তখন নিজে কেন দিলো না? আমাকে দিয়ে কেন দেওয়াচ্ছে? প্রায় আধা ঘন্টার মতো ঝা’ড়ু দেওয়ার পর উনি বললেন, ‘ এইতো পার্ফেক্ট হয়েছে, এই নাহয় আমার বউ! সবসময় এইভাবে ঝা’ড়ু দিবে। ‘
ইচ্ছা করতেছে পুরা পৃথিবীটা তার উপর ফি’ক্কা মা’রতে। আমাকে কট’মট করতে দেখে উনি বলল,
-‘ চোখা নামাও ‘
আগের মতো তাকায় আছি। আবার বললেন, ‘ চোখ নামাও ‘
আমি আগের মতো কট’মট করতেছি যেন এক্ষুনি আমার কটম’ট চোখ দিয়ে ওনাকে কটকটি বানায় ফালাবো। উনি আবার বললেন, ‘চোখ নিচে নামাতে বলছি, নাইলে… ‘
হনহন করে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। ভ’য়ে আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম। কা’নার মতো হেঁটে হেঁটে ওনার সামনে থেকে সরে যাচ্ছি। একটা চোখ একটু খুলে দেখি উনি তাকায় আছে। কলিজায় যতোটুকু পানি আসছিলো ততোটুকুও শুকিয়ে গেলো। আবার চোখ বন্ধ করে হাটতে লাগলাম। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলাম ১.৪৭ বাজে। আলমারি থেকে জামাকাপড় বের করে গোসল করতে চলে গেলাম।
.
.
বের হয়ে দেখি উনি বই পড়তেছে। চোখে চশমা, মুখে গম্ভীর ভাব! আমার দিকে একবার তাকিয়ে আবার পড়ায় মনোযোগ দিলো। ওওওও ভুলে গেছিলাম ওনার তো আবার সবকিছুতে মনোযোগ লাগে। ঝা’ড়ু দিতে মনোযোগ। পেছন পেছন যখন ঘুরতেন রাস্তায় তখন মেসেজ দিলে অনেক দেরিতে রিপ্লাই দিতো। পেছন ফিরে রাগী চেহারায় তাকাতাম এরপর উনি বুঝতেন, মাঝেমধ্যে তো বুঝতেনও না। ইশারায় বলা লাগতো চেক করেন। রিপ্লাই দিতো, ” মনোযোগ দিয়ে তোমাকে দেখছিলাম, তোমার পিছু নিয়েছিলাম তাই খেয়াল করি নি। ”
ওনার এমন মেসেজ দেখে সেদিন হাল্কা করে ম’রে গিয়েছিলাম। এরপর কীভাবে যেন বেচে ফিরেছি 🥲।
প্রোপোজ যেদিন করেছিলেন সেদিনও বোধহয় মনোযোগ দিয়েই করেছিলেন। ওনার লেখা চিঠি পড়ে যে আমি কতো লজ্জা পেয়েছি, ইসসসস! এই ছেলেটা প্রচুর লজ্জা দেয়। লজ্জা পেয়ে আমি চিংড়ি মাছের মতো গোল হয়ে যাই , টেংরা মাছের মতো ম’রে যাই, ফোটকা মাছের মতো ফুলে যাই, কাতলা মাছের মতো কাৎ হয়ে যাই। ঝ’গড়া করে এইটাই ভালো।
.
ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে তিড়িং বিড়িং করছিলাম আর নিজেকে দেখছিলাম। হঠাৎ দেখলাম উনি আমার দিকে তাকায় আছে। আমি ভাব নিয়ে বললাম, ‘ আমি জানি আমি সুন্দর ‘
উনি তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললেন, ‘ হাহ! সুন্দর আর তুমি? এ কথা শোনার জন্য বেঁচে ছিলাম আমি? ‘
-‘ আপনি আমাকে আবারও অপ’মান করছেন ‘
-‘ সত্যি কথা বলি আমি। অপ’মান করি না ‘
-‘ কচুর কথা বলেন। আপনি জানেন কত ছেলে আমার জন্য পাগল? ‘
-‘ কেন তুমি কী পাগলদের ফ্রী তে পাগলামি শেখাও নাকি? ‘
আবার অপ’মান। এই ছেলের প্রতি কথায় খালি অপ’মান। আমি বললাম,
-‘ আপনি জানেন আমাকে কত ছেলে গোলাপ ফুল দিয়ে প্রোপোজ করছে? ‘
-‘ নিশ্চয় ভি’ক্ষা করতে বের হইছিলা। ফুলের ভি’ক্ষা! তাই ছেলেরা ফ্রী তে দিসে। মেয়েরা দেয় নাই? ‘ ( খুব চিন্তিত হয়ে)
-‘ 😒 ‘
চিরুনিটা দূরে ছুড়ে ফেলে আমি তার সামনে গিয়ে দাড়ালাম। বললাম, ‘খুব অপ’মান করেন আপনি। দেখেন আমি কতো লম্বা! ৫ ফুট ৪। আর আপনি?’
উনি বই রেখে দাঁড়িয়ে গেলেন। আমি মুখ উঁচু করে ওনাকে দেখে পিছিয়ে গেলাম।
-‘ ৫ ফুট ৭। তুমি কত যেন বললা? ‘
আমার প্রচুর রাগ উঠলো। ওনার কলার ধরে কতক্ষণ ইচ্ছামত ওনাকে ঝাকালাম। এরপর চিল্লায় বললাম, ‘আপনাকে আমার কী করতে মন চায় জানেন?’
-‘………..
-‘ ইচ্ছা করে আপনার উপর পুরোও পৃথিবীটা ফি’ক্কা মা’রি। আপনি এমন কেন হ্যাঁ? ‘ ( চিল্লায়)
উনি আমাকে অবাক করে বললেন, ‘ তুমি আমার বউ। তোমার কতকিছুই ইচ্ছা করবে আমাকে নিয়ে। কিন্তু তোমাকে দিয়ে আমার কী করাতে মন চায় জানো?’ ( কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলে)
আমার মুহুর্তেই পুরো শরীর কাঁপতে লাগলো। আসতে করে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ কী? ‘
উনি আবারও আমার কানের কাছে এসে বললেন, ‘সারাদিন ঝা’ড়ু দাওয়াতে ‘
-‘ তোর চুল টাইনা আমি আজকে ছিড়াই ফালাবো। মূলা কোথাকার। ফা’জিল ছেলে! মেজা’জ টা পুরা খা’রাপ বানায় দিসে৷ তোরে আজকে মাই’রা ভূত যদি না বানাইছি তো আমার নাম মুন না। হায় রেএএএ কী ছেলে এইটা! ধুর ‘
কথাগুলো বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম। উনি হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আসার সময় শুনলাম উনি বলছিলো, ‘ বাথরুম ধোয়াতে আরও ভাল্লাগে! জানোওওও?’
.
.
.
চলবে……..
#What_a_হাসবেন্ড
#Tamanna_Tabassum(লেখনীতে)
#পর্ব-১৬
ছাদে একা দাঁড়ায় আছি। ওনাকে বলছি একটু পর যেন আসে। এসে আমাকে পেছন থেকে যেন জড়িয়ে ধরে। আকাশের দিকে তাকিয়ে গান গাইতেছি,,,
নিশিরাত বাকা চাঁদ……..
হঠাৎই মনে হলো আমার পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। পেছনে তাকাতেই দেখলাম কালো একটা ছায়া। লাফিয়ে দূরে সরে গেলাম। ওরে বাবা বলে চিল্লায় উঠতেই হাসির শব্দ পেলাম। দেখলাম উনি হাসতেছে। আমি রেগে বললাম,
-‘ কী সমস্যা? ‘
-‘ আরেএএ, তুমিই তো বলেছিলে ‘
-‘ কী বলেছিলাম? ‘
-‘ এই যে তোমার হাসব্যান্ড তোমাকে ভয় দেখাবে ‘
আমার মনে পড়লো হঠাৎ,, ও আচ্ছা। আমি আমার ডিব্বায় লিখছিলাম যে আমার ভবিষ্যৎ জামাই আমাকে ছাদে নিয়ে ভ’য় দেখাবে এরপর সে খিলখিল করে হাসবে৷ এটাই উনি করতে চেয়েছেন। এদিকে আমার রুহ টা উড়ি উড়ি যায় অবস্থা!
আমাকে অবাক করে উনি আমার আঙুলে একটা আংটি পরিয়ে দিলেন। আমি সন্দিহান চোখে ওনাকে দেখলাম একবার, আরেকবার আংটিটাকে দেখলাম।
-‘ এটা কীসের?’
-‘ মানে?’
-‘ দেখতে তো হীরা হীরা লাগতেছে কিন্তু এটা আসলেই হীরা নাকি ইমিডিশন? ‘
-‘ কীহ!! ইমিডিশন টা আবার কী?’
-‘ আরেএএ জানেন না কী? ওই যে পানি ধুয়ে দেয় ‘
-‘ শাট আপ! দেখে বুঝো না এটা কী? উচ্চারণ পারো না তো বলো কেন? বে’ক্কে’ল কোথাকার! ‘
-‘ এই এই একদম অপ’মান করবেন না, সাবধানে কথা বলেন ‘
-‘ চুপ করো! মুডটাই ন’ষ্ট করে দিসে ‘
বিরবির করতে করতে চলে গেলো। আরে বেডা! আমি তো একটু সতর্কতা অবলম্বন করছিলাম, রাগ হওয়ার কী আছে এখানে? আমাকে জড়িয়েও ধরলো না। কতবড় বা’ট’পা’র!
-‘ ওইইইই আমাকে আপনি জড়িয়ে ধরেন নাই ‘
আমার কথা শুনে উনি পেছনে তাকালো। বলল,
-‘ ল’জ্জা করে না? একটা নাবালক ছেলেকে জড়িয়ে ধরতে বলছো ‘
-‘ কীসের ল’জ্জা? আমি আমার জামাইকে বলছি। আর কীসের নাবালক? বুইড়া বেডা! এ আবার নাবালক দাবি করে আবার নিজেকে। ঢং দেখলে বাচি না ‘
-‘ সম্মান দিয়ে কথা বলো। আমি তোমার বড় ‘
-‘ জানি তো! আপনি বুইড়া বেডা ‘
-‘ চুপ! বেয়া’দব মেয়ে ‘
-‘ সরেন তো! মুডটা খারা’প করে দিসেন। আর জীবনেও জড়িয়ে ধরতে বলবো না। এর থেকে ভালো হতো যদি আমি সাগরকে বিয়ে করতাম। কমসেকম এমন ঝগড়া হতো না ‘
কথাগুলো বলে চলে আসলাম। পেছনে একটুও তাকালাম না। ওনার সাথে আমি আর কথা বলবো না। রুমে এসে আংটিটা ড্রেসিং টেবিলের উপর রেখে চাদর গায়ে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
.
সকালবেলা,,,
মনে হচ্ছে আমি পানি শুয়ে আছি। হাল্কা হাল্কা শীতও লাগতেছে৷ চোখ মেলে দেখি উনি হাতে জগ নিয়ে দাঁড়ায় আছে। প্রচন্ড বিরক্ত লাগলো।
-‘ মুখ নাই আপনার? ‘
-‘ না, নাই। ‘
-‘ জানি তো! বো’বা হয়ে গেছেন ‘
-‘ নিয়ম হলো ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়া। ‘
-‘ আমি জানতামই না ‘
-‘ না জানলে জেনে নাও। আর ওঠো! ‘
-‘ উঠবো না। আজকে আমি সারাদিন ঘুমাবো ‘
-‘ ঠিকাছে ঘুমাও ‘
বলেই জগের পানি আমার উপর ঢেলে দিলো। আমি রেগে ওনার দিকে তাকায় আছি। উনি চোখ নামাও বলে চলে গেলেন। বিয়ের আগে আম্মুর সাথে ঝগড়া হলে বলতাম যে ” একবার খালি বিয়ে করি এরপর আর বাপের বাড়ি আসবো না। ” কিন্তু এখন বলতে মন চাচ্ছে ” একবার বাপের বাড়ি যাই আর শ্বশুরবাড়ি আসবো না ”
.
ভেজা শরীরে ওভাবেই বসে আছি, হঠাৎ উনি রুমে আসলেন আমাকে বসে থাকতে দেখে বললেন, ‘এতো ঘাড়ত্যাড়া কেন তুমি? ‘
অন্যদিকে মুখ করে বসে আছি। ওনার সাথে কথা বলার ইচ্ছে নাই।
-‘ আমি তোমাকে কিছু বলছি!’
আমি ফ্যানের দিকে তাকায় থাকলাম। একটু পর উনি আমার সামনে দাড়ালেন। হাত পেছনে। হাতে কী? ওও আংটি টা হয়তো! যতো যাইহোক আমি আংটি টা নিবো না। আমি ভাব নিয়ে অন্যদিকে ফিরবো তখনই উনি আমার দিকে কী যেন একটা ছু’ড়ে দিলো৷ মূহুর্তেই ভিজে একাকার হয়ে গেলাম। উনি বললেন, ‘ এবার তো উঠবে ‘
বলে হাতের মগ টা বাথরুমে রেখে আসলো। এর মাথাটা ভেঙ্গে দিতে পারতাম একটু তাহলে শান্তি লাগতো। উনি আবারও বললেন, ‘কী হলো বসে আছো কেন? ‘
আমি উঠে বাথরুমে চলে আসলাম। শাওয়ার ছেড়ে বসে থাকলাম কতক্ষণ। ঠান্ডা পানিতে মাথাটা যদি একটু ঠান্ডা হয়। একটু পর বাথরুমের দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে গেলো। ওনার কণ্ঠ শুনলাম। মুন মুন বলে পা’গল বানিয়ে দিচ্ছে। আমার নামটা মুন কে রাখছিলো? নাম ছাড়া থাকলে মনে হয় ভালো লাগতো একটু। উনি জোরে জোরে দরজা ধাক্কা দিয়েই যাচ্ছেন। দরজা খুলে ওনাকে ভেতরে এনে ভিজিয়ে দিলাম। এরপর জোরে একটা কামড় দিলাম৷ উনি “আয়ায়ায়ায়া” বলে চিল্লাইয়া উঠলো। আমি আবারও কামড় দিলাম। উনি আবারও চিল্লাইয়া উঠলো। এরপর বের হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে নিলাম। চাদর, বালিশ সব উঠিয়ে ফেললাম। বালিশগুলো রোদে দিতে হবে, তাই ছাদে রেখে আসলাম। রান্নাঘরে শ্বাশুড়ি ননদ মিলে নাস্তা বানাচ্ছে। আমি একটু উঁকি দিয়ে এসে পড়লাম। রুমে এসে দেখলাম উনি শার্ট-প্যান্ট পরে সাহেব হয়ে গেছেন। দুই হাত দিয়ে গলা চেপে ধরে রাখছে। আমাকে দেখে কী যেন বিরবির করে চলে গেলো। ভাবসাবে বুঝলাম নিশ্চয় আমাকে “রা’ক্ষস ” বলেছেন। খাওয়ার সময় ওনার পাশে বসতেই চোখ গেলো ওনার গলায়। শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে কামড় দিয়েছিলাম। আহ! কামড় টা সার্থক হয়েছে বোধহয়!
___________________
সারাদিন এই সেই করে কে’টে গেলো৷ বিকেলে ননদের সাথে মুভি দেখলাম। মেজাজ এখন অনেক ফুরফুরা৷ ভেটকি মাছের মতো ভেটকাচ্ছি। রাতে উনি আসলেন কিন্তু আমার সাথে কথা বললেন না। শুনিয়ে বললাম, ‘ কেউ আমার সাথে যদি কথা বলতে না চায় তো না বলুক। আমি তেলাবো না। আমার এতো তেল নাই। তেল দাম বেড়ে গেছে ‘
উনি কিছু বললেন না। মন খারা’প করে জানালার ধরে দাঁড়িয়ে থাকলাম। উনি লাইট অফ করে দিলেন। হয়তো ঘুমিয়ে পড়বেন এখন। থাক! ঘুমাক। সব করলো উনি আর আমি রাগ করলেই দোষ? যাবো না। কথাও বলবো না।
” রাগ করার অধিকার শুধু বউদের, জামাইদের না ”
বিয়ে করার আগে এই কথা ওনাকে শোনানো উচিৎ ছিলো। ফোনের রিংটোন থেকে শুরু করে এলার্মেও এটা সেট করা উচিৎ ছিলো, যেন ওনার মনে থাকে। নিজের নামের থেকে বেশি এই কথা মনে রাখা উচিৎ!
আনমনে কথাগুলো ভাবছিলাম হঠাৎ আমাকে কেউ পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
.
.
চলবে…
(ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)