psycho_is_back?
season_2part_23
#apis_indica
বারিশ রাগের মাথায় লন্ডন চলে আসে। এখানে
তার অফিস আছে। অফিসের বড় জানালার সামনে দাড়িয়ে বাহিরে দৃশ্য দেখছে। এখন শেষ বিকেল। আর শেষ বিকেলের লাল, নীল, হলুদ আলো এসে পরতেসে তার মুখে। এতখন মন খারাপ থাকলেও প্রকৃত রূপ দেখে মনটা ভাল লাগতেসে তার।কুহুর কথা খুব মনে পরতেসে তার। ইসসস..! কুহু এমন না করলে আজ তার পাশে থাকত সে। ভেবেই ছোট শ্বাস ফেললো।তখনি হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ টিউন বাজলো।ফোনটা হাতে নিতেই ফোনের ওয়াল পেপারে ভেসে উঠলো কুহু হাসি হাসি মুখটা।যা দেখলে সব ভুলে যেত সে। কিন্তু সেই কুহুকে সে মেরে এসেছে।তার জন্য অবশ্য সে নিজেকেও শাস্তি কম দেয়নি। যে হাত দিয়ে কুহুকে মারছে সে হাত বারিশ দরজার সাথে লাগিয়ে বারি মারছে।হাত পুরো থেতলে গেছে।বারিশ মেসেজটি ওন করলো।সাথে একটি কাগজের ছবি ভেসে উঠলো যেখানো মোটা মোটা অক্ষরে লিখা ডিভোর্স পেপার। তার সাথেই কুহুর হাতের সাইন।বারিশের রাগ এক দম সপ্তম আসমানে উঠে গেল।
—–এতো বর স্পর্ধা আমাকে ডিভোর্স দেয়ার। এরে সামনে পেলে মাথা তুলে আছাড় মারতে মন চাইতেসে। কতো বড় বেয়াদব।
সাথে সাথে কল আসলো ওই নাম্বার থেকে।
বারিশ রিসিভ করতেই ওই পাশ থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসলো।
—- বাবা বারিশ..!
বারিশ ফুপির এমন কান্না কাটি শুনে বুকে মোচড় দিয়ে উঠলো।
—-কি হইছে ফুপি কান্না করছো কেন?সব ঠিক তো?
—-কিছু ঠিক না বাবা। কিছু না, প্যারালাইজড হযে গেছে বাবা।
বারিশ চিৎকার দিয়ে বলল,
—কিভাবে?
ফুপি মরা কান্না জুড়ে বলতে লাগে,
—বউ মা..!
—-কি করছে কুহু?
—-আমার হাতে ডিভোর্স পেপার ধরিযে দিয়ে বলল। তোরে দিয়ে দিতে। বাবা যখন বুঝাইতে গেছিল। তখন সে ধাক্কা দিয়ে বাবারে ফেলে দিসে..!
বলে হেচকি তুলে কাঁদতে লাগলো।
এসব শুনে বারিশের মাথা গরম হয়ে গেল।সে সাথে কুহুকে কল দিল..!
তখন বাসা থেকে বের করে দেয়ার পর টিনা ফ্লেটে উঠি আমি। টিনা না থাকলে কি হতো আমার? মামা জানলে মেরে ফেলবে যে বিয়ে করছি আবার ডিভোর্স হয়ে গেছে।
এ সময় টিনা বলল,
—-আমি রিয়ানের সাথে কথা বলতেসি। ওর মা এত ফালতু মহিলা।বিয়ের পর আমার সাথেও আবার এমন না করে বসে। তাই ব্রেকআপ করে দিব।
—-পাগল হইসোস? তোর সাথে কেন হবে?
—-যার মা এমন তার কি গ্যারান্টি?
আমি চুপ..!
তখনি আমার ফোন বেঁজে উঠে, আমি রিসিভ করতেই ও পাশ থেকে চিল্লিয়ে বলল বারিশ,
—-কুত্তা তোর সাহস তো কম না? আমার অনুপস্থিতে তুই আমারে ডিভোর্স দেস?খুব পাখনা গজাইসে তোর হুম। আসতেসি আমি তোর পাখনা কাঁটবো। সেদিন রাতে ডোজ কম হইসে না এবার বাথরুমে স্যান্ডেল দিয়ে পিটাবো তোরে।
আমার রাগ উঠলো দিগুন চিল্লায়ে বললাম,
— আপনার সাহস তো কম না? আমারে গালি দিতেসেন? এত সাহস কই পাইলেন হে? সে দিন হাত তুলছেন তো তুলছেন আর কখনো হাত তুললে আপনার হাত ভাঙ্গি দেব।
বারিশ অবাক হলো, কুহু তর্ক করতেসে তার সাথে। আরো রেগে গেল রেগে এবার বোম হয়ে বলতে লাগে,
—-তোর দেখি সাহস খুব বাড়ছে আমার সাথে তর্ক করিস? আসতে দে বাংলাদেশে। এবার গাছের সাথে বেঁধে পিটাবো তোরে আমি।
—-কঁচু করবেন আপনি আমার। আপনারে আর ভয় করে না বুঝলেন? যে অন্য কারো কথা বিশ্বাস করে আমার জবানের দাম নাই এতন মানুষের সাথে কথা বলতে রুচিতে বাঁচতাসে।
বলে খট করে ফোন কেঁটে দিলাম।
এতে যেন আরো রেগে গেল বারিশ।
—নাহ এই অবস্থা অনেক দূর গড়ায় গেছে। এরে অন্য ভাবে হেন্ড্যাল করতে হবে। কত বড় সাহস আমার কল কাঁটে?
বারিশ আবার কল করল। কুহু কেঁটে দিল।
আবার দিল আবার কেঁটে দিল। এতে বারিশ আরো হিংস্র হয়ে যাচ্ছে।
তারপর আবার কল করলো এবার ধরল, এবার ঠান্ডা মাথা কথা বলল,
—-ডিভোর্স কেন দিস?
—-আমি দেয় নি!
—-আমাকে ফুপি ছবি পাঠাইসে যেখানে তুমি সাইন করসো।
—-আমি ইচ্ছে করে করি নি।
বারিশ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,,
—-এখন বলো না তোমাকে কেউ জোড় করে সাইন করাইসে?
—-যখন বিশ্বাস করবেন না তো এত কথা কিসের? আপনার কাছে আমি মিথ্যুক, চরিত্র খারাপ, প্রতারক। তো আমার কথা কেন বিলিভ করবেন। ভালো হইসে ডিভোর্স পেপার ফুপি দিছিল এনে। নয়তো আমি নিজেই দিতাম আপনাকে।।
কুহুর কথায় ভরকে গেল বারিশ,
—-কি যাতা বলছো এসব? ফুপি বলল তুমি তার হাত পেপার ধরিয়ে চলে আসছো আর সাথে দাদুকে ধাক্কা তিস, তোমার জন্য দাদু আজ প্যারালাইজড..!
আমি অবাক হয়ে বললাম,
—-আপনার ফুপি একটা ফালতু তার সাথে তার চামচি জেনি..!
বারিশ ধমক দিয়ে বলল,
—-বড়দের এসব কি বলতেসো?
—-একদম ঠিক বলতেসি। আমার ক্ষমতা থাকলে তাদের দুজনকে মুখে কালি মেরে পুরো এলাকাড জুতার মালা পরিযে ঘুরাতাম।
—-কুহু তুমি কিন্তু বেয়াদবি করতেস!
—-ভাল করসি। আর হে আমি দাদুকে ফালাই নাি। দাদুকে জেনি ধাক্কা দিসিল। আর সাথে দাদুকে মারার ভয় দেখিয়ে ডিভোর্স পেপার সাইন করাইসে।
বারিশ এসব শুনে দু টানায় পরে গেল। সে বলল,
—-ফুপি কেন করবে?
—-কেন আবার বারিশের সম্পত্তির জন্য।
বারিম কপাল কুচকে বলল,
—-আমার সম্পত্তির জন্যে?
—-জি না.! আপনাকে তারা বারিশের ফেিস দিসে আপনি ইউসুফ। বারিশকে ফুপি নিজ হাতে মেরে ফেলছে।
বারিশ সব শুনে হতভম্ব। এ সব শুনে তার শরীর কাঁপতেসে,
—-তুমি মিথ্যা বলতেস?
—-আমার কি লাভ?
বারিশ নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল,
—-ওই আশিকের কাছে চলে যাবা,
কুহু এবার অট্টহাসিতে ফেটে পরলো,,
—-আপনাকে কে মাফিয়া বানাইছে তারে পাইলে পাছার মধ্যে লাথি মেরে পানিতে ফেলে দিতাম।
—-কুহু…!
—-কি কুহু হে? কি! পারেন খালি মানুষরে বিশ্বাস করতে কোনো কিছু যাই করছেন জীবনে হে?
বারিশ চুপ।
—আশিক জেনির চাচাতো ভাই। সবাই মিলে প্লেন করে আমারে বাড়ি থেকে বের করে দিসে। জেন আপনার আর জেনির বিয়ে দিযে সব সম্পত্তি রিযানের নামে দিযে দেয়।
বারিশ এবার বাকরুদ্ধ। আসলেই তো কখনো সেতো যাচাই করে নি কিছু।
বারিশ বলল,
—আমি তাদের ছেলে না হলে আমাকে বলতেই পারতো আমি দিয়ে দিতে বাধ্য। তাহলে এসব কেন করবে?
—-কারন দাদু..!
—-আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা তারা এমন করতে পারে?
—-আমার কাছে সব কিছুর প্রুব আছে কিন্তু আতি আপনাকে দিব না। কুঁজে বের করে নেন কে সত্য আর কে মিথ্যা। যখন সত্য বের হবে অনেক আফসোস করবেন কারণ আমিরতখন আপনার পাশে থাকবো না। বলে আবার কজট করে কল কেটে দিলাম। ওি দিকে কুহুর ফোন কাটায় আবার কল দেয় বারিশ ফোন বন্ধ। কি করবে বারিশ কিভাবে যাচাই করবে সত্য তাই ভাবতেসে।
—-তুই মিথ্যা কেন বললি তোর কাছে প্রুব আছে?
আমি মুচকি হেসে বললাম,
—-এ জন্য যে সে এবার সত্যিটা খুঁজবে।
—-পরে যদি যানে তোর কাছে নেই।
—-ততদিনে সে সব নিজেই বের করে নিবে..!
—-তুই রিয়ানকে বলিস না কিছু। ওর তো দোস নাই।
টিনা বলল,
—-আমি ওরে ব্লক মারছি।
—-এটা ঠিক করলি না।
—-দেখ আমি চাই না ওর মায়ের হাত মার খেয়ে বের হই।
—-তুই বেশী বেমী ভাবতেছিস।
—-হো নয় তো তোর মতো বাশ খাবো।
আমি হেসে দিলাম।
সেদিন রাতটা কোনো মতে কেঁটে গেল। খুব ভোরে বারবার কলিংবেলের শব্দে ঘুম ভাঙ্গে আমার। আমি চুল গুলো হাত খোঁপা করতে করতে দরজা খুলেতেই ঠাসসসস করে পরলো আমার গালে কিছু বুঝে উঠার আগেই। সামনে তাকাতেই আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল। কারন বড় মামা আর রাহুল ভাই দাড়িয়ে ছিল।কিছু বলব তার আগেই আরেকটা থাপর পরলো গালে।তখন মামা চিল্লিযে বলল,
—-তোর সাহস কেমনে হয় আমার ভাগ্নি হয় একা একা বিয়ে করিস। শরীরে রস বাড়ছে তাই না। আমি গালে হাত দিযে চোখের পানি ফেরতে লাগলাম মাটির দিক তাকিযে তখন মামা চেচিযে বলল,
—-এখানে দাড়িয়ে আছিস কেন যা ব্যাগপত্র নিয়ে আজ আমার সাথে ময়মনসিংহ যাবি। এখানে আর এক মুহুতেও না..!
আমি ফুপাতে ফুপাতে বললাম,
—-মামা আমি যাবো না।
তখনি মামা আমাকে মারতে হাত তুলরো রাহল ভাইযা মামাকে আটকিযে বলল,
—বোন আপাদত বাসা চল বাকি কথা পরে হবে।
আমি রাহুল ভাইয়ার দিক ছল ছল চোখে বললাম,
—-ভাইয়া উনি দেশে নেই। আমি কিভাবে? তখনি বড় মামা বলে,,
—-কেমন লজ্জা ছাড়া হেয়েছে। আমার সামনে এসব ন্যাকামি করছিস? আয় তুই তোর কিছু নেয়া লাগবে না..!
বলে মামা আমার হাত টেনে বাহিরে নিয়ে যেতে লাগল, এর মাজে টিনা এসে বলল,
—-আঙ্কেল কিভাবে নিয়ে যাচ্ছেন কেন?
তখন মামা টিনাকে ধমক দিয়ে বলল,
—-তোমরাই ওর মাথা খেয়েছো। ও এসব করছে তাতে সাত দিচ্ছিলে একবার আমাদের জানালে কি হতো? তোমার বাসায আমি বিচার দিব দাড়াও। বলে আমাকে টেনি নিযে যেতে লাগলম টিনা সেখানেই মন খারাপ করে দাড়িযে রইল।
আর আমি চিল্লিয়ে বলছি,
—আমি যাবো না মামা প্লীজ মামা।
কিন্তু তারা কোনো কথাই শুনলো না।
ময়মনসিংহের বাসায় আসতেই মামা আমাকে রুমে নিয়ে লক করে দিলেন আর মামী আর ভাবীকে বললেন,
—আমি না বলা পর্যন্ত এ দরজা কেউ খুলবে না? তাহলে তার জন্য এ বাড়িতে জায়গা নেই। সবাই চুপ হয়ে গেল।
আর আমি দরজা ধাক্কাতে লাগলাম সবাইকে গলা ফাটিয়ে ডাকতে লাগলাম কিন্তু কেউ আসলো না..! কেউ না..!আমি সেখানেই কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লাম।
চলবে,