My_Mafia_Boss পর্ব-৩৬
Writer:Tabassum Riana
রোয়েন রুহীর দিকে একনজর তাকায়।ওর ।পায়ের বেশখানিকটা জুড়েই মেহেদী রাঙ্গানো।দুহাত ভর্তি মেহেদী।উফ সে কি এক অপরুপ দৃশ্য। বর্ননা করা সম্ভব নয়।রুহী রোয়েনের দিকে এক নজর তাকিয়ে খোলা চুল গুলো আঁচড়ে নিলো।কারন মেহেদীটা শুকিয়ে গেছে।রোয়েন পলকহীন ভাবে রুহীকে দেখছে।রোয়েনের দিকে লজ্জা লজ্জা চোখে তাকানো,চোখে চোখ পড়লে মাথা নিচে নামিয়ে ফেলা,রোয়েনের সাথে তোঁতলিয়ে কথা বলা এবং চোখ দুটোতে করুন ভাব আনা পাগল করে দেয় রোয়েনকে।কাল মায়াবতীকে নিজের করে পেয়ে যাবে।বৈধ ভাবে ভালবাসতে পারবে।ভাবতেই রোয়েনের ঠোঁটের কোনায় হাসি ফুঁটে উঠলো।
রুহী রোয়েনের পাশে এসে বসে কি যেন ভাবছে।অন্যসময় হলে শুয়ে পড়তো।কিন্তু আ জ ভীষন লজ্জা লাগছে ওর।রুহী কে এভাবে বসে থাকতে দেখে ভ্রু কুঁচকালো রোয়েন। কি ভাবছো অতো? রাগী গলায় প্রশ্ন করলো রোয়েন।ন নান না মাম মানে আ আজ কি অন্যরুমে ঘুমোতে পা প পারি।রুহীর কথা শুনে রোয়েন রেগে বলল চিন্তা ও করবানা।আর আজকের দিন তো নাইই।রুহী মাথা নিচু করে বালিশে শুতেই রোয়েন ওর হাত টেনে বুকে নিয়ে এলো।কি হয়েছে কি?এমন করছো কেন?ধমক দিয়ে বলে উঠে রোয়েন।রুহী চুপচাপ রোয়েনের বুকে মাথা রেখে শুয়ে থাকে।ভালো একটা মুহূর্ত নষ্ট করতে এক্সপার্ট তুমি দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।রুহী আস্তে করে বলল প্লিজ রাগ করবেননা। ভীষন মায়া হয় রোয়েনের। রুহীর কপালে চুমু দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।বাহির থেকে খুব ঠান্ডা বাতাস এসে ওদের শিহরিত করে দিচ্ছে।রুহীর নেশা ধরানো ঘ্রান রোয়েনকে মাতাল করে দিচ্ছে।খুব ইচ্ছে করছে রুহীকে নিয়ে ভালবাসার সাগরে ডুব দিতে।রুহীকে বালিশে শুইয়ে দিলো রোয়েন।রুহী অবাক চোখ রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আছে।(আজ তো আর ঘুম হবেনা রুহীর।কারন রোয়েনের বুকে মাথা রাখলে খুব আরামের ঘুম হয় রুহীর)।রুহীর উপরে আধশোয়া হলো রোয়েন।রুহীর কপালের চুল গুলো সরিয়ে চুমো দিলো রোয়েন।রুহীর দুগালে চুমো দিয়ে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো রুহীর ঠোঁটে।
পরম আবেশে চুমো খেতে শুরু করলো রোয়েন।রুহীর হাত চেপে ধরেছে খাটের সাথে।রুহীর ঠোঁট থেকে মুখ সরিয়ে গলায় মুখ ডুবালো রোয়েন।রুহী রোয়েন গেঞ্জীর হাতা চেপে ধরেছে।রোয়েন আর পারছেনা নিজেকে নিয়ন্ত্রণে আনতে।রুহীর গলা থেকে মুখ উঠিয়ে ওর দিকে তাকালো রোয়েন।তোমাকে যদি আজ একান্তভাবে নিজের করে নিই রাগ করবে?রুহী রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আছে কি বলবে বুঝতে পারছেনা।বুক খুব কাঁপছে ওর।সাহস করে বলতে লাগলো এতোদিন অপেক্ষা করেছেন আর একটা দিনের ব্যাপার বলেই মাথা নিচু করে চোখ বন্ধ করে ফেলে রুহী।রোয়েন মুচকি হেসে রুহীর ওপর থেকে সরে আসে।রুহী এক চোখ খুলে রোয়েনকে দেখার চেষ্টা করে। রোয়েন খাটের ওপর বসে রুহীর দিকে তাকিয়ে আছে।রুহী আবার ও চোখ বুজে ফেলে।রোয়েন রুহীকে বুকে জড়িয়ে শুয়ে পড়ে।
পরদিন সকাল রুহীর ঘুম ভাঙ্গতেই রোয়েনের বুকে নিজেকে অাবিষ্কার করে রুহী।মুচকি হাসে রুহী।এতো কিউট ওর লাল মরিচ বর টা।রোয়েনের ঠোঁটে আঙ্গুল ছুঁইয়ে দেয় রুহী।আঙ্গুল সরিয়ে আলতো করে চুমো দেয় রোয়েনের ঠোঁটে।রোয়েন কেঁপে উঠতেই সরে যায় রুহী।রোয়েনের বুক থেকে নিজেকে সরিয়ে উঠে বসে রুহী।ফোন চার্জে দিয়ে বিছানা ছেড়ে ওয়াশ রুমের দিকে পা বাঁড়ায় রুহী।
সকাল সকাল আনিলা বেগম অবন্তীর মাথা খাচ্ছে।দেখেছিস কতো নির্লজ্জ মেয়ে রুহী।বিয়ের আগেই জামাইর সাথে ঘুমায়।বেশরম বেহায়া মাইয়া।নুহাশের দিকে খেয়াল রাখিস অবন্তী রুহীর চোখ ভালা না।পান চিবোতে চিবোতে বলতে থাকে আনিলা বেগম।মা তোমার কি সাতসকালে খেয়ে দেয়ে কাজ নাই?কি বলছো এসব?রুহী এমন মেয়েই না।রোয়েন ভাই ওর জন্য এতো কিছু করেছে এতো টা ভালবাসে।ওনার সাথে ঘুমাতে কি সমস্যা?রোয়েন ভাই খুবই ভালো মানুষ।আর নুহাশ ওর ওপর পুরো বিশ্বাস আছে আমার।রুহীকে বোন হিসেবেই জানে।বয়স হয়েছে তোমার একটু তো ভেবেচিন্তে কথা বলো মা।সবসময় রুহীর পিছনে পড়ে থাকতে হবে তোমার রাগী গলায় বলল অবন্তী। হ হ খালি পারবিই নিজের মায়ের লগে। রুহীকে নেমে আসতে দেখেই অবন্তী আনিলা বেগমের দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে চুপ থাকার জন্য ইশারা করলো।আনিলা বেগম মুখ ভেংচিয়ে অন্যদিকে ফিরে তাকালো।অবন্তী সোফা ছেড়ে রুহীর কাছে এসে দাঁড়ালো।রুহীর দুহাত উঠিয়ে বলল বাহ পুরো কালো হয়ে গেছে মেহেদী।রোয়েন ভাই তোকে খুব ভালবাসবে।রুহী লজ্জা মাখা মুখে মুচকি হেসে নিচে তাকায়।
রোয়েন ভাই উঠেনি অবন্তী জিজ্ঞেস করলো।মাথা না সূচক ভাবে ঝাঁকায় রুহী।আপু বসো আমি নাস্তা রেডি করছি বলে পাকঘরের দিকে পা বাঁড়ায় রুহী।না আজ যাবিনা সার্ভেন্টরাই বানাক অবন্তী রুহীর হাত ধরে বলল।রুহী কাজের লোকদের নাস্তা বানানোর কথা বলে অবন্তীর সাথে গল্পে মন দিলো।দুপুরে অবন্তী রুহীকে বিয়ের গোসল করিয়ে দিলো।রুহী!!! ভাইয়া তোর সাথে কিছু করেছে? রুহীর কানে ফিসফিসিয়ে বলল অবন্তী।রুহী লজ্জায় লাল হয়ে গেল না আপু।অবন্তী হেসে দিলো। রুহীর মাথায় হাত রেখে বলল দোয়া করি সুখে থাক।রোয়েন আর নুহাশ কোন এক কাজে বাহিরে গেছে।টুকটাক বাজার ও লাগবে সেগুলোই করতে বেরিয়ে গেছে ওরা।রোয়েনের মাথায় অন্য এক টা প্ল্যান কাজ করছে।আজ বাসর রাতে রুহী কে জানাবে মায়াবতী কে কতোটা ভালোবাসে রোয়েন।
সন্ধ্যায় রুহীকে সাজাতে দুজন পার্লারের মেয়ে এলো।রোয়েনের রুমে গুঁটিগুঁটি পায়ে হেঁটে এলো রুহী।রোয়েন ল্যাপটপ থেকে মাথা উঠিয়ে রুহীর দিকে তাকালো।রুহীকে আজ অন্যরকম সুন্দর লাগছে।বিয়ের আগে সব মেয়েরাই নাকি বেশি সুন্দর হয়ে যায়।রুহী রোয়েনের কাছে এসে দাঁড়ালো। দুহাত কঁচলাতে কঁচলাতে বলল ক ক কি প পরবো?রোয়েন ভ্রু কুচকে রুহীর দিকে তাকালো কি পরবা মানে?ন ন না মা মানে শাড়ী না লেহেঙ্গা??বলেই মাথা নামালো রুহী।রোয়েন বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে আলমারির দিকে এগোলো।শাড়ি লেহেঙ্গা দুটো বের করে রুহীর দিকে বারবার তাকাচ্ছে আবার শাড়ী লেহেঙ্গার দিকে ও তাকাচ্ছে।লেহেঙ্গা পরো রুহীর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে আবার কাছে টেনে নিলো রোয়েন। না শাড়ী পরো না লেহেঙ্গা।আচ্ছা অপু ১০ ২০ করি যেটাতে ১০০আসবে সেটা পরো।রুহীর খুব হাসি পাচ্ছে রোয়েনের কথা শুনে।রোয়েন অপু ১০ ২০ করে শেষ পর্যন্ত শাড়ী রুহীর হাতে দিলো। যাও পরে রেডি হয়ে নাও।রুহী শাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
চলবে