My_Mafia_Boss পর্ব-৩৪

0
5265

My_Mafia_Boss পর্ব-৩৪
Writer:Tabassum Riana

রুহী ভীষন কাঁপছে।পুরো মুখ রক্তিম বর্ন ধারন করেছে ওর।রোয়েন কিছুই বুঝতে পারছেনা কি করবে এখন ও?রুহীর গালে একটু হাত ছোঁয়ালো। শরীর খুব গরম হয়ে আছে।কম্বল নিয়ে জড়িয়ে দিলো রুহীকে তবু ও ওর কম্পন বন্ধ হচ্ছেনা।রোয়েন রুহীকে বুকের মাঝে নিয়ে শুয়ে পড়লো।রোয়েনের বুকের মাঝখানটায় মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে আছে রুহী।এখন আর কাঁপছেনা।কিছুক্ষন শুয়ে থাকার পর রুহীকে ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো রোয়েন।এভাবে জ্বর ছাড়বেনা।ওয়াশরুমে গিয়ে পানি নিয়ে এলো রোয়েন।রুমাল পানিতে ভিজিয়ে রুহীর হাত পা মুখ মুছে দিয়ে কপালের ওপর ভিজা রুমাল রেখে দিলো।রুহী বেশখানিক্ষন পর আধো চোখ খুলল।রোয়েনের বুকের ওপর শুয়ে আছে ও।রোয়েন পলকহীন ভাবে ওর মায়াবতী দেখছিলো।রুহী চোখ খুলতেই ওর কপালে চুমু একেঁ দিলো রোয়েন।এভাবে দিনরাত সেবা করার পর রুহী সুস্থ হয়ে উঠলো।বাংলা দেশে ফেরার সময় ঘনিয়ে এসেছে।রোয়েন দুজনের ব্যাগ গুছিয়ে নিলো।একটু পর এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হবে ওরা।রুহী সাদা একটি কোট আর ব্লু জিন্সপ্যান্ট পরে রেডি হয়েছে।রোয়েন কালো কোট আর প্যান্ট পরে রেডি হয়ে নিলো।রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে।
বাংলাদেশ এয়ারপোর্টে পৌছে রোয়েন ওর গাড়ি পাঠাতে বলল।কিছুক্ষণ পর ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে এয়ারপোর্টে চলে এলো।রোয়েন রুহীকে নিয়ে গাড়িতে চেপে বসলো।রুহী ঠিক আছো?জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে থাকা রুহী কে জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।মাথা ঝাঁকালো রুহী। বাসার কাজ ঠিকমতো চলছে তো ড্রাইভার কে জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।জি স্যার (ড্রাইভার)।সন্ধ্যার মধ্যেই ঘরে পৌছে গেল ওরা।রোয়েন ফ্রেশ হতে চলে গেল। রুহী ফ্রেশ হয়ে চুল শুকিয়ে রোয়েনের রুমের দিকে এগোলো।দরজায় উঁকি দিয়ে আৎকে উঠলো।রোয়েন বন্দুক গুলো বুলেটে পরিপূর্ণ করছে।রুহী স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে।বন্দুক গুলো ফুল লোড করে পাশে তাকাতেই রুহীকে দেখতে পায় রোয়েন।বাহিরে কেন দাঁড়িয়ে আছো?ভিতরে আসো গম্ভীর কন্ঠে বলল রোয়েন।রুহী ধীর পায়ে ভিতরে আসে।রোয়েন রুহীর দিকে এক নজর তাকিয়ে বলল এভাবে হাঁটছো কেন?ন নন না ম মাম মানে ব ব বলছিলাম ক ক কি কোথাও যাচ্ছেন,?


উহু।কাল যাবো কাউকে শেষ করতে কিছুটা গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।রুহী অবাক চোখে রোয়েনকে দেখছে।কি বলছে এসব?ভাবতে পারছেনা রুহী।কি করতে যাচ্ছে রোয়েন কে জানে?রুহীর দিকে এক নজর তাকালো রোয়েন।কাল আমার ফিরা পর্যন্ত ঘরে থাকবে রাগী গলায় বলল রোয়েন।রুহীর সামনে এগিয়ে এসে রুহীর হাত ধরে দেয়ালের সাথে জাপটে ধরে রোয়েন।দাঁতে দাঁত চেপে রুহীর দিকে তাকিয়ে আছে রোয়েন। সবসময় এমন ভীতু ভাব এনো চেহারায়। মানুষ কে বুঝিয়োনা যে ভয় পাচ্ছো।তোমার এ চেহারাকে আমি ঘৃনা করি।I hate that damn scary face চিৎকার করে বলল রোয়েন।রুহী কেঁপে উঠলো।চোখের কোনায় পানি জমে এলো রুহীর।রুহীর দিকে রাগী চোখে তাকালো রোয়েন।রুহী মাথা নিচু করে আছে।রুহীর থুতনি ধরে মুখ উঠালো রোয়েন। চোখের পানির ওপর কন্ট্রোল আনতে হবে তোমাকে।এভাবে কথায় কথায় কাঁদবেনা।আমাদের চারপাশে শত্রুর অভাব নেই।কথাটি বলে রুহীর দিকে এগিয়ে এসে ঠোঁটে আলতো করে চুমো দিলো রোয়েন।রুহীর চুল থেকে গড়িয়ে টুপটুপ করে পানি পড়ছে।রুহীকে টেনে নিয়ে খাটে বসিয়ে রোয়েন তোয়ালে দিয়ে রুহীর চুল মুছে দিতে শুরু করলো।আজ পর্যন্ত চুল মুছা শিখলে না বাচ্চাদের গোসল করাবে কি করে?কিছুটা অভিমানী স্বরে বলল রোয়েন।বাচ্চার কথায় রুহীর গাল দুটো লাল হয়ে যায়।বাচ্চা!!! কিছুটা অবাক হয় রুহী।হুম তোমার মতো কাঁদুনে আরেকটা রুহী আসবে।হুহ আমি মোটেও কাঁদুনে না।(এখন এতো সুন্দর করে কথা বলছেন ওনি।মজা ও করছেন আমার সাথে।)ভাবতে থাকে রুহী।তবে ভালো লাগছে রোয়েনকে এভাবে দেখতে।তবে রোয়েনের ঐ রুপটাই ওর বেশিই পছন্দ।চুল মুছা শেষে উঠে পড়লো ওরা। রুহী বাগানের দোলনায় বসে আছে।”কাউকে শেষ করতে যাবো”রোয়েনের বলা কথাটি ভাবছিলো রুহী।ওদের বিল্ডিংয়ে লাইটিং এর কাজ চলছে।রোয়েন সেগুলোর তদারকি করছে বাহিরে দাঁড়িয়ে।রুহী রোয়েনকে দেখছে।মানুষটাকে ছাড়া থাকা অসম্ভব।পুরো নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে রোয়েনের ওপর।মাঝে মাঝে ভীষন ভয় পাইয়ে দেয় রোয়েন।ভীষন রাগ হয় রুহীর।তবে রোয়েনের কথা, বকা গুলো সব কিছু ভালবেসে ফেলেছে রুহী।সেই সাথে মানুষটাকে ও।ভালবাসাটা রুহী বুঝতে পেরেছে রুহী যেদিন রোয়েন ওর অতীত বলছিলো।রুহীর পাশে এসে রোয়েন বসলো।রুহীর হাত ধরে উঠিয়ে বলল বাহিরে থাকা আর ঠিক হবেনা চলো।রুহীকে ভিতরে নিয়ে গেল রোয়েন।ঠিক সেই মুহূর্তেই রোয়েনে একটি ফুলের টবে গুলি লাগলো।ঠিক সেই বরাবর রুহী বসে ছিলো।রোয়েন রুহীকে টেনে রুমে নিয়ে এলো।রুহীকে শুইয়ে ওর ওপর আধশোয়া হলো রোয়েন।রুহীর কপালে চুমো একেঁ দিয়ে রুহীর বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো রোয়েন।রুহীর বুকের ভিতর তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে।হঠাৎ রোয়েনের ফোন বেজে উঠায় বসে পড়লো রেয়েন।কানের সামনে ফোন ধরতেই চোখ দুটো লাল হয়ে এলো রোয়েনের। ফোনটাকে আছাড় দিতে দুটুকরো হয়ে গেল ফোনটা।রুহী উঠে বসেছে।রুহীর দিকে রক্তচক্ষু দিয়ে তাকালো রোয়েন ঘুমিয়ে পড়ো ধমক দিয়ে উঠলো রোয়েন।রুহী চুপচাপ অপরপাশে শুয়ে পড়ে।সেদিন রাতে রুহীকে বুকে টেনে খুব জোর করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছে রোয়েন।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে